এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ভ্রমণ  যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে  খাই দাই ঘুরি ফিরি

  • ডেভিড লিভিংস্টোনের খোঁজে-১৫১

    হেনরি মর্টন স্ট্যানলে
    ভ্রমণ | যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৫৮৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ | ৩২ | ৩৩ | ৩৪ | ৩৫ | ৩৬ | ৩৭ | ৩৮ | ৩৯ | ৪০ | ৪১ | ৪২ | ৪৩ | ৪৪ | ৪৫ | ৪৬ | ৪৭ | ৪৮ | ৪৯ | ৫০ | ৫১ | ৫২ | ৫৩ | পর্ব ৫৪ | পর্ব ৫৫ | পর্ব ৫৬ | পর্ব ৫৭ | পর্ব ৫৮ | পর্ব ৫৯ | পর্ব ৬০ | পর্ব ৬১ | পর্ব ৬২ | পর্ব ৬৩ | পর্ব ৬৪ | পর্ব ৬৫ | পর্ব ৬৬ | পর্ব ৬৭ | পর্ব ৬৮ | পর্ব ৬৯ | পর্ব ৭০ | পর্ব ৭১ | পর্ব ৭২ | পর্ব ৭৩ | পর্ব ৭৪ | পর্ব ৭৫ | পর্ব ৭৬ | পর্ব ৭৭ | পর্ব ৭৮ | পর্ব ৭৯ | পর্ব ৮০ | পর্ব ৮১ | পর্ব ৮২ | পর্ব ৮৩ | পর্ব ৮৪ | পর্ব ৮৫ | পর্ব ৮৬ | পর্ব ৮৭ | পর্ব ৮৮ | পর্ব ৮৯ | পর্ব ৯০ | পর্ব ৯১ | পর্ব ৯২ | পর্ব ৯৩ | পর্ব ৯৪ | পর্ব ৯৫ | পর্ব ৯৬ | পর্ব ৯৭ | পর্ব ৯৮ | পর্ব ৯৯ | পর্ব ১০০ | পর্ব ১০১ | পর্ব ১০২ | পর্ব ১০৩ | পর্ব ১০৪ | পর্ব ১০৫ | পর্ব ১০৬ | পর্ব ১০৭ | পর্ব ১০৮ | পর্ব ১০৯ | পর্ব ১১০ | পর্ব ১১১ | পর্ব ১১২ | পর্ব ১১৩ | পর্ব ১১৪ | পর্ব ১১৫ | পর্ব ১১৬ | পর্ব ১১৭ | পর্ব ১১৮ | পর্ব ১১৯ | পর্ব ১২০ | পর্ব ১২১ | পর্ব ১২২ | পর্ব ১২৩ | পর্ব ১২৪ | পর্ব ১২৫ | পর্ব ১২৬ | পর্ব ১২৭ | পর্ব ১২৮ | পর্ব ১২৯ | পর্ব ১৩০ | পর্ব ১৩১ | পর্ব ১৩২ | পর্ব ১৩৩ | পর্ব ১৩৪ | পর্ব ১৩৫ | পর্ব ১৩৬ | পর্ব ১৩৭ | পর্ব ১৩৮ | পর্ব ১৩৯ | পর্ব ১৪০ | পর্ব ১৪১ | পর্ব ১৪২ | পর্ব ১৪৩ | পর্ব ১৪৪ | পর্ব ১৪৫ | পর্ব ১৪৬ | পর্ব ১৪৭ | পর্ব ১৪৮ | পর্ব ১৪৯ | পর্ব ১৫০ | পর্ব ১৫১

    ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস আটকে সেখান থেকে একে একে রওনা হয়েছে অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনী। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। ইংল্যান্ডে ফেরার পর এই কিস্তি। এখানে কিছু সমালোচনার-ও জবাব দিচ্ছেন হেনরি মর্টান স্ট্যানলি। এটিই শেষ কিস্তি। তরজমা স্বাতী রায়


    আমার প্রিয় পাঠক, আরও কটা কথা বলেই দাঁড়ি টানব। হয়ত এখানেই থামলে ভাল হত। ভ্রমণ, রোমাঞ্চ-অভিযান ও আবিষ্কারের এই বিবরণে এখানেই সমাপ্ত লিখলে সেটা আমার পক্ষে বেশি মর্যাদার হত। কিন্তু কিছু জিনিস আছে যেখানে চুপ থাকতে পারিনা, আর তার মধ্যে আমার ইংল্যান্ডে ফেরার পরে পাওয়া ব্যবহারও পড়ে।

    আমি ইংল্যান্ডে এসে পৌঁছানোর আগে ইংরেজদের সংবাদসংস্থাগুলো মনে হয় ত্রুটির চাদর মুড়ি দিয়ে কাজ করছিল। খুব কমই আফ্রিকান শব্দ ঠিক লিখেছিল - তারিখগুলি সব ভুল - তথ্যগুলি এমন জগাখিচুড়ি পাকানো যে বোঝার উপায় নেই; আর এসব দেখলে মনে ঘোর সন্দেহ আর কুচিন্তা জাগে। উন্যানয়েম্বে থেকে পাঠানো একটা চিঠি, জাঞ্জিবারে ফেরার পরে আমার পাঠানো চিঠি-সকল, আর মার্সেই থেকে পাঠানো চিঠিগুলি ছাড়া, আর বাকি সব আমি অস্বীকার করি। আমি যা লিখেছি, আমি শুধু তারই দায়িত্ব নিতে পারি। নিউ ইয়র্ক হেরাল্ডে আমার চিঠি ও পাঠানো খবর বলে যা প্রকাশিত হয়েছে, একমাত্র সেগুলোই, টাইপোগ্রাফিক ত্রুটি বাদ দিয়ে আমি সঠিক বলে দাবি করছি। নামগুলো অদ্ভুত হওয়ায় টাইপোগ্রাফিক ত্রুটিগুলো স্বাভাবিক। আর, সম্ভবত, আমার নিজের হাতের লেখাও একটা কারণ তার পিছনে; যখন একজন মানুষ জ্বরে ভুগছেন, তখন অবশ্য খুব স্পষ্ট বা ঝরঝরে হাতের লেখা হওয়ার সম্ভাবনাও নেই।

    তবে স্তম্ভিত করার মতন সত্য এই যে, একজন আমেরিকান সংবাদদাতার হাতে ডক্টর লিভিংস্টোনকে আবিষ্কার করার মতন কাজ ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল এতে ইংরেজ সম্পাদকরা ঈর্ষান্বিত বোধ করেছিলেন। প্রায় সব ইংরেজি সংবাদপত্র দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই বিষয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছে, যদিও 'টাইমস', 'ডেইলি টেলিগ্রাফ', 'দৈনিক সংবাদ,' এবং 'মর্নিং পোস্ট'এর মতো প্রধান ও সর্বাধিক সম্মানিত কাগজগুলো একই সঙ্গে আমার ভূয়সী প্রশংসা করতেও দ্বিধা করেনি।

    সম্পাদক ভদ্রমহোদয়েরা, একজন তরুণ, অখ্যাত সাংবাদিকের প্রতি আপনাদের প্রশংসাবাক্যের জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই, তার নিজের বিনীত মতামত এই যে, খোলাখুলিই বলছি, আমার বা অন্য কারো প্রতি আপনাদের হিংসা করার কোন অধিকার নেই। আমি শুধুই একজন বিশেষ সংবাদদাতা, আমার নিয়োগকর্তা সংবাদেপত্রের হুকুমের চাকর। যখনই হুকুম হবে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে যেতে হওয়াই আমার কর্মনিয়োগের শর্ত । আমি লিভিংস্টোনের সন্ধানের ব্যাপারে কোন পার্থক্য খুঁজিনি। হুকুম পেলে আমি যেতে বাধ্য, নাহলে চাকরি ছাড়তে হবে। আমি পদত্যাগের চেয়ে আনুগত্য প্রকাশ পছন্দ করেছি। এই বইটি পড়লে বুঝতে পারবেন যে দায়িত্ব আমার উপর অর্পিত হয়েছিল তার কী পরিণতি হয়েছিল; কিভাবে এটা শুরু ও শেষ হয়েছিল।

    আমার নিয়োগকর্তার প্রতি ঈর্ষা বোধ করার অধিকারও আপনাদের নেই মশাই। আফ্রিকা আপনাদের সকলের জন্যই সমান উন্মুক্ত ছিল। আমেরিকানরাও ইংরেজদের মতোই ডঃ লিভিংস্টোনের প্রতি টান অনুভব করেছিল। ইংরেজদের মতো অনেক আমেরিকানও তাঁর বই পড়েছিল। ডঃ লিভিংস্টোনের নিরাপত্তার ব্যাপারে আমেরিকানদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার ইচ্ছার প্ররোচনাতেই তাঁকে অনুসন্ধান করার জন্য মধ্য আফ্রিকায় একজন "বিশেষ" সংবাদদাতা পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁর সামর্থ্য ও ইচ্ছা দুইই ছিল। যদি একজন বিশেষ সংবাদদাতা কাজটি না করতে চায়, অন্যজন তা করবে; তাঁর অধীনে এমন সংবাদদাতা অনেক। এমনকি যদি তার কাগজের প্রতিটি স্থায়ী কর্মচারীই কাজটি প্রত্যাখ্যান করত, তাহলেও বুদ্ধিমান জনগণের মধ্য থেকে কোন একজন না একজন স্বেচ্ছাসেবক সহজেই পাওয়া যেত, এবং ঈশ্বরের করুণায় ফলাফলগুলি একই রকম বা সম্ভবত আরও ভাল হত। আপনাদের মধ্যে কেউ যদি কাজটি সম্পন্ন করার কথা ভাবতেন ও সেরকম ইচ্ছা পোষণ করতেন, তাহলেও এক হাজার ইংরেজ স্বেচ্ছাসেবক হাজির হতেন, আর একই রকম বা সম্ভবত আরও ভাল ফলাফল পাওয়া যেত। আপনারা সবাই বিখ্যাত। ক্রিমিয়ায় ও ভারতের বিদ্রোহ ও রাজনীতির খবরে দ্য টাইমস এর শিরোনাম বিশ্বের প্রতিটি অংশে সুপরিচিত। দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ শয়ে শয়ে ঘটনাতে নিজেদের আলাদা প্রমাণ করেছে, আর ডেইলি নিউজও তাই।' 'নিউইয়র্ক হেরাল্ড' যদি সংবাদপত্রকে আফ্রিকার প্রাণকেন্দ্রে, কল্পকাহিনী ও রহস্যের গন্ডিতে নিয়ে যেতে চায়, তবে কার কী বলার আছে? তারা যদি সে খরচ বহন করতে পারে, তাহলে অন্য কাগজ কেন গজরগজর করবে? এটি তো শুধু অর্থের খেলা, যা সমস্ত নয়া উদ্যোগের কেন্দ্রে। তার পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলে গোটা আফ্রিকায় অভিযান করা যায়। শুধু অন্বেষণই নয়, তাকে জয় করে সভ্যও বানানো যায়। এমনকি শুধু সভ্যই নয়, রেলপথ দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত চিরে দেওয়া যায়। তাহলে হিংসা কেন? নিউ ইয়র্ক হেরাল্ডের মতো পুরো বিশ্ব আপনাদের জন্য খোলা।

    কাজটার মাহাত্ম্য কোথায়? যাকে খুঁজতে যাওয়া সেই পথিক হারিয়ে যায়নি। তিনি বেঁচে আছেন। যদি তিনি মারা যেতেন, আর তাঁর কাগজপত্র উপজাতিদের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকত, তাহলে আমি কাগজের প্রতিটি টুকরো ও তাঁর আবিষ্কারের প্রতিটি বস্তু , তাঁর হাড়গুলি সহ উদ্ধার করে এনে যাদের কাছে সেসব মূল্যবান, তাঁদের হাতে তুলে দিতাম। যে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে, সেটা ততটা মহৎ নয় যতটা বুদ্ধির। আমি তাঁকে অসুস্থ, নিঃস্ব অবস্থায় পেয়েছি; আমার উপস্থিতি দিয়ে আমি তাঁকে আনন্দ দিয়েছি, আমার রসদ দিয়ে আমি তাঁকে স্বস্তি এনে দিয়েছি।

    নাকি তাঁকে আনন্দ দেওয়া বা তাঁর উপশমের ব্যবস্থা করাটাই আপনাদের বিরক্তির কারণ? আহা, মশাইরা, আপনারাও কি তাঁর প্রয়োজনীয় শুশ্রূষাটুকুর ব্যবস্থা করতেন না? আপনারা যদি একটি শিশুকে নর্দমায় পড়ে যেতে দেখেন, তাকে উপরে টেনে তুলতে কি হাত বাড়ান না? যদি সত্যিকারের দুর্দশা প্রত্যক্ষ করেন, তা উপশমের চেষ্টা কি করবেন না? দুর্বলতার সামনে থাকলে নিজ শক্তির একটি অংশ দিয়ে সাহায্য করবেন না? দুঃখকষ্ট চোখে পড়লে তা দূর করার চেষ্টা করবেন না?

    আচ্ছা, তাহলে, আপনারা কেমন করে নিজেরাও অনুরূপ পরিস্থিতিতে যা করতেন সেই একই কাজের জন্য আমাকে পুরস্কৃত করলেন? আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রথমে আমার বর্ণনার সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন; তারপর সন্দেহ করা হয় যে লিভিংস্টোনের কাছ থেকে আসা চিঠি বলে আমি যা বলছি সেগুলো সব জাল; তারপর আমাকে চাঞ্চল্যকর খবর পরিবেশনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়; এরপর আমার পরিবেশত তথ্যগুলি নিয়ে শ্লেষ করা হল। এমনভাবে তিরস্কার করা হল যেন আমি ঘোর অপরাধ করেছি। একটা সাধারণ গল্প – পালিশহীন, সরল, স্পষ্ট, আক্ষরিক সত্য—তার মধ্যেও আপনারা দোষ খুঁজে পেলেন! কি ভয়ানক দুর্বলতা! কতটা বালসুলভ! কিন্তু, সম্পাদক ও সমালোচকরা বিশ্বাস করুন বা না করুন, , এই বইটিতে যাকিছু বিবরণ আছে তা আমার সর্বোত্তম জ্ঞান এবং বিশ্বাস অনুসারে লেখা।

    আর ভদ্রভূবিদরা, আপনাদের নিজের স্বপক্ষে কী যুক্তি আছে? কি ভাবছেন, যে জেমস ব্রুস, রেনে ক্যালি বা পল ডু চাইলুর মতন আমাকেও আপনাদের সম্মিলিত অবিশ্বাস দিয়ে হত্যা করবেন? মনে করেন যে আপনাদের নির্দয়তায় আমি আহত হব, যেমন আপনারা বিখ্যাত বার্টন ও বীর পেথেরিককে ক্ষত বিক্ষত করেছিলেন? আপনারা গোটা বিশ্বকে ভাবতে শিখিয়েছেন যে আপনারা আপনাদের মহান সহযোগীর বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তাকে ঘিরে যখন নীরবতা বিরজমান, সেই সময়ে আপনারা সবাইকে বিশ্বাস করাতে চেয়েছেন যে আপনারাও তাঁর খবরাখবরের জন্য গভীরভাবে উৎসুক। আপনার কাছ থেকে সাহায্য বা পরামর্শ না চেয়েই, তাকে খুঁজে বের করার অভিযান শুরু থেকে শেষ অবধি চালানো হয়েছিল আর তারপর আপনাদের জানানো হয়েছিল যে, "লিভিংস্টোনকে খুঁজে পাওয়া গেছে, এবং তাঁকে উপশম দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে: আপনাদের মহান সহযোগী এখনও বেঁচে আছেন, আগের চেয়েও প্রবলতর বেগে তিনি ফের আবিষ্কারের নেশায় মেতে উঠেছেন।" আপনাদের তাতে উত্তর কি হল? "এটা এমন একটি বিষয় যার উপর কিঞ্চিৎ আলোকপাত বাঞ্ছনীয়, কারণ এমন একটি বিশ্বাস প্রবল হয়ে উঠছে বলে মনে হচ্ছে যে মিঃ স্ট্যানলি ডক্টর লিভিংস্টোনকে আবিষ্কার ও উদ্ধার করেছেন; যদিও, মিঃ স্ট্যানলির শক্তি, কার্যকলাপ এবং আনুগত্যের প্রতি কোন অবজ্ঞা প্রকাশ করা হচ্ছে না, তবে কোনো আবিষ্কার ও ত্রানের গল্প যদি এখানে থেকে থাকে, তাহলে আদতে ড. লিভিংস্টোনই মিঃ স্ট্যানলিকে আবিষ্কার ও উদ্ধার করেছেন। বস্তুত ডঃ লিভিংস্টোন স্বাচ্ছন্দ্যেই ছিলেন বরং মিঃ স্ট্যানলিই প্রায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলেন। দুই পক্ষের অবস্থান পরিষ্কারভাবে বলা বাঞ্ছনীয়। আমরা বিশ্বাস করি যে সোসাইটি প্রেরিত অভিযান ডাঃ লিভিংস্টোন এবং মিস্টার স্ট্যানলি উভয়েরই স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করবে আর তাঁদের নিজের নিজের আরব্ধ কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’’

    মশাইরা, জিজ্ঞাসা করতে পারি কি, যে আপনারা যদি বিশ্বাসই করেন যে ডঃ লিভিংস্টোন বিলাসেই আছেন, তাহলে আপনারা কাকেই যা সাহায্য করার জন্য অভিযানটি পাঠিয়েছিলেন?

    আমি ইংল্যান্ডে এসে পৌঁছানোর পরে আপনারা কি করলেন? এক সপ্তাহ আগেই আপনাদের সহযোগীর চিঠিগুলি আপনার হাতে এসে পৌছেছে। তারপর আপনারা কী করেছিলেন? সহৃদয় পাঞ্চের পাতায় এর উত্তর দেখুন: "রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট, যিনি আবিষ্কার করেছিলেন যে লিভিংস্টোন স্ট্যানলিকে আবিষ্কার করেছিলেন, স্ট্যানলি লিভিংস্টোনকে নয়, শেষ পর্যন্ত আবিষ্কার করেছেন যে স্ট্যানলি ইংল্যান্ডে রয়েছেন। এটি খারাপ আবিষ্কার নয়। তবে মনে হচ্ছে, এক সপ্তাহ ইংল্যান্ডে থাকার পর, ৬ই আগস্ট, জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটি তাঁকে আবিষ্কার করেছে। "ডেইলি টেলিগ্রাফ"কে বলতে দেওয়া যাক:" মিস্টার স্ট্যানলির রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে একটি গম্ভীর ও সৎ সংশোধনী প্রাপ্য , কারণ তিনি (মিস্টার স্ট্যানলি) এই মহান অভিযাত্রীর জীবন বাঁচিয়েছেন ও তাঁর কাছে থেকে সমস্ত মূল্যবান নথি (চিঠি) আমাদের জন্য নিরাপদে নিয়ে এসেছেন।" আমি ইংল্যান্ডে পৌঁছানোর এক সপ্তাহ পরে একটি ঠান্ডা ধন্যবাদ-জ্ঞাপক চিঠি পেয়েছি।

    আপনার সহকর্মীর জীবিত থাকার সুসংবাদ শুনে আপনারা কীভাবে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করলেন? আপনাদের কাউন্সিলের নির্দেশে সংস্থার ভাইস-প্রেসিডেন্ট আমাকে ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশনের ভৌগলিক বিভাগের একটি অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমি অনুরোধ গ্রহণ করলাম। কিন্তু, আমি আমার আলচনাটি পড়ার পরে, আর বরং তীব্র সমালোচনা থেকে লিভিংস্টোনকে রক্ষা করার পরে, আপনাদের ভাইস প্রেসিডেন্ট উঠে দাঁড়ালেন, ও, একটা মধুক্ষরা, মসৃণ, উত্থানপতনহীন কণ্ঠে বললেন, "আমরা চাঞ্চল্যকর গল্প চাই না, সত্য কথা জানতে চাই।"

    কী চাঞ্চল্যকর গল্প বলেছিলাম আমি? আমার নিবন্ধটি টাঙ্গানিকা হ্রদের উত্তর প্রান্তে আমাদের আবিষ্কারের বিষয়ে ছিল। সেটি পাঠ করার পর, মিঃ সি.আর. মার্কহ্যাম কর্নেল গ্রান্টের (স্পেকের সঙ্গী) রচিত একটি নিবন্ধ পাঠ করেন, যার মূল কথা এই ছিল যে ১১° দক্ষিণে নীল নদের উৎস খুঁজে পেয়েছেন বলে দাবি করে লিভিংস্টোন যে ধারণা প্রকাশ করেছেন, তা ভারি অযৌক্তিক; যেহেতু তিনি (গ্রান্ট) গরিলা, নরখাদক বা শূকরখাদক স্থানীয়দের চিহ্নও খুঁজে পাননি, তাই তিনি ভাবতে পারেননি যে লিভিংস্টোন তাঁর ধারণার চেয়েও অনেক বেশি পশ্চিমে পৌঁছেছেন। তার পর পরই, ডাঃ চার্লস বেকে লিভিংস্টোনের আবিষ্কারের বিষয়ে তার মতামত দিতে উঠেছিলেন। বেকেও নিশ্চিত যে লিভিংস্টোন নীল নদের উৎস আবিষ্কার করেননি। লুয়ালাবা নদী নীল নদের উৎস এই তত্ত্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আপত্তি উঠেছে ডাঃ শোয়েনফুর্থের অভিযান থেকে। এই বিশিষ্ট উদ্ভিদবিজ্ঞানী পুর্ব থেকে পশ্চিমবাহিনী বিশালাকার উইয়েল নদীকে ৩° ৪৫' দ্রাঘিমাংশে আবিষ্কার করেছিলেন। বোঝা গিয়েছিল যে সেই নদীটি অ্যালবার্ট এন'ইয়ানজার পশ্চিমে নীল পর্বতমালা থেকে বেরিয়েছে আর নীল নদের অববাহিকাটিকে সম্পূর্ণভাবে কেটে প্রবাহিত হয়েছে। স্যার হেনরি রওলিনসন, আমার সম্পর্কে কিছু প্রশংসা করার পরে, বলেছিলেন যে লিভিংস্টোন আদৌ নীল নদের অববাহিকায় ছিলেন কিনা সে বিষয়ে তাঁর দৃঢ় সংশয় আছে আর তিনি বিশ্বাস করেন যে লুয়ালাবা কোনো এক বড় মধ্যাঞ্চলের হ্রদে এসে শেষ হয়েছে, তার তিনি আন্তরিকভাবে আশা করেছিলেন যে সেই আবিষ্কারই লিভিংস্টোনের শ্রমের সার্থকতা হবে।

    এবার আসুন আমরা এইসব প্রতিকূল বক্তব্যের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্যগুলি বিশ্লেষণ করি; তখনই আমরা বুঝতে পারব যে তাদের কী মূল্য! কর্নেল গ্রান্ট জাঞ্জিবার থেকে গন্ডোকোরো অবধি তাঁর বিখ্যাত পদযাত্রায় স্পেকের সঙ্গী ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে স্পেক ভিক্টোরিয়া এন'ইয়ানজা থেকে বেরোন একটি নদীকে নীল নদের উত্স হিসেবে আবিষ্কার করেছিলেন। এই নদী উত্তর-পশ্চিমে একটি হ্রদের দিকে চলে গিয়েছিল। এই হ্রদের একটি কোণ স্যার স্যামুয়েল বেকার পরবর্তীকালে আবিষ্কার করেন। স্পেকের বন্ধু হিসাবে ও তাঁর অভিযানের সঙ্গী হিসাবে, এই সাহসী ভদ্রলোক অন্য কোনও ব্যক্তিকে নীল নদের উত্স আবিষ্কার করার দাবি জানাচ্ছেন এমন শুনতে অপছন্দ করেন। এটা অবশ্যই তাঁর পক্ষ থেকে বীরত্বপূর্ণ বন্ধুত্বের একটি অংশ, তা স্বীকার করি; কিন্তু কর্নেল গ্রান্ট স্পেকের নীল নদের উৎস আবিষ্কার সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে কী জানেন? স্পেক নিজেই কী বলেছেন? "আমি ব্যবস্থা করেছিলাম যে জিনিসপত্র, গবাদি পশু ও মেয়েদের সঙ্গে গ্রান্টকে আমার চিঠি ও একটা মানচিত্র নিয়ে সরাসরি কামরাসির কাছে যেতে হবে। এগুলো তাড়াতাড়ি গনির ফ্রেডেরিককে পাঠানোর দরকার, সেসময় আমি নীল নদীর উৎস বা হৃদের থেকে তার প্রস্থানপথ পর্যন্ত যতদূর যেতে পারি গিয়ে আবার ফিরে আসব।

    এটাই প্রমাণ করে যে, ব্যক্তিগতভাবে, গ্রান্ট কখনই ভিক্টোরিয়া এন'ইয়ানজা থেকে নদীটিকে প্রবাহিত হতে দেখেননি। অত্যন্ত সরল বিশ্বাসে ও স্বর্গীয় সরলতার সঙ্গে তিনি প্রায় ষাট মাইল দূরের কামরাসির দিকে ছুটে যান, যেখানে তিনি একজন সাধারণ বার্তাবাহকের মতো স্পেকের পাঠানো খবর বয়ে নিয়ে গেছেন শুধু, আর তিনি চলে যাওয়ার পরে স্পেক "ইপন জলপ্রপাত" আবিষ্কার করেন এবং তারপর গ্রান্টের পথ ধরে উন্য়োরোর দিকে যাত্রা করেন। স্পেকের বীরত্বপূর্ণ শ্রেষ্ঠত্বই তাঁর রক্ষা কবচ; কিন্তু এটা তো ভূগোল নয়। স্পেক ও গ্রান্টের অভিযানের মতো এত ব্যয়বহুল অথচ ফলাফলহীন অভিযান দ্বিতীয় আর হয় না। শুধুমাত্র কোন এক হ্রদের দক্ষিণ ও উত্তর প্রান্ত দেখে, স্পেক ৪০,০০০ বর্গ মাইলের বেশি এলাকা জুড়ে একটি বিশাল বড় জলাশয়ের ছবি এঁকেছেন।

    যেহেতু গ্রান্ট গরিলা, নরখাদক, বা শূকর-খেকো মানুষ দেখেননি, তাই তিনি ভেবেছেন যে তিনি যা অনুমান করেছেন লিভিংস্টোন তার চেয়ে অনেকটাই বেশি পশ্চিমে চলে গেছেন। এটা অযৌক্তিক কথা। আমি নিজের চোখে উবেম্বে ও উসানসির নরখাদকদের দেখেছি ও উজিজিতে সকল আরবদের থেকেই মান্যুয়েমার নরখাদকদের কথা শুনেছি। বেকার গোন্ডোকোরো থেকে দুশ মাইল পশ্চিমে নরখাদকের কথা শুনেছেন। বার্টন ও স্পেকও উবেম্বের নরখাদকদের দেখেছিলেন। তবে লিভিংস্টোন টাঙ্গানিকার পশ্চিম তীরেরও আরও পশ্চিমে, ৪° দ্রাঘিমাংশে গিয়েছিলেন। গ্রান্টের আপত্তির তাহলে এখন কী হবে? উপজাতিদের "শুয়োর খাওয়ার" কথা তুললে, গোটা আফ্রিকার প্রায় প্রতিটি উপজাতি বুনো শুয়োরের মাংস খায়। আমিও কখনো শুনিনি উপজাতিরা শূকর পালন করে; কিন্তু লিভিংস্টোন তাদের দেখেছেন আর আমরা পূর্বদিকে নিরক্ষরেখার কাছে যে সব উপজাতিদের দেখেছি তাদের চেয়ে মান্যুয়েমারা এক উচ্চতর উপজাতি একথা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

    রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির সভাপতি স্যার হেনরি রলিনসন এই তত্ত্বের একজন প্রবল সমর্থক যে সমস্ত সুপেয় জলের হ্রদের একটি বহির্মুখ থাকতে হবে; তবুও, একই সময়ে, তিনি এও মনে করেন বিশাল নদী লুয়ালাবা একটি জলাভূমিতে বা মিঠে জলের হ্রদে গিয়ে পড়েছে, যার কোনো বহির্মুখ নেই। স্যার হেনরির কথা কি তাহলে একটু অসংগতিপূর্ণ হল না ? যদি সব মিঠে জলের হ্রদেরই স্বাভাবিকভাবেই একটি বহির্প্রবাহ থাকতেই হবে, তাহলে কেন যে "মহান স্থলবন্দী হ্রদ" লুয়ালাবার গিয়ে পড়েছে বলে ধরা হচ্ছে, তার থেকে বেরিয়ে যাওয়া কোন প্রবাহ থাকবে না?

    তবুও, লিভিংস্টোনের পক্ষে এইসব যুক্তি দেওয়ার জন্য, ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশনের ভৌগোলিক বিভাগের সভাপতি মিঃ এফ. গাল্টন, অসাধারণ নরমসুরে, আমার নামে চাঞ্চল্যকর খবর পরিবেশনের অভিযোগ আনলেন।

    কিন্তু কেন? লিভিংস্টোন এনগামি নদী আবিষ্কার করতে যাত্রা শুরু করেছিলেন, নির্ভীকভাবে বাধা টপকে এগিয়ে গেছেন আর তাঁর সকল শ্রম সার্থক হয়েছে এই নদী আবিষ্কার করে। ফ্রান্সিস গ্যালটন এনগামি হ্রদ আবিষ্কারের উদ্যোগ নেন। তিনি কীভাবে সফল হয়েছিলেন, তার সঙ্গী, অ্যান্ডারসন, এভাবে বর্ণনা করেছেন (এন্ডারসনের 'লেক এনগামি,' পৃষ্ঠা 238):
    “অবশ্যই স্বীকার করব যে আমার বন্ধুর (গ্যালটনের) বর্ণনাটি খতিয়ে পড়তে গিয়ে যখন দেখলাম যে তিনি এই সুন্দর দাবি রেখেছেন যে তিনি লেক এনগামিতে পৌঁছানোর বিষয়ে খুব একটা প্রচেষ্ট ছিলেন না, আমি প্রথমে কিছুটা চমকেই গিয়েছিলাম। একথা সত্যি যে, ওয়ালফিশ উপসাগরের তীরে পা রাখার সময়, আমাদের সেখানে পৌঁছানোর আশা ছিল সামান্য ; কিন্তু আমার নিজের দিক থেকে অন্তত, আমি সর্বদাই আমাদের যাত্রার মূল লক্ষ্যটি একদম এনগামি বলেই ভেবেছিলাম।” আবার, পৃষ্ঠা ২৫১ দেখুন: “ শীঘ্রই সভ্য জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনায় গাল্টন আনন্দিত হয়েছিলেন। যদিও তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে তিনি নিজেও আমাদের মতো কষ্ট ও ক্লান্তি সহ্য করতে সক্ষম , এও স্পষ্ট ছিল যে তিনি তাঁর পক্ষে যথেষ্ট সহ্য করে ফেলেছেন।” পৃষ্ঠা ২৪০ : "আমাদের (গ্যাল্টন এবং অ্যান্ডারসনের) এনগামি হ্রদে পৌঁছাতে না পারার ব্যর্থতা আমাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছিল।" পৃষ্ঠা ২৫২: “তাঁর প্রত্যাবর্তনের কিছু পরেই, একথা জানতে পেরে খুশি হয়েছিলাম যে রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটি বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের জন্য পুরস্কার হিসাবে তাঁকে স্বর্ণপদক দিয়েছেন।”

    ইংরেজদের “লিভিংস্টোন অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান” এর সাথে যুক্ত তরুণ ভদ্রলোকদের উদ্দেশ্যে একটি কথা না বলে আমি এই বইটি শেষ করতে পারি না। রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির কাউন্সিল যে তাঁদের ফিরে আসার জন্য নিন্দা করবেন তা বুঝে উঠতে আমি সম্পূর্ণ অক্ষম হয়েছিলাম। যে অর্থ থেকে তাদের পোশাক ও রসদপত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেটা ব্রিটিশ জনগণের দেওয়া। যখন তাদের জানানো হয়েছিল যে আমার অভিযান ব্যর্থ হয়েছে, তখন তারা দিয়েছিল শুধুমাত্র ডাঃ ডেভিড লিভিংস্টোনের ত্রাণের জন্য; কাউন্সিল জনগণের উদ্দেশ্যে সংবাদপত্রে যে বিজ্ঞাপনটি দিয়েছিল তাতে ডাঃ লিভিংস্টোনের কাছে ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবক নেতা চাওয়া হয়েছিল। ডসন, হেন ও লিভিংস্টোনকে তারপর এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সমিতির এক সভায় লেফটেন্যান্ট. ডসন প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন যে, ব্রিটিশ জনসাধারণের দৃষ্টি এখন তাঁর দিকে পড়ায়, লিভিংস্টোনের ভাগ্য-রহস্য উদঘাটন করার বিষয়ে বা তিনি কোথায় আছে খুঁজে বের করার জন্য তিনি আরও বেশি উদ্দীপ্ত হয়ে পড়েছেন। এই তরুণ ভদ্রলোক ডাঃ লিভিংস্টোন-এর অনুসন্ধান ও ত্রাণের নির্দেশটি বিশ্বস্তভাবে পালন করার জন্য ইংল্যান্ড থেকে জাঞ্জিবারের উদ্দেশ্যে রওনা হন। নেতাটি যখন তাঁর যাত্রা শুরুর স্থান বাগামোয়োতে পৌঁছালেন, তখন তিনি শুনতে পেলেন যে ডাঃ লিভিংস্টোনকে পাওয়া গেছে ও তাঁকে উপযুক্ত রসদ সামগ্রী যোগান দেওয়া হয়েছে, তখন তিনি তাঁকে দেওয়া নির্দেশ অনুসারে, ইংরেজ রাজদূতের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য দ্রুত জাঞ্জিবারে ফিরে যান। তিনি তাঁকে উপদেশ দিয়েছিলেন যে, এই পরিস্থিতিতে, তাঁর পক্ষে সেই অভিযানটি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোন অর্থ নেই। সেই একই জায়গা থেকে তিনি এও শোনেন যে , ডঃ লিভিংস্টোন দেশের ভূবিদ্যাবিশারদদের প্রতি বিদ্বিষ্ট ছিলেন। একটি নির্দিষ্ট ব্লু বুকের একটি নির্দিষ্ট পোস্টস্ক্রিপ্টে এর সাক্ষ্য আছে। এরপর নেতা (লেফটেন্যান্ট ডসন) পদত্যাগ করেন, কারণ তাঁকে বিশ্বাস করানো হয়েছিল যে তাঁর উপস্থিতি ডাঃ লিভিংস্টোনের কাছে বিশেষ পছন্দের হবে না। লেফটেন্যান্ট. হেন পরবর্তীকালে ত্রাণ দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব নেন; কিন্তু তিনিও যখন যাত্রা শুরুর প্রাথমিক পর্যায়ে, আমি ব্যক্তিগতভাবে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলাম। ডঃ লিভিংস্টোনের রসদের প্রয়োজন আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তাকে জানিয়েছিলাম যে লিভিংস্টোনের নিজের পরীক্ষার বাবদে তৈরি এক তালিকা অনুসারে, শুধুমাত্র কিছু বিলাসিতার দ্রব্য ও পঞ্চাশজন ভাল স্বাধীন মানুষ ছাড়া তাঁর কাছে প্রয়োজনের সমস্ত রসদ রয়েছে। তিনিও জাঞ্জিবারে ফিরে আসেন, তাঁর বন্ধু ডক্টর কার্কের সঙ্গে পরামর্শ করেন ও মিঃ অসওয়াল্ড লিভিংস্টোনের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে পদত্যাগ করেন। অবশেষে, এই ভদ্রলোকটি, যিনি অভিযাত্রীর পুত্রও বটে, তিনিই তাঁর পিতার জন্য একটি ত্রাণদলের নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব দেন। কিন্তু এই যুবক ভদ্রলোকটি এক গুরুতর অসুখে ভুগতে শুরু করেন , যার ফলে তাঁর পিতার বন্ধু ডক্টর কার্কের মত দেন যে, তিনি এমন একটি অভিযান শুরু করার বাবদে সম্পূর্ণ অক্ষম । তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন।

    অকপট ও ন্যায্য কথা বলার দাবিতে বলি, আসুন তো দেখি ইংরেজ অনুসন্ধান দলের প্রত্যাহার ও প্রত্যাবর্তনের জন্য কে আসল দায়ী? আমার বিনীত মতে, এটা না লেফট. ডসন, না তাঁর অপর কোন সঙ্গী। তাঁদের বলা হয়েছিল যে গিয়ে লিভিংস্টোনকে উপশমের ব্যবস্থা করতে, কিন্তু সেই সঙ্গে ডাঃ কার্কের সঙ্গে পরামর্শ করতেও বলা হয়েছে। এবার ডাঃ কার্ক যদি তাঁদের না যেতে পরামর্শ দেন, কারণ তিনি ভেবেছেন যে ডাঃ লিভিংস্টোন তাঁদের উপস্থিতিটা অপছন্দ করবেন, আমার মতে, তরুণ ভদ্রলোকদের ফিরে আসাটা একেবারেই ঠিক কাজ হয়েছে ; কারণ তিনিই তাদের কপালে উপদেষ্টা হিসাবে জুটেছিলেন। যদি তাঁর মতে, উন্যানয়েম্বেতে তাঁদের উপস্থিতি প্রকৃতপক্ষেই ডাঃ লিভিংস্টোনের কাছে আপত্তিজনক হবে, তাহলে তাঁদের ফিরে আসার পরামর্শ দেওয়ার অধিকারও তিনি রাখেন। তবে ডঃ কার্ক যদি বলে থাকেন যে তাঁদের উপস্থিতি লিভিংস্টোনের কাছে আপত্তিকর হবে, তাহলে অবশ্য আমি ডাঃ কার্কের সঙ্গে একমত নই। আমি জানি, তাঁকে সাহায্য করতে এলে ডঃ লিভিংস্টোন তাদের স্বাগতই জানাতেন। তাঁর ভাবনা এটাই হত যে, যদি তরুণেরা কেউ তাঁর "কাজের সুতো" ধরে কাজ করতে আগ্রহী হয়! তবে আমিও ডঃ কার্কের সঙ্গে একমত, যে তাঁদের ত্রাণের মতন তাঁদের উপস্থিতিও অপ্রয়োজনীয়, ছিল। ডাঃ লিভিংস্টোন নাকি রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির সঙ্গে ঝগড়া করেছেন, বা এর সদস্যদের প্রতি তিনি বিদ্বেষ পোষণ করেন এই বিষয়েও আমি ডাঃ কার্কের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করি।

    কিন্তু অভিযানের পতনের আসল ও প্রধান কারণ ছিল কাউন্সিলের তরফ থেকে নেতা লেফটেন্যান্ট ডসনকে ঠিক করে কোন পরিস্থিতিতে কি করবেন তা নির্দেশ না দিয়ে দেওয়া। লিভিংস্টোনের চিঠি ও পাঠানো খবরাদিসহ আমার সঙ্গে দেখা হলে ও লিভিংস্টোনের প্রয়োজনীয় রসদের যথেষ্ট পরিমাণে ব্যবস্থা হয়েছে বলে তাঁকে ভরসা দেওয়া হলে তিনি ঠিক কি করবেন সেটা কেউ বলে দেয়নি। যদি তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে মেনে নিত যে আমেরিকান অভিযান ইতিমধ্যেই তাদের দয়া-দাক্ষিণ্য দেখানোর কাজে সফল হয়েছে, ও এই যুবকদের সবরকমের আকস্মিক পরিস্থিতির জন্য তৈরি করে পাঠাত, তাহলে আর কাউন্সিলের এখন লেফটেন্যান্টকে বা তাঁর কোন সঙ্গীকে আনুগত্যের অভাব বা পৌরুষবোধের অভাবের অজুহাতে অভিযুক্ত করার দরকার পড়ত না। না লেফটেন্যান্ট ডসন ও তাঁর সাহসী সঙ্গীদের আজ স্বেচ্ছায় সোসাইটির সেবায় নিজেদের ভাগ্য ও জীবন উৎসর্গ করার জন্য অনুশোচনা করতে হত! যেহেতু কাউন্সিল নির্দেশাবলীর থেকে এই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি বাদ দিয়েছে, তাই কাউন্সিলের সদস্যরা নিজেরাই ও একমাত্র তারাই ইংরেজ অনুসন্ধান ও ত্রাণ অভিযানের পতনের জন্য দায়ী।

    আর এবার, আমার প্রিয় পাঠক, আমার কলম বন্ধ করতে হবে। আমি বিদায় জানাই বন্য উদ্ধত গোগোদের; উপঢৌকন-প্রিয় ব্ল্যাকমেইলারদের সর্দার মিওনভুকে; চিল্লামিল্লি করা ভিনজাদের; আতিথ্যহীন রুন্ডিদের; আরব ক্রীতদাস-ব্যবসায়ী ও দো-আঁশলাদের; এককালীন বা পালাজ্বর ইত্যাদি সকল রকম জ্বরকে; মাকাটা জলাভূমি ও কুমিরদের; লোনা জল ও গর্জনশীল সমভূমিকে; আমার নিজের কালো বন্ধু ও বিশ্বস্ত সঙ্গীদের; নায়ক-অভিযাত্রী ও খ্রিস্টান ভদ্রলোক, লিভিংস্টোনকে; এবং আপনাদের, সমালোচক, ও বন্ধু ও শত্রু ও সকলকে আমি বিদায় জানাই!





    পরিশিষ্ট



    একটা কথা বলতে চাই যে এই বইয়ের জায়গায় জায়গায় আমি কয়েকজন ভূগোলবিদ ও অন্যদের বিষয়ে কিছু কড়া কথা লিখেছি। যদি, এর মাধ্যমে, আমি কোন ব্যক্তির অনুভূতিতে আঘাত করে থাকি তো আমি দুঃখিত। আমার তরফের কৈফিয়ত হল, আমি যা লিখেছি তা আমার লেখার সময়ের নিজস্ব অনুভূতির ফসল; আমি একজন অভিযাত্রী ও একজন সাংবাদিক, ললিত ভঙ্গিমার থেকে দ্রুত লেখায় বেশি অভ্যস্ত, তবে আমি এই চিন্তাভাবনা ও প্রথম ছাপটিকে যেমন আছে আর তাদের যা মুল্য তেমনটাই আপনাদের সামনে ধরে দিতে চেয়েছি। সাহিত্যের দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলোকে দারুণ সুন্দর করে উপস্থিত করতে চেয়ে সম্পাদনা করতে পারতাম হয়ত, কিন্তু তাতে আমার নিজস্বতার ছাপ থাকত না।

    একেবারে শেষ মুহুর্তে, এবং যখন এই পাতাগুলি প্রায় সকলই মুদ্রিত হয়ে গেছে, সেই সময় আমি রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির সদস্যদের সঙ্গে ডিনারের আমন্ত্রণ পেয়ে শুধু যে অবাক হয়েছি তাই নয়, সন্তুষ্টও কম হইনি। কোনো এক ভাবে, ইংল্যান্ডে পা রাখার পর থেকেই, বস্তুতপক্ষে প্রায় তার আগে থেকেই, আমার মনে এই ধারণা বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছিল যে, মহান অভিযাত্রীকে খুঁজে বের করা তথা উদ্ধার করার ও তার বহু বছরের পরিশ্রমের ফলাফল ইংল্যান্ডে নিয়ে এসে ভৌগোলিক বিজ্ঞানের জগতে যে ক্ষুদ্র ও নম্র অবদানটুকু রাখার সুযোগ আমাকে ভাগ্য করে দিয়েছিল, রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির কাছে আমার সেই প্রচেষ্টা স্বাগত নয়। মনের সেই ছাপ হয়তো আমার বইয়ের কিছু মন্তব্যে তিক্ততার ছোঁয়া বয়ে এনেছে; গভীর আন্তরিকভাবে, আমি এখন স্বীকার করতে চাই যে, ধারণাটি ভিত্তিহীন ছিল। বড় বড় সংস্থাগুলো ধীরে ধীরে নড়ে: আমি অধৈর্য ছিলাম; আর, নিঃসন্দেহে, আমার আশা ছিল যে আমার বলা গল্পটি অবিলম্বে বিনা দ্বিধায় ও কোন রকম সন্দেহ ছাড়াই গৃহীত হবে। বলা বাহুল্য সেই প্রত্যাশা নিতান্তই ভুল। আমি ভেবেছিলাম যে আমার গল্পের সুবাদে আমাকে অবিলম্বে রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটি অবিলম্বে সাদরে ডেকে নেবে , কিন্তু এত রাজকীয় ও বৈজ্ঞানিক একটি সংস্থার এত দ্রুত নড়ে বসার সমস্যাগুলোর কথা মোটেই ভাবতে পারিনি। দেবতাদের জাঁতা নাকি খুবই ধীরে ধীরে যদিও নিশ্চিতভাবে পেষাই করে বলে বলা হয়; সেরকমই রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটি ও ধীরে ধীরে কিন্তু নিশ্চিতভাবে আবিষ্কার করেছিল যে আমি ভন্ড নই, আর আমি যা করেছি বলে বলছি সেটা আমি সত্যিই করেছি, আর তারপর তারা যে উষ্ণতা ও উদারতার সঙ্গে তাদের সদস্যপদ গ্রহণের আমন্ত্রণ আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছিল, তা আমি কখনই ভুলব না। আমি এখন রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির সদস্যদের আশ্বস্ত হতে অনুরোধ করছি যে আমার সামান্য পরিষেবাগুলির বাবদে তাদের দেওয়া স্বীকৃতি কিছুটা দেরিতে এলেও আমার কাছে সতা কম স্বাগত নয়। বিশেষ করে আমি স্যার হেনরি রলিনসনকে ধন্যবাদ জানাই, তিনি আমার সম্পর্কে যে সকল সদয় ও উদার কথা বলেছিলেন শুধু তার জন্যই নয়, বরং আমাকে ভাল করে জানার আগে ও কিছু অধুনা প্রকাশিত বিশেষ তথ্য জানার আগেই একবার তড়িঘড়ি করে তিনি যে মন্তব্যটি করেছিলেন তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্যও। ইংল্যান্ডের মহামান্য রাণী আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন, ঠিক তার পরেই আমি রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির পদকটিকে স্থান দেব।



    সমাপ্ত



    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ | ৩২ | ৩৩ | ৩৪ | ৩৫ | ৩৬ | ৩৭ | ৩৮ | ৩৯ | ৪০ | ৪১ | ৪২ | ৪৩ | ৪৪ | ৪৫ | ৪৬ | ৪৭ | ৪৮ | ৪৯ | ৫০ | ৫১ | ৫২ | ৫৩ | পর্ব ৫৪ | পর্ব ৫৫ | পর্ব ৫৬ | পর্ব ৫৭ | পর্ব ৫৮ | পর্ব ৫৯ | পর্ব ৬০ | পর্ব ৬১ | পর্ব ৬২ | পর্ব ৬৩ | পর্ব ৬৪ | পর্ব ৬৫ | পর্ব ৬৬ | পর্ব ৬৭ | পর্ব ৬৮ | পর্ব ৬৯ | পর্ব ৭০ | পর্ব ৭১ | পর্ব ৭২ | পর্ব ৭৩ | পর্ব ৭৪ | পর্ব ৭৫ | পর্ব ৭৬ | পর্ব ৭৭ | পর্ব ৭৮ | পর্ব ৭৯ | পর্ব ৮০ | পর্ব ৮১ | পর্ব ৮২ | পর্ব ৮৩ | পর্ব ৮৪ | পর্ব ৮৫ | পর্ব ৮৬ | পর্ব ৮৭ | পর্ব ৮৮ | পর্ব ৮৯ | পর্ব ৯০ | পর্ব ৯১ | পর্ব ৯২ | পর্ব ৯৩ | পর্ব ৯৪ | পর্ব ৯৫ | পর্ব ৯৬ | পর্ব ৯৭ | পর্ব ৯৮ | পর্ব ৯৯ | পর্ব ১০০ | পর্ব ১০১ | পর্ব ১০২ | পর্ব ১০৩ | পর্ব ১০৪ | পর্ব ১০৫ | পর্ব ১০৬ | পর্ব ১০৭ | পর্ব ১০৮ | পর্ব ১০৯ | পর্ব ১১০ | পর্ব ১১১ | পর্ব ১১২ | পর্ব ১১৩ | পর্ব ১১৪ | পর্ব ১১৫ | পর্ব ১১৬ | পর্ব ১১৭ | পর্ব ১১৮ | পর্ব ১১৯ | পর্ব ১২০ | পর্ব ১২১ | পর্ব ১২২ | পর্ব ১২৩ | পর্ব ১২৪ | পর্ব ১২৫ | পর্ব ১২৬ | পর্ব ১২৭ | পর্ব ১২৮ | পর্ব ১২৯ | পর্ব ১৩০ | পর্ব ১৩১ | পর্ব ১৩২ | পর্ব ১৩৩ | পর্ব ১৩৪ | পর্ব ১৩৫ | পর্ব ১৩৬ | পর্ব ১৩৭ | পর্ব ১৩৮ | পর্ব ১৩৯ | পর্ব ১৪০ | পর্ব ১৪১ | পর্ব ১৪২ | পর্ব ১৪৩ | পর্ব ১৪৪ | পর্ব ১৪৫ | পর্ব ১৪৬ | পর্ব ১৪৭ | পর্ব ১৪৮ | পর্ব ১৪৯ | পর্ব ১৫০ | পর্ব ১৫১
  • ভ্রমণ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৫৮৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • স্বাতী রায় | 117.194.***.*** | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:২৬537807
  • অবশেষে  How I Found Livingstone বইটির অনুবাদের শেষ পর্ব প্রকাশ হল। প্রথম পর্ব প্রকাশের তারিখ ছিল ১৭ই সেপ্টেম্বর  ২০২০ আর আজ ১৯ শে সেপ্টেম্বর ২০২৪। অর্থাৎ চার বছর।

    অনুবাদক হিসেবে আমার কিছু কৈফিয়ত দেওয়ার থাকে।  দীর্ঘ দীর্ঘ কাল ধরে চলা এই অনুবাদ কর্ম করতে গিয়ে আমি এক অজানা জগত আবিষ্কার করেছি। সত্যি কথা বলতে,আমার আফ্রিকা নিয়ে শুধু স্কুলের অবশ্য পাঠ্য ভূগোলে পড়া সেই অজানা মহাদেশ এর বাইরে আর কিছুই জানা ছিল না। স্ট্যনালির হাত ধরে আমি এক সম্পূর্ণ অচেনা দুনিয়ায় প্রবেশ করেছি। তাঁর সঙ্গী হয়ে আমার নিজের জঙ্গল দেখার চোখ পাল্টে দিয়েছে। আর চিনেছি ব্যক্তি স্ট্যানলির মাধ্যমে এক কলোনিয়ান দেখাকে। নিজের দেশের যে দুশ বছরের ইতিহাস এতকাল ধরে মন দিয়ে পড়েছি,সেই ইতিহাস বোধ দিয়ে অনুভব করতে চেষ্টা করেছি স্ট্যানলির দলের সঙ্গীদের। ফলে স্ট্যানলিকে কখনো ভালবেসেছি,  কখনো মনের ভিতর থেকে ঘৃণা করেছি - শুধু উপেক্ষা করতে পারিনি। 

    সবদিক দিয়ে দেখলে স্ট্যানলির এই লেখা একটা যুগের আফ্রিকার ছবি সযত্নে ধরে রাখলেও, ক্রিটিক্যাল ইতিহাস ও সমাজতত্ত্বের দৃষ্টিতে হয়ত এটি দামী টেক্সট হলেও, এই বইয়ের আজকের সময়ে, নিতান্ত ইতিহাসপ্রেমী মানুষ না হলে, পাঠক প্রিয় হওয়ার উপাদান নেই। উনবিংশ শতাব্দীর ছাপ এর সর্বাঙ্গে। অনুবাদক হিসেবে আমি সেই চিহ্ন মুছে দেওয়ার চেষ্টা করিনি। বরং সেই ন্যারেশন ও ভাষাগত,ভাবগত সময়ের পদচিহ্ন ধরে রাখতেই চেষ্টা করেছি। যাতে অনুবাদে মূলের আভাস থাকে।   

    সব শেষে যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলে নিতান্তই অমানুষের কাজ হবে,সেগুলি বলি। প্রথমত গুরুর কর্তৃপক্ষের তরফে  পিনাকী মিত্র ২০২০ সালে জোর না করলে একটা গোটা বই অনুবাদ করার কোন পরিকল্পনা আমার মাথায় কোনদিনই আসত না। আর অবশ্যই কৃতজ্ঞতা নীলাঞ্জন হাজরার প্রতি। প্রথম থেকে শেষ অবধি এই লেখার প্রতিটি কপি তিনি সযত্নে সম্পাদনা করেছেন। নিজের যাবতীয় কাজকর্মের পরেও শুধু কাজটা শুরু করার খাতিরে আর আমার অনুরোধে আড়াই -তিন বছর ধরে পর্দার পিছন থেকে এই সম্পাদনা চালানোর জন্য আমি খুবই কৃতজ্ঞ নীলাঞ্জনের প্রতি। অনুবাদের মানের দায়িত্ব ( যেটা কোথাও কোথাও মোটেই নিজের কাছেই গ্রহণযোগ্য  না) অবশ্য সম্পূর্ণ আমার নিজের। গুরুর তরফে সৈকত ও ঈপ্সিতার অকুন্ঠ সমর্থন ছাড়া জনৈক সদস্যের বার বার আপত্তি সত্ত্বেও প্রায় পাঠক বিহীন এই লেখা এতবছর ধরে প্রকাশ হত না। গুরুর টিম বিশেষ করে, সংহিতা আর নিবেদিতাকেও অশেষ ধন্যবাদ। 
  • r2h | 165.***.*** | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৯537811
  • এটা একটা বিরাট কাজ হলো - পরিশ্রমে, ঐতিহাসিক মূল্যে, পরিসরে। কুডোস।
  • ইন্দ্রাণী | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:২৯537812
  • এবার ব‌ই হয়ে বেরোক।
  • হীরেন সিংহরায় | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০৪537815
  • হেনরি মরটন স্ট্যানলি সম্বন্ধে আমার ধারণা ও পড়া শোনা অন্য রকম ( আমার আফ্রিকা বইতে বিস্তারিত লিখেছি) হলেও আপনার এই অসাধারণ কাজের জন্য সাধুবাদ জানাই । কাজটা সহজ ছিল না । আমি মাঝে মধ্যে আমার চেনা আফ্রিকার সঙ্গে ম্যাপ মেলানোর চেষ্টাও করেছি। লিখেছিও হয়তো আপনাকে।
     
     বাল্যকালে ওই ডকটর লিভিংসটোন আই প্রিজিউম বাক্যটি পডেছি  কিন্তু এটাও সত্য সেই সাক্ষাতকারের দিনগুলির পাতা পাওয়া যায় নি।  আগে বোধহয় লিখেছি আমাদের পাশের গ্রামে স্ট্যানলির সমাধি - সেখানে লেখা বুলা মাতারি! কঙ্গো যদি যান, তার অর্থ হয়তো বুঝবেন।
     
    স্ট্যানলি সেই যে আফ্রিকাকে ডারক কনটিনেনট বলে গেলেন, সেই তকমা আজো লেগে আছে!
     
    বই হোক । আমার আবেদন ! 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:১৪537818
  • বিশাল একটা কাজ হল। একটা দীর্ঘ সিরিজ এত দিন ধৈর্য ধরে অনুবাদ করে চলা বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। কুর্ণিশ জানাই।
  • পাপাঙ্গুল | 49.36.***.*** | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:১৭537819
  • yes 
  • রঞ্জন | 2402:e280:3d02:20a:4bed:f2fe:488e:***:*** | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৫৬537821
  • স্বাতী রায়।
    টুপি খুললাম। 
    বই হোক।
    কিনবো।
  • | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:০৮537822
  • হ্যাঁ এটা বই হোক অবিলম্বে। 
    সব বইকে 'কটা বিক্রি হল' দিয়ে মাপা যায় না। এটা অবশ্যই বই হোক যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। 
     
    মন্তব্যশুন্য মানেই পাঠকশুন্য নয় কিন্তু।  
  • রঞ্জন | 2402:e280:3d02:20a:4bed:f2fe:488e:***:*** | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:১১537823
  • হক কথা।
  • অয়নেশ | 2402:3a80:4300:4cba:178:5634:1232:***:*** | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:১৩537825
  • স্ট্যানলি সেইসব ঔপনিবেশিক শয়তানের মধ্যে বিশেষ একজন যার হাত ধরে আফ্রিকা অন্ধকারের অতলে তলিয়ে গিয়েছে। লিওপোল্ডের হাড়হিম অন্যায়ের ভিত্তি স্থাপনের আসল ভৌগোলিক ইঞ্জিনিয়ার হল এই স্ট্যানলি আর তার এইসব অভিযান। মনে রাখতে হবে এই বই শ্বেতাঙ্গ উপনিবেশী ও  সাম্রাজ্যবাদী অভিযাত্রিক কর্মকান্ডের কাছে বাইবেলের মতন। যাকে ঘিরে ঔপনিবেশিক প্রভুদের যে এই আবেগ, উপনিবেশের অত্যাচারিত মানুষের ঠিক উল্টো। এই বইয়ের অনুবাদে আপত্তির কারণ তো তা হতে পারে না। কিন্তু সেই ওপনিবেশিক সত্যের প্রতি দায় মেনে সেই জন্যই এই দীর্ঘ অনুবাদের সঙ্গে স্ট্যানলির সম্পর্কে একটা ছোট হলেও নৈবর্তিক আলোচনা থাকা বোধহয় দরকার ছিল। (অনুবাদের কথাই যখন আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই বিষয়ে অনেক বেশি খুশি হতাম ই ডি মোরেল বা অ্যাডাম হক্সচাইল্ডএর লেখা পত্তরের অনুবাদে। একান্তই আমার মত) যাই হোক, ভিন্ন স্পিরিটের মন্তব্যের জন্য দুঃখিত। 
    এসব ছাড়া বিপুল পরিশ্রমের জন্য অনুবাদিকাকে কুর্নিশ। 
  • হীরেন সিংহরায় | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:২৮537827
  • অয়নেশ
     
    সঠিক। সট্যানলির অভিযান কাহিনির অনুবাদ এক অসাধারণ কাজ। 
     
    মনে করি সট্যানলির ওপরে যদি অনুবাদক একটা অবজেকটিভ পরিচ্ছেদ যোগ করেন , ভালো হয় ।  তিনি একটা বিশাল দেশকে লিওপোলডের হাতে সাজিয়ে দিলেন। আমার আফ্রিকা বইতে আমি অ্যাডাম হোখশিলড মিখায়েলা ওয়ং এবং জোসেফ কনরাডকে বারবার স্মরণ করেছি( বারানদায় নরমুনড- এ্যাপোকালিপস নাউ!)।  এছাড়া পেয়েছি রজার কেসমেনটের ডায়েরি , শারল মেয়রের ও লুই ল ক্লের ডায়েরি। আর মরেল! অ্যানটওয়ারপের ডকে মরেল দেখলেন কঙ্গো গামী জাহাজে উঠছে বানিজ্যিক সামগ্রী নয়  বন্দুকের বোঝা । শত প্রলোভন সত্বেও মরেল রাজার বিরুদ্ধে লডলেন। 
     
    ১৯৯০ সালে বেলজিয়াম ঘোষণা করে রাজা  কালো মানুষদের কল্যান সাধন করেছেন। জে ব্রুঘেতে রাজার মূর্তি সহ বিশাল ফোয়ারা । ব্রাসেলসের সেই আফ্রিকা মিউজিয়াম! 
     
    ক্রিসটাল পর্বত দেখেছি। তাই সট্যানলির বুলা মাতারি( যিনি পাথর ভাঙ্গেন ) খেতাবের অর্থ বোঝা যায়। কলোনিয়াল বর্বরতার ইতিহাসে সবচেয়ে ক্রুর মানুষের পাশে দাঁড়ালেন । লিওপোলডের সঙ্গে স্ট্যানলি মিলে মিশে এক হয়ে যান। কারো কারো হীরো।
     
     
  • স্বাতী রায় | 2402:3a80:1985:7dac:b08d:caff:fed4:***:*** | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৫537835
  • সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। 
     
    @হীরেন বাবু এই বই অনুবাদের সময় প্রথম দিকেই আপনি বোধ হয় স্ট্যানলি কে নিয়ে আপনার মতামত জানিয়েছিলেন। আপনি কিছু সংশোধন ও করার কথা বলেছিলেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। 
     
    আমি তখন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম বইটাকে আমি সম্পূর্ন খোলা মনে নেব। যাতে আমার প্রথম পড়ার অভিঘাত টুকু অনুবাদে ধরা থাকে। স্ট্যানলি কে ভিলেন ধরে নিলে আমার নিজের কাজে ব্যাঘাত ঘটত।  
    তবে আমার সামান্য দেশীয় ইতিহাস পাঠের থেকে extrapolate করলে স্ট্যানলি র মতন কলোনিয়ান পুরুষকে কিছুটা চিনতে তো কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নেই। অনুবাদের অর্ধেকের বেশি হয়ে যাওয়ার পর টিম বুচার এর লেখা ব্লাড রিভার ও পড়েছি। আর ও কিছু আফ্রিকা স্থিত মিশনারীর ভাষ্য ও। 
     
    কোথায় যেন ব্যাখ্যা পড়েছিলাম বুলা মাতারি শব্দ বন্ধ এর অর্থ হল who crashes the stone. কেউ কেউ বলেন এটা দুই অর্থেই বলা যায়। একদিকে স্ট্যানলি নির্মম শোষক আর এক দিকে তিনি আফ্রিকার অন্দরে বৈপ্লবিক বদল এনেছেন। আমার এই ব্যাখ্যাটা নিজের পাঠের সঙ্গে মিলিয়ে বেশি ভাল লেগেছে। 
     
    @ অয়নেশ বাবু আপনার মতামত ভাল লেগেছে। আমার মত টুকু জানাই। ব্যক্তিগত ভাবে ইংল্যান্ডের এক অনাথ বালক থেকে এক ঔপনিবেশিক শক্তি তে পরিণত হওয়ার জার্নি টা আমার খুব ভাল লাগে। ওঁর লেখার যে ইন্টার টেক্সচুয়াল রেফারেন্স সেটা ওঁর পড়াশোনার পরিধির যে ব্যাপ্তি নির্দেশ করে সেটা আমাকে অবাক করেছে। কিন্তু সেই সঙ্গে তিনি সম সময়ের ভাইস কে ছাড়তে পারেন নি। যুগের আইডেন্টিফায়ার হয়ে রয়ে গেছেন, নতুন যুগের প্রবর্তক হতে পারেননি।  সব মিলিয়ে আমি ওঁকে ঠিক একালেরও আর দশ  জন মানুষের মতন ই সুধা বিষে মেশান বিদ্বান ও কলোনিয়াল শাসক বলেই মনে রাখব। যিনি unfortunately নিজেকে দর্পণে দেখেননি। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন