ঘ্যামা ঘ্যামা বইয়ের বড় বড় ব্যাপার, যেমন গড়ন, তেমনই দাম। ওদিকে নজর না দিয়ে আমরা বানিয়েছি সস্তা কাগজের চটি বই, যা সুলভ ও পুষ্টিকর।
গুরুচণ্ডা৯ চলতে শুরু করল ২০০৪ সালে। প্রথম চটি বই বেরোলো ২০১০-এ। বিজ্ঞাপনের কারবার নেই। নিজেদের লেখা, ছবি, ভিডিও, হাতে গড়া রুটির মতো, সামিজ্যাটের সাইক্লোর মতো ছড়িয়ে রাখি ইতিউতি
জালে (ওয়েব আর কী)। যে খুশি খুঁটে খান। তাতে খুব যে মারকাটারি বিশ্ববিজয় হয়ে গেছে তা নয়। কিছু বইয়ের হাজারখানেক কপি এক বইমেলায় শেষ হয়, কিছু বইয়ের হয় না। প্রথম চটি বইগুলোর কারো কারো
চার-পাঁচটা সংস্করণ হয়েছে, কারো দুটো। ওয়েবে কতজন পড়েন, সঠিক ভাবে মাপা মুশকিল। গ্রুপে কিছু হাজার, সাইটে কিছু। কুড়ি কোটি বাঙালির কাছে এসবই খুব বেশি কিছু না। তবে এই ক’বছরে সস্তায় পুষ্টিকর
চটি বইয়ের ব্যাপারটা বিলক্ষণ বুঝেছি। বিজ্ঞাপনী নেটওয়ার্ক নয়, মডেল সুন্দরীদের মার্জারচলন নয়, ঠোঙা নয়, মোড়ক নয়, লেখা তেড়ে সাইক্লো করুন, সুযোগ পেলে একটু হেঁকে নিন, ব্যস। লেখায় দম থাকলে চুপচাপ
ছড়িয়ে যাবে। ইহাই চটির ম্যাজিক। ঐতিহ্যমণ্ডিত চটি সিরিজ জিন্দাবাদ। জ্জয়গ্গুরু।
বহু জাতি বহু ভাষা এক রাষ্ট্র স্বাধীনতার পরের কিছু বিস্মৃত টুকরো - সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়(১৫৯) হিন্দি যে ভারতবর্ষ জুড়ে রাজত্ব করবে, বাকি সব হবে আঞ্চলিক, ক্রিকেট আর বলিউডের একচ্ছত্র আধিপত্য হবে, ভারতবর্ষকে যুক্তরাষ্ট্র না বলে জাতিরাষ্ট্র হিসেবে চালানোর চেষ্টা হবে, গণমাধ্যমে সর্বভারতীয় ভাষা হিসেবে থাকবে একমাত্র হিন্দি আর ইংরিজি, এসব ভারত রাষ্ট্রের জন্মলগ্নে অকল্পনীয় ছিল। এই পুরোটারই ভিত্তি তৈরি হয় ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৭, এই দশ বছরে। স্বাধীন ভারতের গোড়ার দিকের ইতিহাসের সেসব টুকরো কখনই উচ্চারিত হয় না। সব পক্ষই মোটের উপর চেপে গেছেন, বা ভুলে।
সেই দশ বছরের এইসব টুকরোটাকরা নিয়েই এই লেখা।
পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস একেবারেই নয়, কিন্তু এইটুকুও তো জেনে রাখা যাক।
ঘুনসিযন্ত্রের রহস্য - অভিজিৎ মজুমদার(১৫৭) কল্পবিজ্ঞানের গল্প মানেই ভবিষ্যতের কথা। সেই ভবিষ্যতের কথায় গল্পের ছলে জুড়ে দিতে চেয়েছি সমকালকে। যার খানিকটা রাজনৈতিক, খানিকটা সামাজিক। একই সঙ্গে গল্প বলার আঙ্গিক হিসেবে ছুঁতে চেয়েছিলাম, আমাদের ফেলে আসা শৈশব-কৈশোরকে। যেই কৈশোরে লাল ঝুঁটি কাকাতুয়া ছিল, বইয়ের পেছনে লুকোনো নীললোহিত ছিল। তাই এই গল্পটায় চরিত্রদের নাম বংশীবদন, গোবর্ধন বা গোবরা, দুষ্টু লোক হাজরা। কানাই মাস্টার আর তার পোড়ো বেড়ালছানা হয়েছে গল্পের প্রোটাগনিস্ট। কৈশোরের হাত ধরে এসেছে দারোগা ভগবান দাস, পদ্ম ঝি, হাজারি ঠাকুর।
চাঁপাফুলের গন্ধে - এস এস অরুন্ধতী(১৫৬) চাঁপাফুলের রঙ কি তবে শুধুই বেদনায় কালো! কোথায় গেল তার সেই মধুর মতো সোনালি রঙ আর ম' ম' করা সুবাস? আনন্দের রামধনু ছটা? এইখানেই এই গল্পগুলোর জয়! যে জটিল আনন্দ বেদনার পশরা সাজিয়েছে এই ক্ষীণতনু গল্পগ্রন্থটি তার পুরো আস্বাদের জন্য ক্ষত গল্পের রূপার মতো সংবেদী মন চাই, যে কিনা সব হলাহলের মধ্যেই খুঁজে নেবে বেঁচে থাকার আনন্দ-অমৃত, কাঠপুতলি আথির মতো বলে উঠতে পারবে, এমনি কত দুঃখ সুখের সুতো দিয়েই জীবনটা বোনা রে। কখনো দুঃখের কালো সুতো নকশা কাটে, কখনো আবার হলদে আশার ফুলকারি খোলতাই হয়। সুখের কথা এখনও তেমন পাঠক বিরল নন।
দিতি ও মহারানি - মৃণাল শতপথী(১৫৪) সত্যজিৎ রায় মনে করতেন ছোটদের গল্প বলার নির্দিষ্ট কোনো ভাষার প্রয়োজন নেই, তা পরিণত মনের মতোই হবে। ছোটদের সঙ্গে খেলার সময়ও তিনি ছোটোভাব দেখাতেন না, ইচ্ছাকৃত জিতিয়ে দেবার চেষ্টাতেও যেতেন না। তাঁর লেখাপত্রের ভাষাতে তারই সাক্ষর। তবু ভাষারও শৈশব থাকে, তার পরিণত হওয়ার দিকে যাওয়া থাকে।
'দিতি ও মহারানি' নামক এই বইতে আছে মাছেদের জগৎ,তাদের জলীয় জীবন,দু:সময় আর উত্তরণের গল্প। গল্পের ভাষা সেখানে শিশুর হলেও পরিণত মন প্রাসঙ্গিক বিষয় খুঁজে নেবে। আছে তিতিয়া, শিশুহীন ভবিষ্যৎ দুনিয়ায় আকস্মিক একটি শিশুর এসে পড়ার বিস্ময়, তাকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই। এ গল্পের ভাষা কৈশোরের,কল্পবিজ্ঞান-ঋদ্ধ, পীড়নমুক্ত বিশ্বের আকাঙ্ক্ষায় আত্মবলিদানের। আছে দিতি নামে আরেক সদ্যোজাত। প্রকৃতি ও মানব সম্পর্কের বিপন্ন সময়ে এই গল্প দুই মাতৃ-হৃদয়ের দ্বন্দ্বকে সামনে এনে অশ্রুময় কোন প্রশ্ন রেখে যায়।
এই বইয়ের প্রতিটি গল্পে বিষয় অনুযায়ী ভাষা পাল্টেছে, এসেছে অস্কার ওয়াইল্ডের ছন্দময়তা, উঁকি দিয়েছে রূপকথার আঙ্গিক। এই পাঠে ছোটোবড় বিচার নেই, শৈশবকে হেলায় জিতিয়ে দেবার সহজ প্রয়াসও নেই।
পবিত্র ভূমি - পুনর্বাসন ও নির্বাসনের ঘূর্ণাবর্তে প্যালেস্টাইন - হীরেন সিংহরায়(১৫৩) ইজরায়েল-প্যালেস্টাইনের ভয়ানক, বিষময় সংঘর্ষের উৎস খুঁজতে চেষ্টা করেছেন ঐতিহাসিকরা, তাত্ত্বিকরা বহু দিন ধরে। কেউ দায়ী করেন অটোমান সাম্রাজ্যের পতনকে, কেউ ব্রিটিশ চক্রান্ত বা ১৯১৭-র বালফোর ঘোষণাকে, কেউ বা বারংবার ব্যর্থ হওয়া শান্তি প্রস্তাব অথবা বহু শতাব্দীর বঞ্চনার ইতিহাসকে। সেইসব কূট তর্কের মধ্যেই দ্রুত বদলে যায় জেরুসালেম - ইতিহাসের চিরস্থায়ী রক্তাক্ত রঙ্গমঞ্চ, যা একই সাথে ক্রিস্টিয়ান, ইহুদি ও ইসলাম ধর্মবিশ্বাসী মানুষের পবিত্র ভূমি। কারুর বধ্যভূমি, কারুর নির্বাসন, কারুর বা প্রতিশ্রুত নিজভূম। এই বই সেই ইতিহাসের ক্লাস নয়, একজন সাধারণ মানুষের ডায়েরির পাতায় ধরে রাখা সেই আমূল বদলের টুকরো ছবি।
পেন্সিলে লেখা জীবন - অমর মিত্র(১৫২) জীবনে এক জাদু আছে, জীবনের জাদুতে কতবার মুগ্ধ হয়েছি, কতবার অশ্রুপাত করেছি, সেই কথাই তো লিখব, লিখতে বসেছি। অতি প্রত্যুষে এই পেনসিলিয়া খবরিয়ার নিদ্রা ভাঙে। তখন বাইরে অন্ধকার। কাকও ডাকে না। কী করবে সে? এ নভোমণ্ডল তখন হিম নীলাভ, চারদিকে অসীম স্তব্ধতা, সেই নীরবতার ভিতরেই জীবনের আরম্ভে পৌঁছে যেতে চায় সে, মাতৃগর্ভে স্মৃতির কাছে ফিরে যেতে চায়। সেই স্মৃতিলেখ এই বিবরণ।
পূর্ব ইউরোপের ডায়েরি (দ্বিতীয় খণ্ড) - হীরেন সিংহরায়(১৫১) ডায়েরির দ্বিতীয় খণ্ডে হীরেন সিংহরায় আমাদের পরিচয় করিয়ে দিলেন কাজাখস্তান, বসনিয়া হার্জেগোভিনা এবং রেপুবলিকা স্রাপসকা, ক্রোয়েশিয়া, স্লোভেনিয়ার সঙ্গে। এই ডায়েরির পাতায় উঠে এসেছে এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ইতিহাস। যার নেপথ্যে কালো মেঘের মত ঘনিয়ে এসেছে বিশ্বজোড়া মন্দা, সাবপ্রাইম ক্রাইসিস, দেউলে হয়ে যাওয়া দৈত্যাকার ব্যাঙ্ক। তার প্রেক্ষাপটে নিজস্ব অননুকরণীয় ভঙ্গিতে ব্যাঙ্কিং দুনিয়ার প্রায় দুর্বোধ্য সমীকরণ আর বাজারি অর্থনীতির পাঠ অথবা পশ্চিমী বাহুবলীর প্রবঞ্চনা সহজ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন সেই গল্পের ফাঁক-ফোকরে।
এর-ই সাথে নিপুণ চিত্রশিল্পীর দক্ষতায় মিশিয়ে দিয়েছেন জনজাতির ইতিহাস - সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ইতিহাস। লিখেছেন এথনিক ক্লিনসিং- যুগের অভিশাপ, লিখেছেন ল্যাটিন ব্রিজ ও গাভ্রিলো প্রিঞ্চিপের আশ্চর্য গল্প - যার পিস্তলের গুলি থেকে শুরু হওয়া চেইন রিয়্যাকশন সূচনা করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের।
বাঙালের রোমানিয়া গমন - মুহাম্মদ সাদেকুজ্জামান শরীফ(১৫০) মুহাম্মদ সাদেকুজ্জামান শরীফ বাংলাদেশ থেকে রোমানিয়া গেলেন। বিদেশ যাওয়ার ইচ্ছে ছিল, সুযোগ জুটল গতরে খাটা পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে যাওয়ার। এর আগে অবশ্যই তিনি হোয়াইট কলারের চাকরি করতেন, ফেসবুকে জনপ্রিয় পেজের অ্যাডমিনশিপ করতেন, আর যা যা করতেন সবই স্বচ্ছল মধ্যবিত্ত জীবনের গণ্ডী মেনেই।
এ হেন শরীফ প্রবাসী শ্রমিকের দলে ভিড়ে গেলেন ইউরোপের তুলনায় কম চকচকে অংশে এবং প্রত্যক্ষ টের পেলেন বিবিধ সাংস্কৃতিক শক। যেই প্রবাসযাপনের রোজনামচাই রইল এই বইয়ে।
ভারতীয় বিজ্ঞান - নির্মাণ ও বিনির্মাণ - রূপালী গঙ্গোপাধ্যায়(১৪৯) বিজ্ঞান ব্যক্তিনিরপেক্ষ এক সত্য যা নানারকম নিয়মকানুনের মধ্যে দিয়ে আপনিই প্রকাশিত হয় - মানুষ তাকে আবিষ্কার করতে পারে, ব্যবহারও করতে পারে কিন্তু সৃষ্টি বা ধ্বংস করতে পারে না। তাই বিজ্ঞান অভিশাপ বা আশীর্বাদ কিছুই হতে পারে না - আপনার জানা-না-জানা, বিশ্বাস করা বা না করার ওপর তার অস্তিত্ব নির্ভর করে না। মৌমাছির চাকের ছ-কোনা খোপে, সূর্যমুখীর বীজের প্যঁ¡চানো বিন্যাসে, আপনার চেতনার রঙে সবুজ বা লাল হয়ে ওঠা পান্না-চুনির দ্যুতিতে - সর্বদাই আছে কিছু কেন-র উত্তর - সেই উত্তরের নামই বিজ্ঞান।
ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নামে কাল্পনিক বা প্রাচীন সাহিত্যে উল্লিখিত বিষয় -কে সত্যি বলে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা তাই অর্থহীন, মিথ্যা এবং উদ্দেশ্য-প্রণোদিত। একই রকম ভাবে বিজ্ঞান ও ইতিহাসের প্রতিষ্ঠিত সত্যকে অস্বীকার করার চেষ্টাও বিপজ্জনক এবং পশ্চাৎমুখী। এই সব দেখে মনে হয় জ্ঞানধারার মুখে ভাষা থাকলে সে বলে উঠত 'যা করছ কর কিন্তু নট ইন মাই নেম'!
যদি বলো প্রেম - চৈতালী চট্টোপাধ্যায়, চন্দনা হোড়(১৪৮) কবিতা ও ছবির মধ্যে বিবাহ হয়ে থাকে, মনে করি। কবিতা ছবি আঁকে, স্পষ্ট ও বিমূর্ত।চিত্রকল্প দৃশ্যের জন্ম দেয়। ছবিও তখন তার মনোমত বর্ণে, বর্ণহীনতায় কবিতা ফুটিয়ে তোলে। ঠিক তখন তারা রাজযোটক। একে অন্যের পরিপূরক। এভাবেই শিল্প। অদৃশ্য থেকে পুষ্পবৃষ্টি তখন।
রসিকার ছেলে - প্রতিভা সরকার(১৪৭) রসিকার ছেলে উপন্যাসটি না কোনও ব্যক্তি মানুষের জীবনী, না পুরোপুরি কাল্পনিক গল্পকথা। যদি একে মনে হয় আত্মজৈবনিক, তাহলে সে জীবন কোনো এক ব্যক্তিমানুষের নয়। কয়েকদিন আগের খবরের কাগজে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বয়ানে গত তিন বছরে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে যে ৩৫,৫৯০ জন এসসি এসটি আত্মঘাতী ছাত্রদের কথা বলা হয়েছে, তাদের সকলের জীবনের হাসি কান্না, অপমান, শূন্যতা আর বিচ্ছিন্নতার খতিয়ান!
উপন্যাসটিকে যদি কেবলই কাল্পনিক মনে হয়, তাহলে সেই কল্পনার ভাঁড়ার পূর্ণ হয়ে রয়েছে এদের প্রত্যেকের জীবনে।
কল্পনা আর বাস্তবের টানাপোড়েনে যে জ্ঞমৈলি চাদরঞ্চটি সযত্নে বোনা হয়েছে তার একটিই পরিচয় - সে এই দেশ, এই সময়ের সবচেয়ে মর্মান্তিক সত্য।
সংবেদনশীল পাঠক উদ্বেলিত হবেন, কখনও চিন্তায় মূমুর্ষু দেখাবে তাকে, কখনও ছোট্ট ছোট্ট খুশিতে উচ্ছল! কিন্তু এড়িয়ে যেতে পারবেন না রসিকা এবং তার ছেলের এই উপাখ্যান। কারণ শুধুমাত্র আমোদের জন্য এ লেখা নয়, এ আমাদের ঘাড় ধরে দাঁড় করিয়ে রাখবে আয়নার সামনে, আমরা যারা মেধা আর অঢেল সুযোগের মধ্যে তফাৎ করতে শিখিনি, আমরা যারা নিজেদের মুখ সত্যি কেমন, তা এতদিনেও জানতে পারিনি!
লেজ়ারের আলো - প্রণবনাথ চক্রবর্তী(১৪৬) ভাল প্রযুক্তিবিদ হবার জন্য সবথেকে বড় অস্ত্র. জানার আগ্রহ। যেইসব বিষয় নিয়ে প্রযুক্তিবিদ কাজ করবে, সেই সব বিষয়ের উপরে তার নিজের আন্তরিক ভালবাসা। তার-সঙ্গে নতুন নতুন জ্ঞান লাভের ইচ্ছা।
শুধু বই পড়ে আর পরীক্ষা পাশ করে, ভাল প্রযুক্তিবিদ হওয়া খুব শক্ত। আমার এই বই লেখার প্রধান উদ্দেশ্য, ছাত্র ছাত্রীদের মনে জানার ইচ্ছাকে জাগিয়ে তোলা। মনের গভীরে আগ্রহ সৃষ্টি করা। আজকে যারা পাঠক কাল তারাই জ্ঞানী প্রযুক্তিবিদ হয়ে জগতের সামনে এগিয়ে আসবে। আমার এই সমস্ত গল্প, হয়তো কিছু ভবিষ্যৎ প্রযুক্তিবিদকে উৎসাহ যোগাবে।
শনাক্তকরণের চিহ্ন - সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়(১৪৫) আমরা পোশাক দেখলেই গরীব চিনে ফেলি, কথা শুনলেই শিক্ষার অভাব। পদবী দেখলেই জাত বুঝে ফেলি, ভাষা শুনলেই অনুপ্রবেশকারী। এখন ষড়যন্ত্রকারীরও আছে শনাক্তকরণের অব্যর্থ চিহ্ন। কী চিহ্ন? জানতে গেলে এই লেখা আপনাকে পড়তে হবে।
সাদা পর্দার আলো - শুভদীপ ঘোষ(১৪৪) নাটক বা চিত্রকলা অথবা কাব্যের সঙ্গে সিনেমার অন্যতম পার্থক্য হল যে সে একান্ত ভাবেই যন্ত্র সভ্যতার সন্তান ও মাত্র কমবেশি সওয়াশো বছর পুরোনো হওয়ায় তার তেমন বনেদিয়ানাও গড়ে উঠেনি। সে শুরুতে অনেকটাই অনভিজাতদের জন্য অপেরা। কলকাতায় সিনেমা চর্চার প্রসঙ্গে প্রথম সিরিয়াস উদ্যোগ ১৯৪১ সালের এপ্রিল মাসে যখন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি সিনেমা লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠা মুহূর্তে প্রকাশ্যেই ঘোষনা করলেন "সিনেমা আমাদের দেশে এসে গেছে। এসে যখন গেছে তখন সে বিষয়ের জ্ঞান আমরা লাভ করব না কেন? সে জ্ঞান সঞ্চয়ে আমাদের বাধা হবে কেন? নানাবিধ পত্র ও পত্রিকা ও গ্রন্থ পড়ে আমরা সে জ্ঞান লাভ করে সিনেমাকে আরও ভাল করে দেখতে শিখতে পারি।"
সীমানা - শেখরনাথ মুখোপাধ্যায়(১৪৩) এ-উপন্যাসের সময়কাল বিশ শতকের বিশ ও ত্রিশের দশক। রাজনৈতিক আন্দোলন ছাড়াও সমাজ শিল্প এবং সাহিত্যের নানা আন্দোলনের কারণে গত একশো বছরের ভারতীয় ইতিহাসে এই সময়কাল বিশিষ্ট। উপন্যাসটির নায়ক এই সময়কালই, যদিও রচনার কেন্দ্রবিব্দুতে আছেন কাজি নজরুল ইসলাম। নজরুলের কর্মজীবনও এই দুই দশকেই ব্যাপ্ত।
সে ছিল একদিন আমাদের - জ্যোতিষ্ক দত্ত (১৪২) “আমার সব লেখাই আত্মজৈবনিক। যেন হঠাৎ হঠাৎ মনে পড়ে যাওয়া এক-একটা ছোট্ট চিরকুট, সাদা শার্টে একটা ছোট্ট পুরোনো দাগ - যেটা ধুয়ে ধুয়েও কী করে যেন রয়ে গেছে - তাই আলাদা করে আমার কথা লিখতে বসে বড্ড গোলমাল লাগছে! আসলে কীসের পরে কী ছিলো জানি না, শুরুতে কী ছিলো? জল না আগুন? না অন্ধকার? শেষে কি আলো থাকবে? এসব বোধহয় আমাদের সিলেবাসে ছিলো না!
সিলেবাসে কী ছিল তবে? ছিল একটা রঙ-চটা নাইলনের বাজারের থলে। আজ-ও সেটা উল্টোলেই একটা দুটো পেয়াঁজের খোসা কোত্থেকে ঠিক বেরিয়ে পড়বে, সেইরকম কতগুলো জিনিস কেমন করে যেন আলগা হয়ে লেগে থাকে আমাদের সঙ্গে, কবে এসেছিলো জানি না, আবার কোনদিন ঝাড়তে গিয়ে বেরিয়েও যাবে এই দু-একটা স্মৃতি সেই দু-একটা উড়ে যাওয়া কুটো!”
হরিণের কাছাকাছি - ইন্দ্রাণী(১৪১) হরিণের কাছাকাছি - ২০২১ থেকে ২০২৩ এর মধ্যে লেখা ষোলটি গল্পের সংকলন এই বইটি ইন্দ্রাণীর তৃতীয় গল্প সংকলন। 'পাড়াতুতো চাঁদে' যদি কানাগলিতে অলীক জ্যোৎস্না নেমে থাকে, আর 'সূর্যমুখীর এরোপ্লেনে' স্থান কাল পাত্র গুলিয়ে দেওয়ার খেলা, এই তিন নম্বর সংকলনে বুঝি সেই সব 'হরিণেরা খেলা করে', মানুষ যাদের সম্মুখীন হয় জীবনে একবারই কেবল - প্রেম, মৃত্যু অথবা শিল্পের কাছাকাছি আসার মতো, কিম্বা হয়তো প্রেম নয়, স্বপ্ন নয়, কোনো এক নাছোড় বোধ যখন জন্ম নেয় মাথার ভিতরে।
বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে,
মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা,
কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
আমাদের কথা
আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের
কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি
জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
বুলবুলভাজা
এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ।
দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও
লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
হরিদাস পালেরা
এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে
পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান
নিজের চোখে...... আরও ...
টইপত্তর
নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান।
এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর।
... আরও ...
ভাটিয়া৯
যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই,
সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক
আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক।
অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি।
যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।
মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি
বার পঠিত
সকলকে জানান
উপরে যে কোনো বোতাম টিপে পরিচিতদের সঙ্গে ভাগ করে নিন