এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ ১৯

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ১১ মে ২০২৫ | ৬০৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ ১৯

    পরিবার-পরিকল্পনা! জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ! ‘ছোট পরিবার, সুখী পরিবার’ !

    এসব কথাগুলো আজকের প্রজন্মের কাছে বোধহয় অর্থহীন। আজকের প্রজন্ম জীবনসংগ্রামে ঝাড়া হাত 'পা হয়ে লড়াই করে। বিয়ে করে দেরিতে, বিয়ে ভাঙে অনায়াসে।
    ওদের নতুন করে শেখানোর কিছু নেই। অন্তর্জালের জমানায় নলেজের স্রোত অফুরান।
    আর সরকারও নিশ্চিন্ত হয়ে হাত গুটিয়ে নিয়েছে। আজকাল আর কোথাও ফ্যামিলি প্ল্যানিং নিয়ে প্রচার, ডকুমেন্টারি ইত্যাদি চোখে পড়ে না।

    কারণ, এসে গেছে নতুন সূচক-TFR (Total Fertility Rate)। সরকারি ভাবে বলা হচ্ছে আজ ভারতে ওই সূচক ২.১, অর্থাৎ আদর্শ স্থিতি ২.২ থেকে কম! দেশে জনসংখ্যা বাড়লেও বৃদ্ধির হার অনেক কম। এমনকি, শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশ দ্রুত হারে কমছে।
    কাজেই ২০৪৭ সালের অমৃতবর্ষে জনসংখ্যা কমার সংকট দেখা দিতে পারে -- যেমন আজ চিনের হাল।

    কিন্তু আমাদের প্রজন্ম বড় হয়েছে এক স্কটিশ পাদ্রি ম্যালথাসের উপপাদ্য পড়ে, যার নিগলিতার্থ খাদ্য সমস্যার কারণ হল জনসংখ্যা বৃদ্ধি! যেহেতু খাদ্য উৎপাদন বাড়ে পাটিগাণিতিক সিরিজে হাঁটি -হাঁটি, পা-পা ( ১, ২, ৩, ৪-- ) করে। আর জনসংখ্যা বাড়ে জ্যামিতিক সিরিজে লাফিয়ে লাফিয়ে (১, ২, ৪, ৮, ১৬-- -) করে।

    তা কী করা যায়?
    ১৯৬৮ সালে এল ‘নিরোধ’ নামক সরকারি কন্ডোম, পাঁচ পয়সায় একটা করে পানের দোকানে পাওয়া যাচ্ছিল। অবশ্য তার আগে মেয়েদের জন্য ডক্টর জ্যাক লিপেস আবিষ্কৃত লুপ এসে গেছে। মনে পড়ছে ১৯৬৫ তে ভারত-পাক যুদ্ধের পর সরকারী শ্লোগান ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ’ এর সঙ্গে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুশীলা নায়ার জুড়ে দিয়েছিলেন — জয় লুপধারিণী!
    তারপর এল অপারেশন।

    আমরা বড় হয়েছি ফ্যামিলি প্ল্যানিং এর পক্ষে বিপক্ষে তর্ক-বিতর্ক-কুতর্ক শুনে। বামেরা বলতেন — এসব হল অপ-সংস্কৃতি, যুবসমাজকে সহজ যৌনতার লোভ দেখিয়ে বিপ্লবের থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া। মার্ক্সের কতগুলো ছেলেমেয়ে! আর মাওয়ের? কঠিন লং মার্চের সময়ও উনি ফ্যামিলি প্ল্যানিং করেন নি।
    প্রাচীনপন্থীরা বলতেন – একমাত্র উপায় ব্রহ্মচর্য! আত্মসংযম!

    সময় বয়ে যায়। জানা গেল মাও এবং চৌ শাসিত চিনে পরিবার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। সে তুমি সরকারি কর্মচারি হও, বা কৃষক - কোন ছাড়ান নেই। দুটোর বেশি বাচ্চা হলে ইনক্রিমেন্ট বন্ধ হবে। কৃষকের উপর অতিরিক্ত কর বসবে।

    আমাদের দেশে প্রচার হল - অত হাঙ্গামার দরকার নেই। অপারেশন করে খাসি করে দাও, ল্যাটা চুকে যাক।
    তবে কোন কোন মহলে শোনা যেতে লাগল এতে নাকি মানুষ ক্লীব হয়ে যায়। ষাঁড়কে বলদ বানালে কেমন ম্যাদা মেরে যায় দেখিসনি?

    কিন্তু সময় দ্রুত বদলাতে লাগল। ছত্তিশগড়ে আমার পরিচিত বাঙালী ব্রাহ্মণ পরিবারে বধুটি দুই মেয়ের পর ছেলের জন্য অপেক্ষা না করে স্বামীকে অপারেশনের জন্য রাজি করালেন।
    তাঁর শ্বশুরের নয় ছেলে, চার মেয়ে।
    তিনি বৌমাকে ডেকে বোঝালেন – সন্তান হওয়ার রাস্তা বন্ধ করা উচিত নয়। রবীন্দ্রনাথ কিন্তু দেবেন ঠাকুরের ত্রয়োদশতম সন্তান।
    বৌমা মুখের উপর জবাব দিল — আপনি চিন্তা করবেন না, বাবা। ওর ছেলে জন্মালে রবি ঠাকুর হত না।

    আমার ছত্তিশগড়ে গ্রামীণ ব্যাংকে চাকরি জুটেছে সত্তরের দশকের শেষে।
    তখন চারদিকে দেয়াললিখন, খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দেয়ালে লাল-ত্রিকোণ প্রতীক এবং দুটো গুল্লু-গুল্লু বাচ্চার হাত ধরে হাসি হাসি বাবা-মা।
    প্রথমে ছিল — ‘দো ইয়া তিন, ব্যস’। তারপরে এল ‘হম দো, হমারে দো’।

    এগুলো ভারত সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্ধারিত শ্লোগান, এবং গাঁয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিরোধ ফ্রি !
    কিন্তু এত করেও লোকের ভিড় কমছে না। জনসংখ্যা বৃদ্ধির দর বিশেষ কমছে না। শেষে এল অপারেশন — নারী ও পুরুষের।
    নতুন নতুন শব্দ — ভ্যাসেকটমি, টিউবেকটমি। সরকারি কেন্দ্রে সার্জারিও ফ্রি। ফির ভী ইয়ে জনতা মাঙ্গে মোর! নগদ কিছু দাও।

    হবে হবে, দেয়া হবে। তুমি এস, তোমাকে দেয়া হবে। যে দালাল নিয়ে আসবে তাকেও দেয়া হবে।
    যে ডাক্তার সার্জারির লক্ষ্য পূর্ণ করবেন তিনিও সম্মান, প্রমোশন সব পাবেন।

    আমার পরিচিত জনৈক বাঙালী ডাক্তারের ছিল বস্তারের নারায়ণপুরে পোস্টিং।
    সেই নারায়ণপুর, যা এখন মাওবাদীদের গড়। তবে সত্তরের দশকে ওসব কিছু ছিল না।
    সেই ডাক্তার কাকু সাপের কামড় থেকে লোকের প্রাণ বাঁচিয়ে আদিবাসী জনতার ভালবাসা পেলেন এবং সবচেয়ে বেশি পুরুষকে খোজা করে রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার পেলেন।

    উনি আমাকে বোঝালেন — একজন মেয়ে বছরে একবার বিয়োবে। কিন্তু একজন সক্ষম পুরুষ?
    চাইলে এক বছরে একশ নারীকে (নিজের বৌকে বাদ দিয়ে) গর্ভবতী করতে পারে।
    তাই পুরুষের সার্জারি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
    আর মেয়েদের সার্জারি বেশ জটিল, কিন্তু পুরুষের বেশ সহজ। নাকের অপারেশনের মত।

    হলে কী হবে, ভারত যে পিতৃসত্ত্বার দেশ।
    পুরুষেরা নাক কাটাতে চায় না। নিজেদের গাণ্ডীবের ছিলা ঢিলে করতে চায় না।

    তবে সরকার বাহাদুর হাল ছাড়েন নি। টাকার পরিমাণ বা ইনসেন্টিভ বাড়ল, সর্বস্তরে।
    আর বেড়ে গেল প্রচার। বদলে গেল শ্লোগান।

    বলা হল, এখন আর হম দো, হমারে দো নয়। একের বেশি বাচ্চা হলে চলবে না।
    ‘অগলা বাচ্চা আভী নহীঁ, দো কে বাদ কভী নহীঁ’।

    ছত্তিশগড়ের স্লোগানগুলো বেশ মনোহারি!

    ‘লল্লা কম, গল্লা জ্যাদা’।
    ‘খাবার মুখ কমলে পরে, ভাঁড়ারে ধান যাবে বেড়ে’।

    ‘যো বিবি সে করে প্যার, ফ্যামিলি প্ল্যানিং সে ন করে ইনকার’!
    ‘বৌকে যদি বাসো ভালো, ফ্যামিলি প্ল্যানিং কেন্দ্রে চল’।

    পরের দুটো একেবারে যা তা!

    “দুলহন ডোলি মেঁ, নিরোধ ঝোলি মেঁ”।
    “বৌ উঠেছে দোলায়, তবে নিরোধ রাখো ঝোলায়”।

    আর, ‘এক কে বাদ লাগাও ব্রেক, বিবি বনে রহেগি কেক’।

    এমনই পরিস্থিতিতে সর্বব্যাপ্ত পরিবার পরিকল্পনার ঢক্কানিনাদের মাঝখানে আমার মত হরিদাস পালের ফ্যামিলি প্ল্যানিং শিবির নিয়ে এক হাতে গরম অভিজ্ঞতার গল্প শোনাতে বসেছি, সঙ্গে থাকুন।

    গ্রামে গ্রামে এই বার্তা রটি গেল ক্রমে
    কোরবা শিল্পনগরীর কাছে আদিবাসী এলাকায় গ্রামীণ ব্যাংক। চাপরাশি নেতরামকে গত বছর বলেছিলাম — তোর তিন মেয়ে হল, এবার?
    ও মাথা চুলকে বলেছিল — বৌ বলছে আর একটা চান্স নিতে, যদি ছেলে হয়! এই শেষ, হোক বা না হোক, ফ্যামিলি প্ল্যানিং!

    গত মাসে ওর ছেলে হয়েছে। মিঠাই নিয়ে এল।
    আমি চোখে চোখ রেখে তাকাতেই লজ্জা পেল। বলল - মনে আছে, এবার অপারেশন করাবো।
    কিন্তু স্যার, ভাল জায়গায় করাতে হবে, আপনি খুঁজে দেবেন।
    আমাদের পাড়ার ঝাড়ুরামের অপারেশনের পর ফের বাচ্চা হয়েছে। একেবারে ‘জগ-হাঁসাই’ – গোটা দুনিয়া টিটকিরি দিচ্ছে।

    তারপর ‘রাত গয়ী তো বাত গয়ী’ হল। আমি ভুলে গেলাম।

    একদিন চারপাশের বিশ গাঁয়ে চোঙা ফুঁকে মুনাদি করা হল —
    শোন শোন!
    আগামী মাসের এক তারিখ থেকে সাত তারিখ অব্দি কোরবা এনটিপিসি হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বিশাল ফ্যামিলি প্ল্যানিং শিবির শুরু হবে।
    তাতে নামকরা ডাক্তারেরা আসবে। এবং এই শিবিরে যারা ছোট পরিবারের করার জন্যে ছোট চেরা বা বড় চেরা লাগাবে তাদের দিল্লি সরকার থেকে সাড়ে তিনশো টাকা এবং ভোপাল সরকার থেকে আড়াইশো টাকা ইনাম দেয়া হবে।
    কোন জোর জবরদস্তি নেই। যে আসবে, নিজের ইচ্ছেয় আসবে।

    খবরটা নেতরামই নিয়ে এল। মাথা-টাথা চুলকে যা বলল তার নিগলিতার্থ — আপনি আচরি ধর্ম। বৌ বলেছে ম্যানেজার সাহেবেরও তো দুটি মেয়ে।
    উনিও করিয়ে নিন। তাহলে আমরা ভরসা পাবো।

    চমকে উঠলাম, কথাটা তো সত্যি। একেই বলে ‘বাঁশ কেন ঝাড়ে, আয় আমার —‘কেস।

    অতএব, আমরা দু’জন ওই ক্যাম্পে যাব বলে নাম লেখালাম। আমার ব্র্যাঞ্চের এলাকার স্বাস্থ্যবিভাগের সবচেয়ে জুনিয়র স্টাফ খুশি। ওকে খুব বকেছিলাম ব্যাংকের দেয়ালে পরিবার পরিকল্পনার শ্লোগান লেখার জন্যে।

    তারপর গেলাম এক কলীগের কাছে, যার এ’বিষয়ে পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। সে বলল, কুছ পরোয়া নেই। শুধু যাওয়ার আগে ভাল করে শেভ করে যাবি। নইলে ওরা ডোম দিয়ে কামিয়ে দেবে। সে এক যন্ত্রণা!

    গিয়ে দেখি এলাহী কারবার, ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশনের হাসপাতালের সামনের মাঠ ঘেরাও করে এক বিশাল মেলা বসেছে।
    অনেকগুলো টেবিলে নাম রেজিস্টার করা হচ্ছে। লাইনে দাঁড়ালাম। আমার আগে দেখি মনবোধি, ব্যাংকের খাতক। সে এসেছে বৌ এবং একটি বাচ্চা মেয়ের সঙ্গে।

    রেজিস্টার ভদ্রলোকের চক্ষু চড়কগাছ। কে এনেছে এই কেস?
    কেন?
    আহাম্মক কোথাকার! একে আদিবাসী, তায় মাত্র একটি কন্যা সন্তান। সে নিজের অপারেশন করাতে চায়।
    সত্যবচন? নাকি পট্টি পড়িয়ে এনেছিস? আমার চাকরি খেতে চাস!

    মনবোধি এগিয়ে এসে সমাধান করে। না, সে জেনেবুঝেই এসেছে। টাকার প্রলোভনে নয়। ওর বৌ রাজি। একটি মেয়ে তো কী হয়েছে! বড় অপারেশন চাই, ছোটা চিরা নয়।
    ভদ্রলোক একটি শপথ পত্রে স্বামী-স্ত্রীর সই নিয়ে কার্ড দিলেন।
    এবার আমার পালা।

    ভেতরের ঢাকা বারান্দায় গিয়ে দেখি লাইন দিয়ে শ’খানেক লোক বসে। আরও আসছে। তার পাশের বিশাল হলঘরে তিরিশটা খাট পাতা। সার্জিক্যাল মাস্ক পরে তিরিশজন ডাক্তার একমনে কাটাছেঁড়া সেলাই করা চালিয়ে যাচ্ছেন, যেন কোন কাপড়ের কারখানায় এসেছি।
    খটাখট, ঘটাঘট।

    আমাকে নিয়ে এসেছিল বন্ধুটি ওর স্কুটারে চাপিয়ে।
    বলল -- আগে বারান্দায় গিয়ে সবার সঙ্গে উবু হয়ে বস। অ্যান্টি টিটেনাস এবং পেনিসিলিন জাতের দুটো ইঞ্জেকশন দেবে।

    বসে আছি। একজন নার্স এসে বলল – হাতের মুঠো বন্ধ করতে হবে। তথাকরণ। এবার দুহাতের বাইরের ফুলো ফুলো জায়গায় পট পট করে দুটো সুঁই বিঁধিয়ে দিল। তারপর বলল এখানে বসে থাকুন, নাম এবং নম্বর ডাকলে বড় হলের ভেতরে যাবেন।
    বন্ধু বলল ভেতরে সোজা ডাক্তার বাধওয়ানির কাছে যাবি। ফর্মে তোর জন্যে ওনার নাম লিখিয়েছি। উনি কোরবার সবচেয়ে ভাল সার্জন।

    যাহোক, নাম ডাকা হলে ভেতরে গিয়ে ডাক্তার বাধওয়ানির নাম বলতেই একজন বেঁটেখাটো অ্যাপ্রন পরা মানুষ হাসিমুখে এগিয়ে এসে হাত মিলিয়ে একটা খালি বিছানা দেখিয়ে বললেন
    - শুয়ে পড়ুন।
    হাঁ হাঁ, আগে পাৎলুন খুলে পাশের চেয়ারটায় রাখুন।

    সে কি, এতলোকের সামনে?
    আরে, তাতে কী হয়েছে! সবাই পুরুষ এবং সবাই সমব্যথী।
    বাধ্যছেলের মত তথাকরণ।
    হল না, আন্ডারওয়ারও।

    একটা চাদর দিয়ে ঢেকে দেয়া হল।

    এবার ওনার অ্যাসিস্ট্যান্ট এসে গাণ্ডীব ধারণ করতে গিয়ে চমকে উঠলেন।
    বিরক্ত মুখে বললেন — একী, আপনাকে কেউ শেভ করে আসতে বলেনি?
    -- করেছি তো!
    -- এটা ঠিকমত হয় নি। এতে অপারেশন করা যাবে না। আপনি দেখুন স্যার।

    ডাক্তার হাতে গ্লাভস পরতে পরতে উঁকি মেরে বললেন — উঁহু, নেমে যান। ঠিকমত হাজামত করে আসুন।

    আমি হতাশ। এই বিদেশে কোথায় নাপিত পাব? তাও এমন কার্যের?
    এ বোধহয় শ্মশানে ডোমের কাছে যেতে হবে।

    দাদু শিখিয়ে ছিলেন — “দুঃস্বপ্নে স্মর গোবিন্দ, সংকটে মধুসূদনঃ”। নাম জপতে না জপতেই আমার সংকটমোচন মধুসূদন দাদা এসে হাজির হলেন — সেই অভিজ্ঞ বন্ধুটি!
    -- চলে আয়, ব্যবস্থা আছে।
    -- মানে? খরচা লাগবে?
    -- আরে না না, তোর মত আতাক্যালানে অনেক আছে। বারান্দার ওই দিকে হাজামত ঘর। চল আমার সঙ্গে।

    সেখানে যমের মত বা শ্মশানঘাটের ডোমের মত একজন লালচোখ বিরক্ত মুখে আমাকে দেখে বলল — ইহাঁ লেট জাইয়ে।
    না, কোন খাট-বিছানা নয়। সিমেন্টের সোফা গোছের। শুয়ে পড়লাম।
    সে নিয়ে এল ইয়া বড় এক ক্ষুর, আর পুরনো দিনের দেশি কাপড়কাচা সাবানের মত দেখতে একটা গোলমত বাটি সাবান। এসে আমার সংবেদনশীল জায়গায় বাটি সাবান দিয়ে কষে রগড়ে দিল।
    আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল — মা গো!
    লোকটা খেঁকিয়ে উঠল — একদম নড়াচড়া নয়। তাহলে আপনার গাণ্ডীব ঘ্যাঁচ হয়ে টিকটিকির লেজের মত খসে পড়বে।

    ওর হাত চলল ঘ্যাঁসঘ্যাঁস করে। আমি দাঁতে দাঁত চেপে রইলাম। আসলে আমার ওখানে একটু কাতুকুতু আছে। কিন্তু যদি ঘ্যাঁচ হয়ে যায়!

    যমদূতের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ফের যেতে হল হলঘরে, যেখানে কসাইখানা চালু আহে।

    ফের ডাক্তার বাধওয়ানি। ফের জন্মদিনের পোষাকে শুয়ে পড়া।
    ওনার অ্যাসিস্ট্যন্ট এবার গ্লাভস্‌ পড়ে খাবলাচ্ছে।

    একী, অপারেশন করবি তো কর, এসব কী?
    আমার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে এল, কপালে ঘাম জমছে।
    -- কী হল?
    -- আমি পারব না, শরীর খারাপ লাগছে।

    অ্যাসিস্ট্যান্ট বলল — সাহেব, খামোকা ভয় পাচ্ছেন। দেখুন আমার হাতে কোন অস্ত্রশস্ত্র নেই। এখন খালি আপনার আসল সাপ্লাই চেন কোথায় সেটা হাতড়ে দেখছি।
    -- ঠিক আছে, আরেক দফা হোক।

    নাঃ আমার হাতের তেলো পায়ের তলা শূন্য হয়ে যাচ্ছে। কানে ঝিঁঝির ডাক।
    ডাক্তার বিরক্ত।
    এ তো সুপারসেন্সিটিভ! এতক্ষণে আমি আরও তিনজনের নিপটে দিতাম।

    আমার রাগ হল। ঠিক আছে। আমি নেমে যাচ্ছি।
    -- আরে যাচ্ছেন কোথায়? আগে আপনার গাণ্ডীবে একটা নম্বরওলা স্টিকার লাগানো আছে। সেটা খুলে ফেলতে হবে। নইলে হিসেব মিলবে না।
    -- নিন, যা যা খোলার আছে খুলে নিন। এবার উজাড় করে লও গো আমার যা কিছু সম্বল!
    হ্যাঁ, এই সময়ে রবিঠাকুর আমার পাশে দাঁড়ান।

    -- আচ্ছা, আর একবার ট্রাই করুন তো। দেখুন, আজকালকার জোয়ান ছেলে ফ্রন্টে যায়। আমি ছিলাম। সেখানে একজনের বাঁহাত কাটতে হল। টুঁ শব্দটি করল না।
    -- ডাক্তার, আমিও বাঁহাত কেটে ফেললে টুঁ শব্দ করব না, কিন্তু আপনি তো আমার অন্য কিছু কাটছেন।

    ডাক্তার রেগে গেলেন, ‘নেমে যান, ঢের হয়েছে। আমার টার্গেট একদিনে একশ’; আর আপনার মত -- । নেমে যান’।
    ডাক্তার অন্য বেডের দিকে চলে গেলেন।

    আমি বেড থেকে নেমেছি মাত্র, হলে ঢুকলেন ডক্টর মিশ্র, মহকুমা হাসপাতালের অধিকর্তা, আমার পরিচিত।
    আমাকে দেখেই ওনার মুখ হাসিহাসি। একজন মূর্গা। আমার কেস হলে ওনারও টারগেটে যুক্ত হবে।
    হাত বাড়িয়ে বললেন — কনগ্রাচুলেশনস্‌! আপনার মত সচেতন-- -।

    আমি বাধা দিই, টেক ব্যাক ইয়োর ইয়ে! আমি করাইনি। চলে যাচ্ছি।
    -- সেকী, কেন?

    আমাকে অনেক বোঝালেন। আমি বললাম, সকাল থেকে খালি পেটে আছি। কাল খেয়েদেয়ে আসব। উনি অবাক। খালি পেটে কেন ?
    আমি বিজ্ঞের মত ডাক্তারকে বলি — বাঃ, কোন অপারেশনের আগে খালি পেটে থাকতে হয় তো!

    উনি হাসেন।
    এগুলো অপারেশন নয়, সেপারেশন। আপনার পেট্রোল ট্যাংক থেকে সাপ্লাই পাইপ আলাদা করে গুটিয়ে দেয়া হবে। চলুন।
    -- আজ ছেড়ে দিন, কালকে আসব। এখনও তো সাতদিন ক্যাম্প আছে।
    -- উঁহু, কাল কো কৌন দেখা হ্যায়? আজ কা দিন খোয়ে কিঁউ। যে একবার যায়, সে ফিরে আসে না।
    কাল-টাল নয়, আজই।
    বন্ধুর সঙ্গে গিয়ে পাশের কফি হাউস থেকে দোসা-কফি সাঁটিয়ে আসুন। সব হয়ে যাবে।
    কথা দিন, পালাবেন না।

    আমি কাপুরুষ নই। আর্শোলা ছাড়া কাউকে ভয় পাই না। কথা দিলাম।
    ফিরে এসে আবার দুই মুঠোয় দুই ইঞ্জেকশন! আগের এফেক্ট নাকি চলে গেছে।

    এদিকে অ্যামপ্লিফায়ার গর্জন করছে — বেশ কিছু লোক একবার অপারেশন হবার পর টাকার লোভে দ্বিতীয়বার লাইন লাগিয়ে অপারেশন করাতে এসে ধরা পড়েছে।
    আপনাদের বলা হচ্ছে যে ডাক্তার ঠিক বুঝতে পারেন।
    কাজেই এসব করে লাভ নেই, উলটে থানায় দেয়া হবে।

    ফের ডক্টর বাধওয়ানি। উনি হাসেন।
    আপনি তৈরি? তাহলে আবার গাণ্ডীবে নতুন নম্বরের স্টিকার।
    সহকারির হাত অশ্লীলভাবে কিছু খুঁজে বেড়াচ্ছে।

    আমি কিছু ভাবব না। সুড়সুড়ি লাগছে, কিন্তু মনটাকে নির্বাণের দিকে নিয়ে যেতে হবে। চোখ বুঁজে ফেলেছি।
    ফাঁসি হবে তো তাড়াতাড়ি হোক।

    ডাক্তার বাধওয়ানি কিছু বলছেনঃ রায়, আপনার কোলকাতায় বাড়ি আছে?
    -- সব বাঙালিরই আছে। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত, বাঙালির কোলকাতা অব্দি।
    হাসির শব্দ।

    -- বিয়ে কোথায় হয়েছে?
    -- ভোপালে।
    -- আচ্ছা, ওই দেখুন ডক্টর সুবেদারকে, ওনারও শ্বশুরবাড়ি ভোপালে।

    বুঝলাম, বাধওয়ানি আমাকে অন্যমনস্ক করতে চান। বেশ, আমিও খেলব।
    চোখ খুলে ফেলি।

    কোথায় ডক্টর সুবেদার? বাধওয়ানির আঙুলের ইশারা দেখে হলের অন্য মাথায় একজনকে টার্গেট করে চেঁচাইঃ হ্যাল্লো ডক্টর সুবেদার!
    একজন চশমাপরা হাসিমুখ আমার দিকে তাকিয়ে হাত তোলে।

    -- ভোপালে শ্বশুরবাড়ি ডক্টর? তাহলে আমি আর আপনি সম্পর্কে সাড়ুভাই (ভায়রাভাই) হলাম।
    উনি হেসে বলেন — শিওর!
    তারপর নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
    এবার বাধওয়ানি আমাকে একগাদা খেজুরে প্রশ্ন করতে থাকেন।

    -- দুর্গাপুজোয় কলকাতা যাই কিনা, এবার যাব কিনা, শেষবার ভোপাল কবে গেছি — ইত্যাদি।
    নাঃ আর খেলতে ইচ্ছে করছে না।

    গলার স্বরে বিরক্তি এনে বলি — অনেক গল্প হল ডাক্তার। আসল কাজ কখন শুরু হবে?
    -- হয়ে গেছে তো; গিঁট বাঁধছি। এবার নেমে পড়ুন।

    আমি অবাক, এত তাড়াতাড়ি? কিচ্ছু টের পেলাম না তো?
    সত্যিই কিছু করল? নাকি ঢপ দিচ্ছে!
    নেমে আসি। আমার বিমুঢ় অবস্থা দেখে ওঁরা হাসেন। ধন্যবাদ দিই, হ্যান্ডশেক করি।

    বাইরে আসতেই ডক্টর মিশ্র। আবার অভিনন্দন, আবার করমর্দনের পালা।
    শেষে উনি অন্য একটি ঘরে একজন ক্লার্কের কাছে নিয়ে গেলেন।
    দুটো ভাউচারে দস্তখত করতে হল। তারপর গুণে গুণে নতুন নোট, কেন্দ্রীয় সরকার থেকে সাড়ে তিনশ’ এবং রাজ্য সরকারের আড়াইশ।
    বাঃ, কড়কড়ে ছ’শো? এ যে শালা জ্যাকপট!

    চারদিন ছুটির পর ব্যাংকে গেছি।

    সমস্ত স্টাফের মুখে মুচকি হাসি, এমনকি মহিলা ক্যাশিয়ারও আমাকে অভিনন্দন জানালেন।
    কেমন অস্বস্তি বোধ করছি।

    লাঞ্চের সময় পাঁচজন স্টাফের বিনীত অনুরোধঃ স্যার, একদিন আমাদের ওই টাকা থেকে পার্টি দিন।
    আমি মাথা চুলকোই।
    মেয়েটি অবাক, “কী হল স্যার? শরীর খারাপ লাগছে”?

    -- না, আসলে কী হয়েছে জান? ওই টাকা দিয়ে তোমাদের ভাবীজিকে একটা শাড়ি কিনে দিয়েছি।

    =========
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ১১ মে ২০২৫ | ৬০৭ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    লাল রঙ - Nirmalya Nag
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Nirmalya Nag | ১২ মে ২০২৫ ১০:২১731285
  • আপনার কলমের মুখে দোসা কফি পড়ুক
  • Ranjan Roy | ১২ মে ২০২৫ ১২:১২731288
  • আহা !
  • সমরেশ মুখার্জী | ১২ মে ২০২৫ ১৫:৩৯731294
  • আনন্দিত, আহ্লাদিত, আপ্লুত, উদ্বেলিত, চমকিত, বিহ্বলিত, বজ্রাহত, দুর্গত... ইত্যাদি প্রভৃতি বিবিধ মানসিক "ত" অবস্থা‌য় সংস্কৃতিবান বাঙালীর গুরুদেবকে মনে পড়ে বলে শুনেছি। এই রসময় রম্যরচনা পড়ে জানলুম গান্ডীবে হাত পড়লেও তিনি বিপন্ন বাঙালীর পাশে থাকেন। 
     
    পড়ে প্রভূত আনন্দ পেলুম। আপন মনে হাসতে চোখে জল এসে গেল এবং ফুসফুসে হোলো কিছু অতিরিক্ত অমল অম্লজানের সঞ্চার। 
  • Ranjan Roy | ১২ মে ২০২৫ ১৮:৪২731298
  • সমরেশ 
    এই একটা লেখা 99.99% সত্যি। জল মেশাই নি। 
    বরং অনেক কিছু এডিট  করেছি। 
    ডাক্তার বাধবানীকে সত্যিই বলেছিলাম,  " আমারও  বাঁহাত কাটলে মুখ  দিয়ে কোন শব্দ বেরোবে না। কিন্ত আপনি তো অন্য কিছু --
  • হীরেন সিংহরায় | ১৩ মে ২০২৫ ১৯:৫৫731328
  • আহা আহা! ধন‍্যি ধন‍্যি করি। বেঁচে থাকো চিরজীবি হয়ে তুমি। আলো করো সংসার! 
     
    শিবরামের কথা মনে আছে " লুপ বিফোর ইউ লীপ?"
     
    কতদিন বাদে হাজামত শুনলাম ! প্রথম বারো বছরের বিহার বাস। 
    দেব আনন্দের একটি অসমাপ্ত ছবির নাম ছিল এক কে বাদ এক
     
  • Ranjan Roy | ১৩ মে ২০২৫ ২৩:০৪731330
  • মাথায় রইল 
  • জয় | ১৪ মে ২০২৫ ০৩:৫১731332
  • রঞ্জনদা
    বড্ড ভালো লিখেছেন। বহুদিন বাদে হাহা হোহো করে হাসলাম। আপনি পারেন ও বটে! 
  • Ranjan Roy | ১৪ মে ২০২৫ ১৬:১৪731342
  • syandi | 2401:4900:88ac:30b1:68e4:4e4a:5eb3:***:*** | ১৪ মে ২০২৫ ২৩:৫৭731348
  • রঞ্জনদার বেশিরভাগ লেখাই একটা মিনিমাম স্ট্যান্ডার্ড মেনটেইন করে। এটাও তার ব্যতিক্রম নয়। একেবার মুচমুচে খাস্তা লেখা!
  • অরিন | 2404:4404:4405:700:c84c:5f75:19de:***:*** | ১৫ মে ২০২৫ ০৮:৪২731350
  • চমৎকার লেখা, যেমন বরাবর আপনি লেখেন রঞ্জনবাবু!
    যেমন লিখেছেন,
    "কারণ, এসে গেছে নতুন সূচক-TFR (Total Fertility Rate)। সরকারি ভাবে বলা হচ্ছে আজ ভারতে ওই সূচক ২.১, অর্থাৎ আদর্শ স্থিতি ২.২ থেকে কম! "
    এখানে আদর্শ স্থিতি বলে যেটিকে বলেছেন, আপনি সম্ভবত Replacement Fertility Level (RFL) এর কথা লিখেছেন, সেটিকে কিন্তু "আদর্শ" বলা যায় কিনা আমি জানি না। হয়ত যায় | এরা, সরকারী তরফে যেটা সাধারণত বলতে চায় সেইটা এই যে, এই লেভেল হলে অবলুপ্তি বা extinction এড়ানো যাবে | এখন তা নিয়েও বিস্তর তর্কের অবকাশ আছে, সে প্রসঙ্গ এখানে তোলার সুযোগ নেই | আরো দুটো একটা কথা বলা যেতে পারে।
    এই টিএফআর জাতীয় অঙ্কগুলো সব জায়গায় সমানভাবে কষা যায় না। যেমন মধ্যপ্রেদেশের কথাই ধরুন। TFR সেখানেই প্রযোজ্য যেখানে সাধারণভাবে প্রসূতি বা সাধারণ মানুষের মৃত্যুহার জন্মহারের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম | এবার গরীব আদিবাসি অধ্যুষিত এলাকা, অন্তত আপনি যে সময়ের গল্প বলছেন (সত্তরের দশক), সেখানে আদিবাসীদের মধ্যে কি সত্যি মৃত্যুহার খুব কম ছিল, বা মনে করুন প্রসূতির চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য পরিষেবা বা মনে করুন সাধারণ মানুষের কাছেও স্বাস্থ্য পরিষেবা খুব সুলভ ছিল? হয়ত ছিল, হয়ত ছিল না। কিন্তু তা হলেও সকলের কাছে "দো ইয়া তিন" শিশু জন্মের বাণী পৌঁছনটা কত বাস্তব সম্পন্ন ছিল অন্তত মেসেজ হিসেবে, এ নিয়ে তর্ক থেকেই যায়।
    যাক সে কথা।
    আরেকটা প্রসঙ্গ |
     
    লিখছেন,
     
    "যমদূতের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ফের যেতে হল হলঘরে, যেখানে কসাইখানা চালু আহে। "
     
    অনবদ্য সে বর্ণনা!
     
    এই সুযোগে আপনার কাছে আবদার রাখব, এই Forced Sterilisation, যা কিনা সেই সময় ভারতই একমাত্র দেশ যেখানে গণহারে চলছিল, এমারজেনসির সঙ্গে তাল মিলিয়ে, তার একটি সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে। সে সময়কার একটি বিমারু স্টেটের গপ্পোই যখন হচ্ছে, সেই ব্যাপারগুলো নিয়েও কিছু লিখুন না হয়। 
  • Ranjan Roy | ১৬ মে ২০২৫ ১৪:৫৮731379
  • অরিনদা, 
     
    এই সিরিজের পর্ব 1 দেখুন। তাতে এমার্জেন্সি,  সঞ্জয় গান্ধী এবং ফোর্সড স্টেরিলাইজেশনের গল্প আছে।
  • অরিন | 2404:4404:4405:700:5866:564e:9794:***:*** | ১৬ মে ২০২৫ ১৫:৫৭731383
  • ওমা, তাই তো!
    প্রথম পর্বতেই তো ছিল। 
    দোহাই রঞ্জনবাবু, আমাকে অরিনদা না বলে অরিন বলে সম্বোধন করুন, :-)
  • swapan kumar mondal | ১৬ মে ২০২৫ ২১:৪৩731393
  • কোন কথা হবে না রঞ্জনদা ট্রিট এখনই চাই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন