এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • টুকরো টুকরো ছবি জুড়ে ফুটে ওঠে জীবনের চালচিত্র।

    Luna Mitra লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৩ জুলাই ২০২৫ | ৩০ বার পঠিত
  • রান্নাঘরে পিঁড়ি পেতে আমরা খেতে বসতাম। রান্নাঘরের সোঁদা মেঝে, পিছনের বাগান থেকে ভেসে আসা  নাম না জানা গাছের বুনো একটু কটু গন্ধ। কেমন যেন আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখত।
    দিদার (আমরা অবিশ্যি দিদিমা বলতাম) হাতের পাতলা মুসুর ডাল, মুচমুচে পোস্তর বড়া, শাক। ডাঁটার চচ্চড়ি। নানান রকম ভাজা আর কোন একটা মাছের ঝাল। আর অবশ্যই টক তো থাকতই। সেই সমস্ত অতি সাধারণ খাবারের কি যে অতুলনীয় স্বাদ ছিল!!
    আমরা গরমের ছুটিতেই একমাসের জন্যে মামাবাড়ী যেতাম। কারণ ওখানের আম লিচু কাঁঠালের প্রাচুর্য। বাড়ির গাছে অত অত আম থাকা স্বত্বেও দাদু এবং মামা রাস্তায় যত আমওয়ালাকে দেখত সব কে বাড়ি পানে পাঠিয়ে দিত। সেইসব আম ঘরে ঘরে খাটের তলায় বিছোনো থাকত। সারা বাড়ি আমের গন্ধে ম ম করত! মায়ের কাজ ছিল দুবেলা খাওয়ার সময় এক গামলা জল নিয়ে বসে, বটি তে করে আম কেটে কেটে সবাই কে দেওয়া।
    আমার মামিমার মা, বড় আর মেজ দুই দাদা
    তাঁদের পরিবার সহ ওই গলির মুখের প্রথম বাড়িতে থাকতেন। সে এক জমজমাট বাড়ি ছিল। ওই দিদিমা বেশ রাশভারী,  কিন্তু ভারী স্নেহময়ী ছিলেন। ওনার ফোকলা মুখের খাস ঢাকাই ভাষা বুঝতে সেই বয়সে একটু অসুবিধা হত। কিন্তু ওনার স্নেহ টুকু বুঝতে একটুও অসুবিধা হত না।
    আমাদের জন্যে ওই বয়সেও কত যে মোয়া মুড়কি নাড়ু তক্তি  বানিয়ে রাখতেন! ও বাড়িতে গেলেই দুহাত ভরে সেই সব তিলের নাড়ু , চিড়ের মোয়া, মুড়ির মোয়া,     নারকোলের মুড়কি দিতেন। 
    মামিমা কাছে শুনেছিলাম, উনি খুব একটা পুজো পাঠ এই সবে জড়িয়ে থাকতেন না। কিন্তু যতদিন ওনার স্বামী বেঁচে ছিলেন, একটা নতুন কিছু গায়ে দিলেও উনি আগে স্বামী কে প্রণাম করতেন। একথা শুনে হয়ত অনেকেরই হাসি পাবে। কিন্তু সেই বয়সে আমার কিন্তু বেশ লেগেছিল বাপু!
    নিজের চার ছেলে ও চার মেয়ের ঘরে নাতি নাতনি তাঁর কম ছিলনা। কিন্তু তাও সোনালীর "পোলায় খাইব" বলে কিছু না কিছু হতে করে নিয়ে আসতেন।
    সেই বয়সে এই আদর সমাদরের মূল্য বোঝার মত জ্ঞান ছিলনা। অতি অবলীলায় তাকে গ্রহণ করেছি। কিন্তু 
    এখন ফিরে দেখি। আর ভাবি নিজের কোন যোগ্যতা ছাড়াই এত আদর ভালবাসা পেলাম যার মূল্যায়ন আর করা হলনা! 
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন