"লোকে যাকে সাহিত্য করাটরা বলে তেমন কোন-কিছুতে আমার কোন আস্থা নেই চিন্তার মধ্যবিত্ততাকে ঘৃণা করি আমি, যে চিন্তা বৌয়ের ঠোঁটের লিপস্টিক দেখে রক্ত প্রত্যক্ষ করে। রবিঠাকুর-টাকুরদের মতো সাহিত্য-করিয়েদের লাইনে থাকতে নিজেকে রীতিমত অসম্মানিত মনে হয় আমার। আমি তেমন কোনো লেখা লিখতে চাই না যা পড়ে লোকে আমার পিঠ চাপড়ে বললে বাহা বেড়ে সাহিত্য করেছো তো হে ছোকরা, আমি চাই লোকে আমার লেখা পড়ে আমার মুখে থুথু দিক, আঙুল দেখিয়ে বলুক, - এই সেই লোক যে উপদংশ-সর্বস্ব এই সভ্যতার ঘাগুলো খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে দিনের আলোর মত খোলাখুলি করে দিয়েছে।" ... ...
ইউরোপীয় কোম্পানিগুলি বাংলার রফতানি পণ্য কেনার জন্য ইউরোপ থেকে যেসব সোনা-রুপো নিয়ে আসত (প্রায় সবটাই রুপো) সেগুলোর বেশিরভাগই জগৎশেঠদের কাছে বিক্রি করতে হত কারণ এগুলোর বিনিময়ে তাদের স্থানীয় মুদ্রা সংগ্রহ করতে হত এবং তা দিয়েই রফতানি পণ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হত। আর যেহেতু জগৎশেঠদের হাতেই টাঁকশালের কর্তৃত্ব, তাদের আমদানি করা রুপো জগৎশেঠদের কাছে বিক্রি করা ছাড়া কোনও উপায় তাদের ছিল না। শুধু তাই নয়, জগৎশেঠরা যে দাম দিতেন, সেটাই তাদের নিতে হত। বলা বাহুল্য সে দাম বাজারের দামের চেয়ে কমই হত। ইউরোপীয় কোম্পানিগুলির পক্ষে এ ব্যবস্থা মেনে নিতেই হত কারণ তারা এ দেশে পণ্য কেনার জন্য যে রুপো নিয়ে আসত, জগৎশেঠদের ছলচাতুরির জন্য তারা সেগুলি দিয়ে টাঁকশালে মুদ্রা তৈরি করতে পারত না। অথচ দাদনি বণিকদের মাধ্যমে রফতানি পণ্য সংগ্রহ করার জন্য তাদের নগদ টাকার খুবই প্রয়োজন হত। ... ...
সূত্র : যতীন্দ্রমোহন চট্টোপাধ্যায় দ্বারা মূল জেন্দ থেকে বাংলায় অনূদিত জরথুস্ত্র উপনিষদ ... ...
নতুন পুঁজিবাদ আসলে প্রাচীন পৃথিবীর অরোবরোস , সেই সাপ যা অনবরত ল্যাজ থেকে নিজেকেই খেয়ে চলেছে ... ...
কোন দেশ কাকে কত অস্ত্র বিক্রী করছে সেই তথ্য জানা যায় সুইডেনের সিপ্রির ( SIPRI - স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট [1] ) তথ্যভান্ডার থেকে। ১৯৬৬ সালে তৈরী এই স্বাধীন সংস্থাটি ১৯৫০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক স্তরে যাবতীয় অস্ত্র কেনাবেচার হিসেব রাখতে চেষ্টা করে এবং প্রতিবছর প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ... ...
শিল্প চলে গেলে শিল্পনগরীরা ভুতুড়ে পোড়োবাড়ি হয়ে যায়। যেমন ডেট্রয়েট। যেমন হুগলি নদীর দুপাড়ের সারি সারি চটকল। মাংস কাটার কারখানা ভেঙে স্টারবাকসের কফিশপ তৈরী হয়। যারা মাংস কাটত তারা সেখানে কাজ পাবে না। কারণ ধোপদুরস্ত পরিষেবা দিতে পারবে না। অপরাধ বাড়ে। উদাহরণ হিসেবে মার্গারেট থ্যাচারের 'বিগ ব্যাং' , যার ফলে যুক্তরাজ্যে অবশিল্পায়ন শুরু হয়। একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। ... ...
ভারতে মুঘল আমল থেকেই জায়গীরদাররা প্রজাদের থেকে খাজনা তুলে শাসকদের জমা দিত। মীরজাফর মারা যাবার পর ক্লাইভ চালু করেন দ্বৈত শাসন। যেখানে কোম্পানির ছিল দায়িত্ত্বহীন ক্ষমতা আর নবাবের ছিল ক্ষমতাহীন দায়িত্ত্ব। নবাবের দেওয়া দেওয়ানি সনদের শর্ত মোতাবেক নাজিম-উদ-দৌলা তাঁর বাবা মীর জাফরের মত ইংরেজদের বিনা শুল্কে অবাধ বাণিজ্য করার সুযোগ দেবেন এবং দেশীয় বণিকদের অবাধ বাণিজ্যের সুবিধা বাতিল করবেন। কোম্পানি সমস্ত টাকাপয়সা , খাজনা নিয়ন্ত্ৰণ করবে অথচ খাজনা যারা দেয় তাদের নিরাপত্তা দেবার জন্য বাধ্য থাকবে না। দ্বৈত শাসনের পরিণতি হিসেবে দেখা দিয়েছিল ভয়াবহ ছিয়াত্তরের মন্বন্তর। যার ফলে অচিরেই ১৭৭২ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা চিরতরে বাতিল বলে ঘোষণা করেন। ... ...
কিছুদিন আগে নেপালের প্রকৃতি লামসাল, যে ওড়িশার এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল, হোস্টেলে মারা যায়। সমস্ত জায়গার মত এখানেও প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের পক্ষ থেকে মৃত্যুকে প্রেমঘটিত আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু প্রকৃতির সহপড়ুয়ারা বেঁকে বসে ও দাবি করে প্রেমঘটিত নয়, নেপালি হবার জন্য প্রকৃতির প্রাক্তন প্রেমিক [ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র] তার ওপর অত্যাচার করত। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেবার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার ও তদন্ত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপিকা তাদের সঙ্গে সরাসরি তর্কে জড়িয়ে পড়েন। নিরাপত্তারক্ষীরা পড়ুয়াদের মোমবাতি মিছিল করতে বাধা দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় অবিলম্বে সমস্ত নেপালি পড়ুয়াদের হোস্টেল খালি করার ফরমান জারি করে ও তাদের অনেককে অল্প কয়েক ঘন্টার নোটিশে বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন ইত্যাদি জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়েরই বাসে করে ছেড়ে দিয়ে আসা হয়। ... ...
সেসময় কলকাতা থেকে নদীপথে কাশী যেতে লাগত ~৭৫ দিন। ঢাকা ৩৭ দিন। মুর্শিদাবাদ প্রায় এক মাস। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চাকুরে ক্লাইভ তখন ক্যালক্যাটা ঘুরে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে। যুবক রবার্ট ক্লাইভ বাবাকে চিঠিতে অভিযোগ করছেন , কোম্পানির মাসিক ৩ পাউন্ড স্টাইপেন্ডে টানাটানির সংসার। সেজন্য ক্লাইভ দুবার পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করারও চেষ্টা করেছিলেন। ক্যালকাটা পুনরুদ্ধারে তাকেই ফের মাদ্রাজ থেকে পাঠানো হল। কোম্পানীর আরেক নতুন কর্মচারী ওয়ারেন হেস্টিংস , তিনিও মাসে ৫ পাউন্ড বেতনে মহাকরণে টানাটানির সংসার। সিরাজের পতন এবং ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের দু বছর বাদে হেস্টিংসেরও বাংলায় ফেরা। চাঁদপাল ঘাটের দক্ষিণে তখন ঘন জঙ্গল। উইলিয়াম দুর্গর কড়ি বর্গা খসে পড়ছে। সেখানে কামানের গোলার দাগ। ... ...
আদলাজ থেকে ফেরার পথে গান্ধীনগর - আহমেদাবাদ এয়ারপোর্টের রাস্তায়। রাস্তার ধারে ন্যায়ারা এনার্জি , আদানি সিএনজির পাম্প। গুজরাতের রাজধানী আহমেদাবাদ থেকে কুড়ি কিলোমিটার উত্তরে গান্ধীনগর। মণিভূষণ ভট্টাচার্যের 'গান্ধীনগরে এক রাত্রি' মনে পড়তে পারে। ১৯৭৪ সালে এই অঞ্চল নবনির্মাণ ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। কম করে একশো জনের মৃত্যু এবং তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের চিমনভাই প্যাটেলের ইস্তফা। স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের একমাত্র আন্দোলন যা একটি নির্বাচিত সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করেছিল। বাংলার নকশালবাড়ি আর গুজরাটের এই ছাত্র আন্দোলনের অজুহাতেই জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। ... ...