এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ ২৪

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ০৮ জুন ২০২৫ | ৩৫ বার পঠিত
  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ ২৪

    “মানুষের মর্মে মর্মে করিছে বিরাজ,
    সংক্রমিত নরকের কীট”
    - সুধীন্দ্রনাথ দত্ত

    কিসসা নম্বর এক

    জিএমের চেম্বারে ডাক পড়েছে। একটা পেপারের কাটিং এগিয়ে দিলেন।
    স্থানীয় পত্রিকার ভেতরের পাতার ছোট্ট খবর — “মুর্গা খানে কে বাদ ভী ঋণপত্র ফাড় দিয়া গয়া”!

    শিবনাথ নদীর তীরে আমাদের একটি ছোট্ট শাখা। সেখানকার ম্যানেজার নাকি সরকারি যোজনার অন্তর্গত লোন স্যাংশন করার আগে মুর্গি উপঢৌকন নিয়েছিলেন।
    কিন্তু গেঁয়ো লোকটাকে ‘হাতে গরম’ লোন দেয়ার আগে নিজের হাত একটু গরম করার দাবি জানিয়েছিলেন। লোকটি তার অক্ষমতার কথা জানালে ক্রুদ্ধ ব্রাহ্মণ অভিশাপ দেন এবং স্যাংশন লেটার ছিঁড়ে ফেলেন।

    জিএম — তোমার কি মনে হয়, খবরটা সত্যি? আমাদের কোন ম্যানেজার এরকম করতে পারে? অন্ততঃ এই ছেলেটি? ও যে ব্রাহ্মণ সন্তান!
    -- না পারার কী আছে? একে আমি ভাল করে চিনি।
    শুনুন, এই ছেলেটির জন্ম থেকে পায়ে খুঁত আছে। একটু পা টেনে দুলে দুলে চলে। সেটা কোন দোষ নয়। কিন্তু এই শারীরিক ত্রুটিকে পুঁজি করে ও অন্যদের ইমোশন্যালি এক্সপ্লয়েট করে।
    বিয়ে হয়েছিল এক সম্পন্ন শিক্ষিত ব্রাহ্মণ পরিবারে।
    সেটাও এক কিসসা।
    এ বিয়েতে মেয়ের বাবা-মা এবং মেয়ে নিজে রাজি ছিল না।
    মেয়েটি ইংরেজিতে এম এ। ছেলেটি মফঃস্বলের কলেজ থেকে বি এ পাস।
    কিন্তু ছেলেটা মেয়ের ঠাকুমাকে (পরিবারের কর্ত্রী) এমন পটিয়ে ফেলল যে সবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়েটা হয়ে গেল। সেখানেও নাটক।

    বিয়ের মণ্ডপে সাতপাক শুরু হয়েছে। এক পাক হতেই বেঁটে বক্কেশ্বরের সিংহনাদঃ
    রুক যাও!
    মেয়ের বাবা গুণে গুণে পাঁচ হাজার কড়কড়ে নোট আমার বাবার হাতে না দেওয়া অব্দি বিয়ের অনুষ্ঠান এগোবে না”!

    -- বুঝেছি, এটা তোমার অধীন ব্র্যাঞ্চ। যাও, কালকে গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলে আসলে কী হয়েছে জেনে নাও।
    শনিবার নাগাদ আমার টেবিলে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং রিপোর্ট চাই।

    যথারীতি শবরীনারায়ণ তীর্থস্থলে গিয়ে গোটা কয়েক গ্রাম এবং নালিশ যে করেছে তার কথা শুনলাম, বয়ান নিলাম।
    তারপরে ব্যাংকে এসে ম্যানেজারকে বললাম ঝেড়ে কাশতে; ওর সই করা বয়ান নেব।

    উনি দু’হাত উলটে বললেন — অমন কিছুই হয় নি। একটা উটকো লোকের কথা বিশ্বাস করবেন, নাকি নিজের অফিসারকে?
    ও চেয়েছিল পঞ্চাশ হাজার, আমি স্যাংশন করেছি তিরিশ হাজার, তাই নালিশ করেছে।

    -- বেশ, স্যাংশন লেটার দেখাও। ও, তুমি তো সেটা ছিঁড়ে ফেলেছ!
    -- বাজে কথা স্যার! এই দেখুন, তিরিশ হাজারের স্যাংশন লেটার।
    -- আচ্ছা, দু’মাস আগের অরিজিনাল লোন অ্যাপ্লিকেশন দেখাও আর রেজিস্টারে ওর রিসিভ করার এন্ট্রি এবং ডিসপোজাল দেখাও।

    ম্যানেজার ইতস্ততঃ করে। আমি ক্লার্ককে বলি নিয়ে আসতে।

    -- হুঁ, তোমার রেজিস্টারের এন্ট্রি বলছে — অ্যাপ্লিকেশন এবং স্যাংশন দুটোই পঞ্চাশ হাজার! তোমারই হাতের এন্ট্রি। এবার এই পঞ্চাশ হাজারের স্যাংশন লেটার দেখাও।
    ম্যানেজার উসখুশ করে।

    -- তার মানে অভিযোগ সত্যি? অরিজিনাল স্যাংশন লেটার ছিঁড়ে ফেলেছ। এই তিরিশ হাজার স্যাংশনের কাগজ পরে তাড়াহুড়ো করে বানিয়েছ?
    ম্যানেজার চুপ।

    -- শোন পণ্ডিত, দাঈয়ের কাছে পেট লুকোতে চেষ্টা কর না।

    হ্যাঁরে, তুই হচ্ছিস অর্ডিনারি বিএ পাশ। ব্যাংক আজ যদি তোকে জিপিএল (গাঁড় পে লাথ) করে বের করে দেয়, কী করে ভাতের জোগাড় করবি? তোকে তো কোন মুদিদোকানে কর্মচারিও রাখবে না?
    এখন কমার্শিয়াল ব্যাংকের সমান মাইনে পাচ্ছিস।
    চারবছরে একবার বৌ-বাচ্চা নিয়ে এসি কোচে সওয়ার হয়ে ভারত দর্শনে যাস।
    ব্যাংকের লোনে বাড়ি এবং মোটরবাইক হয়েছে, এখন সুখে থাকতে ভূতে কিলোচ্ছে?
    চাকরি গেলে ব্যাংক ঋণ আদায় করতে তোর বাড়ি নিলামে তুলবে সে খেয়াল আছে?

    কাগজপত্তর বানিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় চাপরাশি ফিসফিসিয়ে বলল — স্যার, আমার সঙ্গেও করেছে।
    -- মানে?
    -- আমার ছেলে গ্র্যাজুয়েট, শিক্ষিত বেরোজগার স্কীমে চা-জলখাবারের দোকান দেবে বলে লোন চেয়েছিল। পেয়ে গেল, কিন্তু আমাকে দু’হাজার দিতে হল। কত বললাম যে আমি আপনার অধীন স্টাফ।
    উনি বললেন - ম্যানেজার কে? আমি না তুমি? লোন মঞ্জুর করার পাওয়ার কার?

    রিপোর্ট দিলাম। তাতে ব্যাংকের চাপরাশির বয়ানও ছিল এবং সঙ্গে লোন স্যাংশন রেজিস্টারের সার্টফায়েড কপি।
    আমার রেকমেন্ডেশন ছিল যাতে ডিপার্টমেন্টাল এনকোয়ারি হয়, কিন্তু চাকরি না যায়।
    এই বাজারে কারও পেটে লাথ মারলে ধর্মে সইবে না।

    হ্যাঁ, মাসের শেষে ওর কাছে ট্রান্সফার অর্ডার পৌঁছে গেল — সাতদিনের মধ্যে ওড়িষ্যা সীমান্তে আমলিপদর শাখায় গিয়ে চার্জ নিতে হবে।

    কিসসা নম্বর দুই

    সেই যে ফ্যামিলি প্ল্যানিং ক্যাম্পের কিসসা শুনিয়েছিলাম –তারপর ছ’মাস কেটে গেছে।

    যে স্বল্পভাষী যুবকটি মাত্র একটি কন্যা সন্তানের পিতা হওয়া সত্ত্বেও ‘বড় চিরা’ লাগিয়ে স্থায়ী ভ্যাসেকটমি করাতে চেয়েছিল-- জুগল সায়, সে আমার একজন ডিপোজিটর।
    সেদিন থেকে ওকে একটু আলাদা চোখে দেখছিলাম। আজ সে হাজির হয়েছে, সঙ্গে তার বাবা কনক সায় এবং ছোটভাই বুধারুকে নিয়ে। তিনজনই আমার গ্রাহক। বেশ কয়েক হাজার সবার খাতায় জমা রয়েছে।
    ওরা বাবা আর ছোট ছেলে বসে আছে পেছনের বেঞ্চে, বড়ছেলে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে।
    ব্যাপারটা কী?

    জুগলকে জিজ্ঞেস করায় ও মাথা নেড়ে ইশারায় বলল পরে বলবে।
    বুঝলাম, টাকাপয়সার ব্যাপার; ভিড়ের সামনে মুখ খুলবে না। ঘন্টাখানেক পরে ওদের বললাম এসে আমার সামনে চেয়ারে বসতে।

    -- বল, কী ব্যাপার?
    জুগল ওর বাবা কনক সায়ের দিকে ইশারা করে। ভাবটা — ওই মুখ ফুটে বলুক।

    প্রায় ছ’ফিট লম্বা ষাট পেরিয়ে যাওয়া খেঁকুরে বুড়ো কনক সায়ের খোঁচা খোঁচা দাড়ি, অন্ততঃ সাতদিন গালে ক্ষুর পড়েনি।
    তবে হাতে কাচা সাদা ফতুয়া এবং ধুতি বেশ সাফসুতরো।

    ও মুখ খোলে, “ সাহেব, আমার বৌ মারা গেছে কুড়ি বছর আগে। পরিবার বলতে এই দুই ছেলে। হাইস্কুলে পড়িয়েছি, বিয়ে দিয়েছি।
    ছিল পনের একর চাষের জমি, ইঁটের দেয়াল, খাপরার ছাদওলা বাড়ি। ছিল দুটো পাতকুয়ো, ঘরের পেছনের ছোটখাটো ফলবাগান। যেই এনটিপিসি বিজলি কারখানা গড়তে সেটা নিয়ে নেবে বলে নোটিস দিল অমনই পাটোয়ারির সঙ্গে সলাহ্‌ করে জমি সমান তিন ভাগ করে তিনটে আলাদা পর্চি বানালাম।
    সব পাঁচ একরের।
    কেন? না পাঁচ একর জমির মালিককে কারখানায় চাকরি দেবে।
    তাই আমার দুই ছেলে টাকা ছাড়াও ওখানে চাকরি পেয়েছে। একজন স্টোরের চৌকিদার, অন্যজন বিজলি মিস্ত্রি।

    -- খুব ভাল করেছ, কিন্তু সমস্যাটা কী?
    -- সাহেব, ওরা আমাকে রাখতে চায় না। একজনও না। সবার আলাদা সংসার। সবাই লেবার কোয়ার্টার পেয়ে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। এখন আমি বুড়ো মানুষ, ষাট পেরিয়েছি।
    মোর সঙ্গওয়ারি লা ভগবান উপ্পর বুলালিস। একা মানুষ, হাঁপের রুগি, হাত পুড়িয়ে কতদিন খাব?

    -- ওরা কী বলে?
    -- ওরা বলে আমার নামে যে’কটা টাকা আপনার ব্যাংকে জমা আছে সেটা যাকে লিখে দেব — সেই আমাকে রাখবে।

    আমি ছেলেদের দিকে তাকাই।
    এসব কী শুনছি?
    ছোটজন চটপট জবাব দেয় — ঠিকই শুনেছেন। আমি বাবার দেখাশুনো করব, খাওয়াবো পরাবো, আর বুড়ো টেঁসে গেলে সেই টাকাটা দু’ভাগ হবে?
    বড়জন কোন হ্যাপা না সামলেও আমার সমান টাকা পাবে? এ ঘোর অন্যায়।

    বড়জন দোহারকি দেয়, ‘ছোট ঠিক বলছে। বাপ কারও একার নাকি? বুড়ো টাকাটা যদি সমান ভাগ করে দেয় তাহলে আমরা ছ’মাস ছ’মাস ভাগাভাগি করে ওকে রাখব। তা না হলে যার সঙ্গে থাকতে চায় তাকে পুরোটা লিখে দিক। আপনার ব্যাংকের খাতায় তার নাম জুড়ে দিক, তাই আমরা একসঙ্গে এসেছি। আপনিই ফয়সালা করুন’।

    আমার গলার স্বর চড়ে যায়।
    -- আরে এই সিয়ান আদমি (প্রৌঢ় ব্যক্তি) তোমাদের বাবা। জন্ম দিয়েছে , খাইয়ে পড়িয়ে বড় করেছে, বিয়ে দিয়েছে। এখন তাকে তোমরা রাখতে চাও না?
    এই যে এনটিপিসির চাকরি, কোয়ার্টার, বাচ্চাদের ভাল স্কুলে পড়ানো — এসব কার জন্যে হয়েছে? কোন একজন তো সঙ্গে রাখ, ভুলে যাও অন্যজনে কী করছে!

    ওদের চোয়াল শক্ত, ওরা নড়েচড়ে না।
    উঠে দাঁড়ায় কনক সায়। পরনের ফতুয়া টেনে তুলে আমাকে তার হাড় জিরজিরে পাঁজর দেখায়। বলে — দেখুন সাহেব, আধপেটা খেয়ে খেয়ে আমার কী হাল!

    তারপর তেতো মুখে বলে-- কাউকে একটা পয়সা দেব না। চাল চিঁড়ে কিনে ভিজিয়ে খাই, তাই করব। উপর থেকে ভগবান দেখছেন।

    দশদিন পরে পুলিশের থেকে খবর আসে — অমুক গাঁয়ের কনক সায় বলে একটা বুড়ো একটা ঝোপড়িতে মরে পরে আছে।
    তার মাথার কাছে একটা পুঁটুলিতে কিছু চাল, কয়েক’শ নগদ আর একটা পাসবুক পাওয়া গেছে। গ্রামীণ ব্যাংকের নাম লেখা।

    কিসসা নম্বর তিন

    কুট্টনীতন্ত্রম্‌

    আদিবাসী গ্রামটিতে আছে একটি হেলথ সেন্টার। সেখানে ট্রান্সফার হয়ে এলেন মুখুজ্জে কাকু। কোলকাতা মেডিকেল কলেজের ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট!
    কিন্তু গ্রহের ফেরে পাকাচুল ভদ্রলোক এখানে এসেছেন, অন্ততঃ তিনবছরের মেয়াদে।
    এখানে আছে একজন মালয়ালি নার্স এবং ড্রেসার ভুবন।

    ভুবনের কাজ হেলথ সেন্টারের দামি ওষুধ গাঁয়ের দুই লাইসেন্সবিহীন ডাক্তারি করা লোককে বিক্রি করা। একজন সংস্কৃতের টিচার সদাহাস্যমুখের মিশিরজি। উনি কোন এক শেঠের রোগ নিরাময় করে (গনোরিয়া) কৃতজ্ঞতার নিদর্শন হিসেবে একটি মাটির বাড়ি পেয়েছেন। কিন্তু উনি কন্ট্রা-ইন্ডিকেশন না জেনে একজনকে পেথিড্রিন এবং আর একজনকে ডেকাড্রন ইঞ্জেকশন দিয়ে মেরে ফেলেছেন!
    লোকে মেনে নিয়েছে যে ও তো কপালের লেখা! মিশির-গুরুজির কোন ভুল নেই।
    এদিকে মুখুজ্জে কাকু যে গান্ধীবাদী এবং কিতাবী সৎ। উনি রোগীকে বোঝান — এই ইঞ্জেকশনটা সরকারি, পয়সা লাগবে না। আর এইটা আমার নিজের কেনা, যা ছাপা দাম তাই দেবে।
    রোগী বাইরে এলে ভুবন বলে — বাঙালি ডাক্তার ঢপ দিচ্ছে। দুটোই সরকারি ওষুধ। তোদের ঠকাচ্ছে।

    হ্যাঁ, ডক্টর মুখার্জির আদর্শবাদের ঠেলায় সরকারি ওষুধ বাইরে পাচার করা চক্রের নাজেহাল অবস্থা।

    আর একজন আছে -- ভুবনের স্ত্রী, মেডিক্যাল ফিল্ড ওয়ার্কার। উনি বাড়ি বাড়ি কুইনাইনের গুলি বিতরণ করেন। রোগীদের রেকর্ড রাখেন। বাড়ির দেয়ালে লালরঙে নম্বর ও তারিখ লিখে দেন — কবে শেষবার বসন্তের টিকা দেয়া হয়েছে ইত্যাদি।

    কিন্তু ওনার আসল আয় কুট্টনীবৃত্তি থেকে। উনি গাঁয়ের নামকরা আওরতখোর লোকটির স্থায়ী এজেন্ট। মালয়ালি নার্সকে প্রথমদিনই বলেছেন — দাউ ভাইয়া আপনাকে দেখেছে, মাথায় করে রাখবে। আপনি খালি একবার দোস্তির হাত বাড়ান।
    মেয়েটির স্নানে যাওয়ার সময় দাউজি এসে আচমকা ঘরে ঢুকে চেয়ার টেনে বসে পড়ে, নড়ে না। চিৎকার শুনে ডাক্তার মুখার্জি এলে দাউ উঠে নির্বিকার মুখে বেরিয়ে যায়।

    ছুটির দিনে আমরা মুখুজ্জে কাকু এবং আরও দুয়েকটি পরিবার নদীর পাড়ে পিকনিকে গেলে নার্সকে সঙ্গে নিয়ে যাই। ফলে ভুবন দম্পতির দুই বাঙালি পরিবারের উপর বিশেষ রাগ।

    ওদের একটিই ছেলে, রায়পুরে পড়ে।
    হোলির দিন সে সবার সামনে আমার জামায় কাটা আলু দিয়ে স্টেনসিল ছেপে দেয়-- - “চৌদা লে”! তারপর বলে — বুরা ন মানো, হোলি হ্যায়!

    সেদিন ব্যাংকের চাপরাশি গেছল ওদের বাড়িতে, একটা লোনের কিস্তি বাকি-- তাগাদা করতে।

    এসে বলল — বাড়িতে শুধু ছেলেটা ছিল। মাটিতে আসনপিঁড়ি হয়ে বসে ঘি-ভাত খাচ্ছিল। ওর বন্ধু এসে বলল — কী রে, আজকাল রোজ ঘি -ভাত? আছিস ভাল।
    ছেলেটা বলল — তাতে তোর কি! রেন্ডি আজকাল খুব কামা রহীঁ! বেশ্যাটা ভালই রোজগার করছে।

    কিসসা নম্বর চার

    উত্তর প্রদেশের বলিয়া জেলার ডাকাবুকো ক্লার্ক ছেলেটি বেশ বলিয়ে কইয়ে। সুন্দর হিন্দি বলে।
    নামকরা হিন্দি সাপ্তাহিক ‘দিনমান’ পত্রিকায় ওর একটা প্রতিবাদ পত্র ছাপা হয়েছে। বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রদের উপর পুলিশের বর্বর লাঠি চার্জ!

    সবাই ভয় পাচ্ছে; সেই ভয়ের আবহাওয়ায় নতুন ইউনিয়নের নির্বাচনে আমি আর ও প্রচুর ভোটে জিতলাম। প্রেসিডেন্ট এবং জেনারেল সেক্রেটারি। আমরা ছুটি নষ্ট করে মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন জেলায় ইউনিট তৈরি করতে ট্যুর করলাম। পয়সা নেই, প্যাসেঞ্জার ট্রেনের জেনারেল কম্পার্টমেন্ট এবং বাস ভরসা।

    কয়েক বছর পরে ও কলিয়ারির কাছে আমার ব্র্যাঞ্চে ফিল্ড অফিসার হয়ে এল। ওপেন কাস্ট মাইনিং। কয়লার গুঁড়োর আর ধুলোয় আমার হাঁপানি বেড়ে গেল। ওকে চার্জ দিয়ে ছুটিতে গেলাম। এসে আমার চক্ষু চড়কগাছ।

    অদ্ভুত সব ঋণ দিয়ে বসে আছে।

    বেশ কয়েকটা ইয়র্কশায়ার বোর বা সাদা শুয়োর।
    দিয়েছে দেবার নামের দলিত জাতিকে যারা শুয়োর পালে। তা বেশ, কিন্তু এক পয়সা কিস্তি আসছে না কেন?

    অন্য একজন স্টাফকে নিয়ে ইউনিট দেখতে গেলাম। একটা বিশাল বড় খোঁড়া শুয়োর, কোন কাজের নয়; লেংচে লেংচে অতিকষ্টে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কী ব্যাপার!
    -- না ঠাকুর সায়েব বলেছেন, এখন এটা নিয়েই কাজ চালাতে। আর বলেছেন আমাদের ৮০% সরকারি অনুদান।
    তাই দু’বছর একপয়সা শোধ দিতে হবে না।

    আমার নাকের পাটা ফুলে ওঠে। কীসের পচা গন্ধ!

    চলে আসার সময় লোকটি বলে – দাঁড়ান সায়েব।

    ওর ইশারায় ঘরের ভেতর থেকে একটি শ্যামলা মেয়ে হাসিমুখে বেরিয়ে আসে, কপালে কাঁচপোকার টিপ, দাঁতের ফাঁকে তামাক পাতা। আমাকে ঘরের ভেতরে যেতে ইশারায় ডাকে।

    বাইক স্টার্ট করি।
    পেছন থেকে শুনতে পাই আমার খাতকের কন্ঠস্বর — কী হল সায়েব? আপনার পছন্দ হয় নি? আরে ঠাকুর সায়েব তো একে সোজা কোলে তুলে ঘরের মধ্যে নিয়ে যেতেন!

    তারপর ও পাশের অন্য একটি গ্রামীণ ব্যাংকে ম্যানেজার হয়ে চলে গেল। সেই ব্যাংকের পরিচালনায় দেনা ব্যাংক, বড্ড ঢিলেঢালা। এন পিএ বা যে লোনগুলো অসুস্থ, তার প্রতিশত ৫৩%!

    আমরা নাক সিঁটকাই।

    খবর পেলাম ও পালিয়ে বেড়াছে। সরকারি যোজনায় গরীব মানুষের থেকে এমন ঘুষ খেয়েছে যে ওকে কলেক্টর ডেকে পাঠিয়েছেন।

    তারপর ওর সঙ্গে আবার দেখা। বিলাসপুর শহরের বাইরে কিছু পতিত জমিতে লাল ঝান্ডা পুঁতে সিপিআই সেগুলোকে ঘর বানানোর জন্য ভূমিহীনদের মধ্যে বিতরণ করেছে। আন্দোলন করে সরকারি পাট্টা পাইয়ে দিয়েছে।
    সেখানে ওদের এক ডাকাবুকো সাথী ভাড়াটে গুণ্ডার হামলায় মারা যায়।

    আমাদের ঠাকুর সাব সেই বাড়িটি মাত্র দশ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছেন এবং বে-আইনি ভাবে একের পর এক ঘর বানিয়ে বাড়ির চৌহদ্দী বাড়িয়ে চলেছেন। আমাকে বলল — নেবেন নাকি একটা? আরও বাড়ি খালি আছে। আপনাকে কমদামে -- ।
    আমি হাতজোড় করি।

    শেষবার খবর এল যে ও ফের পালিয়ে বেড়াচ্ছে -- এবার নিজের ছেলের থেকে।

    একমাত্র ছেলেটি স্কুলের বেড়া ডিঙোয় নি। খালি বাপের থেকে পয়সা চায়। ড্রাগের নেশা। বাবা একসময় হাতের মুঠো বন্ধ করেছে। তাই শ্রীমান নিজের বাপকে মারতে কাউকে সুপারি দিয়েছে।

    কিসসা নম্বর পাঁচ

    ব্যাংক তখনও নতুন। গায়ে কাঁচা রঙের গন্ধ।
    একটি শাখায় ইনস্পেকশন করতে গেলে ম্যানেজার লেজারে একটি মেয়ের ছবি দেখায়। তার চোখের চাওয়ার হাওয়ায় পাগলকরা মাদকতা।
    থানেদার, ঠিকেদার, তহশীলদার -- সবাই তাকে পেতে চায়।
    কিন্তু “যে নষ্ট তাকে পাওয়া এতই সহজ”!

    জিতে গেল আমাদের আগের ম্যানেজার।
    ক্লার্ক নালিশ পাঠালো হেড অফিসে, সাক্ষী ডেইলি ওয়েজে কাজ করা চাপরাশি।
    ম্যানেজার ওকে ভয় দেখায়, বলে -- সিন্দুক থেকে একটা সোনার গয়না বের করে নিয়ে তোকে পুলিশ কেসে ফাঁসিয়ে দেব।
    সে বয়ান বদলে ম্যানেজারের পক্ষের সাক্ষী হয়ে যায়।

    চেয়ারম্যান সারদা’র এসব ঢ্যামনামি সহ্য হয় না। সোজা চাপরাশিকে তাড়িয়ে দেন।
    এক কলীগের অনুরোধ আসে — তুই ছুরি শাখায় ওকে রেখে নে। গরীব ব্রাহ্মণ, দুটো ছেলেমেয়ে। কোথায় যাবে?

    আমি পণ্ডিতকে বলি — তোর ঝোলায় একটা ডিফল্টারের লিস্ট আর রিকভারি স্লিপ রেখে নে। যেই হেড অফিসের গাড়ি আসবে, পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে লিস্ট দেখে ওদের বাড়ি গিয়ে তাগাদা করবি, কিছু আদায় করে আনবি।

    কিন্তু চেয়ারম্যান সারদা সব খবরই পেয়ে যান।
    ওনার নেটওয়ার্ক সক্রিয়। একদিন আমাকে ডেকে বললেন — তুমি ওকে লাগিয়েছ শুনলাম।
    -- হ্যাঁ স্যার। কাজকর্ম ভালই করছে। তবে কখনও বেচাল দেখলে দূর করে দেব, আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন।

    পণ্ডিত ব্যাংকের পেছনের আউটহাউসে সপরিবারে থাকে।
    ওদের আর একটি মেয়ে হয়।
    আমার গিন্নি ওর বাচ্চাদের প্রশ্রয়ের চোখে দেখেন।

    পণ্ডিতের গ্রাম্য সংস্কৃতিতে বৌকে চাপে রাখতে হয়। তাতে দরকার মত দু-একটা চড় চাপড়!
    ওর অসহ্য লাগে আমাকে স্ত্রীর নাম ধরে ডাকা, সমানে সমানে তর্ক করা ইত্যাদি।

    ও বোঝায় — দেখ বাঈ, পতি পরমেশ্বর হোয়ত হ্যায়। অমন তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কথা বলতে নেই।
    তুই বাঈ ‘সুখসাগর’ আর ‘প্রেমসাগর’ বই দুটো পড়ে দেখ। আর ব্যালকনিতে অমন খোলা চুলে দাঁড়াতে নেই।
    পাশের বাড়ির আদিবাসী গোঁড় পরিবারের মহিলাটি চুড়েইল। যদি একবার তোর দিকে তাকিয়ে চুলের তারিফ করে তো একমাসে ন্যাড়া হয়ে যাবি।

    কয়েক বছর পরে আমি যখন চল্লিশ কিলোমিটার দূরের কয়লাখনি ব্র্যাঞ্চে, হঠাৎ এক রবিবারে পন্ডিত এসে হাজির। এসেছে সপরিবারে, এবং পাশের বাড়ির সেই গোঁড় পরিবারের চোদ্দ বছরের মেয়েটিকে নিয়ে।

    -- কী ব্যাপার?
    -- তোদের কুশল দেখতে এলাম সায়েব, অনেকদিন হল।
    -- চল্লিশ কিলোমিটার?
    -- ওটা তো বাসের ঘোরানো পথ। আমরা আহিরণ নদী পেরিয়ে পায়ে হেঁটে এসেছি, মাত্র বারো কিলোমিটার।

    আমরা খুশি হই। হামাগুড়ি দেয়া বাচ্চাটা বড় হয়ে গেছে। লজ্জায় চোখ পিটপিট করছে। দু
    বেলা খাওয়া দাওয়া গল্পগুজবের পর ছোট্ট লেবার কোয়ার্টারে গোটা পরিবার একটা ঘরে মাটিতে চাদর বিছিয়ে শুয়ে পড়ে।
    বলে পরের দিন ভোরে ডেকে দিতে।
    ফের হেঁটে ফেরত যাবে। ব্যাংক খোলার একঘন্টা আগে পৌঁছতে হবে যে!

    ডেকে দিলে ঘুমচোখে ছোট বাচ্চাটা দুলে দুলে বলে — কেইসে যাবো? চায় দিবে, ইমলি দিবে তব তো যাবো!
    গিন্নির চোখে আহিরণের ঢেউ। ওরা চা এবং তেঁতুলের চাটনি দিয়ে রুটি খেয়ে তবে গেল।

    তিনমাস পরে ছুরি শাখায় গেছি। কিন্তু চাপরাশি পণ্ডিত কোথায়?
    ম্যানেজার আমার ব্যাচমেট, গম্ভীর মুখে বলে -ওর সারা গায়ে ব্যাণ্ডেজ, ঘরে শুয়ে আছে।
    -- অ্যাকসিডেন্ট?
    -- তাই বটে! পাশের গোঁড় পরিবারের বাপ ছেলে মিলে ওকে বেধড়ক ঠেঙিয়েছে।
    -- সে কী?
    -- হ্যাঁ, ওদের চোদ্দ বছরের মেয়েটিকে পণ্ডিত এক অশ্লীল প্রেমপত্র লিখেছিল। মেয়েটির কাছ থেকেই উদ্ধার হয়েছে।
    -- হতেই পারে না।
    -- আমিও তাই বলেছিলাম, পুলিশে ডায়েরি করার ভয় দেখিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা চিঠিটা আমায় দিয়েছে।
    এই দেখ, আর পণ্ডিতের লেখা বেতনের রসিদ দেখ। স্পষ্ট ওরই লেখা। কিছু অক্ষর এবং টানটোন মিলিয়ে দেখ।
    আর অমন লাভ লেটার ! তাও চোদ্দ বছরের মেয়েকে?

    আমি চোখ বড় করে দেখতে থাকি। একটা লাইনে আটকে যাই — “ তুম গর্ভ হোনে কী ডর সে-- ”!
    আর পড়তে চাই না।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৮ জুন ২০২৫ | ৩৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Nirmalya Nag | ০৮ জুন ২০২৫ ১৮:৩২731931
  • মারাত্মক 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন