

প্রথমবারের জন্য হিমালয় জয় করে আমরা তো বাড়ি ফিরে এলাম। সঙ্গে করে আনলাম চিরকালের স্মৃতির পুঁটুলি। নিজেদের যা অভিজ্ঞতা হল হল, স্যারেদের মুখ থেকে তাঁদের জীবনের ফিল্ডের নানারকম রোমহর্ষক কাহিনী যেগুলো শুনলাম, তাই বা কম কী। আমরা যাবার পথে সিকিমের ব্যাচ আর ভূটানের ব্যাচ একইসঙ্গে ট্রেনে করে শিলিগুড়ি নেমেছিলাম। ভূটানের ব্যাচের কোঅর্ডিনেটর ছিলেন মনতোষ স্যার। উনি আমাদের সারা ট্রেন ধরে উত্তর আমেরিকার রকি পার্বত্য অঞ্চলে থর্নবেরির সঙ্গে কীভাবে কাজ করেছিলেন, সেই সব গল্প বলছিলেন। একবার খাদে পড়ে কীভাবে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরলেন, সেসব শুনে আমরা শিউরে উঠেছিলাম। সেই ঘটনার পরেই নাকি তরুণ অভিযাত্রী আমাদের এম কে বি, তাঁর মায়ের কথা শুনে সংসারী হতে রাজি হন। গবেষণা শেষ করে দেশে ফিরে আসার কিছুদিন আগে, স্যার একদিন ইউনিভার্সিটির বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। তখন ওখানকার একজন স্থানীয় সহপাঠী স্যারকে বলে বসেন, ‘ব্যানার্জী তুমি ফিরে যাচ্ছ কেন? এখানে এত ভাল কাজ করলে, এখানেই থেকে যেতে পার। সেটা অনেক ভাল হবে। এই এত সুন্দর আকাশ, এই নদী, এই ফুল দেশে ফিরে পাবে? কী আছে তোমার দেশে?’ স্যার স্বভাবসিদ্ধ কৌতুকে বলে ওঠেন - ‘আসলে ট্রপিকাল কান্ট্রি তো, ফুলের রঙটা একটু বেশি ফোটে, বৃষ্টি বেশি হয় তো, আমার বাড়ির পাশের নদী এত চওড়া, এপার থেকে ওপার দেখা যায়না।’ এই কথা শুনে সেই সহপাঠী নাকি অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে তাকিয়েছিল। স্যারের গল্প শুনে আমাদের হাসি যত চওড়া, ছাতিও ততটাই।
একবার স্যার ক্লাসে জিওলজিকাল টাইম স্কেল পড়াতে এলেন। ক্লাসটা শুরু হল এইভাবে -
• Have you ever visited Digha, anybody?
• Yes, sir.
• Oh, congratulations. What is there on the sea beach?
• Sand, sir.
• Oh, yeah, sand. Then what about sandstone? If there is sand, then there must be some sandstone, isn't it? Who did find sandstone in Digha?
সবাই চুপ। দীঘায় বেলেপাথর তো কেউই দেখেনি।
• Nobody? Strange. Oh, then some years later the sand will be converted into sandstone. Is that the case?
• Yes, sir. (সবাই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে)
• Then how many years will it take to form sandstone?
• I think 15 years, sir.
• No, no, it may be 25 years, sir. (আর একজন বলে ওঠে)
• No, dear, it will take some 5,000 years, may be to start the initiation.
শুনে আমরা থ। পাঁচ হাজার বছর!! তার পর সেই সূত্র ধরে জিওলজিকাল টাইম স্কেল পড়ালেন স্যার। এর সঙ্গে আবার স্যারের আর একটা ব্যাপার ছিল, আজ যা পড়ালেন, পরের দিন ঘুরে ফিরে, কৌতুকের ছলে পড়া ধরতেন। আর না পারলে একটুও বকতেননা, শুধু অল্প হেসে হেসে কথার চিমটি কাটতেন, বাকিরা হো হো করে হেসে ফেলত। সেই ভয়ে দুষ্টু ছেলের দল, যতক্ষণে স্যার বসবেন বলে টেবিল ঝেড়ে মুছে পরিষ্কার করছেন, ততক্ষণে পিছনের দরজা দিয়ে হাওয়া। আমরা গুটিকতক বসে থাকতাম স্যারের ঐ অপূর্ব বাচন ভঙ্গি আর কনসেপ্টগুলোর স্বাদ পাবার জন্য। আসলে যে স্যার নোট দেননা, বইয়ের পাতা খোলেননা, তাঁর ওসব গাল গপ্প শুনে কেজো ছেলেমেয়েরা সময় নষ্ট করতে চাইতোনা। আর যদিবা তারা হলে থাকতো, গিয়ে জড়ো হত লাস্ট বেঞ্চের দিকে। ক্লাসের সামনে পিছনে ভিড়, মাঝখানটা ফাঁকা। একদিন স্যার ক্লাসে ঢুকেই বোর্ডে ইংরেজি হরফে লিখে দিলেন - ভয় নাই ভয় নাই, কাছে আয়। সবাই ভাবল আজ বুঝি স্যারের মনটা ভালো আছে, পড়া ধরবেননা। যেই সব পিছন থেকে সামনে এসেছে, অমনি স্যার পুরো কথাটায়, প্রতিটা লেটারের ওপরে চন্দ্রবিন্দু বসিয়ে দিলেন। মানে ভঁয় নাঁই ভঁয় নাঁই, কাঁছে আঁয়। ব্যাস, সবার আক্কেল গুড়ুম। আবার যে কে সেই, নতুন পড়া শুরু করার আগে পুরোনো পড়া ধরা শুরু হয়ে গেল।
একদিন স্যার এসে বললেন, ডিম আগে না মুরগি আগে? বিতর্ক শুরু হয়ে গেল। স্যার বললেন, জল আগে না বরফ আগে? ক্লাস আবার দুভাগে ভাগ। যারা বরফের দলে ছিল, তাদের যুক্তি হিমালয়ে বরফ না থাকলে কি আর সারা বছর নদীর জল পাওয়া যেত? আবার জলের দলেও লোক ছিল। কিন্তু চট করে কেউ কথা বলতে চাইছেনা। কারণ কথা বললেই সেই রেশ ধরে স্যার আবার কী প্যাঁচে ফেলবেন। কেউ বলছেনা দেখে আমি সাহস করে বললাম জল আগে, স্যার বললেন - এক্সপ্লেন। আমার ধারণা হল পৃথিবী আগে গরম ছিল। বরফ থাকার কথা নয়। বরফ পরে এসেছে। স্যার বললেন, সেটা ঠিক, তবে পৃথিবীর শুরুর সময় - অতটাও পিছনে যাবার দরকার নেই। যারা হিমালয়ের বরফ আর তা থেকে নদীর কথা ভাবছ, তারা বল দেখি, হিমালয় কি প্রথম থেকেই অত উঁচু ছিল? কোটি কোটি বছর ধরে উচ্চতা বেড়েছে। তাহলে যখন অল্প উঁচু হয়েছে তখনও সদ্য বিকশিত জলবিভাজিকা থেকে দুই ঢালে জলধারা গড়াত তো? কিন্তু বরফ তো তখন ছিলনা। অকাট্য যুক্তি। হিমালয় প্রথম থেকে যে অত উঁচু ছিলনা এটা সবাই জানে, কিন্তু ঠিক জায়গায় ঠিক কথাটা কিছুতেই মনে পড়েনা, আর স্যারের কাছে হেরে যাই। যা হোক এইভাবে শিখতে শিখতে ধীরে ধীরে আমি প্রকৃতির ভাষা পড়তে শুরু করলাম। প্রথম যেদিন নিজে নিজে ওর কথা শুনতে পেলাম, সেই দিনটা কোনদিনও ভুলবোনা। কিন্তু সেটা বলার আগে একটু উপক্রমণিকা করে নেওয়া দরকার।
পার্ট টু তে উঠে আমি স্পেশ্যাল পেপার হিসেবে কার্টোগ্রাফি মানে মানচিত্র তৈরির বিদ্যাকে বেছে নিলাম। এবারে হিমাংশুরঞ্জন বেতাল হলেন আমাদের হর্তাকর্তা বিধাতা। কেন যে এইচ আর বি না বলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ওনাকে বেতালবাবু ডাকত, সেটা আমার জানা নেই। বেতাল বাবুকে আমরা ভীষণ ভয় করে চলতাম। তিনি যে খুব বকাবকি করতেন তা নয়, আসল ব্যাপার অন্য। দিনের প্রথম ক্লাস বেতাল বাবুর থাকত। সকাল দশটার নির্দিষ্ট ক্লাসে তিনি দশটা বাজতে এক মিনিট আগে ঢুকে পড়তেন। ক্লাসে ঢোকার দরজা আমাদের জন্য বন্ধ হয়ে যেত। তখন নোটের বা বোর্ডের ছবি তুলে অথবা লেকচার রেকর্ড করে হোয়াট্স্ অ্যাপ্ এ পাঠিয়ে দেওয়ার প্রযুক্তি আসেনি। কাজেই ক্লাসের বিশ্লেষণ শুনতে না পেলে বিষয়টা বোঝা কোনমতেই সম্ভব ছিলনা। দরজা বন্ধ হলে উপস্থিতির খাতায় শতকরা হিসেবে পিছিয়ে পড়তে হত। স্যার ওনার পুরো সিলেবাসে কোন দিন, কোন সময়ে কোন টপিক পড়াবেন তা সেশনের শুরুতে নোটিস বোর্ডে টাঙ্গিয়ে দিতেন। সদ্য ইউনিভারসিটিতে পা দেওয়া, ছক ভাঙ্গা, ডানা মেলা যৌবন স্যারের কঠোর নিয়মানুবর্তীতাকে দূর থেকে সমীহ করত, কাছে যেতে ভয় পেত। স্যার মানচিত্র বিদ্যার অলিগলি, ট্রিগোনোমেট্রি, ক্যালকুলাস, যোগ বিয়োগ, গুণ ভাগ যাই থাক বোর্ড ওয়ার্ক করে বোঝাতেন। বিশাল ব্ল্যাক বোর্ডের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুক্তোর মত একটু ছোট হস্তাক্ষরে লিখে চলতেন। মাঝে মাঝে ডায়াগ্রাম, লেখা হোক বা আঁকা - লাইন একটুও বেঁকে যেতনা। আর কোন নোট পাওয়ার উপায় তো ছিলনা, ওই লেখাটাই খাতায় লিখে নিতে হত। আমরা পাশ করে যাবার অনেকদিন পরে স্যার যখন রিটায়ার করলেন, তখন ওনার শেষ ক্লাসের বোর্ড ওয়ার্কের ছবি ছাত্রছাত্রীরা তুলে রেখেছিল। স্যার মারা যাবার পর আমরা দেখেছি। ওটা হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে ওরা শেয়ার করেছিল। যাই হোক, পার্ট টু তে বেতাল বাবুর কাছে আমাদের ডিসার্টেশন করতে হবে। উনি জায়গাটা বেছে দিলেন - মালদহ জেলা। ঐ জেলার ওপরে প্রত্যেককে আলাদা আলাদা বিষয়ে কাজ করতে হবে। আমার ভাগে পড়ল মালদার আম উৎপাদন নিয়ে রিপোর্ট লেখা। এবারে তো আর ইউনিভার্সিটি থেকে নিয়ে যাবেনা। নিজেদের যেতে হবে। গ্রুপ ওয়ার্ক এটা নয় - ইনডিভিজুয়াল কাজ। অগত্যা বাবা মাকে নিয়ে রেলগাড়ি চেপে সোজা গিয়ে উঠলাম মালদা সার্কিট হাউসে। মা আর বোন ঘরে থাকত। মে মাসের ঠা ঠা রোদে পুড়ে আমি বাবার সঙ্গে রিকশো করে আমবাগান, আচারের কারখানা, আমসত্ত্ব কারিগরদের বাড়ি, সরকারি অফিস চষে বেড়াতে লাগলাম। সেবছর ছিল আমের অফ ইয়ার। আমগাছের যে অফ অন হয়, সেটা ভালো করে বুঝলাম। সহজ পাঠের ছড়ার মত, কোন বছর আমের ডাল খালি, পরের বছর ডালে আম যায় ভরে। একদিন বিকেলে সার্কিট হাউসের ম্যানেজার বললেন, কাছেই ভারত সেবাশ্রম, শান্ত পরিবেশ, ঘুরে আসুননা, ভালো লাগবে। সেই শুনে আগ্রহ হল। এমনিও মা আর বোনের তো কিছুই দেখা হচ্ছে না। সার্কিট হাউসের পিছনে কিছুদূর হেঁটে গেলে মহানন্দা। গরমকালে জল কম। মাঝিরা বাঁশের সাঁকো বেঁধে রেখেছে, তাদের পয়সা দিয়ে হেঁটে পেরোতে হয়। যখন সাঁকোর মাঝামাঝি পৌঁছেছি আমার চোখে পড়ল, ওপারে নদীর পাড় থেকেই শুরু হয়েছে ভারত সেবাশ্রমের উঁচু প্রাচীর। আর তার গায়ে সারি বেঁধে সিমেন্টের স্পার বেরিয়ে আছে, নকশাটা বড় ড্যামের গায়ে যেমন থাকে তেমন। আর ঐ পাঁচিলের পাশের বাড়িগুলোর ভিত খুব উঁচু উঁচু। অবাক হলাম। স্যারের কথা মনে পড়ল। নদীর গতির দিকে মুখ ফেরাতেই চমকে উঠলাম। দুপাশে একইরকম ঘাসের গালচে মোড়া গড়ানে ঢাল, একটা পরিষ্কার ইংরেজি ভি। আমার চোখের সামনে দুপাশের অনেক উঁচু রাস্তা ছাপিয়ে জল বইতে লাগলো। ঐ জলের ধাক্কা আটকানোর জন্য পাঁচিলে সিমেন্টের বড় বড় স্পার। আর জল থেকে বাঁচতে ভিতগুলো অত উঁচুতে। অনুভব করলাম আমি সাঁকোর মাঝখানে মানে ঐ বিপুল জলরাশির তলায়। উফফ, শিরদাঁড়া দিয়ে শীতল স্রোত বইতে লাগলো। পাশে থেকেও বাবা মা বোন কিছুই বুঝলোনা। আমিও বলিনি কিছু, ঐ ভয়, আর তারপর প্রকৃতিকে বোঝার উল্লাস, তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছি সেদিন, আর আজও করি। এর অনেক বছর পর, ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একবার মুর্শিদাবাদে ফিল্ড সার্ভেতে গেলাম। কাজ হয়ে গেলে একটা দুটো দিন ঘুরে বেড়ানোর জন্য থাকেই। মোতিঝিলে পৌঁছেই ছেলেমেয়েরা চেঁচিয়ে উঠেছে, ম্যাডাম, অক্স বো লেক! আমরাও সহমত। ওরা ঠিক চিনতে পেরেছে, দেখেই বোঝা যায় অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদই বটে। ভাগীরথীর কোন ফেলে যাওয়া ধারার বাঁক পড়ে আছে এখানে। প্রৌঢ় গাইড বলে চলেছেন বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব আলীবর্দী খাঁয়ের জামাই, ঘসেটি বেগমের স্বামী নওয়াজিশ মুহাম্মদ খাঁ এই হ্রদ কেটে তৈরি করিয়েছেন। ছেলেমেয়েরা নাচানাচি করছে - অক্স বো লেক, অক্স বো লেক। চারপাশ ধরে ছুটে ছুটে দেখছে। শেষে গাইড ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করেন - ওরা কী বলছে দিদিমণি? অল্প কথায় ওনাকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করি। গাইড যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। বললেন বাড়িতে শুনেছি নদী আরও কাছে ছিল। এটা আসলে নদীর অংশ! বললাম, অবশ্যই। নবাবের জামাই সাহেব পুরোনো খাত সংস্কার করিয়েছেন। গাইড বললেন, আমি খুব ছোট থেকে ভাবতাম জানেন, এতবড় লেক মানুষ কাটল, মাটিগুলো গেলো কই, এতদিনে বুঝলাম। এত বছর এই পেশায় আছি, আমাকে কেউ বলেনি জানেন! আমি শুধু হাসি, প্রকৃতির মায়ার কাজল বড় বেশি গভীর, চুম্বকের মত টানে। সেবারই আবার আমরা বাসের ড্রাইভারের সঙ্গে ঝগড়া করে, বায়না করে করে খানিকটা গায়ের জোরেই কানসোনা গ্রাম খুঁজে খুঁজে সেখানে গেলাম - রাজা শশাঙ্কের প্রাচীন রাজধানী কর্ণসুবর্ণ দেখবার লোভে। এই এক দোষ আমাদের। যাবার আগে একরকম প্ল্যান হয়, আবার পরে মাথায় রোখ চাপলে রুটের বাইরে একস্ট্রা কিছু দেখতে জানতে ইচ্ছে করে। আমাদের ট্রাভেল এজেন্টরাও জেনে গেছেন ভৌগোলিকদের এই ঘোড়া রোগের কথা। যা হোক, কলেজে একবার পাইথন সফ্টওয়্যার নিয়ে ট্রেনিং হচ্ছিল। পদার্থবিদ এক্সপার্ট ডিজিটাল স্ক্রিনে বিন্দুর দোলন তৈরি করেছেন। আমার মনে হল জিওলজিক্যাল টাইম স্কেলে বদ্বীপের নদীর বদলে যাওয়া গতিপথের দোলনের মত। যখন তিনি পর্দায় প্রোগ্রামিং দিয়ে সরল রেখার আগুপিছু তৈরি করলেন, আমার মনে হল এগিয়ে আসা আর পিছিয়ে যাওয়া সাগরের তটরেখার কথা - ঠিক যেন হুগলি মোহনার বাম পাড়ে সুন্দরবনের এগিয়ে যাওয়া উপকূল, আর দখিন ধারে মানে ডানদিকে দীঘার বালি ক্ষয়ে সমুদ্রের ঢুকে আসার মত। দিন তিনেকের ওয়ার্কশপ যেদিন শেষ হল, পদার্থবিদেরা বললেন, আসুন না ফিজিক্স আর জিওগ্রাফি মিলিয়ে আমরা একটা প্রোজেক্ট করি। আপনি উদাহরণ দিচ্ছেন, আর চোখের সামনে পর্দা উঠে যাচ্ছে। আমি আবারও হাসি। প্রকৃতির নেশা বড় নেশা। প্রোজেক্ট তো করাই যায়, মানে করা উচিত। বদ্বীপের নদী আর তটরেখার চলন কোনদিকে হতে চলেছে, তার ঠিক ঠাক মডেল খাড়া করতে পারলে কত প্রাণ আর সম্পদ যে বেঁচে যাবে তার ইয়ত্তা নেই।