এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ ২৬

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ০৪ জুলাই ২০২৫ | ৬১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ ২৬

    পেয়েছি ছুটি
    বিলাসপুর শহরের নেহরু চৌকে একটি চারতলা বাড়িতে স্টেট ব্যাংকের রেসিডেনশিয়াল ট্রেনিং সেন্টার। তাতে গ্রামীণ ব্যাংকের ছেলেপুলেদেরও ট্রেনিং দেয়া হয়। 
    আমি দু’বার গেস্ট লেকচার দিয়েছি—একবার মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি আর একবার গোল্ড লোন দেয়ার সাতসতেরো নিয়ে। সেই দু’বারই, পনেরশ’ টাকার চেক পেয়ে বাড়িতে গিন্নিকে দেখিয়ে বেশ পেখম মেলেছিলাম।  

    সে’সময় সেন্টারের প্রিন্সিপাল এম এল পস্তৌর স্যার। আমাদের ব্যাংক শুরু হওয়ার দিনে উনি ছিলেন –ম্যানেজার (জেনারেল ব্যাংকিং)।
     আমার মত অনেককে হাতে ধরে কাজ শিখিয়েছেন। খুব ভাল বোঝাতে পারেন।
     
    গতকাল ওনার ফোন এল—রায়, আগামী শনিবার সন্ধ্যের পরে ট্রেনিং সেন্টারে ডিনার। তোদের আসতে হবে।
    -আমাদের? মানে?
    --প্রথম ব্যাচের বাইশজনকে।
     
    মরেচে! সেদিন যে আমার নাটকের দলের রিহার্সাল—চেখভের ‘ম্যারেজ প্রপোজাল’। আমি বাবার ভুমিকায়।

    -স্যার, আমি না এলে হয় না? মানে পেটটা ঠিক---!
    --তোকে হাড়ে হাড়ে চিনি। ওসব পট্টি আর কাউকে দিস্‌। সারদা স্যারের বিশেষ ইচ্ছে তুই সেদিন ‘সঞ্চালন’ (অ্যাংকরিং) করবি।
     
    --সারদা স্যার! উনি তো নিউ ইয়র্কে স্টেট ব্যাংকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
    --উনি এখন রিটায়ার করে দেশে ফিরেছেন। ভোপালে বাড়ি কিনেছেন, বাকি জীবন ওখানেই  কাটাবেন। 
    তার আগে ওনার ইচ্ছে একবার বিলাসপুর-রায়পুর গ্রামীণ ব্যাংকের প্রথম ব্যাচের ছেলেদের সঙ্গে ডিনার করা, আড্ডা দেয়া ইত্যাদি।

    --হঠাৎ?
    --দূর হাবা! হঠাৎ কেন হবে? উনি ব্যাংকের প্রথম চেয়ারম্যান। একসময় নিজের হাতে যে চারাগাছ পুঁতেছিলেন, সার দিয়েছেন, জল দিয়েছেন—আজ সেটা কেমন দেখতে হয়েছে? এটা কি খুব অদ্ভূত কিছু?
    --সেসব আমাদের গত তিন বছরের ব্যালান্স শীট দেখলেই তো বোঝা যায়।
    -- ওসব উনি আগেই দেখে নিয়েছেন। ওঁর আগ্রহ মানুষজন কে কেমন আছে সেটা নিয়ে। 
    তোদের নিজের হাতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দিয়েছেন, বরাবর নাম ধরে ডেকেছেন। 
    আর শোন, এটা একেবারে আন-অফিসিয়াল প্রোগ্রাম। তাই এখনকার চেয়ারম্যান, জিএম, ভিজিল্যান্স –কাউকে ডাকা হচ্ছে না। 
    কোন বাতেলাবাজি ভাষণ নয়, শুধু নিজেদের মধ্যে কঘাবার্তা, গল্পগাছা এই আর কি! আর ওনার বিশেষ ইচ্ছে সঞ্চালন তুই করবি।

    এসে গেল শনিবারের সন্ধ্যে। বাড়ি থেকে স্নানটান করে ধোপদূরস্ত হয়ে ট্রেনিং সেন্টারে হাজির হই।
     তিনতলার হলে যেতে হবে। নীচের তলার অনেকগুলো বাতি নিভিয়ে রাখা। মনটা আনচান করছে। 
    লিফট থেকে বেরিয়ে আলোঝলমল হলে পা রাখতেই সবাই হৈ হৈ করে ওঠে—এসে গেছে! এসে গেছে!
     
    হ্যাঁ, আমাকে ছাড়া সবাই আগে থেকে হাজির। চেয়ার টেনে গোল হয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছে।
     সারদা স্যার প্রায় একই রকম সুপুরুষ, শুধু চুল অনেকটা পেকেছে। 
    উজ্বল চোখে একই রকম হেসে  বললেন—দেখেছ,  রায় কিন্তু তিরিশ বছরেও বদলায় নি, পনের মিনিট লেট! সাবাশ!
     
    সবাই হেসে ওঠে, আমি লজ্জা লজ্জা মুখে মাথা চুলকোই।
     উনি আমার আপাদমস্তক দেখে বলেন—নাঃ , কিছু জিনিস শুধরেছে। দাড়ি কেটেছে আর জুতো পরে এসেছে। আমি ওকে দু’দুবার বকে ছিলাম । 
    হাওয়াই চটি পরে হেড অফিসে এসেছিল! ভাব একবার।

    একটু পরেই পস্তৌর স্যারের ইশারায় আমি গিয়ে মাইকের সামনে দাঁড়াই। অল্পকথায় সারদা স্যারের সঙ্গে আমাদের পুরনো সম্বন্ধের কথা উল্লেখ করে ওনাকেই ডেকে নিই।
    সবাই ওনার মুখে নিউ ইয়র্কে স্টেট ব্যাংক পরিচালনার গল্প শুনতে চায়। 
    উনি বলতে থাকেন; সুবক্তা। একসময় রায়গড় সরকারি কলেজে ইকনমিক্স পড়াতেন; কেইন্স ওনার প্রিয়।
     
    আমার কানে সবার কথাবার্তা ধীরে ধীরে ভ্রমরগুঞ্জন হতে হতে অস্পষ্ট হয়ে যায়। আমি নিজের মনে ফিরে যাই তিরিশ বছর আগে, ১৯৭৭ থেকে ৮১ সালে।  

    সারদা স্যার একের পর এক শাখা খুলছেন আর স্টেট ব্যাংক থেকে অফিসার এনে ব্যাংকিং শুরু করাচ্ছেন।
     সবাই সমান নয়।

     কেউ ব্যাংকিং বলতে বোঝেন সকালে চাবি লাগিয়ে  টাকা পয়সা গুণেগেঁথে ক্যাশিয়ারকে সঁপে দিয়ে ভাউচার পাস করা আর বিকেলের মুখে ফের হিসেব মিলিয়ে সিন্দুকে তুলে তালা লাগিয়ে দেয়া। বাকি সময় স্টেটমেন্ট তৈরি করা, লেজার ব্যালান্স করা –উফ্‌ কত কাজ!

    এঁরা ব্যাংক থেকে বেরিয়ে ফিল্ডে গিয়ে বিজনেস আনা পছন্দ করেন না। বলেন—কী দরকার! সাইনবোর্ডে “ভারতীয় স্টেট ব্যাংক দ্বারা প্রায়োজিত” লেখা আছে না?
     ব্যস, ওর জোরেই বিজনেস পায়ে হেঁটে আসবে। আর শোন, গায়ে পড়ে কাউকে লোন দিতে যেও না, ফল ভাল হয় না। 
    যার  পেটে খিদে, সে নিজে এসে মুখ ফুটে বলবে।
    এঁরা ওল্ড স্কুল, সংখ্যায় বেশি।
     
    অন্য মেরুতে দাঁড়িয়ে আমার গুরু সত্যদেব বোস।
    চাবি লাগিয়ে সিন্দুক খোলা এবং চেয়ারে সারাদিন আঠা হয়ে লেগে থাকা? এসব অ্যাকাউন্টান্টের কাজ, ম্যানেজারের নয়। 
    ম্যানেজার বিজনেস প্ল্যানিং করবে, বিজনেস আনার জন্যে বাজপাখির মত নজর রাখবে। এলাকার সবকিছু নখদর্পণে থাকবে, অফিস থেকে বেরিয়ে জনসংযোগ করবে এবং সামনে থেকে টিমকে লীড করবে। 
     
    সারদা স্যার আমাদের বোঝান—সব এলাকার সমান পোটেনশিয়াল নয়, কোথাও ডিপোজিট, কোথাও লোনের সম্ভাবনা। কাজেই গোটা ব্যাংককে দেখ, বিগ পিকচার দেখ। 
    ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান বানিয়ে সেই হিসেবে কাজ কর—ছড়িয়ে ছিটিয়ে নয়, এলাকা ধরে ধরে।
    তুমি ডিপোজিট আনছ--- আমি খুশি। আর তুমি কোয়ালিটি লোন দিচ্ছ--- আমি খুশি। দু’রকমই  দরকার। গোটা ব্যাংকের লাভ-লোকসান দেখতে হবে।
     
    --কিন্তু স্যার, আমার তো কয়লাখনি এলাকা—ডিপোজিট আনছি। অথচ আমাদের লোন দেয়ার ম্যান্ডেট কেবল সমাজের ‘উইকার সেকশন’ এর জন্য। তাহলে তো আমার ব্র্যাঞ্চ আজীবন ‘লস মেকিং’ হয়ে থাকবে, যারা লোন বেশি দিচ্ছে তারা সবসময় ‘প্রফিট মেকিং’ হবে।
    এটা অন্যায় নয়? আপনিই তো বলেন প্রতিটি ব্র্যাঞ্চের বিজনেস লাভজনক হওয়া উচিত, অন্ততঃ মাসের শেষে অফিসের ভাড়া, সবার মাইনে—এর থেকে বেশি আয় হওয়া উচিত!
     
    ওনার মুখে প্রশ্রয়ের হাসি।
    --ঠিকই বলেছ, কিন্তু এখনও প্রাথমিক স্তরে আছ। আগামীবছর থেকে ‘ট্রান্সফার প্রাইস মেকানিজম’ ইন্ট্রোডিউস করা হবে। তখন দেখবে সমস্ত ব্র্যাঞ্চ—ডিপোজিট হোক বা লোন—তাদের বিজনেসের তুল্যমূল্য ভ্যালু পাচ্ছে।

    অ্যানুয়াল ক্লোজিং তখন বিরাট ব্যাপার। এক বা দুই জানুয়ারি যারা ব্র্যাঞ্চ থেকে  ব্যালান্স শীট/ প্রফিট অ্যান্ড লস স্টেটমেন্ট নিয়ে জমা করতে হেড অফিসে আসত, তাদের সবার জন্য এক কাপ চা এবং একটি সামোসা বরাদ্দ ছিল। একবার সারারাত জেগে কাজ পুরো করে কাগজপত্র নিয়ে বাসে বসে ঘুমোতে ঘুমোতে মুখে নাল গড়ানো অবস্থায় বেলা চারটে নাগাদ ওনার চেম্বারে হাজির হলাম।

    উনি এক পলক দেখে হেসে বললেন—খুব খেটেছ বুঝতে পারছি, এবার আমার ওয়াশরুমে গিয়ে ভাল করে হাতমুখ ধুয়ে এস।
     
    চেয়ারম্যানের ওয়াশরুমে ঢোকা! তখন ভাবা যেত না।
     
    উনি স্বভাবে দরবারি ছিলেন। আশা করতেন ব্যাংক বন্ধ হলে কিছু অফিসার, অন্ততঃ যাদের বাড়ি বিলাসপুরে, তারা ওনার বাড়িতে এসে দুটো সুখ দু;খের কথা কয়ে যাবে, এক কাপ চা খাবে। ওনার মাসিক চায়ের বিল হরদম স্টেট ব্যাংক স্বীকৃত অ্যালাউন্স থেকে কয়েকগুণ বেশি হত।
     
    অনিচ্ছাকৃত ভুল হলে শাস্তি না দিয়ে বোঝাতেন।
    ফলে ওনার ভক্তকুল বেশ বড় হত।

    আমি সেই ভজনমণ্ডলীর বাইরে। একে তো বিলাসপুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে পোস্টিং। তায় ওনার সবাইকে ডেকে ডেকে ঘর গেরস্থালীর কথা জিজ্ঞেস করা –আমার কেমন  পরিকল্পিত অভিনয় বলে মনে হত।
    আমাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারে ছিল বেতনের সঙ্গে হাউস রেন্ট অ্যালাউন্স এবং মেডিক্যাল অ্যালাউন্স! 
    উনি কোনটাই দিতেন না, যুক্তি এখন তোমাদের প্রোবেশন পিরিয়ড চলছে—দু’বছর। এসব পাবে চাকরি পাকা হলে।

    আমার হাড়পিত্তি জ্বলে গেল। এই শর্ত তো লেটারে বলা নেই। 
    তারপর বলা হল যেহেতু গণ্ডগ্রামে পাকাবাড়ি নেই, তাই উনি ব্র্যাঞ্চের জন্য এমন সব বাড়ি ঠিক করেছেন যাতে ম্যানেজারের রেসিডেন্স হয়ে যাবে। ফলে হাউস রেন্ট অ্যালাউন্স অপ্রয়োজনীয়।
     
    --সে তো বুঝলাম। মানে আমরা ব্যাংক বিল্ডিংয়ে চৌকিদারি করব, আর তার জন্যে আমাদের অ্যালাউন্স কাটা যাবে? আবার ট্যুর করলে বাস ও ট্রেনের ভাড়ার রসিদ জমা করে পয়সা ফেরত পাওয়া যাবে। কিন্তু কোন খাওয়ার পয়সা বা ডেইলি অ্যালাউন্স দেয়া হবে না, পার্মানেন্ট হইনি যে!
     
    এতো সেই “ভাল রে ভাল করে গেলাম কেলোর মায়ের কাছে, কেলোর মা বলল, আমার ছেলের সঙ্গে আছে”! 
    আচ্ছা বেশ, তাহলে পুরো মাইনে দিন, যেমন নিয়োগপত্রে লেখা আছে। তাতে কাজ চালিয়ে নেব।
     
    --উঁহু, প্রথম বছর তোমরা কনসোলিডেটেড অ্যালাউন্স পাবে ৫৫০/- আর পরের বছর ৬০০/- মানে প্রোবেশনে আছ তো?

    সবাই কলেজ থেকে বেরিয়ে চাকরিতে ঢুকেছি, আদ্দেক শব্দের মানে বুঝি না। এইসব নতুন শর্ত আরোপ করার অধিকার ওনার আছে কিনা, তা’ও জানিনা।
    তবে দেরাদুনে ট্রেনিং সেন্টারে জানলাম—রাজস্থান, গোরখপুর, সাঁওতাল পরগণা বা অন্য কোন ব্যাংকে এসব নেই। এগুলো ওনার মস্তিষ্কের উপজ।

    উপায়?
    ইউনিয়ন তৈরি করা।
     
     
     এদিকে কেরালার কান্নানোর এবং ওড়িষ্যার ভুবনেশ্বরে অখিল ভারতীয় ইউনিয়নের রূপরেখা তৈরি হয়ে গেল।  বঙ্গের তিনটে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে দিলীপদা, অজিতদা এবং রিজার্ভ ব্যাংকের নেতা আশিস সেন (পরে রাজ্যসভার সদস্য) এগিয়ে এলেন।
    ব্যস, আমাকে আর পায় কে! সবাইকে বলছি “ধাও ধাও সবে সমরক্ষেত্রে, গাহ উচ্চে রণজয়গাথা”।
     
    কিন্তু বেশির ভাগ ছেলেমেয়ে দেখি ওনার ব্যক্তিত্বের ছটায় মুগ্ধ। তখনও স্টকহোম সিন্ড্রোম শব্দটি শুনি নি।

    তবু ইউনিয়ন তৈরি হল। 
     
    ব্যাংকের বার্ষিক বোর্ড মিটিং হেড অফিসে। 
    আমরা প্রায় সত্তর জন ম্যানেজার সেখানে গিয়ে মেম্বারদের সঙ্গে দেখা করে মেমোর‍্যন্ডাম দিতে চাইলাম। অনুরোধ করলাম—যেন আমাদের দাবিপত্র নিয়ে আলোচনা হয়! 
    একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, সরকারের আধিকারিক, বললেন—আগে আমাদের রুটিন এজেন্ডা নিয়ে বৈঠক হবে, তারপর তোমাদের কথা শুনব।
    --বেশ কথা, আমরা গেটের বাইরে অপেক্ষা করছি।

    সারাদিন না খেয়ে আমরা বাইরে। জানি, নতুন ব্যাংক, ওনাদের এজেন্ডা খুব বড় হবে না।
    আমরা গান গাইছিলাম—রঘুপতি রাঘব রাজারাম, জিতনা পয়সা উতনা কাম।

    মিটিং শেষ, ওঁরা বেরিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের দেখেও দেখছেন না। একি, এরকম তো কথা ছিল না। আমরা গিয়ে সামনে দাঁড়াই। 
    সেই মেম্বারটি বললেন—তোমাদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বল, যাও। আমাদের পথ ছাড়।

    আমাদের একজন প্রায় কেঁদে ফেলে-স্যার, আপনি কথা দিয়েছিলেন। তাই আমরা অপেক্ষা করছিলাম। কোন ডিস্টার্ব করি নি। আর এখন—
    উনি মাছি তাড়ানোর ভঙ্গীতে হাত নেড়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।

    সবাই আমার দিকে তাকায়। কিম্‌ কর্তব্যম্‌?

    --গেট আটকে মাটিতে বসে পড়। ওনাদের সাহস থাকলে আমাদের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে বেরিয়ে যান!
     
    সারদা স্যারের তৃতীয় নয়ন জ্বলে ওঠে।
    শ্লোগান আর গান চলতে থাকে দু’ঘন্টা, তারপর আমরা যে যার কর্মস্থলে ফিরে যাই। 
    সবার চিন্তা—এবার কী হবে!
    যা হল তা বেল্টের নীচে আঘাত! চারজন ক্লার্ককে পত্রপাঠ টার্মিনেট করা হল কাজ ‘সন্তোষজনক’ নয়—এমন কারণ দেখিয়ে। অথচ তাদের কাজ নিয়ে তাদের উর্ধতন ম্যানেজারদের কোন কমপ্লেন ছিল না।

    এছাড়া আমাকে এবং অন্য দশজন প্রথম ব্যাচের অফিসারকে শোকজ করা হল—কেন ডিসমিস করা হবে না তার উত্তর চেয়ে। তাতে এটাও বলা ছিল—যেহেতু ডিসিপ্লিনারি অথরিটি নিজেই ওই তাণ্ডবের প্রত্যক্ষদর্শী, কাজেই কোন আলাদা করে এনকোয়ারির প্রয়োজন নেই।
    আর আমার এক সাথী এম রামপ্রসাদকে ওর নিজের সেভিংস খাতায় ক্লার্কের দোষে মাত্র এক টাকা সতের পয়সার ওভারড্রাফট হওয়ায় সেটাকে মেজর মিসকন্ডাক্ট  আরোপ লাগিয়ে টার্মিনেট করা হল।

    আমরা কী করি?
    পরিচিত লেবার উকিলকে দিয়ে শোকজের জবাব বানিয়ে জমা করা হল। 
    গেলাম বিলাসপুরের ট্রেড ইউনিয়ন কাউন্সিলের কাছে। ওনাদের মাথায় হাত।
     
    --করেছটা কী? একেবারে সোজা বোর্ড অফ ডায়রেক্টর ঘেরাও! আরে ওটা তো লাস্ট স্টেপ। তার আগে ডেপুটেশন, ক্যাম্পেন, প্রেস, ধর্না, রিলে হাঙ্গার স্ট্রাইক—কতগুলো স্টেপ!
    আরেকজন সিপিআই নেতা বললেন—কাঁকড়াবিছের বিষ নামানোর মন্তর জানা নেই, সোজা সাপের গর্তে হাত ঢুকিয়ে দিলে?
     
    চারজন ক্লার্কের কেস নিয়ে লেবার কমিশনারের অফিসে পিটিশন দিলাম। সবাই পরামর্শ দিল --দিল্লি যাও!
    কয়েকমাস আগে বিয়ে হয়েছে। বৌয়ের বিয়েতে পাওয়া প্রণামীর যত কাঁচাটাকা সব কুড়িয়ে বাড়িয়ে যার চাকরি গেছে সেই বন্ধু রামপ্রসাদকে নিয়ে রেলের জেনারেল কামরায় গাদাগাদি করে চেপে রওনা দিলাম।

    রাতে ঘুমোলাম দুই বেঞ্চের নীচে এবং প্যাসেজের ফাঁকে খবরের কাগজ বিছিয়ে। সকালবেলা ঘুম ভাঙল সহযাত্রীদের সমবেত হাসির শব্দে।
    কী ব্যাপার!
    --কিছুই টের পাননি? আলো নেভার পর একজোড়া নারীপুরুষ আপনাদের মাথার উপরে সঙ্গমরত ছিল। আপনার মাথায় একবার পা লাগায় আপনি চেঁচিয়ে বললেন—অ্যাই, নিজেদের পা পকেটে পুরে রাখ। তখন আমরা টের পেলাম। আপনি তো ঘুমিয়ে কাদা।
     
     আমাদের তখন এসব উপভোগ করার মত মনের অবস্থা নয়। খানিকক্ষণ পরে কারো দুর্গন্ধময় নিঃশব্দ বাতকর্মে সবাই বিপর্যস্ত। ইশারায় সবাই দোষীকে দেখাচ্ছে। বেচারা ঘাবড়ে গিয়ে উঁচু গলায় বলল—এ ভাইয়া ! এ ভাইয়া! শাহজাহানপুর আউর কিতনা দূর?
    রামপ্রসাদ চটে গিয়ে বলল—কেন? শাহজাহানপুর অব্দি পাদতে পাদতে যাবে নাকি?

    এবার গোটা কামরার সঙ্গে গলা মিলিয়ে আমিও হাসলাম।

    দিল্লি পৌঁছে গেলাম। কিন্তু পার্লামেন্ট সেশনে নেই। আর যে বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়ন নেতার ভরসায় গেছলাম, তিনি তখন কোলকাতায় ফিরে গেছেন।
    মনে রাখতে হবে তখন ল্যান্ডলাইন এবং টেলিগ্রাম ছাড়া দ্রুত যোগাযোগের কোন উপায় ছিল না।

    পকেটে যৎসামান্য টাকা। থাকব কোথায়?
    শেষে রোজ রাতে প্ল্যাটফর্মে বিছানা পেতে ঘুমুতাম আর দিনের বেলায় ওখানেই স্নানটান সেরে লকারে স্যুটকেস জমা রেখে বেরিয়ে পড়তাম। চা-রুটি-তরকারি ভরোসা। রাস্তায় দেখি চাকাওলা গাড়ি থেকে পাম্প করে ঠান্ডা খাবার জল দিচ্ছে, প্রতি গেলাস দশ পয়সা।
     
    অবাক হয়ে ভাবলাম –কী কঠিন শহর এই রাজধানী দিল্লি! খাবার জলও কিনে খেতে হয়? 
     
    দেখা করলাম বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়নের হেড কোয়ার্টারে এবং এক এমপির আবাসে। সেখানে দুচোখ ভরে দেখতাম জে এন ইউয়ের নেত্রী এক অসাধা্রণ সুন্দরী মহিলাকে, পরে উনি সংসদে গিয়েছিলেন। সেসব দিনে বামপন্থী মেয়েরা ছাত্রাবস্থায় যৌবনে যোগিনী সেজে থাকতেন।
    কনট প্লেসে একটি দোকানে শস্তায় প্রেস নোট বানিয়ে সাইক্লোস্টাইল করিয়ে আমরা পায়ে হেঁটে সব নামজাদা খবরের কাগজের অফিসে গিয়ে সোজা চিফ রিপোর্টারের চেম্বারে গিয়ে চোথা ধরিয়ে আসতাম। ওঁরাও গম্ভীর মুখে সেগুলো সামনের ট্রেতে রেখে দিতেন।

    শেষে প্রসার ভারতীর এক তরুণ সাংবাদিক আমাদের ভুল ভাঙিয়ে দিল।
    --এভাবে কিছু হবে না। আপনাদের প্রেস ক্লাব বুক করে প্রেস কনফারেন্স করতে হবে। সেখানে এই চোথা বিলি করবেন। 
    সাংবাদিকরা আপনাদের নানা প্রশ্ন করবে, আপনারা উত্তর দেবেন। তবে কিছু খবর বেরোবে। 
    আপনাদের চোথাগুলো ওয়েস্টপেপার বাস্কেটে গেছে।
     
    সন্ধ্যে ঘনিয়ে আসছে। 
    প্রসার ভারতীর নতুন অফিসের সামনের মাঠে আমরা দু’জন। একে অপরের দিকে হিংস্র চোখে তাকিয়ে।
     কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না যে মস্ত ভুল হয়ে গেছে। হারিয়েছি টাকাপয়সা এবং সময়।

    কোন মুখে ফিরে যাবো ছত্তিশগড়ে? ওরা যে অনেক আশা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে। 
    কিন্তু আমাদের কাছে এখন শুধু ফিরে যাবার ট্রেন ভাড়া রয়েছে। নাগপুরে নেমে গীতাঞ্জলি সুপারফাস্ট ধরে ছত্তিশগড়।
     
    “এই তবে শেষ বেলা?
    হে ভূমিশায়িনী শিউলি,
    আর কি কোনই সান্ত্বনা নেই”?

    আছে, সান্ত্বনা আছে।
    বিত্ত মন্ত্রালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশনের জয়েন্ট ডায়রেক্টর—ডক্টর দীনেশ চন্দ্র। দু’দিন আগে দেখা করেছিলাম। অ্যাপয়েন্টমেন্ট না  থাকায় লিফটে উঠতে দেয় নি। যখন সিঁড়ি ভেঙে চারতলায় উঠলাম তখন আমার পুরনো হাঁপানি চাগিয়ে উঠেছে।
    উনি স্মিত হেসে আমাকে বললেন—আপনি চুপ করুন। সাথীকে বলতে দিন।

    সবশুনে বললেন—কোন পাপ করনি। শুধু ছেলেমানুষি করেছ। তোমরা ফিরে যাও। চেয়ারম্যান সারদার ইগো হার্ট হয়েছে। আমি একটা টেলিগ্রাম পাঠাব, তাতে একটা লাইন থাকবে—What is wrong with Bilaspur?
    এতেই কাজ হবে। মন দিয়ে কাজ কর। ব্যাংকের কাজে যেন কোন গলতি না হয়!
     
    ফিরে আসি কাটা সৈনিকের মত।
    কিন্তু একবছরের মাথায় বিলাসপুরে আমাদের সর্বভারতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জম্মু থেকে কেরালা, আসাম, ত্রিপুরা, ওড়িষ্যা—কেউ বাদ যায় না। তিনদিন আমাদের নাওয়াখাওয়ার সময় নেই।
    আমাদের সর্বভারতীয় নেতৃত্বের প্রতিনিধিদল চেয়ারম্যানের চেম্বারে দেখা করে। উনি সব শুনে মৃদু হাসেন। বলেন—আপনাদের কথা শুনে নিয়েছি, আমার কিছু বলার নেই।
     
    ক্ষুব্ধ জনতা বাইরে এসে শ্লোগান দেয়, কেরালার সাথীদের নেতৃত্বে ইংরেজিতে নতুন ধরণের শ্লোগান—“ হ্যাল্লো মিঃ এইচ এম সারদা! ইফ ইউ আর এ জেন্টেলম্যান। স্টপ, লিসন, অ্যান্ড দেন প্রসিড। ----“

    এরপর বাইরে তাঁবু খাটিয়ে রোজ চারজন করে ভুখ হরতাল। বর্ষা নামা পর্যন্ত।
    না, কোন হাতে গরম ফল পাইনি।
     চারজন ক্লার্কের কেস জিতলেও ম্যানেজমেন্ট ট্রাইব্যূনালে যায়। ওরা অন্য কোন চাকরিতে যোগ দেয়। রামপ্রসাদকে হাইকোর্ট থেকে জিতিয়ে চাকরিতে ফিরিয়ে আনা হয়।
    তবে ভয়ে কুঁকড়ে থাকা ইউনিয়ন আবার চাঙ্গা এবং জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
    ইউনিয়ন এখন রেকগনাইজড্‌। 
      
    হ্যাঁ, ওই শোকজ ধামাচাপা পড়ে যায়। শুধু আমার পার্সোনাল ফাইলে শেষদিন পর্যন্ত রয়ে যায়।

    চটকা ভাঙে। সারদা স্যারের কথা শেষ, এবার সবার তরফ থেকে আমি ধন্যবাদ দিই।
     মনে করিয়ে দিই যে উনি হেড অফিসে চমৎকার একটি লাইব্রেরি শুরু করেছিলেন। তাতে ইকনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলি নিয়মিত আসতো। ব্যাংকিং এবং অ্যাকাউন্টেন্সির বেসিক নামকরা বই ছাড়াও ছিল কিছু ম্যানেজমেন্টের বই। এছাড়া ছিল ‘পথের দাবি’, ‘গোরা’র হিন্দি অনুবাদ।

    সলজ্জ ভাবে স্বীকার করি যে সেখান থেকে ইপিডব্লুয়ের দুটো স্পেশ্যাল নাম্বার ঝেঁপে দিয়েছিলাম। আর একটা বই নিয়েছিলাম—জো মাঞ্চুকুয়ো বলে কোন কর্পোরেট ভাইস প্রেসিডেন্টের লেখা—“ হাউ টু প্লে ডার্টি”। তাতে অনেক কিছু মজার টিপস্‌ ছিল, কিন্তু অনেকগুলো আমার সিলেবাসের বাইরে।

    সত্যিই কি তাই?
    তাহলে রিটায়ারমেন্টের আগে প্রমোশনের ইন্টারভিউতে কেন অমন করলাম?
    গোড়াতেই রিজার্ভ ব্যাংকের প্রতিনিধিকে বলে দিলাম—আমি প্রমোশন চাই না।
    --সেকী? কেন? রেগে আছ?
    --না না। গ্রামীণ ব্যাংক আমার আইডেনটিটি, আমি স্বেচ্ছায় অন্য চাকরিতে না গিয়ে এখানে এসেছি। আসলে ছ’মাস পরে রিটায়র হচ্ছি। আমি সেই প্ল্যানিং নিয়ে ব্যস্ত। প্রমোশন তাঁকে দিন যে মোটিভেটেড হয়ে ভাল কাজ করবে।
    --কী করবে এরপর?
    --স্যার, লিখব। বাংলায়। ছত্তিশগড়ের গ্রামজীবন নিয়ে গুরুচণ্ডালি বলে বাংলা ওয়েবজিনে নিয়মিত লিখি। 
    সেই সূত্রে স্টেট ব্যাংকের হায়দ্রাবাদ স্টাফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কলেজের এইচ আর আমার বন্ধু।
     
    চমকে ওঠেন চেয়ারম্যান শ্রীবাস্তব।
    --শিবাংশু দে তোমার বন্ধু?
    ওনার গলার স্বরে অবিশ্বাস।

    --হ্যাঁ, স্যার। এই লেখালিখির সূত্রে।
    সবার শুভকামনা বুকে নিয়ে বেরিয়ে আসি।

    কিন্তু এটাই কি পুরো সত্যি? আমি কি জানিনা যে প্রমোশন নিলে আমাকে  পাঁচমাসের জন্য বস্তারে ট্রান্সফার করা হত এবং দুটো এস্টাব্লিশমেন্ট চালাতে গেলে আমার হাতে হ্যারিকেন কেস হত? 
    এটা তাহলে আমার সেই ‘ডার্টি ফাইট’ –ধন্যবাদ জো মাঞ্চুকুয়ো।
                                                            
     (সমাপ্ত)
                                                   
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৪ জুলাই ২০২৫ | ৬১ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    লাল রঙ - Nirmalya Nag
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • হীরেন সিংহরায় | ০৪ জুলাই ২০২৫ ১৭:০২732283
  • ভ্রাত:
     
    আরে এই লাইন আমি আমার সেকেন্ড ব্রানচে শুনি ! আমার বস শান্তি প্রসন্ন সেন - এস বি আই শ‍্যামবাজার-
     
    সিংহরায় , মার্কেটিং? 
    কী দরকার! সাইনবোর্ডে “ভারতীয় স্টেট ব্যাংক দ্বারা প্রায়োজিত” লেখা আছে না?
     ব্যস, ওর জোরেই বিজনেস পায়ে হেঁটে আসবে। 
     
    পি সি ডি নামবিয়ার এর সঙ্গে নাকি যোগ করেন - যতদিন পর্যন্ত এস বি আই সাকসেসর টু ইমপিরিয়াল ব‍্যাংক লেখা থাকবে, ততদিন বিজনেস হেঁটে আসবে
     
     
    সেম লাইন! তোমার কয়েক বছর আগে। সেই ট্রাডিশন সমানে চলে এসেছে। 

    সারদা কে ? ১৯৮১তে যদি নিউ ইর্য়কে থেকে থাকেন আমার চেনার কথা। শ্রীধরকে জিজ্ঞেস করি। আজ আবার তার  জন্মদিনও বটে।
    কী না করেছো ? নিজেকে খুব অপদার্থ মনে হয় 
     

     
  • Ranjan Roy | ০৪ জুলাই ২০২৫ ১৭:২১732285
  • এইচ এম সারদা। 
    মাড়োয়ারি ভদ্রলোক, গোত্রে মাহেশ্বরী।
     
    ওপরে ভালই যোগাযোগ। নইলে নিউ ইয়র্ক হত না।
  • Ranjan Roy | ০৪ জুলাই ২০২৫ ১৭:২৯732286
  • না হীরেনদা ।
    ১৯৮১তে উনি ভোপালে লোক্যাল হেড অফিসে।
     
    নিউ ইয়র্কে ২০০০ সালের পরে ওনার শেষ পোস্টিং।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন