এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  দেখেছি পথে যেতে

  • কাঞ্চনজঙ্ঘার কাছে: লামাহাটা ও দার্জিলিং— ডিসেম্বর ২০২৫

    ফরিদা লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | দেখেছি পথে যেতে | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১১১ বার পঠিত
  • প্রাককথন
    সে কী আক্ষেপ সৌরাংশুর! বারবার বলছিল— ঈশ আমরা তো ইন্ডিগোর ফ্লাইটই কাটতে পারতাম, বাড়তি ভাড়াটা পকেট থেকে দিতে হত এই যা, ফারাক তো শ-দুয়েক টাকাই ছিল। খামোখা “আকাশা” র টিকিট কাটলাম। উড়বে তো? 

    এবার প্ল্যান হচ্ছিল ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দিন পাঁচেকের জন্য লামাহাটা দার্জিলিং বেড়ানোর।  ওদিকে সৌরাংশু, রঞ্জিনী আর ওদের মেয়ে টিয়া। আর এদিকে রেশমী ও আমি। অয়নও পৌঁছবে কলকাতা থেকে।  ওর ব্যবস্থাপনায় লামাহাটার হোমস্টে, যেখানে আমরা তিনরাত্তির থাকব। আর এক রাত্তির দার্জিলিঙে। আমাদের দিল্লি-বাগডগরার রিটার্ন টিকিট কাটার সময় সৌরাংশু বলল, ও LTC ক্লেইম করবে, তাই ও আগে টিকিট দেখে কেটে নেবে, তারপর একই ফ্লাইটে আমরা কাটব। এক বিকেলে ও টিকিট কাটার পরেই আক্ষেপ করছিল। আমরাও চটপট ‘'আকাশা’ ই কাটলাম। বাঁ-দিকের জানলার ধারে সীটও পাওয়া গেল। বেড়াতে যাওয়ার দিন সামনে আসতেই দেশব্যাপী ইন্ডিগোর মাটি কামড়ে থাকার প্রবণতা স্পষ্ট হতেই সেই আক্ষেপ বদলালো স্বস্তিতে।


    ডিসেম্বরেএ দশ তারিখ দুপুর একটা পঞ্চান্ন র ফ্লাইট। ইন্ডিগো বেশি উড়ছিল না বলে টার্মিনাল ওয়ান বেশ খালি খালি। আমরা হাতে সময় নিয়ে একটু আগে পরে পৌঁছে লাগেজ জমা দিলাম।  টার্মিনাল ওয়ানের দোতলায় রকমারি খাওয়া-দাওয়া ও আমার স্মোকিং বুথের নিশিডাকে অপেক্ষার ঘন্টা দেড়েক সময় ফুস করে কেটে গেল। অয়ন তার মধ্যেই  ডোনযেংপা হোম স্টে পৌঁছে গিয়ে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘার ছবি পাঠাতে শুরু করেছে, ওকে চারপেয়ের কষা বানাতে বলে ফ্লাইটে চাপলাম। 

    উড়ানের কিছু পরেই প্রত্যাশামতোই বাঁ দিকের জানলায় হিমালয় দেখা গেল স্বমহিমায়। পূর্বস্মৃতি থেকে নন্দাদেবী, ত্রিশূল এগুলোকে চেনা গেল, তারপর থেকে যা আসছে তার আর নাম জানি না, ওই বুঝি কাঞ্চনজঙ্ঘা বলে রেশমী কে দেখাচ্ছি আর কিছুক্ষণ পরেই তার সংশোধন করছি বলে বকুনি খাচ্ছি, কিন্তু তা আর গায়ে লাগে না।

    সত্যি সত্যি কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যেতে আর চোখ ফেরানো যাচ্ছিল না। ফ্লাইট যখন নামল তখন বাগডোগরায় বিকেল, লাগেজ নিয়ে বাইরে আসতেই সে পালাতে চায়। সমস্যা নেই তাতে, আমাদের জন্য পিসুম হাজির পার্কিঙে। দেখা হতে চাইতেই পকেট থেকে একবাক্স দেশলাই বের করে দিল। ওকে বলে রেখেছিলাম।

    জানা ছিল পাঁঠাটা ওপরে পাওয়া যায় না, তাই তা শিলিগুড়ি থেকে কিনতে হল। সেদিন আবার ওখানে একটা হাট বসেছে, তাতে আটকে সময় কিছুটা বেশিই লাগে। পাহাড়ের পথে গাড়ি উঠতেই নিকষ অন্ধকার নামে।

    তার মধ্যেই পিসুম এক জায়গায় এক শর্ট কাট নিতে দেখলাম প্রায় ত্রিশ ডিগ্রি এক ঢালে ওর টাটা সুমো গোঁ গোঁ করে উঠছে গাড়ির হেডলাইট অনুযায়ী রাস্তার দুদিকে যতটা বাড়তি জায়গা, তাতে পিঁপড়েরাও আপত্তি জানাতে পারে।

    আমি পিছনের লম্বা সীটে, পা তুলে দিয়ে ঠিক করলাম সামনে দেখার চেষ্টা না করে পিছনের রাস্তা দেখার।

    একটা সময়ে দু-পাশে লম্বা পাইনের সারির মধ্যে গাড়িটা কিছুটা উঠে থামল সাদা আলো দেওয়া একটা তিনতলা ছোট বাড়ির সামনে। পৌঁছে গেছি।

    আকাশে অনেক তারা, দুপুরে অয়নের পাঠানো ছবি অনুযায়ী যেখানে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাওয়ার কথা, তা অন্ধকারে ঢাকা। বাঁ-দিকে এক আলোকোজ্জ্বল পাহাড়ের মাথা দেখিয়ে অয়ন বলল ওইটা দার্জিলিঙ।

    তিনতলায় তিনটে পাশাপাশি ঘর আমাদের। কার্পেটে মোড়া দিব্য ঘর। একখানা প্রমাণ সাইজের ডবল বেড। আর এক কোণে একটা সিঙ্গল বেড। ঘরের মধ্যে দিয়েই একটা সিঁড়ি উঠে গেছে অ্যাটিকে। সেখানে কাঠের মেঝেতে আর একটা প্রমাণ সাইজের ডবল ম্যাট্রেস রাখা। তার একটা ছোট্ট বারান্দাও আছে যেখানে সোজা হয়ে একজন আরাম সে দাঁড়াতে পারে।

    পৌঁছতে রাত নটা বেজে গেল। তাপমাত্রা দিল্লির মতোই, তবে ঠান্ডা লাগে বেশি। হোমস্টের সাদা এলইডি আলোর বাইরে সামনের বিস্তৃত উপত্যকায় বিন্দু বিন্দু আলো। চারপাশে অত গাছপালা সত্ত্বেও ঝিঁঝিঁর ডাক নেই।  অল্প রাম-কফি খেয়ে ডিনার সারলাম কষা মাংস রুটি দিয়ে। কড়াপাকের সন্দেশ এনেছিল অয়ন কলকাতা থেকে। 

    কতদিন পরে আকাশে তারাগুলো দেখা যাচ্ছিল, তাই ট্রাইপড বের করতেই হল ব্যাগ থেকে। আরও বেরোল ইলেক্ট্রিক কেটলি আর নেসকাফের পাউচগুলো। বারান্দায় আমাদের টুকিটাকি আড্ডা চলছিল, আর লম্বা শাটার নিয়ে ক্যামেরা দার্জিলিং এর আলো দেখছিল মন দিয়ে।



    ছবি ১: শেষরাতের আলোয় দার্জিলিং পাহাড়, কালপুরুষ হেলে পড়েছে দার্জিলিঙে 



    ছবি ২: কৃষ্ণপক্ষ জ্যোৎস্নায় কাঞ্চনজঙ্ঘা 


    সকালের আলো ফোটার আগেই ঘুম ভাঙে শহরে, এখানে তো বেড়াতে আসার উৎসাহে ভাঙবেই। ঘরের বাইরে আসতেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা গেল কৃষ্ণপক্ষের শেষরাতের জ্যোৎস্নায়। আকাশে তখনও তারার মেলা, বাঁ-দিকে কালপুরুষ হেলে পড়ছে দার্জিলিং পাহাড়ে। যথাসম্ভব কম শব্দ করে ও মোবাইলের স্ক্রীন করা মৃদুতম আলোয় অল্প গরম জল বসাই, কফির পাউচ পাশেই। যদি আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে পাখি টাখি আসে, তাই ভেবে লেন্স বদলে নিই।

    এর মধ্যে সামান্য আলো ফুটেছে দিগন্তে। কাঞ্চনজঙ্ঘা সেই আলোর অনেকটা দখল করে স্পষ্টতর এখন। গুগুল ম্যাপ অনুযায়ী দার্জিলিং পাহাড় এখান থেকে স্থলপথে তিরিশ কিলোমিটার, সোজাসুজি ১০-১২ কিলোমিটারের বেশি নয় কোনও মতেই, সেখানে তার প্রায় কুড়ি গুণ দূরত্বের কাঞ্চনজঙ্ঘা যেন ঘাড়ের ওপর হুমড়ি খেয়ে দেখছে।

    অয়ন ও সৌরাংশুদের ঘরে যুগপত কড়া নাড়িয়ে ঘুম ভাঙাতে হল। ওরা উঠলে রেশমী কে ডাকলাম, সে উঠতে চাইল না বলে বাইরে এসে দেখলাম প্রথম রোদ্দুর পড়ল পাহাড়চূড়ায়।

    একটা কমলা আভা থেকে শুরু হয়ে হলদে সোনায় মুড়ে ফেলল শৃঙ্গগুলি। আবহাওয়া একদম পরিষ্কার।  ১০০/৪০০ র লেন্সে তাকালে মনে হয়, কারোর পকেট থেকে রুমাল পড়ে থাকলেও তা যেন স্পষ্ট দেখা যেত।

    সকালে হোমস্টে থেকে দেওয়া চায়ের আগেও দু'রাউন্ড কফি হয়ে গেছে, সঙ্গে বিস্কুট। চা যখন এল, তখন কাঞ্চনজঙ্ঘা রূপোলি হয়ে গেছে। অয়ন ও সৌরাংশুর সঙ্গে হাঁটতে বেরোলাম। একটু নেমে বাঁ-দিকে চড়াই ধরে কয়েক পা এগোতেই তাকদা চা-বাগান। মহিলা শ্রমিকরা পায়ে গামবুট চাপিয়ে কাজে আসছেন। এখন পাতা তোলার সময় নয়। গাছের রক্ষণাবেক্ষণই উদ্দেশ্য। হাঁটা রাস্তার পাশে হওয়া একটা গাছের লম্বা পাতা কিছুটা ছিঁড়ে নিয়ে হাতে ঘষে অয়ন বলল— শুঁকে দেখ। লেমন গ্রাস!!!

    একটা বসার জায়গাও আছে,  কিছুটা এগোতে। তবে সারাক্ষণই কাঞ্চনজঙ্ঘা আমাদের চোখের আড়াল করতে দেয় না।


    ছবি ৩: চা বাগানে হাঁটতে গিয়ে 

    সেদিন আর তাড়াহুড়ো নেই, কয়েকটা স্থানীয় পয়েন্ট দেখা হবে, পিসুম আসতে ধীরে সুস্থে ব্রেকফাস্ট সারলাম আমরা। লুচি-আলুচচ্চরির সঙ্গে ছিল অয়নের আনা ঝোলা গুড়। একটু খড়খড়ে হয়ে যাওয়া লুচির সঙ্গে ঝোলা গুড় ওই পাহাড়ি শীতের সকালে পাঁউরুটি-ঝোলাগুড় কে শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারে। 

    লামাহাটা ইকো পার্ক ওখানকার একমাত্র নামকরা জায়গা। কাজেই যাবতীয় ভিড় ওখানে। তাই আমরা অন্য একটা ভিউ পয়েন্টে গেলাম, সেখানে ভিড় কিছু কম, রাস্তার ওপরেই এক জায়গা, যেখান থেকে প্রায় ২৭০ ডিগ্রি জুড়ে হিমালয়ের সাদা টুপি শৃঙ্গগুলো দেখা যাচ্ছিল। কাঞ্চনজঙ্ঘার বাঁ পাশে কুম্ভকর্ণ,  ডানদিকে সিম্বো, আর ডাইনে একটু দূরে পান্ডিম— এইটুকুই যা জানি। বাকি সবই আমাদের কাছে  এক প্রিয় বন্ধুর কথায় “টুথপিক”।

    এরপরের গন্তব্য একটা চা-বাগান। টিয়া সেখানে পাতা তোলা কন্যের সাজ পরে মাথায় ঝুড়ি আটকে বেচে নেচে বেড়াতে থাকল। ছবি তোলার অর্ডার পেয়ে সৌরাংশুকেও তাই পিছু নিতে হল। 

    ওখানে এক চায়ের দোকানও আছে। চমৎকার পাতা চা বানায়। অল্প কিছু ট্যুরিস্ট থাকলেও তাদের উপদ্রব না থাকার স্বস্তি ছিল অক্ষুন্ন। বেশ খানিক্ষণ কাটালাম, বলা বাহুল্য কাঞ্চনজঙ্ঘা সারাক্ষণই সঙ্গ দিয়েছিল। এই লাইনটা আর লিখব না আলাদা করে, আপনারা প্রতি অনুচ্ছেদের শেষে একবার ভেবে নেবেন। 

    অয়ন লামাহাটায় নিয়মিত আসে-টাসে কাজের সূত্রে। পথে এক জায়গায় এক চা বাগানের মাঝখানে একটা তক্তার মতো কালো পাথরে শুয়ে রোদ পোহায় সে, সঙ্গে রাখা রামপাঞ্চে চুমুক দিতে দিতে। সে জায়গাও বাহারি, তাও দেখা গেল। সেখানে অবশ্য অন্য টুরিস্ট দেখি নি।

    ডিসেম্বরের শুরু থেকে লেবু হতে শুরু করে বটে দার্জিলিঙে, তবে যথেষ্ট ঠান্ডা পড়ার আগে তা নাকি অত মিষ্টি হয় না। তাও এক লেবুর বাগান দেখা হল। মাটিতে পড়ে থাকা লেবুগুলো খেতে খারাপ নয়। হোমস্টে তে খাওয়ার জন্য চা-পাতাও কেনা হল এক ফাঁকে,  লোপচু চায়ের পাতা, খোদ লোপচু-বাজার থেকে।

    প্রায় তিনটে বাজে তখন, তাই ফেরা হল হোমস্টে তে। ডিমের কারি ভাত খেতে একটা ছোট ভাতঘুম দিতে না দিতেই সন্ধে নামল লামাহাটায়।

    এখন অনেক কাজ আমার। থেচা মাটন বানাতে হবে, আর ওদিকে তারার ছবিও তুলতে হবে। হোমস্টের কুক শেখর ও তার সাগরেদ শেরাপ যদিও সব জোগাড় যন্ত্র করে দিয়েছিল। ধনে পাতা কম হওয়াতে পাশের ক্ষেত থেকে রাইশাকের পাতাও তুলে এনে দিল। খাসি বড় সহনশীল। তার জ্যান্ত অবস্থায় “যা পায়, তাই খায়” নীতি রান্নার সময়েও প্রযোজ্য। তবে কিনা “সাবান” ধরণের অনাচার সে সহ্য করে না। 

    মাংস রাঁধার মধ্যেই একফাঁকে অ্যাটিকে চড়লাম ট্রাইপড নিয়ে। ১০-১৮ মিমির ওয়াইড অ্যাঙ্গেলে না তুলে ঠিক করেছিলাম এবার ২৪ মিমি র ২.৮ এফ ব্যবহার করব। অ্যাপারচার বড় হওয়ায় অনেক বেশি তারা পাওয়া যাবে। সাড়ে আটটায় ক্যামেরা চালিয়ে ফের গেলাম একতলার রান্নাঘরে। রান্না দেখাশোনা আর রাম-কফি সহযোগে আড্ডায়। এই হোমস্টের মালিকের নাম থিনলে। তার মেয়ে চন্ডীগড়ে ল কলেজে পড়ে, সে বাড়ি এসেছে। ওদের বাড়ি হোমস্টের পাশেই। অয়ন এসেছে বলে দু-একটা ডিশ ওদিক থেকেও আসছিল টেস্ট করার জন্য।



    ছবি ৪: প্রথম দিনের ট্রেইল

    সৌরাংশু ও অয়ন একে অপরকে চিনত না আগে। নানান ব্যাপারে দু-জনের মিল ও অমিল প্রায় সীমাহীন। দু-জনেরই কাজকর্মের বিস্তৃতি বিরাট। দু-জনেরই প্রচুর চেনাশোনা, পরিচিতি নানান ক্ষেত্রে। আবার কয়েকটা জায়গায় দু-জনে যেন দুই মেরুর মানুষ। কলকাতা ময়দানের সঙ্গে দুজনেই নানান ভাবে জড়িয়ে সেই সূত্রেই ওদের মধ্যে জমে গেল ভালোই। 

    খাওয়া দাওয়া সেরে রাত সাড়ে দশটায় ক্যামেরা নামিয়ে আর এক রাউন্ড পাতা চা হল বৈকি। পরে এই ছবিটা প্রসেস করার সময়ে দেখলাম তারার বিন্দুগুলো জুড়ে জুড়ে যেভাবে লাইন তৈরি করছে আকাশে তেমনই রাস্তায় আলো জ্বালিয়ে চলা গাড়িগুলো রাস্তা আঁকল। যেন মানচিত্র আঁকছে (তিন নম্বর ছবি)। 

    ১২ তারিখ সকালে আর বড় লেন্স লাগাই নি। খুব একটা বেশি পাখি দেখিনি। ১৮-১৩৫ মিমির কিট লেন্সে অনেকটা কভার করা যাবে ভেবে। এদিন সকালে আগের দিনের কেনা চা এর সুস্বাদু লাগল। আগের দিনের মতো প্রথম আলোর ঝলক পাওয়া মুহূর্ত হারাতে দিই নি। সেই আলো আস্তে আস্তে অন্যান্য শৃঙ্গগুলিতে রঙ বুলিয়ে যাচ্ছিল নিজের মতো করে। রঙ বদলের খেলা একসময়ে নেশার মতো হয়ে যায়, ডিজিটাল ক্যামেরায় পরের পর ছবি ওঠে, জানি এতে সীমিত জায়গা কমে যায়। পরের পর একই রকমের ছবির ফারাক করার মতো সময় থাকে না,  তবু যতটুকু পাই ওই মুহূর্তগুলো এভাবেই আঁকড়ে ধরে, জিরোতে দেয় না। 


    ছবি ৫: কাঞ্চনজঙ্ঘায় প্রথম আলো

    শীতের দক্ষিণগামী সূর্য হোমস্টের সাপেক্ষে ডানদিকে এক অদৃশ্য জায়গায় উদয় হয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে পাহাড়ে রং টং করে। তারপর তাতে রূপোলী রং লাগিয়ে দার্জিলিং পাহাড়ে আলো ফেলে। সেই আলো সকালের সঙ্গে বাড়তে বাড়তে একে একে স্পষ্ট করে নিচের উপত্যকার গ্রামগুলি।

    এদিকে আড্ডা চলতে থাকে আমাদের। এক এক কাপ চা আবার ভরে ওঠে রঞ্জিনী আগে আসেনি উত্তরবঙ্গে। সৌরাংশু উত্তরবঙ্গে আগে এলেও দার্জিলিং যাওয়াতে ওর বাধা পড়ে গেছে কয়েকবার। রঞ্জিনী দিল্লিতে বড় হয়েছে, উত্তরবঙ্গে এই পাহাড়ে এসে ওর বারবার সেই ছোটবেলার পাহাড়ে ঘোরার স্মৃতিই মনে পড়ছে। ইদানীং কালের পাহাড়ে বেড়ানোর স্মৃতি ওর তত ভালো লাগেনি চারপাশের দেখনদারি পটভূমিকায়।

    এইদিন মংপু যাওয়ার কথা আমাদের। এর দূরত্ব একটু বেশি তাই তাড়াতাড়ি বেরোতে হবে বলে সবাই প্ল্যান ট্যান করলেও দশটা বেজেই গেল। সকালের মেনু নিয়ে আর পরীক্ষা নয়, গতকালের মতোই। লুচিখন্ড থেকে গড়িয়ে পড়া গলানো সোনার মতো নলেন গুড়ের ধারা আমাদের দিশেহারা করে দিল আবারও।

    মংপু যাওয়ার পথে এক জায়গায় গাড়ি থামালো পিসুম। সেটা একটা রডোডেন্ড্রন বাগান। যদিও তা শুকনো আপাতত। সেখানে পিসুমের বাড়ি। তার দুই মেয়ের সঙ্গে দেখা। বড়জন পিকনিকে যাওয়ার গাড়িতে উঠল।

    মংপুর রবীন্দ্র সংগ্রহশালার কম্পাউন্ডে একটা স্কুল আছে। সেদিন বাচ্চাদের অ্যানুয়াল ফাংশান। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সেজেগুজে তাদের পারপফরমেন্সের জন্য অপেক্ষা করছে। পাশেই প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠান চলছে, পথচলতি মানুষও দেখতে শুনতে পায়।

    মৈত্রেয়ী দেবীর আতিথেয়তায় বার তিনেক এসে বেশ কয়েকদিনের জন্য থেকেছিলেন এখানে রবীন্দ্রনাথ। মৈত্রেয়ী দেবীর স্বামী ছিলেন সিঙ্কোনা বিভাগের অধিকর্তা। সেই বাংলোই আজকের সংগ্রাহালয় ও বিদ্যালয়।

    রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত কিছু জিনিসপত্র,  অনেক দুর্লভ ছবি আছে এখানে। রবীন্দ্রনাথ আশি বছরের জন্মদিন এখানেই কাটিয়েছেন। সেই উপলক্ষে কারা এসেছিলেন,  কী হয়েছিল সে সব ছবিও দেখলাম।

    রবীন্দ্রনাথের অনুরোধে সরকারী বাংলোয় একটা কুটির নির্মান করা হয়। রেশমী ফুট কাটল— এভাবে সুবিধা নেওয়া অনৈতিক। 

    সংগ্রহশালায় ভালোই ভিড়। তার একদিকের জানলা দিয়ে চমৎকার রোদ্দুর আসে। সেখানে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে মানুষজন দেখি, দু-একটা মন্তব্য শুনি, যেমন— একজন বলে ওঠেন, “ওইটুকু খাটে রবীন্দ্রনাথ আঁটতেন?”

    ওখান থেকেই  বেরিয়ে আমরা যাব যোগীঘাটে। গাড়ি পাহাড় বেয়ে নিচে নেমে রিয়াং নদীর ওপর একটা সেতু পেরিয়ে থামে। মোমো কিনে খেয়ে নদীর বুকে নামি হেঁটে হেঁটে। জুতো খুলে রাখি একপাশে। বড় বড় পাথরের বোল্ডারে পা রেখে এক জায়গায় জুত হয়ে বসে কনকনে জলে পা ডোবাই। পা শিরশির করে। জলের ছবি তুলি। এখানে অন্য ট্যুরিস্টও ছিল। একটা পড়ে থাকা বাঁশ তুলে টিয়া জলে হাঁটে। সৌরাংশুও জল দেখে শিশু হয়ে যায়, রঞ্জিনী হাসে। রেশমী আমাকে সাবধান হতে বলে। অয়নও জুতো খুলে জলে পা দেয়। টিয়া জল থেকে উঠতে চায় না। আমি নদীখাত থেকে সেতুও তার প্রতিবিম্বের ছবি তুলি, তাতে অন্যান্য ট্যুরিস্ট চলে আসে, থেকে যায়। 

    ফেরার পথে এক জায়গায় মাছ পাওয়া যাচ্ছে। সন্ধেবেলা মাছভাজা খাওয়ার জন্য পিসুমকে বলা হয় গাড়ি থামাতে। হোমস্টে তে ফিরতে আরও বেলা হল আজ। আজকেও ডিম্ভাত। তারপর একটু ঘুম। 

    আজকে ফের অয়ন রাঁধবে মাংসটা। একটু হুইস্কি নিয়ে সবাই একতলার ডাইনিং হলে জড়ো হই। ওখানকার মিউজিক সিস্টেমে ব্লুটুথ দিয়ে আমার ফোনে গান চালাই। স্পটিফাই থেকে অনেক খুঁজে পেতে একটা প্লেলিস্ট বের করে চালাই, তা আর ভালো করে শোনা হয় না আড্ডা ও কথাবার্তার মাঝে। 

    আজকের ট্রেইল তোলা শুরু করতে রাত হয়ে যায়। খাওয়ার পরে ক্যামেরা চালিয়ে দিই। রাত বাড়লে ঠান্ডাও বাড়ে। তাও আজকে জেগে থাকি সবাই। বারান্দায় চায়ের আড্ডায় একটা ছুরি দেখা যায়। একটা কেক এনে রাখে কেউ। ঘরে রাখা মোটা মোমবা জ্বলে। আমার একবছর বয়স বেড়ে যায়। আমি ক্যামেরা নামিয়ে এনে ঘুমিয়ে পড়ি।


    ছবি ৬: দ্বিতীয় দিনের ট্রেইল

    লামাহাটা থেকে আজ যাব দার্জিলিং।  সকালের কাঞ্চনজঙ্ঘার আলোর খেলাটুকু প্রতিবার নতুন করে দেখা দেয়। রোদ্দুর যেভাবে রোজ এসে আস্তে আস্তে এলাকা দখল করে, ঘুম ভাঙায় উপত্যকার প্রতিটি ঘরের আর তাদের মোরগেরা ডেকে ওঠে একের পর এক। দশটার মধ্যে বেরোতে হবে, তার আগে ব্যাগ ট্যাগ গুছিয়ে স্নানটান সারি আমরা। 

    অবশিষ্ট ঝোলাগুড়ের শেষ বিন্দুটি অবধি চেঁচে নিই। বেরোনর সময়ে আমাদের গলায় রেশমের সাদা কাপড় পরিয়ে দেয় থিনলে শেখর আর শেরাপ রা। জন্মদিন উপলক্ষে একটা নীল রঙের স্পেশাল উত্তরীয় অতিরিক্ত পাই আমি। আবার ফিরে আসার ইচ্ছেটুকু গাড়ি চলার পরেও অনেকক্ষণ সঙ্গে সঙ্গে চলে।

    বাতাসিয়ে লুপের সামনে পিসুম আমাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। বাতাসিয়া দেখে বাইর এসে ওর সঙ্গে দেখা হবে পার্কিংএ।

    বাতাসিয়া লুপে মানুষের ঢল। সৌভাগ্যক্রমে তখন পরপর দুটো ট্রেন ছিল। বাতাসিয়া লুপে কাঞ্চনজঙ্ঘার ব্যাকড্রপে টয়ট্রেনের ছবিটা পাওয়া গেল না। উপুর্যুপরি দুটো ট্রেনই সেই অংশটা পার করে দাঁড়িয়েছিল বলে। তবুও সেই ঝকঝকে সকালে ঝলমলে শীতের পোশাকে ঢাকা ট্যুরিস্টের দলকেও সুন্দর মানায়। ভিড় কম থাকলে হয়ত আরও ভালো লাগত। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার অংশটা শিকলে ঘেরা। সেখানে কয়েকটা টেলিস্কোপ রাখা। তা দেখতে পয়সা দিলেই শিকলের ওপারে যাওয়া যায়। যেতে চাইলাম না। 

    বাতাসিয়া লুপ থেকে বেরিয়ে খানিকটা হেঁটে পিসুমের সঙ্গে দেখা হল। এবার গন্তব্য হোটেল ওকডেন সামিট। রাজভবনের সামনে আমাদের লাগেজসহ নামিয়ে দিয়ে পিসুম এবার ফিরে যাবে। আবার আসবে পরের দিন সকালে আমাদের ফেরৎ নিয়ে যেতে। 

    লাগেজ নিয়ে খানিক হাঁটতে হল হোটেলে পৌঁছতে। চমৎকার ঘর। পর্দা সরাতেই কাঞ্চনজঙ্ঘা স্বমহিমায় হাজির। হোটেলের রিসেপশানের পাশের ছোট্ট জায়গাতেও গদি আঁটা সোফা, একটা বইয়ের আলমারি, ফায়ার প্লেস ও কাচের দেওয়াল জুড়ে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা। এই হোটেলটির দেওয়ালে দার্জিলিঙের নানান পুরনো সাদাকালো ছবি। নেপালি নাচগানের একটা ছবি দেখে রঞ্জিনী বলল— “এই ছবিটাই তো মংপুতে দেখে এলাম, রবীন্দ্রনাথের আশি বছরের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের ছবি।” এই কথাটা উল্লেখ থাকলে ভালো হত— আমরা একমত হলাম।

    হোটেলে চেক ইন করে বেরোই আমরা। ম্যালে একটা ফেস্ট চলছিল। নামটা মজাদার, “মেলো-টি”।  গোর্খা পার্বত্য পরিষদ ও দার্জিলিং পুলিশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত উৎসবে স্থানীয় তরুণ তরুণীর ভিড়। পুরো ম্যালের একদিকে স্টেজ বাঁধা, আর তাকে ঘিরে একটা রঙিন প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর এক জমজমাট আয়োজন। সেসব দেখতে দেখতে ম্যাল পেরিয়ে হাজির হলাম কেভেন্টার্সের ছাদে। আমাদের ছ-জনের জন্য একেবারে কোণের টেবিলটাও পাওয়া গেল দু-মিনিটের অপেক্ষায়। আর আমাদের পায় কে.. কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে দেখতে একের পর এক প্লেট আসে, উড়ে যায়।

    ফেরার পথে কিছু কেনাকাটা থাকে। তাতেই সন্ধ্যা নামে। হেঁটে হোটেলে ফিরে একটু হাত-পা ছাড়িয়ে নিই। আজকেই শেষ রাত্তির। ডিনারে বেরোনোর আগে অয়নের সঙ্গে হুইস্কির বোতলটা শেষ হয়।

    ডিনারে যাওয়ার পথে দেখল্ম সেই ম্যালের উৎসব তখন তুঙ্গে। চমৎকার গান হচ্ছে আর শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধের মতো একসঙ্গে গাইছে, নাচছে ছবি তুলছে। ফ্লুরিস থেকে কেক নিয়ে যাওয়া হল গ্লেনারিসে। বেড়াতে যাওয়ার আগের দিনই খবর পেয়েছিলাম গ্লেনারিস নাকি বন্ধ। গিয়ে দেখলাম লাইভ মিউজিক ও মদ বিক্রি বন্ধ করা হয়েছে প্রশাসনিক সমস্যায়। খাবার দাবার দিব্য পাওয়া যাচ্ছে। জমজমাট ভিড়। গান শোনার জন্য ম্যালে থামলে এখানে টেবিল পাওয়া মুশকিল হত। লাঞ্চ করতে যাওয়ার সময় খোঁজ নিয়েছিলাম, এরা টেবিল বুক করে না। তবে জানিয়েছিল সাতটার আগে এলে টেবিল ফাঁকা পাওয়া যাবে। 

    ভেতরটা বেশ উষ্ণ। জ্যাকেট খুলে রাখতে হল। নানারকম তৃণভোজীরা সুস্বাদু সুপক্ক হয়ে টেবিলে এসেছিল। খাওয়া দাওয়ার পর কেকটাও ছিল দুর্দান্ত। 

    গ্লেনারিসের বাইরেটা স্থানীয় সেল্ফি পয়েন্ট হয়েছে। উৎসব ফেরত ভিড় এসে ওখানে জড়ো হয়ে ছবি তুলছে পাগলের মতো। কলকাতার দুর্গাপুজোর একডালিয়া যেন, এত ভিড়। 

    আমরা ফিরে আসার পথে দেখি মঞ্চের আলো নিভে গেছে, তখনও ইতস্তত মানুষের জটলা অবশিষ্ট উষ্ণতা কুড়িয়ে চলেছে। ম্যালের রাস্তা বরাবর নানাবিধ খাবারের স্টলগুলোর কয়েকটায় তখনও খাওয়া দাওয়া চলছে, কয়েকটা বন্ধ করা হচ্ছে। রাস্তাটা আস্তে আস্তে শুনশান হয়ে আসে হোটেলের দিকে যত ফিরি। আমাদের আরও একটা আস্ত সকাল আছে এ যাত্রা। আরও একবার কাঞ্চনজঙ্ঘায় আলোর খেলা দেখা যাবে। আরও অন্তত একবার বেভুল তাকিয়ে থাকব আর মুহূর্ত বাঁচিয়ে রাখতে বারংবার শাটার টিপব।  অনেকদিন পরে খুঁটিয়ে না দেখেই মুছে দেব হয়ত বেশির ভাগই। 

    এই কদিনে পিসুমের ওই দুই মেয়ে আর চেলসির নামাঙ্কিত টাটা সুমো গোল্ড গাড়িটার খুঁটিনাটি মুখস্থ হয়ে গেছিল। ওটার ব্লুটুথ স্পিকার আমার ফোনে শেয়ারড হয়ে আছে। অনেকদিন পর যদি নিজের ফোনে স্পটিফাইতে একটা গান শুনতে গিয়ে ফোন শব্দ না করে, বুঝব ওর গাড়ি আমাদের কাছেপিঠেই আছে। 


    ছবি ৭: ভোরের কাঞ্চনজঙ্ঘা 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১১১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • . | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:২০737314
  • এককথায় চমৎকার
  • %% | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৩১737350
  • সেরা 
  • ফরিদা | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:৪৯737354
  • থ্যাঙ্ক্যু থ্যাঙ্ক্যু... 
    দশমিক ও ডবল শতকরা কে
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় প্রতিক্রিয়া দিন