এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বৈঠকি আড্ডায় আবার ৬

    হীরেন সিংহরায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৩ মে ২০২৫ | ৩১ বার পঠিত
  • বৈঠকি আড্ডায় ৬

    পূর্ব পশ্চিম ৫  

    দিন বদলের  দিন

    “ অবাক হই নি। কিছুদিন ধরে বাতাসে  গুঞ্জন, একটা কিছু ঘটতে যাচ্ছে । আজ না হোক  কাল দেওয়াল একদিন ভাঙবে  । তখন যাবো পশ্চিমে। সেই সন্ধ্যেয় শুনলাম দেওয়াল আছে বটে কিন্তু প্রহরীরা গেট পেরিয়ে যেতে কোন বাধা দিচ্ছে না  । সেটা ছিল বৃহস্পতিবার , বন্ধুদের সঙ্গে  মিলে সনায় (Sauna) আনন্দ স্নানে যাই - ভাবলাম আমরা না হয় আরেকটু  পরে যাবো , গেট যখন খুলেই  গেছে । তবে সেই খুশিতে  আমরা কয়েকজন বিয়ারের ক্যান খুলে ফেলেছিলাম ! একটু রাতের দিকে সবাই মিলে পশ্চিম বার্লিনে ঢুকেছি , আরও হাজার মানুষের ভিড়ে । এর আগেও একবার গিয়েছিলাম , ১৯৮৬ সালে , ঐ চব্বিশ ঘণ্টার ভিসায় ,  সত্যি বলতে কি খুব নিরাপদ বোধ  করি নি ।  এমন নয় যে বিদেশে কোথাও যাই নি । যেমন গিয়েছি বুদাপেস্ট বা  মস্কো - সে সব শহরে নিজেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ বোধ করেছি , ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতে হয় নি  পিছনে কেউ অনুসরণ করছে কিনা ।  অন্যদিকে আমরা নিয়মিত পশ্চিম জার্মানির টেলিভিশন প্রোগ্রাম দেখতাম,  সেখানে  ক্রাইম , খুন খারাবি নিয়ে সিরিয়াল হয় ; এমন সব ঘটনা প্রাত্যহিক জীবনে ঘটে যা আমার দেশে কল্পনার বাইরে ছিল।“ *

    ( ঠিক সেই সময়ে যে  প্রতি তেষট্টি জন পূর্ব জার্মানের গতিবিধি লক্ষ করার জন্য একজন স্তাসি কর্মচারী মোতায়েন ছিলেন এ কথাটা আঙ্গেলা মেরকেল বললেন না । তাঁর কাছে আভ্যন্তরীণ সুরক্ষা বজায় রাখাটা জরুরি ,নাগরিকের ব্যক্তি স্বাধীনতা নয়?)

     
    ছত্রিশ বছর বয়েসে আঙ্গেলা মেরকেল দ্বিতীয় বার পশ্চিম বার্লিনে গেলেন ৯ নভেম্বর ১৯৮৯ ।  এবার পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়াই । আজ আমরা  বার্লিন দেওয়ালের  পতনকে  যুগান্তকারী ঘটনা বলে মনে করি কিন্তু সেই দিন, ৯ই নভেম্বরের সন্ধ্যেয় আঙ্গেলা মেরকেল অভিভূত হন নি;  বৃহস্পতিবারে সনায় সময় কাটানোর রুটিন ভাঙ্গাটা তিনি প্রয়োজনীয় মনে করেন নি ।  বরং সেদিনের ব্রানডেনবুরগ থেকে ঊনটার ডেন লিনডেনে ধেয়ে যাওয়া  বাঁধভাঙ্গা জনতার স্রোতের মাঝে  নিজেকে নিরাপদ বোধ করেন নি।

    যে সমাজ  ব্যবস্থায় তিনি বড়ো হয়েছেন সেখানে সবার কাজ ছিল, পেনশন ছিল এবং নিরাপত্তা ছিল , সে কি শুধুই সুশাসনের,  রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশি উপস্থিতি ও  তৎপরতার কারণে ? না।  সব নাগরিক যে রাষ্ট্রের নজরে বন্দি!

    এই দফতরের নাম মিনিসটিরিউম ফুয়ের স্টাটসজিখারহাইট,  লোকমুখে স্তাসি। শুধু পাড়ার পুলিশ নয় , কালো কোট , কালো চশমা পরে চুরুট মুখে কিরীটী দত্ত স্টাইলের কোন নির্দিষ্ট গোয়েন্দা নয় ; এখানে সবাই লক্ষ রাখে সবার ওপরে । বিগ ব্রাদার ইজ নট ওয়াচিং ইউ , এভরি ওয়ান ইজ ওয়াচিং এভরি ওয়ান! যখন সব্বাই সবার ওপরে নজর রাখে সেখানে অপরাধ করার দুঃসাহস কার হতে পারে ? কার ঘাড়ে কটা মাথা ? এতদ্বারা দেশের ও দশের সুরক্ষা এবং মঙ্গল সুনিশ্চিত।

    স্তাসির ফাইল থেকে এই অপারেশনের একটা চিত্রনাট্য পাওয়া যায়।  

    আপনি কারোর প্রতি লক্ষ রেখেছেন ,  সন্দেহজনক গতি দেখেছেন , আপনার সাগরেদ আছে দূরে একটা ল্যাম্প পোস্টের কোনায় । তাকে কিভাবে চিনিয়ে  নির্দেশ দেবেন  ?  সিগনাল কোড কি?

    অ্যাক্ট ওয়ান

    সিন ওয়ান

    আপনার সাবজেক্ট  আসছে – হাত বা রুমাল দিয়ে নাকটা ছোঁবেন।  

    সিন টু
    সাবজেক্ট  ক্রমশ দূরে চলে যাচ্ছে – আপনার হাত দিয়ে চুলে বিলি কাটুন।

    সিন থ্রি

    সাবজেক্ট  ফিরে আসছে – একটা  হাত মাথার পিছনে রাখুন 
     


    সিন ফোর
    আপাতত সাবজেক্টের অনুসরণ স্থগিত  করবেন।  সাগরেদকে জানাতে হবে

    আপনি জুতোর ফিতে বাঁধুন।  

    এই মুক নাটিকা অনুষ্ঠিত হয়েছে, চল্লিশ বছর ধরে । শুধু পূর্ব জার্মানি নয় পূর্বের অনেক দেশে , এস্টোনিয়া থেকে  ইউক্রেন কাজাখস্তান হাঙ্গেরি রোমানিয়া  । কোড হয়তো আলাদা, কিন্তু নাট্যবস্তুটি একেবারে এক।  সবাই সবার খবর রাখে ; কে কার সঙ্গে দেখা করছে , কোথায়, কতক্ষণের জন্য, কাকে ফোন করছে , কার দাম্পত্য জীবন কি রকম , ছেলে মেয়ের সঙ্গে পিতা মাতার সম্পর্ক, কেউ রেডিও ফ্রি ইউরোপ শোনে কি না ( পূর্ব বার্লিনে ও তার আশে পাশে পশ্চিমের টি ভি , বেতার  তরঙ্গ আটকানো বা জ্যাম করা অসম্ভব ছিল – কেবল কোন কারণে ড্রেসডেনে কিছুতেই পাওয়া যেতো না )  শ্রমিক কৃষকের স্বর্গ রাজ্য ত্যাগ করার প্ল্যান করছে কিনা কেউ ।  খবর সংগ্রহের স্থল প্রত্যেক স্কুল,কারখানা, অফিস, অ্যাপারটমেনট ব্লক, পাব , খেলার মাঠ । মনে রাখা ভালো জার্মান পুরুষ -পূর্ব বা পশ্চিমে-  ঐতিহাসিকভাবেই  কোনো না কোন ক্লাবের ( ফেরাইন ) সদস্য ;  মাছ ধরা, শিকার করা, ক্যানো বাওয়া , ফুটবল, হ্যান্ড বল কী নয়।  একথা স্বছন্দে বলা যায় দুজন জার্মান একত্র হলেই একটা ক্লাব খোলে  ; শনি রবি সেখানে জমায়েত , কফি বিয়ার তাস দাবা পাশার আড্ডা; সকল প্রকার গুজবের বিশাল ডিসট্রিবিউশন সেন্টার ।

    এই যে নাগরিককে চোখে চোখে রাখা, এটা খুব নতুন কিছু ? দামাস্কাস থেকে জেরিকো,  দুনিয়ার ইতিহাসে গুপ্তচরদের নিযুক্তি এবং তাদের রমরমা , সে অন্তত হাজার দশেক বছরের পুরনো সিভিল সার্ভিস। এখানে অবশ্য বলতেই হয়  অথরিটি , অর্ডার এবং  ইউনিফর্মের সামনে নতমস্তক হবার জার্মান অভ্যেসটি সহজাত । প্রাশিয়ানরা একে উচ্চাঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন,  আজ এই একবিংশ শতকেও বদলায় নি । স্তাসির পূর্বসূরি , নাৎসি আমলের গুপ্ত পুলিশ , গেস্টাপোর অপারেশন ঠিক একই রকম ছিল ।  কে যে কাকে কখন ধরিয়ে দেবে কেউ জানে না , সকলে সেই আতঙ্কে বাস করেছে ।  এর নাম ছিল   নাখট ( রাত) উনড  নেবেল( কুয়াশা ), মানুষ অদৃশ্য হয়ে যেতেন রাতে অন্ধকারে, কুয়াশার ধোঁয়ার ভেতরে।

    জনজির ছবিতে ( ক্লিনট ইস্টউডের ডারটি হ্যারির হিন্দি ভার্সন ) থানায় এসে গুন্ডা দলের সরদার শের খান (প্রাণ ) দারোগা অমিতাভ বচ্চনের উলটো দিকে চেয়ার টেনে বসতে গেলে বচ্চন সেটি লাথি মেরে ফেলে দিয়ে বলেন ,যতক্ষণ বসতে না বলা হচ্ছে , দাঁড়িয়ে থাকো । জবাবে প্রাণ বলেন, আপনি নয়, আপনার ওয়রদি , ইউনিফর্ম আর আপনার চেয়ার এ কথা বলছে ।

    ইউনিফর্মের প্রতি জার্মান জাতির অবিচল আস্থা ও নিঃশর্ত  আত্মসমর্পণের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়েছিল বার্লিন দেওয়াল ভাঙ্গার পনেরো দিন বাদে।


     
    স্তাসি অফিস রুনডে একে
     
    দিতরিখরিং ৪ লাইপৎজিগ 
     

     
    ১৯৫০-১৯৮৯ আঞ্চলিক প্রশাসন রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা লাইপৎজিগ 
     
    ৪ ডিসেম্বর ১৯৮৯ সোমবারের বিক্ষোভের দিন নাগরিকেরা এই প্রশাসন অফিস দখল করেন 
     
    ডিসেম্বরের চার তারিখে হাজার কয়েক  ক্রুদ্ধ জনতা প্রবেশ করতে চায় লাইপৎজিগের ৪ নম্বর দিতরিখরিং স্তাসি অফিসে ( গোল কোনা -রুনডে একে ) -  কোন ফাইল যেন স্তাসি জ্বালিয়ে না দিতে পারে ;  সকল পাপের সাক্ষী থাকুক । সবটাই ঘটছে অতি দ্রুত , সামরিক পোষাকে সজ্জিত স্তাসি বাহিনীর ওপরে কোন নির্দেশ ছিল না। এই আকস্মিক আক্রমণে প্রথমে বিভ্রান্ত হলেও  রক্ষীরা চিরাচরিত অভ্যাস মতন বললেন , আগে আপনাদের আইডেন্টিটি কার্ড দেখান ! প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন সমাগত  হাজার হাজার  মানুষ তৎক্ষণাৎ  জনা পঁচিশ স্তাসি রক্ষীকে তাঁদের পরিচয় পত্র দেখিয়ে লাইন দিয়ে অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে  স্তাসি দফতরে ঢুকে চেয়ার টেবিল ভাঙ্গেন কিন্তু একটিও ফাইল নষ্ট করেন নি।  
     

     
    রাশি রাশি ভারা ভারা ফাইলের সারি 

    নাগরিককে নজরে রাখার টেকনিকের পেটেন্ট পূর্ব জার্মানি রেজিস্টার করে নি ।  ; সি আই এ , কে জি বি , ব্রিটেনের এম আই সিক্স , ফ্রান্সের সুরেত , আমাদের লাল বাজার সবাই আপন দেশের নাগরিকদের ওপরে  নজর রাখেন ,কেউ বেশি কেউ কম , কেউ গোচরে কেউ গোপনে । জর্জ অরওয়েল সেটির বিষয়ে আমাদের আরও বেশি অবহিত করেছেন  মাত্র। তবে পূর্ব জার্মান সরকার যথার্থ জার্মান দক্ষতায় এটিকে অনেক  উঁচু লেভেলে  নিয়ে  গিয়েছিল । তাঁদের এই নাগরিক পর্যবেক্ষণ  বিভাগে অফিশিয়াল  ইনফরমারের সংখ্যা প্রায় দু লক্ষ ; অধিকন্তু  ছিল আরও এক বাহিনী যাদের অফিস ছিল না , কাজ করেছেন সাদা পোষাকে,  দেশের মঙ্গলের কথা ভেবে অথবা চাকরিতে উন্নতির আশায়, একেবারে মুফতে ( কমিউনিস্ট পার্টির মেম্বারশিপের খাতায় নাম না লেখালে পদোন্নতি হবার আশা ক্ষীণ ,নাৎসি আমলেও একই ব্যাপার ছিল ;  ১৯২৪ সালে নাৎসি পার্টির সদস্য  সংখ্যা ২৪ হাজার , ১৯৪৪ সালে প্রায় এক কোটি  )

    এঁরা প্রতিবেশীর খবরাখবর সরবরাহ করেছেন আরেক প্রতিবেশীকে,  তিনি  স্তাসির সঠিক ডিপার্টমেন্টে সেই তথ্য পৌঁছে দিয়েছেন।

    একটি বুলেট খরচা না করে,  জেলখানার ভিড় না বাড়িয়ে অবাঞ্ছিত নাগরিকদের  দেশ থেকে সরিয়ে দেওয়ার আরেক অস্ত্র ছিল পূর্ব জার্মানির  কমিউনিস্ট সরকারের হাতে -অর্থের বিনিময়ে মানুষ রপ্তানি । কেউ  বেশি বেগরবাই করলে তাকে পশ্চিম জার্মানি পাচার করলে হার্ড কারেন্সি, ডে মার্ক পাওয়া যেতো , সংখ্যাটা নির্ভর করতো পলায়ন প্রয়াসীর বয়েসের ওপরে । ষাটের বেশি হলে রাষ্ট্রের অর্থনীতিক উন্নয়নে তাঁদের ভূমিকা শূন্য বলে তাঁদের ভাগ্যে জোটে, ফুটবলের পরিভাষায়,   ফ্রি ট্রান্সফার ! অবাঞ্ছিত নাগরিকের  সংখ্যা ম্যানিপুলেট করার এই  সুবিধেটা আর কোন পূর্ব ইউরোপীয় কমিউনিস্ট দেশের ছিল না।

    এই মস্তক বিনিময়ের দ্বার সতত উন্মুক্ত – তার গোপন রহস্য পশ্চিমের ফেডারেল রিপাবলিক অফ জার্মানির সংবিধানে নিহিত ; ১৯৪৯ সালের সংবিধান  অনুযায়ী  জার্মানি এক অভিন্ন, অচ্ছেদ্য দেশ ( অখণ্ড ভারত!)। দ্বিতীয় জার্মানির অস্তিত্বকে তারা স্বীকার করে নি । তাই পূর্ব থেকে পলাতক কোন জার্মান  তাঁদের সীমান্ত পেরুলেই  হাতে পেতেন ঈগল লাঞ্ছিত পশ্চিম জার্মান পাসপোর্ট , তাঁরা আমাদেরই লোক !  ১৯৪৯ থেকে পূর্ব জার্মান রাষ্ট্রের পতন অবধি চল্লিশ বছর কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানি ও পুঁজিবাদী পশ্চিম জার্মানির মধ্যে আমদানি রপ্তানির ওপরে কোন  কর প্রযোজ্য ছিল না -দেশ যখন একে তখন ড্রেসডেন থেকে ফ্রাঙ্কফুর্টে মাল পাঠালে কর বা শুল্ক দিতে হবে কেন ?   তাদের বিনাশুল্কে পশ্চিম জার্মানিতে পাঠানো দ্রব্য সামগ্রী আবার বিনা শুল্কে বিক্রি হয়েছে ফ্রান্স, ইতালির বাজারে । করমুক্ত, অবাধ বেচা কেনা ! ঠাট্টা করে বলা হতো পূর্ব জার্মানি কার্যত ইউরোপীয় সাধারণ বাজারের সদস্য । এমনও সন্দেহ করা গেছে  রাশিয়া বা হাঙ্গেরি থেকে কেনা দ্রব্যাদি  পূর্ব জার্মানি ইউরোপীয় বাজারকে বিক্রি করেছে , বিনা ট্যাক্সে ! আশ্চর্যের বিষয় এই যে ব্রাসেলসের কর্তারা সব জেনে শুনেও চোখ বুজে ছিলেন ।

    লাইপৎসিগের  স্তাসি দপ্তরের (  নাম রুনডে একে, গোল কর্নার ) ফাইল গুলি পাশাপাশি রাখলে তার দৈর্ঘ্য হবে ১৮০ কিলো মিটার । কিন্তু এত বিশাল রিসার্চ সত্ত্বেও  স্তাসির ব্যর্থতা প্রতিপন্ন হল  যেদিন বোঝা গেল মাটির এতো কাছাকাছি কান রাখা সত্ত্বেও তারা  বুঝতে পারে নি কখন সাম্যবাদী সরকারের  দিন ফুরিয়েছে।


     
    আমার ফাইল আমাকে দাও 
     
     
    স্তাসি বজায় রেখেছিল  আভ্যন্তরীণ সুরক্ষা, রাত বিরেতে চোর ছ্যাঁচোর উৎপাত করে না , মেয়েরা নির্ভয়ে যত্র  তত্র ঘুরে বেড়াতে পারেন। শান্তি অক্ষুণ্ণ ছিল চার দশক। ছত্রিশ বছর বয়েস অবধি আঙ্গেলা মেরকেল যে সমাজ ব্যবস্থাকে চিনেছেন জেনেছেন, সেখানে ব্লু জিনস বা ম্যাক্স ফ্যাক্টরের লিপস্টিক পাওয়া না গেলেও ক্রিমিনালিটি অথবা চোর  বাটপাড়ের ভয় ছিল না। তার ক্রেডিট সম্পূর্ণ ভাবেই স্তাসির প্রাপ্য ।

    জার্মান গণতান্ত্রিক রিপাবলিকের বিপদ যেমন আসতে পারে নিজের দেশের নাগরিকের কাছ থেকে,  তেমনি  বন প্যারিস ব্রাসেলস থেকেও । এই বিদেশি শক্তিরা তাদের বিরুদ্ধে কোন প্যাঁচ কষছে সেটি জানা দরকার : অলওয়েজ টু স্টেপস অ্যাহেড ।  তার দায়িত্ব ছিল আরেকটি  দফতরের হাতে , হাউপটফেরভালটুঙ্গ আউফক্লেয়ারুঙ্গ ( সংক্ষেপে HVA) বা পর্যবেক্ষণ প্রশাসন । তাদের কাজ  সাম্যবাদের  সর্বনাশ সন্ধানী  বিদেশি শত্রুর ওপরে চোখ রাখা, তাদের প্ল্যানকে মূলেই বিনাশ করা , ফেক নিউজ ছড়ানো , সে সব দেশের ভেতরে বিবাদ সৃষ্টি করা ।

    পূর্ব জার্মানির সবচেয়ে বড়ো  শত্রু কে ? পশ্চিম জার্মানি ! অতএব রাষ্ট্র শক্তি পুরো দমে লেগে যায় সে দেশের মতি গতির অনুসন্ধানের কাজে । ভাষা এক,  চেহারা এক , মাছ যেমন জলে , পুবের গোয়েন্দারা তেমনই দ্রুত ছড়িয়ে পড়েন পশ্চিম জার্মানিতে। সাফল্য আসে শিগগির । এককালে নাৎসি দলের সদস্য  গুইন্থার গিওম ও তার স্ত্রী ক্রিসটেলকে  ১৯৫৬ সালে প্রচুর অর্থ সহ পশ্চিম জার্মানিতে পাঠানো হয় , তাঁর বয়েস  মাত্র তিরিশ । নাম পরিচয় ভাঁড়িয়ে তিনি বন শহরে পশ্চিম জার্মান সরকারের প্রশাসনে যোগ দিলেন , কাজের লোক বলে খ্যাত হলেন। ১৯৭২ সালে পশ্চিম জার্মানির প্রথম সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট চ্যান্সেলর ভিলি  ব্রান্ডের  চিফ সেক্রেটারির  পদে অধিষ্ঠিত হলেন। অনেক স্তাসি ফাইল খোলার পরে  জানা গেছে  পশ্চিমের কোন  গভীর রন্ধ্রে স্তাসি প্রবেশ করেছিল।

    চ্যান্সেলর হবার আগে উইলি ব্রান্ড প্রায় দশ বছর বার্লিনের মেয়র ছিলেন , অসম্ভব জনপ্রিয় , ব্রানডেনবুরগ তোরণের সামনে তাঁরই আয়োজিত সভায় জন কেনেডি বিখ্যাত ‘ ইখ বিন আইন বেরলিনার’  ভাষণ দিয়েছিলেন ।  ব্রান্ডই প্রথম চ্যান্সেলর যিনি  সীমানা পেরিয়ে  এরফুরটে পূর্ব জার্মানির পার্টি প্রধান উইলি স্টফের সঙ্গে হাত মেলান,সেই অস্টপলিটিক বা পুবের রাজনীতির  পত্তন । পূর্ব পশ্চিমের মুখ দেখা দেখি শুরু হয় ,  সম্পর্ক সহজ করে তোলেন , মস্কো চুক্তিতে (১৯৭০ )  সই করে পোল্যান্ডের যুদ্ধোত্তর সীমান্তকে স্বীকার করেন ( স্তালিন পূর্ব পোল্যান্ডের খানিকটা অংশ দখল করে নিয়ে পোলিশ সীমান্তকে আরও পশ্চিমে ঠেলে দিয়েছিলেন ) ।  আমি  তাঁকে মনে রাখি  একটি বিশেষ কারণে- খবরের কাগজে ছবিতে দেখেছি পোল্যান্ড সফরে গিয়ে  ওয়ারশ ঘেটোর স্মারকের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছেন ব্রান্ড , নিজের মনেই নীরবে জার্মান জাতির হয়ে  হয়তো ক্ষমা চেয়েছিলেন। (Kniefall von Warschau )।  


     
    ওয়ারশ ঘেটো অভ্যুত্থানের ২৭ বছর পরের ( ১৬ এপ্রিল- ১৯ মে ১৯৪৩)  একদিন সেই স্মারকের সামনে হাঁটু গেড়ে বসেছেন ভিলি  ব্রান্ড 
     
    ৭ই ডিসেম্বর ১৯৭০ 


     ১৯৭২ সালে অস্টপলিটিকের ইস্যুতে চ্যান্সেলর ভিলি  ব্রান্ডের  বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এলে জার্মান পার্লামেন্টের অন্তত তিনজন সদস্যকে ব্রান্ডের সমর্থনে ভোট  দেবার  জন্য উৎকোচ প্রদান করা হয়েছিল। পূর্ব জার্মানির কাছে  ব্রান্ড তখন প্যারা আদমি;  তিনি আপন চাকরি বহাল রাখেন । **  দু বছর বাদে পূর্ব জার্মান স্পাই চক্র ধরা পড়লে ব্রান্ড তাঁর পদ খোয়ালেন , একশো বছরের ইতিহাসে এ ধরনের পরিস্থিতিতে   কোন জার্মান চ্যান্সেলর চাকরি হারান নি । স্তাসি পরে স্বীকার করে এটি তাদের সবচেয়ে বড়ো ভুল।  

    পশ্চিম জার্মান আদালতে আট বছরের কারাবাসের সাজা হল কিন্তু জেল যাত্রার আগে পূর্ব জার্মান সরকারের গুপ্তচর বিনিময়ের প্রস্তাব অনুযায়ী গুইন্তার গিওম দেশে ফিরলেন; পশ্চিম জার্মানির স্পাই রিং  একই ধারায় বার্লিন লাইপৎসিগে কর্মনিষ্ঠ , তাদেরও ফেরাতে হবে যে ! গুপ্তচর দেশে দেশে।

    পুবের জার্মান গণতান্ত্রিক রিপাবলিকের দিন ফুরুলো  ১৯৯০ সালে কিন্তু এই পুনর্মিলিত দেশে গিওম পেলেন অ্যামনেসটি, কোন সাজা হবে না। তবে শর্ত -মুখটি খুলবেন না । পূর্ব পশ্চিম দু দেশেরই আলমারিতে তথ্য লুকনো আছে যে !


     
    গুইন্থার গিওম , ভিলি  ব্রান্ড 

    স্পাইঙ্গের ব্যাপারে কেউ ধোয়া  তুলসী পাতা নন । পশ্চিম জার্মানিতে  ভিজবাদেনের বুন্দেস ক্রিমিনাল আমট ( BKA) তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়েছে একই প্রক্রিয়ায় । সাতের দশকে ভারতীয় পাসপোর্টে জার্মানি ঢোকার সময়ে অটোবানের চেক পয়েন্টে তার ছবি নেওয়া হলে আমরা বলতাম এটা ভিজবাদেনের ক্রিমিনাল আমটে চলে গেলো!

    ১৯৯০ সালে যখন স্তাসির ফাইল খোলা শুরু হলে পর পশ্চিম থেকে বার্তা এলো – সব ফাইল জন সমক্ষে এখুনি খুলে ফেলার প্রয়োজন নেই।  কিছু এখন, কিছু পঞ্চাশ বছর বাদে , বাকি ফাইল সরকারের মরজি অনুযায়ী । এখন বুঝ গুণী যে জানো সন্ধান - এই রাখ ঢাক খুলে পড়লে হারানোর ভয় কাদের বেশি ? পূর্ব জার্মানির স্তাসি তো  দাগি আসামি, রোজ কারো না কারো গুপ্তকথা চাউর হচ্ছে  । ভয় পশ্চিমের ! তাদের কোন নেতা কোন কর্মটি করেছেন তা যদি জানাজানি  হয়ে যায় !

    পূর্ব জার্মানির প্রথম মুক্ত নির্বাচনে বিজয়ী নেতা লোথার দে মাজিয়েরে বনের পার্লামেন্টে চ্যান্সেলর হেলমুট কোলের পাশে সগর্বে আসন গ্রহণ করেছিলেন । কয়েক মাসের মধ্যেই জানা গেল তিনি স্তাসির কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন , পদত্যাগে বাধ্য হলেন । তিনি অবশ্য একা নন , আরও অনেকের অস্বস্তিকর অতীত বর্তমানে হানা দিয়েছে ।

    নাৎসি আমলে ঘটিত সকল অন্যায়ের  অপরাধবোধ নিয়ে একটা  জাতি বেঁচে থাকতে পারে না ।  মনের,  বিবেকের সঙ্গে বোঝাপড়া করে নিতে হয় , অথবা নিত্যি দিন সেই পাপে দগ্ধ হতে হয়। অতএব  জার্মানকে অতীতের  সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়েছে , হয় (ফেরগাঙ্গেনহাইটসবেভেলটিগুংগ , অতীতের মোকাবিলা )- সেটা কখনো অস্বীকৃতি (আমরা জানতাম না )  কখনো মৃদু প্রতিবাদ অথবা নিছক নীরবতা ।  

    জার্মান গণতান্ত্রিক রিপাবলিকের মানুষের মাথা পিছু আয় , তাঁদের জীবন যাত্রার মান সোভিয়েত প্রভাবিত তাবৎ কমিউনিস্ট দেশের মধ্যে সবার ওপরে।  সেখানে কেউ বেকার নয়, শিক্ষা স্বাস্থ্য ফ্রি,  পথ ঘাট নিরাপদ । হোনেকারের কমিউনিস্ট সরকার জানিয়ে দিয়েছেন  নাৎসি সময়ের অন্যায় অবিচারের কোন দায় তাঁদের ওপরে বর্তায় না। তাহলে কি তাঁরা পশ্চিম জার্মানির সঙ্গে মিলবেন সমানে সমানে ? নাকি সঙ্গে নিয়ে আসবেন  আরেক বোঝা,  পূর্ব জার্মানির সাম্প্রতিক কমিউনিস্ট অতীত?  

    তার মোকাবিলার  কি  উপায় ?   উপেক্ষা ?

    ক্রমশ

    *আঙ্গেলা মেরকেল ইন্টারভিউ, গার্ডিয়ান ৫ নভেম্বর, ২০০৫

    **ডের স্পিগেল সাপ্তাহিক পত্রিকা; নিবন্ধ (স্তাসি কর্মকর্তা হের বনসাকের স্বীকারোক্তি)  ভলুম ২৯, ১৯৯১ পৃষ্ঠা ২৩৭,২৪২

    চ্যান্সেলর উইলি ব্রান্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট :২৭শে এপ্রিল, ১৯৭২

    ছ মাস আগে উইলি ব্রান্ড নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন তাঁর অস্টপলিটিকের সুবাদে , ঠাণ্ডা লড়াইয়ের মাঝে তিনি পূর্ব পশ্চিমের প্রথম সংলাপ শুরু করেছিলেন।  ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্র্যাটিক দলের নেতা রাইনার বারতসেল উইলি ব্রান্ডের অস্টপলিটিকের ঘোর  বিরোধী।  ব্রান্ডের কোয়ালিশন পার্টনার ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক দল, তাদের কে কোন দিকে যাবে বোঝা শক্ত  এমনই অবস্থায় পশ্চিম জার্মানির ইতিহাসে চ্যান্সেলরের প্রতি প্রথম অনাস্থা প্রস্তাব। বুন্দেসটাগে ৪৯৬ জন সদস্য , ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্র্যাটিক দলের নেতা রাইনার বারতসেলের দরকার ২৪৯ । তিনি ধরেই নিয়েছিলেন উইলি ব্রান্ড অনাস্থা ভোটে হারবেন;  নতুন ক্যাবিনেটের মন্ত্রীদের নামের  খসড়া করে ফেলেন লাঞ্চের সময়ে । বেলা দেড়টায়  স্পিকার ফল ঘোষণা করলেন :অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ২৪৭ বিপক্ষে ২৪৯ ।  ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্র্যাটিক দলের ইউলিয়ান স্টাইনার স্বীকার করেন তিনি বারতসেলের পক্ষে ভোট দেন নি ( ঘুষের পরিমাণ ৫ লক্ষ ডে মার্ক বলে অনুমিত) বাকি নাম অজানা রয়ে গেছে । ১৯৯১ সালে স্তাসির হের বোনসাক সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে ঘুষ দেওয়ার কথাটি ফাঁস করেন;  স্তাসি কর্নেল রলফ ভাগেনব্রেথ বলেন তাঁরা ইতিহাসের চাকা ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন সেটি সম্ভব হলো ব্রান্ডের পতন হলেও তাঁর উত্তরসূরি হেলমুট শ্মিড  অস্টপলিটিক অব্যাহত রাখেন। 
     
    পশ্চিম থেকে এই আরোপের বিরুদ্ধে কোন সশব্দ  প্রতিবাদ শোনা যায় নি।

    ফল কি হলো ? চাকা ঘুরল সেদিকেই যেটি পূর্ব জার্মানি চাইছিল -ব্রান্ডের বিজয় ; দু বছর বাদে গুইন্থার গিওমের কারণে তিনি গদি হারালেন কিন্তু ততদিনে ব্রান্ডের অস্টপলিটিক শক্ত শেকড় গেড়েছে।

    অন্যদিকে এই প্রায় জেতা ভোট হেরে গিয়ে পুব পশ্চিমের মধ্যে কোন প্রকারের সমঝোতা বিরোধী নেতা রাইনার বারতসেল আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেন নি   তাঁর এই পরাজয় জার্মান রাজনীতির এক অজানা নাম হেলমুট কোলকে ( শ্মিড তাঁর সম্বন্ধে বলতেন রাইনের স্রোতে ভেসে আসা এক অর্বাচীন  )  নিয়ে গেল  এক ঐতিহাসিক উচ্চতায় ;১৯৮২ সালে হেলমুট শ্মিডের কোয়ালিশন সরকার ভাঙ্গিয়ে তিনি চ্যান্সেলর হলেন,  ১৯৯০-১৯৯৮ মিলিত জার্মানির  চ্যান্সেলর , চ্যান্সেলর অফ ইউনিয়ন ।  পরে জানা গেছে স্তাসি নিয়মিত তাঁর  ফোন ট্যাপ করেছে ;প্রসঙ্গত  বিভিন্ন সময়ে তিনি হলদে রঙের বেনামা লেফাফায় পার্টির চাঁদা নিয়েছেন এই অভিযোগ উঠেছিল। 
     

     
    হের কোল আপনার ফাইলও এখানে আছে

    সূত্রাদি

    ডের স্পিগেল আরকাইভ , স্পিগেল টি ভি
    বুন্দেসটাগ ওয়েবসাইট

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৩ মে ২০২৫ | ৩১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন