লাল পাহাড়ির দেশের এক আশ্চর্য মানুষ সেটা ১৯৮৭ সাল , আমার শিক্ষকতা জীবনের একেবারে গোড়ার দিক। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার পাট চুকতেই তল্পিতল্পা গুছিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম জনা দশেক ছাত্র আর আমরা দুজন মাস্টারমশাই মিলে। হেডমাস্টার মশাইও যাবেন। গন্তব্য লালপাহাড়ের দেশ পুরুলিয়া। ওখানেই তখন স্কুল অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের উদ্যোগে এবং সংস্থার মুখ্য কর্ণধার তথা পরিবেশবিদ্ বিপ্লব ভূষণ বসুর নেতৃত্বে অযোধ্যা পরিক্রমার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য মানুষের মধ্যে ... ...
( ১৯ ) সিঁথির বাড়িতে নিতাইবাবুরা ভালই আছেন। যদিও বরানগরের দিকে রাজনৈতিক গন্ডগোল লেগেই আছে। এখান থেকে আরম্ভ করে বেলঘরিয়া পর্যন্ত নক্শালদের ঘাঁটি। এরা সি পি এম পার্টির চক্ষুশূল। দু দলে মিলে খোলা রাস্তাটা যখন তখন যুদ্ধের ময়দান বানিয়ে ফেলছে। এ ব্যাপারটা নিয়ে অবশ্য একটা অস্বস্তি আছে ওনাদের। নিতাইবাবুর এখনও দুবছর চাকরি আছে। বাড়িতে এখন স্বামী স্ত্রী দুজনই শুধু থাকেন। শ্রীলেখার বিয়ে হয়ে ... ...
মহারাষ্ট্রে বিজেপি হুলিয়ে জিতেছে, আর ঝাড়খণ্ডে গোহারা হেরেছে। মহারাষ্ট্রে বিজেপির প্রচারের একটা বড় অংশ ছিল তাদের 'লড়কি বহিন" প্রকল্প, যাতে ২১ থেকে ৬৫ বছরের মহিলা, যাঁরা কিছু আর্থসামাজিক অবস্থার ক্রাইটেরিয়া মিট করবেন, তাঁরা মাসে ১৫০০ টাকা করে পাবেন। এ হচ্ছে সেইরকমের প্রকল্প, যাকে পয়সাওয়ালা ডানপন্থীরা সোশ্যাল মিডিয়াতে "freebie" বলে গাল পাড়েন, যে গাল আজকাল পশ্চিমবঙ্গের ট্যাঁকভারী বামপন্থীরাও দিচ্ছেন মমতার বিভিন্ন প্রকল্পকে। আর সেটা এই বাস্তবের মুখে দাঁড়িয়ে, যেখানে শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়, সমস্ত ভারতের অধিকাংশই আর্থিক অনটনে ... ...
বর্তমান যুগটা একটা অলীক দুনিয়ায় চলছে, ডিজিটাল যুগ। এমন কি ঘুমোতে যাবার আগে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, whatsapp, করা এসব এখন একটা প্রথা হয়ে গেছে। আবার একবার চালু করলে সময়ের হিসাব থাকে না। রাত তখন প্রায় ২টো। আই প্রোটেক্টর অন করেও চোখের প্রতি অবিচারই করছিল রাকা, কেননা ঘুমকে কোনমতেই জমতে দেবে না সে। এটাই ট্রেন্ড, যে যত রাত-জাগানিয়া সে ততই মডার্ণ আর ততই ডিজিটাল। রাকার ফেসবুকে নতুন ছবি পোস্ট হয় রোজ। বৃষ্টি ঝেঁপে উত্তরাখন্ডে ... ...
জ্যোতিষে আমার কোনদিনই সেরকম বিশ্বাস ছিল না, ভবিষ্যতেও হবার সম্ভাবনা এখনো অবধি দেখছি না। তবু জ্যোতিষীদের সংস্পর্শে এলে যেন মনে হয় - একবার জানলে হয় ভবিষ্যতে কী আছে কপালে। না মিললে না মিলবে, লটারির টিকিটের মত কাটলেই যে পুরস্কার উঠবে তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই।ছোটবেলায় একবার বাবার সাথে গেছিলাম শ্যামবাজারের কাছে এক পন্ডিতের কাছে। তিনি আমার হাত দেখে বলেছিলেন - বিদ্যালাভের জন্য এ ছেলের ভাগ্যে বিদেশযাত্রা আছে। সেই ... ...
আজকাল শব্দ করে শব্দ ধরি শব্দজব্দে ডুবে মরি মাঝে মাঝে মনে হয় কিলোখানেক হাসি যদি কেনা যেত বাজার থেকে অসাবধানে হারিয়ে গেলেও চিন্তার কিছু নেই। আজকাল শব্দ করে শব্দ ধরি শব্দজব্দে ডুবে মরি সেদিন গড়িয়াহটে পথ চলতে পেয়েগেছি সিলিকনের মানিপ্লান সূর্যমুখী ও ছিল, নেওয়া যেতদামে পোষালোনা তাই।.... শুকনো মানি প্ল্যান বদলেনতুনের সংস্থাপন। শুধু হৃদপিন্ডের গঠনটা বড়ই জটিল না হলে পাল্টে নিতাম এখনই। আজকাল শব্দ করে শব্দ ধরি শব্দজব্দে ডুবে মরি। ... ...
তোমার কথা, আমার কথা কথা অনেক বেশী এবার কিন্তূ হারিয়ে যাবে তোমার আমার রশি। তার চেয়ে বরং এসো আমরা নিশ্চুপ হয়ে বসি। সমঝোতা এক জটীল অঙ্ক মন দিয়ে তা কষি। এক জীবনে ধন্দ কত দম্ভটাও আছে শত হিসেব নিকেষ করেও এত আমরা কেমন একই বৃন্তে বসি। এইতো বেশ ভালো আছি মন্দ কিন্তূ নয় মন্দ টা মনের মধ্যে বুড়ো ঘুনপোকাটার ভয়। ... ...
আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে যখন তোমার পুলিশ, তোমার সৈন্য হেঁটে গেল নির্দ্বিধায়, তুমি কোথায় ছিলে? সামনে থেকে আমি যখন অসীম বিশ্বাসে বুক পেতে দিলাম, আমার পুলিশ আমার উপর গুলি চালাতে পারবে না, হোক না সে সশস্ত্র, আমার ভাই তো!যখন গুলি চালিয়ে দিল, তমহন আমার চোখ বিস্ফারিত, যন্ত্রণার চেয়ে অবিশ্বাস বেশি সেখানে। তুমি চেয়েও দেখো না, ক্ষমতা তোমার চোখে ঠুলি পরিয়ে দিয়েছে। ... ...
( ১৮ ) অমল ফিরল মিনিট দশেক পরে । সঙ্গে পাঁচ বছরের ছেলে । রাত্রিকে দেখে বলল, ' আরে ... হোয়াট আ প্লেজ্যান্ট সারপ্রাইজ ! কতক্ষণ ? ' রাত্রি অমলের দিকে তাকিয়ে বলল, ' এই ... কিছুক্ষণ হল ... কথা দিয়েছিলাম ... রাখলাম ... 'এ কথাটার অবশ্য কোন সরস প্রতিক্রিয়া এল না । কিছু থাকলেও এত লোকের মাঝে তা সম্ভব ছিল না । অমল নৈর্ব্যক্তিকভাবে বলল, ' হ্যাঁ ... সেটা ঠিক । আজকাল কারও কথার দাম নেই । খুব খারাপ ... খুব খারাপ ... 'ঘটনাক্রমে অমলের মনে অন্য কিছু থাকার একটা সম্ভাবনা ... ...
আমায় তুমি দিও একটু সময়। দিও আমাকে কিছু অজ্ঞাত নিস্তব্দতা। তোমার স্নিগ্ধ ঠোটের ছোয়ায় একটু খুনসুটি, একটু সঙ্গতি আর বাকিটা কল্পনা। তোমার নিবিড় বক্ষে দিও আমায় এক চিলতে অধিকারের জমি। তোমার চোখের নগ্নতায় দিও আমায় অধীর
আগে, যখন এই দৌড়ে বেরিয়েছিলাম, তখন আমার প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক, আমি প্রাণপণে ছুটেছিলাম, এগিয়ে গিয়েছিলাম অনেককে, অনেকে এগিয়ে গিয়েছিল আমাকে। তারপর পিছু ফিরে তাকাইনি
কি দিয়ে দূরত্ব মাপো দনডি নাকি ফিতে কি দিয়ে বৈশাখ মাপো কি দিয়ে শ্রাবণ কি দিয়ে হিংসা মাপো কি দিয়ে বা খিদে যাহারা অতীত লেখে তাহারাও মাপে সুতানুটি , কলকাতা কতদূর সব্বাই বসে বসে মাপে দূরত্ব মাপে অহরহ দূরত্ব মেপে যায় লোকটা নদীর কাছে বসে ভাবে কোথায় জন্মের আগে কোথায় জন্মের পরে দাগ কাটা যায়। জীবন কি বৃত্তাকারে মাপে? অসতো মা জ্যোতির্গময়।
মনের কথাগুলো শেষাবধি মনেই থেকে গিয়েছেবলা আর হয়নি তোমাকে ...যদিও তোমার কথা জানে আমার গুটিকতক পোষা বেড়াল, মায়ের হাতে লাগানো গাছেরা।গাছের পাতায় পড়েছে যে ছায়াসে ছায়ায় ঢাকা আছে আমার প্রাণের কিছু কথাকথাগুলো যেন পরম নিশ্চিতে বিশ্রামে আছে ছায়ায় ছায়ায়।আমি খুঁজি নতুন আরও কত কথাসাত সাগর, তেরো নদী পেরিয়ে খুঁজি আরও কথা।এ এক আজব খেলামনের কথা বলতে বলতেনিজেকে দেখি কথাঘরে একাকী বাসিন্দার মতো! ... ...
মনের খেয়ালে হাত দিয়ে গড়ে যুগল মূর্তি। হয়তো বুদ্ধ হয়তো শিল্পী বহুৎ সেয়ানা রূপ ভালোবাসে, তৈরিও করে রূপসী বাংলা নিজের মনের নির্জন কোনে অহংকারের দ্রুত চলাচল টের পেয়েছে কি? কেউ কেউ ভাবে আসলে পাগল ঠিক নেই কিছু দেখা যাক কবে হবে ওর শেষ এক্কাদোক্কা, সাপ লুডু খেলা আসলে লোকটা খুঁজে খুঁজে ফেরে তার কৈশোর রং মিলান্তি।
অভয়ার মা তুমি কেন কর ক্রন্দন ? কেন কর আর্তনাদ?কেন বল তোমার কোল খালি হয়ে গেছে ? আমরা শত শত সবলা এসেছি তোমার দুয়ারে,তুমি বেরিয়ে এস ঘর থেকেসম্মুখে আকাশে জ্বলন্ত শিখা জ্বলছে,তোমার অভয়াআমাদের পথ দেখাচ্ছে ।জেগেছে শত শত বঙ্গনারী,জেগেছে আমাদের শিরাধমনী ।বেগে খুলে গেছে সব গৃহদ্বারসহস্র বাধা ভেঙে,যে আছে ঘর কন্নায় সেও সচকিত হয়ে ওঠে ,বেরিয়ে এসেছে শত শত মুকবধিরের দল। ভয় নেই কারণ অভয়া আছে ... ...
( ১৭ ) নিখিল ব্যানার্জী বললেন, ' কেমন আছেন কালীবাবু ? ' ---- ' এই আছি আর কি ... মনে সুখ নাই ... ' ---- ' কেন কালীদা ? ' ---- ' এই সব কিসু কেমন বদলায়ে যাচ্ছে। ভাল লাগে না। ' ---- ' পরিবর্তন তো জীবন এগিয়ে চলার লক্ষণ। এর সঙ্গে তো মানিয়ে নিতেই হবে ... ' ---- ' তা ঠিক কিন্তু সব পরিবর্তন যে ভালর জন্যই হয় তা তো নয়। পরিবর্তনের ফলে অনেক সময় অনেক ভাল জিনিসই দূরে ছিটকায়ে যায় ... ' ---- ' যেমন ... ' ---- ' যেমন ... সাগর মন্ডল। ও কি আর আগের মতো ... ...
বিপ্লুত মহাকাল নারীর চিরকালীন সুষমা ভাগ্য বিড়ম্বনা, দৈব মানবিক অভ্যস্ততা নিয়মের মেলকারি সমস্ত জীব ও জড় প্রকৃতি তদার্থে যে যেমনটা ধারণা করেছে তার থেকেও বিপুল বিস্তারি ও সর্বপ্লাবি সেটাই তার নিজস্বতা নিয়ে সর্বনাশের যেন
সেদিন আর উনি বিকেলে হাঁটতে বেরোন নি, নিজের আরাম কেদারায় বসে ভাবছিলেন আজ হাঁটতে যাবেন কিনা! এখনও পৃথিবী তার অসুস্থতা থেকে সেরে ওঠে নি, বেরোলেই আবার সংক্রমণের ভয়। হঠাৎই কানে এলো ওনার , পাশের ঘরে নাতনি আর বউমার ক্রমশ উঁচু স্কেলে ওঠা তর্ক। “সারাক্ষণ এভাবে ঘরে বসে থাকা যায় নাকি? একটু পার্কে গেলে কী হবে?” “কী হবে তুমি বেশ জানো – ন্যাকা সেজো না। এত কিছুর পরেও, স্যোশাল ডিস্ট্যান্সিং তোমরা কেউ মেনটেন করো ... ...
সময়টা ছিল বড় অশান্ত সময়, সাথী পরিচয় করিয়ে দেয়, মেয়েটির নাম উমা, আমাদের সাথেই পড়ে। আমি একটু আগেই ওকে দেখেছি মিছিলের প্রথম সারিতে। আমি তখন ওকে জিজ্ঞেস করি, কেন তোমরা ক্লাস বন্ধ করে মিছিল করছো ? শাসন মারা গেছে। তাতে কী? দলের একজন মারা গেলেই মিছিল মিটিং করে ক্লাস বন্ধ করতে হবে? এ কেমন রাজনীতি! এটা রাজনীতির ব্যাপার নয়, ভাই। আপনার সামনে এখন যদি কেউ আমাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে আপনি তার প্রতিবাদ ... ...