কার্ল মার্ক্স। ডাক নাম মুর। ১৮০০ শতকের একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা। অসম্ভব ছিন্ন বিচ্ছিন্ন দুঃখময় জীবন। তবে বন্ধু ভাগ্য খুবই ভালো। এঙ্গেলসের মতো বন্ধু আজকালকার দিনে বিরল। তরুন মার্ক্স ছিলেন হেগেলীয়ান। হেগেলের কথা যারা জানেন, তারা জানেন, আজ যে দ্বন্দের কথা আমরা বলছি, তার প্রবক্তা ছিলেন হেগেল। বিভিন্ন বর্গের মধ্যে পার্থক্য ও সামঞ্জস্য বিধানের লক্ষ্যে তাঁর বিখ্যাত থিসিস, অ্যান্টি থিসিস ও সিন্থেসিস তত্ত্বের কথা আমরা জানি ।
হেগেল ছিলেন ভাববাদী। অপরদিকে ফয়েরবাখ ছিলেন বস্তুবাদী। এদের প্রত্যক্ষ প্রভাব ছাড়াও কাবে, রবার্ট ওয়েন, টমসন ও হগস্কিন ইত্যাদির পরোক্ষ প্রভাব তাঁর তত্ত্বে বিদ্যমান। মার্ক্স তাঁর তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা দিয়ে অনুধাবন করলেন যে সমাজের চালিকা শক্তি অর্থ। তাঁর প্রতিপাদ্য বিষয়গুলিকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যেতে পারেঃ- ১) দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ ২) ঐতিহাসিক বস্তুবাদ ৩) শ্রেণী ও শ্রেণী সংগ্রামের তত্ত্ব ৪) উদ্বৃত্ত মুল্যের তত্ত্ব এবং ৫) বিপ্লব বিষয়ক তত্ত্ব।
যদিও এটি তর্ক সাপেক্ষ্য যে ওপরের সমস্ত তত্ত্বগুলি বাস্তবিকভাবে ঠিক কতটা সত্য। কারণ পরবর্তী ক্ষেত্রে ট্রটস্কী, গ্রামসী, আলথুজার, ডারউইন, জাক দেরিদা, সার্ত্র, ফ্রয়েড, লাকাটশ ইত্যাদি যেমন দেখিয়েছেন যে মার্কসবাদ তত্ত্বের ফাঁকফোকর, তেমনি দেখিয়েছেন তার বাস্তব প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা।
মহামতি লেনিন ও চেয়ারম্যান মাও এই তত্ত্বের প্রয়োগে এনেছেন ও মিশিয়েছেন তাদের “আপন মনের মাধুরী”, যা খানিকটা মাত্রায় সফল হলেও পরবর্তী ক্ষেত্রে অসফল প্রমাণিত হয়েছে। কারণ নদীকে যদি আমরা বাঁধ দিয়ে আবদ্ধ করি, তার গতিকে অবরুদ্ধ করি এবং উৎস থেকে নতুন জল আসতে না দিই, তবে তার পচন ও মজে যাওয়া অনিবার্য।
এরিক হবসবম থেকে বর্তমানে স্লাভোই জিজেক এখনকার অন্যতম প্রভাবশালী মার্ক্সবাদী দার্শনিক। চলছে পৃথিবী জুড়ে টাইম সিরিজের ওপর নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা। যদিও আমার আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু মার্ক্সের কাজের এমন একটা দিক, যা অনেকেরই অগোচরে।
তিনি দর্শনের চর্চার সঙ্গে সঙ্গে যে গণিতের চর্চাও করেছেন, এবং সেখানে ক্যালকুলাসের মধ্যেকার অতীন্দ্রিয়বাদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, সেটা ভারতবর্ষের ক’জন ‘মার্ক্সবাদী’ জানেন আমার সন্দেহ আছে।
আজ থেকে প্রায় বছর ১৭/১৮ আগে আমার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল মাননীয় শ্রী প্রদীপ বক্সী মহাশয়ের। আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন শ্রী অনুপম দাস। প্রদীপ বক্সী রুশ ভাষা থেকে বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় টীকা সহ তর্জমা করেন মার্ক্সের গণিতের পাণ্ডুলিপির। প্রদীপবাবু এই অসম সাহসিক, ধৈর্যশীল ও কষ্টসাধ্য কাজটি না করলে, গণিত শাস্ত্রের মার্ক্সকৃত বৈচিত্র্যপূর্ণ বিশ্লেষণ, উপস্থাপনা ও ব্যাখ্যার অগাধ ঐশ্বর্য আমাদের কাছে থেকে যেত অজানা। যদিও বক্সী মহাশয় আক্ষেপ করছিলেন যে বিদেশে তার কাজ সমাদৃত হলেও, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তার জন্মস্থান পশ্চিমবঙ্গে তেমন একটা কিছু আলোচনাও হয় নি।
‘প্রকৃতির দ্বান্দ্বিকতায়’ বিধৃত এঙ্গেলসের নিম্নলিখিত উক্তিটির সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিতঃ- “দেকার্তের চলরাশি সমুহের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে গণিতের একটা দিক পরিবর্তন ঘটে গেছে, গণিতে এসেছে গতি, তাই দ্বান্দ্বিকতা, এবং তৎক্ষণাৎ অনিবার্যভাবে অন্তরকলন ও সমাকলন বিদ্যার উদ্ভব ঘটেছে। তখনই এদের সূত্রপাত ঘটেছে, এবং নিউটন ও লাইবনিজ এদের একটা মাত্রায় পূর্ণতা প্রদান করেছে মাত্র- আবিষ্কার করেননি”।
১৮৮১ সালে মার্ক্স, এঙ্গেলসকে যে পান্ডুলিপি দুটি পাঠিয়েছিলেন, সেগুলিতে অন্তরকলনের প্রকৃতি সম্পর্কে তাঁর চিন্তা ভাবনার মৌলিক ফসলগুলি স্থান লাভ করেছে। অর্থনীতি সংক্রান্ত নানান সুত্র বুঝবার জন্য তাকে ক্যালকুলাসের সাহায্য নিতে হয়েছিল। মার্ক্সের পাঠানো চিঠিগুলি থেকে জানতে পারা যায় যে রাজনৈতিক অর্থনীতির গূঢ় তত্ত্বের উন্মোচন ও বিশ্লেষণে তিনি হয়ে উঠেছিলেন উৎসুক। কিন্তু প্রথম দিকে অর্থনৈতিক সংকটের সমস্যার সমাধান নিরসনে তিনি হতোদ্যম হয়ে পড়েন। এরপর ১৮৭৩ থেকে ১৮৮৩ সালের মধ্যে তিনি আবার শুরু করেন তাঁর কর্মসূচী। তিনি মুলত উৎসাহী ছিলেন অন্তরকলনবিদ্যা নিয়ে। তিনি মনে করতেন এই বিদ্যার ভিত্তিটি বেশ নড়বরে। তিনি এই ব্যাপারে এঙ্গেলসের সঙ্গে সহমত ছিলেন।
এঙ্গেলস তাঁর “Anti Duhring”-এ লেখেন যে সীমাহীন ক্ষুদ্র ও সীমাহীন বৃহৎ রাশির পরম মান এবং তার বিস্তৃতির ক্ষেত্রে নিউটন ও লাইবনিজের ব্যাখ্যা চরমভাবে ব্যার্থ হয়েছে। ফলে গণিতের কৌমার্য তথা অনিবার্য নিশ্চিতির মহীরুহ গেছে ভেঙে। গণিত প্রবেশ করেছে অনিশ্চয়তার রাজ্যে।
মার্ক্স তাঁর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে উপলব্ধি করেছিলেন যে প্রকৃতির দ্বন্দ্ব বর্ণনার ক্ষেত্রে এই চলরাশির পরমমানকে ব্যাবহার করতে হলে, তার মানকেও দ্বন্দ্বমূলক হতে হবে। তাঁর আগে প্রকাশিত কলনবিদ্যা এবং তার প্রাপ্ত মান ইত্যাদি নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। ১৮৮১ সালের ১৮ অগস্ট মার্ক্সকে লিখিত এক চিঠিতে এঙ্গেলস লিখলেন, “গতকাল আমি তোমার গণিত পাণ্ডুলিপিটি পড়বার জন্য সাহস সঞ্চয় করলাম। এবং সানন্দে দেখলাম পাণ্ডুলিপিটি পড়তে গিয়ে আমার কোনও পাঠ্য পুস্তকের প্রয়োজন পড়ছে না। তোমাকে অভিনন্দন। বিষয়টা এমন প্রাঞ্জল করে তুলে ধরা হয়েছে যে আমার এটাই বোধগম্য হচ্ছে না, যে গনিতবিদেরা গনিতকে কেন অতীন্দ্রিয় করে রেখেছিল। এবং বিষয়টা আমার মস্তিষ্কে এমনভাবে প্রোথিত হয়ে গেছিল যে গতকাল স্বপ্নে আমি একজনকে আমার শার্টের বোতাম অন্তরকলন করতে দিলাম এবং সেই লোকটি সেটি নিয়ে দৌড়ে পালাল”।
মার্ক্স কলনবিদ্যার ইতিহাস নিয়েও চর্চা করেছেন। সেই জন্য তাঁকে পড়তে হয়েছে ম্যাক্লরিন, টেলর ও ল্যাগ্রাঙ্গের তত্ত্ব এবং ডি-আলেম্বার্টের পদ্ধতি।
এই পাণ্ডুলিপি অনুসারে, আমরা, অন্তরকলন বিদ্যার প্রধান পদ্ধতিগুলির ইতিহাস সম্পর্কে মার্ক্সের দৃষ্টিকোণকে নিম্নলিখিত ভাবে উপস্থিত করতে পারিঃ-
১) নিউটন ও লাইবনিৎজের “অতিন্দ্রীয়বাদী অন্তরকলন”
২) অয়লার ও দালাঁবেরের “যুক্তিবাদী অন্তরকলন” এবং
৩) ল্যাগ্র্যাঞ্জের “বিশুদ্ধ বীজগাণিতিক কলন”।
মার্ক্সের মতে নিউটন ও লাইবনিৎজ অন্তরকলন বিদ্যার “বীজগাণিতিক” উৎসগুলি খুঁজে দেখেননি। তাঁরা সরাসরি পরিকর্ম নির্দেশী সূত্রগুলি নিয়ে কাজ শুরু করেন। তাই তাদের উদ্ভব ও তাৎপর্য অবোধ্য, এমনকি রহস্য মণ্ডিত হয়ে থাকে। আর এই কলনটি “প্রচলিত বীজগণিত থেকে ভিন্ন। গণনার এক স্বাধীন উপায়” হিসেবে এমন এক সদ্য আবিষ্কৃত গাণিতিক বিদ্যা হিসেবে আবির্ভূত হোল, “যা প্রচলিত বীজগণিতের পথে, আকাশের তারার মতোই দূরের, বহু দূরের ব্যাপার হয়ে থাকল”।
ডি-আলেম্বার্ট প্রাথমিক ভাবে অন্তরকলনকে মুক্ত করল তার অতীন্দ্রিয়তার নাগপাশ থেকে এবং লাগ্রাঞ্জ স্থাপন করল তার বীজগাণিতিক ভিত্তি। ল্যাগ্রাঞ্জের বিশ্লেষণ যোগ্য অপেক্ষকের তত্ত্ব যার প্রস্থান বিন্দু হোল টেলরের সেই উপপাদ্য যেখানে দেওয়া আছে অন্তরকলনের কার্যকরী সুত্র, যা ব্যক্ত করে y1 or f(x+h) সিরিজকে, যার সঙ্গে থাকে অন্তরকলনের চিহ্ন যুক্ত সহগ। তিনি দুটি ক্ষেত্রে ল্যাগ্রাঞ্জের তত্ত্বের প্রশংসা করেনঃ-
১) শুধুমাত্র অন্তরকলনের বীজগাণিতিক ভিত্তি স্থাপনই নয়, অপেক্ষকের প্রাপ্ত মানের বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করা যা তার পরবর্তী গণিতবিদেরা দেখেও দেখেননি। f(x+h) অপেক্ষকের সমস্ত রকম বীজগাণিতিক সম্ভাবনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন h এর ছোটো থেকে বড় সমস্ত মানের অনুসারে তাকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন অন্তরকলন বিদ্যায়। ফলে অন্তরকলন পেয়েছে তার যথার্থ ও পরিশীলিত রূপ।
২) নিউটন লিখিত সংখ্যার মানের পরিবর্তনের অধিবিদ্যার উত্তরনের বা লাইবনিজের বিভিন্ন সজ্জার অতি ক্ষুদ্র মানের ক্ষেত্রের মতো সমস্ত রকমের অতীন্দ্রিয়বাদিতা থেকে ল্যাগ্রাঞ্জ ছিল মুক্ত। যার মধ্যে ছিল অদৃশ্য পরিমাণে মূল্য সীমিত তত্ত্ব (limiting value theory of vanished quantities), অন্তরকলনের সহগ হিসেবে dy/dx=0/0 এর ব্যাবহার ইত্যাদি।
যদিও গণিতের বুৎপত্ত্যি মার্ক্সের তেমন একটা ছিল না। তিনি গণিতের মূলসূত্রগুলি সম্পর্কেও তেমন একটা অবহিত ছিলেন না। তিনি অবহিত ছিলেন না মহাদেশীয় গণিতবিদদের সম্পর্কেও, যার মধ্যে কওচির ছিলো মতো গণিতবিদ। যে গণিতবিদের সঙ্গে মার্ক্সের সখ্যতা ছিল তিনি হলেন সামুয়েল মুর। যদিও মুর মার্ক্সের কাজের তেমন একটা সমর্থক ছিলেন না, কিন্তু তিনি এডওয়ার্ড আভেলিং এর সঙ্গে একযোগে মার্ক্সের ক্যাপিটালের প্রথম ভাগ ইংরেজীতে অনুবাদ করেছিলেন। মার্ক্স ছিলেন স্বশিক্ষিত এবং এই কাজে তিনি ১৭শ ও ১৮শ শতাব্দীর গণিত বইগুলি পড়েছিলেন।
তিনি অন্তরকলন পড়া শুরু করেন ফরাসি ধর্মযাজক অ্যাবে সউরি নামক একজন গণিতবিদের লেখা বই থেকে যার নাম “গণিতের পূর্ণাঙ্গ পাঠ”.
এরপর তিনি পড়েন জাঁ লুই বুর্শালের বই - An Elementary Treaties on the differential and Integral calculus. সউরি তাঁর বইতে লাইবনিজের অনুকলন পদ্ধতির উপস্থাপনা করেন। বুর্শালের কাজে ডি-আলেম্বার্ট ও ল্যাগ্রাঞ্জের সংমিশ্রণ দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও মার্ক্স অয়লার এবং ম্যাক্লরিন, ল্যাক্রোই, জন হাইন্ড, হল, জর্জ হেমিং ইত্যাদির কাজের সঙ্গে সুপরিচিত ছিলেন।
উদ্ভুত ফাংশন বা derived function সংক্রান্ত মার্ক্সের পাণ্ডুলিপি শুরু হচ্ছে একটি সরল অপেক্ষক দিয়ে। y=ax. এখন যদি x বৃদ্ধি পেয়ে x1 হয়, তবে y1=ax1 হবে। এবং y1-y = a (x1-x). এখন যদি এদের ওপর অবকলন প্রক্রিয়া চালানো যায় তাহলে সেক্ষেত্রে ধরা যাক x1 কমে গিয়ে হোল x যেখানে x1=x; x1-x=0; ফলে a(x1-x)=0. অপর পক্ষে y কমে গিয়ে হোল y1. যেহেতু x হয়ে গেছে x1. ফলে y1=y এবং y1-y=0. অর্থাৎ y1-y = a(x1-x); 0=0.
“প্রথমে অবকলন করে তারপর সেটিকে বাদ দিলে কিছুই থাকে না। অবকলন প্রক্রিয়াটির সমস্ত সমস্যাটি গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সহজ সরল পদ্ধতি এবং তাকে অবলোকন করবার প্রক্রিয়ার ওপর যা আমাদের পৌঁছে দেয় সত্যে”।
মার্ক্স তারপর y1-y=a(x1-x) এই সমীকরণের উভয়দিকে x1-x দিয়ে ভাগ করে। সমীকরণটি দাঁড়ায় y1-y/x1-x=a. এরপর তিনি মন্তব্য করলেন, “যেহেতু a হোল ধ্রুবক, ফলে সেটি অপরিবর্তনশীল। ফলে সমীকরণের ডানদিকেও সেটি আর কমে না। এই অবস্থায় অবকলনটি ঘটে সমীকরণের বাঁদিকে। y1-y/x1-x or ∆y / ∆x. এবং এটি হোল ax এর মতো একটি সরল অপেক্ষকের চরিত্র।
এবার মজা শুরু হয়। এখন যদি ওপরের অপেক্ষকের হরের মান x1 থেকে কমতে কমতে x এর দিকে যেতে থাকে তবে সীমার(Limit) সূত্রানুযায়ী মান হয় x1-x=x-x=0। ওপর দিকে y1-y=y-y=0. এখন যদি তাই হয় তবে আমরা পাব 0=a.
“যেহেতু 0/0 এই অভিব্যাক্তিতে তার মূল উৎস এবং অর্থের রূপটি লুকিয়ে রয়েছে, তাই তার জায়গায় আমরা লিখছি dy/dx. অর্থাৎ dy/dx=a.
“কিছু গণিতবিদ এক্ষেত্রে সান্ত্বনা হিসেবে যুক্তি দেন যে যেহেতু dy/dx সীমাহীনভাবে ক্ষুদ্র, সেহেতু 0/0 ব্যাপারটাকে নগন্য বা বাদ দিয়ে দেওয়া যেতে পারে”।
এক্ষেত্রে দুটি জিনিশ আমরা খুঁজে পাই। প্রথমটি হোল অনুকলনের অনুপাত হিসেবে অবকলনের উপস্থাপনা। অপরটি তিনি মনে করতেন যে তিনি একটি দ্বন্দ্বমূলক প্রক্রিয়ার বিশ্লেষণ করছেন। বিশেষ করে যা ছিল নেতির নেতি পদ্ধতির অনুসারী।
এদিকে ইয়ানোভস্কায়া ভিন্ন মত ব্যাক্ত করলেন। অনুকলনের দ্বন্দ্বমূলক ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে একই সঙ্গে বৈপরীত্যের উপস্থিতিকে বললেন মিথ্যে। এই প্রসঙ্গে তিনি বললেন যে, কোনও কোনও মার্ক্সবাদী অনুকলনকে দ্বন্দ্বমূলকভাবে দেখতে অভ্যস্ত। কিন্তু তারা এটা ভুলে গেছেন যে দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ কখনো ধ্রুবক হয় না বা সেইরকম ধ্রুব কিছুকে চিহ্নিত করে না।
এখন আমরা দেখব লাইবনিজের অনুকলন তত্ত্বের কোন বিষয়টি মার্ক্স সমালোচনা করেছেন।
ধরা যাক একটি অপেক্ষক y=x
2;
এখানে x
1=x+∆x পরিবর্তিত হয়ে হোল x
1=x+dx
- y+dy=(x+dx)2
- y+dy=x2+2xdx+dx2
- dy=2xdx+dx2 (উভয়দিক থেকে y & x2 বাদ দিয়ে পাই)
এখন দেখা যাবে উপরের সমীকরণের সবচেয়ে ডানদিকের dx
2টিকে চেপে বা হাওয়া করে দেওয়া হোল। এবং পড়ে থাকা সমীকরণটি হোল
dy/dx=2x;
এখন প্রশ্ন হোল এইভাবে কী করে একটি পদকে হাওয়া করে দেওয়া যায়। তাহলে যিনি এটি হাওয়া করেছেন তিনি নিজে জানেন যে এই পদটি অপেক্ষকের অংশ নয়। মার্ক্স এই রহস্যময় ভোজবাজির দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সমালোচনা করেছেন। তিনি এটিকে বলেছেন “হাতের কারসাজি”।
এবারে আমরা দেখব ঠিক কীভাবে ডি অ্যালেম্বার্ট এই বিষয়টিকে দূরীভূত করেছেন। মার্ক্স লিখেছেন যে ডি অ্যালেম্বার্ট সরাসরি নিউটন ও লাইবনিজের প্রস্থান বিন্দু থেকে তার কাজ শুরু করেছেন। x
1=x+dx এর জায়গায় তিনি লিখলেন x
1=x+∆x
এখানে ∆x হোল প্রাথমিকভাবে একটি সসীম বৃদ্ধি যাকে নির্ণয় করা যায় না। তিনি এই ∆x কে বললেন h. ∆x এবং h এর dx এ পরিবর্তন ঘটেছে একদম শেষ মুহূর্তে। কিন্তু অতীন্দ্রিয়বাদীরা এই পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন দুম করে এবং প্রথমেই। মার্ক্স নিম্নলিখিত অপেক্ষকের সাহায্যে এই বিষয়টিকে প্রাঞ্জল করে দেখালেনঃ-
Suppose f(x) =x
3 - [f(x+h)-f(x)]/h=3x2+3xh+h2.
- dy/dx=3x2 [উভয়দিকে h=0 বসিয়ে পাই]
এক্ষেত্রে 3xh+h
2 অংশটি
যে উধাও হয়ে যায় সেটি ন্যায্য। এক্ষেত্রে কোনও কারসাজির আশ্রয় নেওয়া হয় নি। লাইবনিজের সুত্রের এটি হোল উন্নতি। বলা বাহুল্য, যে এখানে h এর প্রথম ঘাতের সহগ হিসেবে অপেক্ষকটির আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। অর্থাৎ নিউটন বা লাইবনিজের সঙ্গে অপেক্ষকটির মিল থাকলেও, নতুনটি তার আগের আত্মীয়ের থেকে বীজগাণিতিক ভাবে আলাদা।
এখন আমরা দেখব মার্ক্স কীভাবে অন্তরকলন প্রক্রিয়াকে দ্বন্দ্বের সঙ্গে মেলালেন বা নেতির নেতি পদ্ধতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করে তুললেন।
প্রথমত, তিনি চলরাশিকে একটি সত্যিকারের চলরাশির মতোই দেখলেন। ফলে x এর সঙ্গে h বা ∆x যোগ করার বদলে তিনি x কে x
1 বৃদ্ধি করার পক্ষপাতী ছিলেন।
ডি আলেম্বার্ট এবং তার নিজের বীজগাণিতিক পদ্ধতির পার্থক্য নির্দেশনার জন্য তিনি নিম্নলিখিত অপেক্ষকটি ব্যবহার করলেন।
f(x) অথবা u=x
3 + ax
2 Now, f(x
1)-f(x)=u
1-u=x
13+ax
12-(x
3+ax
2)
এখানে মুখ্য অপেক্ষকটি বাদ দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। বরঞ্চ প্রথম অবকলন অপেক্ষকটি থেকে আমরা প্রথম পরিবর্তনের একটা চেহারা পাই। এটি প্রথম নেতি যেখানে x কে বাদ দিয়ে x1 করা হয়।
[f(x1)-f(x)] / (x1-x)=(u1 -u) / (x1-x)= x12+x1x+x2 + a(x1+x)
এই ভাগের ফলে আমরা প্রাথমিক অপেক্ষকটি পাই। এইবার x1=x বসিয়ে আমরা সমীকরণের ডানদিকে পাই 3x2+2ax এবং বামদিকে পাই ০/০। এটিই হোল দ্বিতীয় নেতি বা নেতির নেতি। এইভাবে আমরা উপনীত হই একটা নতুন অপেক্ষকে। যেখানে আমরা f1(x)= 3x2+2ax.
এঙ্গেলস তার Anti Duhring এ লেখেন, “উচ্চতর ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে নেতির নেতি পদ্ধতি বিস্ময়করভাবে সফল। বিশেষ করে সীমাহীনভাবে ক্ষুদ্র রাশির যোগফল হিশেবে, যাকে ডুরিং নিজে গণিতবিদ্যার সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ের প্রক্রিয়া বলে ব্যক্ত করেছিলেন, যা সাধারণভাবে অবকলন ও সমাকলন নামে পরিচিত। এই দুই ধরণের কলনের ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মনে করুন কোনও একটি প্রদেয় সমস্যায় দুটি চলরাশির মান x এবং y. একজনের পরিবর্তন ছাড়া অপরটি পরিবর্তিত হতে পারে না। তারা এই শর্তে সম্পর্কিত। এবার আমি তাদের এমন ক্ষুদ্র মান নিয়ে অবকলিত করলাম যারা যত ছোটই হোক, তাদের পরম মানের সাপেক্ষে অদৃশ্য হয়ে যায়। ফলে x এবং y না পরে থেকে পরে থাকল তাদের ক্ষুদ্রতম মানের অনুপাত। ফলে y/x এর তুলনায় dy/dx এর মান ০/০ হয়ে যায়”।
তিনি আরও বলেন, “এই অদৃশ্য হয়ে যাওয়া মানেরা তাদের অদৃশ্য হওয়াকালীন সময়ে ধরা দেয়; এও এক বৈপরীত্য। গণিতের বিশ্বে প্রায় ২০০ বছর ধরে এটি আমাদের অসুবিধায় ফেলেছিল। এর হাত থেকে মুক্তি মিলল এবারে। যদিও আমরা কী করলাম? শুধু মাত্র x এবং y এর জায়গায় তাদের নেতি dy/dx-কে ফর্মুলার সমীকরণে পেলাম। এরপর আমি dy/dx নিয়েই প্রক্রিয়া চালু রাখলাম, যেখানে dy এবং dxকে বাস্তব মান হিশেবে পরিগণিত করলাম। যদিও এরও কিছু ব্যাতিক্রম আছে। তবে এক বিশেষ অবস্থায় আমি এই নেতিকে আবার নেতি করলাম। অর্থাৎ আমি অবকলিত সুত্রকে সমাকলন করলাম এবং x এবং y ফেরত পেলাম। যদিও আগের x এবং y এর সঙ্গে ফেরত পাওয়া x এবং y এর মিল নেই। কিন্তু এই প্রক্রিয়া ব্যাবহার করে আমরা এমন একটা সমস্যার সমাধান করে ফেললাম, যা করতে সাধারণ জ্যামিতি এবং বীজগণিতের দাঁত ভেঙে যাচ্ছিল”।
এইভাবে এঙ্গেলস যখন সীমাহীন ক্ষুদ্রের অনুপাত হিসেবে dy/dx কে মেনে নিয়েছিল, তখন মার্ক্সের ক্ষেত্রে সেটা সম্পূর্ণতা পেয়েছিল যখন ∆x এবং ∆y এর মান হয়ে দাঁড়ালো শূন্য।
সম্ভবত নিউটনের “অদৃশ্য হওয়া ভুতুড়ে মানের” বৈপরীত্যতায় বার্ক্লের সন্মতি প্রদান মার্ক্সকে অবাক করেছিল। স্যামুয়েল বাটলার লিখিত এক ছদ্ম প্রেমপদ্যকে, যার নাম ছিল হুডিব্রাস, মার্ক্স নিশ্চিতভাবে তারিফ করতেন যেখান থেকে বার্ক্লে ধার করে তার উধৃতিটি দিয়েছিল, “সে সমস্ত কিছুকে অভিনয়ে প্রকাশ করতে পারত/ অরূপত্ব দ্বারা জানতে পারত তাদের প্রকৃতি / যেখানে সত্তা এবং তার প্রকৃত চরিত্র/ আসলে এক ভুতুড়ে অসাড় শরীরের মাছি ”। (He could reduce all things to acts/ and knew their natures by abstracts,/ where entity and quiddity / the ghosts of defunct bodies fly”.
কিন্তু মার্ক্স যখন সব কিছু গলদ ফাঁস করে দিল, এঙ্গেলস তৎক্ষণাৎ তখন তার মতামতে সায় দিল।
১৮ অগস্ট ১৮৮১ সালে লেখা তার চিঠিতে তিনি ব্যাক্ত করলেন, “y=f(x) এই অপেক্ষকে x এবং y চলরাশি। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কলন করছি না, ততক্ষণ সমস্ত রকম পরিণতির বাইরে গিয়ে একটি যুক্তি দেওয়া যায় যে কলনের আগে আসলে x এবং y হোল নেহাতই ধ্রুবক। এবং অপেক্ষকের মধ্যে যখন তারা পরিবর্তিত হয়, তখনই তাদের চলরাশি বলা যায়। তখনই তাদের চলনের ভিতরে সম্পর্ক টানা সম্ভব, যা আদত সুত্রে অধরা থেকে যায়। ফলে অপেক্ষকে x যখন x1 এ পরিবর্তিত হয়, x1 আবার তেমনভাবে x এ পরিবর্তিত হয়।
কিন্তু এই নতুন x, আগের x এর মতো হয় না। সে তখন অন্য। তার রূপ তখন আলাদা, যা খুব সম্ভবত, অদ্ভুতভাবে সমর্থন করে কুর্ট গোয়েডেলের “Theory Of Incompleteness” এর একটি উপপাদ্যকে।
তিনি আরও লেখেন, “ যা একদিন অনেক গণিতবিদ দাবি করে আসছিল, আমরা এবার সেটি স্পষ্ট দেখতে পেলাম। দেখতে পেলাম অবকলনের সহগেরাই আসল, খোদ অবকলনটি হোল প্রাপ্ত। “অন ডিফারেন্সিয়ালে” লিখিত মার্ক্সের প্রবন্ধের সঙ্গে উপরোক্ত বাক্যগুলির মিল দেখতে পাওয়া যায়। তিনি লেখেন ০/০ তে লবকে হরের থেকে আলাদা করা যায় না। কারণ একমাত্র জোড় অবস্থাতেই সে সঠিক সম্পর্কটি প্রকাশ করতে পারে। এক্ষেত্রে অনুপাতটি
( y1-y)/(x1-x) =[f(x1)-f(x)] / (x1-x)
যখন তার ক্ষুদ্রতম রূপে পৌঁছয়, যেখানে লবের মান গিয়ে দাঁড়ায় ০, কারণ হরের মানও ০। যদিও আলাদা করে তাদের নিজস্ব মানও ০। কিন্তু আলাদা হয়ে গেলে তাদের অন্তর্নিহিত অর্থটি যায় হারিয়ে। অর্থাৎ dy বা dx তাদের নিজরূপে অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে dy/dx চিহ্নের দ্বারা। কিন্তু মার্ক্সকে এটা মেনে নিতে হয়েছে যে ব্যবহারিক দিক থেকে অন্তরকলনকে কাজে লাগানো হয় প্রাপ্ত মান পাওয়ার গণনার জন্য। তিনি বলেন, “ যে মুহূর্তে অবকলনকে প্রস্থান বিন্দু হিসেবে ধরে গণনা সম্পূর্ণ করা হয়, যা কীনা বীজগাণিতিক অবকলনের উল্টো পদ্ধতি, তখনই তাকে দেখতে মনে হয় আলাদা একটি উপায়, যা যেন বিশেষভাবে চলরাশির হিসেব নিকেশের জন্যই”।
কিন্তু এই চলরাশি জিনিসটি ঠিক কী? গণিতে “চলরাশি” বলতে কী বোঝায়? বিখ্যাত ইংরেজ দার্শনিক বারট্রান্ড রাসেলের মতে “যে ধারণাগুলির মানে বোঝা সবচেয়ে কঠিন – এটি- অবশ্যই- তাদের মধ্যে একটি”। আর গণিতবিদ কার্ল মেঙ্গার এই ধারণার অন্তত পক্ষে ৬টি একেবারে আলাদা আলাদা অর্থের উল্লেখ করেছেন।
চলরাশির বা অন্যকথায় অপেক্ষকের ধারণার ব্যাখ্যায় মার্ক্স সোজাসুজি অপেক্ষকের ধারণার ভিন্ন ভিন্ন অর্থের – “x-এর” অপেক্ষকের এবং “x-স্থ” অপেক্ষকের প্রশ্নটি উত্থাপন করেছেন। গণিতে চলরাশির উপস্থাপনা ঠিক কীভাবে করা উচিৎ এবং এই পরিবর্তনের দ্বান্দ্বিকতা কোথায় নিহিত – তা তিনি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করেন এমন একটা সময়ে যখন নিউটনের “মুলনীতি”-র সংশ্লেষণ মূলক পদ্ধতি ও প্রতীকগুলিকে এক ধরণের পবিত্র ও অলঙ্ঘনীয় অন্ধবিশ্বাসের বিষয়ে পর্যবসিত করেছিল।
চলরাশির ক্ষেত্রে মার্ক্সের বক্তব্যের দুটি দৃষ্টিভঙ্গির কথা উল্লেখ করেন ডি জে স্ট্রুইক। তিনি বলেন, “প্রক্রিয়াগত চরিত্র এবং মূলগত বীজগণিত থেকে অবকলন প্রস্ফুটনের সঠিক মুহূর্ত নির্ধারণের ক্ষেত্রে মার্ক্সের তত্ত্বটি একটি নতুন মতবাদের জন্ম দেয়”। কে এ রিবনিকভ বলেন, “ মার্ক্সের প্রকাশিত পাণ্ডুলিপির থেকে ভি আই গ্লিভেঙ্কো দেখিয়েছেন যে মার্ক্সই হলেন প্রথম ব্যাক্তি, যিনি অবকলনের প্রক্রিয়াগত চরিত্রের কথা উল্লেখ করেছেন”। পরবর্তী কালে ফ্রেক্ট এই চরিত্রটিকে এগিয়ে নিয়ে তার বিখ্যাত ফাংশনাল অ্যানালাইসিস তত্ত্বে ব্যবহার করেছেন।
দ্বিতীয় যে ধারণার কথা স্টুইক বলেন সেটি হোল “বীজগাণিতিক অবকলনের উল্টো পদ্ধতি”।
ধরা যাক y=x
3উপরোক্ত অপেক্ষকের অবকলন করবার জন্য x কে বৃদ্ধি করে x
1 করা হোল, এবং y কে বৃদ্ধি করে করা হোল y
1. এখন আমরা লিখতে পারিঃ-
y
1-y = x
13-x
3 - (y1-y) / (x1-x) = x12+x1x+x2 [উভয়দিককে (x1-x) দিয়ে ভাগ করে পাই]
- dy/dx= 3x2 [x1 কে তার নূন্যতম মান x এ নিয়ে গিয়ে পাই]
ফলে উপরোক্ত সমীকরণের বামদিকের পদটি প্রতীকী এবং ডানদিকেরটি প্রক্রিয়াগত। অর্থাৎ মার্ক্স একই সমীকরণের দুটি রূপ তুলে ধরেন এবং নতুন ও পুরাতনের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করেন। এই “বীজগাণিতিক অবকলনের উল্টো পদ্ধতি” টি ধরা পড়ে মার্ক্সের প্রাথমিক সুত্রে যা দিয়ে আমরা এই আলোচনা শুরু করেছিলাম। y=ax সমীকরণের মাধ্যমে।
যদিও মার্ক্স দ্বারা অবকলন ও তার প্রাপ্ত পরমমানের বিশ্লেষিত তথ্য গণিতের ঐতিহাসিক সমৃদ্ধির উপর তৎক্ষণাৎ কোনো সরাসরি প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি, কিন্তু এঙ্গেলস এই স্বাধীন আবিস্কারের শিরোপা দিয়েছেন মার্ক্সকে। কারণ মার্ক্সকৃত অবকলের প্রক্রিয়াগত পদ্ধতির স্বীকৃতি লাভ করে উনবিংশ শতাব্দীর গনিতবিদদের দ্বারা, যেখানে তার পদ্ধতি ঋদ্ধ করে গণিতের শাখাকে। এছাড়াও মার্ক্সের অন্তরদৃষ্টি দিয়ে ধরা পড়া তত্ত্ব যা কোনও রাশির বৃদ্ধির অংশ হিসেবে ক্যালকুলাসের ব্যবহারকে স্বীকৃতি প্রদান করে, আজ জায়গা করে নিয়েছে পাঠ্য পুস্তকে।
গতকাল এই মহান প্রতিভার ছিল জন্মদিন। এবং মনে করছি তিনি সতত আমাদের অন্তরে বিরাজমান থাকবেন।
বিঃদ্রঃ গণিত বা লজিক আমার চর্চার বিষয় কোনদিনই ছিল না; তবে গণিতের ইতিহাস আমাকে এখনও টানে। আর চারপাঁচটা গল্প, উপন্যাস বা প্রবন্ধের বই পড়তে পড়তে প্রদীপবাবুর বইটিও একসময় পড়বার উৎসাহ জন্মেছিল। তবে একসময় শুধুমাত্র জানবার জন্য দর্শন পড়তে গিয়ে কাউকে কাউকে পাশ্চাত্য দর্শন এবং তার লজিকের চ্যাপ্টারগুলো (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি) পড়িয়েছিলাম। এখন ভাবলে যেন কেমন কেমন লাগে!
ঋণঃ
১) মার্ক্সের ম্যাথেমেটিক্যাল ম্যানুস্ক্রিপ্ট – প্রদীপ বক্সী।
২) সোফিয়া আলেকসান্দ্রেভ্না ইয়ানোভ্স্কায়ার রচনা
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।