এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বাংলাদেশ সমাচার! - ৮ 

    bikarna লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৫৫ বার পঠিত
  • | | | | | | |
    কোনদিন শিবিরের রাজনীতির প্রশংসা করব ভাবিনি। কিন্তু এখন ভাবতে ভালো লাগছে। জামাত শিবিরের সাথে হুট করেই যে দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে বিএনপি তাতে রীতিমত হাতুড়ি চালায় দিছে শিবির। শিবির এই কাজটা করছে খুব সুচারু ভাবে। একটু বুঝায় বললে বুঝতে সহজ হবে। 

    ৫ আগস্ট নিয়ে সবাই ব্যস্ত। নানা আয়োজন দেশজুড়ে। এত বড় একটা কাণ্ড করে ফেলছে তারা এইটা নিয়া উচ্ছ্বাস থাকবে না? তো সেই অনুপাতে নানা আয়োজন ছিল। ১৬টা ট্রেন দেওয়া হয়েছিল ঢাকায় এই উৎসবে যাওয়ার জন্য। যদিও তেমন আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায় নাই। পুরো এক ট্রেনে ১৭ জন গেছে এমন খবরও আসছে আমাদের সামনে। যাই হোক, এই আয়োজনের ফাঁকে শিবির তাদের রাজনীতি করে গেছে। যেহেতু জুলাই সনদ থেকে শুরু করে সমস্ত আয়োজনই হয়েছে লীগ সরকারকে গালি দেওয়ার জন্য। তাই তারা একটা ফাঁদ পাতে। এইটা যে ফাঁদ তা আমার বুঝতে একটু সময় লাগছে। ফাঁদটা কেমন? ফাঁদ হচ্ছে তারা ঢাবির ক্যাম্পাসে বিচারিক হত্যাকাণ্ড নামে একটা ছবি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে। সেখানে চিহ্নিত সব রাজাকারদের ছবি। সারাদিন মানুষ অনলাইনে এইটা নিয়া বিদ্রূপ করে গেছে, ঢাবির ছাত্রদেরকে পচানো হইছে ইচ্ছামত। দিন শেষে প্রথম সাধারণ কিছু ছাত্র পরে বামেরা এইসব ছবি নামায় ফেলার জন্য স্লোগান দেয়। প্রায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে যায় এমন অবস্থায় শিবির পিছিয়ে যায়, ছবি নেমে আসে। এরপরে শুরু হল শিবিরের দুর্দান্ত রাজনৈতিক খেলা! 

    পরেরদিন সেখানে নানা স্ক্রিনশট দেখা যায়। স্ক্রিনশট গুলো হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি যে রাজাকাদের বিচারের বিরোধিতা করে নানা কথা বলেছে সেই সব কথার স্ক্রিনশট! কোন মামলায় মিথ্যা সাক্ষী নিয়েছে এমন সংবাদ বের হয়েছে সেইটার স্ক্রিনশট! এমন একটা ফাঁদে পড়ল বিএনপি যে একটা শব্দ করতে পারে নাই। হুট করেই জামাতকে দেখতে পারে না এখন এই তত্ত্ব জামাত মানতে রাজি না। ফলে বিএনপির মুখোস টেনে খুলে ফেলে দিয়েছে তারা। এবং এখানেই শেষ না। পরেরদিন আরেকটা চাল দিল শিবির। 

    এবার শিবির সেখানে ছবি লাগাল আরও কিছু স্ক্রিনশটের। যেখানে বিখ্যাত আবু সাইদ সাইদির মৃত্যুতে কাতর! এমন জেলেমের হাতে পড়ে এমন মৃত্যু! কোরানের পাখির এমন মৃত্যু সাইদ মেনে নিতে পারে নাই। এখন? শুধু শিবিরের পক্ষে না, আবু সাইদ এই ছাতার সরকারের একটা খুঁটিও। তার মন্তব্যের স্ক্রিনশট খুলে ফেলবে? আছে কারো সাহস? জুলাই পন্থিরা ভিড় করে এই সব ছবি দেখেছে সারাদিন, কেউ কিছুই বলতে পারে নাই। বলার উপায় নাই আসলে। কিন্তু শিবির এখানেই থামল না। কারণ এইটা তাদের মূল লক্ষ্য না। 

    পরেরদিন হুট করেই সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাস থেকে ছাত্র রাজনীতি দূর করতে হবে এমন একটা মিছিল বের করে। ছাত্রী হল থেকে মেয়েরা বের হয়ে আসে। যে উমামা কয়েকদিন আগে এনসিপি ছেড়ে এনসিপির বিরুদ্ধে কড়া কড়া কথা বলা শুরু করেছিল তার কারণও উম্মচন হয় এবার। তার নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চলবে না ক্যাম্পেইন চলে। ভিসিও বসেই ছিল যেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ! দারুণ না? 

    শিবিরের ছাত্র রাজনীতির দরকার নাই। শিবিরকে শেকড় ধরে টান মেরে ফেলে না দিলে কোনদিন তাদেরকে তাড়ানো যাবে না। এই সব নিষিদ্ধ টিসিদ্ধ দিয়ে কাজ হবে না। তারা ইদে মিলাদুনবির দাওয়াত দিবে, তারা নামাজের দাওয়াত দিবে, সবুজ সাথী পত্রিকা বের করবে, কিশোর কণ্ঠ ম্যাগাজিন স্কুলে বিক্রি করবে, তারা সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠীর ব্যানারে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। আপনে পারবেন তাদের সাথে? তাদের সাংগঠনিক শক্তির সাথে আপনি পারবেন না, আপনি টাকা পয়সা দিয়ে তাদের সাথে পারবেন না, তাহলে লড়বেন কি দিয়ে? যে অস্ত্র এই লড়াইয়ে কাজে লাগবে তা তো আপনি আমি কবেই নষ্ট করে দিয়েছি, দেই নাই? 

    নানা সন্দেহে লোকজন ধরে ধরে মেরে ফেলার ঘটনা এখন পর্যন্ত থামে নাই। সব তো সবার সামনে আসে না। যেগুলা আসে তা এতই বীভৎস যে সেগুলাকে আর চাপা দিয়া রাখা যায় না। রংপুরে তেমনই ঘটনা ঘটে গেছে। ভ্যান চালক এক লোক মেয়ের বিয়ের জন্য পাশের এক এলাকায় যাচ্ছিলেন। সমকাল লিখেছে - 

    "রূপলাল দাসের মেয়ে দুপুর দাসের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল মিঠাপুকুর উপজেলার শ্যামপুর এলাকার লালচাদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের সঙ্গে। আজ রোববার বিয়ের দিন ঠিক করার কথা ছিল। এ জন্য মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ে প্রদীপ দাস তারাগঞ্জের রূপলাল দাসের বাড়ির দিকে রওনা দেন। কিন্তু গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় গিয়ে রুপলালকে ফোন করেন। সেখানে রূপলাল গিয়ে দু’জনে ভ্যানে চড়ে ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন। রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যানচোর সন্দেহে তাদের দু’জনকে থামান স্থানীয় কয়েকজন। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে প্রদীপ দাসের ভ্যানে থাকা বস্তা থেকে চারটি প্লাস্টিকের ছোট বোতল বের করেন লোকজন। এর একটি বোতল খুললে ভেতরে থাকা তরলের ঘ্রাণে অসুস্থ হয়ে পড়েন পাশারিপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক আলমগীর হোসেন ও বুড়িরহাটের মেহেদী হাসান। এতে লোকজনের সন্দেহ আরও বাড়ে। এরপর ভ্যানচুরির সন্দেহে তাদের মারধর করতে থাকেন তারা। মারধরের একপর্যায়ে অচেতন হলে দু’জনকে বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ফেলে রাখা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে উদ্ধার করে পুলিশ তাদের তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক রুপলাল দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রদীপ দাসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রোববার ভোরে তিনিও মারা যান বলেন নিশ্চিত করেছেন নিহত রুপলাল দাসের ভাই খোকন দাস।" 

    এগুলা পড়ে দম বন্ধ লাগে না? আর আমাদের এই দমবন্ধ করা দেশেই থাকতে হচ্ছে! খবরে প্রকাশ যে যখন মব চলে তখন পুলিশ সেখানে যায় এবং মব চলছে দেখে আস্তে করে সেখান থেকে চলে আসে। বিপদে পড়তে রাজি না তারা! এই চলছে দেশে। কোথাও পিটিয়ে মানুষ মেরে ফেলছে, কোথাও নারীকে বিবস্ত্র করে পেটাচ্ছে! যিনি এই সব দেখবেন তিনি কোন এক অলৌকিক ক্ষমতাবলে ভাবছনে এগুলা স্বাভাবিক ঘটনা! সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর বলে একটা জায়গা আছে। ভারত থেকে একটা নদী নেমে আসছে। এই নদীর তলদেশে, পারে সব জায়গায় লক্ষ লক্ষ পাথর। এত সুন্দর জায়গা দেশে খুব কমই আছে। ঠাণ্ডা শীতল জল, ছোট বড় মাঝারি পাথর, একটু দূরেই, দৃষ্টি সীমায় মেঘালয়ের আকাশ ছোঁয়া পাহাড় সব। পাহাড়ের পেটের কাছে মেঘ খেলা করছে আর নিচে এমন একটা জায়গা। অদ্ভুত সুন্দর একটা জায়গা। ক্ষমতার পালা বদল হতেই শুরু হয় এখান থেকে পাথর চুরি। বড় বড় নৌকা করে পাথর চুরি হতে থাকে। এবং এখন কোন পাথর নাই সেখানে। ধারণা করা হচ্ছে অন্তত হাজার কোটি টাকার পাথর চুরি হয়েছে এখান থেকে। চরমনাইয়ের পীরের একটা ভিডিও দেখলাম, তিনি রীতিমত উৎসাহ দিচ্ছেন পাথর চুরির জন্য। পাথর উত্তোলন করতে দিতে হবে। এতদিন পাথর উত্তোলন করতে দেয় নাই সরকার কারণ লীগ ভারতের দালাল ছিল। পাথর উত্তোলন না করলে মানুষ ডুবে মরবে না? ভারত তো এটাই চায় যে মানুষ ডুবে মরুক! এমনই ছিল তার বক্তব্য! 

    এর মধ্যে একটা লেখ্য নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আমি লেখাটা সরাসরি পড়ি নাই দেখে এইটা নিয়ে কথা বলতে পারছি না। কেউ যদি পড়ে থাকেন তাহলে আমার বুঝতে সুবিধা হত। গত ৮ আগস্ট ডেইলি স্টার পত্রিকায় মাহফুজ আনাম একটা সম্পাদকীয় লিখেছেন। সেখানে তিনি জুলাই সনদকে সমালোচনা করেছেন এবং ইনুস সাহেব যে তার বক্তব্যে বলেছেন যে গত ১৬ বছর দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে, দেশেকে শেষ করে ফেলেছে লীগ সরকার, তিনি এর সমালোচনাও করেছেন। বলেছেন দেশ যদি না আগাত তাহলে আমরা স্বল্প উন্নত দেশে থেকে উন্নয়নশীল দেশের দিকে কীভাবে গেলাম? বর্তমান সরকারও তো উন্নয়নশীল দেশের কার্যক্রম চালুই রেখেছে, তাহলে কেন বলা হচ্ছে লীগ সরকার দেশেকে ধ্বংস করে ফেলচ্ছে? দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে এই বক্তব্য যে দেশের বাহিরে দেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে এইটা বুঝার কথা না? না বুঝেই এগুলা বলে ইনুস সাহেব? ( পত্রিকাটা জোগাড় করার চেষ্টা করছি, পড়ে লেখব ভালো করে) 


    ১৫ আগস্ট ২০২৫! 

    দেখতে দেখতে আবার ১৫ আগস্ট চলে আসল। গত বছর ১৫ আগস্টের আগে আমি অনুমান করেছিলাম এইটাই হচ্ছে সরকারের এসিড টেস্ট। ১৫ আগস্টকে যেভাবে সামাল দিবে তাতে বুঝা যাবে এই সরকারের গতিপথ। আমার অনুমান ভুল ছিল না। গত বছর ১৫ আগস্ট ডিজে পার্টির আয়োজন করেছিল তারা। গতিপথ বুঝা হয়ে গিয়েছিল। এখন সেই পথেই আছে তারা। আজকে, এক বছর পরে, যখন ৩২ নাম্বারকে এক্সেভেটর দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তখনও পুলিশ ৩২ নাম্বার পাহারা দিচ্ছে। লীগের কর্মী কই জে যাবে সেখানে? বিএনপির লোকজনই ভিড় করে আছে। কী জানি রাত ১২ টার পরে খালেদা জিয়ার জন্মদিনও হয়ত সেখানেই পালন করবে তারা! এদেরকে সভ্য ভাবার তো কোন কারণ রাখে নাই তারা নিজেরাই, আমি কী করাম? 

    গত এক বছর ধরেই বলে আসছি যে সুযোগ ছিল বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধকে লীগের কবজা থেকে বের করে নিয়ে আসার। কিন্তু তারা তো আসলেই জাত শত্রু, দাবায় রাখবার পাবা না তো তাদের কৌশল ছিল, তারা আদ্যতে তো শেখ মুজিবের আদর্শের ছিটেফোঁটাও নেই, নেই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের কোন কিছু। তাই সময় যত গেছে তত তাদের লুকানো নখ দাঁত বের হয়ে আসছে। মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধুকে ধারণ না করে বরং উল্টোটা করে, এর বিরোধিতা করতে গিয়ে মাখায় ফেলছে এমন করে যে এখন ভাঙা বাড়ি পাহারা দিতে হয়। এবং এখানেই শেষ না, যতদিন বেঁচে থাকবে এই দুশ্চিন্তা নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে। হয়ত কিছুই না, মৃদু বাতাস বয়ে গেছে, কিন্তু এরা শিউরে উঠবে, ভাববে এই বুঝি মৃত্যু নিঃশ্বাস ফেলছে ঘাড়ে! এখন তো ভাঙা বাড়ি, ক্ষমতা যাদের হাতে তারা ইচ্ছা করলে ৩২ নাম্বারে মাল্টিপ্লেক্স তুলতে পারে এবং তখনও এই ভয় যাবে না। তখন দেখা যাবে ১৫ আগস্ট সেই প্লাজা ভবনে আর্মি পুলিশ দিয়ে পাহারা বসাইছে!

    লাগে রাহো মুন্না ভাই সিনেমার কথা মনে আছে? সেখানে গান্ধী মুন্নাকে বলছে মূর্তি ভাঙছে, ভাস্কর্য ভাঙছে, ভাঙ্গুক, সব মূর্তি ভেঙে দাও, কোন সমস্যা নাই। মানুষের মন থেকে কীভাবে মুছবে? এখানেও একই সূত্র। এই সব ভাঙ্গাভাঙ্গি করে যদি মুছে ফেলা যেত তাহলে তো হতই, আজকে ভাঙা বাড়ি পাহারা দিতে হত না। এত কিছুর পরেও ৩২ নাম্বার এতখানি ভয় সৃষ্টি করবে কে ভেবেছিল? ৩২ নাম্বারকে কারা ভয় পাইত জানেন তো?  রাষ্ট্রের সূতিকাগার হচ্ছে ৩২ নাম্বার। যারা দেশটার জন্মের বিরোধিতা করত তারাই ভয় পেত। আপনারা ভয় পান কেন? লীগের তো নাম নিশানা নাই দেশে। দলবাজেরা নিমিষে বাতাসে মিলিয়ে গেছে। তাও কিসের ভয়? এত পুলিশ দিয়ে ভাঙা বাড়ি পাহারা দিতে হচ্ছে কেন? আপনেও এর উত্তর জানেন আমিও জানি!

    ১৫ আগস্ট নিয়ে কী লিখব? কত কিছুই তো লেখা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে ক্ষতি হয়ে গেছে তাঁকে কাল্ট করে ফেলাতেই। আর ছিল জোরজবরদস্তি। চাটুকারেরা বিরিয়ানির প্যাকেট, ডাবল স্পিকারে তীব্র শব্দে ভাষণ বাজিয়ে গণ মানুষের শেখ মুজিবকে হারিয়ে ফেলেছিল লীগ নিজেই। অথচ লোকটা ছিল গণ মানুষের নেতা। একদম মাটি থেকে উঠে যাওয়া একজন নেতা। এমন উদাহরণ উপমহাদেশের রাজনীতিতে বিরল। রাজনীতি করবে এলিট শ্রেণি, চাষাভুষারা আবার কিসের রাজনীতি করবে? শেরে বাংলা আর এরপরে বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু সবাইকে ছাড়িয়ে উঠে গেলেন আকাশ সমান উচ্চতায়। এমন একটা মানুষকে, পরিবারের সবাইকে,  ছোট্ট রাসেলের মত একটা শিশুকে সহ মেরে ফেলল! সেই রক্তের দায় নিয়ে ঘুরতে হয়েছে জাতিকে। যিশুকে যখন ক্রুশে দেওয়া হয় তখন তাঁকে মাফ করার সুযোগ ছিল কিন্তু উপস্থিত জনতা রায় দেয় তাঁকে ক্রুশে দিতেই হবে। রাজা বলে এই রক্তের দায় তোমরা নিবে? জনতা বলে হ্যাঁ, এই রক্তের দায় আমরা, আমাদের উত্তর পুরুষেরা নিবে! বলা হয় সেই রক্তের দায়ের জন্যই আজ পর্যন্ত ইহুদিরা অভিশপ্ত! তেমনই বঙ্গবন্ধু, শিশু রাসেলের রক্তের দায় ঘাড়ে নিয়ে চলছে জাতি। এর মধ্যে আঁতুড়ঘর ভাঙার দায়ও যুক্ত হল!

    ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের এক সপ্তাহ পরে অন্নদাশংকর রায় একটা লেখা লিখেছেন, কাঁদো প্রিয় দেশ শিরোনামে। লেখাটা শেষ করেছে তিনি এই লিখে - 
    "গোটা বঙ্গোপসাগরের জল দিয়ে এই রক্ত মুছে সাফ করা যাবে না। বরং রক্ত লেগে রাঙা হবে বঙ্গোপসাগরের নীল জল।

    কাঁদো, প্রিয় দেশ। তোমার চোখে যত জল আছে সব জল ঢেলে প্রক্ষালন করো এই রক্তাক্ত হাত।"

    আমাদের এখন কী করা উচিত? এত বছর পরেও তো আমরা সেখানেই দাঁড়িয়ে! কাঁদা ছাড়া আর কী করা আছে?  অন্নদাশঙ্কর রায়ের বিখ্যাত কবিতা হচ্ছে যতদিন রবে পদ্মা যমুনা। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যখন খবর ছড়িয়ে পড়ে জেলখানায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হবে তখন লিখেন তার এই বিখ্যাত কবিতাটা। আমি এইটা দিয়েই শেষ করি, এর চেয়ে প্রাসঙ্গিক আর কী হতে পারে আজকের দিনে?

    যতকাল রবে পদ্মা যমুনা
    গৌরী মেঘনা বহমান
    ততকাল রবে কীর্তি তোমার
    শেখ মুজিবুর রহমান
    দিকে দিকে আজ রক্তগঙ্গা
    অশ্ত্রু গঙ্গা বহমান
    তবু নাহি ভয় হবে জয়।
    জয় শেখ মুজিবুর রহমান।
     
    https://shorturl.at/4c5Z9 
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | | | | | | |
  • ব্লগ | ১৫ আগস্ট ২০২৫ | ৫৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত প্রতিক্রিয়া দিন