এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা   সমাজ

  • বাংলাদেশ ও রায়চৌধুরী বাড়ি 

    দীপ
    আলোচনা | সমাজ | ১৯ জুলাই ২০২৫ | ৭১৭ বার পঠিত
  • সম্প্রতি ইউনুস সরকারের অধীনে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক রায়চৌধুরী বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। কাজ‌ও বেশ খানিকটা এগিয়ে যায়। এই নিয়ে বাংলাদেশের মধ্যেই তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ভারতেও তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। সর্বত্র বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রেখেছে। এই নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিবেদন প্রকাশিত হোলো।
    আগ্রহী হলে পড়তে পারেন।
    ---------------------------------------------------------------------
     
    ময়মনসিংহ শহরের ঐতিহাসিক হরিকিশোর রায়ের প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো বাড়িটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ভবনটি ভেঙে সেখানে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি। এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ইতিহাস সচেতন নাগরিকেরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
     
    শিশু একাডেমির এই উদ্যোগে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, এই ভবনটি সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের স্মৃতিবিজড়িত এবং স্থানীয় ঐতিহ্যের অংশ। হরিকিশোর রায়ের নামে শহরের একটি রাস্তার নামকরণ হয়েছিল ‘হরিকিশোর রায় রোড’।
     
    ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিন্দার ঝড় ওঠে। ঐতিহাসিক এই স্থাপনা ভাঙায় তারা মর্মাহত বলেও জানান।
     
    ‘ময়মনসিংহ সিটি’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে মুসরিন আক্তার মিম মন্তব্য করেন, কেন ভাঙল? এসব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন তো সংরক্ষণ করা উচিত। ফাল্গুনী চক্রবর্তী লেখেন, শিশু একাডেমির ক্লাস করতাম এখানে।
     
    আশিকউজ্জামান নামে একজন মন্তব্য করেন, কী আর বলবো, পুরোনো স্থাপনা ময়মনসিংহে আর তেমন কিছুই রইলো না। অথচ জমিদারবাড়ির আধিক্যের কারণে ময়মনসিংহ শহরকে বলা হতো জমিদারদের শহর। পুরাতন বিল্ডিংয়ের শহর। আজ সেটা অস্তিত্ব সংকটে। অথচ এই ময়মনসিংহ শহরকে কলকাতার মতো রাজকীয় শহর হিসেবে সাজানো যেত।
     
    সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনটির সামনের অংশ ইতোমধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে। ইটগুলো ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে। ভবনের ভেতরের অংশও প্রায় গুঁড়িয়ে গেছে। তবে সোমবার বিকেল ও মঙ্গলবার সকালে গিয়ে কোনো শ্রমিকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। আপাতত ভাঙার কাজ বন্ধ রয়েছে।
     
    হরিকিশোর রায় ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া জমিদারবাড়ির জমিদার। তিনি উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, সুকুমার রায় ও সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ।
     
    জানা যায়, উপেন্দ্রকিশোর মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তার পিতা কালীনাথ রায়ের জ্ঞাতিভাই হরিকিশোর রায়ের কাছে দত্তক হিসেবে আসেন। হরিকিশোরের স্নেহ-ভালোবাসায় উপেন্দ্রকিশোরের শিক্ষাজীবন শুরু হয় এবং তিনি ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ১৮৮০ সালে বৃত্তি নিয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
     
    বাড়িটি ১৯৮৯ সাল থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। একতলা এই বাড়িটির সামনে একটি ছোট মাঠ রয়েছে। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় ভবনটি আগাছায় ঢেকে যায় এবং মাদকসেবীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়।
     
    গত কয়েক দিন ধরে বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু করেছে শিশু একাডেমি। ভবনটি ময়মনসিংহে বিএনপির কার্যালয়ের পাশেই অবস্থিত।
     
    প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন সমকালকে জানান, এ সম্পর্কে তথ্য চেয়ে জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছি। এটি রায় পরিবারের ঐতিহাসিক বাড়ি এবং সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের নিবাস ছিল। যদিও এটি এখনও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত নয়, তবে এ বছর নতুন জরিপে এটি তালিকাভুক্ত হতে পারে।
     
    তিনি আরও বলেন, আজ ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি জানিয়েছেন, শিশু একাডেমির সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। তবে শতবর্ষী এই ভবনটি ভাঙা মোটেও ঠিক হয়নি। এটি রক্ষা করে নতুন ভবন নির্মাণ সম্ভব ছিল।
     
    ময়মনসিংহ শিশু একাডেমির জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা মো. মেহেদী জামান বলেন, ২০১০ সালের পর থেকে ভবনটি ব্যবহার করা যাচ্ছিল না। একাডেমির কার্যক্রম চালানো হচ্ছিল ভাড়াবাড়িতে। ঝুঁকি বিবেচনায় একবার মেরামতের চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু সম্ভব হয়নি।
    তিনি আরও বলেন, বর্তমানে প্রতি মাসে ৪৭ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া শিশুদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভাড়াবাড়ি উপযুক্ত নয়।
    তিনি জানান, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ভবনটি ভাঙা হচ্ছে। মেসার্স ময়ূর বিল্ডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে। ভাঙার কাজ শেষে আপাতত একটি আধাপাকা ভবন নির্মাণ করা হবে এবং পরে পাঁচতলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
     
    ভবনটি সংরক্ষণ করে নতুন ভবনের কাজ সম্ভব ছিল কিনা—এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভবনটি অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গণপূর্ত অধিদপ্তর এ বিষয়ে কাজ করে রিপোর্ট দিয়েছে।
     
    লেখক ও কবি ফয়েজ আহমেদ বলেন, ২০০ বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রক্ষা করে ভবন নির্মাণ করা যেত। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও স্থানীয় ইতিহাসবিদরা যখন সংরক্ষণের পক্ষে, তখন শিশু একাডেমি এই ভবন ভেঙে দিচ্ছে—এটা খুবই দুঃখজনক। ইতিহাস-ঐতিহ্য এভাবে ধ্বংস হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের শহরের পরিচয় কী থাকবে?
     
    ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, শিশু একাডেমি কীভাবে এ ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করছে, তা জানতে তাদের ডাকা হয়েছে। কাগজপত্র দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 2402:3a80:198d:10d6:778:5634:1232:***:*** | ২০ জুলাই ২০২৫ ০১:২১745344
  • বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হিংস্র আক্রমণ চলছে। একের পর এক মন্দির ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি আক্রান্ত।
     
    ঠাকুর পরিবারের কাছারিবাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে, ঋত্বিকের বাড়ির‌ও এক‌ই পরিণতি।
    এবার রায়চৌধুরী বাড়িতে আঘাত আসলো।
     
    সারা পৃথিবীর সমস্যা নিয়ে বাতেলা মারা সর্ববিদ্যাবিশারদদের গলায় অবশ্য কোনো আওয়াজ শোনা যাবেনা!
    বরং বলবে, ছোটো ঘটনা! কেউ আবার উলটে জ্ঞান দেবেন! 
     
    বেইমান মীরজাফরের দল!
  • দীপ | 2401:4900:3fbb:92cf:1fe1:cf47:fe24:***:*** | ২১ জুলাই ২০২৫ ২০:৫৪745372
  • "অধ্যাপক আবদুল বারকাত ‘বাংলাদেশে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক এক গবেষণায় বলেছেন-১৯৬৪ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৫ দশকে মোট ১ কোটি ১৩ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি বছর গড়ে ২ লাখ ৩০ হাজার ৬১২ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ নিরুদ্দিষ্ট বা দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। আর প্রতিদিন দেশ ছেড়েছেন গড়ে ৬৩২ জন হিন্দু। এই নিরুদ্দেশ প্রক্রিয়ার প্রবণতা বজায় থাকলে আগামী দু’তিন দশক পরে এদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী কোনও মানুষ আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।"
     
    আবার মনে করিয়ে দিলাম।
  • দীপ | 42.***.*** | ২২ জুলাই ২০২৫ ১০:৩১745386
  • মুক্তিযুদ্ধের পরে জনৈক বৃদ্ধ উকিল বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছিলেন। তিনি সুধীর চক্রবর্তীকে বলেছিলেন, "গৃহদেবতা নেই, ঠাকুরঘর ধ্বংস হয়ে গেছে, মেয়ে দুটোকেই ধর্মত্যাগ করতে হল, এর যে কত দুঃখ-- সে আপনি বুঝবেন না। আমার স্ত্রী কপালে করাঘাত করেন, আমি কোন মুখে সান্ত্বনা দেব?"
     
    এই হাহাকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের চিত্র।
  • দীপ | 2402:3a80:198b:29be:678:5634:1232:***:*** | ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ২২:৪৩746025
  • শুনেছি বাংলাদেশ টেলিভিশনের শিশু কিশোরদের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়িতে’ ৭০ পার্সেন্ট প্রতিযোগী হিন্দু ধর্মাবলম্বী! দেশে মাত্র ৭ পার্সেন্ট হিন্দু বসবাস। আমি অনেক দিন থেকে বলে আসছি এদেশে হিন্দু না থাকলে স্কুলে হারমনিয়াম তবলা বাজিয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়ার মত কোন বাচ্চা পাওয়া যাবে না। রাষ্ট্রীয় কোন অনুষ্ঠানে গান নাচের জন্য হলেও হিন্দু সম্প্রদায়কে রাখতে হবে। অবশ্য ততদিনে যদি দেশে এগুলো নিষিদ্ধ হয়ে না যায়!
     
    যে ধর্মে গানবাজনা হারাম সেই সম্প্রদায়ের লোকজন একদিন না একদিন সংস্কৃতি চর্চা ছেড়ে তো দিবেই উল্টো এগুলো বন্ধ করার জন্য শক্তি প্রয়োগ করবে। পাড়া মহল্লায় এখন গানবাজনা বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত কাজ করে। যাদের বাড়ির বিয়েতে গান বাজবে তাদের একঘরে রাখার হুমকি দেয়া হয় মেম্বার চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে। মেম্বার চেয়ারম্যান কমিশনার চোর জোচ্চোর ক্রিমিনাল টাইপ হয়ে থাকে। তারাই মসজিদ কমিটিগুলোতে থাকে। কারণ তারাই ডোনার। তাদের পাপের সঙ্গে মসজিদ ও মোল্লাদের দান-খয়রাত করে একটা মিউচুয়াল করা হয়। আর এইসব মসজিদগুলোর ইমাম মুয়াজ্জিন মাদ্রাসা থেকেই পলিট্রিক্স করে আসে। ‘হেফাজত ইসলাম’ তাদের সামাজিক সংগঠন হলেও কওমি মাদ্রাসা মূলত পলিট্রিক্যাল ইসলামের আঁতুরঘর। তো এইসব ইমাম-মুয়াজ্জিন আর মেম্বার চেয়ারম্যানরাই বর্তমানে গান বাজনার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছে। এগুলো মফস্বল গ্রামের চিত্র। শহরের পিরস্থিতি এরকম নয়। সেটা আরো বেশি ভয়ংকর!
     
    শহরের ধনী মধ্যবিত্ত স্বচ্ছল শিক্ষিত শ্রেণী জাকির নায়েক টাইপ ইসলাম অনুরাগী। তাদের বাড়ির মেয়েরা ডাক্তারী পরে হিজাব পরে। সরকারী চাকরি, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের মেয়েরা পর্দাশীন মুসলিম নারী হিসেবে যোগ দেয়। এদের বাড়ির ছেলেমেয়েরা গান শিখে না। বাদ্য বাজায় না। নাচে না। জীবন্ত প্রাণীর ছবি আঁকে না। এতদিন এই কথাগুলো লিখেছি তখন এক শ্রেণীর কালাচালার (ধর্মেও আছি জিরাফেও আছি) মডারেটরা মুসলমান আমি ভুল সমাজচিত্র দেখাই বলে আমাকে অভিযুক্ত করেছিল। আজকে তারা নতুন কুড়ির অংশগ্রহণকারী সংগীত নাচ বাদ্যযন্ত্র বিভাগে হিন্দু শিশু কিশোরদের এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখে নিজেদের কমিউনিটি ৯০ ভাগ হওয়ার পরও কেন পিছিয়ে রয়েছে বলে হতাশা প্রকাশ করছে। প্রশ্ন করছে কেন এমনটা হচ্ছে। এখনো এদের মনে হয়নি তাদের ধর্মে সংগীত হারাম। অভিনয় নাটক সিনেমা হারাম। এতদিন কাঠমোল্লাদের ধর্মের অপব্যাখ্যা বলে পার পাওয়া গেলেও এখন ঘরে ঘরে হাদিস চর্চায় সবাই জানে ইসলামে এগুলো হারাম। তাছাড়া জাকির নায়েকের মত কোট প্যান্ট পরা ডাক্তার বলছে হারাম। তোদের উপায় কি?
     
    মুসলমান শিক্ষিত শ্রেণীর মধ্যে মৌলবাদ বেড়ে গেছে। তাদের আদর্শ আবু ত্বহা, আজহারী, আহামাদুল্লাহ। গান হারাম। বাদ্য হারাম। নাচ হারাম। মুসলমানের বাচ্চারা এসব শেখবে কেন? সমাধান কি? তাকিয়ে দেখুন ঘরের বাইরে বের হলেই ‘স্কুল এন্ড মাদ্রাসা’ নামের আধুনিক স্কুলগুলোর বিজ্ঞাপনগুলো। প্রাইমেরি স্কুলগুলো সরকারীভাবেই ধ্বংস করা হয়েছে। ফলে দরিদ্রদের মাদ্রাসা পাঠানো হয়েছে। উচ্চ মধ্যবিত্ত ও ধনীদের মধ্যে ইসলাম আসছে একটু অন্যভাবে। মুসলমানদের আত্ম-দ্বিধান্বিত সংকট থেকে। এ লেভেল ও লেভেল শিক্ষাক্রমে পড়িয়ে ছেলেমেয়েরা পশ্চিমাদের মত সেক্স বিয়ে কালচার অনুসরণ করে কিনা সেই ভয়ে তারা রেডিমেট ইসলাম তাদের হাতে তুলে দেয়। নির্বাসের কথা মনে আছে তো? হলি আর্টিজেনের তরুণদের সকলেই ধনী পরিবারের সন্তান। তাদের পরিবার থেকে পরে বলা হয়েছিল, ইংলিশ মাধ্যমে পড়ার কারণে পরিবারের ভয় ছিল তারা ধর্ম ভুলে পশ্চিমাদের মত জীবন কাটায় কিনা এই ভয়ে ইংরেজি কুরআন হাদিস কিনে দিতো। বিভিন্ন আলেমদের ভিডিওয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতো। পরে জানা গেছে তারা সকলেই জাকির নায়েক দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল!
     
    আবুল হায়াত, জাদিহ হাসানদের মত অভিনেতারা কেমন আছেন জিজ্ঞেস করলে বলেন ‘আলহামদুলিল্লাহ’! সংস্কৃতি জগতের লোকজনের কথাবার্তা তো এরকম হতো না আগে। আমাদের অনেক কিছুই একটু একটু করে নষ্টের দিকে এগিয়েছে। আগে আমরা মনে করতাম শিল্পীরা ধর্মের বিষয়ে উদাসিন হয়। ষাটের দশকের ছিলও তাই। আজকের এই পরিস্থিতি তো একদিনে হয়নি। নাটক পাড়ায় যান, থিয়েটার করে তারা যে মনে মনে কতবড় ‘মুসলমান’!
     
    একমাত্র সাংস্কৃতি আন্দোলনই পারে এই মৌলবাদী দশা থেকে মুক্তি দিতে। কিন্তু নাটক সংগীত কবিতা উপন্যাস শিল্পকলার সমস্ত শাখার মধ্যে এখন ‘আলহামদুলিল্লাহ’ মহামারি আকারে বিরাজ করছে। চারুকলা সম্ভবত সবার আগে পচে গিয়েছিল! 
     
    আর একটা জায়গার কথা না বললেই নয়, কমিউনিস্টদের পার্টি অফিসে জায়নামাজ রাখা হয় আগতদের নামাজ পড়ার জন্য!
     
    পুরো সমাজটা নষ্ট হয়ে গেছে। কে যে এখন বাম আর ডান আলাদা করা যায় না। প্রথম আলো আর ইনকিলাব পত্রিকাকেও আলাদা করা যায় না! প্রথম আলোর ফারুক ওয়াসিফ, আলতাফ পারভেজদের সঙ্গে ইনকিলাবের সম্পাদনা পরিষদের নৈকট্য অনেক বেশি। একদিনে সমাজচিত্র তো বদলায়নি...।
     
    পাকিস্তান হওয়ার পর ষাটের দশকের সাংস্কৃতি আন্দোলনই নিজের জাতিসত্ত্বার দিকে ফেরাতে রবীন্দ্রনাথকে আকড়ে ধরতে হয়েছিল। শুনুন আমি বারবার বলি, লালন বাউল সুফি দিয়ে হবে না। রবীন্দ্রনাথ ছাড়া এই যুদ্ধে জিততে পারবেন না।
     
    -সুষুপ্ত পাঠক
    ২৩/১০/২৫
  • দীপ | 2402:3a80:1979:63b0:778:5634:1232:***:*** | ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ১১:১০746027
  • রাত সাড়ে ১২টার দিকে সজিব গরু জবাই করার ধারালো একটি বড় ছুরি হাতে দাদির কক্ষে প্রবেশ করে। এরপর তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে জানতে চায়, ‘তোমার রব কে’। সন্দেশ বেগম এর উত্তর বলতে না পারায় ক্ষুব্ধ হয়ে সে চিৎকার করে বলতে থাকে ‘তাহলে তো তোমাকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না’।
    এরপর হাতে থাকা ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দেহ থেকে তার মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এ বিষয়ে পুলিশ ও এলাকাবাসি জানায়, সজিব তার ফেসবুক আইডিতে ‘আল্লাহু আকবার’ লিখে একটি স্ট্যাটাস দেয়। কিছুক্ষণ পর আবারও ‘ইনশাআল্লাহ একটাও ছাড় পাবে না’ লিখে আরেকটি স্ট্যাটাস দেয়। এর কিছুক্ষণ পর বিষয়টি সজিবের বাবা আহম্মাদ আলীর নজরে এলে তিনি চিৎকার করে বাড়ির সবাইকে ডাকাডাকি শুরু করেন। সবাই ছুটে এসে এই নৃশংস হত্যার ঘটনা দেখে সলঙ্গা থানায় পুলিশে খবর দেন।
  • দীপ | 2402:3a80:198f:1d20:878:5634:1232:***:*** | ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:১৪746029
  • মসজিদের ইমামকে ইসকন গুম করেছিল! সেই দুঃখে হাসতে পারছি না। বাংলাদেশের একটা মোল্লাকে গুম করেছিল একটা হিন্দু সন্ন্যাসী সংগঠন। কি তাদের উদ্দেশ্য? অপহত সেই মোল্লা চিৎপাত হয়ে মিডিয়াতে কেঁদেকেটে বলছে, তাকে ইসকনের পক্ষে কথা বলার জন্য বলা হয়েছে। মুসলমান মেয়েদের সঙ্গে হিন্দু যুবকদের প্রেমের পক্ষে বলতে বলেছে। অখন্ড ভারতের পক্ষে বলতে বলেছে। আর বিএনপি এনসিপির বিপক্ষে বলতে বলেছে...। হেঃ হেঃ হেঃ

    আমার ধারণা এই স্কিপ্ট কোলকাতার অর্ক ভাদুড়ী দীপক বেপারীসহ আরো কিছু চিঙ্কু বাম আছে এদের কেউ হয়ত জামাত হেফাজত অথবা এনসিপির হয়ে লিখে দিয়েছে। এরাই গন্ডগোলটা লাগিয়েছে। কারণ ভাদুড়ী আর বেপারী হেঁদু চিঙ্কু বামরা তাদের পশ্চিমবঙ্গের কনসেপ্টে স্ক্রিপ্ট লিখে ফেলেছে। পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের পোন্দানী খেয়ে হেঁদুরা পালায় এরকম বাস্তবতা আছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোন হিন্দু হেফাজত ইসলামের মত উগ্র জঙ্গি সংগঠনের একজন ইমামকে গুম করবে খুবই হাস্যকর!

    তবু এরকম দুর্বল স্কিপ্টও চলবে। যেহেতু একটা অজুহাত প্রয়োজন। আসলে ইসকন নয়, টার্গেট হিন্দু সম্প্রদায়। মুসলমান মেয়েদের হিন্দু ছেলেরা বিয়ে করে হিন্দু বানাচ্ছে এই কাহিনী ছড়ানো হচ্ছিল কিছুদিন থেকে। এগুলো বলে হিন্দুদের উপর বড় রকমের হামলার আয়োজন করা হচ্ছে। ভোটের আগে এটা করা হবে। দুটো কারণে হতে পারে, নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার জন্য, দুই,  হিন্দুদের ৭ পার্সেন্ট ভোট কিছুতে ধর্মভিত্তিক দল ও জামাতের ছোট ছেলে এনসিপি পাবে না তাই হিন্দুদের অস্তিত্ব হারানোর ভয় দেখিয়ে খেদাতে হবে। এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে আবারো বলছি কোলকাতার হিন্দু চিঙ্কু বামরা। এরা বর্তমানে বাংলাদেশের এনসিপি ঘনিষ্ঠ। এরা জামাত ইসলামের সঙ্গেও আগে থেকে ঘনিষ্ঠ। কাজেই নানা রকম শঙ্কা মনে কাজ করছে।

    -সুষুপ্ত পাঠক
    ২৪/১০/২৫
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন