এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • কেন লিখছি 

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ১৬ জুলাই ২০২৫ | ১৬৩ বার পঠিত
  • অনেকেই বলেন, আমি এত লিখি কেন এখন। বিশেষ করে এই সমস্ত বিপজ্জনক জিনিস নিয়ে লোফালুফি কেন, তাও আবার স্রোতের পুরো উল্টোদিকে। দুপয়সা তো লাভ হয়না। উল্টে গালাগাল খাই বিস্তর। এর চেয়ে চারদিক বাঁচিয়ে খেললে হতনা? সামনে দেখা যেত স্বর্গে চড়ার সিঁড়ি? 

    তো, এর একটা উত্তর হল বেশ করি। কষ্টিপাথরহীন জীবন কোনো জীবনই নয়। কিন্তু তার চেয়েও একটা বড় কারণ আছে, সেটা হল দেশভাগ। দেশভাগের ইতিহাস যত পড়েছি, তত চমকে চমকে উঠেছি, ভদ্রসমাজের কাণ্ড দেখে। দেশভাগের ইতিহাস বলছে, যথেষ্ট গৌরবোজ্জ্বল অতীতের পরেও  বিশেষ বিশেষ সময় বঙ্গীয় ভদ্রলোকরা চোক করে গিয়ে নেহাৎই আকাটের মতো আচরণ করেন। শুধু আকাট হলে সমস্যা ছিলনা, ভয়ঙ্কর বিপজ্জনকও হয়ে উঠেন, ডিলিউশনের রোগি অনেকসময় যেমন নিজের জন্য নিজেই একটা বড় বিপদ, সেইরকমই। 

    তা, বাংলায় এরকম একটা সন্ধিক্ষণ আসছে, সে নেহাৎই আকাট না হলে সবারই টের পাবার কথা। টের পাবার কথা, যে, ভদ্রজন আবার চোক করছেন। দেশভাগের সময়ের সঙ্গে এই সময়টার অদ্ভুত মিল। তখন পরাধীন দেশের শাসক ছিলেন সোহরাবর্দী। বলা হত প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু আসলে সীমিত ক্ষমতার প্রাদেশিক শাসক। তিনি নিঃসন্দেহে ছিলেন শাসক হিসেবে অযোগ্য, এবং খানিক সাম্প্রদায়িক দোষে দুষ্ট। তাঁর উপরে ভদ্রলোকরা ভয়াবহ ক্ষিপ্ত ছিলেন। তাঁর যিনি পূর্বসুরী, সেই নাজিমুদ্দিন সম্পর্কে তো শিবরাম মজা করে লিখেছিলেন, নামটা আসলে নাৎসিমুদ্দিন। 

    এঁর আমলে কয়েকটা বড় দাঙ্গা হয় বাংলায়। দুখানার কথা এখন সবাই বলে, কলকাতা আর নোয়াখালি। দাঙ্গায় সোহরাবর্দীর একার দায় ছিল তা নয়, কিন্তু ঠেকানোতে তিনি যে অপদার্থতা দেখিয়েছিলেন, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। অপদার্থতাই, কারণ একতরফা কিছু হয়নি। প্যাটেল বলেছিলেন, কলকাতায় আমরা জিতেছি। আমরা, মানে হিন্দুরা। আর নোয়াখালিতে, বলেননি, কিন্তু নির্ঘাত ভেবেছিলেন, যে পরাস্ত হয়েছেন। 

    তা, এইসব নিয়ে ভদ্রলোকরা ক্ষেপে গিয়েছেন। যাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু ক্ষেপে যেটা করলেন, সেটা অস্বাভাবিক তো বটেই, ভয়াবহ। দুহাত তুলে তাঁরা নাচতে শুরু করলেন, দেশভাগ চাই বলে। পাকিস্তান দাবীটা মুসলিম লিগের হলেও, মুসলমানরা অতটা নাচেনি, নিচের তলার হিন্দুরা তো নয়ই। এবং পূর্ববাংলার ভদ্রলোকেরা অবধি বলতে লাগলেন, হোক-হোক-ভাগ-হোক। কী ভেবেছিলেন জানিনা, মুসলমানদের আলাদা দেশ হবে, আর সেখানে তাঁরা জমিদারি চালিয়ে যাবেন?  কেউ জানেনা। এই তাথৈ নৃত্যে সঙ্গে জুটল সংবাদমাধ্যম। তাদের নেতৃত্বে, কে আবার, আনন্দবাজার। একটা সমীক্ষা বেরিয়ে গেল ৯৭% শতাংশ হিন্দু দেশভাগ চায়। কীভাবে সমীক্ষা হল, কেউ জানেনা। শিল্পপতিদের অবশ্য স্বার্থ ছিল। স্বনামধন্য বিড়লা, যিনি সুভাষকে তাড়ানোর অন্যতম মুখ্য কারিগর, দেশভাগের উপকারিতা নিয়ে একখানা বইই লিখে ফেললেন, দেশভাগের ফলে কীরকম সুজলা-সুফলা-শস্যশ্যামলা হয়ে উঠবে ভারত, তার বর্ণনা দিয়ে। আসল ধান্দাটা ছিল ইস্পাহানির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এড়িয়ে ভারতে একচেটিয়া কায়েম করা। টাটা-বাজাজদের সঙ্গে মিলে সেটা পেয়েওছিলেন, প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা থেকে। 

    আনন্দবাজার বা বিড়লার উৎসাহ বোঝা যায়, কিন্তু ভদ্রলোকেরা কেন জ্বলন্ত উনুনে ঝাঁপ দিতে চেয়েছিলেন, কেউ জানেনা। কদিন আগেই নৌবিদ্রোহ হয়েছে, আজাদ-হিন্দ ফৌজের বিচার হয়েছে, তখন তাঁরা রাস্তায় নেমেছিলেন, হঠাৎই এক সকালে তাঁরাঅ বোধবুদ্ধি হারিয়ে ফেললেন। সোহরাবর্দীর আমলে হাল্কা সাম্প্রদায়িকতা ছিল, সেটা তিনি দূর করবেনও বলেছিলেন, দুখানা দাঙ্গা হয়েছিল, কিন্তু মোটের উপর পূর্ব এবং পশ্চিমবঙ্গে শান্তি ছিল। আর দেশভাগের পর যা হল, তা হল কোটিখানেক উদ্বাস্তুর স্রোত। সে এক নরক। কেউ কোনো দায়িত্ব নিলনা। ভারত সরকার হাত ঝেড়ে ফেলল, শ্যামাপ্রসাদ কাশ্মীর বেড়াতে চলে গেলেন। ভদ্রলোকেরা হাত কামড়াতে শুরু করলেন। কিন্তু পাপ যা করার তা তো আগেই হয়ে গেছে। 

    পাপ তো শুধু এইটুকু না। এই নরককাণ্ডের  উল্টোদিকে শেষপর্যন্ত একজন অটল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, শরৎ বসু। তিনি বাংলা ভাগ হতে দিতে চাননি। কিরণশঙ্কর রায় বা সোহরাবর্দীও তাঁর পক্ষেই ছিলেন গোড়ায়, একে একে সরে দাঁড়ান। বঙ্গীয় ভদ্রলোকেরা শুধু দেশভাগ চাই বলে লাফিয়েছিলেন তা নয়, এই মানুষটি যাতে অপদস্থ লাঞ্ছিত হয়ে নিঃশব্দে পৃথিবী থেকেই সরে যান, তার সুবন্দোবস্তো করেছিলেন। প্রথমে গান্ধিজি বললেন, বাংলা ভাগ আটকানোয় টাকার খেলা চলছে। গোটা কংগ্রেস তাঁর পিছনে লাগল। সরে গেল ফরোয়ার্ড ব্লক। সবাই তখন আনন্দবাজার আর বিড়লার তৈরি গণ-উন্মাদনায় জুটেছে। স্রোতের উল্টোদিকে যাবার সাহস কারো নেই। উল্টোদিকে শরৎ বসু চেয়েছিলেন গণভোট। তিনি মোটের উপর নিশ্চিত ছিলেন, যে, ভদ্রলোকীয় এই উন্মাদনা নেহাৎই ফানুস। গণভোট হলেই ফুস করে উড়ে যাবে। কিন্তু সেটা হয়নি। হতে দেওয়া হয়নি। ভোট হয়েছিল কেবলমাত্র বড়লোক এবং ভদ্রলোক-নির্বাচিত বিধানসভায়।  এবং এই পুরো এপিসোডে শরৎ বসুর পাশে কেউ দাঁড়াননি। একজনও না। ভদ্রলোকীয় গণ-উন্মাদনার বিরুদ্ধে যাবার মতো বুকের পাটা কারো ছিলনা। বাঙালির জাতীয় নায়ক হবার কথা ছিল যাঁর, সেই শরৎ বসু নিঃশব্দে পৃথিবী থেকেই বিদায় নেন। শিরদাঁড়া কথাটা তখন চালু হয়নি, নইলে নির্ঘাত বলা হত, দেশভাগের পক্ষে বলাটাই শিরদাঁড়া।

    এবং এখানেই তো শেষ না। দুই পারেই দেশভাগের কী ফল হয়েছিল সবাই জানে। একটা উন্নত জাতিকে বস্তুত পঞ্চাশ বছর পিছিয়ে দেওয়া হয় ওই এক ধাক্কায়। ভদ্রলোক এবং তাঁদের পার্টিরা এই অপকম্মোটি করেছিল। তারা নিশ্চিত করে দেয়, যে, এই পাপকর্মের কথাটা যেন চাপা থাকে। লক্ষ্য করে দেখবেন, ওই সময়টায় যাঁরা বেঁচেছেন, ধরুন সত্যজিৎ রায় , ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার, হয় এই বীভৎসতা নিয়ে চুপ থেকেছেন, নয়তো স্রেফ নস্টালজিয়ার অশ্রুজল ঝরিয়েছেন, কার্যকারণে ঢোকেননি। এইটা দেশভাগের মতোই পাপ। কারণ ইতিহাস লেখা না হলে, তা থেকে শিক্ষা নেওয়াও যায়না। সেই কারণেই কিছুদিন পরে চালু হল অনুপ্রবেশ নামক একটা কথা। ইতিহাসবোধ থাকলে এই অশ্লীল কথাটা অন্তত বাঙালি তার মুখে উচ্চারণ করতে পারতনা। এবং তার পরে আস্তে আস্তে চলে এল কার্যত বাঙালি তাড়াও। ইতিহাসবোধ থাকলে, এটাও এতদূর গড়াতনা। 

    কিন্তু কথা হচ্ছিল লিখছি কেন। কারণ, ইতিহাসবোধহীন এই ভদ্রসমাজ আরেকটি প্রলয়কাণ্ড ঘটানোর ঠিক মুখে দাঁড়িয়েছিলেন। বর্তমান শাসক কি পাপকর্ম করছেনা? একশবার করছে। কিন্তু গোদি মিডিয়া যে ঢেউ তুলছে, সেটা প্রলয়ের। বাঙালিকে কোণঠাসা করে একদম মেরে ফেলার। তাদের হাতে পুতুল হয়ে নাচার কোনো কারণ নেই। নেহাৎই আকাট না হলে, এটা না বোঝার কোনো কারণ নেই, কিন্তু ভদ্রলোকেরা আবার যথাসময়ে চোক করেছেন। 

    কপালজোরে অবশ্য এখন সার্বজ্নীন ভোটাধিকার আছে। আর আছে সমাজমাধ্যম। ফলে আজ থেকে কয়েকবছর আগেই সিদ্ধান্ত নিই, পৃথিবীর সব লোক উল্টো দিকে চলে গেলে যাক, স্রেফ ভেড়ার পালে মিশে যাওয়া যাবেনা। বছর আশি আগে শরৎ বসু একা হয়ে গিয়েছিলেন, আমার রিডিং, বড় বেশি মিনমিন করেছিলেন বলে। গান্ধি, নেহরু কারো উপর ভরসা না করে জোরে কথা বললেই সঙ্গে কিছু লোক জুটত। ফলে, ইতিহাস থেকে যদি শিক্ষা নিতে হয়, এই যুগসন্ধিক্ষণে আওয়াজ তুলতেই হবে। এবং সেটা জোরে সোরে। কে সঙ্গে থাকব, কতজনকে পাশে পাব, কে আঘাত পাবে, এসব কেয়ার না করে। কতজন শুনবেন জানিনা, কিন্তু বলিনি বলে পাঁচ বছর পরে হাত অন্তত কামড়াতে হবেনা। এইজন্যই লিখি। লিখছি। লিখব। বহু কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্য লেখা, পড়া, সিনেমা দেখা। তবু লিখব, কারণ না লিখে উপায় নেই। না লিখলে মনে হবে, অপরাধ করছি।   
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৬ জুলাই ২০২৫ | ১৬৩ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    কবিতা - Suvankar Gain
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অরিন | 115.189.***.*** | ১৬ জুলাই ২০২৫ ০৯:১৪732437
  • "অনেকেই বলেন, আমি এত লিখি কেন এখন। বিশেষ করে এই সমস্ত বিপজ্জনক জিনিস নিয়ে লোফালুফি কেন, তাও আবার স্রোতের পুরো উল্টোদিকে। দুপয়সা তো লাভ হয়না।"
     
    যারা আপনাকে এই প্রশ্ন করেন, তাঁরা কি আপনার লেখার উদ্দিষ্ট পাঠক বা শ্রোতা? আমার মনে হয় না, কারণ এঁরা আজকে কি ভাবছেন তাই দিয়ে আগানীদিনের ঘটনাবলি নির্ধারিত হবে বলে মন্ হয় না; অন‍্যদিকে আপনি প্রতিনিয়ত বাংলার‍ জনজীবনে ঘটমান বর্তমানকে লিপিবদ্ধ এবং ভিডিওবদ্ধ করে রাখছেন, এর গুরুত্ব অপরিসীম এবং একে আজকে এই সঙ্কটের মুখেও দাঁড়িয়ে যারা প্রশ্ন করছেন তাদর উত্তর দেবার আপনার নেই। 
     
    আমার মনে হয় আজকে তামাম উত্তর ভারত এবং অন‍্যান‍্য কিছু রাজ‍্যে আমাদের বাঙালী ভাইবোনদের ওপর যে আঘাত হচ্ছে, আমরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকে আমাদের স্পর্শ করা উচিৎ এবং ধর্ম, সামাজিক অবস্থান বা রাজনীতি নির্বিশেষে আমাদের এক হয়ে শুধু এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নয়, একে প্রতিরোধ করা আশু কর্তব‍্য। আপনি শুধু সূত্রধর নন, আপনার এবং আপনার সূত্রে তামাম গুরুচণ্ডালীর এতে একটা বিশাল ভূমিকা রয়েছে। 
    কাজেই আপনার কলম এবং কণ্ঠ আরো জোরালো হোক। 
     
  • Ranjan Roy | ১৬ জুলাই ২০২৫ ১২:৩৯732441
  • এতদিন হয়নি তো। ৭৮ বছর পরে হচ্ছে। একটা ছোট দল তাণ্ডব নাচছে।
    অবিভক্ত বাংলা হলে কী হত সেটা জ্যোতিষীই বলতে পারে।
    বিভক্ত বাংলা হওয়ায় যা হয়েছে তার সঙ্গে এই ঘটনার তুলনা? 
  • দীপ | 2402:3a80:1989:ba29:578:5634:1232:***:*** | ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৩:১৬732443
  •  
    "অধ্যাপক আবদুল বারকাত ‘বাংলাদেশে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক এক গবেষণায় বলেছেন-১৯৬৪ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৫ দশকে মোট ১ কোটি ১৩ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি বছর গড়ে ২ লাখ ৩০ হাজার ৬১২ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ নিরুদ্দিষ্ট বা দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। আর প্রতিদিন দেশ ছেড়েছেন গড়ে ৬৩২ জন হিন্দু। এই নিরুদ্দেশ প্রক্রিয়ার প্রবণতা বজায় থাকলে আগামী দু’তিন দশক পরে এদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী কোনও মানুষ আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।"
     
    মাতব্বর অবশ্য কিছুই বোঝেনা!
    নিজেরা পূর্ববঙ্গ থেকে কুকুরের মতো দৌড়ে এখন অন্যকে জ্ঞান দিচ্ছেন!
     
     
  • অরিন | 2404:4404:4405:700:e461:9c9a:4981:***:*** | ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৪:২১732446
  • "নিজেরা পূর্ববঙ্গ থেকে কুকুরের মতো দৌড়ে এখন অন্যকে জ্ঞান দিচ্ছেন!"
     
    দীপ, আমার মনে হয় আপনার এই কথাটা unprovoked, এবং এই discourse এ আপত্তিকর এবং অসংবেদনশীল মানসিকতার সাক্ষ্য বহন করে। 
     
    দেশভাগের সময় ও  তার পর বাংলায় বহু মানুষ সম্পূর্ণ অহেতুকভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে দেশ থেকে দেশান্তরী হয়েছেন  তারা কেউ স্ব ইচ্ছেয় নিজেদের ভিটে মাটি ত্যাগ করেননি। আপনি নিজেই (অন্য কনটেকসটে)  উদ্ধৃতি দিয়েছেন যে কত মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।  এঁরা কিন্তু কেউ পশুর সমগোত্রীয় নন! এঁদের এভাবে অভিহিত করা অসমীচিন। 
     
    বাংলা অবিভক্ত অবস্থায় স্বাধীন ভারতে থাকলে কী হত তার counterfactual কী হত কারোর পক্ষে জানা সম্ভব নয়, আমরা দুটো বিভাজিত বাংলায় কি দেখেছি তাই নিয়ে আলোচনা করতে পারি। 
     
    দেশভাগের এতদিন পরে আজ ২০২৫ এ সাধারণ মানুষের কেবল বাংলা ভাষায় কথা বলা এবং বাঙালী পরিচয়ের কারণে যে হেনস্থা হচ্ছে সে বিষয়টি মর্মান্তিক এবং অবাঞ্ছনীয়, এর প্রতিবাদ করাই উচিত, মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোই এখন কর্তব্য, এখন জাত ধর্ম প্রভৃতি বিচার করার সময় নয়। দলমতধর্মনির্বিশেষে আজও যদি আমরা "মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে" না পারি এবং এঁড়ে তর্ক করি, তাহলে সত্যি কিছু বলার থাকে না। 
     
    আমি আশা করব আপনি এই অসংযত বাক্য ব্যবহার করার জন্য দু:খ প্রকাশ করবেন। 
     
  • দীপ | 2402:3a80:198b:4a02:678:5634:1232:***:*** | ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৪:৩৩732447
  • দিনের পর দিন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত হয়েছেন, এক কোটিরও বেশি মানুষ পালিয়ে এসেছেন! 
    এই বিষয় তথ্যনিষ্ঠভাবে আলোচনা করেছি। তখন দিনের পর দিন নামে-বেনামে আমাকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে!
     
    এখন আবার সবাই মানুষের দুঃখে কেঁদে মরে যাচ্ছেন!
  • দীপ | 2402:3a80:198b:bae0:678:5634:1232:***:*** | ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৪:৪৪732448
  • "১০ মার্চ ২০২৪ ০১:২৪742517
    দীপ, বাংলাদেশ একটি open population, কাজেই তুলনামূলক জনসংখ্যা বিভিন্ন কারণেই বাড়তে পারে, মানুষ দেশান্তরী হন, মৃত্যুহার কমবেশী হয়, প্রজননের তারতম্য। কাজেই অনুপাত থেকে তো এই সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব নয় ঠিক কি কারণে এই তারতম্য ঘটেছে। "
     
    এই লেখাটা মনে আছে মহাপ্রভু? 
    তখন আপনি আমায় জ্ঞান দিতে ছুটে এসেছিলেন! এখন আবার দুঃখে কেঁদে ভাসাচ্ছেন!
  • দীপ | 2402:3a80:1989:92cb:578:5634:1232:***:*** | ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৪:৫৪732449
  • "@দীপ, বাংলাদেশে হিন্দুদের পরিস্থিতি আর গাজার সামগ্রিক পরিস্থিতি একেবারেই এক রকম নয়  | 
     
    আপনি বাংলাদেশের জনসংখ্যার ডাটা দিয়েছেন, তার তুলনামূলক ১৯৫১, ১৯৬১, ..., ২০২১ সাল পর্যন্ত মুসলমান আর হিন্দুদের জনসংখ্যা ও জনসংখ্যায় অনুপাত দেখিয়েছেন যে, যে হারে বাংলাদেশে মুসলমানদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, তার থেকে কম হারে হিন্দুদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে গত কয়েক দশকের নিরিখে হিন্দুদের অনুপাত ২২% (১৯৫১ থেকে), ৯% কিছু বেশীকম (২০২১) হয়েছে। এই দেখিয়ে আপনি বলতে চাইছেন যে এর একমাত্র কারণ, বাংলাদেশে মুসলমানরা হিন্দুদের ওপর অত্যাচার করে তাদের হত্যা করে, দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের জনসংখ্যার অনুপাতে হ্রাস ঘটিয়েছে। 
     
    এটা ঠিক কি ভুল, তার প্রমাণ জনসংখ্যার অনুপাত দেখিয়ে করা যায় না। "
     
    এটাও আপনার লেখা! মনে আছে মহাপ্রভু?
  • অরিন | 2404:4404:4405:700:e461:9c9a:4981:***:*** | ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৪:৫৬732450
  • "তখন দিনের পর দিন নামে-বেনামে আমাকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে!"
     
    কবে কি হয়েছিল তার সঙ্গে এই থ্রেডের কি সম্পর্ক? 
    আপনি কি দেখাতে পারবেন যার কমেন্টের উত্তরে আপনি কথাটা লিখলেন তিনি আপনাকে কখনো কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেছেন বা কটুবাক্য লিখেছেন? 
  • দীপ | 2402:3a80:198d:463c:778:5634:1232:***:*** | ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৫:৫৭732452
  • "এতদিন হয়নি তো। ৭৮ বছর পরে হচ্ছে। একটা ছোট দল তাণ্ডব নাচছে।"
     
    সেজন্যই তো আপনারা কুত্তার মতো ল্যাজ গুটিয়ে পালিয়েছিলেন! 
    কতোটা নির্লজ্জ মিথ্যাবাদী হলে এসব লেখা যায়!
     
    পুনশ্চ: কুকুরের অপমান করার জন্য আন্তরিক দুঃখিত। রাস্তার কুকুর কোনোদিন বে‌ইমানি করেনা!
  • পলাশী সাতচল্লিশ এগারো | 103.77.***.*** | ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৭:১৮732456
  • পশ্চিমবঙ্গের ভদ্রলোক এগারোতে যে ভুল করেছে তার থেকে এবার অন্তত চোখ খুলে বেরিয়ে আসুক। সেই সময়ের শাসক পাপ একশবার করেছে, কিন্তু পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে বাংলার শত্রুরা ক্ষমতায় এসেছে মুখোশ পড়ে। ভদ্রলোক বাঙালির খুব ছোট অংশ বাদ দিলে সবটাই দক্ষিণপন্থী হওয়ার ফলে তারা বিরাট ভুলটি করে। বিজেপি আরএসএস তৃণমূলের মধ্যে দিয়ে বাংলা বিরোধী শক্তি আজ গোটা পশ্চিমবঙ্গ নিজেদের করতলগত করে ফেলেছে। বাণিজ্য প্রশাসন থেকে ফুটপাত সব জায়গায় বঙ্গ বিরোধী "হিন্দুত্ববাদী" অবাঙালি একটা গোষ্ঠীকে পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে স্থাপন করা হয়েছে। চলছে হিন্দুত্ববাদী ধর্মীয় আচার পুজো দেবতার ও সংস্কৃতির প্রচলন, জোর করে আমিষ বন্ধ করা। বাংলার বাজার নদী ঘাট মন্দির জমি খনি জল বহিরাগতদের হাতে পরিকল্পিত ভাবে তুলে দেওয়া হচ্ছে। আর চাপানো হচ্ছে হিন্দি, এমনকি রাজ্যের নামও হিন্দি ভাষায় পশ্চিম বঙ্গাল করে লেখা হচ্ছে, বাংলা বললেই বাংলাদেশি। ভণ্ড মমতা মানুষকে ভোলাতে এখন নাটক করছে। হয়তো আর. জি. কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার থেকে পরপর ঘটনায় আজ ভদ্রলোকের মমতা প্রীতি পড়তির দিকে, হয়তো চোখ খুলেছে, কিন্তু বড় ভরসার জায়গা পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ। সতর্ক হতে হবে সুসি ও নকশালের একটা অংশে সমৃদ্ধ "লাল-তৃণমূলের" থেকেও, তারা সব দুনাম্বারি লোক।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন