এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে 

    রানা সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ২৪ জুলাই ২০২৫ | ২২৫ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • “যে বাহ্য আচার মানুষে মানুষে ভেদ ঘটিয়ে প্রাচীর তুলে বেড়ায়, মানবপ্রেমকে ঈশ্বরদত্ত বুদ্ধিকে অবজ্ঞা করে শাস্ত্রের অক্ষর বাঁচাবার জন্য খুনোখুনি করতেও অগ্রসর হয়, তাকে বর্জন করে নাস্তিক অধার্মিক পদবী নিতে আমার কোনও সংকোচ নেই”, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

    গোবর দলের বিভিন্ন নেতার বাংলার প্রতি তাদের ভক্তিগদগদ প্রেম দেখে রবীন্দ্রনাথের একটি গানের কথা মনে পড়ছে –
    “একদিন যারা মেরেছিল তারে গিয়ে
    রাজার দোহাই দিয়ে
    এ যুগে তারাই জন্ম নিয়েছে আজি,
    মন্দিরে তারা এসেছে ভক্ত সাজি –
    ঘাতক সৈন্যে ডাকি
    মারো মারো ওঠে হাঁকি ……”

    একসময় যারা ব্রিটিশ রাজের পদলেহন করে সারা ভারতবর্ষ জুড়ে বাংলার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা স্বাধীনতা আন্দোলনকে সাবোতাজ করেছিলেন, বাংলার জনসম্পদ ও অর্থসম্পদ ভাগ করে বাঙালিকে ক্রমশ একটি ধ্বজভঙ্গ জাতি হয়ে উঠতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছিলেন, আজকে ওমা! তারাই এসেছেন সোনার বাংলা গড়তে! আবার তাদেরই কিছু নেতা বাঙালির বিরুদ্ধে তার সুতীব্র অসূয়া সপাটে ভাষায় ব্যাক্তও করছেন। অন্যেরা কিন্তু সেই নেতাকে কিছুই বলছেন না। 

    আর কিছু বাঙালি সেইসব দেখে ভাবছে যে সেই দল এসে নাকি তাদের মুক্তি দেবে! হায় রে বাঙালি!      

    অ্যামেরিকা থেকে কাদের যেন ডিপোর্ট করা হল? গুজরাটিদের তো নাকি?
    দেশের টাকা মেরে যারা পালিয়ে গিয়ে বিদেশে হোক্কাইডো হুকুমাকু খেলছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগ কোন রাজ্যের?

    আজ থেকে ১৫ বছর আগেও কি শ্রীমান প্যাদানি সাহেবকে কেউ চিনতেন নাকি?

    ২০১৪ সাল থেকে জ্বালানী তেল থেকে শুরু করে ভোজ্য তেল, মেডিক্যাল টেস্ট ও ওষুধের খরচ, ট্যাক্স, খাদ্যশষ্য ইত্যাদির মূল্য ঠিক কেমন হারে বেড়েছে?

    বাবু জগদীশ ধনখড় উপরাষ্ট্রপতিপদ থেকে হঠাৎ অবসর নিলেন কেন?

    কোন মন্ত্র বলে এক একজন জজ সাহেব অবসর নিয়েই রাজ্যপাল হয়ে যাচ্ছেন?

    নন পারফর্মিং অ্যাসেটে কোন কোন শিল্পপতির হিসেব কত কত আছে?

    ব্যাঙ্ক মার্জ করে আসলে ঠিক কী করা হল?

    কেন রিলায়েন্স কমিউনিকেশন লিমিটেডের অ্যাকাউন্টকে জালিয়াত অ্যাকাউন্ট হিসেবে ঘোষণায় ষ্টেট ব্যাঙ্ক বিলম্ব করছে? প্রশ্ন তুলেছেন ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও কমিটি।    

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই নোটবন্দী!

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই ভয়ানক হারে বিদেশ ভ্রমণ!

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই সংসদ ভবন নতুন তৈরি!

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই বছরে নাকি ২ কোটি চাকরি!

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই চাষিভাইদের আয় নাকি দ্বিগুণ হবে!

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই ২০২২-এ ভারতের কেউ ম্যাল নিউট্রিশনে মারা যাবে না!

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই ২০২২-এর মধ্যে নাকি সিঙ্গল ইউজ পলিথিন ব্যান করা হবে!

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই ২০২২-এর মধ্যে ৫ ট্রিলিয়ান অর্থনীতি হবে নাকি ভারতের! 

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই অগ্নিপথ স্কীম!   

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই পুলোয়ামা কান্ডের পর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে কয়েকটা কাক মেরে আসা!

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই সবার অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ!

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই রাফাল!

    হঠাৎ কোথা থেকে কিছু নেই থালা বাজাও করোনা পালাবে!

    সব জুম্লা। সব ফেক। সব ভুয়ো।  
     
    আর চকাচক ছবি সঙ্গে ফেক নিউজ, ফেক চমক আর প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি।

    আর সেই দেখে ও শুনে দেশের কিছু মানুষ, যারা ঐ আধিপত্যবাদী সাম্প্রদায়িক দুর্নীতির চূড়ামণি কেন্ত্রীয় সরকারে আসীন ঐ রাজনৈতিক দলের সমর্থক, তারা ট্যাসা নাচ নাচছে। সে কী ধুম নাচ রে ভাই! বলছে যে না খেয়ে অশিক্ষিত থেকে যদি মরেও যাই কুছ পরোয়া নেহি, কিন্তু হিন্দু হিসেবে মরে গেলে একদম ডাইরেক্ট হেভেন! ঢিংকা চিকা ঢিংকা চিকা চিকা চিকা চিকা চিকা! নাকুর নাকুর!

    এদের দেখে আমার সেই ভেড়ার পালের কথা মনে পড়ছে যারা নেকড়েকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছিল কারণ সেই নেকড়ে ভোটে জেতার আগে সেই ভেড়ার পালকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ভোটে জিতে সে নিরামিষাশী হয়ে যাবে!

    মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ধর্ণার কথা বলেছেন, সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে সহমত পোষণ করলে এই আধিপত্যবাদী সাম্প্রদায়িক দুর্নীতির চূড়ামণি কেন্ত্রীয় সরকারে আসীন ঐ রাজনৈতিক দল এবং তাদের সমস্ত সদস্য, ঝান্ডাধারী সমর্থক ও দালালদের বিরুদ্ধে সারা দেশ জুড়ে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করতে পারেন যা আমাদের দেখিয়ে দিয়ে গেছেন স্বয়ং গান্ধীজী। দেশের সমস্ত বুথ পর্যায়ে হতে পারে এই অসহযোগ আন্দোলন। আর সামনেই  তো আগস্ট।     

    একমাত্র তখনই তারা বুঝতে পারবে যে কত ধানে কত চাল আর কত চুলে কত বাল!

    সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলের কাছে আমার আবেদন রইলো।

    এদিকে ১৯৬০ সালের পর থেকেই পশ্চিমবাংলায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিক্লাইনেশন শুরু হয়। তার আগে হুগলী, হাওড়া এবং উত্তর ২৪ পরগণাতে ছিল প্রচুর জুট মিল আর দুর্গাপুর, আসানসোল, হাওড়াতে ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অন্যান্য ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর। আমাদের হুগলীতে বলা হত যে এই জেলার মানুষজনকে অন্য কোথাও যাবারই দরকার নেই। হুগলীর জমিতে উৎপন্ন ফসল আর হুগলীর কারখানায় কাজ করে দিব্যি স্বচ্ছন্দে কাটিয়ে দিতে পারত মানুষ। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে হিন্দমোটর এবং সাহাগঞ্জের ফ্যাক্টরি সহ প্রায় ১৫০-২০০টি ছোটবড় কারখানা বন্ধ হয়ে গেল এই হুগলীতেই।

    ১৯৬০-৬৫ পর্যন্তও পশ্চিমবাংলায় যে বিপুল পরিমাণ ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল গ্রোথ হয়েছিল তার ফলে সারা ভারতের সম্মিলিত ম্যানুফ্যাকচারিং আউটপুটের  একটা বৃহৎ অংশ আসত এই বাংলা থেকেই।

    নানা কারণে এই মন্দা শুরু হয়।
    ১) রাজনৈতিক কারণ
    ২) ভুল অর্থনৈতিক পলিসি
    ৩) মালিকদের বদমাইশি
    ৪) বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বাংলার দিকে ক্রমশ কম দৃষ্টি প্রদান ইত্যাদি।

    এবং যে পরিমাণ কারখানা বন্ধ হয়েছে, তার মধ্যে বেশিরভাগ হল ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট।
     
    অপরদিকে, কৃষিতে একটা বৃদ্ধি থাকলেও, কিছুটা ভুমি সংস্কার ও অপারেশন বর্গা, পঞ্চায়েত সিস্টেম চালু, ধনী কৃষক ও স্কুল মাষ্টার সম্বলিত ক্যাডার বাহিনী গঠন ইত্যাদি হলেও সেই বামফ্রন্টের আমলেই কিন্তু কৃষিতেও ধীরে ধীরে পতন ঘটতে থাকে।

    আর পশ্চিমবঙ্গ ক্রমশ পরিণত হতে থাকে ‘পার্টি সোসাইটিতে’। 
     
    এই পার্টি সোসাইটি কিন্তু ভারতের সর্বত্র খুঁজে পাওয়া যাবে।  বিশেষ করে গুজরাট, রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড় এ। আমাদের এখানে সচতনতা আছে বলে লোকে তাও সমালোচনা করেন। ওদের ওখানে তো সামন্তবাদী ব্যবস্থা পর্যন্ত বহাল রয়েছে।  
     
    ফলে সেখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। 

    আবার,  তেভাগা, তেলেঙ্গানা আন্দোলন অবধি ঠিক ছিল। কিন্তু মাফ করবেন, নকশালবাড়ি আন্দোলনে আবার কিন্তু বাঙালি কিছু তার শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারালো। যদি সেইসব আগুণখোর বিপ্লবীরা আন্দোলন না করে সেইসময় ব্যবসায় মনোনিবেশ করতেন, তাহলে আজকে বাঙালিকে অর্থের জন্য অবাঙালির কাছে হাত পাততে হত না।

    তাই আমার অনুরোধ, যদি সত্যি মানুষকে সাহায্য করতে চান, আর যদি সেই তেজ আর দম থাকে, তাহলে দয়া করে হয় কো –অপারেটিভ করে বা ব্যবসা করে মানুষকে সাহায্য করুন। আর তাহলেই কিন্তু আপনাদের স্বপ্ন জগাখিচুড়ি পাকিয়ে মন্ড হয়ে যাবে না।

    শতপুষ্প না হোক, ১০টি মেধাবী অথচ দুঃস্থ পুষ্পকে যদি আপনার খরচায় শিক্ষা দীক্ষায় সাহায্য করে বিকশিত করতে পারেন তাহলেই কিন্তু একদিন না একদিন বাংলা তথা ভারত মহান হবে। আর এই ১০টি ১০টি করেই কিন্তু অনেক পুষ্প বিকশিত হবে। আমাদের চেনা অনেকেই কিন্তু ঠিক এই কাজটি মন দিয়ে করে চলেছেন। 

    তাহলে পার্টি সোসাইটি কী?

    এই ধরণের সমাজের বিভিন্ন আনাচাকানাচে শাসকদলের দৃষ্টি ও খোঁজখবর থাকে। আপনি হাঁচলে কাশলে, কথা বললে, পাদলে, কী রঙের অন্তর্বাস পড়েছেন - তার খবরও পৌচ্ছে যায় পার্টির দলীয় কার্যালয়ে। আর আপনি যদি পার্টির কোনও কিছুর প্রতিবাদ করেন, আপনাকে ডেকে এইসব বলে চমকে দেওয়া হয় আর ঠাণ্ডা মাথায় বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে পার্টির চোখের আড়ালে আপনি কিন্তু আপনি কিছুই করতে পারবেন না; ট্যাঁ ফোঁ করতে পারবেন না।  

    সঙ্গে এইসব খোঁচরের কাজ যারা করে, তাদেরকে করে ফেলা হয় পার্টির শিক্ষানবিশি ‘হোল টাইমার-ক্যাডার’ আর তাদের স্বামী বা স্ত্রীকে জুটিয়ে দেওয়া হয় সরকারি চাকরি। প্রথমে দেওয়া হত স্থায়ী চাকরি তারপর মানুষের চেতনা বেড়ে গেলে দেওয়া হয় আংশিক সময়ের চাকরি। আর সেইসব চাকরির বলে বলিয়ান হয়ে তারা এলাকায় এলাকায় ছড়ি ঘোরান।
     
    কি? ভুল বলছি না তো?

    আর যতই কর্মসংস্থান কমতে থাকে, ততই মানুষ আরও পার্টিকে আঁকড়ে ধরতে থাকে কারণ তাকে ছেলেপুলে নিয়ে বাঁচতে হবে যে। ফলে একটা সমগ্র সিস্টেম পরিণত হয় দলদাসে।

    এই বামফ্রন্ট আমল থেকে শুরু হওয়া পার্টি সোসাইটি কিন্তু এখনও বহাল তবিয়তেই আছে।

    কারণ যোগ্যতা নিয়েও বহু মানুষ ফ্যা ফ্যা করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর অযোগ্যরা পার্টির ধামা ধরে বেশ করেকম্মে খাচ্ছেন।

    আর একদিকে ক্রমশ কমে যাচ্ছে সরকারি ও বেসরকারি কর্মসংস্থান আর অন্য দিকে চরম আধিপত্যবাদী সাম্প্রদায়িক কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে হবে।

    কীভাবে?

    আমি একটা বিষয় ভাবছিলাম। ভুলভ্রান্তি হলে শুধরে দেবেন প্লিজ।

    রাজ্যে আরও আরও কৃষি ও শিল্পে যে উন্নয়ন করতে হবে সে কথা বলাই বাহুল্য। আর এক্ষেত্রে দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে আসতে হবে। 

    সঙ্গে ধরুন ১০ কোটি বাঙালিদের মধ্যে যদি ৫০ লাখ বাঙালিকে নিয়ে একটা ‘নিউ বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স’ করা যায়?

    এখানে যারা সদস্য হবেন –

    ১) অন্তত গ্র্যাজুয়েট। কোনও অপরাধের ইতিহাস থাকবে না বা অপরাধ প্রবণতা থাকবে না। সভ্য। ভদ্র। সেকুলার। মিলেমিশে কাজ করতে পারবেন। কোনও পার্টি পলিটিক্সের সঙ্গে যাদের যোগ নেই। যারা কোনও চরম আধিপত্যবাদী সাম্প্রদায়িক মৌলবাদের সমর্থক বা সদস্য নন (হিন্দু হোক বা মুসলিম)। তারা প্রত্যেকে ১০০ টাকা দিয়ে গড়ে তুলবেন একটা সোসাইটি। প্রতিটি পরিবার থেকে এক একজন। কোনও স্বজন পোষণ এখানে চলবে না।

    ২)এর থাকবে দুটি কমিটি। একটি, ম্যানেজিং কমিটি আর অন্যটি কার্যকারি কমিটি। আর তাদের মাঝে থাকবে কো অর্ডিনেশন কমিটি।

    ৩) কো অর্ডিনেশন কমিটি ও ম্যানেজিং কমিটিতে থাকবেন ঐ ৫০ লাখ। এক্ষেত্রে পদ থাকলেও কেউ এক মাসের বেশি সেই পদ আঁকড়ে থাকবেন না। এখানে সবাই হবে রাজা তারা তাদের রাজার রাজত্বে।

    ৪) কার্যকারি কমিটি গঠনের জন্য বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে বাঙালি, সৎ, নিষ্ঠাবান এবং বাঙালি আবেগ যাঁদের মধ্যে রয়েছে তেমন কিছু রিটায়ার্ড রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসারদের, সঙ্গে নিতে হবে কিছু প্রাণচঞ্চল যুবক যুবতীদের যারা কম্পিউটার, ডেটা অ্যানালাইসিস, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, কোয়ালিটি কন্ট্রোল, অ্যাকাউন্টস ইত্যাদি করতে দারুণ পারদর্শী। বাঙালি  রিটায়ার্ড রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসার মহোদয়রা থাকবেন উপদেষ্টা রূপে। বাংলার তথা বাঙালির উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে এটি হবে তাদের স্বেচ্ছাশ্রম প্রদান।

    ৫)কাজটা কী হবে? রাজ্যে যত ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট আছে, যাদের আছে এক্সপোর্ট লাইসেন্স, তাদের সমস্ত প্রোডাক্ট ধরে ধরে তার ডকুমেন্টেশন তৈরি করে করে ইয়োরোপ, অ্যামেরিকা, জাপান, ক্যানাডা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, দুবাই প্রভৃতি জায়গায় বসবাসকারী বাঙালিদের পাঠিয়ে সেখানকার প্রয়োজন অনুযায়ী অর্ডার তোলা আর রাজ্য থেকে সেগুলো সুষ্ঠুভাবে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া। এক্ষেত্রে আগ্রো বেইসড আইটেমের ওপর গুরুত্ব বেশি দিতে হবে।      

    ৬) এই বাবদ ম্যানুফ্যাকচারিং সংস্থা থেকে কিছু লভ্যাংশ এবং বিদেশের বাঙালি বা তাদের কোম্পানি থেকে কিছু লভ্যাংশ আদায় করে নিজেদের মাইনে আর ঐ ৫০ লাখ বাঙালিকে ডিভিডেন্ড প্রদান করা হবে।

    ৭) কাজ হবে তিন শিফটে। ৮ ঘন্টা করে। মনে আছে? মে দিবস? আর ৫০ লাখ শিক্ষিত যুবক নিজেরাও এখানে কাজ করতে পারবেন। রাজ্যের নানা প্রান্তে গিয়ে গিয়ে হস্ত শিল্প হোক বা যন্ত্রজাত সামগ্রী – সেগুলো নিয়ে আসা। পাহারা দেওয়া। সেগুলোকে প্যাক করা, বন্দরে পাঠানো, আর সঙ্গে বাংলার শিল্প চর্চা করা। বাংলার সাহিত্য, গান, কবিতা, নাটক ইত্যাদি।
             
    ৮) এখানে কোনও অবাঙালি বা তার কোনও প্রোডাক্ট নেওয়া হবে না। কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা পার্টীর খবরদারি মানা হবে না।

    ৯) কো অর্ডিনেটিং কমিটি ও ম্যানেজিং কমিটি কাজ করবে তিন শিফটে। আর কার্যকারি কমিটি জেনারেল শিফটে।
     
    ১০) কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে যে কাউকে তৃস্তরীয় নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরোতে হবে।

    ১১) ক্যাশ ও ব্যাঙ্কের দায়িত্ব দেওয়া হবে তাদেরকেই যাদের মধ্যে অর্থনির্লিপ্তি আছে। যারা মনে করেন টাকা মাটি মাটি টাকা।

    ১২) আর রাজ্য সরকার যদি সাহায্য করেন তাহলে কেয়াবাৎ।     

    ১৩) তবে হ্যাঁ, এই প্রকল্পের সফলতা কিন্তু নির্ভর করছে বিদেশে বসবাসকারী বাঙালিদের ওপর। হ্যাঁ। তাদের সক্রিয় সাহায্য ও সহযোগিতা ছাড়া এটি সফল হবে না। সেখানেও বাঙালিদের নিয়ে গড়ে তুলতে হবে গিল্ড যারা একমাত্র আমাদের রাজ্য থেকেই সমস্ত সামগ্রী সেই সেই দেশের আইন মোতাবেক আমদানি করবেন এবং সেখানে বিক্রি করবেন।

    রাজ্যের বাঙালির সঙ্গে বিদেশে বসবাসকারী বাঙালির সেতু বন্ধনের কাজটা করলেই আবার সম্বৃদ্ধি ঘটবে বাংলার অর্থনীতির।               

    সংখ্যাটা ৫০ লাখের জায়গায় কম বা বেশিও হতে পারে।

    এতে যেমন একদিকে বাঙালির আর্থিক সম্বৃদ্ধি হবে, আরও ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট তৈরি হবে, কর্ম সংস্থান হবে, অপরদিকে সমাজে পার্টি সোসাইটির দাপট কমতে থাকবে, তেমনি চরম আধিপত্যবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা যাবে। সঙ্গে বেঁচে থাকবে বাংলা সাহিত্য, শিল্প, কৃষ্টি।

    সবাই সেখানে উচ্চস্বরে গান গেয়ে উঠতে পারবে – “আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে। নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্তে? …… আমরা নই বাঁধা নই দাসের রাজার ত্রাসের রাজত্বে।নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্তে? আমরা সবাই রাজা”।

     
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ২৪ জুলাই ২০২৫ | ২২৫ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    কবিতা  - Suvankar Gain
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • MP | 2401:4900:3141:2260:62ef:e903:e7ac:***:*** | ২৫ জুলাই ২০২৫ ০৭:২৫732683
  • খুব ভালো প্রস্তাব l আরো লিখুন এই নিয়ে l বাঙালীর দলমতধর্ম নির্বিশেষে চেতনা গড়ে তুলে আনা দরকার l  
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন