অদ্ভুত এক সময়ে বাস করছি আমরা। এই লাইনটাই মনে হয় বেশ কয়েকবার লিখে ফেলছি আমি। এর অর্থ হচ্ছে আমি লিখতে বসি আর শুরুতেই আমার এইটাই মনে হয় এইটা কোন সময়ে এসে পড়লাম, এমন কেন! আজকেও তাই মনে হচ্ছে। ছোট একটা দেশ কিন্তু এ আপনাকে এক মুহূর্তের জন্য নিশ্চিত হতে দিবে না। যেই মুহূর্তে মনে হবে আচ্ছা সব বুঝি ঠিকঠাক চলছে, ঠিক তখন একটা মোচড় এসে আপনাকে চিত করে ফেলে দিবে।
দৈনিক না লেখার কারণে নানা ঘটনা জমে যায়, লেখার সময় সব মাথায় আসে না। এইটা একটা বিপদ। এর মধ্যে শেখ হাসিনার রায় হয়েছে। যে ট্রাইব্যুনালের প্রধান কসুলি হছে তাজুল, যিনি এই ট্রাইব্যুনালেই যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে উকালতি করেছে সেখানে কতখানি ন্যায় পাওয়া সম্ভব তা বুঝা কঠিন কিছু ছিল না। কিংবা ধরেই নিছে এ তো সব আমাদের হাতেই, দিলাম ঝুলাইয়া। মূল লক্ষ তো ঝুলানো। ঝুলানোর বদলা নিতে হলে ঝুলাতেই হবে না? সব কিছু তো ঘুরেফিরে সেই বদলাই, তাই না? দুনিয়ার সব জায়গা থাকতে এখন তাদের শাহবাগেই মাইক দিয়ে পাকিস্তান প্রেম দেখাতে হয়। কেন? শাহবাগ তাদের এই জীবনের সবচেয়ে বড় পরাজয়। শাহবাগকে গালিতে পরিণত করেও শান্তি পায় নাই তারা। পারলে মাটি তুলে নিয়ে চলে যেত অন্য কোথাও!
তো এই ট্রাইব্যুনালে যা হওয়ার তাই হয়েছে। কিন্তু এদেরকে দোষ দিয়া আর কই যাওয়া যাবে? এখন পর্যন্ত লীগ কী এদের বিরুদ্ধে লড়ার মত কোন প্রকার সুষ্ঠু পরিকল্পনা করতে পারছে? আমি দেখি নাই। উল্টো ডাস্টবিন শফিকের মত লোকের মত নানা জায়গায় নোংরামি করে চলছে এদের অনলাইন যোদ্ধারা। এর বড় নমুনা এখন দেখা যাচ্ছে যখন খালেদা জিয়াকে আইসিইউয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তখন। প্রতিহিংসা অন্ধ করে দেয় আমাদেরকে। এই অন্ধত্ব শুধু যে দৃষ্টির অন্ধত্ব তাই না, আমাদের বোধ, আমাদের নৈতিকতা, আমাদের শিষ্টাচার, শিক্ষা, সব জায়গায় অন্ধ করে দেয়। তখন আর কোন কিছুই কাজ করে না। প্রবল প্রতিহিংসাই শেষ জবাব!
বিএনপির নেত্রী মৃত্যু শয্যায়। বয়স হয়েছে, যে কোন সময় যে কোন কিছু হয়ে যেতে পারে। তারা, তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা এখন একটু স্বাভাবিক ভাবেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আছে। এখন খোঁচাখুঁচির অর্থ কী? নোংরামির মানে কী? জানি নানা ক্ষোভ আছে, যুক্তিও আছে। তো? এই মুহূর্তে অন্তত চুপ করেও তো থাকা যায়, তাই না? এখন আক্রমণ করে কী হাসিল করা হচ্ছে? কী উদ্ধার হচ্ছে? আমার জানি না।
কেন জানি সাধারণ মানুষদেরকে ঠিক বিশ্বাস করে না কেউ। কেন মনে হয় সবার যে আপনি যা চাচ্ছেন সাধারণ মানুষ সেটাই চাচ্ছে? কেন মনে হয় না আপনাদের এই কার্যকলাপ সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নাও নিতে পারে? কেন মনে হয় আপনাদের যে তারা যে নোংরামি করেছে তা সাধারণ মানুষ খেয়াল করেনি? কেন মনে হয় আপনাদের নোংরামি কেউ খেয়াল করবে না? কেন মনে হয় না আপনাদের যে এতে স্বয়ংক্রিয় ভাবেই তারা মানুষের আস্থার জায়গা হারিয়েছে? এক বছর আগের পরিস্থিতি আর বর্তমান পরিস্থিতিতে আকাশ পাতাল পার্থক্য, এই পার্থক্যের কারণ কী? কীভাবে তৈরি হল? আপনাদের ধারণা অনলাইনে আপনাদের নোংরামির জবাব নোংরামি দিয়ে এইটা হাসিল হয়েছে? না, যা হয়েছে তাদের নোংরামির জন্যই হয়েছে, তাদের ব্যর্থতার জন্যই হয়েছে। আপনারা গালিগালাজ করে, নোংরামি করে খুব একটা কিছু করতে পারেন নাই। কোন ক্ষেত্রে ক্ষতিই হয়েছে বরঞ্চ।
ওরা করে তাই আমরাও করি! এই যুক্তিতে একে ওপরকে ঘায়েল করে চলছে মানুষ। ওরা নোংরামি করে তাই আমরাও করি। ওরা গালি দেয় তাই আমরাও দেই। এই চলতে থাকুক। কিন্তু একবারের জন্য মনে হয় না আপনি যার নামে রাজনীতি করছেন তাঁর এতে অসম্মান হচ্ছে? আজকে চুপ করে থাকলে ইতিহাস বদলে যাবে? যার যার কৃতকর্ম কালের দেওয়ালে ছাপ রেখে যায় নাই? একটু বিন্দু হারাবে না। মহাকাল সব সময় মনে রাখে সব কিছু। সবাইকে যার যার পাওনা ফিরিয়ে দিতে হবে। একটা থাপড় দিলে একটা থাপড় খেয়ে বিদায় নিতে হবে। সব সময় থাপড়ের বদলা থাপড় আক্ষরিক অর্থে হয় না বিধায় দ্বিধা তৈরি হয়। মনে হয় কই অমুক তো এত এত আকাম করে শান্তিতে মরে চলে গেল। ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখেন সে থাপড়টা কোথায় কীভাবে খেয়েছে! আপনারা এই সময়ে কী ছাপ রেখে দিচ্ছেন?
একজন মৃত্যু শয্যায়। এই বলটা ছেড়ে দেন। তীক্ষ্ণ চোখ বলের উপরে রেখে বলাকে ছেড়ে দেন। যাক এই বলটা। থাকলেই ইচ্ছা মত খেলা যাবে। এইটা লম্বা খেলার সময়। সব বলেই উরাধুরা মারার খেলা না। স্থির হয়ে অপেক্ষা করুন পরের বলের জন্য। কিছু আছে আরও উগ্র। তারা গৃহযুদ্ধের আলাপ করে খোলাখুলি! এবং অবশ্যই নিরাপদ দূরত্বে থেকেই এই আলাপ করে।
সরকার শেখ হাসিনার ব্যাংক লকার খুলেছে। ৮৩২ ভরি স্বর্ণের গহনা পাওয়া গেছে। এই খবর প্রকাশ হওয়া মাত্র লীগের অনলাইন যোদ্ধারা এইটাকে মিথ্যা বলে উড়ায় দিল। কেউ কেউ সব এআই বলে দিল। একজন তো জহুরির মত বিচার বিশ্লেষণ করে বলে দিল এগুলা নকল, দেখেই বুঝা যায়! তো এর মধ্যে খোদ শেখ হাসিনার বানী চলে আসল। তিনি জানালেন এই স্বর্ণ তারই। বহু বছর ধরেই এগুলা ব্যাংকের লকারে রাখা আছে। পারিবারিক ভাবে পাওয়া সব স্বর্ণ। যারা লকার খুলেছে তারাও জানালেন যে এখানে সব স্বর্ণ শেখ হাসিনার না, শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলের গহনা আছে, শেখ রেহানার গহনাও আছে। শেখ হাসিনা দাবি করলেন ২০০৮ সালের নির্বাচনের হলফনামায় তিনি এই স্বর্ণের কথা উল্লেখ করেছেন। এবং কোনদিনই যে এই লকার আর খোলা হয় নাই তা ব্যাংকের কাগজপত্র দেখলে সহজেই জানা যাবে, তাও তিনি বললেন। এইটা হল আসল কথা। আগেই নকল, ভুয়া, গালিগালাজের রহস্য কী? কে জানে!
আমার কাছে এইটাকে বেশি কিছু মনে হয় নাই। বিশেষ করে যেহেতু কয়েকজনের মিলিয়ে এই স্বর্ণ। তারা তো বরাবরই সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য ছিলেন। ৮৩২ ভরি দুই লাখ করে হলে ১৭ কোটির চেয়েও কম টাকার স্বর্ণ। তো এইটা কীভাবে বেশি হয়? শেখ হাসিনাও এই জন্য এইটাকে অস্বীকার করে নাই। তিনি বরং চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন যে তার নামে দুর্নীতির অভিযোগ আনতে হলে আরও পাকা হাত লাগবে। কিন্তু নোবেল ম্যানের চিত্রনাট্য যারা লিখছে তারা যে বেশ কাঁচা তা কেন জানি বারবারই প্রমাণ হচ্ছে। পূর্বাচলে দুর্নীতি করে প্লট কিনেছে শেখ হাসিনা ও তার পরিবার! এমন হাস্যকর অভিযোগে রায় আসছে! এরা করবে বিচার? এক বছরে খুঁজে পাইছে কয়েকজনের মিলিত কিছু স্বর্ণ আর প্লট! শেখ হাসিনার নিজের নামে যে লকার সেটাতে পাইছে একটা পাটের বস্তা! শুরুতে শুনলাম রুপপুর প্রকল্প থেকে শেখ হাসিনা বিলিয়ন ডলার চুরি করেছে। সহমত পার্টি তখন হায় হায় করে এই তত্ত্বে সহমত জানাল। বলল দেখছ কী করছে? পরে দেখা গেল বিলিয়ন ডলার চুরির কোন রাস্তাই নাই। রাশিয়া ঋণ দিয়ে বানাচ্ছে এই জিনিস। আমাদের উল্টা টাকা দিতে হবে রাশিয়াকে। সেই টাকা দেওয়াও শুরু হবে প্রকল্প চালুর কয়েক বছর পর থেকে। রাশিয়া থেকে পরিষ্কার জানায় দেওয়া হল এগুলা ফালতু কথা, এই প্রকল্পে কোন দুর্নীতি হয় নাই। এখন তাই স্বর্ণ খুঁজে বের করছে, প্লট দুর্নীতির মামলায় রায় দিচ্ছে!
অন্য দিকে বিএনপির মহান নেতা তারেক রহমান মা মৃত্যুশয্যায় তবুও দেশে ফিরছেন না! মানুষজন সুযোগ পেলেই এই যে আসছে, লিডার আসছে বলে ডাক তুলত। কিন্তু যখন মা যখন তখন অবস্থার মধ্যেও যখন তিনি আসছেন না তখন বেশ বড় একটা প্রশ্নবোধক চিহ্নের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে দেশবাসীকেও দাঁড় করায় দেয় না? এমন অবস্থায় তিনি ফেসবুক পোস্ট দিয়ে জানালেন তিনি চাইলেই যেতে পারছেন। কেন পারছেন না তা নাকি খুলে বলতেও পারছেন না! কী একটা অবস্থা।
আমার ব্যক্তিগত ধারণা তার পাসপোর্ট সংক্রান্ত কোন ঝামেলা আছে। নিরাপত্তাও একটা বিষয়। তিনি হয়ত ইউকের পাসপোর্ট নিয়ে ফেলছেন বহু আগেই। এখন যদি সেই পাসপোর্টে দেশে ফিরেন তাহলে নির্বাচনের স্বপ্ন বাদ দিতে হবে। তার যে পাসপোর্ট নাই এইটা সরকার থেকেও প্রকাশ করেছে। সরকার ট্রাভেল পাস দিয়ে তাকে আসার প্রস্তাব দিয়েছে। তার মানে পাসপোর্ট একটা সমস্যাই। যদি ইউকের পাসপোর্ট না নিয়ে থাকে তাহলে ঝামেলা কই ট্রাভেল পাশে দেশে আসতে? সরকার ট্রাভেল পাস দিবে বলছে সবার সামনে পিছনে কি না করছে? এত বড় খেলা খেলে দিবে? আমার মনে হয় না। ইউকের পাসপোর্ট নিয়ে সে আসতে চাচ্ছে না এইটাই যুক্তিসঙ্গত মনে হচ্ছে আমার কাছে। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে নিরাপত্তা। পিনাকীর মত লোকেরা তাকে ঠেলে দেশে পাঠাতে চাচ্ছে, আবার ব্রাত রাইসুর মত অতি পাকনা বুদ্ধিজীবীরা তাকে এই মুহূর্তে কোনমতেই আসতে দিতে চাচ্ছে না। বিশাল নিরাপত্তা ঝুঁকি নাকি রয়েছে! আসার পক্ষেরাও এর পিছনে ভারতের চাল খুঁজে পাচ্ছে, না আসার পক্ষের লোকজনও এতে র-এর হাত খুঁজে পাচ্ছেন! এইটা ভালো না?
আর কী অবস্থা? সরকারের তদন্ত কমিটি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের কারণ তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে। এ আরেক কার্টুন কাজ হয়েছে। ইনুস সরকারের এই তদন্ত কমিটি অন্য অনেক কমিটির মতই একটা কার্টুন কমিটি হয়েছে। কেন বলতেছি। এর প্রধান ছিলেন মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান। এই নামটা কি পরিচিত লাগে? এই লোকই গত বছর থেকে কয়েকবার করে ভারত দখল করে নেওয়ার কথা বলেছেন। দিল্লী যখন তখন দখল করে নিবেন এমন হাস্যকর কথাবার্তাও তিনি বলেছেন। তো এই লোক যে তদন্ত করেছেন তার ফলাফল কী হতে পারে? ঠিক ধরেছেন, সব লীগ আর ভারত করেছে। ফজলে নুর তাপস ছিল এর পিছনের কারিগর। কেন করছে লীগ এত গুলো আর্মি অফিসারকে হত্যা? করেছে ক্ষমতার মেয়াদ দীর্ঘ করতে! একটা সরকার তখন কেবল বসেছে কয়েকমাস। সেই সময় তার মনে হল ক্ষমতা দীর্ঘ করতে আর্মি অফিয়ার কিছু মেরে ফেলা যাক। তাই বিডিআর সদস্যদেরকে দিয়ে মেরে ফেলা হল তাদেরকে! এই হল মেজর জেনারেলের তদন্ত প্রতিবেদনের বক্তব্য। কিন্তু এই প্রতিবেদনে সেনাবাহিনী থেকে যে সেই সময় একটা তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল সেই ব্যাপারে কিছু বলা হয়েছে কি না তা জানা যায় না। সেই তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন বর্তমান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহান উপদেষ্টা যিনি তিনি। তো তাকে কী জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না? সে কী তদন্ত করল তা জানতে চাইবে না? তাকে জোর করে ভুলভাল তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে বাধ্য করেছিল, এইটাও তো বলতে হবে তাকে, তাই না? তার কোন আলাপ কেন থাকবে না? সোহেল তাজ, যাকে মানুষ এখন ভালোবেসে বডি সোহেল ডাকে সে তখন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না? মানুষ তো বলে বডি এই কারণেই ভয়ে এই সরকার যা করে তাতেই সায় দেয়। বডির বাবা তাজউদ্দীনের ভাস্কর্যের উপরে চড়ে নাচে মানুষ, জুতার মালা পরায় বডি তাও কিছু কয় না! বডির কাছে তাও এরাই ভালো। এইটা নিশ্চয়ই এমনে এমনেই না। তিনি যে ভয় পাইছেন তা তার আচারনেই বুঝা যায়। বাপের সাথে তার যে শিরদাঁড়ায় পার্থক্য আছে তা এখন স্পষ্ট।
পরিচিত অনেকেই দেশ ছাড়ার চূড়ান্ত করেও যেতে পারছে না। ভিসা এখন বাংলাদেশীদের জন্য নিষিদ্ধ বস্তু হয়ে গেছে। ভারত এখন পর্যন্ত টুরিস্ট ভিসা বন্ধ করে রেখেছে। ছাত্রদের জন্যই বেশি খারাপ লাগছে। কত স্বপ্ন নিয়ে বসে থাকে সবাই। সব শেষ। কী হবে এখন? ইনুস সরকারের তো দিন গণনা শুরু করে দিয়েছে। তারা এখন যেতে পারলে বাঁচে। নির্বাচন যদি হয় তাহলে আর তিন মাস আছে তারা। এই কয়টা দিন গুণে গুণে শেষ করেই তারা বিদায়। দায় দায়িত্ব নিতে রাজি না কেউ। মানুষ যাবে কোনদিকে? কার কাছে?
নির্বাচনের হাওয়া নিয়ে লিখে শেষ করি। বাতাসে লীগ আর জামাত এক হয়ে মাঠে নামবে এমন একটা খবর ছড়ানো হয়েছে। আমি শুনে হাসলাম। এই মুহূর্তে এই দেশে যারাই লীগের নাম নিচ্ছে তারা হচ্ছে কট্টর আওয়ামীলীগ পন্থি। এরা মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু প্রশ্নে আপোষ করতে রাজি না দেখেই চরম বৈরি সময়েও লীগের নাম নিয়ে যাচ্ছে। এদেরকে কীভাবে জামাতের সাথে এক করবেন? শেখ হাসিনা ঘোষণা দিলেও তো এরা জামাতের সাথে যাবে না! তবে ভিন্ন একটা খেলাও শুরু হয়েছে। পলাতক লীগের কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করছে দুই পক্ষ থেকেই। নানা আজাইরা মামলা খেয়ে বসে আছে এমন কর্মীদের লোভ দেখানো হচ্ছে তোমরা এলাকায় আস, নির্বাচন কর আমাদের, মোটর সাইকেল দেওয়া হবে, খরচ দেওয়া হবে। প্রশাসন কোন ঝামেলা করবে না। তোমরা আস। আমার ধারণা এই টোপ অনেকেই খাবে। দলে দলে ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে। এতে দুই পক্ষেরই লাভ। এরা দিনের পর দিন বাহিরে থাকতে থাকতে ক্লান্ত। একবার এলাকায় তাদের অবস্থান স্বাভাবিক করে নিতে পারলে এরপরে আর বিপদ হবে না। অন্যদিকে এমন অনেক জায়গাই আছে যেখানে বিএনপি বা জামাতের লোকজন ভোট চাইতে যাইতে সাহসও পাবে না। এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি আছে যাদের বাড়িতে ভোট চাইতে যাওয়ার আগে দশবার করে ভাবতে হবে তাদের। লীগের পুলাপানের সেই ভয় থাকবে না। ওরা কাজ করছে এমন ভাবে ভোট চাবে।
মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা লিখতে গিয়ে খেয়াল হল লিখতে লিখতে অনেক রাত হয়ে গেছে। ডিসেম্বর মাসের এক তারিখ। বিজয়ের মাস। এমনই পোড়া কপালের দেশ আমার যে নিজের বিজয়ের গল্প বলতে এখন লোকে দুইবার ভেবে নেয়। এমনই দেশ আমার এখানে বাউলকে গান গাওয়ার অপরাধে জেলে ঢুকিয়ে রাখা হয়। প্রতিবাদ মিছিলে আবার হামলা হয়। এমনই দেশ আমার এক অন্ধ পরিবার গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। তাকে বলা হল গান গাওয়া যাবে না, ভিক্ষা করে খাও। এমনই এক কপাল পোড়া সময়ে বিজয়ের মাস এসে হাজির হল। হায়! আর কত নিচে নামব আমরা? পাতালে নেমেও তো রক্ষা নাই!
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।