নির্বাচন নিয়ে নতুন যে তামাশা শুরু হয়েছে তা এক কথায় অনবদ্য! জামাত জোর গলায় গণভোট চাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের আগে। বিষয় হচ্ছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য। সংবিধান পরিবর্তন করে জুলাই সনদের ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এই নিয়ে হ্যাঁ না ভোট। আমি প্রথমে এইটা নিয়ে খুব একটা ভাবি নাই। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এইটা একটা মস্ত সুযোগ লীগের জন্য। এরা যে বিপুল আগ্রহ নিয়ে গণভোট চাচ্ছে তার কারণ হচ্ছে তারা ধরেই নিয়েছে হ্যাঁ জিতবে। আচ্ছা, যদি না জিতে? এই ভোটে তো কোন প্রার্থী নাই। তাই মানুষের ভোট দিতে সমস্যা কই? লীগের যা জনপ্রিয়তা আছে, সেই সাথে বর্তমান সরকারের যে সুপার ব্যর্থতা, তাতে না জিতে তো খুব স্বাভাবিক। তখন কী হবে? এর উত্তর একটা হচ্ছে তারা হ্যাঁ না ভোটকে সুষ্ঠু ভাবে হতে দিবে না। ওইটাকে কারুকাজ করে হ্যাঁ পাস করাবে। দুই নাম্বার হচ্ছে তারা এইটা নিয়ে ভাবেই নাই। এতে যে লীগের জনপ্রিয়তা প্রমানের একটা পথ তৈরি হবে তা সম্ভবত বুঝতে উঠতে পারেনি। আচ্ছা, লীগ কি বুঝতে পারছে এইটা একটা সুযোগ তাদের জন্য? তাদের তো দেখি না গণভোটের পক্ষে কথা বলতে। আমার মনে হয় বলয়া উচিত। ... ...
আমি বিশ্বাস করি পৃথিবীর সূত্র একটাই। শান্তিতে থাকা। শর্ত একটাই আপনার শান্তি যেন অন্যের অশান্তি না হয়ে যায়। ব্যাস, এখন আপনি যা ইচ্ছা করেন আর শান্তিতে থাকেন। একটাই জীবন, যতভাবে শান্তিতে থাকা যায় সেই চেষ্টাই হওয়া উচিত প্রধান চেষ্টা। শুধু শর্তটা মনে রাখলেই চলবে। ... ...
"শস্য নেই। যা আছে তা যৎসামান্য। শস্যের চেয়ে টুপি বেশি, ধর্মের আগাছা বেশি।" সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ লালসালু উপন্যাসে লিখেছিলেন। অত বছর আগে লেখা এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের জন্য শতভাগ প্রযোজ্য এই কথা গুলো। প্রতিটা শব্দ এখনকার জন্য প্রযোজ্য। আমরা এই সমাজেই বাস করছি। ... ...
ইতিহাস ঐতিহ্য প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে? জেনজি মনে করে এগুলার কোন মূল্য নাই? নেপালে সিংহ দরবার পুড়িয়ে দিয়েছে। এখান থেকেই বাংলা ভাষার প্রাচীন নিদর্শন চর্যাপদের পাণ্ডুলিপি। এমন একটা জায়গা পুড়িয়ে দিল! জেনজির কাছে এগুলার মূল্য নাই, তাই এগুলা থাকলেই কী না থাকলেই কী? আমরাও একই সূত্রে হারিয়ে ফেলব আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য? মুক্তিযুদ্ধের সময় আন্দ্রে মালরো বিশ্ব ব্যাপী জনসমর্থন আদায়ে নিরলস কাজ করেন। তিনি প্রয়োজনে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ গ্রহণের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু ব্যক্তিগত ভাবে তাঁকে আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশে। তিনি আসনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে আজকে শিবির জয় উল্লাস করছে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়ে বলেন আমি কথা বলছি পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র এমন বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে মৃতের সংখ্যা জীবিতদের থেকে বেশি! এখানেই উল্লাস করছে একাত্তুরের পরাজিত শক্তিরা। আর আমাদেরকে বলা হচ্ছে এইটাই এখন থেকে সত্য! অতীত ভুলে যাও ... ...
কেন যখন এক্সেভেটর দিয়ে ৩২ নাম্বার গুড়িয়ে দেওয়া হল তখন আপনাদের মুজিব প্রেম জেগে উঠল না? একজন একটা কথাও বলতে পারলেন না? একটা ছোট্ট পোস্ট? একটু নিন্দা? আজকে শোক প্রকাশ করাটা একটু বিলম্বিত হয়ে গেল না? এই শোক তো যেদিন ৩২ নাম্বার গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সেদিনই জানানো উচিত ছিল আপনাদের। কেন দেরি করলেন? কিসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন? আবার প্রশ্ন, ভয় পাচ্ছিলেন? মেরুদণ্ড কই? বাঁধনের আবার কিসের ভয়? সে আজকে শোক জানাতে পারল আর যেদিন ৩২ নাম্বার ভাঙা হল সেদিন পারল না? সেদিন শোক জানানোর মত কিছু হয় নাই? ... ...
যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান দিকে দিকে আজ রক্তগঙ্গা অশ্ত্রু গঙ্গা বহমান তবু নাহি ভয় হবে জয়। জয় শেখ মুজিবুর রহমান। ... ...
জনগণ কি এই সবের ম্যান্ডেট দিয়েছিল ৫ আগস্ট? বলেছিল তোমরা সংবিধান বদলে দেও? বলেছিল দল গঠন কর? বলেছিল মুজিবের বাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে দেও? তার কবরে ঝাঁপিয়ে পড়তে রউনা হও গোপালগঞ্জ? বলেছিল সমস্ত জঙ্গিদের ছেড়ে দেও? বলেছিল তোমরা ঝাঁপিয়ে পর হিন্দুদের বাড়ির উপরে? অথচ কথায় কথায় জুলাই আন্দোলন তাদেরকে সব কিছু করার ম্যান্ডেট দিয়েছে এমন কথা শোনায় এই নেতারা। এরা একটু লাইনে থাকলেই আমাদের মত লাখো মানুষকে কাছে পেত অনায়সেই। মুক্তিযুদ্ধ শুধু লীগের সম্পত্তি না, বঙ্গবন্ধু লীগের একার না। এইটাই তো মূল মন্ত্র ছিল। এক বাম নেতাকে এমন কথা বলতে দেখলাম গত দশ পনেরো বছর ধরে। অথচ তিনি এখন এই কথা বলেন না! তিনিও এদের সুরেই মুজিব আবার ক্যাডা বলেন! ভণ্ডামি রন্ধ্রে রন্ধ্রে এদের। ... ...
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এইটা নিয়ে বেশ সরব। তীব্র ভাষায় শুধু মাত্র বাংলায় কথা বলে দেখে ধরে ধরে বাংলাদেশে পাঠায় দেওয়ার সমালোচনা করেছেন তিনি। এইটা শুধু মমতা কেন করছে আর বাকিরা কেন চুপ করে রয়েছে তা আমার জানা নাই। এইটা নিয়ে তো রাজনীতি অন্তত পশ্চিমবঙ্গে থাকার কথা না। কিন্তু অবাক হয়ে দেখতে হচ্ছে যে তাই হচ্ছে। শাসক দলের কর্মকাণ্ড চোখ বন্ধ করে সমর্থন দেওয়ার যে রীতি প্রচলিত আছে তা এখানেও কাজ করে চলছে। অথচ এই বিষয় নিয়ে দলমত নির্বিশেষে এক থাকলে চেহারাটা অন্য রকম হতে পারত। গুজরাটে হাসান শাহর কথা লিখেছি ওপরে, তাঁকে সম্ভবত ধর্মের কারণে ধরে ফেরত পাঠিয়েছে, বাংলাদেশের মিডিয়া তেমনই প্রচার করেছে। যদিও তার পরিবার পশ্চিমবঙ্গের বলে সে জানিয়েছে। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে? বীরভূমের বাসিন্দা আর্জিলা বিবি সুইটি বিবি ও দুই নাতি– ১৬ বছর বয়সী কুরবান শেখ ও ছয় বছরের ইমাম শেখকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে জানা যায় দিল্লীতে বাংলাদেশী বলে আটক হয়েছে তাঁরা। একই রকমের গল্প হচ্ছে সোনালি খাতুন, তার স্বামী দানেশ শেখ ও তাদের ছেলে সাবির শেখের। বীরভূমে বাড়ি তাদের। বাংলাদেশী বলে আটক! এই দুই পরিবারকে ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়েছে! এমন আরও কত কত নাম আছে। মুর্শিদাবাদের লোক আছে, পুরুলিয়ার লোক আছে। ভাষার কারণে বাংলাদেশে বিপদে পড়ছে। এমন একটা সময় যখন এই দেশে ভারতীয় নাগরিক এইটা খুব স্বাচ্ছন্দ্যকর তথ্য না। তাই তারা কেমন আছে, সুস্থ আছে না বিপদে আছে তা জানাও এখন সহজ না। বাংলাদেশের মিডিয়া পুশ ইন নিয়ে যতটা আগ্রহী, পুশ ইন হয়ে যারা আসল তাদের অবস্থা কেমন, কই আছে তা নিয়ে তাদের আগ্রহ কম। ... ...
ভাইরাল হওয়ার জন্য বুদ্ধি দরকার? কত বুদ্ধি আছে ভাই। এমন এমন সব কাজ করবেন যা কোনদিন কেউ করে নাই। মায়ের দাফনের সময় ডিজে পার্টির আয়োজন করলেন, ভালো ক্যামেরায় সব ধারণ করে ছোট ছোট রিলে মুক্তি দিলেন অনলাইনে! কিংবা আবহ সংগীত সহ বাপের লাশ দাফন! মিউজিক ভিডিওর মত করে বাপের লাশ নামানো দেখাইলেন, কোটি কোটি ভিউ! বা ধরেন কেউ আপনার বোনের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করছে, আপনি বাধা দিবেন? না। আপনি ভিডিও করুন। ভিডিওতেই রাগ করুন প্রচণ্ড, ওকে পাইলে ছিঁড়ে ফেলবেন, মাথা ভেঙ্গে দিবেন ইত্যাদি বলতে থাকুন। ভিউ নিশ্চিত। টাকা কামাই করা হচ্ছে মূল কথা, বাকি সব গৌণ। তার জন্য যদি আগুনে পোড়া শিশুকে দিশেহারা হয়ে দৌড়াতে দেখেন তখন দ্রুত ক্যামেরা চালু করুন, ভিডিও করুন। এই ভিডিও ক্লিপই আপনার ভাগ্য বদলে দিবে। কয়জনের কাছে আছে এমন ভিডিও? ভাগ্য দেবতা আপনাকে আজকে এখানে মোবাইল সহ উপস্থিত করেছে, আপনি তো ঘুমায় থাকতে পারতেন, বা আপনার মোবাইলে সময় মত চার্জ নাও থাকতে পারত, পারত না? সব মিলিয়েই তো মোক্ষম সুযোগটা পেয়েছেন আপনি, ভিডিও করবেন না? ছবি তুলবেন না? আশ্চর্য! ... ...
এনসিপির গোপালগঞ্জ সফর চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এবং এর রেশ বহুদূর পর্যন্ত যাবে আমার বিশ্বাস। এনসিপি এখন এইটাকে পুঁজি করে রাজনীতি করবে। মুজিববাদকে কবর দিবে বলে আসছে ওরা, এর অর্থ হচ্ছে ৭২ সালের সংবিধানকে ছুঁড়ে ফেলা হবে, জুলাই সনদ ঘোষণা হবে। লাশ না পড়লে এই রাজনীতিটা তারা সহজেই করতে পারত। কিন্তু চারজনের লাশ, তাদের পরিবারের আহাজারি এখন পর্যন্ত ভারি হয়ে আছে পরিবেশ। রমজান নামের যে ছেলেটাকে মারছে তাকে পুলিশ ধরে রেখেছে এমন ভিডিও দেখা গেছে। পরে তাকে মৃত পাওয়া গেছে। যদিও এই সব জালিমদের হৃদপিণ্ডে বিন্দুমাত্র কাঁপন ধরায় না। আর্মির একটা ভিডিও দেখলাম, রাতে গোপালগঞ্জে কারফিউর সুযোগে রীতিমত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে সম্ভবত। কারণ ভিডিওতে সেনা সদস্যরা উদ্যম নৃত্য করতে দেখা গেল! এইটা কবের কিংবা ফেক কি না জানি না। পেজটা আর্মির নানা খবরাখবর দেয়, তারাই দিয়েছে এই ভিডিও! কতখানি নিষ্ঠুর হলে এমন করা সম্ভব? ... ...