এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ ১৫

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ২৪ মার্চ ২০২৫ | ৪০১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ ১৫

    উৎকোচ বৃত্তান্ত
    আপনাদের বনফুলের গল্প অবলম্বনে মৃণাল সেনের ক্লাসিক ফিল্ম ‘ভুবন সোম’ মনে পড়ে? সেই যেখানে গুজরাতের একটি গাঁয়ে ঘুষ  খাওয়ার অপরাধে বরখাস্ত করা চাপরাশির বৌ (সুহাসিনী মূলে) রেলের ডাকসাইটে বড়কর্তা সোমসায়েবকে (উৎপল দত্ত) বোঝাচ্ছে যে কাউকে তার কাজটা সহজে হয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্য করাকে ঘুষ খাওয়া বলে না। উপরি আয় বটে, কিন্তু ওটা তো সার্ভিস চার্জ, গোদা বাংলায় দালালি বা মিডলম্যানশিপের কমিশন। 
     
     
    বোফর্স কাণ্ডের সময়ে এই সব অভিযোগ উঠেছিল তিন হিন্দুজা ভাই এবং জনৈক ইতালিয়ান নাগরিক কোয়াত্রোচির নামে। এটাও শুনেছিলাম যে স্ক্যান্ডেনেভিয়ান কান্ট্রিতে অস্ত্র বিক্রয়ের জন্য মধ্যস্থকে কমিশন দেয়া-- আদৌ অপরাধ বা উৎকোচ নয়। এ বিষয়ে সম্ভবতঃ হীরেন সিংহ রায় মহাশয় কিঞিৎ আলোকপাত করিতে পারেন।
     
    যাক গে,  আমি আদার ব্যাপারী, অত বড় বড় কথায় কাজ কী!
     

    আমার হাফপ্যান্ট পরার বয়েসে ছোটপিসির বিয়ের সম্বন্ধ এনেছিল এক ঘটক। পাত্রী দেখতে এলেন পাত্রের পিতা। তিনি জানালেন যে পাত্র বঙ্গ সরকারে ক্ষুদ্র করণিক, কিন্তু “উপরি” আছে। শব্দটি উচ্চারণের সময় উনি যেভাবে মুখের সামনে হাত দিয়ে আড়াল করলেন সেটা দেখে আমার হাসি পেয়েছিল। কিন্তু তখন থেকেই আমি “উপরি আয় বা কামাই” নামক যুগ্ম শব্দের সঙ্গে পরিচিত।
     
    তবে মধ্যপ্রদেশের বিধানসভার জনৈক প্রাক্তন স্পীকার (জন্মসূত্রে ব্রাহ্মণ এবং পেশায় আইনজ্ঞ) ছত্তিশগড় রাজ্য গঠিত হওয়ার পর একটি লোক্যাল চ্যানেলকে বিশেষ সাক্ষাতকারে যা বলেছিলেন তা অনুধাবন যোগ্য। 
     
    ওর নিগলিতার্থঃ
    এক,  উৎকোচ শব্দটির উৎস দেবভাষা সংস্কৃত। অতএব এটা স্পষ্ট যে উৎকোচ বা ঘুষের চলন প্রাচীন ভারতীয় সমাজে ছিল। কিন্তু কাকে বলে উৎকোচ? যেটাকে সভ্য সমাজে quid pro quo বা সহায়তার বিনিময়ে কিছু দেয়া বলে সেটা কি উৎকোচ? (সেই সুহাসিনী মূলে আর্গুমেন্ট!)

    দুই,   লোকসমাজে ঘুষ বলতে অনেক কিছু বোঝায়, একটা বেশ বড়সড় বৃত্ত বা ইউনিভার্সাল সেট।  এর অন্তর্গত তিনটে উপবৃত্ত বা সাব-সেট রয়েছে, যথাক্রমে নজরানা, শুকরানা এবং জবরানা।
    নজরানা হচ্ছে যখন রাজদ্বারে বা দেবদ্বারে আপনি শ্রদ্ধায় গদ্গদ হয়ে হাতে কিছু নিয়ে যাবেন –যাকে বলে প্রণামী। 
    সে প্রণামী ফলমূল মিষ্টি টাকা-পয়সা , সোনার গয়না সবই হতে পারে।  

    আমার পরিচিত দাক্ষিণাত্যের লোকজনকে দেখেছি বালাজি মন্দিরে প্রভু ভেঙ্কটেশ্বরের কাছে সোনার গয়না দান করতে। উত্তর ভারতে নগদ টাকা, বিশেষ পুজোয় জ্যোত(জ্যোতি)  জ্বালাতে ঘিয়ের খরচ দান দেয়া্র রীতি।  কিছু সাধুদের আখড়ায় গাঁজার পুরিয়া দেয়া হয়।  

    শ্রীরামকৃষ্ণও বলেছেন—সাধু সন্ন্যাসীর কাছে খালি হাতে যেতে নেই।

    ভেতো বাঙালীর হাতে ফলমূল-মিষ্টি আর নগদ পাঁচ সিকের বেশি ওঠে না। হিন্দি বলয়ে একে বলে “চড়াওন”। যেমন, বিয়ের কথা ‘পাক্কি’ হলে কন্যার পিতা ফলদান বা এনগেজমেন্ট অনুষ্ঠানে নগদ টাকা গুণে গুণে পাত্রের পিতার হাতে ধরে দিয়ে ধন্য হন। নগদ নারায়ণের অর্থমূল্য একান্ন থেকে একান্ন শ’ বা একান্ন হাজার সবই হতে পারে।
     
    একটা কথা মনে রাখবেন— এসব ভগবান বা সন্ন্যাসী বা রাজপুরুষ কখনই দাবি করেন নি। এগুলো দিয়ে আপনি ধন্য হন। যার যেমন সাধ্য দিন, এ হল আপনার দর্শনের সময় শ্রদ্ধার প্রকাশ। তাই নজরানা।  
     
    দ্বিতীয় হল শুকরানা। অর্থাৎ ফার্সি ‘শুকর আদা’ বা কৃতজ্ঞতার প্রকাশ। এটা হল সার্ভিস চার্জ, সরকারী আমলা বা ব্যাংকের লোক কাজটা সময়ে করে দিল তাই মনের খুশিতে উপঢৌকন দেয়া আর কি।
     
    আপনি এঁড়ে তর্ক করতে পারেন যে ওটা তো ওই রাজকর্মচারি বা ব্যাংকের লোকের কাজ। ওটা তো ওদের নিত্যি কর্ম, করলে পুণ্য নেই, না করলে পাপ! এর জন্য কিসের কমিশন?
    তাহলে বলব –আপনি নাদান। চেখভের একটি লঘু উপন্যাস (সম্ভবত” “দ্বন্দ্ব”, রাম বসুর বাংলা অনুবাদ) বলছে—পিটসবার্গে সরকারি দপ্তরের অলিগলিতে ‘লোকে তো একটু কৃতজ্ঞতাও আশা করে” বলার সঙ্গে সঙ্গে পাঁচ রুবল হাতবদল হত।
     
    এটা তো নাগরিক খুশি হয়ে নিজের সাধ্যমত দিচ্ছে। এটাকে ঘুষ বলে কোন আহাম্মক?
     

    বাকি রইল ‘জবরানা’—অর্থাৎ জোর-জবরদস্তি করে টাকা আদায়। তিনি কাজ করবেন তাঁর হিসেবে, পয়সা নেবেন তাঁর হিসেবে, তায় একটা বড় অংশ আগাম! এটা ওই মন্ত্রীজির হিসেবে অবশ্যই ঘুষ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

    আচ্ছা, কখনও রেলে বার্থ পাওয়ার জন্য, পাসপোর্টে ভেরিফিকেশনের জন্য সার্ভিস চার্জ বা স্কুলে বাচ্চাকে ভর্তির জন্যে ডোনেশন দেননি? কাজেই নাক সিঁটকাবেন না।
     এই ‘জবরানা’ না দিলে আপনার কী ছেঁড়া যাবে? অনেক কিছু। ঠিক সময়ে আপনার অ্যাপ্লিকেশন নষ্ট হতে পারে। ফাইল হারিয়ে যেতে পারে। নির্ধারিত তারিখ পেরিয়ে যেতে পারে, কাজেই--।
     
      
    মানে, সিস্টেমে হরদম আম পাবলিকের পেছন মারা যায়। ওই ‘জবরানা’ একটু গ্লিসারিন লাগিয়ে ব্যথাটা কম করে।  

    উদাহরণঃ
    আমার বাবা রিটায়ারমেন্টের সময় মাথা গোঁজার আস্তানা বানাতে স্টেট ব্যাংকের একটি ব্র্যাঞ্চে লোন চাইতে গেলেন। পাবলিক সেক্টরের অফিসারগণ শুধু স্টেট ব্যাংককেই “সরকারি” ভাবে যে! বদলে পিএফ এবং গ্র্যাচুইটি যা পাবেন সেটা ওই ব্র্যাঞ্চে ফিক্সড ডিপোজিট করে দেবেন। ব্যাংক খুশি, পিতৃদেবও খুশি।
     
    শেষ মুহুর্তে সব কেঁচে গেল। কারণ, ম্যানেজার পাঁচ হাজার ঘুষ চাইলেন। বাবার মাথায় বজ্রাঘাত! বললেন-- জীবনে ঘুষ  নিইনি এবং দিইনি। ঘরে এসে রাতভর বিড়বিড় করলেন—সরকারি ব্যাংকের অফিসার। কী করে চাইতে পারে?
     
    অবশেষে পাড়ার কাছের ইউকো ব্যাংকের ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার লোন দিলেন, আগের শর্তে এবং বিনা কোন উপরি।

    এসব তো খুব হল, কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের উৎকোচ কাহিনী? খালি স্টেট ব্যাংকের গল্প বললে ধর্মে সইবে?

     বলছি, বলছি। আমড়া গাছে কি আম ফলবে? গ্রামীণ ব্যাংকও একই ইকো-সিটেমের অংশ যে! কিছু কেস স্টাডি দিচ্ছি। 
    আপনারাই বিচার করে দেখুন কোনটা উৎকোচের কোন সাবসেটে ধরা যাবে।
     
     
    কেস ১
    সালটা ১৯৮৫ সালের মে মাস। নাবার্ড রুর‍্যাল ব্যাংকিং এর জন্যে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টাকায় একটা ঘ্যামা রেসিডেনশিয়াল ট্রেনিং সেন্টার খুলেছে। নাম দিয়েছে বার্ড অর্থাৎ ব্যাংকার্স ইন্সটিটিউট অফ রুর‍্যাল ব্যাংকিং। একশ’ একর জমি নিয়ে বিশাল নির্মাণ কার্য চলছে লক্ষ্ণৌ শহরের অনেকটা বাইরে কানপুর রোডের উপর বারহ বিরুয়া গ্রামে।
     
     কিন্তু ইন্সটিটিউট কাজ শুরু করে দিয়েছে শহরের পশ এলাকা হজরতগঞ্জে চিড়িয়াখানার ঠিক সামনে একটা তিন তলা বড়বাড়ি ভাড়া নিয়ে। আমি এসেছি আগুন ঝরানো গরমে এক মাসের ট্রেনিং নিতে। কোর্সের নাম রুরাল প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোর্স (RPDC)।

    তিনদিন কেটেছে, আবার তৃতীয় সপ্তাহে কানপুর এলাকার চৌবেপুর ব্লকে যাব ফিল্ড স্টাডির জন্যে। এমন সময়ে আমাদের ডায়রেক্টর এলেন আমাদের সঙ্গে ওরিয়েন্টেশন নিয়ে কথা বলতে।
    আমাদের উৎসাহ দিয়ে বললেন ফিল্ডে গিয়ে গ্রাসরুট লেভেল থেকে তাজা ডেটা নিয়ে আসতে। যেমন—এই যে হরদম শোনা যায় ব্যাংক অফিসার লোন দিতে ১০% কমিশন নেয় তার সত্যিটা কী ? কত পার্সেন্ট বা আদৌ কোন এরকম কাস্টম আছে কিনা। গ্রামের মানুষের ব্যাংক সম্বন্ধে পারসেপশন কী?
     
    --আমার তো আক্কেল গুড়ুম! এসব কথা তো ফিসফিসিয়ে বলা উচিত। তার জায়গায় এমন খুল্লম খুল্লা? রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, বিহার বঙ্গের কমরেডদের শুধাই—হ্যাঁগা, তোমাদের ওখানে কী চলছে? দুই, পাঁচ নাকি উনি যেমন বললেন –দশ?
     
    কেস দুই
    ন্যাশনাল হাইওয়ে অর্থাৎ কোলকাতা বোম্বে রাজপথের অনেক দূরের একটি আদিবাসী শাখা থেকে খবর এলো। ম্যানেজার শিক্ষিত ব্রাহ্মণ সন্তান, ক্যাশিয়ার এক আদিবাসী বালক। একীকৃত গ্রামীণ বিকাস যোজনা (আই আর ডি পিতে) আদিবাসীদের ৫০% সাবসিডি। গুণধর ম্যানেজার আদিবাসী ঋণীকে বলেন – তোকে আদ্দেক পয়সা ফেরত দিলেই হবে, সেটাও পাঁচ বছরে। বদলে আমাকে তার ২০% দিবি।
     
     সে কৃতজ্ঞতায় গলে যায়। কুড়ি হাজার লোন নিয়ে খালি দশ হাজার ফেরত দিতে হবে? বাঃ! 
    সে খুশি হয়ে ম্যানেজারকে চার হাজার দিয়ে দেয়—শুকরানা? ম্যানেজার সাবসিডি ৫০% লোন খাতায় জমা করে দেয়। কৃষক নিয়মিত কিস্তিতে বাকি দশহাজার ফেরত দিতে থাকে। অ্যাকাউন্ট রেগুলার, অডিট ধরতে পারে না। কোন কমপ্লেন নেই।
     

    কিন্তু সেই ম্যানেজার আদিবাসী ক্লার্ককে তার বৌয়ের নামে কৃষি লোন দিল। তারপর ক্লার্ককে বলল—ওহে, আমার পাওনাটা? ২০%?
    --স্যার, আমি তো স্টাফ।
    --তাতে কী হয়েছে, ধান্ধে কা পরিপাটি মৎ তোড়ো! বিজনেসের নিয়ম ভাঙা চলবে না।

    সে আমাকে বলেছিল—সবাই বাড়ি বানালে নেমপ্লেটে লেখে “মাতৃস্মৃতি” গোছের কিছু। আমি লিখব “এগ্রাবিকা”—একীকৃত গ্রামীণ বিকাশ যোজনা। ওর কমিশনের পয়সাতেই আমার বাড়িগাড়ি। কৃতজ্ঞতা বলেও তো কিছু আছে না কি?

    ওই ম্যানেজার ছিল আমাদের স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান। 
    একটা এনকোয়ারিতে গেলে ও আমাকে বলল—আজ নয় কাল এই চেয়ারম্যান বদলে যাবে। স্টেট ব্যাংক থেকে আসবে কোন মহা-করাপ্ট চেয়ারম্যান। এসেই চোঙা ফুঁকে হাঁক দেবে—কোথায় আমার বিরাদরির অফিসারেরা? এস , বেরিয়ে এস। লুকিয়ে থেক না।

    ব্যস্‌ আমরা সব পিলপিল করে গর্ত থেকে বেরিয়ে এসে নাচব, গাইব—“দুখ ভরি দিন বীতে রে ভাইয়া, সুখ কে দিন আয়ো আয়ো রে”! 
    এই বলে সে সত্যিই নাচতে আর গাইতে লাগল।

    কেস তিন
    ন্যাশনাল হাইওয়ের উপরে জগদীশপুর জনপদ । এলাকাটা বিখ্যাত হয়েছে কানাডার মেনোনাইট চার্চের তৈরি গির্জে, স্কুল এবং হাসপাতালের জন্যে। সেখানকার অধিকাংশ আদিবাসী ক্রিশ্চান ধর্ম গ্রহণ করেছে। মেয়েরা দলবেঁধে বা একা একা পুরুষ সঙ্গী ছাড়াই চলাফেরা করে; শাড়ি না পরে স্কার্ট পরে। তাই চারপাশের গ্রামের লোক এর নাম দিয়েছে—নিউ ইয়র্ক!
     
    আমার  বন্ধু সেখানে গেছে অডিট করতে। ম্যানেজার দেখতে কালোকোলো মোটাসোটা হাবাগোবা ধরণের। পরেছে সাফারি স্যুট কিন্তু এখানে ওখানে রিফু , পাদুকা বলতে ধুলি ধুসরিত চপ্পল।
    অডিটরের ভুরু কুঁচকে যায় –ব্যাপার কী? ম্যানেজার কিন্তু কিন্তু করে বলে যদি ভালো জামাকাপড় পরি তো হেড অফিস থেকে কেউ পরিদর্শনে এলে সন্দেহ করবে যে আমি ঘুষ খাই। নইলে এই মাইনে--- আমার চার সন্তান।
     
    অডিটের শেষ দিন। হলের পাশে একটা ছোট্ট ঘরে বসে রিপোর্ট লেখা হচ্ছে, কিন্তু সেখান থেকে ক্লার্ক এবং ম্যানেজারকে দেখা যায়। ক্লার্ক মন দিয়ে লেজার ব্যালান্সিং করছে, ম্যানেজার এক কৃষককে দশ হাজার টাকা কৃষিঋণ দিচ্ছে। কৃষক যাবার পর ম্যানেজার চেয়ার থেকে উঠে কিন্তু কিন্তু ভঙ্গীতে ক্লার্কের টেবিলে গিয়ে সেখানে তিনটে একশ টাকার পাত্তি রাখল।
    ক্লার্ক ক্রুদ্ধ! পবিত্র ক্রোধে জ্বলে উঠে বলল—রুপিয়া উঠাও! আভভি! তুমহারী হিম্মত ক্যায়সে হুয়ি?
     

    ম্যানেজারের ভয় পাইয়া তথাকরণ এবং পশ্চাদপসরণ। অডিটর চমকিত এবং মুগ্ধ! পেয়েছি! চরিত্রবলে উদ্দীপ্ত নির্লোভ ক্লার্ক! একেবারে ‘হতে পারি দীন তবু নহি মোরা হীন’ কেস।
    কিন্তু সন্ধ্যেবেলা বাসে চড়ার সময় রহস্যভেদ হল। ক্লার্কের আপত্তির কারণ—ম্যানেজার নিয়েছে ১০%, মানে একহাজার। আর ক্লার্ককে দিচ্ছে মাত্র তিনশ, বখরা হবে আধাআধি। 
     

    কেস চার
    আমাদের জনপ্রিয় জি এম মালয়ালি ভদ্রলোক একদিন খেয়াল করলেন একটি ছোট ব্র্যাঞ্চের ম্যানেজার তার শাশুড়ির অ্যাকাউন্টে আঠেরো হাজার টাকা ট্রান্সফার করেছে। ওনার চোখ কপালে!  আশির দশকে ওটা ওই ম্যানেজারের মাইনের দ্বিগুণ টাকা! উনি ইনভেস্টিগেশন শুরু করালেন।
    দেখা গেল ছেলেটি দলিত পাড়ায় গলির ভেতরে মস্ত দোতলা বাড়ি বানিয়েছে। রাস্তা থেকে চোখে পড়ে না, আর বাইরের দিকে রঙ করায় নি।
     
     
    ব্যাংকের তদন্তে যা পাওয়া গেলঃ
    সে এবং কৃষি বিভাগের গ্রামসেবক ও কো-আপারেটিভ ব্যাংকের ক্লার্ক মিলে একটা চক্র বানিয়েছে। অক্ষর পরিচয় নেই শুধু কোনরকমে নাম লিখতে জানে এমন সব কৃষকের জমির কাগজে একটা শূন্য বসিয়ে ৫ একরকে ৫০ একর দেখিয়ে দশ গুণ লোন স্যাংশন হয়। কৃষক টের পায় না। লোনের একটা বড় অংশ থেকে কেমিক্যাল সারের নামে কো-অপারেটিভ ব্যাংকে ডেলিভারি অর্ডার দেয়া হয়। সেখানকার স্টোর কীপারের কারসাজিতে কৃষক ততটুকুই সার পায় যতটুকু আইনতঃ প্রাপ্য । বাকিটার টাকা তিন অপরাধীর মধ্যে ভাগাভাগি হয়।
     ব্যাংক কর্তৃপক্ষম্যানেজারকে সাসপেন্ড করে এফ আই আর করল। 
     
     
    আমার বন্ধু তদন্তকারী অফিসার। পুলিশের সঙ্গে গাঁয়ে  গিয়ে ক্যাম্প বসানো হল। ভরা দুপুর। ১২৭ জন কৃষকের সাক্ষ্য নিতে হবে।
     সরকারি ব্যাংকের কেস। পুলিশের উপরি পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তাই মেজাজ সপ্তমে চড়ে আছে। এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে দু’জন কৃষক এল।
     
    --হুজুর, শিগগির চলুন। তিন মাইল দূরে আমাদের গ্রাম। খেতের আল কাটা আর সেচখালের পানির ভাগাভাগি নিয়ে দুপক্ষে কাজিয়া শুরু হয়েছে। লাঠিসোঁটা, ভালা, কাটারি, রামদা সব এসে গেছে। আপনি শিগগির চলুন, নইলে দু-চারটে লাশ পড়ে যেতে পারে।
    পুলিশ ইন্সপেক্টর দাঁত খিঁচিয়ে উঠলেন—যা যা! দু’চারটে লাশ পড়লে তবে আসিস। এখন সরকারি কাজ চলছে। মেলা দিক করিস নে।
     
    একঘন্টা পরে সেই দু’জন আবার এল।
    --হুজুর, দুটো লাশ পড়ে গেছে। এবার তো চলুন!

    কেস পাঁচ
    এটা সেই বলোদাবাজার শাখার গল্প। সেই যে নগরবধুর সঙ্গে ফটো তুলেছিলাম। তা আমার এক অফিসার দশ কিলোমিটার দূর থেকে রোজ বাসে চড়ে ডিউটিতে আসেন। ব্র্যাঞ্চ খোলার অন্ততঃ দশ মিনিট আগে। ঘড়ি মেলানো যেত।  
    কিন্তু আজ আধঘন্টা দেরি! চিন্তায় পড়লাম। তখনও এই অঞ্চলে মোবাইল নেট ওয়ার্ক চালু হয় নি। অসুখ বিসুখ বা পথ দুর্ঘটনা? আমার পাপী মন সবসময় কু-গায়।
     
     অবশেষে এল। বিধ্বস্ত চেহারা। ঢকঢক করে দু’গেলাস জল খেল, চা খেল। আমি অপেক্ষায় আছি।

    --স্যার, আজ এক কাণ্ড হয়েছে। আমি রোজ পটপার মোড় থেকে বাস ধরি। সেখানে বটগাছ তলায় বসে থাকা এক মুচির ছেলের থেকে জুতো পালিশ করাই। আজ গিয়ে দেখি ছেলেটার জায়গায় একটা সাদাচুলো মাথা। সে যাক গে, আমার জুতো পালিশ হলেই হল। আমি জুতো বাড়িয়ে দিই, বলি-- একটু হাত চালাও, আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।
    সে কোন কথা না বলে মাথা নীচু করে পালিশ করে যায়। 
    শেষ হলে পা গলিয়ে তাকে অন্যদিনের মত আট আনা দিই। সে মাথা নাড়িয়ে অস্বীকার করে। 
    আমি বিরক্ত হই—কী হল? এটাই তো রেট, রোজ দিচ্ছি।
    সে মাথা তোলে—সাব, আমি আপনার থেকে পয়সা নেব না।
     
     
    আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে যাই। এই চেহারা তো আমার চেনা! এ তো আমার ব্যাচমেট—মিঃ অজগলে! অমুক ব্র্যাঞ্চের ম্যানেজার ছিলেন। প্রোবেশন পিরিয়ডে এন্তার ঘুষ খাওয়া এবং মাতলামির দায়ে চাকরি হারান। আদালতে গিয়ে এবং দিল্লির দলিত নেতাদের সঙ্গে দেখা করেও কোন ফল পান নি।
     
    আমি হাত জোড় করি—আমার অন্যায় হয়ে গেছে। আগে টের পেলে আপনাকে দিয়ে জুতো পালিশ করাতাম না। ক্ষমা করবেন, কিন্তু আপনার মেহনতের পয়সা কেন নেবেন না? রোজ যে ছেলেটা বসতো?
    --আমার ছেলে, আজ জ্বর হয়েছে।
     

    স্যার, যদি কখনও লোভে পড়ি, তখন আজকের এই অভিজ্ঞতা আমাকে ভুল পথে যেতে আটকে দেবে।
    পাদটীকাঃ পরে খবর পেয়েছি ওর ব্রহ্মচর্যের আয়ু ছিল মাত্র তিন বছর তারপর সে “বহতী গঙ্গা মেঁ ডুবকি লগা লিয়ে থে”। গঙ্গার বহমান জলধারায় ডুব দিয়েছিল।
     
     
    কেস ছয়
    এতসব কথা বলছি বটে, তবু আমি গর্বিত যে আমার গ্রামীণ ব্যাংক স্টেট ব্যাংক স্পন্সর্ড,রাজভাষায় বললে ‘প্রায়োজিত’।  ফলে তখনকার দিনে চেয়ারম্যান, জি এম, ভিজিলেন্স, অডিট চিফ, অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম, স্টেশনারি এবং আমাদের ট্রেনিং—সবকিছু স্টেটব্যাংকের। আর উৎকোচ গ্রহণের ব্যাপারে প্রশাসন বেশ কঠোর।
    অনেক ছেলের চাকরি গেছে। কেউ কেউ জেলে গেছে। আর ছোট বড় নানারকম শাস্তি এবং দূর অঞ্চলে ট্রান্সফার—এসব তো আছেই। আবার এটাও ঠিক, যে অনেকে বেঁচে গেছে।
     
    তারা কারা?
    যারা উচ্চবর্ণের (ব্রাহ্মণ আদি) এবং যাদের বাপ-ভাই-শ্বশুর স্টেট ব্যাংকে চাকরি করে। এদের খুব বেহি হলে গুরু পাপে লঘু দণ্ড হয়েছে, দলিত হলে লঘুপাপে গুরুদণ্ড হয়েছে।
    কেন? যারা আমাদের ব্যাংকের প্রশাসনে রয়েছেন তাঁদের মধ্যে ৯৫% তখন উচ্চবর্ণের, দলিতদের একজনও নয়। সেই সেন্ট স্টিফেন্সের থেকে বেশি আই এ এস কেস আর কি!
     
    কিন্তু অন্য একটি ব্যাংকের কথা বলি যার প্রশাসন স্টেট ব্যাংকের নয়।
     আমার বন্ধুর বিয়ে ঠিক হল ঝারখণ্ডের লাগোয়া একটি জেলায়। পাড়া পড়শিরা ঝেঁটিয়ে এল—হ্যাঁগা,  জামাই কী করে? গ্রামীণ ব্যাংকে? কত বছরের চাকরি? দশ বছর? ক্লার্ক? তাহলে তো একটা প্রিয়া স্কুটার হয়ে গেছে।
     
    কী বললে? ক্লার্ক নয়, অফিসার? ফিল্ড অফিসার? তাহলে তো একটা বুলেট মোটরবাইক আর একতলা বাড়ি হয়ে গেছে।
     
    না? ম্যানেজার? দশ বছর ধরে? ওমা, তাহলে তো তোমাদের মেয়ে রাজরাণী হবে। একটা প্রিমিয়ার পদ্মিনী গাড়ি আর দোতলাবাড়ি, এবং ব্যাংকে লকার!
     
    আমি ওখানে ইউনিয়নের কাজে গিয়ে শুনলাম—কারও ট্রান্সফার হলে সে হেড অফিসে গিয়ে পার্সোনেল বিভাগে নিজের করেস্পন্ডেন্স ফাইল নিয়ে যায়। সেখানে দুই পক্ষ ওর ফাইল খুলে একেকটা প্রেমপত্র মিলিয়ে দেখে। তারপর দরাদরি শুরু। গত কয়েক বছরে শোকজ, এক্সপ্ল্যানেশন, পাবলিক কমপ্লেইন নিয়ে যত চিঠি চালাচালি হয়েছে—সব একটা একটা করে মিলিয়ে দু’দিকের ফাইল থেকেই ছিঁড়ে ফেলতে হবে –সামনাসামনি!
     
     কিন্তু কোন কিছুই তো ফ্রি লাঞ্চ নয়! অতএব, বল দাম কত?
    কথা  কাটাকাটি, ঝগড়া, তেরি মেরি-- সব হবে। তখন ইউনিয়ন আসরে নামবে।
    --বড্ড বেশি চাইছে, কুড়ি হাজার।
    --চাইব না? কত গুলো সিরিয়াস কমপ্লেইন? কালেক্টরের চিঠি!
    --হুম্‌ একটু কম কর।
    শেষে রফা হল—পার্সোনেলকে দশ দাও আর ইউনিয়ন ফান্ডে তিন। দু’দিকের মোটা ফাইল পাতলা হয়ে গেল।
     
     
    এইভাবেই সকালে সূজ্জি উঠত, বিকেলে অস্ত যেত। সব লিখলে একটা গোটা বই হয়ে যাবে। তার চেয়ে এইখানেই থামা যাক।
    হরি অনন্ত! হরি কথা অনন্ত!
                                                               (চলবে)

     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ২৪ মার্চ ২০২৫ | ৪০১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 172.58.***.*** | ২৪ মার্চ ২০২৫ ১৯:৫৩541883
  • হোক, একটা গোটা বই হোক। অপেক্ষায় থাকবো। মানে শুধু উৎকোচ তত্ত্ব নিয়ে নয়। এই সিরিজটাই বই হয়ে বেরোক। আচ্ছা রঞ্জনদা, ভাটে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, হয়তো আপনার চোখে পড়েনি, আপনি কি অর্ঘ্য গুপ্ত বলে কাউকে চেনেন? ভদ্রলোক রায়পুর গ্রামীণ ব্যাংকে বেশ কিছু বছর কাজ করছেন। আমার লতায় পাতায় আত্মীয় আর কি। আমরা অবশ্য এ ওকে চিনিনা, শুধু ঐ লতার এক আকর্ষের মাধ্যমে নাম জানলাম।
  • হীরেন সিংহরায় | ২৪ মার্চ ২০২৫ ২২:৪৪541888
  • রঞ্জন

    কোন গাড্ডায় নিয়ে যাচ্ছ ? প্রথমত সরব প্রতিবাদ । তুমি কি করে বললে ‘ স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে আসবে কোন মহা-করাপ্ট চেয়ারম্যান’ ! স্টেট ব্যাঙ্ক  আমার আলমা মাতের , আমার গুরুগৃহ । যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি বাড়ি যায় তদ্যপি আমার গুরু নিত্যানন্দ /রঞ্জন রায় !

    প্রফেসর চাণক্য বলেছেন, মাছ কখন কতটা জল খায় আর রাজপুরুষ কখন ঘুষ নেন তা কখনো জানা যায় না ।

    তোমার প্রশ্নের উত্তরে বলতে পারি - কেনা বেচার মধ্যে মধ্যস্ততার জন্য যে দক্ষিণা মেলে তার নাম কমিশন ,ব্রোকারেজ,  কুরতাজ । স্কানডিনাভিয়া কেন জার্মানিতে আকছার দেখেছি । জিমেন্স কয়েক বিলিয়ন এই খাতে দিয়েছে গত  দু দশকে । ফোলকসভাগেন দীর্ঘদিন ফ্রাঙ্কফুর্টের কোন ব্রোকারকে কমিশন দিয়েছে ফরেন এক্সচেঞ্জ কেনার জন্য। , ফোলকসভাগেনের কোন ছোট অফিসার ফ্রাঙ্কফুর্টের যে কোন ব্যাঙ্ককে ফোন করলে সে ডিলটি  হয়ে যেতো ভালো দরে ,  ব্রোকারের কোন প্রয়োজন ছিল না।  কিন্তু এখানে আইন ভাঙ্গা হয় নি। ইতালিয়ানরা বলে যে বিষয়ে আইন নীরব সেটা বেআইনি কেন হবে ? মার্ক থ্যাচার মাতার সঙ্গে আবু ধাবি এলেন, সেখানে নতুন ইউনিভারসিটি বানানো হবে , মার্ক মধ্যস্ততা করে সে কাজটা দিলেন বিলিতি বিল্ডিং কোম্পানিকে ।

    চাণক্য বলেছেন ঘোড়া যতক্ষণ আস্তাবলে বাঁধা ততক্ষণ সে শান্তশিষ্ট এবং ল্যাজ বিশিষ্ট । তাকে মাঠে ছেড়ে দিলেই সে যে কি করবে কেউ জানে না তেমনই মানুষের হাতে ক্ষমতা দিলে সে কোন দুষ্ট আচরণ করবে কেউ জানে না।

     তবে এখানে তিনি আরেকটি নিদান দিয়েছেন: অন্যায় পথে অর্জিত সম্পদ দশ বছর টেকে একাদশ বৎসরে সেই মূলধন সুদ সবই বিনষ্ট হয় !
     
  • শিবাংশু | ২৪ মার্চ ২০২৫ ২৩:২১541892
  • তিনটে কিস্তি একসঙ্গে পড়লুম। একটা ক্যাশ রেমিট্যান্স বিষয়ক। অন্য দুটি ব্রাঞ্চ শিফটিং এবং উৎকোচ পুরাণ। তবে আমার দাঁড়ানোর জায়গাটা গ্রামীণ ব্যাংকের অপর মেরুতে। এবং সেই দৈবী ঐরাবত, যার নাম ভারতীয় স্টেট ব্যাংক, তার চশমার মাধ্যমে। 

    সত্যি কথা বলতে কী, স্টেট ব্যাংক থেকে গ্রামীণ ব্যাংকে 'চেয়ারম্যান' হয়ে বদলি হওয়ার ব্যাপারটা এক ধরনের 'শাস্তি' হিসেবেই গণ্য করা হতো। আমার বহু সহকর্মী বিষাদ সহকারে দু-তিন বছর 'কালাপানি' করে এসেছেন। এমন কী আপনাদের যে চেয়ারম্যানের কাছে আমার কথা শুনেছিলেন, তিনিও। দুটি কারণে এটা হতো। এক, যথাস্থানে মুরুব্বি নেই। অথবা কোনও অলিখিত অপরাধের জন্য। প্রথম দিকে এজিএম লেভেলের অফিসার, পরে ডিজিএম লেভেলের লোকজনকে পাঠানো হতো। দীর্ঘদিন এইচ-আর এবং অডিট জাতীয় কাণ্ডকারখানার সঙ্গে ওতপ্রোত থাকার কারণে এটা আমার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। সঙ্গত ভাবেই তাঁরা বেশ ক্ষুব্ধ মনে 'গ্রামীণ' যাত্রা করতেন। তাঁদের কার্যকলাপে সেটা প্রকট হয়ে উঠতো। ব্যতিক্রম নিতান্ত নগণ্য।

    'কিলিং ফিল্ড অফ সেন্ট্রাল বিহার' নামে উত্তর বিহারে কয়েকটি জেলা রয়েছে। যথা, বিহারশরিফ, নওয়াদা, জেহানাবাদ, নালন্দা, গয়া এবং দক্ষিণ পাটনার বৃহৎ অংশ। তার প্রায় কেন্দ্রস্থলে একটি  গ্রামীণ ব্রাঞ্চে স্বেচ্ছায় কিছুদিন পোস্টিং নিয়েছিলুম। বিশ্বকুখ্যাত এই অঞ্চলটির হালহকিকৎ বোঝার জন্য। তার নানা গল্প আছে। শুধু একটা বলি সেই ব্রাঞ্চটির ক্যাশ রেমিট্যান্স আনতে হতো আঠেরো কিমি দূরের একটি ব্রাঞ্চ থেকে। যদি গাড়ি-সিপাই-ক্যাশিয়ার-তালাচাবি ইত্যাদি করতে হতো তবে প্রতিদিন সারাক্ষণ সেই কাজেই কেটে যেতো। পাটনা থেকে সক্কাল সক্কাল ট্রেনে এসে ফতুহা ব্রাঞ্চ থেকে ক্যাশ তুলে দুপকেটে ভরে স্কুটারে ষোলো কিমি চলে আসতুম। তার পর দু কিমি হেঁটে। কারণ খেতের মাঝখান দিয়ে আলপথ। স্কুটারও যেতে পারে না। এই আঠেরো কিমি পাকদণ্ডীর মতো যে পথ তার দু পাশে যেসব গ্রাম তাদের অধিবাসীরা দিনে চাষী, বিকেল পাঁচটার পর ডাকাত। প্রসঙ্গত আমি তখন ভারতীয় স্টেট ব্যাংকের স্কেল থ্রি অফিসার। রুরাল করতে গিয়েছি সেখানে। যাঁরা সার্কাসে 'মওত কা কুয়াঁ' নামক কালাবাজিটি দেখেছেন, তাঁরা হয়তো বুঝবেন এই খেলায় এক সেকন্ডের ভগ্নাংশের ভুল মানে আক্ষরিক ভাবে মরণকে ডেকে আনা। সব চলতা হ্যাঁয় কমরেড। 

    শুধু ব্রাঞ্চের বাড়ি বদল নয়, জেনারেটর, এয়ারকুলার, ভাড়ার গাড়ি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইউনিয়ন নেতাদের বেনামী ব্যবসা আটকে দেবার অপরাধে নানা আক্রমণের লক্ষ্য ছিলুম এক কালে। গো বলয়ে ব্যাংক চালাবার সময় শুধু ব্রাঞ্চ নয়, অডিট, ভিজিল্যান্স এবং হুজুরের ভূমিকা পালন করার সূত্রে উৎকোচ পুরাণের  অন্তহীন গল্পগাথা সঞ্চয়ে আছে। আর কিছু বলবো না। হীরেনদার বকুনি খেতে হবে। smiley
  • শিবাংশু | ২৪ মার্চ ২০২৫ ২৩:৩০541893
  • @হীরেনদা, 
    একশো বার আমিও ওই দলের অনুগত বাইক বাহিনীর অংশ। মানে, রামানন্দ রায়ের খালাসিটোলা ব্রাঞ্চের চাপরাসি। তবে কী জানেন,  অন্ধকারের ভাষাটা না জানলে আলোর গান উপভোগ করা যায় না। নিজের শিরদাঁড়ার জোরটা মাপা যায় না। এই জন্য আমিও আমার আলমা মাতের-এর কাছে কৃতজ্ঞ। 
  • Ranjan Roy | ২৫ মার্চ ২০২৫ ১২:২৭541908
  • মাক্কালী হীরেনদা,  ওটা আমি বলি নি। ওটা ওই পাজির পাঝাড়া শর্মাজীর কথা।
     
    অদূর ভবিষ্যতে স্টেট ব্যাংক থেকে কোন মহা করাপ্ট অফিসার চেয়ারম্যান হয়ে আসবে, সেটা ছিল ওর স্বপ্ন। 
    ও আরও বলেছিল -- রায়জী, সেই শুভ লগনে  আমার চার্জশিট খারিজ হয়ে আপনাকে কেস দেয়া হবে।
    ঘুষ খান না তো কী হয়েছে? আপনি কাজ করতে  গিয়ে মাঝে মধ্যেই স্ট্যান্ডার্ড প্রোটোকল ভাঙেন।  আপনার মধ্যে একটা ছটফটে ভাব আছে। নিয়ম কানুন অক্ষর অক্ষরে মেনে চলতে আপনার এলার্জি।
    আপনার মত লোক চতুর ম্যানেজমেন্টের সহজ শিকার। 
    দেখুন,  প্রথমে  আপনাকে প্রতিমাসে একটা করে প্রেমপত্র দেয়া হবে। ছোটখাট irregularities, মুখ্যত: procedural. তিন চার মাস পর  ওই সবগুলো মিলিয়ে একটা শোকজ করা হবে। তারপর একটা  স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন।
    ফের চার্জশিট।  এবং তদন্ত চলাকালীন  সাসপেনশন। 
     
    না, আপনার চাকরি যাবে না। কিন্ত একটা  বা দুটো ইনক্রিমেন্ট যেতে পারে। তারচেয়ে বড় কথা আপনার ছবি তৈরি হবে একজন দায়িত্বজ্ঞানহীন অফিসারের  যার উপর নির্ভর করা যায় না।
     
    প্রমোশনের লিস্ট থেকে আপনার নাম কাটা যাবে। সমস্ত দায়িত্বপূর্ণ পদ থেকে আপনাকে দূরে রাখা হবে। বাকি জীবন এভাবে চাকরি, সইতে পারবেন?
     
    খোলাখুলি থ্রেট!
    হ্যাঁ, ভয় পেয়েছিলাম। 
     
    কিন্ত শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে অমন কোন চেয়ারম্যান আমাদের ব্যাংকে আসেন নি। তাই মাথা উঁচু করে কাজ করতে পেরেছি ৱ
     
  • সমরেশ মুখার্জী | ২৫ মার্চ ২০২৫ ১৩:৩১541909
  • লেখা এবং মন্তব্যসমূহ - উভয়েই উপভোগ্য yes
  • Ranjan Roy | ২৫ মার্চ ২০২৫ ১৪:৪৮541910
  • @ কেকে 
    সরি, মিস করেছিলাম-- মাফি! 
    আমি 1977 থেকে 2010।
     
    আসলে ছত্তিশগড়ে স্টেট ব্যাংক পরিচালিত তিনটে ইনডিপেন্ডেনট পড়শি গ্রামীণ ব্যাংক 2009 সালে যুক্ত হয়ে ছত্তিশগড় রাজ্য গ্রামীণ ব্যাংক তৈরি হয়।
     
    সবচে পুরনো বিলাসপুর- রায়পুর,  তারপরে রায়গড়,  তারপর বস্তার।
     
    বাঙালী ছেলে এবং মেয়ে হাতে গোনা, আমি প্রায় সবাইকে চিনতাম।
    মনে হয় মি: গুপ্ত বস্তার ব্যাংকে আগে জয়েন করেছিলন।  সংযুক্তিকরণের পর রায়পুর এসেছিলেন। 
    তাই চিনতে পারছি না।
    ওনার সালটা জানলে ----
  • হীরেন সিংহরায় | ২৫ মার্চ ২০২৫ ১৫:১২541911
  • শিবাংশু
     
    ভাই তোমার দিকে চেয়ে আমার ভবিষ্যতের ওপর আস্থা বাড়ে । এই যে মোক্ষম কথাটা লিখলে 
     
    "অন্ধকারের ভাষাটা না জানলে আলোর গান উপভোগ করা যায় না। নিজের শিরদাঁড়ার জোরটা মাপা যায় না।"
     
    লুট লিয়া 
  • হীরেন সিংহরায় | ২৫ মার্চ ২০২৫ ১৫:২২541912
  • রঞ্জন
     
    ভ্রাতঃ, তোমার অল্প বয়েস, বরানগরের পুণ্য নাম ও আমাদের দুজনের পেশার খাতিরে মার্জনা করলাম। তবে ঐ আপ্ত বাক্যটি সর্বদা মনে রাখিবা- যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি বাড়ি যায়, যদ্যপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়! আরে ভুল চুক তো হতেই পারে গলতি সে চার নোট জেব মে চলে আয়ে! তাই বলে করাপ্ট!! 
     
    প্রসঙ্গত, শেন ওয়ারন সাট্টা বাজারিদের কাছ থেকে টাকা পকেটস্থ করেছিলেন। জিজ্ঞাসিত হলে বলেন তিনি মাঠের আবহাওয়ার ওপরে মন্তব্য করার জন্য ফি নিয়েছিলেন। 
     
    সেই ধুন- যদ্যপি আমার গুরু  ইত্যাদি
  • Ranjan Roy | ২৫ মার্চ ২০২৫ ১৮:০৯541915
  • এটা ফাটাফাটি!
     
  • উজ্জ্বল | 146.196.***.*** | ২৫ মার্চ ২০২৫ ২২:০৯541923
  • রঞ্জনদা 
    ওটা মনে হয় হবে বহতি গঙ্গা মে হাথ ধোনা  ডুবকি লাগানা নয় মানেটা খুব সম্ভব দাঁড়াচ্ছে যে গঙ্গা বয়ে যাচ্ছে হাতদুটো ডুবিয়ে রাখলেই হবে কচলাতে হবে না । ধারা নিজেই ধুয়ে দেবে ।অর্থাৎ বিনা পরিশ্রমে পাওয়া । ইস চোখে সমস্যা থাকায় আইপ্যাড এ পড়ি একটা কমাও ঠিকমত বসছে না ।
  • ujjwl | 146.196.***.*** | ২৫ মার্চ ২০২৫ ২২:২৩541925
  • না না ভুল হয়ে গেল । ওইটার মানে তো হল সবাই যা করছে তাই করা । সরি 
  • Ranjan Roy | ২৫ মার্চ ২০২৫ ২২:৫৯541926
  • উজ্জ্বল, 
    একদম ঠিক বলেছেন। 
    হিন্দি প্রবাদ এবং তার নিগলিতার্থ।
     
    মূল লেখায় শুধরে নেব। 
     
    অনেক ধন্যবাদ। 
  • Nirmalya Nag | ২৫ মার্চ ২০২৫ ২৩:১৩541927
  • kk লিখেছেন এটা বই হোক, আমিও এই মত সমর্থন করছি। আর সেই সঙ্গে একটা নতুন প্রস্তাব দিচ্ছি - ওই বইয়ে হীরেনবাবুর মন্তব্যগুলো রাখার।
  • উজ্জ্বল | 146.196.***.*** | ২৬ মার্চ ২০২৫ ১১:২০541930
  • দাদা ওটা বোধ হয় নির্গলিতার্থ হবে smiley
  • Ranjan Roy | ২৭ মার্চ ২০২৫ ১৯:৫৩541943
  • উজ্জ্বল 
    আবারও সঠিক আপনি। 
     
    অনেক ধন্যবাদ। 
  • কালনিমে | 103.244.***.*** | ২৮ মার্চ ২০২৫ ০৭:৪৯541950
  • হ্যাঁ হ‍্যাঁ বের হোক - ফুটনোটস্ নিয়ে।
  • কালনিমে | 103.244.***.*** | ২৮ মার্চ ২০২৫ ০৮:০০541951
  • হীরেনদা - এটা বোধহয় 'যদ‍্যপি' হবেনা - ভাব/ ভাইবটা এক্কেরে গুরুচণ্ডালী হয়ে যাচ্ছে ঃ) - আমি যেটা শুনেছি- যদিও আমার গুরু রাঁড়/ শুঁড়ি বাড়ি যায়/ তবু ও আমার গুরু নিত‍্যানন্দ রায়।
  • Ranjan Roy | ২৮ মার্চ ২০২৫ ০৯:৫০541954
  • @কালনিমে, 
    মুজতবা আলীর" দেশে বিদেশে" এবং "শ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত"তে এই দোঁহাটি কয়েকবার দেখা গেছে। বাংলা দেশের বিখ্যাত লেখক অধ্যাপক আহমদ ছফার নিজের শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক  নিহত মুনীর চৌধুরীকে নিয়ে লেখা একটি প্রবন্ধের শীর্ষনামে এবং ভেতরে এর উল্লেখ রয়েছে।
    সবগুলোতেই একই রকমঃ
    "যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়িবাড়ি যায়,
    তথাপি তাহার নাম নিত্যানন্দ রায়"। 
     
    মুজতবা বোধহয় 'তাহার নামের' জায়গায় 'আমার গুরু" করেছেন। হাতের কাছে বইটা নেই। আমরা ওনার  ভার্সনের সঙ্গেই বেশি পরিচিত।
     
    সম্ভবতঃ এটি চৈতন্যদেবের  অভিন্ন পার্ষদ প্রভু নিত্যানন্দের শিষ্য কবি কাহ্নু বা কানু'র রচনা। তখনকার ভাষা হিসেবে "তথাপি" বেশি স্বাভাবিক মনে হয়। 
  • হীরেন সিংহরায় | ২৮ মার্চ ২০২৫ ১০:১৩541955
  • আমি স্মৃতি থেকে আমার গুরু মুজতবা আলীকে কোট করেছিলাম। ভুল হতে পারে । 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন