
কোনো এক বিখ্যাত কবির তত্ত্ব ছিলো যে কোনো কোনো ভাষায় নাকি মানুষ সারা জীবন ধরে যা কিছু বলে তার সবটাই একটা, মাত্র একটাই বাক্য - তার প্রথম অস্ফুট ডাক থেকে শেষ পারানির কড়ি - মাঝের সমস্ত যতিচিহ্ন অজস্র সেমিকোলন। একটি মানুষ, সেই তত্ত্ব অনুসারে, আসলে একটিই বাক্য - হয়তো একটি দীর্ঘ কবিতা, যা সে সারা জীবন ধরে রচনা করে চলেছে নিজের অজ্ঞাতসারে। আমি তত্ত্ব বুঝি না, আমি বুঝি সায়নদার কবিতা আমার কাছে কী? এই কবিতাগুলি সূচিভেদ্য অন্ধকার জঙ্গলের মাঝে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ কানে আসা বহুদূরের কোনো এক ক্ষীণতনু মুখচোরা নদীটির স্বর। আমি এই অন্ধকার বন হাতড়ে হাতড়ে, ক্ষত ও ক্ষয় নিয়ে শুধুই পৌঁছতে চেষ্টা করছি সেই নদীটির দিকে। যতোই যাই ততো অন্ধকার ঘন হয়, তবু মনে হয় এইসব শীতের নীরবতা ঠেলে একদিন সেই একলা তীরে দু-দণ্ড বসতে পারলে বড্ড শান্তি পাই আমি। সায়নদার, হ্যাঁ, এই কবিতাগুলি সায়নদার। সায়ন কর ভৌমিকের। বইয়ের নাম আপাতত "রাধিকা ও আর্শোলা"। বইটি বেরুবে বইমেলায়। গুরুচণ্ডা৯-র তরফে। ... ...

সম্প্রতি শেষ হল এ-বছরের কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। প্রতিযোগিতা মূলক এই উৎসবে প্রতিযোগিতার বিভাগটি বাদে যে বিভাগটির উপর সিনেমা-প্রেমীদের বিশেষ নজর থাকে তা হল 'সিনেমা ইন্টারন্যাশনাল'। কারণ এই বিভাগেই দেখান হয় সাম্প্রতিক সময় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবি গুলি। এবছর আরেকটি বিভাগ অত্যন্ত নজর কেড়েছে, 'বিয়ন্ড বর্ডারস: ডিসপ্লেসমেন্ট, মাইগ্রেসন,....'। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত আমাদের এই সময়কালে এই বিভাগটি তুলে ধরেছে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির প্রকৃত ছবি। এই সব বিভাগ থেকে দেখা কিছু ছবি নিয়েই আজকের এই আলোচনা। ... ...

জাপান আমার খুব প্রিয় দেশ – আর সেই দেশের সবচেয়ে ভালো লাগার শহর আমাকে বাছতে বললে প্রথমেই আসবে কিয়োটোর নাম। জানি না কেন, কিয়োটো আমাকে খুব টানে – এই জায়গায় সৌন্দর্য্য, এখানকার সংস্কৃতি, নানা প্রাচীন মন্দির – তাদের সাথে জড়িয়ে থাকা রূপকথার মত গল্প – সব জড়িয়ে কেমন মোহময় লাগে সব কিছু। তবে জাপানের এক সময়ের রাজধানী কিয়োটো শুধুমাত্র তার মন্দির, বাগান আর গেইশা এলাকার জন্যই বিখ্যাত নয়, তার সাথে আপনি জুড়ে নিন এখানকার খাদ্য সংস্কৃতি – তা সে প্রথাগত ভাবে জাপানী খাবার রেস্তোঁরাতে খাওয়া হোক বা রাস্তার ধারের স্ট্রীট ফুড, যা নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা। ... ...

সেই যে লঙ্কার অরিষ্ট পাহাড়ের থেকে লাফ দিল হনুমান, নামল একেবারে মহেন্দ্রর চূড়ায়। নামতে নামতেই আকাশ থেকে সে দেখতে পায় জাম্বুবান দাদা আর তার বন্ধুরা সবাই আকাশের দিকে তাকিয়ে হনুমানের জন্যে অপেক্ষা করছে। কোন কোন বাঁদর সবা'র আগে হনুমানকে দেখবে বলে উঁচু গাছে চড়েছে, আকাশপানে তাদের মুখ। আবার আশপাশের নানা সাইজের পাহাড় আর টিলাতেও উঠেছে অনেক ভল্লুক আর বাঁদর। ... ...

বাস এগিয়ে চলে বিশাল এক হ্রদের পাশ দিয়ে ঘুরে ঘুরে। নাম বড়াপানি বা উমিয়াম। এবারে কিছুক্ষণের বিরতি, ভালোই হল, বাস থেকে নেমে হাত পা ছাড়িয়ে লেকটা ভালো করে দেখার সুযোগ পেয়ে গেলাম। ইংরেজি ইউ আকৃতির মতো এক বিশাল হ্রদ। আমরা দেখছি পাহাড়ের অনেক উঁচু থেকে। নিচে জলের কাছে গেলে নৌকা বিহারেরও সুযোগ আছে দেখলাম। ইউ এর মাঝখানে দ্বীপের মতো উঁচু হয়ে আছে। দুপাশের পাহাড় আর মাঝখানের দ্বীপ বড় ঘন সবুজ। ... ...

বিচ্ছিন্ন ভাবে লন্ডনে প্রায়শই বর্ণ বৈষম্য প্রণোদিত হত্যা ও জীবনহানি হত। কিন্তু একটা হত্যা সারা দেশকে স্তম্ভিত করেছিল এবং আমাকে বিশেষভাবে স্পর্শ করেছিল। স্টিফেন লরেন্স নামে এক কালো কিশোর নৃশংসভাবে দিনের আলোয় নিহত হয়েছিল। এই কেস বহুদিন চলেছিল এবং কখনো নিঃসন্দেহভাবে এর নিষ্পত্তি হয় নি, যদিও কুড়ি বছর পর দুজন হত্যাকারীর শাস্তি হয়েছিল। স্টিফেন লরেন্সের মা, ডোরীন লরেন্স এতকাল ধরে ন্যায্য বিচারের জন্য যুদ্ধ করে গিয়েছিল। সাধারণের চোখে মেট্রোপলিটন পুলিশ বর্ণ পক্ষপাতিত্ব দোষে দুষ্ট বলে বিবেচিত হয়েছিল। ডোরীন লরেন্স এখন ব্যারোনেস ডোরীন লরেন্স, হাউস অফ লর্ডসের সভ্যা। ... ...

এই আকস্মিকতার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না। বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতার জনক, তিরিশ বছর যাবত প্রেসিডেন্ট জুল রিমে (Jules Rimet, যার নামে কাপের নাম) বিজয়ী ব্রাজিলের উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় যে স্পিচ লিখে এনেছিলেন, সেটি পড়া হল না, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের হাতে কাপ তুলে দেওয়া হয়নি। বিজয়ী দলের জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর জন্য যে ব্যান্ড স্টেজে ছিল, খেলা শেষ হওয়া মাত্র তারা অদৃশ্য হয়ে যায়। কোন ব্যান্ড বাজেনি, উরুগুয়ের পতাকা রিওর আকাশে ওঠেনি। ... ...

কী মুশকিল! কূর্ম এবং বরাহও তো অবতার, একই লাইনে; মানে জয়দেবের দশাবতার স্তোত্রে। তাহলে ওদুটো খাওয়াও ছাড়তে হবে নাকি? এসবই নাকি শাস্ত্রে মানা রয়েছে। কোন শাস্ত্রে? বেদ, উপনিষদ, রামায়ণ, মহাভারত কোথাও গরুকে মাতা বলতে দেখলাম না। তাই মনুস্মৃতিতেই খোঁজ করা যাক। কারণ, আগেই বলা হয়েছে—যা আছে তা মনুস্মৃতিতেই আছে, এবং যা এতে নেই তা কোথাও নেই। ... ...

সত্যি কথা বলতে কি ফিলিপিন্সের খাবার আমার নিজের খুব একটা প্রিয় এমন নয়। খাবার দিলে খাব না বা আয়েশ করে চাখবো না এমন নয় – কিন্তু কোথাও খুঁজে পেতে ফিলিপিনো রেষ্টুরান্ট-এ খেতে যাচ্ছি, তেমন সম্ভাবনা বেশ কম। আমার বাড়িতে দীর্ঘ সময় ফিলিপিনো কাজের লোক ছিল – একজন বেশ ভালো রাঁধত, কিন্তু তার রাঁধা ফিলিপিনো খাবারও তেমন একটা মুখরোচক লাগত না। উলটে সেই মেয়ে আমার বউয়ের কাছ থেকে ভারতীয় রান্না, বিশেষ করে মাংসের ঝোল রান্না করা শিখে নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করে খেত! সাগাদা ফিলিপিন্সের এমন জায়গা গুলির মধ্যে পড়ে যেখানে খুব বেশি ঔপনিবেশিক প্রভাব নেই – অন্তত ছিল না বহুদিন। কারণ তখনকার দিনে এই এলাকায় আসাই চাপের ছিল – মানে দুর্গম যাকে বলে আর কি। সেই কারণে এই এলাকায় ক্যানকানা উপজাতির স্থানীয় সংস্কৃতি অনেকাংশেই অপরিবর্তিত থেকে গেছে – এবং সেই ছাপ এখনও এখানকার প্রচলিত খাবারগুলির মধ্যে দেখা যায়। সংরক্ষিত থেকেছে, যা তাদের খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাসে স্পষ্ট। এখানে বলে রাখা ভালো যে এই ক্যানকানা উপজাতি ফিলিপিন্সের বৃহত্তর ইগোয়োট গোষ্ঠীর অংশ যারা এখনো উত্তরের পাহাড়ী অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে। ... ...


ততক্ষণে এটুকু বুঝেছি এই বন্ড গুরুর স্ট্র্যাটেজির নাম অ্যাসেট বেসড সিকিউরিটি। সলোমন ব্রাদার্সের লু রানিয়েরি (আগের পর্ব পশ্য) বাজারে তখন হাজার হাজার মর্টগেজ অ্যাসেট জুড়ে বন্ড বানিয়ে, বেচে বাজার কাঁপাচ্ছেন। সেখানে আমার প্রশ্ন ছিল – বিভিন্ন মর্টগেজের আয়ু, ই এম আই আলাদা। আজ কেউ বাড়ি কিনল আরেকজন বেচল, ইতিমধ্যে মর্টগেজ সুদের হার, ই এ এম আইয়ের পরিমাণ বদলে গেছে; তবু বাজার যখন এটাকেই ‘সিকিউরিটি ‘বলে মাথায় চড়িয়েছে, সেখানে আমি কোথাকার হরিদাস পাল যে এই মহান উদ্যোগে সংশয় জানিয়ে আমার বরানগরী নির্বুদ্ধিতা জাহির করবো? কিন্তু এই ট্রেড, বিলস, কালেকশানের বিষয়টা বোঝার অহংকার আমার আছে সঙ্গত কারণেই। ১৯৭৭ সালে এই দিয়েই ষ্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ফ্রাঙ্কফুর্টে আমার হাতেখড়ি, তার পর কনটিনেনটাল ব্যাঙ্ক, সিটি ব্যাঙ্কের প্রথম দু বছরের কার্যকলাপ। ... ...

অধ্যাপক জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য আমার দেখা অন্যতম শ্রেষ্ঠ মানুষ। তাঁর সঙ্গ আমাকে ঋদ্ধ করেছে। এখনও বর্ধমান গেলে তাঁকে প্রণাম না করে ফিরি না। তাঁর দাদা কল্যাণ ভট্টাচার্যও একজন গুণী অধ্যাপক। বড় মনের মানুষ। বাইরেটা কঠিন। ভিতর নরম। সিপিএমকে ভোট দিতেন কিন্তু কট্টর সমালোচক ছিলেন। পণ্ডিত ধ্রুবতারা যোশীর খুব কাছের মানুষ। দু ভাইই ভালো ধ্রুপদী সঙ্গীত জানতেন। তেমন চর্চা আর করেননি। কল্যাণ ভট্টাচার্যের ছিল বিপুল ক্যাসেট সংগ্রহ। তাঁর সংগ্রহ দেখে আমার স্বল্প আয়ের ইচ্ছে ফলবতী হয়। ... ...

গোড়ায় সৃষ্টিতত্ত্বে বলা হচ্ছে স্রষ্টা নিজদেহ দ্বিধা বিভক্ত করে অর্ধভাগে পুরুষ হলেন, বাকি অর্ধে নারী। তার থেকে বিরাট পুরুষ সৃষ্ট হল, যিনি মনুর স্রষ্টা।(১/৩২)। তাহলে তো নারী পুরুষ সমান সমান, কোন পক্ষপাতের প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু পুরুষ যখন সামাজিক প্রথা, আইনকানুন বানাতে শুরু করল তখন নিজেদের দিকে টেনে খেলল। নারী আর সুখে দুঃখে সমান অংশীদার রইল না। ‘ওরা’ এবং ‘আমরা’র খেলা শুরু হয়ে গেল। ‘এ বাণী প্রেয়সী হোক মহীয়সী তুমি আছ, আমি আছি’ শুধু কবির ইচ্ছেয় রয়ে গেল। মনুসংহিতায় এবার সেই খেলাটাই পর্বে পর্বে দেখব। ... ...

অনেকে বলতেই পারেন এগুলো সব হেরোদের যুক্তি, অনেকে বলতেই পারেন বিরোধী জোটের অপদার্থতাই এই ফলাফলের জন্য দায়ী, কিন্তু যে নির্বাচন কমিশনের প্রতিটি দলের জন্য সমান সুযোগ দেওয়ার কথা, তারা কি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছেন? নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার ৭ দিন আগে যখন বিহারের ১.৩০ কোটি ‘জীবিকা দিদি’দের জন্য ১০হাজার টাকা এককালীন অনুদান হিসেবে ঘোষিত হয়, তারপর সেই ‘জীবিকা দিদি’দেরই আবার নির্বাচনের কাজে নেওয়া হয়, তাহলে তাঁদের ভূমিকাকে কি নিরপেক্ষ বলা চলে? বহু মানুষ বলছেন, অন্য রাজ্যেও তো এই ধরনের প্রকল্প চলে, তাহলে সেটা নিয়েও তো প্রশ্ন তুলতে হয়। অবশ্যই প্রশ্ন করতে হবে, যদি কোনও ক্ষমতাসীন দল সারা বছর গরীবদের বিভিন্ন দাবী দাওয়াকে উপেক্ষা করে ভোট কেনার জন্য এই রকম কোনও অনুদান ঘোষণা করে, তাহলে তার অবশ্যই বিরোধিতা করা উচিৎ। সঙ্গে অবশ্যই বলতে হবে, নির্বাচন কমিশন কি অন্যান্য রাজ্যের ক্ষেত্রে এইরকম চোখ বুজে নির্বিবাদে সব কিছু মেনে নেয়? রাজস্থানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের স্মার্ট ফোন প্রকল্পটি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তেলেঙ্গানায়, ২০১৮ সাল থেকে চলমান রাইথু বন্ধু প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নির্বাচনের আগে। অন্ধ্রপ্রদেশে, ওয়াইএসআর চেউথা ডিবিটি প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এমনকি উড়িষ্যার নবীন পট্টনায়েকের প্রকল্পটি ২০১৮ সালে যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেই উদাহরণ কিন্তু আছে। আগামী বছর বাংলার নির্বাচনের আগে চলতে থাকা লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পও যে বন্ধ করে দেওয়া হবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা কি আছে? ... ...

মনু বলছেনঃ নিজধর্ম গুণবর্জিত হলেও ভাল, পরের ধর্ম সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হলেও ভাল নয় , অপরের ধর্মানুসারে জীবনধারণ করলে (মানুষ) তৎক্ষণাৎ জাতিভ্রষ্ট হয় (১০/৯৭)। খেয়াল করুন , ভগবদগীতাতেও ঠিক এটাই বলা হয়েছে। “শ্রেয়ান স্বধর্মো বিগুণঃ পরধর্মাৎস্বনুষ্ঠিতাৎ। স্বধর্মে নিধনং শ্রেয় পরধর্মো ভয়াবহঃ।। অর্থাৎ কোন ব্যক্তির জন্মসূত্রে প্রাপ্ত জাতিধর্ম যদি নিকৃষ্টও হয়, তবু অন্য জাতির উন্নত ধর্ম পালনের চেয়ে নিজের জাতিধর্ম পালনে মৃত্যুবরণ শ্রেয়স্কর। ... ...

আধুনিক অর্থনৈতিক বৃদ্ধির তত্ত্বের সূত্রপাত রবার্ট সোলোর মডেলের মাধ্যমে। এই মডেলে সোলো দেখান কীভাবে পুঁজি বিনিয়োগ অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ঘটায় এবং কখন গিয়ে মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধি থেমে যায়। এই মডেল দেখায় শুধু পুঁজি বিনিয়োগের ওপর নির্ভর করলে মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধি এক সময়ে থেমে যাবে। এই থেমে যাওয়ার মূল কারণ পুঁজির ফেরত হা্রের (যা তার প্রান্তিক উৎপাদনশীলতা দিয়ে মাপা হয়) ক্রমহাসমানতা। তাহলে বৃদ্ধির ঘড়ি জারি রাখার উপায় খুঁজতে এর পরবর্তী প্রজন্মের বৃদ্ধি মডেলগুলির সূত্রপাত। সোলো মডেল থেকেই এই সূত্র পাওয়া গেছিল যে ক্রমাগত উদ্ভাবন প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারলে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিকে বজায় রাখা যেতে পারে। কিন্তু উদ্ভাবন প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার উপায় কী? ... ...

২০১৪ সালের ২৫শে জানুয়ারির কলকাতার দ্য টেলিগ্রাফ কাগজে ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ লিখেছিলেন এক বিতর্কিত উত্তর সম্পাদকীয় নিবন্ধ, “Genius and Charisma”। সেখানে তিনি মন্তব্য করেছিলেন- “Karanth was arguably as great a genius as Tagore.” গুহ নিজেই স্বীকার করেছিলেন, কান্নাড়া ভাষায় তিনি তেমন পারদর্শী নন। তবু কেন এমন তুলনা করলেন, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে লিখেছিলেন, “করন্থের প্রতিভার সবচেয়ে উজ্জ্বল প্রমাণ মেলে তাঁর সম্পর্কে যে কথোপকথনগুলি কানে এসেছে। হেগগোডুর মতো কন্নড় সংস্কৃতির প্রাণবন্ত কেন্দ্রে গিয়ে জেনেছিলাম, সেখানকার অভিনেতা ও পরিচালকরা করন্থের দ্বারা কতটা অনুপ্রাণিত (যথার্থভাবেই, স্থানীয় অডিটোরিয়ামটিও তাঁর নামে)। বেঙ্গালুরুতে ঔপন্যাসিক ইউ. আর. আনন্দমূর্তি ও নাট্যকার গিরিশ কারনাড জানিয়েছিলেন, করন্থ কন্নড় সাহিত্যকে যেন নতুন প্রাণ দিয়েছিলেন। নয়াদিল্লিতে বিশিষ্ট সমালোচক এইচ. ওয়াই. শারদা প্রসাদ বলেছিলেন, ... ...

শক্তি: এবার আমার গল্পটা বলি। বিয়ের আগের দিন রাত্রিবেলা আমি হাজতে ছিলাম। (ঘরের মধ্যে হাসির হুল্লোড় পড়ে গেল)। আমি অলিম্পিয়ায় মদ খেয়ে ফিরছি। রাত দেড়টা। তার পরের দিন আমার বিয়ে। আমি সকলকে বললাম, অলিম্পিয়ায় চলে এস। তখন অলিম্পিয়ায় আমার ঠেক। বেরিয়ে এসে রাস্তায় চাঁদ দেখছি। চাঁদটা একটু ভাল ভাবে দেখা দরকার। চাঁদ পড়ে আছে ... চাঁদ না দেখলে তো বিয়ে হয় না। পুলিশ আমাকে তুলে নিয়ে গেল। তার আগের দিন থানার ও-সিকে রাতে জড়িয়ে ধরে চুমু-টুমু খেয়েছি। ব্যাটা ছেলের চুমু ওর পছন্দ হয়নি। মেয়েছেলের চুমু খেতে অভ্যস্ত। ... ...

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ঘর ফেরত আমেরিকান সৈন্যরা আর্মি কমিশন শেষে হাতে যে থোক ডলার পেলেন সেটা বিনিয়োগ করার কাজে এগিয়ে আসেন জে আর হুইটনির মতন দু চারটি ফান্ড। প্রাইভেট ইকুইটির ব্যবসা এই ভাবেই শুরু হয়েছিল। তবে একদা সেটা ছিল একান্ত প্রাইভেট, দুটি পক্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ। ক্রমশ দেখা গেল কিছু ব্যাঙ্ক বা ফান্ড তাঁদের টাকার ছোট একটি পোঁটলা এঁদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, সামান্য কিছু দিলাম। দেখে শুনে লাগান। নয়ের দশকে যখন এই ব্যবসা কাছে থেকে শুরু হতে দেখেছি, তখন আমার প্রথম চেনা সেই প্রাইভেট ইকুইটির পিছনে সিটি ব্যাঙ্কের অভয় আশীর্বাদ ছিল। ১৯৪৬ থেকে ১৯৯০ অবধি সারা পৃথিবীতে প্রাইভেট ইকুইটির কারবারি সংস্থার সংখ্যা ছিল দেড় হাজারের কম, মোট ফান্ড ভ্যালু মেরে কেটে ছয় বিলিয়ন। ... ...

একটা গল্প দিয়ে বিষয়টা বোঝানো যাক। পুরাণের গল্প। রাজা দক্ষের ২৭ কন্যার গল্প। কন্যারা বিবাহযোগ্যা হয়ে উঠলে তাদের সঙ্গে বিবাহের কথা বলতে গিয়ে দক্ষ পড়লেন মহা ফাঁপরে। কারণ এই ২৭ জনের প্রত্যেকেই মনে মনে চাঁদকে ভালোবাসেন। তা কন্যাদের তেমন দোষ দেওয়াও যায় না। অন্ধকার আকাশের প্রেক্ষাপটে চাঁদ দেখতে কার না ভালো লাগে! অগত্যা তেমনই বিবাহের ব্যবস্থা হল। এরপরেই সমস্যার সূত্রপাত। ... ...