
কৈলাশশিখর ছেয়ে আছে গলানো প্ল্যাটিনামে, ছেয়ে আছে অন্যান্য শৃঙ্গগুলো। চাঁদের আলোর যে এত রংবদল হতে পারে, বরফশৃঙ্গে তার আলো ছায়ার এত বৈচিত্র্যময় শেড দেখা যেতে পারে তা হয়ত কল্পা না গেলে জানাই হোত না। ঠান্ডায় হাত ঠোঁট অসাড় হয়ে যাচ্ছে, তবু চোখ সরে না। এই ক্ষুদ্র অকিঞ্চিৎকর জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা হয়ে থাকল এই রাত। ... ...

এটা আক্ষরিক অর্থেই আনন্দ-সংবাদ, কারণ গোদি-মিডিয়া, হিন্দুত্ববাদী শক্তি আর সোসাল-মিডিয়া কীকরম ভয়ানক গাঁটছড়া বেঁধে কাজ করছে, তার প্রমাণ পেল গুরুচণ্ডালি এবং পেলাম ব্যক্তিগতভাবে আমি, গতকাল। এদের এই যৌথ গোয়ালঘরে যে আমরা সাফল্যমন্ডিত ভাবে ধোঁয়া দিতে পেরেছি, তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ ব্যাটারা নিজেরাই দিয়ে গেছে গতকাল। গোদি মিডিয়া নিয়ে ধারাবাহিকভাবে লিখে আসছি, ভিডিও করে আসছি। কাল ছিল "সীমান্তে বাংলাদেশীদের ভিড়" নামক গুলবাজির মুখোশ খোলার ভিডিও। সকালে উঠে দেখি অভাবনীয় ব্যাপার। ক্ষেপে গিয়ে এবিপি আনন্দ, তার মিডিয়া এজেন্টদের দিয়ে খুঁজে খুঁজে বার করেছে গুরুচণ্ডালির কোন কোন ভিডিওয় এবিপি আনন্দের ক্লিপ আছে। তারপর কপিরাইট ক্লেম করে অনেকগুলো নামিয়ে দিয়েছে। ফেসবুক এবং ইউটিউব জুড়ে। বেশি ভিউ যেগুলোর সেগুলো নামিয়েছে, সবকটা পারেনি, অত অধ্যবসায় থাকলে তো হয়েই যেত। ... ...



মাথায় হাতের স্পর্শে ছবি চমকে উঠেছিল। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল মা। ছবি মাকে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল। মালতী অবাক হল খুব – ছবিকে এতটা অসহায় ভাবে কাঁদতে বহুদিন দেখেনি। সেই ওর বাবা মারা যাওয়ার সময় ছাড়া। ছবির মাথাটা বুকে চেপে ধরে, মালতী কান্নাধরা গলায় বলল, “কী হয়েছে মা? কীসের কষ্ট তোর? হঠাৎ এভাবে কাঁদছিস কেন - একা একা বসে?” ... ...

সিমলা থেকে কল্পা ২২৪ কিমি, একবারও না থামলে ৭ ঘন্টার যাত্রা। অন্ধকার হয়ে যাবে পৌঁছাতে পৌঁছাতে। আমরা কিছু স্যান্ডউইচ প্যাক করিয়ে নিলাম, যাতে গাড়িতেই খেয়ে নিতে পারি। পথে এক জায়গায় সিএনজি নিতে দাঁড়ানো হল, তারপর সোওজা কল্পার দিকে। ক্রমশ দূরের বরফচুড়ারা কাছে এগিয়ে আসতে থাকে, আমরা উঠে নেমে আবার উঠে এগোতে থাকি কিন্নরভূমের দিকে। ... ...


ত্রয়ী হয়সালা মন্দির - বেলুর , হালেবিদু , সোমনাথপুরা ... ...

কড়ি দিয়ে কিনলাম - এক সাড়া জাগানো উপন্যাস। কড়ির মহিমা সব যুগেই অপার। কড়ি নিয়েই কাড়াকাড়ি এই কারণেই। কড়ি থাকলে আপনি সব কিছুই করায়ত্ত করতে পারবেন -- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেবা, আনুগত্য, মায় ভালোবাসা পর্যন্ত। আমার অবশ্য মোল্লার মতো মক্তব পর্যন্তই দৌড়ানোর ক্ষমতা। এই নিবন্ধে তারই সুলুক সন্ধানের চেষ্টা। ... ...



যারা জানেন না তাঁদের জন্য জানিয়ে রাখি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি আমার খালাত বোন। খালাত বোন বললে যেমন মনে হয় তেমন না কিন্তু আমাদের সম্পর্ক। জ্যোতির বড় হওয়া আমাদের উঠানে। খালা তখন আমাদের বাড়িতেই থাকে। আমাদের সাথে খেলতে খেলতেই জ্যোতি আজকের তারকা। আক্ষরিক অর্থেই আমাদের কোলেপিঠে করেই ওর বেড়ে উঠা। বাড়িতে মেয়ে শিশু আর না থাকায় জ্যোতির বড় হওয়াটা হয় আমাদের সাথে ক্রিকেট খেলে। আমাদেরও একটা বল বয় দরকার ছিল, বল মেরে কারো বাড়িতে পাঠিয়ে দিছি, জ্যোতি দৌড়… বলার আগেই জ্যোতি তুফান বেগে ছুটে যেত। সবার শেষ ব্যাট দিতাম, ওইটার জন্যই বসে থাকত। লাস্ট ব্যাটার হিসেবে ওকে বলা হত তুই শুধু দাঁড়ায় থাকবি, উইকেট পড়তে দিবি না। ও দাঁত চেপে দাঁড়ায় থাকত। পায়ে বল লাগলেও একটু উশ আস করে আবার দাঁড়ায় থাকত। ব্যথায় যদি কান্না করে তাহলে তো আর আমরা ওকে খেলায় নিব না, তাই ব্যথা চেপে দাঁড়ায় থাকত। এই হল ওর শুরু। এরপরে বিকেএসপিতে ক্যাম্প, এরপরে ধীরে ধীরে শুধু ওর উত্থান। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া, এশিয়া কাপের ফাইনালে জ্যোতির দারুণ সেই ইনিংস, যাতে ভর করে প্রথম কোন বড় টুর্নামেন্ট জেতার স্বাদ পায় বাংলাদেশ। এর আগে পরে এখন পর্যন্ত নারী পুরুষ দল মিলিয়ে আর কোন কাপ জিততে পারে নাই। এরপরে অধিনায়কত্ব। প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া, প্রথম বিশ্বকাপেই নজরকারা পারফর্ম করা, এরপরে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়া। দেশের মাটিতে সিরিজ জেতা পাকিস্তানের সাথে, ভারতের সাথে সমতায় সিরিজ শেষ করা, দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে তাদেরকে হারানো, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে হারানো এমন কত কত অর্জন। সবগুলার পিছনে জ্যোতির অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নাই। এমন করে জ্যোতি নিজেকে নিয়ে গেছে আলাদা উচ্চতায়। এবার ওর তারকা খ্যাতির বিপরীত চিত্র দেখার সুযোগ আসছে। দেখছে কত কুৎসিত হতে পারে দুর্বল বুদ্ধিমত্তার মানুষের হাতে প্রযুক্তি থাকলে কী করতে পারে তারা! ... ...

সত্যজিৎ রায় পথের পাঁচালি বানান ১৯৫৫ সালে। সিনেমাটা প্রবল সাফল্য পাওয়ার পরে অপুতেই ডুবে ছিলেন প্রায় গোটা ৫০ এর দশক। ওই দশকের শেষের দিকে কলকাতা শহরের পটভূমিতে ফেরেন। তারপর বহু সমকালীন বা অতীতের সামাজিক-রাজনৈতিক পটভূমি দেখা যায় তাঁর সিনেমায়, কিন্তু দেশভাগ নিয়ে কখনও কিছু বলেননি বা লেখেননি। একই কথা, ধরুন মৃণাল সেন, তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার, এইসব মহীরূহ সম্পর্কেও। যদিও চোখের সামনে বাংলা দু-টুকরো হয়ে যেতে দেখেছিলেন এঁরা সবাই। ঋত্বিক সমেত। ঋত্বিকের লেখালিখি চলছে, সেই সময় টানা। গণনাট্য সঙ্ঘের খসড়া লিখছেন। সেই সময়ের একটা লেখায় এও লিখেছেন, যে, স্বাধীনতার আগে কলকাতা আর বোম্বে, এই দুটি ছিল চলচ্চিত্রশিল্পের প্রধান কেন্দ্র। অতীত কালে লিখেছেন, অর্থাৎ কলকাতার স্বর্গ হইতে পতনের কথা তাঁর জানা, কিন্তু তার কারণ নিয়ে একটিও কথা লেখেননি কখনও। কারণটা, বলাবাহুল্য দেশভাগ। ... ...

সেনাপতিদের মৃত্যুতে দুই অসুর ভাই শুম্ভ ও নিশুম্ভ ভয়ানক রাগে জ্বলে উঠল, তারা ঠিক করল এবার নিজেরাই যাবে দেবীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে। প্রথমে এল নিশুম্ভ...দুই ভাই কিন্তু একসঙ্গে এল না - কেন কে জানে? হয়তো জানে পুরাণকার এবং অসুর ভ্রাতৃদ্বয়। সে যাই হোক দুই ভাই কি পারল, দেবীকে পরাস্ত করতে? ... ...

নির্বাচন নিয়ে নতুন যে তামাশা শুরু হয়েছে তা এক কথায় অনবদ্য! জামাত জোর গলায় গণভোট চাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের আগে। বিষয় হচ্ছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য। সংবিধান পরিবর্তন করে জুলাই সনদের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এই নিয়ে হ্যাঁ না ভোট। আমি প্রথমে এইটা নিয়ে খুব একটা ভাবি নাই। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এইটা একটা মস্ত সুযোগ লীগের জন্য। এরা যে বিপুল আগ্রহ নিয়ে গণভোট চাচ্ছে তার কারণ হচ্ছে তারা ধরেই নিয়েছে হ্যাঁ জিতবে। আচ্ছা, যদি না জিতে? এই ভোটে তো কোন প্রার্থী নাই। তাই মানুষের ভোট দিতে সমস্যা কই? লীগের যা জনপ্রিয়তা আছে, সেই সাথে বর্তমান সরকারের যে সুপার ব্যর্থতা, তাতে না জিতে তো খুব স্বাভাবিক। তখন কী হবে? এর উত্তর একটা হচ্ছে তারা হ্যাঁ না ভোটকে সুষ্ঠু ভাবে হতে দিবে না। ওইটাকে কারুকাজ করে হ্যাঁ পাস করাবে। দুই নাম্বার হচ্ছে তারা এইটা নিয়ে ভাবেই নাই। এতে যে লীগের জনপ্রিয়তা প্রমানের একটা পথ তৈরি হবে তা সম্ভবত বুঝতে উঠতে পারেনি। আচ্ছা, লীগ কি বুঝতে পারছে এইটা একটা সুযোগ তাদের জন্য? তাদের তো দেখি না গণভোটের পক্ষে কথা বলতে। আমার মনে হয় বলয়া উচিত। ... ...

এই নিবন্ধটি পূর্ব প্রকাশিত শূন্য এ বুকে নিবন্ধটির অন্তিম পর্ব। এই নিবন্ধে সরকার পরিপোষিত বিদ্যালয়গুলোর অধোগামীতার কারণ খোঁজার চেষ্টা হয়েছে। যেকথা এখানে বলার চেষ্টা করেছি সেগুলোই শেষ কথা নয়। সকলে মিলে উত্তর খোঁজার কাজে নেমে পড়লে কাজটা ভালো হয়, সহজ হয়। বিশ্বাস করি ফিনিক্স পাখির মতো একদিন আবার ফিরে আসবে সেই হারিয়ে যাওয়া সোনালী দিনগুলো। ... ...

দুই সমস্যার সমাধান করল দু'জন। অমিত জানাল সামনে বড় শহর তেজপুর আসছে। সেখানে কিছু পোশাক কিনে নেওয়া যেতে পারে; কন্যা রাজী। আমাদের ছবি আর পরিচয় পত্র হোয়াটসঅ্যাপ করে ওর পরিচিতকে পাঠিয়ে দিল বিপুল, সে আমাদের আই এল পি বানিয়ে রাখবে। তাহলে আর কী? চালাও পানসি বেলঘরিয়া; থুড়ি, চালাও বাস ভালুকপং। অপূর্বকে সব জানিয়ে আমাদের ট্রাভেলার গাড়ি ফের ছুটে চলল অরুণাচলের দিকে। ... ...


