এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  ভ্রমণ   যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে

  • দুর্গম সেই খানে

    . লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে | ২৪ আগস্ট ২০২৫ | ৬০ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • অগস্টের গোড়ায় ফের বেড়াতে বেরোনোর বাই উঠল আমার। বাঘা তো সবসময়ই এক পায়ে খাড়া। এক সপ্তাহের ছুটি নেওয়া মানে নটা দিন। বেশি খরচের মধ‍্যে যেতে চাই না, সামনেই বিশাল খরচসাপেক্ষ একটা এলাহি বেড়ানোর আয়োজন করে রেখেছি।
    বাঘাকে বললাম গন্তব্যের নাম। তবে ফ্লাইটে যাবার অনেক সমস‍্যা। প্রচুর ঘুরে ঘুরে যেতে হবে। অথচ সরাসরি ফ্লাইট এখন বন্ধ রয়েছে কিছু লোকের গা জোয়ারির ফলে। সেই লোকগুলোর হাতেই দুনিয়ার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবার ক্ষমতা। তারা যা চাইবে, তেমনটি না হলে তাদের আছে ভাঁটার মত চোখ। 
    আমার নিয়ে এতটা জীবন একসঙ্গে কাটিয়ে ফেলায় বাঘায় মনের ভেতর থেকে সমস্ত ভয় ডর বেমালুম উবে গেছে তা ইদানীং ভালোই টের পাই। এটা ঠিক প্রশংসা বা নিন্দে নয়, এটা ঘটনা। বাঘা নিশ্চিতে সম্মতি দিয়ে দিলো।
    দুনিয়ায় এখন একটার পর একটা দেশ অগম‍্য হয়ে উঠছে। যুদ্ধ যারা করায়, তারা কি এ কথা মাথায় রাখে না যে, যে মানুষ গুলো নতুন নতুন দেশ দেখতে চায় তাদের লিস্ট থেকে একের পর এক দেশ বাদ পড়ে যাচ্ছে? অবশ‍্য বোঝার ক্ষমতা থাকলে কি আর যখন খুশি একটা একটা করে দেশ বেছে নিয়ে স‍্যাংশন নামক জিনিস চাপায় এরা?
    আমরা এখন জানি, যে দেশ তিন রকমের হয়। বন্ধু দেশ, শত্রু দেশ এবং নিউট্রাল দুধভাত দেশ।
    আমার গন্তব্য শ্বেতরাশিয়া বা বেলারুস। 
    আমার দেশের সঙ্গে শুধু নয় প্রায় সমগ্র পশ্চিম, মধ‍্য ও পূর্ব ইয়োরোপের সঙ্গে এখন বেলারুস ও রাশিয়ার প্রায় বয়কট চলছে। ওদেশে সরাসরি বিমান চলাচল বন্ধ, হোটেলের বুকিং বন্ধ। কয়েকটি মাত্র স্থলপথ খোলা, যার একটি বাদে সবকটাই ইউক্রেনের সঙ্গে। ইউক্রেনে এই যুদ্ধের বাজারে কেউ বেড়াতে যায় না। একটি স্থলপথ এই মুহূর্তে খোলা, সেটি পোল‍্যান্ডের পূর্ব সীমান্তে বুদ নদীর ব্রীজ দিয়ে। এপারে পোল‍্যান্ড ওপারে বেলারুস।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • . | ২৪ আগস্ট ২০২৫ ১০:১১745677
  • যাবার আগে টিকিট কাটার ব‍্যারার থাকে। এখান থেকে বিমানে যাব পোল‍্যান্ডের রাজধানী ভার্শাভা। রিটার্ন টিকিট ঝপ করে কাটা হলো, শেষ মুহূর্তে তাই দাম কিঞ্চিৎ চড়া। 
    এখন ভার্শাভা থেকে বেলারুশের বর্ডার যে জায়গাটা, সেটার নাম তেরেসপোল। তেরেসপোলের পূর্ব প্রান্তে বয়ে চলেছে বুগ নদী। নদীর ওপারে বেলারুস এর ব্রেস্ত শহর। এই পথে আমি লাস্ট যাতায়াত করেছি ট্রেনে ছত্রিশ বছর আগে। এখন স‍্যাংশান নামক কল বসিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে বেলারুসকে টাইট দেওয়া হচ্ছে বোঝা গেল। ভাবলাম তেরেসপোল অবধি ট্রেনে গিয়ে যদি বাকি পথটা পায়ে হেঁটে পার হওয়া যায়। কিন্তু না, বিধি বাম। যেতে হলে কোনও একটা বাহনে চেপে তবেই যেতে হবে। তখন খোঁজ নিয়ে জানা গেল যে বাস যায়। শুরু হলো বাস খোঁজা। উঁহু অনলাইনে কোনও বাস কোম্পানিই ব্রেস্ত যাচ্ছে না। অন্তত আমার দেশ থেকে তো ইন্টারনেটে দেখাচ্ছে যে ভুল গন্তব্য বা ভুল তারিখ দেওয়া হয়েছে বলে। ঐ স‍্যাংশনের কল আর কি!
    শেষে বুদ্ধি খরচ করে বেলারুস ট্রান্সপোর্ট এর সাইট খুঁজে আগাগোড়া রাশিয়ান ভাষায় সব লিখে টিখে পেমেন্ট করে দুজনের জন‍্য বাসের রিটার্ন টিকিট কাটা হলো।
    এবার চাই হোটেল বুকিং। ক্কী ক্কেলো! ব্রেস্ত টাইপ করলেই ফ্রান্সের একটা জায়গা আসছে, একই নাম, হুবহু একই বানান। ব্রেস্ত বেলারুস লিখলে আরেক কেলো হচ্ছে ব্রেস্তের নিকটে গোছের ভাব করে তেরেসপোলের হোটেল দেখিয়ে দিচ্ছে, অর্থাৎ হোটেল বুকিং এর কোম্পানি গুলোও স‍্যাংশানের নিয়ম মানছে।
    কিন্তু আমি কি ডরাই সখি বুকিং ডট কম কে? আরো একটু বুদ্ধি খরচ করে ইয়ানডেক্স অ‍্যাপের মাধ‍্যমে খুঁজলাম, কিন্তু ঐ অ‍্যাপ দিয়ে বুক করা যায় না। তবে কিছু হোটেলের নাম পাওয়া গেল। এবার সেইসব হোটেলের নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখি প্রায় সবই বুকড। একটা হেটেলে কষ্টেসৃষ্টে ঘর পেলাম। তারপরে ফোন করে অনুরোধ করলাম বুক করে দেবার জন্যে।
    ফোনের ওপারের মেয়েটি সঙ্গে সঙ্গে কনফার্ম করে দিল। টাকা পয়সা পেমেন্ট করতে হলো না, গিয়ে পৌঁছে তারপরে টাকা নেবে।
    জিজ্ঞাসা করলাম ব্রেস্ত শহরে হোটেল বুকিং পাওয়া যাচ্ছে না কেন? সব হোটেলই দেখতে পাচ্ছি জায়গা নেই।
    মেয়েটি জানালো, এখন ছুটির মাস, ইস্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সব জায়গায় গরমের ছুটি, টুরিস্টদের ভিড়, সব মিলিয়ে হোটেল গুলোয় এখন জায়গা মেলা ভার।
    আমি কৌতূহলী হই — টুরিস্ট মানে বিদেশি টুরিস্ট?
    সে বলে — হ‍্যাঁ বিদেশিরা সব ক‍্যাম্পিং করতে আসে এখানে এই সময়ে।
    ল্লেহ! স‍্যাংশন কেমন টাইট দিচ্ছে বোঝা গেল, শহর উথলে উঠেছে টুরিস্টে।
  • . | ২৪ আগস্ট ২০২৫ ১১:৪৬745680
  • এদিকে বাঘা জিজ্ঞেস করছে ক্রমাগত, ওখানে কী কী দেখবার জায়গা আছে।
    আমি বিজ্ঞের মতো গম্ভীর হয়ে বলি - দুর্গ আছে।
    - দুর্গ? অনেক পুরোনো দুর্গ?
    - নাহ, তেমন পুরোনো নয়। রাজস্থানে যেমন সব দেখেছিলাম আমরা, সেরকম নয়।
    - সে তো বটেই, ইন্ডিয়া আর ইয়োরোপ তো একরকম নয়।
    -নাহ, একেবারেই একরকম নয়, তবে ইয়োরোপে যে সমস্ত দুর্গ আমরা দেখেছি, মানে মধ্যযুগের সব দুর্গ, যেমন ধরো আমাদের বাড়ির কাছেপিঠেই যেটা - কীবুর্গ, সেটার মতনও নয়। ব্রেস্তের দুর্গে যুদ্ধ হয়েছিল।
    - তারপরে কী হলো?
    - বলব, বলব, সব বলব, তার আগে একটা জরুরি ফোন কল সেরে ফেলতে হবে।
    একটু ফেলুদা স্টাইলে আপারহ্যান্ড নিলাম আর কি।
    বের্নে বেলারুস এর এমব্যাসির নম্বরটা সার্চ করেই সোজা ফোন করে ফেলি। ওপাশে রিং হচ্ছে, এখন সার্চ করা জায়গাটায় ভালো করে পড়ে দেখলাম, আজ এই সময়ে ফোন করবার সময় নয়। নির্ঘাৎ রেকর্ডেড মেসেজ শোনাবে এখন... কিন্তু না, ওপাশ থেকে ফোনকল রিসিভ করেন এক ভদ্রলোক।
    নিজের পরিচয় দিয়ে জানতে চাই, এই সময়ে ব্রেস্ত বর্ডার দিয়ে বেলারুসে প্রবেশের নিয়ম কী কী?
    - সেরকম কিছুই না। আপনি শেংগেনের বাইরের দেশে যেতে গেলে যে যে ডকুমেন্টস নেন, নেবেন, যেমন পাসপোর্ট নিতে হবে, আইডি কার্ডে চলবে না, ভিসা লাগবে না, ফিরবার টিকিট থাকলে ভালো, হোটেল রিজার্ভেশনের প্রমাণ থাকলে দেখাবেন, মেডিক্যাল ইনশিওরেন্স, আর..., টাকা পয়সা ক্যাশ যেটা নিচ্ছেন সেটা দেখিয়ে দেবেন।
    বাঘা পাশেই ছিলো, সেও সব শুনেছে যেহেতু ফোনের স্পীকার অন করে রেখেছিলাম।
    - শুনলে তো?
    বাঘাকে বললাম। বাঘা রেগে গিয়ে বলে, শুনলাম তো সবই, কিন্তু কিছুই বুঝতে পারিনি, তোমরাতো রাশিয়ানে কথা বলছিলে, আমি কি রাশিয়ান জানি?
    আমি আবার ফোনের ভদ্রলোককে বলি, আপনি ইংরিজি জানেন? কিংবা জার্মান? কোনটেয় সুবিধে হবে বলুন, আমার সঙ্গে যিনি যাচ্ছেন, তাঁকে যদি একটু প্লীজ বুঝিয়ে দেন...
    - ইংরিজিতেই বলছি।
    এবার বাঘা নিজেই ফোন হাতে নিয়ে সব জিনিস সবিস্তারে জেনে নিয়ে আশ্বস্ত হয়।
  • . | ২৪ আগস্ট ২০২৫ ১৩:৩৪745681
  • এবার জিনিসপত্র গুছিয়ে নেবার পালা। সঙ্গে রাখতে হবে হাজার দুয়েক মত ক্যাশ। যদি কোনওখানে ক্রেডিট কার্ড কাজ না করে! যদিও হোটেলের মেয়েটি বলেছিলো যে ভিসা, মাস্টারকার্ড, ইউনিয়নপে এবং আরও নানারকমের কার্ড ওখানে দিব্যি কাজ করছে। তাও সঙ্গে করে ক্যাশের সঙ্গে প্রিপেইড কার্ডও নিলাম।
    বাঘার আবদার মতো মিন্সক যাবার প্ল্যানও তৈরি করা হলো, ট্রেনে যাবো। হোটেলও বুক করা হয়েছে। মিন্সকেও ব্যাপক ভিড় হোটেলগুলোয়। আমাদের দুজনের মনেই টানটান উত্তেজনা। বাঘার মনে সেটা নতুন দেশ নতুন মানুষ দেখার কারণে, আমারটা ছত্রিশ বছর পরেও সেই রেলস্টেশনের সেই জায়গাটা চিনে উঠতে পারব কিনা ভেবে। জুলাইয়ের এক সকালে যেখানে এক বুড়ির কাছ থেকে তিন পয়সার আপেল কিনেছিলাম। এই অ্যাত্তো অ্যাত্তো আপেল মাত্র তিন পয়সায়, থুড়ি তিন কোপেক দাম দিয়ে।
    যাবার এক দুদিন আগে কী একটা কাজে আমরা দুজনে মেয়ের সঙ্গে গেছি একজায়গায়। সেখানে এক পোলিশ ব্যবসায়ীর সঙ্গে গুছিয়ে আলাপ হতেই আমি মুখ ফস্কে বলে ফেলেছি, আপনার দেশে তো যাচ্ছি আমরা শিগগিরি।
    - পোল্যান্ডে? কোন কোন জায়গায়?
    ভদ্রলোক উৎসাহিত হয়ে পড়েন।
    - হ্যাঁ মানে পোল্যান্ডে তো যাবোই, আপনার ঐ ভার্শাভাতে। তারপরে ইচ্ছে রয়েছে তেরেসপোল বর্ডার পেরিয়ে, ইয়ে ঐ বেলারুসে একটু ঘুরে আসবার।
    ভদ্রলোক কীরকম একটা অবাক হয়ে পড়েন। যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না আমার কথা। এদিকে আমার মেয়ে চুপচাপ সব শুনছে, সেও জানত না এই প্ল্যান।
    - এত সব জায়গা থাকতে বেলারুস কেন?
    ভদ্রলোকের এই প্রশ্নে আমি বিচলিত হই নি। পশ্চিম ইয়োরোপে এইরকমের প্রশ্ন করাই দস্তুর।
    - যেতে বারণ করছেন তাহলে?
    - না, মানে পোল্যান্ডে কতো ভালো ভালো দেখার জায়গা রয়েছে।
    - হ্যাঁ হ্যাঁ জানি তো, গ্দান্স্ক, তারপর গিয়ে আপনার আউসশুইৎস, থুড়ি ওটা ঠিক সুন্দর জায়গা নয়...
    ভদ্রলোক নিজেই গোটা দুয়েক কীসব জ্য্যগার নাম করে গেলেন। আমিও বাধ্য মেয়ের মতো সব মেনে নিলাম। ঠিকই তো বেলারিস কেন যাবো, এত ভালো ভালো দর্শনীয় স্থান বাদ দিয়ে? কোনও মানে হয়?
    এদিকে মেয়ে চতুর দৃষ্টিতে আমাকে পর্যবেক্ষণ করেছে। ঐখান থেকে বেরোনোর পরেই সে আমাদের দুজনকে কড়া করে শাসিয়ে রাখল বলা চলে।
    - তোমরা কি পাগোল? জানো না, যে স্যাংশন করা হয়েছে রাশিয়া আর বেলারুসকে!
    আমরা আমতা আমতা করে বলি, যাচ্ছি না তো। টিকিট তো পোল্যান্ড অবধি কাটা। মেয়ে তাও ভয় দেখাতে ক্ষান্ত হয় না - তোমরা জানো, ঐ দেশে গেলে আর কোনওদিনও অ্যামেরিকায় ঢুকতে দেবে না!
    (মনে মনে বলি - তো?) মুখে ছদ্ম বিস্ময় নিয়ে তাকাই।
    বলি, বটেই তো, ওরেব্বাবা, সাংঘাতিক ঝামেলার ব্যাপার হবে ওখানে গেলে। নাহ যাচ্ছি না।
    মেয়ের মনে তখন নদী আপন বেগে পাগলপারা সাবধানবানীর স্রোত।
    - তোমরা জানো, আমার একটা বন্ধু আছে আনা নামে, সে সিরিয়া গেছল বলে অ্যামেরিকা যেতে ওর ঝামেলা হচ্ছে?
    - এ বাবা! ঠিক আছে ঐ কথাই রইল।
    মেয়ে চলে গেলে বাঘুকে বলি আজকালকার জেনারেশন এত ভীতু কেন? কোথাকার কোন ট্রাম্প কি অ্যামেরিকা বারণ করে দেবে, আর আমরা আমাদের ইচ্ছে মতো কোত্থাও ঘুরতে যেতে পারব না? ক্কী আপদ মাইরি। যাব যখন ঠিক করেছি একশবার যাব। তুমি যাবে তো?
    - অবশ্যই। অ্যামেরিকা যাবার ইচ্ছে আমারও নেই, তার বদলে অনেক অনেক নতুন নতুন দেশ ঘুরব।
  • . | ২৪ আগস্ট ২০২৫ ১৬:১২745683
  • বেরোনোর আগে দুটো ছুটকো কাজ ছিল। এক, আমাদের একজন বাঙালি বন্ধু, যিনি ব্রিটিশ বাই বার্থ - কারণ লণ্ডনে জন্ম, এবং অধুনা ফ্রান্সের বাসিন্দা, তাকে জানানো বা বলা ভালো জিজ্ঞাসা করে নেওয়া যে সেও সস্ত্রীক আমাদের সঙ্গে যেতে চায় কি না।
    জানালাম। উত্তর ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নেতিবাচক।
    সে বলে, ব্রেস্ত তো ফ্রান্সেও রয়েছে, মরতে পোড়া বেলারুসের ব্রেস্তে যাব কেন?
    এরকম প্রশ্নের উত্তর হয় না।
    সে আরও বলে, ওদের সঙ্গে তো স্যাংশন চলছে, এজন্য পরে কোনও অসুবিধে হবে নাতো?
    - কীরকম অসুবিধে?
    - না, মানে পাসপোর্টে তো ওদের দেশের এন্ট্রি একজিটের স্ট্যাম্প থাকবে, সেইটে নিয়ে যদি পরে কখনও কোনও ঝামেলা হয়...
    - কেন? আমাদের ধরে জেলে পুরে দেবে দেশে ফিরলে? নাকি চাকরি থেকে তাড়াবে, নাকি দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে? মোটা ট্যাক্সো বসাবে?
    - সেসব জানিনা, তবে ঝামেলা তো হতেও পারে...

    ভীতু লোকের অজুহাতের অভাব হয় না। অযথা সময় নষ্ট করি না।

    দুনম্বর কাজটা ছিল সত্যিই জরুরি। বাঘার সঙ্গে বসে একটা কি দুটো ফিচার ফিল্ম দেখা। এ অনেকটা হস্টেল জীবনের দুষ্টুমির মতো। কারোকে ভূতের ভয় দেখানোর আগে যেমন কদিন ধরে লাগাতার ভয়ের গল্প শোনাতে হয়, হরর মুভি দেখিয়ে ভিত পাকা করতে হয়, তারপরে এক রাতে অন্ধকারে ভূতের ভয় দেখালে সে ভয় পাবেই পাবে।
    তো এইটে ভূতের ভয় নয়, ব্রেস্ত শহরটা কেন গুরুত্বপূর্ণ শুধু সেইটুকু জানানোর জন্যেই ব্রেস্তের দুর্গের ওপর একটা সিনেমা অনলাইনে বসে দেখলাম দুজনে। ইংরিজি সাবটাইটেল সহ। বাঘা এই ইতিহাস জানত না। ব্রেস্তে কেন দুরকমের গেজের রেলপথ তাও জানত না। শুধু সে ই নয়, পশ্চিম ইয়োরোপের প্রায় কেও ই জানে না। অথচ এত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, যা আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, সেটিকেই নমো নমো করে পড়িয়ে যাচ্ছে ইয়োরোপের ইস্কুলগুলোয়। আমি হলফ করে বলতে পারি আমার মেয়েও ইস্কুলে এ ইতিহাস পড়ে নি। সযত্নে সুবিধেমত অনেক কিছু মুছে দেওয়া হয়েছে বা সিলেবাসের অন্তর্ভূক্ত করা হয় নি।
    এ অনেকটা ভিক্টিম কার্ড খেলার মত ব্যাপার।
    তাতে কী? আমার তাতে বয়েই গেছে।
    ছোট্ট ছোট্ট দুটো কেবিন ব্যাগেজ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম আমরা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন