এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  নাটক

  • চোখে_আঙুল_দিদি -৩  [একটি প্যারডী নাকট] 

    রানা সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    নাটক | ১২ মে ২০২৫ | ২৭ বার পঠিত
  • | |
    দিঃ কেন? রাস্তায় যাকেই পেতাম তার খুঁত ধরতাম। সাফাইওয়ালা, টিকিট চেকার, যারা রাস্তা তৈরি করছে, যারা ইলেকট্রিকের কাজ করছে। বলতাম আই শোনো, ইয়ে ময়লা সাফ কিঁউ নেহী হুয়া হ্যায়? ঠিক সে সাফা করো। রাস্তায় সিমেন্ট আর বালির ভাগ নিয়ে খুঁত ধরতাম। ইলেকট্রিকের পোস্ট বেঁকে গেলে খুঁত ধরতাম, সোজা থাকলেও খুঁত ধরতাম। বলতাম ফাঁকিবাজ কাহাকা। দেশ কো ডুবাতা হ্যায়।

    যঃ বাহ বাহ বাহ। তা তুমি অফিস কাছারি যেতে কখন?

    দিঃ অফিস!! কোনও সংকীর্ণ চার দেওয়ালের মধ্যে আমরা নিজেদের আটকে রাখতাম না বিধাতা। বর ঠিক মতো বাজার করে না আনলে খুঁত ধরতাম। বেড়াতে না নিয়ে গেলে খুঁত ধরতাম। খাবার ঠিক মতো না নিয়ে এলে খুঁত ধরতাম। তারপর বিকেল হলে সাজুগুজু করে শপিং এ বেরোতাম...

    যঃ তা এইসব শপিং-এর টাকা আসত কোথা থেকে?

    দিঃ কেনো? বর নয়ত বয়ফ্রেন্ড। না দিলে বয়ফ্রেন্ড চেঞ্জ। আর বরকে তুমুল শাসাতাম।

    যঃ বা বা বা বা। তারপর...

    দিঃ মলে মলে বা কাননে কাননে বা রেস্তোরাঁয় রেস্তোরাঁয় বসে আড্ডা দিতাম। ফুঁকতাম। পান ভোজন করতাম। সেলফি তুলতাম। আবার ফুঁকতাম। পোষ্টাতাম। আবার সেলফি তুলতাম। আবার পোষ্টাতাম। খাবারে একটু এদিক সেদিক হলেই খুঁত ধরতাম। গরম পড়লে খুঁত ধরতাম। ঠাণ্ডা পড়লেও খুঁত ধরতাম। বৃষ্টি হলে খুঁত ধরতাম। আবার না হলেও খুঁত ধরতাম।  

    যঃ চিতু কী বুঝছ? এরা আবার প্রকৃতিরও খুঁত ধরে দেখছি।

    দিঃ হাফ তার কাটা...

    যঃ তারপর আর কী করতে?

    দিঃ পড়াশোনা না করে ফেল করলে শিক্ষকদের খুঁত ধরতাম। শহরে এতো ডিস্ক কম কেন তাই নিয়ে কর্পোরেশনের খুঁত ধরতাম। বিদেশে কত কিছু করা যায়, কিন্তু এখানে যায় না, তাই দেশের ইন্টারনাল আর এক্সটার্নাল..., সব ব্যাপারের খুঁত ধরতাম। সঙ্গে লাগত খালি নরম বা শক্ত পানীয় আর সিগারেট। ফরেন পলিসি টলিসির একদম টেবিল চাটিয়ে চাটিয়ে খুঁত বের করতাম বিধাতা।

    চিঃ [টাইপ করা থামিয়ে] বিধাতা, এইসবও কি টাইপ করুম?

    যঃ সব লেখো। সব লেখো। তা তোমাদের রান্না না হয় ঘরে মা, আর বাইরে খাওয়া বলতে রেস্তোরাঁ। ঘরের আর সব কাজ? যেমন জামাকাপড় ধোওয়া, ঘর পরিষ্কার বা গুছিয়ে রাখা, বাসব টাসন পরিষ্কার ..., এইসব।

    দিঃ ধুৎ যমের বাচ্চা। সে সবের জন্য তো আলু আছে, আলু...

    যঃ আলু!!

    দিঃ আমাদের বাড়ির কাজের লোক। বাট ওরও কাজের খুঁত ধরতাম। বলি কাচাটা ঠিক মতো হয় নি কেন বল? ইস্তিরি ঠিক মতো করেনি বা সাবান বেশি লেগেছে কেন বল?  
     
    যঃ বাহ বাহ, ওকে এবার একটু মুচকুন্দ ফুলের শরবত দাও চিতু। আহা কথা বলতে বলতে একদম শুকিয়ে গেছে গো বেচারি। [চিত্রগুপ্ত ওয়াকিটকিতে বলে]

    দিঃ শুনলে তুমি বোমকে যাবে বিধাতা। খুঁত না থাকলেও, খুঁত সৃষ্টি করে খুঁত বের করতাম আমরা।

    যঃ অহো, অহো... এ কে চিতু... কে এসেছে ট্যাপিওকা থেকে?

    চিঃ হাফ তারকাটা বেইব। [শরবত আসে। ঢক ঢক করে দিদি সেটা পান করে]

    দিঃ যেমন, আমাদের দেশে যখন মেট্রো রেলের কাজ শুরু হোল, তখন রাস্তা আটকানো বা কাদার জন্য আমি বিভিন্ন জায়গায় লিখে লিখে কাজ কিছু বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কলকারখায় এতো ধোঁয়া হয় বলে, আমি অনেক কারখানা তুলে দিতে বলেছিলাম। পুকুরের জল ব্যাবহার করা হয় না বলে, আমি পুকুর বুজিয়ে দিতে বলেছিলাম। গাছের পাতা পড়ে রাস্তাঘাট নোংরা হয় বলে সব গাছ কেটে সাফ করে দিতে বলেছিলাম।

    যঃ অহো, অহো। কী সৌভাগ্য আমাদের যে তুমি আমাদের মধ্যে এসেছ।

    চিঃ লগে কী একটু সাংস্কৃতিক চর্চা টর্চা করতা? না কি?

    দিঃ করতাম তো। যেমন দোলের সময় গালে দু’পোচ রং মেখে পোজ দিতাম...

    যঃ কী দিতে!!

    দিঃ পোজ। তারপর সেলফি তুলে পোস্টাতাম। সঙ্গে থাকত রবীন্দ্রনাথের লাইন...

    চিঃ য্যামন?

    দিঃ “খেলব হোলি রং দেবো না / তাই কখনো হয়?”

    চিঃ এইডা রবীন্দ্রনাথের লাইন?

    দিঃ তবে কার? এই যা ভুলে গেছি।

    যঃ তারপর?

    দিঃ এইতো সেইবার, রবি ঠাকুরের শ্রাদ্ধ শতবর্ষে ...

    চিঃ কী বর্ষে!! শ্রাদ্ধ?

    দিঃ ইউ নন্সেন। মেয়েদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয় জানো না। হ্যাঁ, ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছবি তুলে ফেসবুকে লটকে দিলাম; নাচলাম।

    চিঃ নীচে কী লিখলা মা?

    দিঃ আবার রবিন্দর নাথের কোটেশন দিলাম। “আজ ব্লু হ্যায়  পানি পানি পানি পানি পানি পানি / আউর দিন ভি সানি সানি সানি সানি সানি সানি”

    চিঃ খাইসে। 

    দিঃ আহ। আমার আর তর সইছে না। কখন স্বর্গের দরজা খুলবে বলো তো? যদিও শুনেছি হাল ফ্যাশানের অনেক কিছুই সেখানে নেই। বাট ডোন্ট ওরি। আমি সব একটা একটা খুঁত ধরে ধরে বের করে দেব।

    যঃ চিতু, এ কী বলে গো? আমাদেরও খুঁত বের করবে বলছে...

    চিঃ স্বর্গ যাইবো খুঁতে আর যমপুরী খাইবো ভুতে। দুইয়ে মিল্ল্যা হইবো এক্কেরে ক্যাঁচালের একশেষ।

    যঃ আচ্ছা? তুমি কাউকে ভালবাসতে? আই মিন প্রেম?

    দিঃ ইউ মিন লভ। হ্যাঁ, আমি দুপুরে একজন, বিকেলে একজন, সন্ধ্যে রাতে একজন আর বেশি রাতে একজনের সঙ্গে প্রেম করতাম।

    চিঃ খাইসে। একসঙ্গে চারজনকে হ্যান্ডেল করতা কী কইর‍্যা?

    দিঃ আমি একজনের সঙ্গে করতাম চ্যাট, অন্যজনের সঙ্গে প্যাট, তৃতীয়র সঙ্গে ক্যাট আর চতুর্থর সঙ্গে ব্যাট।

    চিঃ আর স্যাট?

    দিঃ স্যাট! না না। তবে ফেসবুকে single status দেওয়া থাকত।

    যঃ মারপিটও করতে নাকি?

    দিঃ হ্যাঁ। বেহেড মাতাল হয়ে যখন রাস্তায় হাঁটতাম, তখন আমাদের মাতলামি করা নিয়ে যদি কেউ কিছু বলত, তখনই ঘিপঘাপ। নেশা করে এখানে সেখানে পড়ে থাকতাম বিধাতা।

    চিঃ বাবাগো [সরে আসে চিত্রগুপ্ত] । আর কিছু কি জানবার আছে বিধাতা?

    যঃ নাহ। আর বিশেষ কিছু জানবার নেই। তবে কী যেন, হ্যাঁ বেইব। তোমায় কিন্তু একটা পরীক্ষা দিতে হবে। পাশ করলে তবেই স্বর্গ।

    দিঃ পরীক্ষা? ইউ মিন এক্সাম? বাট হাউ ফানি। বেশ কী করতে হবে বলুন?

    যঃ কিন্তু ভয় পেলে চলবে না। তাহলেই স্বর্গ কিন্তু ক্যান্সেল হয়ে যাবে।

    দিঃ আমরা, মানে চোখে আঙুল দিদিরা কাউকে ভয় পাই না। [হাতের মাসল ফোলায়] দেখছেন আমার বাইসেইপ, ট্রাইসেইপ, কোয়াড্রিসেইপ?

    চিঃ সব শেইপ দেখসি মা, এইবার ক্ষেমা দাও।

    যঃ আচ্ছা। তবে ওই দিকের যে তিনটে ঘর দেখছো, তাতে পর পর ঢুকতে হবে। ভালো করে দেখে নাও। এবার সেই ঘর তিনটে ভয় না পেয়ে পেরোতে পারলেই স্বর্গ।
    কিন্তু ভয় পেয়ে পালিয়ে এখানে এলেই স্বর্গ কিন্তু ক্যান্সেল।
     
    দিঃ [রেডি হয়] ওকে। যাব?

    যঃ [ঘড়ি দেখে] রেডি?

    দিঃ হ্যাঁ।

    যঃ যাও। [দিদি প্রথম ঘরে ঢুকে যায়]

    চিঃ কামডা কি ভালো করলেন বিধাতা? এই সব হাফ তার কাটাদের স্বর্গে বেআইনি প্রবেশ করানডা কি ভালো অইল? [যম হাসতে থাকে] কী অইল বিধাতা? হাসতাসেন ক্যান?

    যঃ আরে ও পারবে না, পারবে না।

    চিঃ ক্যান প্রভু?

    যঃ ওই তিনটে ঘরে কী কী রেখেছি জানো?

    চিঃ না, বলুন প্রভু।

    যঃ প্রথমটায় টিকটিকি। তারপরেরটায় আরশোলা। আর শেষেরটায়  ষন্ড।

    চিঃ ধন্য প্রভু।  ধন্য আপনি।     
                 
    [কিছুক্ষণ পর ভয় পেয়ে চিৎকার করতে করতে দিদির প্রত্যাগমন ঘটে]

    [যদি কেউ এই নাকটটার অডিও বানাতে চান, তাহলে আমাকে মেইল করতে পারেন – rana.indranil@gmail.com]
     

    [ শেষ]
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | |
  • নাটক | ১২ মে ২০২৫ | ২৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে প্রতিক্রিয়া দিন