এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ইয়ে হ্যায় মেরা সাম্প্রো টিকটম উপোনিইয়্যাস

    রানা সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৫৮ বার পঠিত
  • জটায়ু। পাখী ছাড়াও আর যে ছবিটি আমাদের মানসপটে ফুটে ওঠে, তিনি হলেন শ্রী সন্তোষ দত্ত মহাশয়। ‘তং মত করো। কাফি হো চুকা; জ্যাদা হো চুকা,যাও’ বা ‘ইয়ে হ্যায় মেরা সাম্প্রতিকতম উপন্যাস’ বা 'ইহার চেয়ে হতেম যদি আরব বেদুইন' অথবা 'খাস আরাবল্লীর ডাকাতদের খাবার খেয়ে সেই এক্সপ্রেশন' বা ‘হাইলি সাস্পিশাস’...  আরও আছে।   - যেন আমাদের মজ্জায় মজ্জায় ঢুকে গেছে।

    ‘সোনার কেল্লা’ বা ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’ যখন প্রথম দেখি তখন জানতামই না যে তিনি বাই প্রফেশন একজন ক্রিমিনাল ল’ ইয়ার ছিলেন, যিনি বাদী বা বিবাদী পক্ষের হয়ে কোর্টে করতেন জোরদার সব সওয়াল।

    ‘পরশ পাথর’, ‘হেড মাষ্টার’, ‘তিন কন্যা’, ‘মহাপুরুষ’ এরপর ‘শুন্ডি আর হুন্ডির দুই যমজ রাজা’। তারপর ‘স্ত্রীর পত্র’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘মর্জিনা আবদাল্লা’। আর তারপরেই সেই বিখ্যাত সোনার কেল্লার জটায়ু। আহা!

    কী সব এক্সপ্রেশন। উটের থেকে নামার পর কোমর ব্যাথা ঠিক করবার জন্য সেই হাঁটা। উটের দুধের চা খেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়া। ‘উট সম্বন্ধে প্রশ্ন করা চলবে কি? উহারা কি বন্য উট? উহারা কি কাঁটা খায়, না কাঁটা বেছে খায়?”

    এখন যদি উট সত্যি সত্যি ‘কাঁটা –চামচ’ দিয়ে কাঁটা বেছে বেছে খেতে পারত, দারুণ হত কিন্তু!   

    তারপর আরও অনেক সিনেমায় অভিনয় করে আমাদের হাসালেন বিস্তর। ‘হারমোনিয়াম’ সিনেমায় কালী ব্যানার্জীর বিপরীতে…উফফ!

    সিরিয়ালও করেছিলেন যতদূর মনে পড়ছে। কেউ কি নামটা বলতে পারবেন? শীর্ষেন্দুবাবুর নৃসিংহ রহস্য কি? ঠিক মনে পড়ছে না।

    কেউ কি ভুলতে পারবেন ‘চারমূর্তিতে ক্যাবলার মেসোমশাই বা ‘ওগো বধু সুন্দরীর অবলাকান্তকে?’, তারপর ‘ব্রজবুলি’, ‘পাকাদেখা’ বা ‘সুবর্ণলতা’ বা সম্রাট-সুন্দরী? ‘কনে বিভ্রাট’ নাটক?  
     

    এবার প্রতিপাদ্য বিষয়ে আসা যাক।

    ঘটনাটা শ্রী সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ফেলুদাকে নিয়ে সিনেমা বানানোর অনেক আগের ঘটনা। আমাদের বাংলা সিনেমার জগতে তখন এবং এখন বেশ কিছু সিনেমা রিমেক হয়েছে এবং হচ্ছে। বা জনপ্রিয় বাংলা সিনেমা হিন্দিতে বা হিন্দি সিনেমা বাংলায় রিমেক হয়েছে, এমন উদাহরণ ভুরি ভুরি পাওয়া যাবে।

    এদিকে আমাদের একজন নবাগত টালিগঞ্জের পরিচালক সত্যজিৎবাবুর “সোনার কেল্লা” রিমেক করতে চাইছিলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সন্তোষবাবুর তিরোধানের পর মাননীয় মানিকবাবু ফেলুদা করা ছেড়ে দিলেন এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে, যে সন্তোষ দত্তের মতো জটায়ু আর কেউ করতে পারবেন না। যদিও পরে মাননীয় সন্দীপবাবু শ্রী অনুপকুমার, শ্রী রবি ঘোষ ও শ্রী বিভু ভট্টাচার্য মহাশয়দের নিয়ে ফেলুদা করলেন বটে, কিন্তু একটা অদ্ভুত ঘটনা সেই সঙ্গে ঘটতে শুরু করল। জটায়ু চরিত্রে অভিনয় করার খানিক পর পরই দেখা গেল অভিনেতারা মারা যাচ্ছেন।

    যদিও সেই মৃত্যুগুলো একদমই স্বাভাবিক ঘটনা ছিল কিন্তু তিনজন অভিনেতার পর পর এহেন পরিণতিতে অভিনেতাদের মধ্যে একটা ভয় কাজ করতে শুরু করল, যে জটায়ু চরিত্রে অভিনয় করবে, সেই বুঝি মারা যাবে। হ্যাঁ, এটি একটি ফ্যালাসি বটে। যারা আরোহী যুক্তি বা ইন্ডাক্টিভ লজিক জানেন, তারা জানেন যে সেখানে অন্বয়ী বা Method of agreement বলে একটি পদ্ধতি আছে।

    উপরোক্ত বিষয়টি সেই পদ্ধতির মধ্যে পড়লেও যে দোষটি আছে, সেটি হল ব্যবহারিক দোষ বা Practical Imperfection.    
      

    শেষে ঠিক মতো জটায়ু পাওয়া নিয়ে সমস্যা হওয়ায় সন্দীপবাবু তারপর এমন তিনটে ছবি বানালেন ফেলুদাকে নিয়ে, যেখানে জটায়ু চরিত্রটি নেই!  

    এখন এই নতুন পরিচালক আবার জটায়ু খুঁজছেন শুনে অনেকেই আর তার সঙ্গে ভয়ে দেখা সাক্ষ্যাত করা বন্ধ করে দিলেন, পাছে তিনি তাদের জটায়ু চরিত্রে অভিনয় করতে বলেন। এই অবস্থায় ‘সোনার কেল্লা’ রিমেক হবে কীনা সেই নিয়ে সংশয় দিল দেখা। কেউ কেউ সাজেশন দিলেন সাউথ, মুম্বাই বা হলিউড থেকে জটায়ু নিয়ে আসতে। কেউ বলল ফাঁসির আসামীকে দিয়ে অভিনয় করাতে। কেউ বলল মরণাপন্ন রুগীকে দিয়ে জটায়ু করাতে, যদি সেখানে উল্টো এফেক্ট হয়!

    কিন্তু তাতেও পরিচালক রাজী হলেন না। তিনি খবরের কাগজে ‘জটায়ু চাই’ বলে দিলেন একটা ঢাউস বিজ্ঞাপন। খবরের কাগজের সেই খবর পড়ে নিঃসন্তান এক বয়স্ক ভদ্রলোকের ভাইপো ভাইঝিরা ঠিক করল কাকাকে দিয়ে তারা জটায়ু করাবে। কারণ কাকার আবার অভিনয় বাতিক ছিল আর জটায়ু করে কাকা পরে যদি পটল তোলেন, তাহলে তাদেরই লাভ মানে সোনায় সোহাগা। সেই মতো তারা দেখা করল প্রযোজকের সঙ্গে। প্রযোজক ওই বয়স্ক অর্থাৎ সেই নিঃসন্তান ভদ্রলোককে পরিচালকের কাছে নিয়ে এলো। ওর নাম জয়কালী পুততুন্ড।

    নতুন পরিচালক প্রথমে জয়কালীবাবুকে আপাদমস্তক দেখলেন। বলা ভালো মাপলেন। মাথায় টাক, দেহে একটা নুব্জ্যভাব রয়েছে। তাকে হাঁটতে বললেন পরিচালক। প্রাথমিক পছন্দ হল পরিচালকের। জিজ্ঞাসা করলেন, “আগে অভিনয় করেছেন?”

    জঃ হ্যাঁ।

    পঃ কিসে কিসে?

    জঃ খ্যাটির বিড়ম্বনায় কাঙ্গালীচরণ, ব্যাপিকা বিদায়ে ব্রজ বাবুর্চি, রামায়নে হনুমান আর অলীকবাবুটে পেয়াদা।

    পরিচালক বুঝলেন যে জয়কালীবাবুর ‘ত’-এ একটু দোষ আছে। ভাবলেন ডাবিং-এ ম্যানেজ করে দেবেন। বললেন, “দেখুন, নাটক আর ক্যামেরা কিন্তু এক নয়”। জয়কালীবাবু মন দিয়ে শুনছেন। তার ভিতরে ভিতরে একটা উত্তেজনা হচ্ছে এই ভেবে যে তিনি স্বনামধন্য এবং রহস্য রোমাঞ্চ লেখক জটায়ুর ভুমিকায় অভিনয় করবেন, যা আগে করেছেন সন্তোষ দত্ত, রবি ঘোষ, অনুপ কুমার, বিভূ ভট্টাচার্য প্রমুখেরা।

    ওদিকে পরিচালক তাকে বোঝাতে থাকলেন, “নাটকে যেখানে অ্যাকশন, ছবিতে কিন্তু সেখানে রিঅ্যাক্সন। বুঝলেন? যত ভালো রি-অ্যাকশন আপনি দিতে পারবেন, অভিনয় তত ভালো হবে। আর ক্যামেরার অ্যাঙ্গেলটি সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে। ও আমি সব শিখিয়ে দেবো খন”

    জয়কালীবাবু ঘাড় নাড়লেন।

    “আপনি এক কাজ করুন। বাড়িতে সোনার কেল্লাটা মন দিয়ে বেশ ক’বার দেখুন গিয়ে”।

    প্রায় মাস ৬ পর  লোকেশন ঠিক হল। প্রথমে জটায়ুর সেই কানপুর ষ্টেশনে এন্ট্রি দিয়ে শুভ মহরৎ হবে। জয়কালীবাবু ঘামছেন। টেনশন হচ্ছে। পেটের ভেতরে মগনলাল যেন গুঁতো দিচ্ছে। মছলিবাবা যেন সমানে কাতুকুতু দিয়ে চলেছে বগলে।

    ভাইপো ভাইঝিরা সমেত সমস্ত ক্রু উৎসাহ দিচ্ছে। তৃতীয় বারের চেষ্টায় উৎরোলেন। “টং মত করো। টং মত করো। কাফি হো চুকা। জ্যাদা হো চুকা, যাও”। এবং “ইয়ে হ্যায় মেরা সাম্প্রো টিকটম উপোনিইয়্যাস”। এরপর বিরতি নিয়ে পরের শট।  

    পরিচালক এসে এবার ডায়লগ বুঝিয়ে দিলেন। বললেন যে এরপর বলতে হবে “রাবণরাজা যব সীতামাঈজী কো হরণ করকে লে যা রাহা থা, তব জটায়ু পক্ষী আ কর উস্কো বহুত পরেশান কিয়া। বড়িয়া পক্ষী জটায়ু। মেরা ছদ্মনাম”। জয়কালীবাবু বার কয়েক আউড়ালেন। মিনিট ৫ পর টেক। জল খেয়ে নিলেন জয়বাবু কয়েক ঢোক। স্টেডি। ফেলুদা, তোপসে আর উল্টোদিকের অবাঙালী ভদ্রলোকও রেডি।  

    পরিচালকের চোখ মনিটরে। ক্যামেরাম্যান রেডি। অ্যাসিস্ট্যান্ট পরিচালক বললেন, “সিন ৩১ টেক ১”

    পরিচালকঃ সাউন্ড...

    সাঃ রোলিং...

    পরিচালকঃ ক্যামেরা...

    ক্যাঃ রোলিং...

    পঃঅ্যাক্সন।   

    জয়কালীবাবু কিছুই বলতে পারলেন না। আর কে যেন দর্শকের ভিড় থেকে চেঁচিয়ে বলে উঠলেন – ডেনড্রন!  

    পঃ এই! কে বলল? কাট কাট। কী হ’ল..., আপনার?

    জঃ এই একটু গুলিয়ে গেছিল। বড় ডায়লগ টো...। নিন। উনি আবার জল পান করলেন।

    পরিচালকের চোখ আবার মনিটরে। ক্যামেরাম্যান রেডি। অ্যাসিস্ট্যান্ট পরিচালক বললেন, “সিন ৩১ টেক ২”

    পরিচালকঃ সাউন্ড...

    সাঃ রোলিং...

    পরিচালকঃ ক্যামেরা...

    ক্যাঃ রোলিং...

    পঃঅ্যাক্সন।  

    জঃ হনুমানজী জব সীটা মাঈয়াকো কলা...

    পঃ আরে কাট কাট কাট। এর মধ্যে হনুমান আবার এলো কোথা থেকে? রাবণ; রাবণরাজা। আর কলা কেন?
     
    জঃ ওকে। ওকে।

    পরিচালকের চোখ মনিটারে। ক্যামেরাম্যান রেডি। অ্যাসিস্ট্যান্ট পরিচালক বললেন, “সিন ৩১ টেক ৩”

    পরিচালকঃ সাউন্ড...

    সাঃ রোলিং...

    পরিচালকঃ ক্যামেরা...

    ক্যাঃ রোলিং...

    পঃঅ্যাক্সন।  

    জঃ রাবণ ভাইয়া যব জটায়ু মাঈয়া কো...

    পঃ কাট। কাট। কী আরম্ভ করলেন আবার? এই তো আগের দুটো ডায়লগ ভালোই বললেন! [আবার স্ক্রিপ্টটা বুঝিয়ে বলতে যাবেন] একি? আপনি ওনার জন্য রাখা মুড়ি লাড্ডু খাচ্ছেন কেন?

    জঃ একটু ক্ষিদে ক্ষিদে পাচ্ছিল।

    পঃ সে ঠিক আছে কিন্তু তাই বলে শ্যুটিং-এর জন্য রাখা খাবার খেয়ে নেবেন?

    জঃ মানে ইয়ে।

    পঃএই, কেউ এখানে আরেকটা টিফিন বাটিতে মুড়ি আর লাড্ডু নিয়ে এসো দেখি। উফ, এবার নিন।

    পরিচালকের চোখ মনিটারে। ক্যামেরাম্যান রেডি। অ্যাসিস্ট্যান্ট পরিচালক বললেন, “সিন ৩১ টেক ৪”

    পরিচালকঃ সাউন্ড...

    সাঃ রোলিং...

    পরিচালকঃ ক্যামেরা...

    ক্যাঃ রোলিং...

    পঃঅ্যাক্সন।  

    জাঃ ইয়ে! বাথরুম যাব। চাপ লেগেছে।

    পঃ ইজি টং! এতো জল পান করতে কে বলেছিলো? যান।

    জয়কালীবাবু ছোট বাইরে করে ধীরে-সুস্থে ওয়াস রুম থেকে বেরিয়ে এলেন গুটি গুটি পায়ে। একবার ভেবেছিলেন যে পালিয়ে যাবেন। কিন্তু পরে ওয়াস রুমের আয়নায় নিজেকে চাগিয়ে দেবার অঙ্গভঙ্গি করলেন। বললেন, “স্টেডি! স্টেডি!”। তারপর কোমর এদিকে ওদিক করলেন। নিঃশ্বাস নিলেন বার কয়েক।  

    পরিচালকের চোখ আবার মনিটারে। ক্যামেরাম্যান রেডি। অ্যাসিস্ট্যান্ট পরিচালক বললেন, “সিন ৩১ টেক ৫”

    পরিচালকঃ সাউন্ড...

    সাঃ রোলিং...

    পরিচালকঃ ক্যামেরা...

    ক্যাঃ রোলিং...

    পঃ অ্যাক্সন।  

    জঃ সীটা ভাইয়া যব রাবণ মাঈয়া কো...

    পঃ কাট! ওরে আমাকে কেউ কাট!

    কপালের ঘাম মুছে অ্যাসিস্টেন্টের দিয়ে যাওয়া মুড়ি লাড্ডু হাতে নিয়ে খেতে খেতে আবার, বারবার আউড়ে নিচ্ছিলেন ডায়লগটি।
     
    পরিচালক আবার বোঝালেন । হাতের বাটিটা কেড়ে নিলেন। আবার শুটিং শুরু হ’ল।

    “সিন ৩১ টেক ৬”

    পরিচালকঃ সাউন্ড...

    সাঃ রোলিং...

    পরিচালকঃ ক্যামেরা...

    ক্যাঃ রোলিং...

    পঃঅ্যাক্সন।  

    জঃ রাবণবুয়া যব সীটাভোগ খেটে বর্ধমানে গেল...!

    পঃ আরে! ধুর মশাই। কোথায় সীতা মাঈজী আর কোথায় সীতাভোগ! আর রাবণবুয়া আবার কে? হ্যাঁ? বর্ধমানের সীতাভোগ হয় সীতাভোগ চাল দিয়ে। আর এখানে বর্ধমানের কথা আসছেই বা কীভাবে?

    [এইভাবে অনেকক্ষণ ধস্তাধস্তি চলল।  ওদিকে ফেলুদা আর তোপসের চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতা দুজন ঘুমিয়ে পড়েছেন। প্রযোজকও হাল ছেড়ে দিয়েছেন। পরিচালককে বললেন যে চলুন অন্য সিনেমা করি। কিন্তু পরিচালক নাছোড়। বললেন শেষ দেখে তবে ছাড়বেন। আরও একবার ভালো করে সময় নিয়ে বোঝালেন]

    পঃ ব্যাপারটার মধ্যে আছেটা কী? কি আছে? বলতে হবে যে “রাবণরাজা যব সীতামাঈজী কো হরণ করকে লে যা রাহা থা, তব জটায়ু পক্ষী আ কর উস্কো বহুত পরেশান কিয়া। বড়িয়া পক্ষী জটায়ু। মেরা ছদ্মনাম”। কি? পারবেন তো?

    পরিচালক নিজে অভিনয় করে দেখালেন।

    জঃ ইয়ে, হ্যাঁ।

    “সিন ৩১ টেক ৯৩”

    পরিচালকঃ সাউন্ড...

    সাঃ রোলিং...

    পরিচালকঃ ক্যামেরা...

    ক্যাঃ রোলিং...

    পঃঅ্যাক্সন।  

    জঃইয়ে মানে...!! কাশি পাচ্ছে! লাড্ডুটা খেয়ে গলা...।  

    পঃ কাটশুন...!

    আবার জল পান করলেন জয়কালীবাবু।

    “সিন ৩১ টেক ৯৪”

    পরিচালকঃ সাউন্ড...

    সাঃ রোলিং...

    পরিচালকঃ ক্যামেরা...

    ক্যাঃ রোলিং...

    পঃঅ্যাক্সন।  

    জঃ ছদ্মনাম ভাইয়া যব বড়িয়া মাঈয়া কো হরণ করকে বর্ধমান লে যা রাহা থা, টব রাবণবুয়া আউর জটায়ুচাচা উস্কো লাড্ডু খিলায়া।

    পরিচালক ফ্ল্যাট।

    হয়তো এভাবেই দোষ গেছিল কেটে!! 

    এরপর থেকে ফেলুদার সিনেমা তৈরি মুলতুবী ছিল। তারপর শ্রী সৃজিত মুখোপাধ্যায় মহাশয় একেনবাবুর ভূমিকায় অভিনয় করে জনপ্রিয়তা লাভ করা শ্রী অনির্বান চক্রবর্তী মহাশয়কে দিয়ে জটায়ুর ভুমিকায় অভিনয় করালেন। দর্শক হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন।     

    যদিও ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে সাক্ষ্যাতকার দিতে গিয়ে শ্রী দত্তের কন্যা শ্রীমতী লাবণ্য প্রামানিক জানিয়েছিলেন যে তাঁর বাবা ছিলেন খুবই কর্মদক্ষ। দিনে কোর্টের সওয়াল জবাব করে তারপর শুটিং-এ যেতেন। কেস লড়তে গিয়ে রাত পর্যন্ত জেগেছেন। তখন চলছিল অন্যান্য মামলার সঙ্গে হেমন্ত বোস ও নেপাল রায়ের মামলা। আর সেইসব মামলা করেও তিনি চালিয়ে গেছেন তাঁর অভিনয়। 
     
    খুব ভালো রাঁধতে পারতেন আমাদের জটায়ু। তবে তাঁর মেয়ের আক্ষেপ যে যদিও কিছু বাঙালি জটায়ু আর গোপাল ভাড়ের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রী সন্তোষ দত্ত মহাশয়কে চিরকাল মনে রাখবেন, তবুও যেন সেই স্বীকৃতি বাংলা তাঁকে দেয় নি, যা তাঁর প্রাপ্য ছিল।
     
    পুনশ্চ: ২০২২ সালের হত্যাপুরী এবং ২০২৪ সালে রিলিজ হওয়া নয়ন রহস্য সিনেমা দুটিতে অবশ্য আমরা নতুন ফেলুদা আর তোপসের সঙ্গে পেলাম নতুন জটায়ুকে। শ্রী অভিজিৎ গুহ মহাশয়।  তিনি একাধারে পরিচালক, লেখক এবং বর্ষীয়ান অভিনেতা।  আমার এই দুটো সিনেমা দেখা হয় নি। 
     
    তাহলে এখন আমরা দুজন জটায়ু পেয়ে গেলাম। আশাকরি আগামী দিনে মাননীয় সত্যজিৎ বাবুর বাকি সমস্ত ফেলুদা গল্পগুলো সিনেমায়িত হবে। 
       
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৫৮ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    বিজাপুর - %%
    আরও পড়ুন
    হামপি - %%
    আরও পড়ুন
    বেলুর - %%
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অরিন | 122.15.***.*** | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৩:২৫736399
  • ভারি সুন্দর লিখেছেন। সন্তোষ দত্তর বাড়ি ছিল আমহারস্ট রোয়ে (আমার মা বাবার কাছে শোনা) । আমাদের কলকাতার পৈত্রিক বাড়ির দলিলেও তাঁর সই আছে, দেখেছি। 
  • Bhaskar Roychowdhury | 122.185.***.*** | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:০১736411
  • দারুন হয়েছে রানা দা। আমার নিজের অত্যন্ত পছন্দের অভিনেতা ছিলেন এবং আছেন। একটু দেখা নেবেন মনে হয়  ক্যাবলার মেসোমশাই এর চরিত্রে উনি অভিনয় করছিলেন।
  • রানা সরকার | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:৩৮736417
  • হ্যাঁ, হ্যাঁ।  মেসোমশাই হবে। ঠিক। 
  • রানা সরকার | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:৪৩736418
  • আপনাদের মতো বিদিগ্ধ পাঠক বা দর্শকদের জন্যই লেখবার চেষ্টা করি।  আপনারা কমেন্ট করলে, ভুলভ্রান্তি যদি কিছু থেকে যায় নির্দেশ করে।দেখালে।খুব আনন্দ পাই। 
     
    আপনারাই আমার মতো লিখতে চেষ্টা করা একজন মানুষের গর্ব; মাথার উষ্ণীষ।  ভালো থাকবেন দুজনেই।  
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন