এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা   সমাজ

  • বাংলাস্তান ও শিক্ষক !!!

    দীপ
    আলোচনা | সমাজ | ০৫ জুলাই ২০২৫ | ২০৩ বার পঠিত
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের ওপর হামলা নিয়ে কলম ধরলেন বাংলাদেশের লেখক আবরার শাহরিয়ার। লেখক নিজে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। শান্তির পায়রা ও ছাগুদের হাতে বাংলাদেশ যথার্থ‌ই শান্তির নীড়ে পরিণত হয়েছে, কোনো সন্দেহই নেই।
    --------------------------------------------------------------------

    শিক্ষক গেছেন পদোন্নতির ভাইভা বোর্ডে এটেন্ড করতে। প্রশাসনিক ভবনের সামনে রিক্সা থেকে নামতেই আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে থাকা মবসন্ত্রাস উনাকে ধাওয়া করে। দৌড়ে গিয়ে শিক্ষকটি আশ্রয় নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তা ভিসির কক্ষে। মবও এবার ভিসির কক্ষে উপস্থিত হয়। এক ভিসি ও দুই প্রো ভিসির সামনে উত্তেজিত হয়ে কটূক্তি করতে থাকে বারবার। মবসন্ত্রাসীরা কতটা উত্তেজিত ও মারমুখী ভঙ্গিতে ছিলো সেটা ভিডিওতে দ্রষ্টব্য। সেই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তা তিন ভিসির দায়িত্ব কি ছিলো না আগে উনাদেরই সহকর্মী, স্বজন আক্রান্ত শিক্ষকটিকে সেইভ করা? মব থেকে আলাদা করে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে দরকারে আলাদা কক্ষে মবসন্ত্রাসীদের দাবিদাওয়া নিয়ে মুখোমুখি বসা? অথচ কী ঘটলো? আমরা অবাক হয়ে দেখলাম মূল ভিসি আরাম কেদারায় হেলান দিয়ে বসে আছেন। উনার দৃষ্টি মাথার উপরে কড়িকাঠের দিকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত মাথার উপরের ছাদে কড়িকাঠ না থাকায় উনি সম্ভবত শীতলীকরণ যন্ত্রের সক্ষমতা নিয়ে ভাবছিলেন। 
    আরেক উপ ভিসিকে দেখা গেলো দিকশূন্যহীন হয়ে ডাইনে বামে হাতপা ছুড়াছুঁড়ি করতে।

    সবচেয়ে মারাত্মক ও মর্মান্তিক দৃশ্যের অবতারণা হলো এরপর। উদ্যত, উত্তেজিত মবসন্ত্রাসীদের রোষানল ও ক্ষোভাগ্নি উদগীরণ হচ্ছিল দীর্ঘক্ষণ ধরে। এক পর্যায়ে আক্রান্ত শিক্ষক ডক্টর কুশল বরণ চক্রবর্তী পরিস্থিতি লঘু করতে উদ্ধত অসভ্যদের কিছু একটা বলতে চাইলেন। হাসি মুখেই তির্যক অভিযোগ ও অবমাননার ব্যাখ্যা দিতে চাচ্ছিলেন হয়তো। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই কালো পাঞ্জাবি পরিহিত প্রো ভিসি কামালউদ্দিন গর্জে উঠলেন। গর্জনের অভিমুখ মব নয় বরং সম্মানহানি হওয়া শিক্ষক বরাবর। আঙুল উঁচিয়ে শরীর দুলিয়ে মুখে রক্তিম আভা ফুটিয়ে "চুপ একদম চুপ" বলে তেড়ে গিয়ে থামিয়ে দিলেন কুশল বরণ চক্রবর্তীকে! অথচ একই একশান ও এক্সপ্রেশান নেওয়ার কথা ছিল মব সন্ত্রাসী বরাবর। তাহলে শিক্ষককেও জনসম্মুখে নাজেহাল হতে হয় না, আর উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের আনীত অভিযোগেরও একটা শান্তিপূর্ণ সুরাহা হয়। কিন্তু বিচারক নিজেই যদি দাঁড়িপাল্লা হাতে নিয়ে নিপীড়কের পক্ষে রায় দেওয়ার মনস্থির করে রাখে তাহলে এমন অভূতপূর্ব, অচিন্তনীয় ও অবিশ্বাস্য দৃশ্যের মঞ্চায়ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। 

    চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আজকে যা হলো এবং ভিসিগ্যাং যেভাবে নজিরবিহীন অমেরুদণ্ডী প্রাণীর ভূমিকায় রোল প্লে করলো, তাতে এই রায় দেওয়াও খুব অযৌক্তিক হবে না যে ডক্টর কুশল বরণ চক্রবর্তীর সাথে ঘটে যাওয়া বহুমুখী প্রোপাগাণ্ডার উপর নির্মিত সফল প্রহসনের পিছনে মূল কুশীলব হিসেবে স্বয়ং ভিসিগ্যাংই মূল কলকাঠি নেড়েছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 2402:3a80:198f:d36d:878:5634:1232:***:*** | ০৬ জুলাই ২০২৫ ১৪:০২745241
  • স্বাভাবিকভাবেই মহাবিপ্লবীরা এখন মৌনব্রত অবলম্বন করবেন!
  • দীপ | 2402:3a80:198d:8b91:778:5634:1232:***:*** | ০৮ জুলাই ২০২৫ ০০:০৮745256
  • ওরা আমার মামাকে ধরে নিয়ে গেছে। ইউনুস সরকার আমার মামাকে ধরে নিয়ে গেছে। আমার বাল্যবন্ধুকে ওরা ধরে নিয়ে গেছে। আমার প্রথম 'পার্টনার ইন ক্রাইম'কে ওরা ধরে নিয়ে গেছে। 

    নাহ, এই প্রথম সে জেলে যায় নি৷ জীবনে আরো বহুবার জেলে গেছে। তার বাবা স্বর্গীয় মনু মোহন রায় দাদুও বহুবার জেল খেটেছেন রাজনৈতিক কারণে। 

    একজন রাজনীতিবীদ জেল খাটবেন এটাতে লজ্জার কিছু নেই, অপমানের কিছু নেই। কিন্তু এবার আমার মন খারাপ অন্য কারণে। বেশ কিছু বছর আগে স্ট্রোক করার পর থেকে শরীরের একটা দিক ওর একটু অবশ। এখনো কথা বলে জড়িয়ে জড়িয়ে! ঠিক ভাবে পা ফেলতে পারে না। অথচ এই রকম অসুস্থ একজন মানুষের হাতে হাতকড়া!

    বেশ কিছুদিন আগে ওর সাথে ফোনে কথা বলছিলাম। ওর সাহসের তারিফ করায় ও বলেছিল, "মামা, তোমার তো সরাসরি রাজনীতি করার দরকার নাই। তুমি গানে গানেই মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে যাও।"

    ও আর আমি সমবয়সী। বাবার অসুস্থতার কারণে একবছর আমায় নেত্রকোনায় থাকতে হয়েছিল। আমরা দু'জনই তখন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। আমি আঞ্জুমান স্কুল, ও দত্ত হাই স্কুল। 

    আমরা দুজন প্রথম একসাথে বাসার টিনের চালের উপরে উঠে লুকিয়ে লুকিয়ে বিড়ি খেয়েছিলাম, স্টার সিগারেট।  

    নেত্রকোনার হাসনা টকিজে প্রথম স্কুল পালিয়ে ছবি দেখেছিলাম, রংবাজ মুভি। একই মেয়েকে আমাদের দুজনের ভালো লেগেছিল শৈশবে। কিন্তু মেয়েটাকে দুজনের কেউই মুখ ফুটে বলতে পারিনি। সেই ভদ্রমহিলা এখন স্বামীসন্তান নাতিপুতি দিয়ে সুখী জীবন যাপন করছেন। আমার সাথে যোগাযোগও আছে। 

    ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট আমরা দুজন একসাথে ছিলাম, নেত্রকোনায়। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু সংবাদ শুনে এই মামা খুব কেঁদেছিল। যদিও তখন রাজনীতি বোঝার বয়স আমাদের হয় নি। কিন্তু শেখ মুজিবের প্রতি, তাঁর আদর্শের প্রতি প্রেম সেই শৈশব থেকে, পারিবারিক ভাবেই তা পেয়েছিল।

    ওহ, বলা হয় নি, আমার মামা হচ্ছেন প্রশান্ত কুমার রায়। উনি নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সভাপতি নেত্রকোণা জেলা ছাত্রলীগ, সাবেক মেয়র নেত্রকোণা পৌরসভা, সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। আজ গাজীপুরের দত্তপাড়া থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, হায়!

    গত ১০ মাস সাহস করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের  খুব বেশি মানুষ বাংলাদেশে মিছিল করতে পারে নি। আমার মামা করেছেন। শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই পথে নেমেছিলেন। 

    গত ২০ জুন সকালে তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ব্যানারে ঝটিকা মিছিল হয়। জেলা শহরের বড়বাজার এলাকা থেকে মিছিল শুরু করে ছোট বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এলে প্রশান্ত কুমার রায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন। এসব কর্মসূচির ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

    এ ঘটনার প্রতিবাদে একই দিন সন্ধ্যা ও রাতে জেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও খেলাফত আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে প্রশান্তর গ্রেপ্তারের দাবি জানান। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে দুর্বৃত্তরা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রশান্ত কুমার রায়ের চারতলা বাসায় হামলা চালিয়ে আসবাবসহ সবকিছু ভাঙচুর, টাকাপয়সা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করে বলে অভিযোগ ওঠে।

    মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকা যদি অন্যায় হয়, বঙ্গবন্ধুর পক্ষে থাকা যদি অন্যায় হয়, আওয়ামীলীগের রাজনীতি করা যদি অন্যায় হয়, তবে আমার মামার জেল হোক, ফাঁসি হোক। 

    আমি জানি আমার পন্ত মামা মাথা নোয়াবার মানুষ নন। আপোষ করার জন্য প্রশান্ত রায়ের জন্ম হয় নি। যদি দরকার হয়, ও হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে উঠবে। ও গল ছেড়ে গাইবে-

    'একবার বিদায় দে মা, ঘুরে আসি
    আমি হাসি হাসি পড়বো ফাঁসি
    দেখবে জগৎবাসী।'

    ওর মুখ থেকে শেষ শব্দ উচ্চারিত হবে- "জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।"

    লিখেছেন মহীতোষ তালুকদার।
    লিংক উপরে দেওয়া হয়েছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন