এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • ঋ-কারান্ত (পর্ব ২)

    erlebnisse লেখকের গ্রাহক হোন
    ২১ আগস্ট ২০২৫ | ২১ বার পঠিত
  • বছরদুয়েক হল শ্রীমন্ত সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারে ফ্ল্যাট কিনেছে৷ কার্পেট এরিয়া হাজার স্কোয়্যার ফিট, সুপার বিল্ট ধরলে আরও এক-দেড়শো স্কোয়্যার ফিট বেশি।  অ্যাকাউন্টসের রূপাদির জামাইয়ের প্রোমোটিং। এমনিতে স্কোয়্যারফিটপিছু বারোশো ছিল, রূপাদির বদৌলতে খানিক কমসম হয়েছে৷ অবিশ্যি না হলেও শ্রীমন্ত নিতই। কারণ স্ত্রীর স্কুলের কাছাকাছি, মেয়েরও৷ শ্রীমন্তর আপিস ডালহৌসি, সে-ও খুব দূর নয়। সবচেয়ে বড় কথা, পুরনো পাড়ার পাশেই। ফলে শ্রীমন্তের যেটা নেশা, রাজনীতি— তাতে অসুবিধে হয় না৷ একই লোকাল কমিটিতে, শুধু ব্রাঞ্চ আলাদা৷ অসুবিধের কিছু নেই, কারণ শ্রীমন্ত এখনও আগের ব্রাঞ্চেই আছে৷ লিটারেচর-ইনচার্জ৷ এদের জন্যই মনে হয় জয়দেব বসু লিখেছিলেন, ‘পার্টি করার চেয়ে বড় আর কিছু বিশল্যকরণী নেই, এ আমি হলফ করে বলতে পারি’।
    এইসময় শ্রীমন্তের স্ত্রী সিরিয়াল দেখে৷ স্টার জলসা আর জি বাংলা। ওদের ছোটবেলায় এসব কিছু ছিল না৷ কাঠের রেডিও, অনুরোধের আসর, মধ্যকৈশোরে পাড়ায় একখানা সাদাকালো টিভি, ছাদে বাঁধা অ্যান্টেনা। তাতেই তিরাশির বিশ্বকাপ। ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় নরসিমা রাও প্রধানমন্ত্রী হলেন। আর মনমোহন সিং অর্থমন্ত্রী। এলপিজি। খোলা বাজারের অর্থনীতি। তারপরেই গ্যাট চুক্তি৷ শ্রীমন্তরা তখন নরসিমা রাওয়ের বাপ বাপান্ত করেছে৷ কিন্তু তদ্দিনে পার্টির চর্বি জমতে শুরু হয়েছে। ফলে শ্রীমন্তর বাবা প্রথম যৌবনে ট্রাম পোড়ালেও শ্রীমন্ত মিছিলে হেঁটে এবং স্লোগান দিয়েই বিপ্লবী ঐতিহ্যের ধারাটুকু বাঁচিয়ে রেখেছে৷ আমরা আগে ন্যাংটা ছিলুম, আমাদের বাটপাড়ের ভয় ছিল না। হরেকৃষ্ণ কোঙার কবেই মারা গেছেন। আমরা এখন কেলভিন ক্লেইনের জাঙিয়া পরি, লেভির জিনস, অ্যালান সালির শার্ট। আমাদের গুহ্যদেশে এখন বিশাল ভয়৷ অভিযোজিত বিপ্লব এখন এসে ঠেকেছে শিশ্নমুণ্ডে এবং চৌখুপি টেলিভিশনের পর্দায়৷ সাঁইবাবার চন্নমেত্ত, মালাইকা অরোরার ছাঁইয়া ছাঁইয়া শরীরী হিল্লোল, কণাদ ভটচাজের জন্য অ্যায় মেরে ওয়াতন কে লোগো, বাচ্চার জন্য প্রোপাগাণ্ডু ছুপাহিন্দু শক্তিমান, স্টার ওয়ার্স টুকে আর্যমান, ঢিসুমপ্যাঁদানি নায়ক অনিল কাপুর, কলচরড স্রাবময় প্যাঁ পোঁ হারমোনিয়ম সহযোগে ওরা আমাদের গান গাইতে দেয় না, নিগ্রো ভাই আমার পল রোবসন, ইলেক্টেডের বদলে সিলেক্টেড ছাত্র সংসদ,  রক্তদান শিবির, কাঠিবাজি, বাইকালার মলাটের ভালগার মার্কসবাদের চটি, স্টুডিওয় খেউড়। দুই সিপিএমের এক কংগ্রেস, এক তৃণমূল, এক বুদ্ধিজীবীর বিরুদ্ধে সে কী অসম এবং বিষম লড়াই— বাপ রে বাপ৷ বসার ঘরে শ্রীমন্তের বউ-শাশুড়ি দেখছে তোমায় ছাড়া ঘুম আসে না মা। হীরা আম্মার ঝিলিককে কী সে ভীষণ দাবড়ানি, প্রচণ্ড ধাতানি। বেশ্যানন্দন গ্রেগের মুখে ঝামা ঘষে দাদার প্রত্যাবর্তন, সমাসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন৷ শ্রীমন্ত খিদে এবং বিপ্লবের খোঁয়াড়িতে ভালোই আছে৷ শ্রীমন্ত ভালো থাক। নধর কিশোরী দেখে ঠোঁট চেটে, দীর্ঘশ্বাসে ডায়েরি ভরিয়ে কোয়াসি-বুদ্ধিজীবী শ্রীমন্ত মিত্তির, হিবিফাইল শ্রীমন্ত মিত্তির, মধ্যবিত্ত ফুলগেরস্ত পার্টটাইম বিপ্লবী শ্রীমন্ত মিত্তির ভালো থাক। বিশ্বাসী কমরেড ছবি মাহাতো, শালকু সোরেন এবং সুমিতা মণ্ডলের জন্য কমরেড আমরা শোক পালন করি। ঔপচারিক শোক পালন নয়, স্ট্রিট কর্নারে কসম খেয়ে এবং আবডালে গীতালির উল্লম্ব খাড়া ঠোঁটে গীতালির স্বামীর অগোচরে চুমু খেয়ে নয়৷ বালিশ চেটে নয়৷ স্পেয়ার আস সরকারি মার্কসবাদীস্, আমরা ঋদ্ধ হতে চাই৷ আপনারাই বলেন প্রয়োগের তত্ত্ব। থিওরি অফ প্র‍্যাক্সিস। অতএব আমাদের পড়তে দিন৷ আসুন কমরেড, আমরা অনন্তরাম গড়গড়ি পড়ি। আন্তোনিও গ্রামশি।

    রবার্ট মাইকেলস কী বলছেন? বলছেন গোষ্ঠীর লৌহকঠিন শাসন। Iron law of oligarchy. পার্টি সংগঠন শেষপর্যন্ত পর্যবসিত হয় আমলাতন্ত্রে৷ মুষ্টিমেয় অভিজন ছড়ি ঘোরায় ব্যষ্টির উপরে। শেষে বদ্ধ জলা ছাড়া আর কিছুই নয়৷ অভিজনের বিপ্লব শেষ। কমরেড ক্যাডার, আপনারা কাঁসাইয়ের বালি দিয়ে পশ্চাৎ প্রক্ষালন করুন৷
    গড়গড়িদা উল্টোবাগে হাঁটছেন না। ববসায়েবকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না, যদিও একেবারে ছেড়ে কথা কইছেন না। গড়গড়িদা লিখছেন, পার্টি যে শ্রেণির প্রতিনিধি, আগে ধরতে হবে তাকে৷ গড়গড়িদা আরও লিখছেন, পার্টি আসলে অনুঘটক। দেখতে হবে পার্টি কতটা গঠনমূলক কাজ করছে, নেতিবাচক ব্যাপারস্যাপারগুলোকে কতখানি আটকাতে পারছে, সে পার্টির অভ্যন্তরে হোক কী বৃহত্তর সমাজে৷ ইতিহাস এইভাবেই মূল্যায়ন করে।
    এবার ববসায়েবকে খানিক ব্যাখ্যা, খানিক কাউন্টার। আমলাতন্ত্রের বদলে গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা। নদীর ধারার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া, নেতা এবং কর্মীর মধ্যে সুন্দর তালমিল। সার্কুলারভিত্তিক পার্টি এবং উপযাচক হয়ে অন্যের সংসারে ফোড়ন কাটার, লোকাল কমিটির আপিসে খাপ পঞ্চায়েত বসানোর বিপ্লব নয়।
    ইতিহাসের এক বিশেষ বাঁকে এসে আমরা পাই পেশাদার রাজনৈতিক কর্মী। প্রথমেই হোলটাইমার, এবং পার্টি মেম্বাররা, এজি ইত্যাদিও। এবং গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা। একে আমলাতন্ত্রের হাত থেকে বাঁচানোর পবিত্র কর্তব্য আপনার কমরেড। তাই স্যামচাচার মতো টপ হ্যাট পরে আপনাকে, হ্যাঁ, আপনাকেই বলছি কমরেড, শুনুন৷ গড়গড়িদা এখানে বেশ ধোঁয়াটে, এবং ধাঁধাঁপ্রিয়৷ আমলাতন্ত্র মানেই নেতৃত্ব অ্যাক্কেরে স্যাচুরেটেড। স্যালাইন ওয়াটার৷ বেশি নুন ঢাললেই থিতিয়ে পড়বে নিচে৷ নুন, থুড়ি বিপ্লবের উদ্বৃত্ত থেকে যাওয়া একটি বিশাল অংশ। নেতারা এবার হুকুম জারি করবেন। নিয়মের পাঠ পড়াবেন। বশংবদ তৈরি করবেন। ‘দাপিয়ে বেড়াবে আমাদের দল, অন্যে ক'বে না কথা,/ বজ্রকঠিন রাজ্য শাসনে এটাই স্বাভাবিকতা।’ মার্জনা করবেন শঙ্খবাবু, গড়গড়িদা ধার নিলেন। অন্যে ক'বে না কথা— সে কথা, সে দাবি যতই বিপ্লবের স্বার্থে হোক না কেন, ব্যষ্টির স্বার্থে হোক না কেন৷
    কিন্তু বাঁচার উপায়? গড়গড়িদা যদিও দোষী সাব্যস্ত করছেন ক্যাডারকুলকে, কিন্তু উপায়ও বাতলাচ্ছেন৷ বাস্তবতাকে বুঝতে হবে, তত্ত্বের সঙ্গে তালমিল থাকবে প্রয়োগের, বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের, নেতার সঙ্গে ক্যাডারের। যদিচ রাজনীতির আদিম এবং অলঙ্ঘনীয় উপাত্ত নেতা এবং ক্যাডারের মধ্যে র‍্যাডক্লিফ লাইন, কিন্তু গড়গড়িদা চাইছেন আদানপ্রদান হোক, লাইন মিলিয়ে আসুক৷ কিন্তু একেবারে মিলিয়ে যাবে কি না— গড়গড়িদা নিজেও নিসংশয় নন৷
    লাইন মিলিয়ে আসবে কী করে? আমরা উত্তর খুঁজি গড়গড়িদার আর একখানা নোটবইয়ে৷ শিক্ষাসম্বন্ধীয় গুটিকয়েক নিবন্ধে৷ ক্যাডারের মধ্যে থেকেই উঠে আসবে নেতা, কিন্তু আমলাতন্ত্র বিবর্জিত, অভিজন নয়, অভাজন। সাব-অল্টার্ন। এবং গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা। নইলে গুলাগ, পুঁটিমাছের সংজ্ঞা— পুঁটিমাছ আসলে সাঁতরে কমিউনিজম পেরোনো তিমিমাছ। গড়গড়িদা তানিয়া এবং জয়ন্তীকে চুমু পাঠালেন। গড়গড়িদা এখন জুভেন্তাসের খেলা দেখবেন।

    *

    “এখানে সবার গল্পই একরকম,” রুকসানা গলা খাঁকরে বললে।
    “সবাই বরের কাছে দাগা খাওয়া, দু-এক বাচ্চার মা, বাড়িতে বলে এসেছে বিউটি পার্লারে কাজ করে?” ঈশান জিজ্ঞেস করলে।
    “মোটামুটি ওই।” রুকসানা বললে, “ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই পাবে সবার কাছে। কিন্তু রেট আলাদা।”
    “কেন?”
    “সে তো চটক দেখে। অবিশ্যি এক একজনের পছন্দ এক এক রকম। কেউ শ্যামলা পছন্দ করে, কেউ কালো, কেউ ফরসা, কেউ ভারী, কেউ পাতলা, কেউ মেমগুদি, কেউ জঙ্গল— সবই আছে। তুমি কোনটা চাও?”
    নূর এতক্ষণ ছায়ায় মিশে দাঁড়িয়ে ছিল। এবার আলতো পায়ে আলোর বৃত্তে এল। কুড়ি ওয়াটের এলইডি আর একশো ওয়াটের বাল্বের সাদা হলুদ আলো মিলে একটা অদ্ভুত বলয় তৈরি করেছে নূরকে ঘিরে৷ জাফরি এবং বন্ধ জানলার ফাঁক দিয়ে নূরের মুখে এসে পড়ছে সাইকাডেলিক বিচ্ছুরণ, নূরের ফ্যাকাশে মুখ এখন আরও মায়াবী, রহস্যময়ী।
    “তুমি তো জানো রুকু আমরা কী চাই।”
    রুকসানা মিশি-দোক্তা চিবোনো কালচে ক্ষয়াটে দাঁতের ফাঁকে একচিলতে হাসল। ছিক্ করে একগাদা পানমশলার খয়েরি লালচে থুতু ফেলল ডাস্টবিনে। কনডোমের ছেঁড়া প্যাকেট, থকথকে বীর্য, ঘাম, আরও কয়েকদলা থুতুর সঙ্গে মিশে এক অদ্ভুত মণ্ড তৈরি হল। তার সঙ্গে উগ্র আঁশটে গন্ধ৷ রুকসানা হয়গ্রীবের মতন গলা উঁচিয়ে হাঁক ছাড়লে, “পরসাদ, জারা সোমাকো বুলানা।”
    প্রসাদ, যার অপভ্রংশ পরসাদ, সরু বারান্দার ওপাশে দাঁড়িয়ে খৈনি টিপছিল। গার্ডারে জড়ানো প্লাস্টিকের দু'মুখো কৌটো। একপাশে কাটা খৈনি, অন্যপাশে চুনের ঢিপলি৷ ঠোঁটের পিছনে খৈনি গুঁজে প্রসাদ উত্তর দিলে, “কাস্টমার হ্যায় ভাবি।”
    “কাস্টমার হ্যায় তো নিকাল না উসকো,” তীব্র খনখনে স্বরে বললে রুকসানা৷ কবজি উলটে ঘড়ি দেখলে, তারপর মুখের অর্গল খুলে দিলে। “এক শট মে কিতনা টাইম লাগতা হ্যায় মাদারচোদ? আশিয়ানা মানা রহা হ্যায় না শালি কে পুত। নিকাল উসকো। ফিন ম্যায় দেখতি হুঁ৷ লৌণ্ডিবাজি করনে আতা হ্যায় শালা হিঁয়াপে। দেড় ঘণ্টা কবকা বিত গয়া৷ তু ক্যা মুঠিয়া মার রহা থা হুঁয়াপে?”
    রুকসানার চোটপাটেই মনে হয় খুট্‌ করে শেষপ্রান্তের দরজা খুলে গেল। ঈশান একটি মধ্যমাকৃতি ছায়া দেখতে পেলে৷ সামান্য পৃথুল, মাঝবয়েসী একটি লোক, ইন্দ্রলুপ্ত, শার্টের একটা প্রান্ত ঝুলছে বাইরে, চামড়ার ব্রিফকেস অর্ধেক খোলা। লোকটি ভিতরে ফিরে কী একটা যেন বলতে যাচ্ছিল অস্ফুট স্বরে, প্রসাদের হাত কাঁধে চেপে বসতেই থেমে গেল৷
    “চলিয়ে দাদা।”
    একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে লোকটি সিঁড়ি দিয়ে নামতে লাগল৷ পিছনে প্রসাদ৷ দোতলার ল্যান্ডিংয়ে নেমে প্রসাদ বললে, “ঔর দোশো৷”
    লোকটি ভুরু কুঁচকে বললে, “সব হিসাব তো ঘর মে হি চুকতা হো গয়া।”
    “উয়ো তো লড়কি কা হিসাব৷” ছোপ পড়া দাঁতের ফাঁকে একগাল হেসে প্রসাদ বললে, “নিচে ক্লাব কা লড়কা খাড়া হ্যায়৷ উসকো চান্দা দেনা হ্যায়। ফিন সামনে পুলিশ। শ শ দোশো।”
    প্রসাদ হাত বাড়াল৷
    লোকটি অপ্রসন্ন মুখে প্রসাদের হাতে দুটো একশো টাকার নোট গুঁজে দিলে।

    রত্নাকর তপস্যা করে বাল্মিকী হয়েছিলেন, আর সোনাউল্লা ডাকাত মরে গিয়ে গাজি। তার মায়ের সে কী বুকফাটা কান্না। তখনই কুঁড়ের ভিতর থেকে জলদগম্ভীর স্বর, “মা, আমি গাজি হয়েচি।” আর যায় কোথা! বামুন, কায়েত, চাঁড়াল, মোচলমান, বেধবা মাগ, বেহেড মাতাল ফিরিঙ্গি মদ্দা, সোমত্ত দোআঁশলা খানকি— সব গিয়ে ‘কে সারা সারা’ গেয়ে হত্যে দিলে সোনা গাজির দোরে৷ শুধু একটি দৈববাণীর অপেক্ষা, হলেই ডাকাত বদলে যাবে অবতারে৷ সোনা গাজির মা কাউকে জলপড়া দিলে, কাউকে ঝাঁট পুড়িয়ে ধোঁয়া শোঁকালে। সে কী ভিড়, কী ক্যাওড়াবাজি কম্রেড মিত্তির, আপনি ভাবতেও পার্ব্বেন না। নিক্কি বাঈজি অবধি ঘাঘরা খুলে চোলি জড়িয়ে হাফ-ল্যাংটো হয়ে হত্যে দেয় পারলে, গাজিবাবা, নেচে নেচে হাঁটু খুলে গেল প্রায়, ফিরিঙ্গি, নেটিব সায়েব, এমনকি একখান মুদ্দোফরাশ অবধি জুটলে না, যে দু'খান কতা কইবে, জিজ্ঞেস কর্ব্বে ‘তোমার চোখ এত লাল কেন’। সব গু-খেগোরা অরকুট মারাচ্চে গাজিসায়েব। আর তসলিমার বই পোড়াচ্চে। তুমি অভাগীর দিকে চোক তুলে চাও৷
    মসজিদ ইত্যাদি খাড়া করে গাজির মা যথাসময়ে পটল তুললে। মসজিদে বট-অশথ-পাকুড় গজাল, মসজিদের নাম ধার করে মসজিদবাড়ি স্ট্রিট হয়ে গ্যালো। দুর্গাচরণ মিত্তির রোডের বাঁকে পুকুরপাড়ে সোনা গাজির কবর, সে পুকুর বুজে বাড়ি উঠে গ্যাচে। রাস্তা ধরে এগোলেই পাঁচ নম্বর। উল্টোদিকে ব্যাঙ্ক অফ বরোদার এটিএম। লোলচর্ম বিগতযৌবনা খানকিরা খদ্দেরের লোভে বসে আচে৷ ডাঁই করা নোংরা, কালো পচা জল, খোলা সরু ড্রেন, পেচ্ছাপ-পানপরাগ-ধেনো-দিশি মদ-গাঁজা-স্যানিটারি ন্যাপকিন ধোয়া জল- ফেনসিডিল-ডেনড্রাইট-লোটে মাছ ভাজার বিশ্রী ককটেলগন্ধ৷ অন্ধকারে ঘাপটি মেরে বসে হপ্তাখাকি মামু। ক্লাবে সস্তা মদের টুংটাং, প্রৌঢ়-প্রবীণ খোঁচা খোঁচা দাড়িওয়ালা দেহাতি সাব-অল্টার্ন ধুতিম্যানের দল রোয়াকে বসে গজল্লাব্যস্ত। একটি মহিলার মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে। তাকে ঘিরে ছোট্ট জটলা। খিস্তি-পাল্টা খিস্তির দামোদর-হোয়াংহো। লক্কড় ছোকরা ভুঁড়িদাস বুড়োর লুঙ্গি টেনেই দে দৌড়। লোমশ বান্টু দুলিয়ে বুড়োর ছোকরার মা চোদার সে কী সুতীব্র আস্ফালন! আপনি শুনতে পাচ্ছেন কম্রেড? ওই দেখুন সুনীল যাচ্চে৷ ওইপাশে মাহিন্দার৷ বললেই সোজা নিয়ে গিয়ে তুলবে গণেশ ভবনে। বা শান্তি ভবন। এভরিথিং ইজ দেয়ার৷ বর্ডার পেরোনো বাংলাদেশি ছুকরি, কাকদ্বীপের ধীবরকন্যা সত্যবতী, ছাপরা-দ্বারভাঙা হয়ে আসা হাতফেরতা নেপালী, আগ্রাওয়ালি। আগ্রাওয়ালিদের রেট অবিশ্যি বেশি। পাঁচশো থেকে পনেরো হাজার— দেড় ঘণ্টা৷ একঘণ্টার ড্যান্স, আধাঘণ্টার শট। কনডোম পরতে না চাইলে গাঁড়ে এক লাথি। মাদারচোদ, বউ পেয়েচিস নাকি? বিয়ারের টাকা আলাদা৷ আশনাই করা বারণ৷ করলে আজ লক্কা পায়রা, দু'দিন বাদে হাতে হ্যারিকেন। না পড়া থাকলে মুজতবা আলীর ‘নোনাজল’ পড়ে নিন। পার্থ দে আপনার ছেলেমেয়ের নাইন-টেনের বাংলা বইয়ে রেখেচেন সমীরুদ্দির ছোট ভাইয়ের কিস্সা— ধলাইছড়ি, কুলাউড়ায় গিয়ে কীভাবে মাগীবাজী করে ফতুর হয়ে গ্যাচিল বাঞ্চোৎ।
    আপনাকে শট বোঝাই কম্রেড৷ মানে ল্যাংটো হবেন। চুদবেন। কিন্তু ফেলতে পারবেন একবারই। মাল আউট তো আপনিও আউট। অতএব ধ্বজভঙ্গ থাকলে সাবধান৷ যাওয়ার আগে আর একটি সতর্কবাণী। তক্কো করবেন না, দরাদরি করবেন না। ফোন নম্বর আদানপ্রদান— নৈব নৈব চ। যাবেন, কাজ সারবেন, চলে আসবেন৷ ইত, পারফিসিত ওপাস, দিসেদিত (Ite, Perficite opus, discedite)। মধু খেতে গ্যাচেন, ফুলে ফুলে ঘুরে ঘুরে মধু খান৷ এক ফুলে কদ্দিন বসে থাকবেন! সবাই পিটার ডি'সুজা হয় না কম্রেড। আপনিও নন৷ আর হ্যাঁ, রাস্তায় লাগানো অজস্র মাসাজ পার্লারের বিজ্ঞাপন দেখে লোভ সংবরণ করুন৷ গেলেই, ইংরেজিতে, য়ু উইল বি ফাকড আপ। সুখ নেই, কারণ লোলযোনি। মাসাজ পারে না৷ উলটে ঠকার এবং লালবাতি গাড়ি চড়ার সম্ভাবনা প্রচুর। সাধু সাবধান।

    “আপলোগ কুছ লেঙ্গে? বিয়ার, হুইস্কি, রাম, ভদকা?”
    “এক ভদকা লানা৷ পাঁইট। কোক ভি।”
    “চাট বগেরা?”
    “রুকসানাকো কাজু ভেজনে বোল। ঔর আইটিম।”
    প্রসাদ সপ্রশ্ন দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকায়৷
    “উসে পাতা হ্যায়। ঔর হাঁ, বগলওয়ালা ঘর মে কৌন হ্যায়?”
    “রিমি হ্যায়। ঔর দো বান্দা। জনমদিন মানা রহা হ্যায়।”
    নূর প্রসাদের হাতে একটা পাঁচশোর নোট ধরিয়ে দেয়৷ হাত নেড়ে চলে যেতে বলে সোমার দিকে ফেরে৷
    কথোপকথন অবিশ্যি আগেই হয়ে গেছে৷ দরদস্তুরও৷ চুমু খেতে আপত্তি নেই, কিন্তু ব্লোজব চলবে না।
    “মুখে নিই না দিদি,” সোমা বললে, “ঘেন্না লাগে।”
    “ওসবের কথা হচ্ছে না।” নূর বললে, “আর কিছু আছে?”
    “ক্যাপ পরতে হবে। নইলে করি না।”
    ঈশান নূরের দিকে তাকালে। নিবু নিবু আলোআঁধারিতে নূর যেন অন্য জগতের বাসিন্দা৷ আমাদের অগম্য জগৎ৷ বিপ্লব এবং মৃত্যুর পরেও বরফশীতল একটি পাইন-ফার-বার্চ-ওকের বন, জাহাজের ভোঁ এবং লবণগন্ধা জলের জগৎ। সোঁদা মাটি ভরা আবলুস কাঠের কফিন। কারমেলা।
    “একটা প্রশ্ন করব দিদি?”
    “বল।”
    “তুমি কি লেসবো? নাকি ওইসব?”
    “হিজড়ে?”
    সোমা ঘাড় নাড়ে।
    নূর হেসে প্রশ্নটা এড়িয়ে যায়। প্রসাদ ট্রে নিয়ে ঘরে ঢোকে। স্মিরনফ, কোকাকোলা। বরফের কুচি৷ চিনেমাটির রেকাবিতে সাজানো কাজু। পিছনেই আর একটি অল্পবয়সী ছেলে। তার হাতে হুঁকো আর আলবোলা। এবং একটি কালচে-বাদামি চটচটে মণ্ড৷
    ঈশান ঘাড় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘরখানা দেখে। বড়জোড় সাড়ে ছয় ফুট বাই আট ফুটের ঘর। রট আয়রনের খাট৷ দেওয়ালে ওয়ালপেপার লাগানো৷ আর একপাশে দেওয়ালজোড়া আয়না৷ মেয়েটির পিছনে৷ এককোণে মিউজিক সিস্টেম। ছোট ডাস্টবিন। ব্যবহৃত কনডোম এবং কনডোমের প্যাকেট ছড়িয়ে আছে ভিতরে। ক্রম্পটনের সিলিং ফ্যান, হিতাচির এসি, দুটি সিএফএল টিউব। একটি মরকুটে নাইটবাল্ব৷ সবুজ দরজার উপরে সাইকাডেলিক আলো। ঝিকমিক করছে, পিছলে যাচ্ছে নূরের মুখ থেকে, শীর্ণ নীলাভ নখ থেকে। ঠিকরে পড়ছে সোমার অনাবৃত কাঁধে। ফরসা, রোগাটে, কাঁচুলি এবং লেহেঙ্গার মাঝে সামান্য মেদ। চড়া দাগের মেকআপ। ঈশান জানে কাঁচুলির নিচে সোমা সস্তা ব্রা পরেছে, শিয়ালদা স্টেশন অথবা খান্নার হাট থেকে কেনা। আপাতত এবড়োখেবড়ো পিন লাগানো, ঈষৎ ছেঁড়া। এখানে প্যান্টির চল নেই৷ থাকলেও কম৷ রোঁয়া ওঠা, বিবর্ণ, কোমরের কাছে খানিক ছেঁড়া৷ সোমা অবিশ্যি লেহেঙ্গার নিচে হটপ্যান্ট পরেছে।
     
    এখানকার সব বাড়িই প্রায় একরকম৷ সরু সরু উঁচু সিঁড়ি, অপ্রশস্ত বারান্দা। চলটা ওঠা দেওয়াল। তার উপরেই রঙের প্রলেপ। ল্যান্ডিংয়ে বা কোণে-ঘুপচিতে শুয়ে থাকা নেশাখোর, ঝি-বাঁদী৷ হল্লা, খেউড়, পসরা সাজিয়ে থাকা রূপোপজীবিনী, কেউ হাসছে, কেউ চৌকাঠে এসে দাঁড়াচ্ছে, ফিরে যাচ্ছে, ব্যাজারমুখে বসে থাকছে পরের খদ্দেরের অপেক্ষায়, ফোনের নীল-সবুজ আলো খেলে যাচ্ছে তাদের মুখে। এবং স্বপ্ন। তরল, বায়বীয়, উদ্বায়ী। বারাসাতে একটি ঘর, এক কামরার ফ্ল্যাট হলে ভালো হয়৷ ছেলের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল। তারস্বরে জি লে লে, জি লে লে, আয়ো আয়ো জি লে লে, হল্লা, খিস্তি, সাদা গুঁড়ো, কোকেন, নাক দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত, এবং আবার আপবিটময় মিঠুন চক্রবর্তী, ‘শিশে কি উম্র পেয়ালে কি, আখির বিসাত কেয়া/ টুটা যো দিল কিসি কা, তো হ্যায়রত কি বাত কেয়া’।
    “সকাল ক'টা অবধি চলে?” ঈশান জিজ্ঞেস করে।
    “মোটামুটি ছ'টা-সাতটা। খুব বেশি সাড়ে সাত৷ তারপরে আর কেউ থাকে না।”
    “তখন কি ঘুমোনোর সময়?”
    “ওই আর কি। স্নান করি, মুড়িটুড়ি খাই, তারপর হয় এখানেই শুয়ে পড়ি, নইলে গিরস্তিতে যাই।”
    ঈশান নূরের দিকে তাকায়। আলবোলা মুখে নিমীলিত চোখ৷ ঘরময় দা-কাটা অম্বুরি তামাকের গন্ধ৷
    “গিরস্তি মানে ওদের ফ্ল্যাট৷ কাছেপিঠেই৷ মাঝেমধ্যে রুটিন পুলিশি রেইড হয়৷ ওরা অবিশ্যি আগে থেকেই জানতে পারে৷ তখন গেরস্তিতে চলে যাওয়াটা বাধ্যতামূলক।”
    সোমা ঘাড় নাড়ে।
    নূর কালচে-বাদামি মণ্ড থেকে একটুখানি ছেঁড়ে, আঘ্রাণ নেয়, অনুচ্চারে বিড়বিড় করে কীসব বলে, সোমার হাতে ধরা গেলাসে ফেলে দলা পাকিয়ে৷ সোমার হাত ধরে গেলাস নাড়ায়৷ সোমা মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে থাকে নূরের দিকে। সোমা চুমুক দেয়৷ নির্জলা ভদকার সঙ্গে আফিম মিশে যায়৷ রক্তে মেশে৷ চলকে ওঠে আদিম শ্বাস, নিবিড় কূজন। সোমা ঈশানের কাঁধে হাত রাখে৷ বিস্ফারিত চোখের মণি, পরক্ষণেই ভিতরগামী৷ মণিবিহীন সাদা অক্ষিকোটর।
    “নূর?” সোমা বলে।
    “বলো।”
    “মনে পড়ে কিছু?”
    “ধোঁয়া ধোঁয়া।”
    “তাই বল।”
    “জাহাজঘাটা। সায়েব আসচে। দু'জন। তিনজন। এক্কাগাড়ি। না না, টমটম। এখানে তখন পুকুর ছিল। ঝুপসি পাকুড় গাছ।”
    “গাজিসাহেবের পুকুর?”
    “হতে পারে। তুমিও তো ছিলে নূরবিবি, ছিলে না?”
    ঈশান নূরকে দ্যাখে। কপালে স্বেদবিন্দু। সবুজ চোখে বন্য ঝিলিক। পিপাসার্ত ঠোঁট৷ ঠোঁট ছুঁয়েছে সোমার গলা। আশ্লেষহীন চুমু। বাঘ পিঠ বেঁকিয়েছে। এক্ষুনি ঝাঁপ দিল বলে।
    নূর নিচু গলায় বলে, “লিন বাওকে দেখতে পাও কিশোরী?”
    “দেখতে পাই।”
    “কোথায় সে?”
    “টেরিটি বাজার। ছাতার দোকানের পিছনে ঘুপচি ঘর৷ কিন্তু তুমি ছেড়ে দিয়েছিলে কেন নূরবিবি? খাতায় গোলমাল তো লিনই করেছিল।”
    “কেন করেছিল?”
    “ভুল মানে করেছিল।”
    “ইশারা বোঝেনি?”
    “বুঝেছিল। তাও ভুল লিখেছিল।”
    “তাই কি ছেলেটিকে চায়?”
    “লিন চায় না। লিন বাঁচাচ্ছে৷ অন্য কেউ।”
    “কে সে?”
    “সময়।”
    “খাতাটা কিন্তু এখনও আমার কাছে আছে।”
    “পিছনে নকশা আঁকা। কিন্তু লাভ নেই। ঝড় আসছে। তুমি আটকাতে পারবে না।”
    “তাহলে?”
    “চলেই যাও৷ আর কত বইবে? তোমাকে তো কেউ মনে রাখেনি। নাম বদলে গেছে, রাস্তা বদলে গেছে, মানুষ বদলে গেছে। তুমি ভীতু। মরতে ভয় পাও। তাই চলেই যাও।”
    “আর জমে থাকা আফিমের পেটিগুলো?”
    “সেগুলো কোনোদিনই তোমার ছিল না। যখের মতন আগলে তুমিই থেকেছ। সাত শরিকের সম্পত্তি, তোমার কাজে এতদিনে যখন লাগেনি, ভবিষ্যতেও লাগবে না।”
    নূর ঈশানের দিকে তাকিয়ে হাসে। ঈশান হাতে আলতো চাপ অনুভব করে। নূরের বরফঠাণ্ডা হাত। ঘরভর্তি গুগ্গলের ধোঁয়া এবং অপার্থিব শৈত্য। কোনো শব্দ নেই। সব স্থাণুবৎ। ঈশান আয়না দেখে৷ সোমা এবং ও। নূর নেই। প্রতিবিম্বহীন একটি অস্তিত্ব। পরাবাস্তবিক অস্তিত্ব কি? ঈশান জানে না৷ ঈশান জানতে চায় না৷ নূরের ঠোঁটের ফাঁকে বেরিয়ে আসে শ্বদন্ত। চেপে বসে সোমার পেলব গলায়। একবিন্দু রক্ত গড়িয়ে পড়ে।
    “শকরন লাক, মুরাহিক।”
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন