এটা কেন বলছি শুনুন আর মিলিয়ে নিন। আপনি বাজারে গেছেন মুদী খানার চাল ডাল আনতে...।
দোকানদার আপনার বিশেষ পরিচিত।
সে আপনাকে যেতেই প্রশ্ন করবে: কী দাদা আজ ছুটি?
আপনি উত্তরে বলবেন: না, এরপর বেরোবো।
তখন পাল্টা উত্তর দেবে মুদিখানা র লোকটি: আপনাদের যাওয়া আর না যাওয়া সবই সমান, না গেলেও তো পয়সা টা পেয়েই যাবেন।
*ভাবুন কী চিন্তা ধারা।*
তাই বলি সরকারি কর্মচারি দের কেউই সেভাবে সহজ করে নিতে পারেনা।
আবার কোনো সরকারি কর্মী কর্মরত অবস্থায় যদি মারা যান, আর কোনো ব্যক্তি যদি ভুলে বলেও ফেলে আহারে অকালে চলে গেলো!!!
তখন পরিচিত আত্মীয় পরিজন প্রতিবেশী নিজেদের মধ্যে বলাবলি করবে, তাতে কী হয়েছে? চাকরী টা ওনার ছেলে বা স্ত্রী ঠিক পেয়ে যাবেI
তারমানে শোকহীন মৃত্যু হয় প্রতিটি সরকারি কর্মীর।
আরো একটা প্রমাণ দিচ্ছি, কোনো অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মীর মৃত্যুর পর কেউ কিঞ্চিৎ চোখের জল ফেলে বলেনা, আ..হা!
কীবলে?????
আরে বউ জীবিত থাকবে যতদিন, পেনসন তো পাবেই। চিন্তা করে কী লাভ ওর জন্য।
কথাটা অনেকটা এমন শোনায়, ব্যাটা মরেছে মরুক ওর পেনসন তো জীবিত; যদি ও অর্ধেক। ওই বাকি অর্ধেক অংশ টুকুর জন্য যা চোখের জল পড়ে বা কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে, মৃত দেহের সামনে তারচেয়ে অনেক কম জল পড়ে চোখ থেকে।
তাই সরকারি কর্মী রা হলেন সবচেয়ে নিকৃষ্ট, লোকের চোখের বিষ। যারা সরকারি চাকরি পাননি তারা বুকে হাত দিয়ে এভাবেই ভাবেন না, এটা যদি বলেন তবে ডাঁহা মিথ্যে। হাজার উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি ভালো মোটা অঙ্কের মাইনার চাকরি ছেড়ে দিতেও দ্বিধা করেনা, একটা কম মাইনার সরকারি চাকরি পেলেও।
তাই যারা পায়না, সরকারি চাকরি তাদের কাছে হয়ে ওঠে কাঁটার মত, কর্মী দের সর্বক্ষণ গালি গালাজ করতে থাকেন। কাজ করেনা, বসে বসে মাইনা পায় সব ইত্যাদি, ইত্যাদি।
কর্মী দের যখন ভোটের ডিউটি কিংবা জন গণনা পড়ে তখন ও বাকি মানুষেরা চুপিসাড়ে হাত তালি দেয়। মনে মনে বলে, বেশ হয়েছে বোঝ তোরা এবার সরকারি চাকরীর জ্বালা, মর কয়েক টা, তাহলে হাড় জুড়োয়। সরকারি কর্মিরা যেন ছোট্ট শিশুর মা নয়, কারোর বাবা নয়, কারোর স্বামী নয়, কারোর স্ত্রী নয়। সমাজের বুকে এরা নিশ্চিন্ত চাকরির যৎসামাণ্য মাইনা নিয়ে দিন যাপন করতে এসেছে। এদের বিপদে, দুঃখে কিছু মানুষের আজীবনের মজা।
তারা টিচারদের উদ্দেশ্যে বলে ওঠে, যার কিছু হয়না সে টিচার হয়। আচ্ছা বাবা তোমাদের কে হতে মানা করেছে? তারও উত্তর একদম রেডি, দরকার নেই আমাদের অত কম মাইনার চাকরি করে...
*"আঙুর ফল টক"।*
যাই হোক এই আলোচনা থেকে বোঝা গেলো সরকারি কর্মী রা হলেন সমাজের বুকে এক তাচ্ছিল্যে, ব্যঙ্গ করার মত জীব। যাঁদের অবহেলায় না আছে প্রতিবাদ, না আছে তার ভাষা জানা। তাই নিচু তলা থেকে উচ্চ সবার চিন্তা ধারাই এক। কেউ সাহসের সাথে কথা ফোসকে চলকে ফেলে, কেউ মনে মনে করে।
তাই আজ থেকে সরকারি কর্মীদের বলি: আপনারা সংখ্যায় কম, কেউ অপমান করলে, কেউ নিশ্চিন্তের চাকরি, আসি যাই মাইনা পাই, এধরনের মন্তব্য করলে হেসে উড়িয়ে দেবেন না...
একটাই উত্তর দেবেন: "সবই কর্মফল", দেখবেন পাল্টা উত্তর আর পাবেন না।
ছোট গন্ডি থেকে প্র্যাকটিস করুন শিড়দাঁরার ফিজিওথেরাপি করার, তারপর না হয় মানহানী, কালোব্যাচ, মৌন ব্রত এসব ভাববেন।