এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকের স্মৃতির কোলাজঃ পর্ব ১১

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ৩৪৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকের স্মৃতির কোলাজঃ পর্ব ১১

    লিটল ব্যাংক রবারি ১

    আমরা জানি যে মধুর লোভে ভ্রমর আসে। টাকার লোভে চোর-ডাকাত আসে। যার ঘরে কিছু নেই, সে নাক ডাকিয়ে ঘুমোয়। এটাই দস্তুর, কথায় বলে -- ন্যাংটার নেই বাটপাড়ের ভয়।
    ছত্তিশগড়ের গ্রামীণ ব্যাংক গেঁয়ো হোক বা যাই হোক, ব্যাংক তো বটে! সিন্দুকে কিছু টাকাকড়ি তো থাকবে? মানছি, সত্তরের দশকের শেষের দিকে ব্যাংক খোলার পর বলা হল -- এ হচ্ছে গরীবের ব্যাংক, টাকা জমা যে কেউ যত ইচ্ছে করুক গে, লোন পাবে শুধু গরীব-গুর্বোরা।

    Regional Rural Bank Act, 1976 বলছিল – এর কাজ ‘weaker sections of the society’কে serve করা। মানে ‘সেবা’ করা? ওই মাড়োয়ারি সমাজের কাশী বিশ্বনাথ সেবাসমিতির জলসত্রের মত ? সমাজ-সেবা, মানে আমরা কি তাহলে ঠিক ব্যাংক নই?
    ইন্দিরা গান্ধী ঘোষিত ‘জরুরী অবস্থা’ উঠে যাওয়ার পর দিল্লির মসনদে বসল জনতা সরকার।
    তার ব্যাংকমন্ত্রী হলেন গুজরাতের মগনভাইজী বারোত। আমরা একবার আমাদের ইউনিয়নের অখিল ভারতীয় প্রতিনিধিদল নিয়ে ওনার সঙ্গে দেখা করলাম। উদ্দেশ্য ছিল ‘সমান কাজ, সমান বেতন’ নীতির ভিত্তিতে অন্য সরকারী কমার্শিয়াল ব্যাংকের সংগে আমাদের বেতন ও ভাতায় সমতা নেই কেন – সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলা।

    কোথায় কী! আমাদের অল ইন্ডিয়া সেক্রেটারি মুর্শিদাবাদের দিলীপদা সে নিয়ে বলা শুরু করতেই মন্ত্রীজি ক্রসব্যাটে খেলে বল মাঠের বাইরে পাঠালেন।
    -- এক মিনিট! এক মিনিট! কী বললেন ‘কমার্শিয়াল ব্যাংক'? শুনুন, ইন্দিরাজি এই ব্যাংক খুলেছিলেন গ্রামে গ্রামে মহাজনী শোষণ বন্ধ করতে তার বিকল্প সংস্থা হিসেবে। মহাজন কি ব্যাংক নাকি?
    আমি গ্রামীণ ব্যাংক বলতে বুঝি — গ্রামে বড় মুদি দোকানের মত। সবার চেনা পরিচয় থাকবে। লোকে অবরে সবরে-- জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ-হাসপাতাল জাতীয়-- দরকারে পড়লে ওখান থেকে অল্প স্বল্প লোন নেবে, ধান উঠলে সেটা বেচে শোধ করবে, ব্যস্‌।
    আপনারা ভুল পথে যাচ্ছেন, কমার্শিয়াল ব্যাংকের এলিট কালচারের বদলে দেশি সংস্কৃতি আঁকড়ে ধরে এগিয়ে চলুন। সবার কল্যাণ হবে।

    সেইজন্যেই গ্রামীণ ব্যাংকে কোন বন্দুকওলা দারোয়ান নেই, ছাতে কোন সাইরেন নেই। ম্যানেজার তার চেয়ারের হাতলের পাশে কোন গুপ্ত বোতাম টিপলে স্থানীয় থানায় এলার্ম বেজে উঠবে এবং ধরাচূড়া পরা সেপাইয়ের দল বন্দুক হাতে ছুটে আসবে এমনটি নয়। বড়লোকেরা লোন পায় না, কাজেই বেশিরভাগ টাকাপয়সা কোন-না-কোন সরকারি ব্যাংকে জমা রাখে। ফলে কোন সাধারণ শাখায় দৈনিক মজুত ক্যাশ কম রাখা হয়। থাম্ব- রুল হল জমা টাকার ১% এর কম ক্যাশ সিন্দুকে রাখা।

    লো-কস্ট ব্যাংকিং!

    এভাবেই চলছিল। যা হয়েছিল তা হল ছুটকো ছাটকা চুরি এবং ছিনতাইয়ের চেষ্টা। এভাবেই বছর পনের কেটে গেল। এল দিন বদলের পালা।
    সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তখন রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর। উনি বলছিলেন গ্রামীণ ব্যাংকের অপারেশন আর্থিক দিক থেকে লাভজনক এবং সফল করতে হলে ওদের বাজেটের কিছু অংশ থেকে কমার্শিয়াল লোন দেবার কথা ভাবতে হবে। গোড়ায় ২০%, পরে হল ৪০%। এখন কোন বিধিনিষেধ নেই।
    তো সেই নব্বইয়ের দশক থেকেই শুরু হল কমার্শিয়াল লোন, বেড়ে গেল ডিপোজিট। ব্র্যাঞ্চে ক্যাশ লিমিটও বেড়ে গেল। স্টেট ব্যাংক থেকে ক্যাশ আনার ম্যান্ডেটেরও পরিবর্তন হল। কিন্তু লো কস্ট ফোবিয়ার চোটে সিকিউরিটি ব্যবস্থায় অন্য কোন পরিবর্তন হল না। এমনকি, স্থানীয় থানার সঙ্গে এলার্মে যোগাযোগও নয়। এই পরিস্থিতিতে কয়েকটি ঘটনা ঘটল যার পরে এখন সবই হয়েছে। দম ধরে রাখুন।

    তিনহাজার টাকার ডাকাতি ও আমার প্রমোশন

    ডাকাত পেল কুল্যে তিনহাজার টাকা, আগেই ছ্যা ছ্যা করে উঠবেন না। শুনুন দয়া করে।

    সাল ১৯৮৮। সারা ভারতে গ্রামীণ ব্যাংকে এই প্রথম বিভাগীয় পদোন্নতির আদেশ এসেছে। ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার থেকে এরিয়া ম্যানেজার এবং হেড অফিসে বিভাগীয় প্রধান — দশটি পদ। আমরা তিরিশ জন ইন্টারভিউ দেব।

    তখন রায়পুর জেলা ব্র্যাঞ্চটিও শহরের উপকন্ঠে লজ্জা লজ্জা ভাব করে রয়েছে। আমি ক্যাশিয়ার মেয়েটিকে বললাম — আজ একটু তাড়াতাড়ি কর। আগে থেকেই ক্যাশ মেলাতে শুরু কর। যাতে ক্যাশ আওয়ার শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বুক সাইন করে সিন্দুকে ভরে আমি বিলাসপুরের ট্রেন ধরতে পারি। কাল সকালে আমার ইন্টারভিউ। বাকি রোজকার নিত্যিকর্ম অন্য দুই অফিসার দেখবে।

    ঠিক সময়ে ক্যাশ বন্ধ হল। আজ অসময়ে এলে কোন পাবলিককে পাত্তা দেয়া হবে না। আমি আমার জামাকাপড় আর একটা ব্যাংকিং ‘ল অ্যান্ড প্র্যাকটিসে’র বই ব্রিফকেসে ঢুকিয়ে মানিব্যাগে কিছু টাকা ঢোকাই। চাপরাশি শাটার টেনে নামাচ্ছে। শাটার প্রায় মাটি ছুঁয়েছে এমন সময় শাটারের নীচের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিল এক জোড়া চুড়ি পরা হাত।

    -- স্যার, স্যার! প্লিজ বন্ধ করবেন না। আমাদের শাখায় ডাকাতি হয়ে গেছে।
    ভেতরে ঢুকল তিনজন — প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরের দোন্দেকলাঁ নামের এক ছোট্টস্য ছোট্ট শাখার মহিলা ম্যানেজার, রামদেও বাবা’র মত দাড়ি শান্তশিষ্ট ক্যাশিয়ার আর তৃতীয়জন ওই গাঁয়ের সরপঞ্চের ছেলে। এ’রম ব্র্যাঞ্চে ডাকাতি! ওদের খর্চা পোষাবে তো?
    বুঝলাম, আমার বিলাসপুরে গিয়ে রাত্তিরে বন্ধুদের সঙ্গে একটা ক্র্যাম সেশন করার প্ল্যানের হাতে হ্যারিকেন হয়ে গেছে।

    তিন মূর্তিকে বললাম — আগে জল খাও, গরম চা খাও। তারপর শান্ত হয়ে বল দিকি কী হয়েছে?

    যা বুঝলামঃ
    আজকে লোকজনের ভিড় প্রথম দুঘন্টাতেই শেষ হয়ে গেছল। অচেনা দুটো ছেলে খানিকক্ষণ আগে রেকি করে গেছল। ক্যাশিয়ার জিজ্ঞেস করায় এড়িয়ে গেছল। তারপর খালি ব্যাংক দেখে হঠাৎ ঢুকে ক্যাশিয়ারের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বলল — ভাল চাও তো যা আছে দিয়ে দাও।

    ম্যানেজার মহিলা ভাবল — ক্যাশিয়ারের সঙ্গে কোন ব্যক্তিগত খার হয়েছে। সে চেঁচিয়ে উঠল — বাইরে! বাইরে যান, বাইরে যান! ব্যাংকের মধ্যে কোন ঝগড়াঝাঁটি চলবে না।
    পিস্তলধারী চেঁচিয়ে উঠল — চোপ্‌ শালী! ডাকাতি হচ্ছে। কথা না বাড়িয়ে ভালয় ভালয় দিয়ে দাও, কারও ক্ষতি হবে না। চেঁচিয়েছ কি দানা ভরে দেব।
    ক্যাশিয়ার শ্রীমান কুরেশি ঠাণ্ডা মাথার লোক। খেয়াল করেছে যে ডাকাতেরা বেশ নার্ভাস টাইপ, ঠিক প্রফেশনাল নয়। সে ড্রয়ার খুলে বলল — যা আছে নিয়ে নাও।

    আগেই বলেছিলাম তখন আমাদের ব্যাংকে ক্যাশ কাউন্টার বলে কিছু ছিল না। দেখতে চিট ফান্ডের অফিসের মত দেখাত। আমরা বলতাম — আমরা হলাম স্টেট ব্যাংকের উপনিবেশ। আমাদের ডিপোজিটকে জিরো ইন্টারেস্টে কব্জা করে। আর দলিত বস্তির মত ব্যবহার করে। আমাদের সেফটি কম্প্রোমাইজড্‌! ডাকাতের দল গুণে দেখল একুনে ২৭৩৮ টাকা!

    -- আর নেই? ছিঃ! এটা আবার ব্যাংক? লজ্জা পাওয়া উচিত। নিয়ে যাচ্ছি, তোমরা আধ ঘন্টার আগে বেরোবে না, চেঁচাবে না।
    ওরা বুঝতে পারেনি যে সিন্দুকটি রয়েছে দেয়াল ঘেঁষে একটা পর্দার আড়ালে। তাতে প্রায় পনের হাজার টাকা ছিল। ক্যাশিয়ার শ্রীমান কুরেশি একেবারে কুল!
    তৃতীয় ডাকাত ইয়েজদি মোটরবাইক নিয়ে পানদোকানের সামনে অপেক্ষা করছিল। গাড়ি স্টার্ট হতেই ক্যাশিয়ার বেরিয়ে ডাকাত! ডাকাত! পালিয়ে যাচ্ছে, ধর ধর! বলে চেঁচাতে লাগল।

    ভর দুপুরে গাঁয়ের লোকজন প্রথমে চমকে গেল, তারপর ওদের তাড়া করল। একজন বাইক থেকে পিছলে পড়তে পড়তে বেঁচে গেল। ওরা প্রচন্ড স্পীডে পালিয়ে গেল। কিন্তু ক্যাশিয়ার ছেলেটি মুসলিম। ও দিনের শুরুতে একবার পান খেতে গিয়ে দেখেছিল কাছেই দাঁড় করানো এক ইয়েজদি মোটর সাইকেল, চোখ আটকে গেছল পেছনের নাম্বার প্লেটে — তাতে নম্বরটি ছিল ৭৮৬! ইসলাম ধর্মের পবিত্র সংকেত। বিসমিল্লাহ্‌ অল- রহমান-উর-রহিম! সর্বশক্তিমান দয়াবান আল্লাহ্‌!

    নম্বরটি ওর স্মৃতিতে গেঁথে গেল।

    আমি সিভিল লাইনস্‌ থানায় ফোন করে জানাই যে প্রায় একঘন্টা আগে দোন্দেকলাঁ ব্র্যাঞ্চে ডাকাতি হয়ে গেছে। ওদের ইয়েজদি বাইকের নম্বর — ৭৮৬।
    সিভিল লাইন থানা জানাল – ওরা খবর আগেই পেয়েছে, চারদিকে নাকাবন্দী চলছে। এসপি সাহেব গঞ্জথানায় পৌঁছে গেছেন। ওই শাখার দুজন স্টাফ যেন আধ ঘন্টার মধ্যে স্টেশনের কাছে গঞ্জ থানায় পৌঁছে যায়। এসপি সাহেব নিজে কিছু সওয়াল করবেন।

    এসপি সাহেব নিজে জেরা করবেন? ওদের দুজনকে? বাঘে ছুঁলে আঠের ঘা, কিন্তু পুলিশে ছুঁলে?
    ওদের দুজনের হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। মুখ শুকিয়ে আমসি।
    আমি বলি — তোদের ভয় পাবার কী হয়েছে? চল, আমি সঙ্গে যাচ্ছি।

    পুলিস খবর পেল কী করে?

    একঘন্টা আগে হাইওয়ের ট্রাফিক পুলিস দেখল একটা মোটরবাইকে চড়ে তিনটে ছোকরা আসছে। হাবিলদার খুশি — আটকাও, নিঘঘাৎ কলেজের বাঁদর ছেলের দল, বাবার বাইক নিয়ে ফুর্তি করতে বেরিয়েছে। ধরলে মোটা টাকা আদায় হবে, সামনের মাসে বসন্তপঞ্চমী — খর্চা তুলতে হবে।
    কিন্তু ছোঁড়াগুলো কেমন যেন! গাড়ি না থামিয়ে পড়ি কি মরি করে স্পীড বাড়িয়ে পালিয়ে গেল। অ্যাক্সিডেন্ট হতে পারত।
    ধেৎতেরিকা! একটা শিকার ফসকেছে।
    আরে, আর একটা গাড়ি আসছে — রাজদূত বাইক , তাতে একজন মেয়ে! এবারের শিকার জবরদস্ত! আটকাও, পালিয়ে না যায়।

    কিন্তু মেয়েটি হাঁফাতে হাঁফাতে বলল — প্লীজ, আমাদের যেতে দিন। আমরা ব্যাংক অফিসার, ডাকাতি হয়েছে।
    -- তাই নাকি! তাহলে আমাদের ডিটেইলস্‌ বল। ওয়্যারলেসে চারদিকে খবর ছড়িয়ে দিচ্ছি। নাকাবন্দী হবে, ওরা ধরা পড়ে যাবে।
    আরে একটা ইয়েজদি, তিনজন সওয়ার? ইস্‌ একটু আগে আমাদের সামনে দিয়েই গেছে। ইনাম ফসকে গেল। কপালটাই খারাপ।

    ওয়ারলেসে সর্বত্র খবর ছড়িয়ে গেল। আমাদের অডিট চিফ মিঃ পরমার একশ কিলোমিটার দূরে কোন ব্র্যাঞ্চে ইন্টার্নাল অডিটে ব্যস্ত ছিলেন। সেখানে থানা থেকে খবর এল আপনাদের রায়পুরের কোন শাখায় ডাকাতি হয়েছে। উনি হাতের কাজ ফেলে সোজা গাড়ি চালিয়ে রায়পুর জেলার ডিস্ট্রিক্ট ব্র্যাঞ্চের উদ্দেশে রওনা দিলেন। দু’শ কিলোমিটার দূরে রায়পুর ডিভিশনের আইজি ওয়ারলেসে খবর পেয়ে এসপিকে খবর পাঠালেন এবং ট্যুর অসমাপ্ত রেখে রায়পুরের জন্য গাড়ি হাঁকালেন।
    রিটায়ার হতে বেশি বাকি নেই, এখন এই সব ঝামেলা।

    গ্রামীণ ব্যাংকে ডাকাতি! রায়পুর জেলায়? আগে তো কখনও হয় নি। অবশ্য তিনমাস আগে পাশের দুর্গ-ভিলাই জেলায় গ্রামীণ ব্যাংকেই একটা ডাকাতি হয়েছে বটে! এখনও কিনারা হয়নি। দুটো ঘটনার মধ্যে কোন যোগসূত্র?

    রায়পুর ফাফাডিহ মোড়ের কাছে গঞ্জ থানার সেপাই রসেলুরাম ভরদুপুরে ভাত খেয়ে একটু হাঁটতে বেরিয়েছিল। গত সপ্তাহের ইনস্পেকশন প্যারেডের সময় এসপি সাহেব ওর নাদাপেট নিয়ে কটু মন্তব্য করেছিলেন। রোজ দৌড়তে বলেছিলেন। খাওয়াদাওয়ার পর চেয়ারে বসে ঝিমুনো বন্ধ করে একটু হাঁটাহাঁটি করতে বলেছিলেন।
    ও আদেশ পালন করে।

    এখন পানঠেলা থেকে কিমাম এবং বাবা ৪২০ নম্বর জর্দাওলা পান নিয়ে চিবুতে চিবুতে থানায় ফিরছিল। রাস্তার ধারের ড্রেনের পাশে পিচ করে পিক ফেলতে গিয়ে চোখে পড়ল সামনে একটা বছর পনের বয়সের ফর্সামত চিকনা ছেলে একটা মোটরাবাইক ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যাচ্ছে।
    রসেলুরামের এইরকম ছোকরা দেখলে শরীর গরম হয়। ও লজ্জা পায় বটে, কিন্তু চিকনা ছেলে দেখলে চোখ ফেরাতে পারে না। ও ছেলেটার পেছন পেছন চলতে লাগল।

    নিঘঘাৎ তেল ফুরিয়েছে,তাই ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কতদূর যাবে?
    গাড়ির পেছনের নাম্বার প্লেট কি কিছু বলছে? একটু আগে ওয়ারলেসে খবর এসেছিল — ডাকাতি, ইয়েজদি এবং অদ্ভূত একটা নম্বর যা মসজিদের গায়ে লেখা থাকে। হাঁ, ৭৮৬।
    আরে এটাই তো ৭৮৬, তায় ইয়েজদি। তবে কি এটাই ডাকাতির বাইক? জয় রামজী! জয় বজরঙবলী! এবার রসেলুর হাবিলদার হওয়া আটকায় কে!

    -- আবে ও চিকনা! ইয়ে কিসকী বাইক হ্যায়? তু কঁহা লে জা রহা হ্যায়? ক্যা নাম তেরা?
    ওর গলার আওয়াজ নিজের কানে বেশ ভারি এবং রোবদার শোনাল।
    থতমত খেয়ে বাচ্চাটা বলে যে সামনের দশ কদম আগে যে মোটরসাইকেল সারাইয়ের গ্যারাজ — সেখানে কাজ শিখছে। গাড়িটা ওখানেই নিয়ে যাচ্ছে।
    -- আচ্ছা, মিথ্যে কথা বলার আর জায়গা পাস নি? আগে থানায় চল গাড়িটা নিয়ে।
    ছেলেটা ভয়ে কাঠ।

    গঞ্জথানায় উত্তেজনা চরমে, ডাকাতির গাড়ি উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু ডাকাত কই?
    ছেলেটাকে জেরা করা শুরু হল।
    -- বল তো মুন্না, ডাকাতির গাড়ি তোর হাতে কী করে এল?

    ডাকাতির গাড়ি! ছেলেটার ভয়ে হাত-পা পেটের মধ্যে। আতংকে ওর মুখ দিয়ে কথা বেরোচ্ছে না। প্রথমে গালে পড়ল থাপ্পড়, তাতে ওর মুখ আরও বন্ধ হল। তারপর লাথির চোটে বারান্দার এপাশ থেকে ওপাশ ছিটকে পড়ে বাংলায় চেঁচিয়ে উঠল -- ও বাবা গো! আমাকে মেরে ফেলল! বাঁচাও।
    এসপি সাহেব মালয়ালি, আই পিএস। হাত তুলে মার থামাতে বললেন।

    -- বাঙালি! তোমার বাবা কে? অমুক ব্যাংকের অফিসার বীরেন চক্রবর্তী। আপনারা বাবাকে ডেকে দিন।
    জানা গেল, ছেলের পড়াশোনায় মন নেই দেখে হতাশ বাবা ওকে ফাফাডিহ পাড়ায়, থানার কাছেই একটা বাইক রিপেয়ারিং গ্যারাজে কাজ শিখতে লাগিয়ে দিলেন, বিনে পয়সায়।

    এই বাইকটি সারাইয়ের জন্য গ্যারাজে ছিল। সকাল বেলায় সতীশ ভাইয়া চেয়ে নিয়ে গেছল। একটু আগে যখন বাড়ি থেকে দুপুরের খাওয়া সেরে ফিরছে তখন রাস্তায় সতীশ ভাইয়া গাড়িটা ধরিয়ে দিয়ে বলল — যা, ফেরত নিয়ে যা। ওর তেল ফুরিয়েছে, ঠেলে নিয়ে যা।
    -- সতীশ ভাইয়া কে?
    -- গ্যারাজের মালিক থেংকাপ্পন স্যারের ভাইপো।
    -- এতক্ষণ বলিস নি কেন? তাহলে এত মার খেতে হত না।

    চটপট পুলিস গিয়ে সামনের গ্যারাজ থেকে তার মালিক এবং দুই কর্মচারিকে থানায় তুলে আনল। তারপর মালিককে কালো গাড়িতে বসিয়ে চার কিলোমিটার দূরে হাউজিং কলোনিতে নিয়ে যাওয়া হল, সঙ্গে আর্মড পুলিসের একটা দল।
    জানা গেল সতীশ তার দুই বন্ধুর সঙ্গে দু’ঘন্টা আগে এসেছিল চটপট জামাকাপড় বদলে কোথায় যেন গেছে, কিছু বলে যায় নি।
    দু’জন পুলিশকে পাহারায় রেখে ওর ছেড়ে যাওয়া জামাকাপড় মাফলার সব নিয়ে এবং বাড়ি থেকে ফ্যামিলি অ্যালবাম বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ ফিরে এল।

    আমরা যাওয়ার পর ছবি এবং মাফলার দেখে ক্লার্ক দু’জনকে চিনতে পারল। মাফলার এবং সোয়েটার মহিলা ম্যানেজারও শনাক্ত করলেন।
    এসপি খোঁজ করে দেখলেন দু’ঘন্টার মধ্যে একটিই ট্রেন রায়পুর ছেড়েছে — নাগপুর টাটা প্যাসেঞ্জার। পুলিশের একটি দল সতীশের ছবি নিয়ে টাটানগর রওনা হয়ে গেল। ১৯৮৮ সালে মোবাইল ছিল না যে!

    ইতিমধ্যে আইজি সাহেব এসে পৌঁছেচেন। এসপিকে ধমকাতেই উনি জানিয়ে দিলেন যে ডাকাতির গাড়ি পাওয়া গেছে এবং ডাকাত দলের আইডেনটিটি জানা গেছে। এরা পেশাদার নয়। টাটানগর থেকে ওদের গ্রেফতারি দুয়েক দিনের ব্যাপার।
    আইজি একটু হতাশ হলেন যেন।

    আমাদের ক্যাশিয়ারকে জেরা করতে লাগলেন। আজ কি বেশি ক্যাশ ছিল? কোত্থেকে ক্যাশের সাপ্লাই হয়? গাঁয়ের লোক জানে? সতীশকে আগে থেকে চিনতে? কানের পাশে পিস্তল ধরেছিল? পিস্তল, রিভলবার এবং দেশি কাট্টার তফাৎ বোঝ? আগে কখনও দেখেছ? ওটা কত বড় ছিল — এইরকম, এটার মত, নাকি ওইটার মত।
    আমি মাঝখানে ফোড়ন কাটলাম — কুরেশি কিন্তু সাহস আর উপস্থিত বুদ্ধির জোরে ব্যাংকের পনেরো হাজার টাকা বাঁচিয়ে দিয়েছে।
    ক্রুদ্ধ আইজি আমাকে বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করতে বললেন।

    বারান্দায় বসে এক মোটাসোটা হাবিলদারের সঙ্গে গল্প জুড়ে দিলাম। তিনি রায়গড় জেলায় ছ’মাস সাসপেন্ড থাকার পর মাত্র ‘পুনর্বহাল’ হয়েছেন, রায়পুরে ট্রান্সফার।
    -- কেন সাসপেন্ড হয়েছিলেন, অবশ্যি বলতে আপত্তি না থাকলে।

    শ্রীমান একগাল হেসে নিজের মহান কীর্তি ব্যাখ্যান করতে লাগলেনঃ
    আর বলবেন না! পুলিশের অপরাধীদের শায়েস্তা করার নিজস্ব কায়দা আছে, সব কি আর ব্লু বুকে লেখা থাকে? জুয়োঘরে রেড করে দুই মহা বদমাসকে ধরেছিলাম। ওরা অল্পবয়েসিদের জুয়ো খেলতে উসকে দিত। এটার পেচ্ছাপ ওটাকে খাওয়ালাম, আর ওটারটা এটাকে।
    জুয়ো বন্ধ হয়ে গেল। কিন্তু কোত্থেকে একটা মানবাধিকার সংগঠন এসে আদালতে নালিশ করল। ফার্স্ট ক্লাস ম্যাজিস্ট্রেট, এক বাঙালি মহিলা, আমাকে বুক করে দিলেন। তবু বিধায়কজি এবং আইজি স্যারের কৃপায় ছ’মাসেই ফিরে এসেছি।

    বারান্দায় বসে থাকা ছ’জন মালয়ালীর মধ্যে বয়স্কটি মুখ খুললঃ হয়েছ তো! ডাকাত পেয়ে গেছেন। এবার আমাদের বাড়ি যেতে দিন। সেই দুপুর থেকে খামোখা বসিয়ে রেখেছেন।
    এসপি রেগে কাঁই!
    -- ওই মানিবাধিকার ফানবাধিকার এই চারদেয়ালের বাইরে রাস্তার মোড়ে দেখিও। শালা, এখানে কালেক্টর মালয়ালি, এসপি মালয়ালি আর ব্যাংক-ডাকাতও মালয়ালি? বাস্টার্ড!

    ব্যাংকে ফিরতে সন্ধ্যে পেরিয়ে গেল।
    এবার যে যেতে হবে বিলাসপুর।
    কিন্তু এসে গেলেন আমাদের অডিট চিফ পরমার সাব।
    -- দাঁড়া, এখানে একটা টুক করে স্ন্যাপ অডিট করেনি। ডিউ রয়েছে। ঘাবড়াস না, আমার সঙ্গে জীপে ফিরে যাবি।
    ফেরার পথে একটা ধাবায় খেয়ে দেয়ে যখন বিলাসপুর পৌঁছলাম, তখন রাত বারোটা।

    -- শোন রায়, এত রাতে বন্ধুর বাড়িতে কড়া না নেড়ে আমার এখানে চটপট শুয়ে পড়। ভোরে উঠে চা খেয়ে বাথরুম সেরে স্নান করে একেবারে হেড অফিসে চলে যাবে। ইন্টারভিউ ভালই হবে, আমি বলছি।

    ইন্টারভিউতে প্রথমেই বললাম, “আমার বিনীত নিবেদন — আমি কাল রাত অব্দি এরিয়া ম্যানেজারের রেসপন্সিবিলিটি সামলেছি, অনুমতি দিলে বিস্তারিত বলি”?
    পুরো বোর্ড বাকি ফর্ম্যালিটি ছেড়ে ডাকাতির গল্প, পুলিশের গল্প মুগ্ধ হয়ে শুনতে লাগল। তারপর স্টেটব্যাংকের এইচ আর এ এবং জনৈক ইনটারভিউ এক্সপার্ট কিছু কঠিন প্রশ্ন করলেন বটে, কিন্তু আমি টের পেলাম, হাওয়া আমার অনুকুলে।

    পুরো দলটা দু’দিনে ধরা পড়ল এবং স্বীকার করল কয়েক মাস আগে দুর্গের গ্রামীণ ব্যাংকের সফল ডাকাতিও ওদেরই কীর্তি।
    না ওরা প্রফেশনাল নয়।

    সতীশের বিয়ে ঠিক হয়েছে জনৈক সরকারি নার্স মিস নায়ারের সঙ্গে। প্রেম করে বিয়ে। সতীশ নিজের আর্থিক অবস্থা লুকিয়েছিল আর হানিমুনে সিমলা, রাণীক্ষেত ইত্যাদির প্রোগ্রাম ঠিক করেছিল। টাকা সেই জন্যে দরকার। কিন্তু দ্বিতীয় ডাকাতির এত কম টাকা ওর স্বপ্নে ঠান্ডা জল ঢেলে দেয়।
    বিয়ে ভেঙে যায়, সতীশ জেলে বসে প্রেমিকাকে বিদায় সম্ভাষণ জানিয়ে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করে।

    ( চলবে )
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ৩৪৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • হীরেন সিংহরায় | ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৩৮540520
  • চমৎকার চলছিল শেষ দৃশ‍্যটা মন খারাপের । 
     
    আরেকটা কন্টেন্ট পাওয়া গেল! ১৯৮৪ সাল নাগাদ আমেরিকার S&L ( সেভিংস এন্ড লোন ) ব্যাঙ্ক গুলির ওপরে কমার্শিয়াল লোন দেবার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। তার ফল অবশ্য ভাল হয় নি - মাইকেল মিলকেন জাংক বন্ড - মর্টগেজ ব্যাকড সিকিউরিটি ! বাকিটা ইতিহাস 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন