জৈন ধর্ম এক প্রাগৈতিহাসিক ধর্ম, সম্ভবত বৈদিক যুগেরও আগে তাদের উৎপত্তি। এমনটাই বলেছেন রাধাকৃষ্ণণ তাঁর গবেষণা গ্রন্থে। জৈন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা চব্বিশ জন তীর্থঙ্কর, যাঁরা জিন নামেও পরিচিত। জিন থেকেই জৈন শব্দের জন্ম। যদিও ঐতিহাসিক গণনায় প্রথম বাইশ জন জিনের অস্তিত্ব প্রমাণিত নয়।আমরা জৈন ধর্মের ঘটনা পরম্পরা বিশ্লেষণ করলে হয়ত জানতে পারব ভারতের প্রাগৈতিহাসিক জীবনের প্রগতি সূত্র। একটা দৃষ্টান্ত দিই। দিগম্বর ও শ্বেতাম্বর সম্প্রদায়ের জন্ম হয়ত বস্ত্র বয়ন আবিষ্কার কালের সমসাময়িক ঘটনা। প্রাচীনপন্থী অহিংসবাদীরা বস্ত্র উদ্ভাবনকে আদর্শহীনতা বলে পরিহার করেছিলেন। ফলে বিপ্লব ও দুই সম্প্রদায়ের জন্ম। জৈনরা নির্গ্রন্থ নামেও প্রসিদ্ধ, কেননা গ্রন্থ তাদের পরবর্তী কালের আবিষ্কার। যদিও সুবৃহৎ জৈন সাহিত্য ভারতীয় ... ...
লাল জামার সঙ্গী হলুদ জামা । তারও ছাতি প্রায় চুয়াল্লিশ , পিছমোড়া করে ধরল দ্বিতীয় ছেলেটাকে । লাল জামা প্রথম কাপ্তেনের শার্টের কলার চেপে ধরেছে । দুটো ছেলেই বুঝতে পারল তারা শক্ত খাঁচায় পড়েছে । গায়ের জোর দেখিয়ে বিশেষ লাভ হবে না ।লাল জামা পরা গগন কর্মকার প্রতিবিম্বদের দিকে তাকিয়ে বলল , ' তোমরা যাও ... ' তারপর বলল, ' অতীশ, নে চল ... গাড়িতে তোল দুটোকে ... থানায় হিসেব বুঝে নেবে বিকাশবাবু... ' হেদোয় অলস পাক মারা ছেলেমেয়ে , লোকজন হাঁ করে দেখতে লাগল দুটো মাস্তানকে ঠেলতে ঠেলতে গেটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ৩০ চিঠিটা পড়ে নয়ন দৃশ্যতই ভেঙে পড়ল। সে বিশ্বাস করত যে, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন ঈজা সব সময় তার পাশে থাকবে। চিঠি পড়ে বুঝতে পারছে যে, ঈজাকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। নয়নকে জানতে হবে, কি এমন বাধ্যবাধকতা যা তার ভালবাসার ওপর রোলার চালিয়ে দিল! ভালবাসার মানুষের থেকে মামার ইচ্ছে-অনিচ্ছেই ঈজার কাছে বড় হল।নয়ন চিঠিটা মামার দিকে এগিয়ে দিল। নন্দ একটু ইতস্তত ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ২৯ খবরটা শুনে নয়ন আর দেরি না করে ঈজার সাথেই নিচে নেমে এল। ইরা কিছু একটা রান্না চাপিয়েছিল। ওদের বসতে বলল। একটু পরে ওদের কাছে এসে বসল।--দাদা তোমাদের ব্যাপারটা খানিকটা আন্দাজ করেছে। আমার কাছে জানতে চেয়েছিল। আমি প্রথমে এড়িয়ে গিয়েছিলাম। পরে ভেবে দেখলাম ব্যাপারটা লুকোচুরির মধ্যে না থাকাই ভাল। তুমি তো জানই, দাদা আমাদের সংসারের জন্য কত করে। এ ছাড়াও ও ঈজার মামা। ঈজার বিয়ের ব্যাপারে স্বাভাবিভাবেই ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ২৮কিছুদিন থেকে ঈজার বাবার কোমরে খুব সমস্যা হচ্ছে। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। কোমরে যন্ত্রণা হয়। ডাক্তার কোমরে বেল্ট পরতে বলেছে। কিছু আসন করতে হবে। ওষুধ দিয়েছে। সব শেষে নির্দেশ দিয়েছে বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকা চলবে না। কিন্তু উদয়নের তো দাঁড়িয়ে কাজ, না দাঁড়ালে চলবে কি করে! ডাক্তারের নির্দেশ ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ২৭ পাগলদের সাথে নয়নের একটা নাড়ির সম্পর্ক ছিল। এলাকার দিকপাল পাগলদের নয়ন ছিল খুব কাছের মানুষ। অন্তত তারা সেরকমই মনে করত। এদের কারণে এক আধবার যে বিড়ম্বনায় পড়েনি তা নয় তবে, উপভোগ করার মত ঘটনা অনেক বেশি ছিল। তবে পাগল বলতে কেবল পুরুষ পাগল, পাগলী নয়। পাগলদের চালচলন নয়ন অনেকটা আন্দাজ করতে পারে, কিন্তু পাগলীরা দুর্বোধ্য। পাগলীদের থেকে ও একটু দূরেই থাকে। তার কারণ, প্রথমত ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ২৬ কুণাল বোনকে খুব ভালবাসত। বোনের পছন্দের মানুষটা ওর একেবারে অপছন্দের হলেও ব্যাপারটায় একসময় সম্মতি দিয়েছিল। বোনের জেদের কাছে হার মেনে অনেকটাই নিরুপায় হয়ে। কেবল সম্মতিই দেয়নি, নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সামাজিক মতেই বোনের বিয়ে দিয়েছিল। আচার অনুষ্ঠানে কোন ত্রুটি রাখেনি। চাকরি বেশি দিনের নয়, সঞ্চয় তেমন একটা ছিল না। বিয়ের খরচ জোগাতে গিয়ে, কিছুটা অফিস আর ... ...
খুল্লনার ছমাসের গর্ভে রাজার আদেশে সাধু ধনপতির সিংহল যাত্রা। খুল্লনাকে ধনপতি বলে যায় মেয়ে হলে নাম দিতে শশীকলা, ছেলে হলে শ্রীপতি। "বারো বছরেও না ফিরলে তাকে পাঠিও দক্ষিণ পাটনে। সে যেন সব বন্দিশালা ঘুরে দেখে কার কপালে দিনরাত শিবপূজার চিহ্ন আঁকা।" মধুকর, দুর্গাবর, শঙ্খচূড়, চন্দ্রপাল, ছোটমুঠি, গুয়ারেখি এবং নাটশালা এই সপ্তডিঙ্গা চড়ে পিতা জয়পতির বহু যুগ পরে ধনপতি যাবে দক্ষিণ পাটনে। নৌকাদের সামনের দিক সুঁচালো আর পিছন দিক গোল। গায়ে কাঠের কারুকার্য্য। নৌমুখগুলির সিংহ, মহিষ, হস্তী, ... ...
যে ছায়ায়, যে রোদ্দুরেদিনগুলো কেটেছে..তারই মধ্যে একটি দিন।সেদিন বিশ্বভারতীর বাস মিস করলাম। সাইকেল চালাতে জানিনা। প্রথম বছর, হোস্টেল পাইনি। তাই সীমান্তপল্লীর শেষ প্রান্তে 'সূর্যাবর্ত' বাড়ির দোতলায়, আমরা দুই বন্ধু থাকি। বন্ধুটি সাইকেল নিয়ে আগেই বেরিয়ে গেছে।আমি এগোতে থাকি বালিপাড়ার মধ্যে দিয়ে। ভাবনার পালে দোলা লাগে যেদিকেই তাকাই। লাল মাটির পথ, দেওয়ালে আঁকা মাটির বাড়ি, গাছে গাছে সাদা শিম, সজনে ... ...
মাসের প্রথম সপ্তাহ:-এক মফঃস্বল শহরের সরকারি ব্যাংকের শাখায় উপচানো ভিড়। সকাল সাড়ে দশটায় পৌঁছে দেখা গেল তখনও সব কর্মীরা এসে উপস্থিত হতে পারেননি। মোটামুটি এগারোটা পাঁচ নাগাদ সব কর্মীরা নিজেদের কম্পিউটারে লগইন করতে গিয়ে টের পেলেন, লিংক নেই। সরকারি ব্যাংকে লিংক না থাকার দুর্ভোগ সম্পর্কে গ্রাহকদের প্রত্যেকেই কমবেশি ওয়াকিবহাল। তাই ভিড় বাড়তে লাগল। আর তারই সাথে পাল্লা ... ...
কৌতূহল, যা জানি না সেটা জানার ইচ্ছা। মানুষ মাত্রেরই কৌতূহল থাকে, কারো কম কারো বেশি। মনুষ্যেতর প্রাণীদেরও থাকে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, কৌতূহল থাকা স্বাভাবিক। যার কৌতূহল নেই, সে জড় পদার্থ। তবে এটা প্রকাশ করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করলেই ভালো। আমার খরগোশ অ্যান্ডিকে দিয়ে শুরু করি। বাবা মারা যাওয়ার মাস দেড়েক পর আমি ওদের নিয়ে আসি। তারপর আমরা তিনটি প্রাণী অর্থাৎ আমি আর আমার দুই খরগোশের এক সঙ্গে জীবন শুরু হল। যখন এসেছিল দুই ক্ষুদের বয়স তখন এক মাসের একটু বেশি। বাপ রে বাপ, কী প্রাণশক্তি আর কৌতূহল! অ্যান্ডি আর স্যান্ডির মধ্যে অ্যান্ডি ধবধবে সাদা এবং বেশি দুষ্টু। স্যান্ডির ... ...
সত্যি করে বলো ত মা ! ——————— সুপ্রিয়া চৌধুরী ——————— মা ! তুমি কোথায় আছো, কেমন আছো ? কই ! ভাবছো না তো আমার কথা ! একটু দেরী ফিরতে হলে বকে নিয়ে ধমকে দিয়ে জড়িয়ে ধরে বুকে তোমার চুমু দিয়ে ভরিয়ে দিতে অশ্রুধারায় ! মূল্য দিতে পারিনি সেই ভালবাসার ! তাই বুঝি মা চলে গেলে আকাশ ... ...
আকাশের থেকেও বড় তোমার আমার ভালোবাসা।সূর্যের আলোর থেকেও প্রখর তোমার আমার ভালোবাসা।চাঁদের আলোর চেয়েও স্নিগ্ধ তোমার আমার ভালোবাসা।সমাধির চেয়েও শান্ত তোমার আমার ভালোবাসা।বসন্তের থেকেও রঙিন তোমার আমার ভালোবাসা।স্বর্গের থেকেও সুন্দর তোমার
“জীবনভর যে ভিড় ছিল সরে গেছে। আজ একা আমি জিৎভূমে। রাত্রিকাল। ঝড় উঠল। শুয়ে আছি। শুয়ে শুয়ে শুনছি হাওয়া ছুটল। এখানকার ঝড়ের ভাষা জানি। শুকনো হিজল পাতাগুলি খরখর করে উরে চলল। গলগলির সরু ডালগুলি ছিটকে পড়ল। শিমূলের কচি ডালটা ভাঙল বোধ হয় --- হালকা গাছ। না, এ ঝড় থাকবে না বেশিক্ষণ। বৃষ্টি নামল। এবারে শুকনো পাতাগুলি ভিজে উঠল। ভিজেপাতা সাড়া তোলা না। চুপ ... ...
সাত সকালে কালীবাবু উত্তেজিত গলায় বললেন, 'আরে প্রকাশবাবু খবর শুনসেন নাকি .... দেশবন্ধু পার্কের ওই দিকে একটা মার্ডার হইসে। মুসিপাড়া থানা থেকে ত্রিদিব বক্সী ফোন করসিল ... 'প্রকাশ ঘড়াই দ্রুত এ ঘরে এলেন। বললেন, ' তাই নাকি ! শুনিনি তো ... '---- ' কাল অনেক রাতে নাকি একটা জওয়ান সেলেরে শ্যুট কইরা মারসে। আমাদের কাছে খবর আসার আগেই নাকি হেডকোয়ার্টারে খবর গেসে ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ২৫ বেশ কয়েকদিন অনুপস্থিত থাকার জন্য আড্ডায় গিয়ে নয়নকে অনেক গাল শুনতে হল। তখন পরের দিনের মোহন বাগান ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ নিয়ে আড্ডা সরগরম। আই এফ এ শিল্ড ফাইনালে দুই প্রধান মুখোমুখি হচ্ছে। পিন্টু সেই বছরেই ইস্টবেঙ্গলে সই করেছে। দলের প্রথম এগারোয় জায়গাও করে নিয়েছে। লিগের খেলাগুলোয় অনেক গোল করেছে। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ২৪ নয়নের বাগবাজারে থাকাটা নির্ধারিত সময়ের থেকে কিছুটা বেড়ে গেল। কলেজ খুলে গিয়েছিল, ফলে শেষ দু দিন মামার বাড়ি থেকেই কলেজে গেল। নয়ন এদিক ওদিক গেলেও আড্ডার টানে দু এক দিন বাদেই ফিরে আসত। বাইরে বেড়াতে যাওয়া ছাড়া এতদিন রহড়ার বাইরে খুব কমই থেকেছে। আড্ডার টানকে উপেক্ষা করে এবারে রইল। কারণ একটাই, ঈজা। মেয়েটা ... ...
জীবন তরঙ্গ -পর্ব ২৩ পরের দিন নন্দ নটার সময় স্কুলে বেরিয়ে গেল। জলখাবার খেয়ে চায়ের কাপ নিয়ে নয়ন বারান্দায় চেয়ারে বসেছিল। এটা নয়নের খুব পছন্দের জায়গা। ছোটবেলায় এখানে বসে একমনে বাইরের জগতটাকে দেখত। তখনো দেখছিল। পরিবেশ, পরিস্থিতি, ঘর-বাড়ি, সব ধীরে ধীরে কেমন পাল্টে যাচ্ছে। যদিও দক্ষিণ কোলকাতার তুলনায় উত্তরে এই পাল্টে যাওয়ার গতি অনেক কম। দু চারটে ফেরিওয়ালা ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ২২ গালুর চলে যাওয়ার কষ্টের তীব্রতা একটু কমতে না কমতেই আড্ডায় এল আর একটা ধাক্কা। কচিদা রহড়া ছেড়ে চলে যাচ্ছে। কচিদার পরিবারে কেবলমাত্র ওর মা ছিল। চৌধুরি পাড়ায় মায়ে ব্যাটায় থাকত। চাকরি বাকরি না পেলেও কচিদা কখনো বসে থাকেনি। সকালে কাগজ বিলি থেকে শুরু করে সারাদিন কিছু না কিছু করে রোজগারের চেষ্টা করত। মায়ের পেনশন আর ওর রোজগার, দুয়ে মিলে সংসার চলে যেত। অবস্থা সেরকম ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ২১ নয়ন আর রজতের পার্ট ওয়ান পরীক্ষা শেষ হয়েছে। সামনে কিছুদিন অখণ্ড অবসর। এই সময়ের দিনচর্চায় পড়াশুনার কোন জায়গা নেই। হাঁড়ি পুকুরের আড্ডায় ত্ততদিনে দুজনে স্থায়ী সদস্যের স্বীকৃতি পেয়ে গেছে। দিনের অনেকটা সময় ওখানেই কাটে। পরীক্ষা শেষ হবার পর নয়ন কয়েকদিন পিসির বাড়িতে গিয়ে ছিল। অনেকদিন পরে গেল, তাই নিয়ে পিসিমার অনেক অভিমান, অভিযোগ, নয়নকে সামলাতে ... ...