এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বৈঠকি আড্ডায় আবার ৩৬ 

    হীরেন সিংহরায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৫ বার পঠিত
  • পদ্মপাতায় জল

    এক

    জলপাইগুড়ি/ কলকাতা

    একটা  ব্যাঙ্কের ভেতরে কি হয়,  কে বা কারা তা করে  সে  সব বুঝে নেবার  পালা শুরু হয়েছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার জলপাইগুড়ি ব্রাঞ্চে শিক্ষানবিশী ম্যানুয়ালের প্রথম পর্বে;  সে আজ পঞ্চাশ বছর আগের কথা।  সেভিংস ব্যাঙ্ক বা কারেন্ট অ্যাকাউনট লেজারে তরুণদা,  দীপকদার পাশে বসে বা দাঁড়িয়ে এক সপ্তাহ কাটানোর  পর তাঁরা সস্নেহে বলেছেন , আসেন, এবারে আপনি এই সিটে বসেন  ! নিজে লেখেন।

    ক্যালকুলেটর ছিল না , ব্যাল্যান্স টানতে ভুল হয়েছে , কলম বুলিয়ে পাঁচকে ছয়ের চেহারা দেবার প্রথম প্রয়াসের দিনেই শিক্ষা পেলাম- ব্যাল্যান্সে ভুল হলে ফাউনটেন পেনের কারিগরি  নয় , ভুলটা  সম্পূর্ণ কেটে নতুন করে সঠিক সংখ্যা লিখতে হয়।  এইসব কষ্টার্জিত জ্ঞান বৃথা গেল, হায় পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তার কোন মূল্য নেই।

    টার্ম লোন গোল্ড লোনের পরে একদিন  ক্লিন ক্যাশ বুক লেখার  পালা এলো । সারাদিন ব্যাঙ্কে যা লেন দেন হয়েছে  তার প্রমাণ,  সাবুত অর্থাৎ ডেবিট ক্রেডিট ভাউচার একটি খাতার  ঠিক জায়গায় যথাযথভাবে  লিপিবদ্ধ করলে এক ঝলকে সেদিনের ব্যবসার স্থিরচিত্রটি প্রস্ফুটিত হবে ! এই বিভাগের কাজটা একটু দেরিতে শুরু হয় – প্রদীপের সলতে পাকানোর মতন দিনের দেওয়া নেওয়া, তার ভাউচার লেখা হলে, পাস হলে তবেই না সেগুলি ক্লিন ক্যাশ বুকের টেবিলে এসে পৌঁছুবে।

    ট্রেনিং রুটিন অনুযায়ী দু সপ্তাহ এই ডেস্কে আমার কাটানোর কথা । সোমবার থেকে  দুলালদার পাশে বসে তাঁর কর্ম পদ্ধতি দেখে মনে হয়েছিল এ আর কি! মানুষ নর্থ ফেস দিয়ে এভারেস্ট চড়েছে।  শুক্রবার দুলালদা বললেন  দেখলেন তো কদিন, আজ আপনে  লেখেন দেখি।  মনে রাখবেন ব্যাঙ্কিঙ্গের পাল্লা  মাত্র দুইটা - ডেবিট আর ক্রেডিট, কিন্তু তাদের ঠিক জায়গায় বসাইবেন । আপনার সমস্যা হবে না, আর আমি তো আছিই।  এই বলে  ঐতিহাসিক ব্যাঙ্ক অফ বেঙ্গলের (১৮২০)  চতুর্থ শাখাটির এক দিনের হিসেব নিকেশের দায় আমার ওপরে ন্যস্ত করে দুলালদা আমতলায় চায়ের দোকানে গেলেন।

    বিকেলে যখন ফিরলেন আমার অসামান্য কর্ম দক্ষতার কারণে সে বই নিতান্ত আনক্লিন ক্যাশ বুকের আকার ধারণ করেছে । দুলালদা কিছু বললেন না  কিন্তু তাঁর মুখে বিপন্ন বিস্ময় দেখে খুবই লজ্জা পেলাম ।  দিনের কাজের শেষে ক্লিন ক্যাশ বুক সম্পূর্ণ করা একটি সাংবিধানিক কর্তব্য কিন্তু , জলপাইগুড়ি ব্রাঞ্চের ইতিহাসে সেদিন একটি দুর্ভাগ্যজনক রেকর্ড স্থাপিত হল । দুলালদার সৌম্য মুখে কোন বিরক্তির চিহ্ন নেই,  বললেন , আজ আর নয় কাল সকাল সকাল অফিসে আসুন , আমি ঠিক করে দেব,  আপনি দেখে নেবেন। আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিলেন , ট্রেনিঙের সময় সকলেই ভুল ভ্রান্তি করে , তবে আপনার ভুলগুলির কোন লজিক খুঁজে পাচ্ছিলাম না । তবে চিন্তা নাই, ব্যাঙ্কের কোন আর্থিক ক্ষতি হয় নাই! এ শুধু কাগজ কলমের খেলা ।

    আমাদের মতন কুষ্মাণ্ডদের দ্বারা যাতে ব্যাঙ্কের কোন অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধিত না হতে পারে তার জন্যে  সদ্য কাজে যোগ দেওয়া নভিস অফিসারদের শিক্ষার্থে দেড়শ বছর আগে কিছু প্রাজ্ঞ স্কটিশ ব্যাঙ্কার যে ট্রেনিং ম্যানুয়াল রচনা করেছিলেন, স্টেট ব্যাঙ্ক আজো সেটি মেনে চলে (এমনকি স্টেট ব্যাঙ্কের টেলিগ্রাফিক ঠিকানা ছিল থিসল , এমন একটি ফুল যা কেবল স্কটল্যান্ডে দেখা যায় )।  আমাদের কখনও ক্যাশ ডিপার্টমেন্টে ঢুকতে দেওয়া হতো না। কাগজ কলমের ভুলভ্রান্তি এক আঁচড়ে  বদলানো যায়, নগদ টাকা ফেরানো যায় না।

    শত অপরাধ সত্ত্বেও দু বছর বাদে চাকরি পাকা হলে পর প্রথম কাজ স্টেট ব্যাঙ্কের এক নম্বর স্ট্র্যানড
    রোডের চার তলায় অ্যাডভান্সেস বা কর্পোরেট ব্যাঙ্কিং  বিভাগে।  সেখানে গোলযোগ বাধাতে আমার বেশি সময় লাগে নি।  চিরঞ্জীবদার তত্ত্বাবধানে জুট ফাইনান্সিঙ্গের কাজ বোঝার চেষ্টা করি । মিলের  গোডাউনে যতো পাট জমা আছে তার সবটা নয়, একটা নির্দিষ্ট শতাংশ ফাইনান্স করা হয়। কেলভিন আলেকজান্দ্রা মিলের  গোডাউনে কার কতো কাঁচা মাল, ইন প্রসেস আছে তার হিসেব রাখতেন হাওড়ার নিমাই বাবু, মোহন বাগানের ঘরের লোক ; অফিস কেটে একসঙ্গে খেলা দেখেছি ! কুণ্ডু বাবু আমাদের ভ্রাম্যমান   গোডাউন পর্যবেক্ষক , নিয়মিত  মিল পরিক্রমা করে শ্যেন দৃষ্টি রাখেন –ব্যাঙ্কের পাঠানো  হিসেব মতন  পাট গুদামে আছে কিনা ( তাঁর সঙ্গে ঘুরে  যেটুকু শিখেছিলাম, পাঁচ বছর বাদে হামবুর্গে সেটি ভীষণ কাজে লেগেছিল, আমার জার্মানি বইতে তাঁর কাছে  অপার কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি ) । মেঘনা  মিলের ক্ষেত্রে আমি সে অঙ্কটায় গোলমাল করে ফেলায় তাদের ক্রেডিট লিমিট  বা ড্রইং পাওয়ার নির্ধারিত মাত্রা ছাড়িয়ে যায় । নিমাই বাবু যখন ভুলটা  ধরিয়ে দিলেন কদিন বাদে , প্রথম চিন্তা হল কাজ যাবে না তো ?

    চিরঞ্জীবদা ছুটিতে।  অধোবদনে আমার বড় কর্তা সুপ্রিয় গুপ্ত সায়েবের কাছে গিয়ে অপরাধ কবুল করলাম।  বৈদ্যবাটিতে আদি বসত বাড়ি ,  আমার চেয়ে অনেক উন্নত মার্গের  মোহন বাগান সমর্থক , টিম হেরে গেলে সেদিন অন্নগ্রহণ করতেন না।  আমার হৃদয় বিদারক স্বীকারোক্তি শুনে বললেন, এ হে , কী  যে করেন!  একটু দেখবেন তো ? ওদের  নতুন ক্রেডিট লিমিট  অবধি অ্যাডভাইজ করা হয়ে গেছে । আচ্ছা,  মেঘনার প্রাণকেষ্ট বাবুকে একবার আমার নাম করে অফিসে আসতে বলুন তো। ওঁকে বলে সেটা সামলে নেওয়া যাবে । তবে বম্বেতে আমাদের বোর্ডকে জানিয়ে তাদের পারমিশন নেওয়ার ব্যাপারও  আছে । সেটা একটু শক্ত,  তবে দেখছি।  

    নিমাই বাবু অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে বাইরে বসেছিলেন । গুপ্ত সাহেবের ঘর থেকে বেরুতেই  বৃত্তান্ত জানালাম।  পাশে আমাদের কুণ্ডু বাবু দাঁড়িয়েছিলেন;  বোঝাই গেল ঘটনাটা নিমাই বাবু মারফত শুনেছেন । একটু হেসে কুণ্ডু বাবু বললেন , সিংহরায়,  ভাববেন না, স্টেট ব্যাঙ্কের চাকরি যায় না,  একমাত্র ভল্টের ভেতরের টাকা আপনার  হাতের থলিতে ভরে গেট দিয়ে বেরুনোর সময় যদি দরোয়ানের হাতে ধরা না পড়েন!  

    ঠিক কীভাবে যে গুপ্ত সাহেব আমাকে স্বখাত সলিল থেকে উদ্ধার করেছিলেন কখনো জানতে পারি নি। জার্মানি চলে  আসা অবধি আরও দু বছর কাজ করেছি তাঁর অধীনে। কখনো এ প্রসঙ্গ  তোলেন নি । অবশ্য বাজারে কিছুটা  চাউর হয়েছিল;  আমাদের  অফিসের অসম্ভব রিফাইনড রেসিডেণ্ট ইন্টেলেকচুয়াল দেবাশিসদা  ( ফরাসি জানতেন ,  তাঁর সঙ্গে একটা গোটা দিন পা দে ক্যালেতে কাটিয়েছি ,ফ্রান্সে প্রথম সম্পত্তি কেনার দলিলে সাক্ষী ছিলেন , ঘোর ইস্টবেঙ্গল ) একদিন বললেন, মোহনবাগান আপনাকে বাঁচিয়ে দিলে ! বিলেতে আমেরিকায় ওল্ড স্কুল টাইয়ের কথা শোনা যায়, আপনাদের দেখি মোহনবাগান সিক্রেট সোসাইটি আছে ।

    স্কুল কলেজ ইউনিভারসিটি , প্রথম চাকরি সবই কলকাতায়। কল কারখানায়  স্ট্রাইক , অনশন ধর্মঘট , ফ্যাক্টরিতে  লক আউট , লোক  ছাঁটাই –চেনা শব্দ কিন্তু সে সব ঘটেছে দূরে কোথাও। সরকারি অফিসে , ব্যাঙ্কে কারো চাকরি যাওয়ার কথা শুনি নি। জব ইজ ফর লাইফ।  চেনা শোনা কাউকে কাজ বদলাতেও দেখি নি, যে যেখানে দাঁড়িয়ে অথবা বসে । এ জি বেঙ্গল হোক আর ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক হোক, চাকরিতে ঢোকা মানে জীবনের সদর রাস্তাটির টোল গেট  খুলে গেল, ক্রমশ  বদলি , এ ডিপার্টমেনট হতে সে ডিপার্টমেনট ,ঝাড়সুগুদা থেকে ধুবড়ি , সি এ আই আই বি নামক অ্যাকাউনটিং পরীক্ষা পাস , গ্রেড প্রোমোশন ,  বিয়ে, সন্তান সন্ততি, তাদের পড়া শোনা, বিয়ে , শেষ জীবনে সঞ্চিত অর্থ দিয়ে বাড়ি বানানো, মর্নিং ওয়াক ।

    ফ্রাঙ্কফুর্ট

    সাতের দশকের শেষ নাগাদ ফ্রাঙ্কফুর্টে এসে যে ব্যাঙ্কিং জগতের সঙ্গে পরিচয় হল তাকে  কলকাতার চেয়ে  কিছু আলাদা মনে হয় নি । তবে একটা কেতাবি ব্যতিক্রম  চোখে পড়ল । তখনকার নিয়ম অনুযায়ী সে দেশে নতুন নিযুক্ত মানুষ কর্ম   শুরু করেন প্রত্যেক কোয়ার্টারের প্রথম দিনে - অর্থাৎ  দোসরা জানুয়ারি , পয়লা এপ্রিল, পয়লা জুলাই , পয়লা অক্টোবর। চাকরি ছাড়ার নোটিস দেওয়া যেতে পারে প্রতি নতুন কোয়ার্টারের ছ সপ্তাহের ভেতরে – যেমন ১৫ ফেব্রুয়ারি , ১৫ মে  ইত্যাদি । একত্রিশে ডিসেম্বরের রাতের  খোয়ারি কাটিয়ে উঠে অবশ্যই বসকে বলতে পারেন কাল থেকে কাজে আর আসবো না , হিসেবপত্তর চুকিয়ে দিন । সেক্ষেত্রে আপনার বস বলবেন আপনি বিদায় নিতে পারেন এই কোয়ার্টারের শেষে, ৩১শে মার্চ, ততদিন লগে রহো।  কিন্তু এই সদিচ্ছা যদি ফেব্রুয়ারি মাসের ১৬ তারিখে জাহির করেন, কর্মদাতার  অধিকার আছে সেটি প্রত্যাখ্যান করে আপনাকে জুন মাসের তিরিশ অবধি কাজ করানোর -নিয়মটি দ্বিপাক্ষিক , আমাকে বিদেয় দিতে গেলে কর্মদাতাকে একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে -অন্যথায় ট্রাইবুনাল।  চাকরি বদলের ক্ষেত্রে নতুন কর্মদাতা বিলক্ষণ জানতেন কাজ পেলেই আপনি আহ্লাদে আটখানা হয়ে পরের দিন সুট টাই  পরে সেখানে হাজিরা দেবেন না, আইনত দিতে পারেন না। স্টেট ব্যাঙ্কে আমার সাড়ে তিন বছরের কর্মকালে নতুন মুখ দেখেছি, একাধিক কর্মীকে পদত্যাগ করতে দেখেছি , কাউকে পদচ্যুত হতে দেখি নি।

    গুরু অপরাধের কারণে তাৎক্ষনিক পদচ্যুতির ( ফ্রিসটলোজে কুনডিগুং) বিধান অবশ্যই ছিল। ঘটতে দেখি নি।

    স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ফ্রাঙ্কফুর্টে আমার ওপরে কোন বিভাগের দায়িত্ব বর্তায় নি  , আমি নিজেই ব্যাঙ্কের দায় । কনটিনেনটাল ব্যাঙ্ক ফ্রাঙ্কফুর্টে কাজ শুরু করেই দুটি  দফতর এবং জনা বারো নিরীহ প্রাণীর ভার পেলাম । এক আনাড়ি বিদেশিকে এই কাজের সঠিক ঘাঁতঘোত শেখানোর জন্য একটি ওয়ান টু ওয়ান কোচিঙে পাঠানো হয়।  মাঝ বয়েসি দাড়িওলা ট্রেনার হরস্ট খুবই মজা পাচ্ছিলেন – বললেন , আপনার তো লোক ম্যানেজ করার কোন অভিজ্ঞতা নেই , এ দেশেও আপনি নতুন। তবে কমন সেন্স ( গেফুল ) কারো একচেটিয়া নয় , তা দিয়ে  অনেকটাই বোঝা যায় ! একেবারে গোড়া থেকে  শুরু করি ? প্রথমেই জেনে নিন  আপনি কি কি করতে পারেন আর করতে পারেন না ।  কে কবে কাজ শুরু করতে পারে , সে বা আপনি কবে নোটিস দিতে পারেন ,  সে সব হয়তো আপনি জানেন কিন্তু মনে রাখুন এ দেশে ট্রেড ইউনিয়ন খুব শক্তিশালী - জার্মান লেবার ল অনুযায়ী কাউকে তার কাজ থেকে বিদায় দেওয়া অত্যন্ত কঠিন ।

    সদ্য এক আমেরিকান ব্যাঙ্কে কাজ শুরু করেছি,  এতকাল শুনে এসেছি হায়ার অ্যান্ড ফায়ার তাদের রুল নাম্বার ওয়ান , প্রথম কমান্ডমেনট । তাহলে ?

    ছাঁটাই ? সে বেশ শক্ত । হরস্ট বললেন,  প্রথমেই জানিয়ে  রাখি আপনার হাতে যতোই অকাট্য যুক্তি থাকুক না কেন, যে কোন জার্মান প্রতিষ্ঠানে তিন ধরনের  কর্মীকে  কখনোই বরখাস্ত করা যায় না – ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য, দশ বছরের বেশি একই কোম্পানিতে কর্মরত এবং গর্ভবতী মহিলা।  

    হরস্ট বললেন ব্যাঙ্কিং  আমি বুঝি না , কিন্তু  সেটা  কোন দেশকালে সীমাবদ্ধ নয়  । জানি  তবে আপনাদের ব্যাঙ্কের হেড অফিস শিকাগোতে , কিন্তু সেখানে তাঁরা যেভাবে পারসোনেল ডিপার্টমেনট পরিচালনা করেন সেটি এখানে অচল । ঐ হায়ার অ্যান্ড ফায়ারের গল্প ভুলে যান । আপনি এই অফিসের ট্রেড ইউনিয়নের খাতায় নাম লেখানো  সদস্য , সেটা ভুলে যাবেন না।

    কাজে যোগ দেওয়ার পরেই অফিসের  ট্রেড  ইউনিয়ন নেতার ডাক পেয়েছিলাম  ।

    আমাকে কি সেখানে নাম লেখাতে হবে ? আবশ্যিক ? নেতা মুচকি হেসে বলেছিলেন, আপনি  নিজেকে ম্যানেজমেনটের অংশ বলে মনে করেন তো ? কাল যদি অফিসের  বড়ো কর্তা গিওরগ শেফার আপনাকে বরখাস্ত করার হুমকি দেন , আপনার পাশে দাঁড়াবে কোন ম্যানেজমেনট ?  দাঁড়াবে এই ট্রেড ইউনিয়ন (বেত্রিবসরাট ) আমরা কথা বলব শেফারের সাথে , আপনি একা নন।

    নিজের ইচ্ছেয়  কাজ ছেড়ে দেব ; ট্রেড ইউনিয়ন জানতে চেয়েছে আপনার কোন অসুবিধে হচ্ছিল কি , সহকর্মীর ব্যবহার ,ম্যানেজমেন্টের কোন অন্যায় , ভুলচুক ? অধ্যক্ষ শেফার, সহ অধ্যক্ষ ফরাসি গায়েলকে প্রশ্ন করেছিল,  এঁকে চলে যেতে দিচ্ছেন কেন ?আজ হয়তো অনেক কিছু বদলে গেছে কিন্তু জার্মানিতে আমাদের সেই শ খানেক মানুষের অফিসে শ্রমিক সাথি যে  ট্রেড ইউনিয়নের পরিচয় পেয়েছি তাকে আজও সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করি। আরও মনে রাখি , জার্মানিতে শ্রমিক  ইউনিয়ন সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক দল নিরপেক্ষ।

    লন্ডন নিউ ইয়র্কের সঙ্গে তখনো আমার কোন পরিচয় নেই, সেখানে কি হয় জানি না। চিনি শুধু জার্মানি ।  তবে আটের দশক অবধি  আমার দেখা ব্যাঙ্কিং দুনিয়া অন্যরকম ছিল। ফাইনাসিয়াল সেক্টরে বৃদ্ধির হার অপ্রতিরোধ্য । ফ্রাঙ্কফুর্টে ব্যাঙ্কিং চাকরির বাজার বুমিং,লোক পাওয়া শক্ত , তাড়ানোর প্রশ্নই নেই । আজ চতুর্দিকে রক্তক্ষয়ী নির্মম ইনইউম্যান রিসোর্সের তরবারি চালানো দেখে চার দশকেরও বেশি আগের সেই দিনগুলোর  কথা খুব বেশি করে মনে পড়ে ; প্রতিদিন  সকালে রাইফেল লোড এবং ফায়ার না করেও ব্যবসা চালানো যায় ( যা থেকে হায়ার অ্যান্ড ফায়ার প্রবাদটি এসেছে )। ১৯৮১ থেকে পরের চার বছরে ফ্রাঙ্কফুর্টের কনটিনেনটাল ব্যাঙ্ক থেকে কাউকে চাকরি খোয়াতে  দেখি নি , কয়েকজনকে অন্য ব্যাঙ্কে যেতে দেখেছি।  তার মধ্যে ছিলেন ব্যারনড নাখটিগাল ।  আমাদের দুজনেরই জন্মদিন এক। বিদায় নেবার সময়ে ব্যারনড আমাকে বলেছিলেন, জীবনে একবার মাত্র সুযোগ হয়েছিল এমন কারো সঙ্গে কাজ করার;আপনি হ্যাপি বার্থডে উইশ করলে বলেছি, আপনাকেও ( জার্মানে গ্লাইখফালস ) এটা হয়তো আর ঘটবে না।

    সেই সময় পাশের  দেশ, কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানিতেও কারো কাজ যেতো না,  সেটা  পরে জেনেছি।  

    একদিন সিটি ব্যাঙ্ক লন্ডনে কাজ জুটল ,তাদের  নিয়োগপত্র পেয়ে এক ডিসেম্বর মাসে আমি তৎকালীন বস হাসকো নয়মানের কাছে জানুয়ারির শেষ অবধি মুক্তির আবেদন জানাই , তিনি সেটি মেনে নিয়ে আরও কয়েকটা সপ্তাহ থেকে যেতে বলেন , ইয়ার এন্ড ক্লোজিং চলছে , বিদায় পেতে ২৩শে জানুয়ারি, যদিও আইনত তিনি আমাকে ৩১শে মার্চ  অবধি আটকে রাখতে পারতেন ।

    লন্ডন

    বাড়ির মালপত্র ট্রাকে তুলে দিয়ে স্ত্রী  কন্যা সহ  গ্যাটউইক এয়ারপোর্ট ; ভারতীয় পাসপোর্টে  ফ্রাঙ্কফুর্টের ব্রিটিশ কনসুলেটের সঠিক ছাপ থাকা সত্ত্বেও এক বয়স্ক ইমিগ্রেশন অফিসার পাশের ঘরে নিয়ে গিয়ে কিছু বাড়তি প্রশ্ন করলেন । সব শেষে বললেন, আইন মেনে চলবেন , আর   যাই করুন না কেন,  নো ড্রাংকেন ড্রাইভিং !  আরেক ইমিগ্রানটের জীবন প্রভাত, সামনে কি আছে জানি না তবে দেখি ভিক্টোরিয়া স্টেশনগামী ট্রেনের কামরায় আমার ওপর অগাধ আস্থায় ঘুমন্ত পত্নী ও কন্যার মুখ ।

    সিটি ব্যাঙ্কের যে কনট্র্যাক্টে সই করলাম, তার পুরো চার পাতা খুঁটিয়ে পড়ি নি।  অভাগার কপালে শিকে ছিঁড়েছে এই যথেষ্ট । তবু একটা শর্ত  চোখে পড়েছিল- আমার অনুমোদিত ম্যানেজার পদে যোগদান করতে গেলে বর্তমানে বা ভবিষ্যতে  কোন প্রকারের ট্রেড ইউনিয়নের খাতায় নামে লেখানো হতে বিরত থাকতে হবে ।  আরথার স্কারগিলের কয়লা খনি শ্রমিকদের আন্দোলন ও স্ট্রাইককে  তখন সবলে দমন করছেন মিসেস থ্যাচার ।

    সেদিন সিটি ব্যাঙ্কের সেই কাগজে সই করার সঙ্গে সঙ্গে আমার কাজের কোন  সুরক্ষার সমাপ্তি ঘটল । নিযুক্তিপত্রের  শেষের আগের প্যারা অনুযায়ী এটাও জানলাম  সপ্তাহ খানেকের  নোটিসে চাকরির সীমা শেষ হতে পারে , অবশ্যই যে কোন পক্ষ সে নোটিস দিতে পারে । চাকরি হারালে আদৌ বা কতোটা ক্ষতিপূরণ আমার প্রাপ্য সেটি অলিখিত ।

    পরে যারাই  আমার দফতরে যোগ দিয়েছে তাদের বলেছি জব সিকিউরিটি কাগজ কলমে বা কোন চুক্তিতে নয় , আছে  তোমাদের  দুটো হাতে , তোমাদের ব্রেনে ।  কর্মন্যে বাধিকারস্তে মা বোনাসে কদাচন কথাটার সরল ইংরেজি অনুবাদ শোনাবার  দুর্বার অভিলাষ থেকে নিজেকে সংযত রেখেছি !

    ঝুঁকি বাদে ব্যাঙ্কিং  হয় না , তাকে  চেনা ও সামলানো আমাদের নিত্যি দিনের কাজ ; সে ঝুঁকি কেবল ঋণে নয়, নথিপত্র খুঁটিয়ে দেখাতেও  নিহিত । ধার বা  লগ্নির বিচার বিবেচনায় , ক্রেডিট ডিসিশনে ভ্রান্তি হতেই পারে । ভুল ব্যবসায় টাকা ঢেলে, দুর্নীতির পথে চলে মানুষ দেউলিয়া হয়েছে যুগে যুগে , তাদের সহযাত্রী অর্থ প্রতিষ্ঠানও লাল বাতি জ্বেলেছে ।  অকুপেশনাল হ্যাজারড। কিন্তু শেষ অবধি জানি , মন্দ যদি তিন চল্লিশ , ভালোর সংখ্যা সাতান্ন !

    লন্ডনে এসে দেখলাম ফ্রাঙ্কফুর্টের মতন এখানেও গোটা ফাইনানসিয়াল সেক্টরের পৌষ মাস চলছে , লোক পাওয়া যায় না , নইলে কি আর আমার কাজটা জুটত । ব্যাঙ্কিং তখন একটি  নিরাপদ ও সম্মানিত  পেশা বিবেচিত হতো । যদিও আমরা তাঁদের চিনতে পারিনি তখন , বেশ কিছু মাস্টার্স অফ দি ইউনিভার্স সবে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিঙ্গের মাঠে নেমে চক এবং ডাস্টার লুকিয়ে অঙ্ক কষতে শুরু করেছেন। দেড়  দশক আগে মার্কিন রাষ্ট্রপতি নিক্সন ডলারের সঙ্গে সোনার সম্পর্ক ঘুচিয়ে দিয়েছেন; এক আউন্স সোনার বদলে আর পঁইত্রিশ ডলার মেলে না । যে কোন দুটি  দেশের মুদ্রার বিনিময় মূল্য স্থির হয় জোগান বা চাহিদা দিয়ে নয়, কিছু জুয়াড়ির খেয়াল খুশিতে। শেয়ার বাজারের আইন কানুন ঢিলে , কেনা বেচার ধুম পড়ে গেছে , কে কোন খবর কি ভাবে পেয়ে কোন কোম্পানি কিনছে বা বেচছে তার খোঁজ খবর কে রাখে ।  ব্যাঙ্কের কাজ প্রশ্ন নয়, অর্থ সরবরাহ করা । পুরনো দিনের  কন্ট্রোল বা রেগুলেশান  বাহুল্য মাত্র ,এখন খেলা  খোলা মাঠে ।  ধাবমান  বলের সঙ্গে হুইসল মুখে রেফারির এ মুড়ো থেকে ও মুড়ো দৌড়ুনোর কোন প্রয়োজন নেই । তাঁরা যদি খেলাটা দেখতেই চান, উঁচু মাচার ওপরে বসে একটা নিরাপদ দূরত্ব থেকে বলের  ড্রিবলিং দেখুন, যখন তখন বাঁশি বাজিয়ে সময় নষ্ট করবেন না।

    জলপাইগুড়ি থেকে ফ্রাঙ্কফুর্ট অবধি নিতান্ত সাদা মাটা বোরিং ব্যাঙ্কিং চিনেছি,  জেনেছি , তাতেই পরিবারের অন্ন সংস্থান হয়েছে ।  বেতন বৃদ্ধির মাত্রা সীমিত , বোনাস অকিঞ্চিৎকর কিন্তু আগামী  কাল কাজ থাকবে কি থাকবে না এটা কখনো ভাবতে হয় নি।

    কালের চাকা ঘুরল।

    মনে পড়ে সঙ্গম ছবির প্রথম রেডিও বিজ্ঞাপনে আমিন সায়ানির কণ্ঠ : আগ সে লেকর জিস দেশমে গঙ্গা বেহতি হয় তক রাজ কাপুর নে নউ  ফিল্মে বনাই ; অব শুরু হোতা হ্যায় মনোরঞ্জন কা দসবাঁ য়ুগ – সঙ্গম !

    পাবে , ডিনার পার্টিতে হাই ফ্লায়ারের , হাই ফাইনান্সের কথা শুনি। বুঝি না হাই ফাইনান্স কতটা উঁচু  বস্তু।  নতুন যুগের শুরু হয়ে গেছে এই ১৯৮৫ সালের লন্ডনে , খানিক দূরে নিউ ইয়র্কে;  দ্রুত বদলিয়ে যাবে আমাদের কাজের  চেনা দুনিয়াটা। পরের বছর, অক্টোবর  ১৯৮৬ – লন্ডনের বিগ ব্যাং – স্টক মার্কেটের ব্রোকার আর জবারদের  ( যারা ফ্লোরে দাঁড়িয়ে চিৎকার চেঁচামেচি , হাত তুলে আঙ্গুল দেখিয়ে আপনার অর্ডার অনুযায়ী কেনা বেচা করতেন – ট্রেডিং প্লেসেস ছবির শেষ অংশ টুকুতে তার অসাধারণ চিত্রণ আছে )  কাজ গেল।  ইলেক্ট্রনিক ট্রেডিং শুরু; বিদেশি পুঁজি এ দেশের যে কোন প্রতিষ্ঠান কিনতে পারে , পথে  বাধা নেই। খবরের কাগজে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিং এবং  শেয়ার ট্রেডিংএর কাজে  আকাশছোঁয়া মাইনে,  বোনাসের কাহিনি।  সিটি ব্যাঙ্কের এক তরুণী ট্রেডার , ফিওনা, নিজের  ডেস্কের ওপরে বসে ইভনিং স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তার যে বেতন পাবলিক করলো সেটি  আমাদের মতো কর্পোরেট ব্যাঙ্কের কর্মীদের  তিনগুন ।  আঙ্গুর ফল টক বলে আমরা নিজের কাজে ব্যস্ত থাকি।

    এমন সময় নিউ ইয়র্ক হতে প্রথম বেসুরো বাঁশি শোনা গেল ।  ইভান ফ্রেডেরিক বোসকি নামের এক বাজার  কাঁপানো ডাকসাইটে ট্রেডার স্বীকার করলেন তিনি কোম্পানি সি ই ও, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কারদের কাছ থেকে আগে ভাগে খবর পেয়ে শেয়ারের কেনা বেচা করেছেন ,তাকে নাকি বলে ইনসাইডার ট্রেডিং ;  আইন বিরুদ্ধ।  পাঁচ জন চোরা গোপ্তা খবর পেয়ে শেয়ার মার্কেটে পয়সা কামাবেন আর  বাকিরা হাত কামড়াবেন ?  নিয়ন্ত্রকরা এতদিন কোথায় ছিলেন কে জানে, এবার তাঁদের  রক্তচক্ষু  সকলের দৃষ্টিগোচর হলো – এ ঘোর অন্যায় ,কেহ করিও না । মজার  কথা এই যে  ইনসাইডার ট্রেডিং একটি খারাপ কাজ সেটা অনস্বীকার্য কিন্তু আইনের দড়ি দড়া শক্ত করে বাঁধা হয় নি বলে ইভান বোসকি সেই ফাঁক দিয়ে টু পাইস করছিলেন। ওয়াল স্ট্রিটে কেলেঙ্কারি কখনো কম পড়ে নি যাকে আমরা বলি নেভার এ ডাল মোমেন্ট । বিপদ,  গোলমাল ও  বাজারি  মন্দা একা আসে না ।

    এ দেশে এসে থেকে টেলিভিশনে খবরটা দেখি । আবহাওয়ার কোন দূর্বাভাস ছিল না , বৃহস্পতিবার ভাষ্যকার মাইকেল ফিশ বললেন ,’আজ রাতে হারিকেন হতে পারে এই আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে এক মহিলা বি বি সি কে ফোন করেছিলেন । তাঁর স্বস্তির জন্য জানাই হারিকেন নয়, আজ রাতটা  একটু  ঝোড়ো হতে পারে।‘

    পরদিন , শুক্রবার ১৬ অক্টোবর ১৯৮৭ ঘুম থেকে উঠে দেখি দশ দিক মেঘে বৃষ্টিতে ঝড়ে আচ্ছন্ন , হাওয়ার গতি উঠেছে ঘণ্টায় একশো কুড়ি মাইল ; মাথার ওপরে টালির চালটা টিকে আছে। বিজলি জল গ্যাস  কানেকশন চালু আহে । বৃষ্টি  বাদলা মাথায় করে গোলডারস গ্রিন থেকে স্ট্র্যানডে আমাদের অফিসে গেলাম ; ঠিক সেই  দিনে ওয়েলসের লরা অ্যাশলি কোম্পানির সঙ্গে আমার ১৭ মিলিয়ন পাউনডের একটি ডিল সম্পূর্ণ করতে হবে । তাদের সি এফ ও অ্যানড্রু খুব চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন আমাদের ঘর দোর ঠিক আছে কিনা। কার্ডিফ সোয়ানসি শহরে গাড়ি চলাচল বন্ধ ! জানালাম টি ভির  খবর মোতাবেক ইংল্যান্ড ওয়েলস ফ্রান্সে বিগত কয়েকশো বছরের রেকর্ড  ক্ষয় ক্ষতি-  দু বিলিয়ন পাউনড , এক কোটির বেশি গাছ ভেঙ্গে পড়ে গেলেও , আমাদের বাগানে কোন গাছ অন্তত ভূপতিত হয় নি । শহরে তেমন কোন প্রলয় দেখা গেল না তবে পথ ঘাট জনশূন্য। কিংসওয়ে দিয়ে হেঁটে আসতে গা ছমছম করে।  অ্যানড্রু হাসলেন। দোতলার ট্রেডিং ফ্লোরের গর্ডনের সঙ্গে লিফটে দেখা লাঞ্চের সময়ে । গর্ডন বললে, বাজারে আজ খুব কম লোক কাজে  এসেছে, ট্রেডিং  মাঝে মাঝে  বন্ধ।  এমনটা বড় দেখা যায় না। নিজেদের  বাগানের তদারকিতেই ট্রেডাররা  ব্যস্ত , স্টক মার্কেট মাথায়  থাকুক! আজ সাড়ে বারোটায় নাকি এক্সচেঞ্জ বন্ধ হবে।

    আমি কর্পোরেট ব্যাঙ্কিং,  ট্রেড ফাইনান্সের কারবারি , শেয়ার মার্কেটের খোঁজ রাখি না।  বিকেল নাগাদ বাড়ি চলে গেলাম; জানি না সোমবারের লন্ডন বদলে যাবে ।

    মোটামুটি আবহাওয়ার খবর জানার অলস আগ্রহে বি বি সি দেখছি সন্ধ্যে বেলা, নিউ ইয়র্কের বিকেল;  সব খবর ওয়াল স্ট্রিটের ;  শেয়ার বাজারে সব স্টকের দাম বেড়ে চলেছিল পাঁচ বছর, অর্থ ব্যবস্থাকে লাগাম দেবার জন্য ফেডারাল রিজার্ভ সুদের হার রেখেছেন উঁচু তারে, তিন মাসের ডলারে  ৯% , তবু   মাস খানেক যাবত ডলার ছিল টলোমলো  । শুক্রবার ১৬ই অক্টোবর নিউ ইয়র্কে ষাঁড়ের দৌড় বা বুল রান শেষ , হেমন্তের কাল ফুরনোর আগেই উঁকি দিয়েছে  কি  শীত ভল্লুক?  

    সে সব ঘটছে দূরে কোথাও,  দূরে দূরে । আমি আদার ব্যাপারী ।

    ক্রমশ:

       

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৫ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    পত্তাদকাল - %%
    আরও পড়ুন
    বাদামি - %%
    আরও পড়ুন
    বিজাপুর - %%
    আরও পড়ুন
    হামপি - %%
    আরও পড়ুন
    বেলুর - %%
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন