"বাংলাদেশে হিন্দুরা বিন্দাস আছে। ঐসব মন্দির-ফন্দির ভাঙার গল্প বেশীরভাগই গুজব।
হ্যাঁ, দেউড়ী গ্রামের কালীবাড়ীটা
পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ঠিকই।
কিন্তু দেখেন ম্যালা পুরানো সেই মন্দির!
আমার দাদা রহিম পাটোয়ারি
সে নাকি ছোটবেলায় প্রত্যেক মঙ্গলবারে
ভোগের খিচুড়ি খেতে যাইতো সেখানে।
তো সেই মন্দির না পুড়ালেও
একরকম পোড়া মন্দিরই তো ছিল।
এ নিয়ে এতো আদিখ্যেতা কেন বাবা!
হিন্দুরা আরামেই আছে এই দেশে।
দিব্যি খেয়ে-ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আরে জানি জানি,
মোহন কাকার ১২ বছরের নাতনীটাকে
রহমত মিয়া তুলে নিয়ে গেছিল -
এটা পুরান কাহিনী।
শুনেছি তেজগুলি পাড়ার পশ্চিম কোনায়
যে পুরানো প্রেসটা আছে
সেখানেই গলায় গামছা পেঁচায়ে মেয়েটারে মারা হয়।
আহারে!
তবে রহমতেরেও দোষ দেই কি করে বলেন?
অতোটুকু মেয়ে, অথচ কি বাড়ন্ত শরীর।
আর ঐ দিকে পরিবারের হুঁস নাই।
ঐ রকম একটা মেয়েরে কেউ
বিকেল বেলায় টিউটরের কাছে পাঠায়?
শত হইলেও রহমত তো পুরুষ!
হিন্দুরা বেশ সুখেই আছে এখানে।
বাপ-দাদার জমি কামড়ে পড়ে আছে।
যদিও এক দুইজন যে
ভিটা থেকে উচ্ছেদ হয় না তা না।
তবে ক্ষতি কি?
এই তো সেদিন বাজারের সাথে লাগোয়া
সাহা পরিবারের বড় পুকুরটা
চেয়ারম্যান সাহেব লিখিয়ে নিলেন।
কখনও কখনও হুমকি-ধামকিও দেয়া হয়,
ও কিছু না,
একসাথে থাকলে ওরম একটু হয়-ই
তাই বলে দেশ ছাড়তে হবে?
এদের আসলে এক পা ভারতেই থাকে।
বলছি তো বাবা, হিন্দুরা ভাল আছে।
একটু আধটু চড়-থাপ্পর,
“মালুর বাচ্চা” বলে গালি… এসব কিছু না।
মানছি ৭০ বছরের পরেশ চন্দ্র শীলের গায়ে
হাত তোলা ঠিক হয়নি।
কিন্তু আমার কথা হলো নাপিত তুই।
চুল কাটার কাটবি।
কাস্টমার যদি ১০ টাকা দিতে না চায়
তাহলে এতো পিড়াপিড়ির কি দরকার?
মাত্র তো ১০ টা টাকা।
এতো বুড়া হইলো, অথচ লোভ কমে না!
লোভী মানুষরে আল্লাহও পছন্দ করেন না।
হিন্দুরা সুখে আছে।
আমরা এখানে মিলে মিশেই আছি।
আমার জিগরি দোস্তও তো হিন্দু।
একবার হলো কি শোনেন
আমার বড় চাচা তাকে খাসির কথা বলে গরু খাইয়ে দিল।
হা হা হা।
সে এক মজার গল্প।
হা হা হা।
আরেকদিন বলবো নে।
আজ একটু তাড়া আছে।
ওপর তলার ভাড়াটিয়া রমলা দেবীর কাছে যাব।
মহিলা ভাল। কথা শোনে।
আগে সন্ধ্যা হলেই ঘন্টা বাজাতো।
না বলাতে এখন আর বাজায় না।
কিন্তু ঐ ধূপের গন্ধটা ইদানিং
আমি আর সহ্য করতে পারি না।
দেখি, বারণ করে আসি।
আসলে কি জানেন?
এক সাথে থাকতে গেলে
একটু ছাড় দিয়ে চলতে হয়।
এমনিতে কিন্তু হিন্দুরা ভালোই আছে এ দেশে।
-ফেসবুক