এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়, বিপর্যয় পুর্বাভাস ও আমাদের না-মানুষী সহবাসীরা

    Somnath mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০১ আগস্ট ২০২৫ | ৫৩ বার পঠিত
  • ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়, বিপর্যয় পুর্বাভাস ও আমাদের না-মানুষী সহবাসীরা।

    সেদিন চৈত্রমাস। প্রচণ্ড গরমে সবাই একেবারে হাঁসফাঁস করছি। পিঠময় ঘামাচি, নাগাড়ে চুলকে চুলকে একশা। এই অসোয়াস্তির কথা পুটুমার ( আমার মায়ের দিদিমা,শ্রীমত্যা বাল্যবাসিনী দেবী ) কানে যেতেই তিনি ইতিউতি নজর করে বললেন – “আইজ রাইতেই বৃষ্টি হ‌ইবো। চিন্তা ক‌ইরোনা।” আমরা হতবাক। সন্ধে উতরে যেতে না যেতেই হালকা হাওয়া উড়িয়ে ঝমঝমিয়ে নামলো বৃষ্টি। আমরা ভাইবোন - তিনজন, তখন এ ওর মুখ চাওয়াচায়ি করছি। শরীরের ব্যঞ্জনায় ঝরে পড়ে অপার বিস্ময় — “পুটুমা কী করে আগেভাগে বৃষ্টির ভবিষ্যদ্বাণী করলো? মন পড়তে জানে বোধহয়!”

    রহস্যটা পুটুমাই ভাঙলেন খানিক পরে। আমরা কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই বললেন – “জালনার উপরডা দ্যাখ্, দেখছস্?” কাছে গিয়ে ভালো করে নজর করতেই দেখি, নিজেদের ডিম মুখে নিয়ে রেলগাড়ির কামরার মতো সার দিয়ে চলছে কালো পিঁপড়ের সারি। জানালার ফ্রেমের পাশের ফাটলের ভেতরে সবাই সেঁধিয়ে যাচ্ছে সুশৃঙ্খলভাবে। নতুন কিছু বলার আগেই পুটুমা মুখে একগাল হাসি টেনে বললেন, “ঐ পিঁপড়ারাই জানান দিছে যে আইজ বৃষ্টি হ‌ইবো। এই কায়দাটা মনে ক‌ইরা রাখলে তগো কামে আসবো।” পুটুমার শেখানো সেই শিক্ষা আজ‌ও প্রয়োগ করে দেখেছি দশটার মধ্যে সাতটি ক্ষেত্রে তা অভ্রান্ত ফল দিচ্ছে। আসলে প্রকৃতির রাজ্যের কোনো প্রত্যাসন্ন পরিবর্তনের খবর ওরা মানে এই না মানুষীরা হয়তো অনেক আগেই টের পেয়ে যায়। আর তখনই তাদের আচরণে অসঙ্গতি দেখা যায়। এটা আমার পর্যবেক্ষণ লব্ধ জ্ঞান।

    আরও একটা অভিজ্ঞতার কথা এই অবসরে ভাগ করে নিই সবার সঙ্গে। আমাদের একটা নীল সাদা রঙের বদরিগার টিয়া (Melopsittacus undulatus ) ছিল। তাকে পাওয়ার পেছনেও বেশ একটা রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা জড়িয়ে আছে। সে কথা এখন নয়। প্রতিদিন সকালবেলা ওকে খাবার দেওয়া হয় বাটি ভরে। সারাদিন সেটাই নিজের ইচ্ছেমতো খুঁটে খুঁটে খায়। আর থেকে থেকে ট্যা ট্যা করে ডাকে। ওর চেঁচামেচিতে বাড়িটাও দিনভর সরগরম থাকে।

    ডিসেম্বর মাস। আগেরদিন খৃষ্ট জন্মদিন থাকায় খানিক হৈচৈ হ‌ওয়ায় বাড়ির সকলের‌ই ঘুম থেকে উঠতে খানিকটা দেরি হয়ে গেছে। সুয্যির আলো তেজাল হবার আগেই খাঁচার পাখির ব্যস্ত হাঁক ডাক শুনে বিছানা ছেড়ে উঠে আসি। খাঁচার ঢাকা সরাতেই দেখি পাখিটা খাঁচার এ কোণা,সে কোণা হুটোপুটি করছে। কেমন একটা ভয়ার্ত চেহারা। মনে মনে ভাবলাম আমাদের পাখি কি কোনো বিপর্যয়ের আগাম আঁচ করতে পারছে? কিছু অঘটন কি ঘটতে যাচ্ছে খুব শিগগিরই? ঘড়িতে তখন সবে আটটা বাজে। টেলিভিশনের সুইচ অন করতেই স্ক্রিনে ভেসে ওঠে সংবাদপাঠকের মুখ। গম্ভীর কন্ঠে পড়া খবর কানে এসে বাজে – “আজ সকাল ৭–৫৯ মিঃতে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের কাছে সমুদ্রের নীচে এক প্রবল ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।এর ফলে সমুদ্রে প্রবল জলোচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে যার প্রভাব পড়বে ভারতের উপকূল অঞ্চলের বিস্তির্ণ অংশে।” বাকি ঘটনা ইতিহাস। আমার খটকা অন্য যায়গায়, আমাদের খাঁচার বদরিগার পাখি কি এই কথা আগেই টের পেয়েছিল? জানি বিষয়টি হয়তো নেহাতই কাকতালীয় তবুও বেশ মনে আছে ঘটনাটা।

    মানুষের তুলনায় না- মানুষীরা প্রাকৃতিক ঘটনাক্রম সম্পর্কে যে অনেক বেশি সংবেদনশীল তা আলোচিত দুটি ঘটনা থেকে বোধহয় খানিকটা আন্দাজ করা সম্ভব হলো। রাশিয়ার কামচাটকা উপকূলীয় অঞ্চলের সাম্প্রতিক ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত ও সুনামির ঘটনার পর শীতল আর্কটিক মহাসাগরের সীল মাছেদের অদ্ভুত আচরণগত অসঙ্গতি সকলের‌ই নজরে পড়েছে। প্রকৃতির এহেন পরিস্থিতির কথা আগেভাগে টের পেয়েই তারা তাদের মতো করে সতর্ক হবার সংকেত দিতে থাকে। একদল বিজ্ঞানীর মতে প্রকৃতির একান্ত নিজস্ব একটা এ্যালার্ম বা সতর্ক ঘন্টা আছে যা আমাদের তৈরি যন্ত্রপাতির তুলনায় হয়তো আগেই সাবধান করে দেয় আমাদের। এই দলের বিজ্ঞানীরা এ্যানিমেল বিহেভিয়ার বা পশুদের আচরণমূলক অভিব্যক্তি নিয়ে নিরন্তর গবেষণা করে চলেছেন। এক সময় আমাদের কোলকাতা শহরে বসে এক বাঙালি বিজ্ঞানী শ্রী রামব্রহ্ম সান্যাল এই বিষয়ে গবেষণা করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করেছিলেন। উনি ছিলেন আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রথম অধীক্ষক। ইতিহাসের সেই কথার রেশ টেনেই বলি, আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে কেবল মানুষের জীবন বিপন্ন হয় তা নয়, একটা ভূমিকম্প বা সুনামি বা বিধ্বংসী ঝড় কিংবা বন্যার ফলে প্রাণিকুল‌ও সমানভাবে বিপন্নতার শিকার হয়। সুতরাং তাদের মধ্যে ঘনায়মান বিপর্যয় সম্পর্কে একটা অন্তর্লীন সহজাত সংবেদন থাকাটা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু এই বিষয়ে প্রামাণ্য নথিপত্র হাজির করা বোধহয় কিছুটা কষ্টকর, অন্তত এই পর্যন্ত পাওয়া অভিজ্ঞতার নিরিখে। তবে এই দক্ষতা যে প্রাণিদের নিজেদের রক্ষা করার এক বিশেষ সহজাত প্রকৌশল তা স্বীকার করেন সকলেই। হয়তো এই কারণেই বলা হয় যে প্রাণিদের একটি বাড়তি ইন্দ্রিয় মানে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় রয়েছে যা তাদের আপদে বিপদে রক্ষা করে। কোন্ ধরনের প্রাণি কী রকম বিপদের আভাস দিতে সক্ষম এবং এমন ভাবনার পেছনে কতোটা সত্যতা রয়েছে তা একটু যাচাই করে দেখা যাক্। বিজ্ঞান প্রত্যক্ষ প্রমাণ দাবি করে, মনগড়া বিবরণ নয়।

    প্রথমেই আসা যাক ভূমিকম্পের আগাম সতর্কতা জারি করার ক্ষেত্রে পশুপাখিদের আচরণগত অসঙ্গতি কতটা কার্যকর সেই প্রশ্নের আলোচনায়। ভূমিকম্পের আগে পশুদের অস্বাভাবিক আচরণের কোনো নির্ভরযোগ্য নথি বিজ্ঞানীদের কাছে নেই বা ভূমিকম্পের আগে পশুরা নিজেদের বসবাসের এলাকা ছেড়ে চলে গেছে এমনটাও শোনা যায় নি। খৃষ্টপূর্ব ৩৭৩ অব্দের এক বিবরণীতে এমন ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায় বটে তবে তার ভিত্তিতে একথা বলা যায় না যে প্রাণিদের ভূমিকম্প সম্পর্কে আগাম পূর্বাভাস দেবার একটা সহজাত ক্ষমতা রয়েছে।

    কিছু কিছু প্রাণি অবশ্য ভূমিকম্পের কয়েক মুহূর্ত আগে এর একটা আভাস দিতে পারে হয়তো,তবে তা কখনোই কয়েক দিন বা কয়েক ঘণ্টা আগে নয়। ভূমিকম্পের ফলে ভূগর্ভ থেকে দু- ধরনের কম্পন তরঙ্গের সৃষ্টি হয় –p wave বা প্রাথমিক তরঙ্গ এবং s wave বা পরবর্তী তরঙ্গ। ভূপৃষ্ঠের গভীরে স্খলন বিন্দু থেকে স্বল্প তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের p wave বা প্রাথমিক তরঙ্গ সবথেকে আগে ভূগর্ভস্থ কেন্দ্র থেকে ভূপৃষ্ঠের ওপরে অবস্থিত উপকেন্দ্রে আছড়ে পড়ে।এই তরঙ্গটি শিলা স্তরকে সংকোচন ও প্রসারণের দ্বারা প্রভাবিত করে। শব্দ তরঙ্গের মতো ভূগর্ভের সমস্ত মাধ্যমের মধ্য দিয়েই – কঠিন,তরল, গ্যাসীয় – এই তরঙ্গ সঞ্চারিত হতে পারে। অন্যদিকে কম গতিবেগ সম্পন্ন s wave বা পরবর্তী তরঙ্গ কেবলমাত্র কঠিন শিলা স্তরের মধ্যদিয়েই প্রবাহিত হতে পারে।

    এটিকে তুলনা করা হয় আলোক তরঙ্গের সঙ্গে। আমাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক মানুষ আছেন যাঁরা প্রাথমিক তরঙ্গের অভিঘাত টের পান, ভূমিচর প্রাণিদের মধ্যে কেউ কেউ এটির সঞ্চালন টের পায় এবং সেইমতো বাহ্যিক উত্তেজনা প্রকাশ করে। ২০০৪ এর ইন্দোনেশিয়ার ভূমিকম্পের আগেই আন্দামানের আদিম অরণ্যচারী মানুষেরা আসন্ন বিপর্যয়ের কথা টের পেয়েছিল এবং সুনামির ক্ষয়ক্ষতি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছিল। তবে প্রাণিরা কীভাবে তা বুঝতে পারে সেই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো অন্ধকারে রয়েছেন।

    বড়ো কম্পাঙ্কের ভূমিকম্পের অব্যবহিত পরবর্তী বিপর্যয় হলো প্রবল সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস বা সুনামি। বিজ্ঞানীদের মতে সুনামির পেছনে সমুদ্রের তলদেশীয় ভূমিকম্প ছাড়াও প্রবল ভূমিধস বা অগ্নুৎপাতের‌ও ভূমিকা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে কিছু কিছু প্রাণি সুনামির আগাম সম্ভাবনার কথা হয়তো বুঝতে পারে এবং এরফলে তাদের আচরণে অসঙ্গতি দেখা যায়।

    বিজ্ঞানীদের মতে এই বিষয়ে যে দাবি করা হয় তার সবটাই প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে অর্থাৎ ঘটনার সময় তারা যেমন দেখেছেন বলে দাবি করেন তাকেই তথ্য হিসেবে মান্যতা দেওয়া হয়। এমন বিবরণীতে অতিরঞ্জনের আশঙ্কা রয়েছে। ফলে এমন তথ্য বিজ্ঞান গ্রাহ্য নয়। তবে ২০০৪ সালের সুনামির সময়ে দেখা গেছে যে হাতিরা এবং ফ্লেমিঙ্গো পাখিরা সমুদ্রের উপকূলীয় এলাকা ছেড়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গ আছড়ে পড়ার অনেক সময় আগেই। মনে রাখতে হবে যে রিখটার স্কেলে ২০০৪ এর ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৯.১। এছাড়াও অনেকেই জানিয়েছেন যে এমন বিপর্যয়ের আগে তাঁদের গৃহপালিত পশুদের মধ্যেও অস্বাভাবিকতা দেখা গেছে।

    পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য বৃষ্টিপাতের চরিত্র গেছে বদলে,ফলে বাড়ছে খরার দাপট এবং দাবানলের ঘটনা।এই মুহূর্তে যখন আলোচ্য লেখাটি নিয়ে বসেছি তখনই তুরস্কের বিস্তির্ণ বনাঞ্চল দাবানলের আগুনে জ্বলছে। দাবানলের ঘটনা বনের পশুপাখিদের ভীত সন্ত্রস্ত সচকিত করে তোলে। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে দাবানলের তাণ্ডব বাড়ছে। দাবানলের বৈশিষ্ট্য হলো যে অরণ্যের একটি বিশেষ অংশে আগুন লাগে, আর তারপর তা গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এরফলে পোড়া গন্ধ থেকে প্রাণিরা সতর্ক হবার বার্তা পায় যা তাদের নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে একরকম প্রণোদিত করে।
    বিজ্ঞানীরা লক্ষ করে দেখেছেন যে দাবানলের পূর্বাভাস দিতে না পারলেও বনের প্রাণিরা নানান উপায়ে আগুনের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করে।

    ২০১৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবানল প্রবণ এলাকায় বসবাসকারী গিরগিটিদের ওপর করা এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, যেসমস্ত বনাঞ্চলে প্রায় নিয়মিত আগুন লাগার ঘটনা ঘটে সেই এলাকার গিরগিটিরা অনেক বেশি ক্ষিপ্র গতিতে চলাচল করতে পারে বনভূমির অন্য এলাকায় থাকা স্বজাতীয়দের তুলনায়। দাবাগ্নি ইস্টার্ন ফেন্স লিজার্ডদের অনেকটাই বদলে দিয়েছে।
    সুইডেনের পিগমি গ্রাস হপার বা গঙ্গা ফড়িংরা, যারা দাবানল অধ্যুষিত এলাকায় বাস করে, তাদের গায়ের রং বিলকুল বদলে ফেলতে পারে। দগ্ধ পরিবেশের সঙ্গে একাত্ম হতে তারা তাদের গায়ের রঙ কালো রঙে রাঙিয়ে নেয়। গায়ের রঙ দেখেই মালুম হবে তাদের সাকিন কোন্ মুলুক ? পরবর্তীতে তাদের উত্তরসূরিরা সকলেই কালো রঙের কোট গায়ে দিয়ে পৃথিবীতে দাপিয়ে বেড়ায়। মার্কিন মুলুকের শিয়ালমুখো কাঠবিড়ালির মধ্যেও এই রঙ বদলানোর বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। আফ্রিকার Temminck’s coursers পাখিরা মাটিতে বাসা বাঁধে এবং পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে তারা ছাই – কালো রঙের ডিম পাড়ে যাতে সহজেই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া যায়। এগুলো থেকে একটা নিশ্চিত বার্তা পাওয়া যায় যে বিপর্যয় প্রাণিদের বিপন্ন‌ই শুধু করেনা তাদের বিবর্তনেও সমানভাবে সাহায্য করে।

    ঝড়ের পূর্বাভাস দিতেও আমাদের না-মানুষী সহবাসীরা পিছিয়ে নেই। আধুনিক সময়ে ঝড়ের পূর্বাভাস পেতে আমরা নানান উন্নত মানের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে থাকি। তবে পাখিরা এই কাজে বেশ দক্ষ বলে মনে করেন স্বয়ং বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে হ্যারিকেন বা সাইক্লোনের মতো ভয়ঙ্কর ঝড়ের খবর মানুষের অনেক আগেই পাখিরা টের পায়। প্রায় দু দশকের বেশি সময় ধরে গায়ক থার্শ পাখিদের ওপর পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, যেই বছর আটলান্টিক মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা দেখা দেয় সেই বছরে তারা খানিকটা আগেভাগেই প্রজননে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ঝড়ের সম্ভাব্য বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতেই এমন ব্যবস্থা বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

    এই বিশেষ প্রজাতির পাখিরা ঝড়ের আগাম সতর্কতা জারি করার ক্ষেত্রে অনবদ্য বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা। ঝড় হবার কয়েক মাস আগেই তারা ডিম পাড়ে এবং শাবকেরা ওড়ার দক্ষতা অর্জন করলেই সবাই মিলে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে। পাখিদের এই কর্মব্যস্ততা থেকেই বুঝতে পারা যায় যে ঝড় আসছে।

    সময়ের সাথে সাথে পৃথিবীর আবহাওয়া দ্রুত গতিতে বদলে যাচ্ছে। এই কারণে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, যে সমস্ত পাখিদের এই বিশেষ দক্ষতা রয়েছে তাদের নিয়ে নিবিড় গবেষণা প্রয়োজন। এর ফলে আখেরে উপকৃত হবো আমরা মানে হোমো স্যাপিয়েন্সরা।

    প্রকৃতির রাজ্যে নিয়ত‌ই ঘটে চলেছে নানান পরিবর্তন। এই পরিবর্তন আমাদের চেনা যাপনের ছন্দকে অতীতে বারবার ওলটপালট করে দিয়েছে, ভবিষ্যতেও দেবে। মনে রাখতে হবে যে,পৃথিবীর বুকে মানুষ এসেছে অনেক পরে, বস্তুতপক্ষে সবার শেষে। তাই মানুষের আগে থেকেই মনুষ্যেতর প্রাণিরা ধরিত্রীর চেনা অচেনা রঙ বদলের দৃশ্যপট চিনতে শিখেছে নিজেদের মতো করে। তাদের সেই জ্ঞানকে যদি আমরা না– মানুষীদের কাছ থেকে শিখে নিতে পারি তাহলে আমাদের সকলেরই টিকে থাকার প্রচেষ্টা সফল হবে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০১ আগস্ট ২০২৫ | ৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অরিন | 2404:4404:4405:700:acdd:3c2:449e:***:*** | ০২ আগস্ট ২০২৫ ০২:১০732900
  • ৩৭৩ বিসির ব‍্যাপারটা নিয়ে, 
    "
    According to the Roman writer Aelian (On Animals 11.19): “For five days before Helike disappeared, all the mice and martens and snakes and centipedes and beetles and every other creature of that kind in the city left in a body by the road that leads to Keryneia. And the people of Helike seeing this happening were filled with amazement, but were unable to guess the reason. But after these creatures had departed, an earthquake occurred in the night; the city subsided; an immense wave flooded and Helike disappeared, while ten Spartan vessels which happened to be at anchor were lost together with the city”.

    The Roman poet Ovid wrote (Metamorphoses 1.263): “If you seek for Helike and Boura, once cities in Achaea, you will find them beneath the waves; and the sailors still show you the sloping cities with their buried walls.”

    Approximate dates of sources:

     
    • Herakleides..........390-322 BC
    • Eratosthenes........276-194 BC
    • Diodorus...............80-20 BC
    • Strabo..................64 BC-23 AD
    • Ovid.....................43 BC-17 AD
    • Pausanias............143-176 AD
    • Aelian..................170-235 AD
      "
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন