এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ  স্মৃতির কোলাজ (9)

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৪০৪ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ (9)

    ব্যাংকিং, হালখাতা ও গুলিচেক

    উল্টোদিক থেকে শুরু করি — আগে গুলিচেক। সেটা কী বস্তু?

    শ্রদ্ধেয় বিমল কর মশাই দেশ পত্রিকার কোন বিনোদন সংখ্যায় লিখেছিলেন গুলি চেক করার গল্প। ওঁর ছোটবেলায় পাড়াতে ছিলেন নামকরা দুই ডাক্তার—পিতাপুত্র। ওঁরা পাড়ার যত স্কুল পড়ুয়া বাচ্চাদের বছরে একবার বিনে পয়সায় স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতেন।

    ওজন, প্রেসার, স্টেথোর পালা ছেলে - ডাক্তার সারতেন। তারপরে বৃদ্ধ বাবা - ডাক্তারের কাছে সবার কম্পালসারি ‘গুলিচেক’ করাতে হত, নইলে স্কুলে হেলথ সার্টিফিকেট জমা পড়ত না। বাচ্চারা ওই পর্বে আতংকে সিঁটিয়ে থাকত, কারণ বুড়ো ডাক্তার সবার হাফপ্যান্টের ভেতর হাত ঢুকিয়ে ওদের দুটো মার্বেল চেপে ধরে দেখতেন তাদের ব্যালান্স ঠিক রয়েছে কিনা, অন্যরকম হলে বাবা - মাকে ডেকে পরামর্শ দিতেন। তবে বছরে একবার মাত্র।
    বিমল কর তাঁর স্মৃতিচারণে বলছেন – ওটা যে কত গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা পরে বুঝেছেন।

    আমার আতংক ছিল ব্যাংকিংয়ের গুলিচেক বা ‘ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট’। এই ব্যালান্স অ্যাকাউন্টটি দেখা যেত জেনারেল লেজারের শেষের দিকে, বছরে একবার। বার্ষিক লেখাবন্দী বা অ্যানুয়াল ক্লোজিং এর সময়। তাতে দুটো এন্ট্রি হত ৩১ ডিসেম্বরে ক্লোজিং ব্যালান্স, আর ১লা জানুয়ারিতে ওপেনিং ব্যালান্স।
    কেন?
    ওই যে বললাম, ব্যাংকের শাখাটির গুলিচেক। ডেটাগুলোতে সমন্বয় আছে কিনা, জমা এবং ঋণ সব অ্যকাউন্টে ব্যালান্স ঠিক রয়েছে কিনা।

    ব্যাপারটা খানিকটা মুদি দোকানের হালখাতার মত। ৩১শে মার্চ পুরনো খাতা বন্ধ করে নেট বকেয়া সব নতুন খাতায় তোলা। কিন্তু ব্যাংকে ব্যাপারটার হ্যাপা অনেক। যতগুলো ডিপোজিট হেডে নেট ব্যালান্স ক্রেডিট (নীল কালি দিয়ে লেখা), সেগুলোতে ৩১ তারিখে Description কলামে To Balance লিখে debit কলামে ওই ব্যালান্সটা লিখে নেট ব্যালান্স nil করতে হবে।
    আবার ডেবিট ও ক্রেডিট কলামের নীচে লাল কালিতে গ্র্যান্ড টোটাল লিখে দুটো যোগফল সমান সমান হলে ব্যালান্স শূন্য হওয়া ঠিক ধরা হবে — সেই গুলিচেক থিওরি!

    একইভাবে যাদের নীট ব্যালান্স ডেবিট, (লালকালি দিয়ে লেখা) — যেমন সব লোন এবং ক্যাশ ব্যালান্স — তাদের By Balance লিখে একই সংখ্যা ক্রেডিট কলামের নীচে দিয়ে নীট ব্যালান্স nil দেখাতে হবে। এবং ডেবিট, ক্রেডিট কলামের যোগফল লাল কালি দিয়ে লিখে গুলিচেক পুরো করতে হবে।

    এখন সব অ্যাকাউন্ট তো শূন্য হল, কিন্তু হয়ে গেল কোথায়? হাপিস তো হতে পারে না। গেল দলবেঁধে ওই ব্যালান্স অ্যাকাউন্টে, সমষ্টিগত ভাবে। তবে মাত্র একদিনের জন্যে।

    তারপর ১ জানুয়ারিতে ডিপোজিট হেড গুলোর নীচে উলটো করে, মানে By Balance লিখে একই সংখ্যা ক্রে্ডিটে লিখে আগের ক্রেডিট ব্যালান্স ফিরিয়ে আনতে হবে।
    এবং জেনারেল লেজারের সব লোন এবং ক্যাশ ব্যালান্স হেডে To Balance করে পুরনো সংখ্যাটি লিখে আগের চেহারায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
    ভ্যালা রে মোর বাপ!

    উদাহরণঃ
    ধরুন, সেভিংস হেডে ৩১ ডিসেম্বরে আছে ৪০ লাখ ব্যালান্স। আর ক্যাশ ক্রেডিটে আছে ৫ লাখ। তাহলে জেনারেল লেজারে গুলিচেকের সময় তাদের চেহারাটা দেখাবেঃ

    Savings Bank
    Debit Credit Balance
    31 December - - 40,00,000 40,00,000 (নীল কালি)
    To Balance 40,00,000 - - Nil
    =========== ==========
    40,00,000 40,00,000
    ============= ============
    1 January By Balance -- 40,00,000 40,00,000 (নীল কালি)

    Cash Credit
    Debit Credit Balance
    31 December 5,00,000 ----- 5,00,000
    By Balance --- 5,00,000 Nil
    =========== ==========
    5,00,000 5,00,000
    ============= ============
    1 January To Balance 5,00,000 ---- 5,00,000 (লাল)

    ভাবছেন ঢের হয়েছে! আর নয়।
    আরে, এতো কলির সন্ধ্যে!
    এবার দেখুন ব্যালান্স অ্যাকাউন্টটি কেমন দেখাবে।

    মনে করুন, জেনারেল লেজারে সমস্ত ক্রেডিট ব্যালান্স অ্যাকাউন্টের যোগফল (নীল কালি) এক কোটি, আর ক্যাশ ব্যালান্স দুই লাখ, তাহলে সমস্ত ডেবিট ব্যালান্স অ্যাকাউন্টের যোগফল ( লাল কালি) হবে আটানব্বই লাখ টাকা। হতেই হবে, নইলে কোথাও গণ্ডগোল রয়েছে।
    তাই গুলিচেক।

    Balance Account
    Date Descrip. Debit Credit
    31 Dec. To Bal./ By Bal. 1,00,00,000 98,00,000
    By Cash Balance 2,00,000
    Total ========== ===========
    1,00,00,000 1,00,00,000
    ============ ===========
    1 Jan. By Bal/ To Balance 98,00,000 1,00,00,000
    To Cash Bal. 2,00,000
    ========== ===========
    1,00,00,000 1,00,00,000
    ============ ===========

    কী বুঝলেন?
    Balance Account হল একটা গ্যারাজ বা পার্কিং প্লেস, যাতে ব্যাংকের সমস্ত লায়াবিলিটি (পুঁজি ও জমা) এবং অ্যাসেট (নগদ, চল - অচল সম্পত্তি, এবং বিনিয়োগ) বছরের শেষদিনে লাইন দিয়ে দাঁড় করিয়ে গুলি চেক করে ফের নতুন বছরের প্রথম দিনে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়।

    অথবা ঘরের মেয়ে জামাইকে নিয়ে ষষ্ঠীর দিন বাপের বাড়ি এসে ফের নিজের সংসারে ফিরে গেল।
    কিন্তু এই ব্যালান্স অ্যাকাউন্টের মোট সংখ্যাটি ফের ব্যাংকের শেষ দিনে তিনটে প্রধান স্টেটমেন্ট বা রিটার্ন্স – প্রফিট অ্যান্ড লস, ক্লোজিং এন্ট্রিজ এবং ওপেনিং এন্ট্রিজে দেখিয়ে তার অন্যধরণের গুলিচেক করিয়ে তবে কন্ট্রোলিং অফিসে জমা দিতে হয়।
    এবার তো শান্তি?
    নাঃ, শুধু ক্লান্তি।
    মেয়ে - জামাই ফিরে গেলে বুড়ো টেকো শ্বশুরকে কাপড়ের দোকানে, মুদি দোকানে, মিষ্টির দোকানে ধার শোধ করতে হবে না? এক বারে নইলে, কিস্তিতে?

    বছরের প্রথম তারিখ থেকে অন্ততঃ তিন দিন ব্র্যাঞ্চে অনেক কাজ।
    ধরে নিন, ছোটখাটো একটা ব্র্যাঞ্চে পাঁচ হাজার সেভিংস ব্যাংক এবং দেড় হাজার লোন অ্যাকাউন্ট। তাহলে একুনে সাড়ে ছয় হাজার পাতায় ওই কসরত করতে হবে। আর ব্র্যাঞ্চে স্টাফ বলতে মাত্র ম্যানেজার, ক্যাশিয়ার এবং চাপরাশি।

    গোড়ার দিকে গ্রামীণ ব্যাংকে কোন স্থায়ী চাপরাশির পোস্ট ছিল না। দৈনিক মজুরিতে সপ্তাহে ছ’দিন করে স্থানীয় ছেলেটিকে কাজ করতে হত। তার পোস্টের নাম সুইপার - কাম - ওয়াটারম্যান।

    তার কাজ বলতে সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ এসে ঝাঁট দেয়া, ধোয়ামোছা। তারপর ব্যাংক খুললে লেজার টানাটানি, সবাইকে জল খাওয়ানো, চা করা, স্টেশনারি থেকে ডকুমেন্ট সাজিয়ে নেয়া, রিকভারিতে যাওয়া, ডাকঘরে নোটিস নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এবং দিনের শেষে সমস্ত ভাউচার মিলান করে সেলাই করে তাতে লেবেল লাগিয়ে দিনের তারিখের সীল লাগিয়ে গুছিয়ে আলমারিতে তুলে রাখা।

    আমি আর একটা কাজ জুড়ে দিয়েছিলাম -- গ্রামের অক্ষরজ্ঞান নেই এমন মেয়েদের হাত ধরে ইংকপ্যাডে চেপে ধরে তারপর ভাউচার অথবা ডকুমেন্টে বুড়ো আঙুলের ছাপ লাগানো। এই দায়িত্ব ওকে দেবার একটা কারণ হল আমার এখানে জনৈক অতি - উৎসাহী ট্রেনি অফিসারকে দেখলাম মেয়েদের ‘এতি আ, এতি আ’ বলে ডেকে হাত চেপে ধরে এমনভাবে ছাপ লাগাচ্ছে যাতে ওর কনুই সোজা মেয়েটির বুকে গিয়ে ঠেকে।

    আমার এক মেসেঞ্জার নেতরাম বলেছিল একটি অমৃতবাক্য — গ্রামীণ ব্যাংকে শুধু দু’জন সুখী, চেয়ারম্যান এবং ওয়াটারম্যান!

    জমা এবং লোনের যত ইন্ডিভিজুয়াল অ্যাকাউন্ট আছে সবগুলোতে, তার জাত দেখে, উপরের দেখানো কায়দায় To Bal./ By Bal. করে লাল কালি/নীল কালি করে তবে তার গুলিচেক থুড়ি হালখাতা উৎসবের সমাপ্তি।

    বিশ্বাস করুন, আজকে সমস্ত ব্যাংকে, মায় ছত্তিশগড়ের গ্রামীণ ব্যাংকে, কম্পিউটার এবং কোর ব্যাংকিং চালু হয়ে গেছে। ফলে ওই গুলিচেক অপ্রাসংগিক হয়ে গেছে। উন্নত আধুনিক প্রযুক্তি আর সবার মত ব্যাংক কর্মচারীর জীবন বদলে দিয়েছে।
    তাই নমস্য লেখক বিমল কর মশাই যাই বলুন, গুলিচেক নিয়ে আমার বক্তব্য — আপদ গেছে, মেডিক্যাল হোক বা ব্যাংকিং জাতের।

    এখন মেশিনীকরণ এবং কেন্দ্রীকরণের চুড়ান্ত। আজ নবী মুম্বাইয়ের বেলাপুরে স্টেট ব্যাংকের কেন্দ্রীয় ডেটা সেন্টারে সমস্ত ডেটা প্রতি মুহুর্তে প্রসেস হয়। তেমনি লুরু’র কাছে ভারবেলিতে আমাদের ছত্তিশগড় রাজ্য গ্রামীণ ব্যাংকের কেন্দ্রীয় ডেটা সেন্টারে বসলে আমাদের ৫০০ শাখার নাড়িনক্ষত্র প্রতিমুহুর্তে চোখে পড়ে।
    একেবারে চ্যাপলিনের মডার্ন টাইমসের একুশ শতকীয় এবং হাজারগুণ শক্তিমান সংস্করণ।

    আপনি কখন চেয়ার ছেড়ে সিগ্রেট খেতে বা লঘুশংকা সারতে বাইরে যাচ্ছেন সব লগবুকে এসে যায়। বিগ ব্রাদার ইজ ওয়াচিং!
    অবশ্য মানুষ যন্ত্রের সৃষ্টিকর্তা, কাজেই সে মেশিনকে ফাঁকি দেবার কায়দাও বের করে ফেলেছে। সেসব এখানে ফাঁস করে বন্ধুদের বে - আব্রু করা উচিৎ হবে না।

    এর ভাল দিক হল ব্যাংকের মানবসম্পদ এইসব গুলিচেক জাতীয় অর্থহীন এবং প্রতিমাসে জাবদা খাতায় হাতে লিখে জটিং /ব্যালান্সিং গোছের পৌনঃপুনিকতা সম্পন্ন অনুপাৎদক কাজ ছেড়ে বেশির ভাগ সময় ব্যাংকের বিজনেস বাড়ানো, উন্নত গ্রাহক পরিষেবা দেয়া এবং ব্যাড লোন রিকভারি ইত্যাদি আসল কাজে মন এবং সময় দিতে পারছে।

    ধরুন, কেউ এলেন ফিক্সড ডিপোজিটের রসীদ নিয়ে। ওটার বয়েস হয়েছে, এবার জমাকর্তা হিসেব নিকেশ বুঝে কিছু ফেরত নেবেন বা ফের কোন লাভজনক স্কীমে জমা করবেন। অথবা ঘরে অসুখ বিসুখ, মেয়ের বিয়ে বা বাড়ি কেনার জন্যে এক্ষুণি নগদ নারায়ণ চাই। গ্রাহক চাইছেন ফিক্সড বা রেকারিং ডিপোজিট (মধ্যবিত্তের অন্ধের নড়ি) অসময়ে ভাঙিয়ে টাকাটা তুলবেন।

    আগে হলে এসব দেখা মাত্র স্টাফের ভ্রু কুঁচকে যেত, মুখ ব্যাজার এবং নিমপাতা চিবুনো চেহারা করে বলত — পাসবুক এবং রসীদ ছেড়ে যান, কাল আসবেন।
    -- আমার যে আজ চাই বাবা, হবে না?
    -- আচ্ছা, বিকেল পাঁচটার পরে আসুন, দেখব’খন।

    কেন অমন হত?
    ব্যাংকের লোকগুলো কি ফাঁকিবাজ, অথবা অদক্ষ? কেউ কেউ হয়ত, বেশির ভাগই তা’নয়।
    ধরুন, ভদ্রলোক চার বছর আগে জমা করেছিলেন। তখন ওঁর রসীদের এন্ট্রি হয়েছিল টার্ম ডিপোজিটের ৫ নম্বর লেজারের ৩৭ নম্বর পাতায়। ওঁর রসীদে লেখা আছে — ৫/৩৭। ব্যাংক স্টাফ ৫/৩৭ খুলে দেখলেন পাতাটি তিনবছর আগে ভরে গিয়েছে। নীচে লালকালিতে লেখা C/O (carried over to) ৬/৯২।
    আপনি সেখানে গিয়ে দেখলেন তার ওপরের মার্জিনে লেখা B/F ( brought forward from) লেজার নাম্বার ৫। চোখে পড়ল — ইয়েস, ওই রসীদের বর্ণনা ওই পাতায় রয়েছে। মনটা খুশি খুশি — যাক, পেয়েছি।

    ওমা! এই পাতাও যে দুবছর আগে ভরে গিয়েছে! পাতার নীচে যে লেখা C/O (carried over to) ৭/১৫।
    তার মানে আপনাকে ওই তিনটে লেজার খুলে ওই এন্ট্রির পাশে ছেড়ে রাখা মার্জিনে হিসেব কষতে হবে –ওই বছরে কতদিন ধরে ওই ফিক্স ডিপোজিট রয়েছে, তাহলে কত সুদ পাওনা হয়। এইভাবে তিনটে লেজার থেকে হিসেবে মোট কত সুদ প্রাপ্য হয় এবং রসীদের গায়ে কত টাকা ফেরত দেয়ার প্রমিজ করা আছে?

    তারপর প্রমিজের থেকে সুদের অতিরিক্ত প্রভিসন (হিসেব) হলে ডিফারেন্স অ্যামাউন্ট রিভার্স করে ইন্টারেস্ট অ্যাকাউন্টে ফেরত দাও। তার জন্য আলাদা করে ভাউচার বানিয়ে এন্ট্রি পাস কর। প্রভিসন কম হলেও রেহাই নেই। আগে ডিফারেন্স অ্যামাউন্টের এন্ট্রি পাস কর, তবে তো ভদ্রলোককে টাকা দেবে।
    ওই একজনের একটা কাজ করতে হলে একজন স্টাফকে অন্যসব কাজ ছেড়ে দুটি ঘন্টা আলাদা করে দিতে হবে।

    আর এখন?
    কেউ কিন্তু কিন্তু মুখ করে ফিক্সড ডিপোজিটের রসীদ দেখালে ব্যাংক কর্মচারি বরাভয় মুদ্রায় আশ্বস্ত করে। তারপর হাত থেকে রসীদ ছিনিয়ে নেয়। লোকটি থতমত খেয়ে শুধোয় — কালকে আসব, নাকি আজ বিকেলে?
    -- আরে, দু’মিনিট দাঁড়ান। হাতে হাতে করে দিচ্ছি।
    কম্পিউটারে রসীদ নম্বর টিপে নাম মিলিয়ে আরও দুটো চাবি টিপতেই — খুল যা সিম সিম!
    কত সুদ, কত প্রভিসন সব হিসেব হয়ে এন্ট্রি হয়ে গেছে। যন্ত্রদানব চোখের নিমেষে সব কাজ নির্ভুল করে দিয়েছে।

    অবাক হওয়া পুরনো গ্রাহক আশীর্বাদ করতে করতে বাড়ি যায়। বৌকে বলে — এখন ব্যাংকে চমৎকার সব ইয়ং স্টাফ এয়েচে, ভারি মায়াদয়া। আগে যারা ছিল, কী আর বলব -- ?
    বিশ্বকর্মার দয়ায় সুবিধে আরও হয়েছে। ছোট খাটো ক্যাশের জন্য চেক হাতে লাইনে দাঁড়াতে হবে না। ক্যাশিয়ার আর -- আপনার সইয়ে একটা ছোট টান ছিল, মানে নীচের দিকে, সেটা তো দেখছি না -- এই সব বলে আপনাকে ভাগাতে পারবে না। সোজা এটিএমে গেলেই মুশকিল আসান।

    পাসবুক আপডেট করতে হবে?
    গ্রামীণ ব্যাংকের চাপরাশিও প্রিন্টারে উপযুক্ত কম্যাণ্ড দিয়ে তক্ষুণি করে দেবে। সব ব্র্যাঞ্চে সিসিটিভি ক্যামেরা। আজকালকার ম্যানেজারও ছোটখাটো বিগ ব্রাদার হয়ে গেছেন।
    আপনি ঘরে বসে মোবাইলেই ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকে ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট খোলা, অন্যকে পয়সা দেয়া, বাড়িভাড়া, বিজলী বিল, গ্যাস কোম্পানিকে পেমেন্ট সব করতে পারেন — হ্যাঁ, খাস কোলকাতাতে বসেই।

    কিন্তু ঈশ্বরের দুনিয়ায় অবিমিশ্র সুখ নেই।
    কিছু তো হারিয়ে গেছে।
    আগে ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকের সঙ্গে ব্যক্তিগত চেনাজানা, দুটো সুখদুঃখের কথা, কুশল-মঙ্গল ইত্যাদি হত। নেটওয়ার্ক গড়ে উঠত। ব্যাংক কর্মচারির বাচ্চার বড় স্কুলে অ্যাডমিশন কোন সমস্যা ছিল না। গ্রামে কারও মেয়ের বিয়ে , এমনকি পাত্রদেখা, বরযাত্রী গমন – সব কিছুতেই ম্যানেজারের বিশেষ অতিথি।
    আবার বাচ্চার ষষ্ঠী, বাবার শ্মশানযাত্রা তাতেও খালি গায়ে ধুতির খুঁট জড়িয়ে পুকুরপাড়ে নাপিতের সামনে ইঁট পেতে বসে পাইকারি হারে দাড়ি কেটে পুকুরে দুটো ডুব লাগিয়ে আসতে হয়েছে।

    এখন বিয়ের নেমন্তন্ন হয় হোয়াটস অ্যাপে, ডিজিটাল কার্ড পাঠিয়ে। আগে কর্তাগিন্নি বাড়ি বয়ে চিঠি দিয়ে, পিএনপিসি করে, দুটো মিষ্টি খেয়ে হাসিমুখে বিদায় হতেন।

    একবার এক শ্যামাঙ্গী কৃশকায়া তরুণী টিচারকে বলেছিলেম — চোখের থেকে সানগ্লাস নামান প্লীজ। লেজারের ছবির সঙ্গে চেহারা মিলছে না। উত্তরে মেয়েটির গালে টোল খেলে গেল, দন্তরুচিকৌমুদী পরিস্ফুট হল।
    -- এবার? এখন কেমন লাগছে?
    বুকের মধ্যে রক্তচাপ বাড়ে।

    বার্ষিক লেখাবন্দীর (Annual Closing) উৎসব!
    এটা যেন ব্যাংক পরিবারে মেয়ের বিয়ে। দু’মাস আগে থেকে সাজো সাজো রব। ‘অনাদায়ী ঋণ কমাতে হবে, লিস্টি বানিয়ে ডিফল্টার ঋণীদের পেছনে ধাওয়া কর, দরাদরি কর। অন্ততঃ খানিকটা তো আদায় কর রে। ব্যাড লোন এবং ‘আয় উৎপাদনে অক্ষম লোন’ (এনপিএ) কমাতে হবে।

    আরেকটা ব্যাপার। পোলট্রিতে যে মুরগী ডিম দেয়া বন্ধ করে বা ডেয়ারিতে যে গরু দুধ দেয়া কমিয়ে দেয়, খালি খায় আর গোবর দেয় তাদের কী হাল হয়?
    মুরগীগুলো যায় হোটেলে মাংসের দরে, আর গোরু যায় গোহাটায়। তেমনই যে লোন ফেরত পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই, কোর্টে গিয়েও লাভ নেই — সেসব রাইট অফ করা হয়। এটার একটাই মানে — ঘর পরিষ্কার করার নামে ময়লা কার্পেটের নীচে লুকিয়ে ফেলা।
    কাজেই যখন শুনবেন, সরকারি ব্যাংকের অবস্থা খুব ভাল হয়েছে। ব্যাড লোন বা এনপিএ আগের থেকে এত কোটি কমে গেছে — তখন জিগাইবেন, এর মধ্যে কত কোটি ‘রাইট অফ’ করা , অর্থাৎ ব্যালান্স শীট থেকে মুছে ফেলা হয়েছে?

    যাকগে, আমি আদার ব্যাপারী, জাহাজের খোঁজে কী দরকার!
    হিন্দিতে একটা লোকোক্তি রয়েছে — তুম অপনে চাড্ডি মেঁ রহা করো ! ওহে, বুদ্ধিমান, নিজের জাঙিয়ার ভেতরেই থাকো, বেশি ওস্তাদি ফলিও না।

    গরুর দুধ দেয়া নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকে একটা পিজে প্রচলিত, বলেই ফেলি।
    ডেয়ারি নিয়ে সরকারি যোজনায় ঋণ নিয়ে হাটে গরু কিনতে গেলে জানতে চাওয়া হয় –একবারে কত দুধ দেয়। সেটা দুইয়ে পরীক্ষাও করা হয়। কোন গরুর দাম সাধারণতঃ গড়পড়তা প্রতি লিটার একহাজার টাকা হিসেবে ধরা হত।
    -- এই গরুর দাম কত?
    -- দশ হাজার মালিক! দিনে দশ লিটার দুধ দেয়।
    -- আচ্ছা, আর ওটি?
    -- পঁয়তাল্লিশ হাজার।
    -- এত দাম? কত লিটার দুধ দেয়?
    -- এক ফোঁটাও নয়।
    -- আচ্ছা! তাহলে এত দাম?
    -- চরিত্রবতী গাভী মালিক, খুব ভাল ক্যারেক্টার। তাই দুধ দেয় না।

    যা বলছিলাম, এরপরের কাজ সমস্ত অ্যাকাউন্টে ইন্টারেস্ট জুড়ে জটিং করে ব্যালান্স করে এন্ট্রি পাস করা। চার্জেস রেজিস্টার থেকে ব্যাংকের বাড়িভাড়া, স্যালারি ইত্যাদির হিসেব করে ইনকাম অ্যাণ্ড এক্সপেন্ডিচার স্টেটমেন্ট বানানো।
    তারপর বিয়ের পুরোহিতের মত ম্যানেজার মহাশয় প্রফিট/লস হিসেব করে ব্যালান্সশীট সমেত বিভিন্ন স্টেটমেন্ট তৈরি করবেন। এরপর ভাটপাড়ার শাস্ত্রীদের মত ঋণের জাতনির্ণয় করে বিশাল স্টেটমেন্ট বানাতে হবে। অ্যাসেট লায়াবিলিটি স্টেটমেন্টও।

    এরজন্য লোকবল চাই।
    কাজেই আশপাশের ছোট ছোট ব্র্যাঞ্চের সমস্ত স্টাফ নিজেদের কচি স্টেটমেন্ট চটপট তৈরি করে রাত্তিরে, আনফিশিয়ালি, বড় ব্র্যাঞ্চে হাজির হও। সেখানে বিয়েবাড়ি । ঢালাও বিছানা। সারি সারি চেয়ার টেবিল। তিনটে মোরগ কুকারে সেদ্ধ হচ্ছে। অন্য একটি স্টোভে সারাক্ষণ চায়ের জল ফুটছে। বড় শীত।

    শেষ রাতে এন্ট্রি পাশ হবার পর সবাই ঘুমোচ্ছে — ছড়িয়ে ছিটিয়ে। ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজারের ঘুম নেই। ছটফট করে উঠে পড়েছে। স্টেটমেন্ট তৈরি এখনও বাকি। সেসব করে ব্রিফকেসে ভরে দুপুর নাগাদ রওনা দেবে বাসে চড়ে। গন্তব্য হেড অফিস।
    বাসে ঘুমোতে ঘুমোতে জানলায় মাথা ঠুকতে ঠুকতে তিনি পৌঁছলে চেয়ারম্যান দয়া পরবশ হয়ে বলবেন — যাও, আমার বাথরুমে গিয়ে মুখ ধুয়ে এস। তারপর চা আর বিস্কিট খাও।
    হ্যাঁ, পরের দিকে স্টেটব্যাংকের অনুকরণে সবাইকে ক্লোজিং অ্যালাউন্স দেয়া শুরু হল। আমাদের স্ফুর্তি গড়ের মাঠ।

    এখন কোন ব্র্যাঞ্চে ক্লোজিং হয় না। সব ডেটা নিমেষের মধ্যে ভারবেলি পৌঁছে যায়। কম্পিউটার সবার জন্যে গুলিচেক করে প্রফিট বা লস জানিয়ে দেয়। ফলে অ্যানুয়াল ক্লোজিং নিয়ে কোন উত্তেজনা আগ্রহ নেই। সেদিন ব্যাংকে কেউ নেই, হলি ডে!

    যা হারিয়ে যায়, তা আগলে বসে রইব কত আর!

    (চলবে)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৪০৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • হীরেন সিংহরায় | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:২৮540197
  • রঞ্জন

    তুমি হৃদয় খুঁড়ে নস্টালজিয়া জাগিয়ে দিলে । মনে পড়ে যায় আমার দেখা অ্যানুয়াল ক্লোজিং! জলপাইগুড়ি , ৩১শে মার্চ ১৯৭৩ নিজের লেখা থেকে একটু তুলে দেবার লোভ সম্বরণ করা গেল না

    ব্যাঙ্কের মাঠ লোকে লোকারণ্য , যেন  মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গলের খেলা শুরু হল বলে । এরা কেউ অনাহুত নয়, রবাহূত  সরকারের ঘরে যার যা দেনা পাওনা আছে তা নিয়ে হাজির। বইয়ে বাড়ির মত ম্যারাপ বাঁধা হয়েছে ক্যানটিন আর ব্যাঙ্কের মাঝে -করমক্রিয়া চলচজে সেথায়। আমাদের মেসেঞ্জার ঝাপ্সু সেদিন হিরো জনতা তার পায়ে পড়ছে আর সে উচ্চ স্বরে ঘোষণা করছে, আপ লোগ লাইন মে রহিয়ে । প্রাচ্যের প্রাচীনতম ব্যাঙ্ক বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রতিভূর ভাঁড়ারের তত্ত্ব তাবাস করছে ( স্টেট ব্যাঙ্ক তখন  সরকারি খাজানার একমাত্র ভাঁড়ারি )। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে। হ্যাজাক  লন্ঠনের আলোয় ভাউচার কাটা খাতা লেখা চলছে ,আমতলা থেকে নিয়মিত চা আসছে কে যে হিসেব রাখছে কে জানে দীপকদাকে জিজ্ঞেস করলাম এই উৎসব কখন অবধি চলবে , তিনি বললেন প্রয়োজন হলে কাল সকাল পর্যন্ত হতে পারে
    একটা টেকনিকাল মুশকিল হবে না ? ইতিমধ্যে ঘড়ির কাঁটায়  এখন যে ১লা এপ্রিল?

    ঝাপ্সু বললে , ঘড়ি ঘুমেগি, দিন ওহি রহেগা !
     
    যাযাবরের কথায়  - কম্পিউটার দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে অ্যানুয়াল ক্লোজিঙের আবেগ।   
     
  • Kishore Ghosal | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:০৬540256
  • রঞ্জনদা, 
    আজকাল পড়ানো হয় কিনা জানি না, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময় আমাদের একটা সেমিসটার কস্টিং অ্যাণ্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি পড়তে হয়েছিল। ব্যালান্স শিট বানানো শিখে পরীক্ষাও দিতে হয়েছিল - আপনার লেখায় সে সব কথা মনে পড়ে গেল।     
  • উজ্জ্বল | 146.196.***.*** | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:৪৫540258
  • আমার কিন্তু ব্যাঙ্কে ইন্টারভিউয়ের সময় সত্যিকারের মানে বিমল কর যে অর্থে লিখেছিলেন সেই অর্থেই হয়েছিল ওই পরীক্ষাটা। মেডিক্যাল টেস্ট করেছিলেন এক মহা খেঁকুরে শেয়ালের মত চেহারার রিটায়ার্ড মিলিটারি ডাক্তার। উচ্চতা ছিল পাঁচ ফুট দশ, ওজন ৩৯ কিলো -- আর ওই পরীক্ষাটা করেছিলেন হঠাৎ ছোঁ মেরে--সেই আঁৎকে ওঠার অভিজ্ঞতা পরেও বহু বছর ধরে মনে পড়ত আর মনে পড়লেই একবার নতুন করে আঁতকে উঠতাম--ব্যাপারটা কাউকে বলিনি, এই প্রথমবার লিখলাম। আপনার মেডিকেল টেস্ট হয়নি চাকরির সময় ?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু প্রতিক্রিয়া দিন