এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • কামড়ালেই টাকা অথবা রেডিও-টেলিস্কোপ

    রানা সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৮ নভেম্বর ২০২৫ | ৬০ বার পঠিত
  • কামড় আমরা কে না খেয়েছি। তাই না?

    শারীরিক কামড় না খেলেও মানসিক কামড় তো আমরা প্রতিনিয়ত খাই! ক্রমাগত একে ওকে কামড়ে চলি। তবে ছোটবেলায় কে যে কাকে শারীরিক কামড় মেরেছি, তা কি আজ আর মনে আছে?

    আহা! জন্মাবধি একে ওকে কামড়াতে কামড়াতে আমরা পরস্পর মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাই। কেউ হেরে যাই! কেউবা আবার জিতি! হার-জিত দুটোকেই আবার একসঙ্গে অনেকেই অভিজ্ঞতার মধ্যে পাই। আর ডারউইন এবং ওয়ালেস একেই বলেছেন ‘সারভাইভাল ফর দ্য ফিটেস্ট’। তবে হারা-জেতার এই প্রতিক্রিয়াশীল মানসিকতা বিসর্জন দিয়ে যদি আমরা সহাবস্থানে থাকতে পারতাম, পরস্পরকে সহযোগিতার মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করতে পারতাম, সেক্ষেত্রে আমাদের সবার, হ্যাঁ সবার জেতার সম্ভাবনা বেড়ে যেত। কিন্তু হায়!   

    যদিও সাংসারিক কামড়, এলাকাগত কামড়, সম্পর্কের কামড় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় কামড়ের দাগ আমরা বয়ে নিয়ে চলি দেহে এবং মনে। আবার অনেকেই এটাকে গৌরবময় বলে মনে করেন এবং টুঁ শব্দটি করেন না আর সমাজ তাত্ত্বিকরা সেই আচরণকেই বোধহয় বলেন ‘হেজিমনি’।

    তবে প্রতিস্পর্ধি মানুষও থাকেন, যাদের সেই স্পর্ধা থাকে পাল্টা কামড় দেওয়ার। যদিও সারাটা ভারতবর্ষ জুড়েই গত কয়েক দশক ধরে যেন বহু মানুষ নানাধরনের উচ্ছিষ্ট ভোগী হয়ে রয়েছেন। তাদের অনেকেরই আগের সেই তেজ অনেকটা ম্রিয়মাণ; দেখতে পাচ্ছি যে নানান মত ও পথের কচকচির ও কাণাগলির মধ্যে বারবার পথ হারিয়ে সেইসব শিক্ষিত প্রতিস্পর্ধি মানুষেরা ব্রাউনিয়ান মোশনের মতো যেন বিভ্রান্ত হয়ে রয়েছেন। একদিকে আমরা গেয়ে চলেছি, “বাংলার মাটি, বাংলার জল… এক হউক; এক হউক; এক হউক…”। কিন্তু বাস্তবে এক হতে পারছি কি?  

    কথায় বলে ‘ভাত ছড়ালে কাকের অভাব হয় না’। ইদানীং সেটা পাল্টে দিব্যি লেখা যায় – ‘ভাত ছড়ালে জনগণের অভাব হয় না’। আর তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবীদের পোলাও, বিরিয়ানী সঙ্গে কিছু সুযোগ সুবিধা ছড়িয়ে দিলেই ব্যাস। তারাও আর প্রতিবাদ করেন না।

    সেই বুদ্ধিজীবীদের প্রতি একটা কথা শ্রদ্ধা সহকারে বলে যাই, মানুষ কিন্তু আপনাদের দেখছে।

    যাই হোক, প্রসঙ্গে চলে আসি।

    কামড় থেকে নানারকম রোগজ্বালা মানুষের হয়, সেটা যেমন আমরা জানি, তেমনি আমরা জানি যে ঠিকঠাক মতো কামড় দিয়ে খাবার না খেতে পারলে ঠিক আবার তৃপ্তি আসে না। মানে? কামড়ে কুমড়ে সাপটে সুপ্টে লেপ্টে লুপ্টে না খেলে যেন মনে হয় কেমন ফাঁকা ফাঁকা; খেলাম অথচ তৃপ্তি হল না।

    আবার কামড় থেকে মৃত্যুও হতে পারে।

    তবে আমি সেইসব বিষয় নিয়ে এখানে লিখতে আসিনি। সেসব আপনারা জানেন।

    তবে আপনারা জানেন কি যে কামড় থেকে টাকাও রোজগার করা যায়?  অনেক অনেক টাকা?

    অবাক হলেন?

    না, ব্যাপারটা কিন্তু এমন নয় যে হঠাৎ ঘোষণা করা হল যে ১০ দিনের মধ্যে ১০০ জনকে গুছিয়ে কামড়ালে, আপনি ১ লক্ষ টাকা পাবেন।

    শিল্পসংস্কৃতি-সিনেমা মানুষের জীবনে একটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে – এ আর নতুন কথা কী? তাই না?

    তবে আপনি যদি ‘কামড় আর শিল্পকে’ অভিনবভাবে একত্রিত করতে পারেন, দারুণ ঝলমলে ভাবে মেশাতে পারেন, অনেকটা ঐ ক্রিকেট, রাজনীতি আর মুম্বাই ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিকে, আই পি এল এর মতো, তাহলে কিন্তু এমন রোজগার হবে যে আপনি ভাবতেও পারছেন না। সিরিয়াসলি!  

    আমরা যারা কিঞ্চিৎ লেখালেখি করার চেষ্টা করি, তারা নানান অভিনব বিষয় তুলে ধরে মানুষ তথা পাঠক সমাজকে আলোড়িত বা আন্দোলিত করার চেষ্টা করি।

    তার মধ্যে বিষয় হিসেবে যেমন থাকে লৌকিক, তেমনই আছে অলৌকিক বিষয়পত্তর।

    তবে আজকাল এই অলৌ-কিকের ‘কিক’ আমরা কিন্তু ভালোই টের পাচ্ছি।

    গতবার ভূতপ্রেতের কথা লিখেছিলাম, আজ বলবো অতিপ্রাকৃত প্রাণীদের কথা। আমাদের বাংলায় ইদানীং ভূতপ্রেত থেকে শুরু করে তন্ত্র, ডার্ক ফ্যান্টাসি, অতিপ্রাকৃত প্রাণী ইত্যাদি গল্পের রমরমা বাজার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেক লেখক নেমে পড়েছেন এই তালে।

    মুশকিল হয়েছে শিশু কিশোরদের জন্য বাস্তবোচিত গল্পের এখন বড়ই অভাব।    

    যা বলছিলাম, প্রথমে ব্রাম স্টোকারের কথাই ধরা যাক। ধরা যাক তার সৃষ্ট চরিত্র ড্রাকুলার কথা। ‘কাউন্ট ড্রাকুলা’!

    ড্রাকুলা নামটি, যা বর্তমানে মূলত ভ্যাম্পায়ার নামে পরিচিত, বহু শতাব্দী ধরে সেটি ভ্লাদ তৃতীয়ের উপাধি হিসেবে পরিচিত ছিল। এই ভ্লাদ সাধারণত ‘ভ্লাদ দ্য ইম্প্যালার’ নামে ইতিহাসে কুখ্যাত। ইম্প্যালার শব্দটির অর্থ শূল বিদ্ধকারী বা বর্শা বিদ্ধকারী অর্থাৎ যিনি অপরকে শূলে চড়ান বা বর্শা ছুঁড়ে নিহত বা আহত করেন! 

    একটা সময় কিছু দেশে এমন সব আম্পায়ার ছিলেন, ঠিক যেন ঐ ভ্যাম্পায়ারের মতো। তখন ক্রিকেটে ঐ তৃতীয় আম্পায়ার বা এতো ভিডিও টেকনোলোজি ছিল না। খেলাও হত কম। আর সেই সুযোগে ভ্যাম্পায়ারদের মতোই সেইসব ‘বেনামধন্য’ আম্পায়ারেরা প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের এল বি ডবলু আউট দিয়ে দিয়ে নিজের দেশকে জেতানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতেন। কোথাও কোথাও সফলও হতেন তারা। সঙ্গে আবার পকেটও ভরাতেন।

    টিনটিন-এ আমরা সিলদাভিয়া বলে একটি দেশের কথা জেনেছিলাম। ‘অটোকারের রাজদন্ড’। আমার কেন জানি মনে হয় ওয়ালাচিয়া বা মলদোভিয়া বা রোমানিয়া – এর মধ্যেকার কোনও দেশকে হার্জে সিলদাভিয়া বলে উল্লেখ করেছেন। গবেষকরা সঠিক বলতে পারবেন।

    যাই হোক, এই ভ্লাদ ড্রাকুলার বাবার নাম ছিল ভ্লাদ ড্রাকুল! তিনি কি ‘কুল’ খেতেন নাকি রে বাবা! মধ্যযুগীয় রোমানিয়ান ভাষায় ড্রাকুলের অর্থ ড্রাগন।

    যেমন ‘বেগন স্প্রে’ এর ‘বেগন’ মানে ‘বেগ ইজ অন’, তেমন ড্রাগন মানে কি ‘ড্রাগ ইজ অন’? কারণ পরে এই ড্রাগন ব্যাপারটা আমরা দেখি চিন দেশে, যাদেরকে একসময় ইংরেজরা অফিম খাইয়ে বুঁদ করে রেখেছিল, যা নিয়ে তিনটে যুদ্ধও হয়েছিল। আমরা ইতিহাসে পড়েছিলাম।

    এখন এই কাউন্ট ড্রাকুলার সঙ্গে আরও একটি জায়গার নাম সম্পৃক্ত হয়ে আছে; ‘ট্রান্স সিল্ভানিয়া’। কোনও কোনও ইতিহাসবিদ মনে করেন যে এই শহরেই নাকি জন্ম হয়েছিল এই কুখ্যাত ড্রাকুলার। ট্রান্স সিল্ভানিয়া শহরের একটি প্রাসাদও ছিল তাঁর; মধ্যযুগীয় প্রাসাদ। পরে ১৪৭৭ সালের ১০ জানুয়ারি এক যুদ্ধে এই ভ্লাদ-এর মৃত্যু হয়।

    এদিকে রাশিয়ায় জনপ্রিয় গল্পগুলোতে বলা হয়েছিল যে ভ্লাদ কেবলমাত্র নৃশংস শাস্তি প্রয়োগের মাধ্যমেই তার সরকারকে শক্তিশালী করতে সক্ষম হয়েছিল। ছিল একেবারে চরম ফাশিস্ত! অনেকে দাবি করেন যে এই ড্রাকুলা বহু কয়েদিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে তাদের রক্তমাংসও নাকি ভক্ষণ করতেন!

    আবার অনেকে দাবি করেন যে অটোমান তুর্কিদের হাতে তাকে এবং তার ছোটো ভাই রাদুকে জামানত হিসেবে তার বাবা যখন রেখে এসেছিল, তখন সেই তুর্কিদের অত্যাচারের নৃশংসতার নানান নমুনাই নাকি তাকে শয়তান করে তুলেছিল। তবে তার জীবনও সহজ ছিল না। একদিকে অটোমান তুর্কি আর অন্যদিকে হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, মলদোভিয়া ইত্যাদির শাসকদের মধ্যে স্যান্ডউইচ হতে হয়েছিল তাকে তার সিংহাসন আরোহণের পূর্বে।

    এর অনেক পরে স্কটল্যান্ডের ক্রুডেন বে বলে একটি জায়গার কিল্মার্নক আর্ম হোটেলে অবস্থান কালে আইরিশ লেখক ব্রাম স্টোকার ১৮৯৫ সালে ঐ ‘ভ্লাদ দ্য ইম্প্যালার’ এর ছায়া অবলম্বনে লিখতে শুরু করেন তাঁর বিখ্যাত ‘ড্রাকুলা’ উপন্যাস। ১৮৯০ সালে ইংল্যান্ডের ‘হুইটবি’ বলে একটি উপকূলীয় শহরে থাকাকালীন নাকি তিনি সেখানকার ল্যান্ডস্কেপ দেখে তাঁর ড্রাকুলা উপন্যাস লেখবার অনুপ্রেরণা লাভ করেছিলেন।

    এটি একটি গথিক ঘরানার হরর মিস্ট্রি জঁনরার মেলোড্রামামূলক উপন্যাস। অনেকে মেরি শেলির ফ্র্যাংকেস্টাইন (Frankestein) বা ব্রন্টে সহোদরাদের উদারিং হাইটস (Wuthering heights) পড়েছেন, যা ওই একই ঘরানার।

    তবে শেষোক্ত দুটির প্রথমটি সেইসময় যেখানে কৃত্রিম পদ্ধতিতে প্রাণের উদ্ভবের কথা বলে, সেখানে উদারিং হাইটস নামক রোম্যান্টিক ও প্রতিশোধমূলক উপন্যাসে একজন কুড়িয়ে পাওয়া অনাথ সন্তান যার নাম হীথক্লিফ এবং তাঁর মৃত প্রেমাস্পদ ক্যাথ্রিনের মধ্যেকার সুতীব্র প্রেমের কাহিনীর এক অশরীরী উপাখ্যান বর্ণনা করে । বর্ণনা করে তাদের জীবনের ট্র্যাজেডির কথা যা তাদের পরবর্তী প্রজন্মেও বয়ে চলে। বর্ণনা করে শরীরীর সঙ্গে অশরীরির প্রেম!   
                     
    তবে ব্রাম স্টোকার তাঁর ড্রাকুলার মধ্যে ভরে দিলেন এমন এক মোডাস অপারেন্ডি যেখানে এই নরপিশাচ দিনের বেলা শুয়ে থাকে তার ঐ প্রাসাদের কফিনের মধ্যে, আর রাত হলেই উড়ে বা তার সেবকদের সাহায্যে পৌচ্ছে যেতে পারেন তার রসালো শিকারের কাছে।

    আচ্ছা, এখানে শিকার কারা?

    ড্রাকুলার শিকার হল যৌন আবেদনময়ী আকর্ষনীয়া মহিলারা। এই ড্রাকুলার চারটি ক্যানাইন-এর প্রত্যেকটিতে আছে ফুটো, যা দিয়ে সে তার অভীষ্ট মহিলার ঘাড়ে কামড় মেরে চোঁ করে টেনে নিতে পারে রক্ত এবং সেই মহিলাকে পরিণত করতে পারে নরপিশাচিনীতে। এইবার এই উপন্যাসে ড্রাকুলার সঙ্গে শুরু হয় মানুষের এক অভিনব গেরিলা যুদ্ধ। শেষে অবশ্য ড্রাকুলাকে কীভাবে মারা হবে সেটাও ব্রাম স্টোকার দেখিয়ে গেছেন।  
     
               
    এখন, যৌন আবেদনময়ী আকর্ষনীয়া মহিলা কেন? বুঝতেই পারছেন যে যৌন হড়হড়ে ব্যাপারটাকে তুলে ধরবার জন্য।

    না। যৌনতা নিয়ে আমার কোনও ঢাক ঢাক গুড়গুড় নেই। যৌনতাকে অস্বীকার করা মানে নিজেদেরকে অস্বীকার করা। এখানে অনেক সিনেমার নাম লিখতে পারি যেখানে যৌনতাকে একেবারেই শিখণ্ডী করা হয় নি।

    কিন্তু কামড় মেরে রক্ত চোষাই যদি ড্রাকুলার আসল উদ্দেশ্য হবে তাহলে সেটা সরাসরিই করা ভালো ছিল না? এ যেন যৌনতা বা জোর করে যৌনতা করতে করতে হঠাৎ ড্রাকুলার মনে পড়ল, আরে! কামড় মারতে হবে তো! ইসস! দ্যাখ তো, একেবারেই ভুলে মেরে দিয়েছিলাম গো! বলে তারপর তিনি কামড় মারলেন।

    এ যেন অনেকটা জেলায় জেলায় বইমেলার আড়ালে, বইমেলাকে শিখন্ডি করে একটা বাৎসরিক মোচ্ছবের আয়োজন। বইমেলার নামে লাচ-গান-খাদ্য আর ধান্দা!

    জেলায় জেলায় আরও বেশি বেশি করে বইমেলা হোক আমিও চাই; তবে সেটা যেন শুধু বইমেলাই হয়। এলাকার মানুষকে পাঠকে রূপান্তরিত করতে না পারলে, মানুষের গুণগত পরিবর্তন না করতে পারলে, তাদের মধ্যে বই পড়ার আনন্দকে চাড়িয়ে দিতে না পারলে, কীসের বইমেলা?

    গত ১৫/২০ বছর ধরে জেলায় জেলায় বইমেলা গুলিতে হয়ত কিছু বই বিক্রি হচ্ছে একথা সত্যি, কিন্তু পাঠক বাড়ছে কি? আর এলাকায় এলাকার পাঠক বাড়লে সেই সেই এলাকার লাইব্রেরী গুলো অমন খাঁ খাঁ করে কেন? সবাই কি বই কিনে কিনেই পড়ছেন, নাকি?

    মানে পাঠকদের হাতে এতো এতো টাকা চলে এসেছে যে তারা আর লাইব্রেরীতে না গিয়ে, সরাসরি বই কিনে কিনেই পড়ছেন? এটা একটা ভালো মশকরা হতে পারে, তাই না?

    তবে অডিও ফাইল কিন্তু অনেকেই শুনছেন। অর্থাৎ বই পড়ার থেকে বই শোনার প্রতি আগ্রহ কিন্তু বেড়ে চলেছে! কিন্তু তাতে কি সেই মজা পাওয়া যায় বন্ধু?   

    আর বেশিরভাগ স্কুলের কথা কী বলবো! এদিকে প্রায় ৮০০০ এর ওপর স্কুল নাকি তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক স্কুলগুলোতে অপর্যাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাহলে সেখানে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ভালোবেসে সাহিত্য-জ্ঞান-বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় কে করিয়ে দেবে? আর স্কুল পর্যায়ে সাহিত্য-জ্ঞানবিজ্ঞান অনুরাগ তৈরি না হলে, পরর্বর্তীতে (১২ ক্লাসের পর) আদৌ কি হবে?

    আর সরকার যদি ইমাম বা পুরোহিতভাতা দিতে পারেন, তবে পাঠকভাতাও দেওয়া হোক। আমি প্রস্তাব করলাম। পাঠকেরা নিশ্চয়ই বন্যার জলে ভেসে আসেন নি?         

    আবার প্রসঙ্গে ফিরে আসি, এবার যেই সেই ড্রাকুলা উপন্যাস ছায়াছবিতে রূপান্তরিত হতে শুরু করল, সেই আসতে থাকল দেদার অর্থ। ১৯২১ সালের পর থেকে প্রায় ৭০০ থেকে ১০০০ বার ফিল্ম, টেলিভিশন, অ্যানিমেশন আর কমিক্স-এ দেখা গেল ড্রাকুলাকে।

    আর যে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ক ড্রাকুলা এখনও পর্যন্ত ভালো করে কামড় দিতে পারেন না তাদেরকে ড্রাকুলা সমাজে কী বলা হয় বলুন তো?

    তাদেরকে বলা হয় ‘ড্রা-কুলাঙ্গার’! 

    এদিকে মেরি শেলির ফ্র্যাংকেস্টাইন (Frankestein) বা ব্রন্টে সহোদরাদের উদারিং হাইটসও (Wuthering heights) কিন্তু ছায়াছবি হয়েছে, কিন্তু ড্রাকুলার মতো সে দুটিকে নিয়ে মেতে ওঠেনি মানুষ।

    আমাদের বাংলায় কিন্তু ‘নিশিতৃষ্ণা’ নামে একটি ছায়াছবি হয়েছিল যেখানে ঠিক সেই ড্রাকুলা বা নরপিশাচের মতো কর্মকান্ড দেখানো হয়েছে। উৎসাহীরা দেখতে পারেন। তবে সে সিনেমা চলেনি বলেই জানি।       

    অপরদিকে আমরা বেশ কিছু সুপার হিরোর কথা জানি যাদের অস্তিত্ব আছে কেবলমাত্র গল্পে। এরা সব কাল্পনিক। তার মধ্যে একজন হলেন স্পাইডারম্যান।

    এই স্পাইডারম্যান হল অ্যামেরিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় সুপার হিরো। পিটার পার্কার নামের একজন অনাথ, যিনি বেড়ে উঠছেন তার কাকা বেন এবং কাকীমা/পিসির ঘরে, তিনি একদিন স্কুলেরই এক প্রদর্শনীতে এক তেজস্ক্রিয় মাকড়সার কামড়ে হয়ে উঠলেন মাকড়সার মতোই নানান অতিমানবীয় গুণের অধিকারী!

    উঁচু উঁচু দেওয়াল বেয়ে ওঠা বা নামা হয়ে গেল তাঁর কাছে নস্যি। সে তাঁর কব্জি থেকে একধরণের আঠালো তন্তু ছুঁড়ে দিয়ে বহুতল বা অতি উঁচু বস্তুতে সেই ছুঁড়ে দেওয়া তন্তু আটকে দোল খেতে খেতে নিমেষে অতিক্রম করতে পারত ক্রোশ ক্রোশ দূরত্ব। সঙ্গে তার স্পাইডার সেন্সও কাজ করতে থাকল।

    তিনি একটি কাগজের অফিসে কাজ ধরলেন এবং শহরের নানান ক্রিমিনালকে ধরে নিয়ে জমা করে দিতে থাকলেন পুলিশের হেফাজতে, যাদেরকে পুলিশেরা কিছুতেই ধরতে পারছিলেন না! অর্থাৎ জনসেবামূলক কাজে স্পাইডারম্যান তাঁর স্পাইডার শক্তিকে কাজে লাগালেন।   

    এখানেও সেই কামড়! এক তেজস্ক্রিয় মাকড়সার কামড়! ১৯৬২ সালে ফ্যান্টাসটিক ফোরের সাফল্যের পর মারভেল কমিক্স-এর সম্পাদক ও প্রধান লেখক স্ট্যান লি টিন এজারদের উদ্বুদ্ধ করবার জন্য নিয়ে এলেন এই স্পাইডারম্যানকে।

    আর সেই কমিকস, কার্টুন আর তার পরবর্তীতে তৈরি ছায়াছবি যে কী পরিমাণ টাকা প্রযোজকদের ঘরে তুলে দিল, সেটা বলাই বাহুল্য। আমি নিজে স্পাইডারম্যান প্রথম দেখি কার্টুনে।  

    এরপর এই কামড়কে টাকা বানানোর এক অনন্য উপায় করে আমাদের মানসিক ধরাধামে অবতীর্ণ হচ্ছেন ওয়েরউলফ।

    একটা বিষয় আপনারা নিশ্চয়ই জানেন বা বুঝতে পারছেন যে লোককথা বা উপকথা ইত্যাদি থেকেই মালমসলা জোগাড় করে এবং সঙ্গে নিজের মনের মাধুরী (দীক্ষিত নয়) মিশিয়ে কিন্তু এইসব কাহিনীর অবতারণা করা হয়েছে। অনেক লেখক-লেখিকা কিন্তু এভাবেই নানান উপাখ্যান লিখে গেছেন।

    ঠিক সেইরকম মধ্য এবং পূর্ব ইওরোপ, যার মধ্যে রয়েছে হাঙ্গেরি, রোমানিয়া এবং সমস্ত বল্কান অঞ্চল সঙ্গে ফ্রান্স, জার্মানি বা বল্টিক অঞ্চল ইত্যাদির নানান লোককথা ও উপকথার নানান ধারার মিলনেই তৈরি হয়েছে এই ওয়েরউলফ।

    গ্রীক মিথোলজিতে সর্বপ্রথম যে ওয়েরউলফ এর নাম পাওয়া যায় তিনি হলেন রাজা লাইকাওন। তার নাম এতো জনপ্রিয় যে লাইক্যান্থ্রপি নামে একটা নতুন শব্দের উদ্ভব হয়েছে যার অর্থ হল একটি এমন অতিলৌকিক অবস্থা যা ওয়েরউলফ এর জন্ম দেয়!

    পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে পেলাসগাস-এর পুত্র লাইকাওন একদিন দেবতা জিউসকে তার খাবার খাওয়ার সময়ে একজন উৎসর্গীকৃত বালকের দেহাবশেষ খেতে দিয়েছিল, যার শাস্তি স্বরূপ জিউস লাইকাওস আর তার পুত্রদের চিরতরে ওয়েরউলফ করে দেন! লাও ঠেলা।

    ধরুন খেতে ডেকে কেউ আপনাকে পচা মাংস খেতে দিলো। রাগ তো হবেই। ফুড পয়জনও হতে পারে। ডায়রিয়া; স্যালাইন ইত্যাদি। আপনি নালিশ জানাতে পারেন। কিন্তু কাউকে অভিশাপ দিয়ে কি কোনও প্রাণীতে পরিণত করতে পারবেন? আজ থেকে ট্রাই করে দেখতে পারেন। যদি পারেন তাহলে… আর কী বলবো!

    এক সময় গ্রামে গ্রামে একঘরে করে দেওয়া বা ডাইনী অপবাদে পুড়িয়ে মারার ঘটনার অনেক নারকীয় বিবরণ কিন্তু আমরা কাগজে পড়েছিলাম। কি? মনে পড়ছে?

    আসলে অপবাদ দিয়ে দিয়ে কারুর ওপর নিজের ব্যাক্তিগত রাগ বা ঝাল মেটানোর এই যে প্রক্রিয়া তা কিন্তু প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। যারা যারা এই অপবাদের শিকার হয়েছেন ব্যাপারটা তাঁরা তারাই উপলব্ধি করতে পারবেন।    

    এখন উপকথা বা লোককথা অনুযায়ী ওয়েরউলফ যদি আপনাকে কামড় দেয় তাহলে তার ঠিক পরের পূর্ণিমাতে আপনিও কিন্তু ওয়েরউলফ-এ পরিণত হবেন! আঁচড় দিলেও হবেন! কামড় আর আঁচড়! ভাভাগো!  

    কামড়ের কী মহিমা বাওবা!

    এরপরে অবশ্য ‘জম্বি’, ‘ঘাউল’ ইত্যাদি আমদানি করা হল বাজারে। তারও আগে এসেছিল সিনেমা, যেখানে দুঃস্বপ্ন সত্যি হয়ে যাচ্ছিল! ‘নাইটমেয়ার ইন দ্য এল্ম স্ট্রীট’।

    রামসে ব্রাদার্সের পরে যে ভাট-এরা (মহেশ ভাট এবং তাঁর উত্তরসুরীরা) ভূত নিয়ে মার্কেটে নেমে পড়েছিলেন, তেমনও তারা নেমে পড়েছিল এই অতিপ্রাকৃত প্রাণীদের নিয়ে। অনেকের ‘জুনুন’ বলে একটি ছায়াছবির কথা নিশ্চয়ই মনে আছে? যেখানে একজন মানুষ এক বাঘের দ্বারা অভিশপ্ত হয়ে পরিণত হন বাঘে! তারপর তিনি যাকেই কামড়ান (সিনেমার অ্যান্টাগনিস্ট) সেও তার পরের পূর্ণিমায় পরিণত হয় বাঘে! তারপর তার দ্বারা ঘটতে থাকে নানান অপকীর্তি!

    ভাভা যায়! বাঘ অভিশাপ দিয়ে মানুষকে বাঘে পরিণত করছে! আবার সেই বাঘ রূপী মানুষ অপর একজন মানুষকে কামড়াছে, যে নাকি পরে পরিণত হছে এক খুনে বাঘে! ভাভাগো! 

    বলাই বাহুল্য যে এইসব প্লট অ্যামেরিকান সিনেমা থেকেই সব আমদানীকৃত। তবে সেসব ততোটা জনপ্রিয়তা পায় নি বলেই জানি। পাঠকেরা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

    পরে অবশ্য ভাট-এরা এইসব অতিপ্রাকৃত প্রাণীদের ছেড়ে দিয়ে উচ্চফলনশীল মানে আরও টাকা উৎপাদন করবে এমন প্রোজেক্ট মানে ভূত সংক্রান্ত সিনেমাই উৎপাদন করতে থাকেন।

    তবে আমরা অনেক মানুষেরা কিন্তু ঐ জম্বি প্রকৃতির। 

    তাহলে আমরা দেখলাম যে এই কামড় নিয়ে উপন্যাস এবং তৎসংক্রান্ত রূপান্তর আর সেই নিয়ে ছায়াছবি বা কমিক্স-এর কিন্তু বাজারে একটা দারুণ দারুণ চাহিদা আছে। কেন?

    চূড়ান্ত নিরক্ষর, অশিক্ষিত, কুশিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত চেতনাহীন অতিলৌকিক অলৌকিক বুভুক্ষু জনতা লজিক মানতে চান না। ফলে এরাই আসলে এই বাজারের মূল অংশ। তারপর সঙ্গে আরও কিছু শিক্ষিত দর্শক বা পাঠকও যায় পাওয়া যাদের মধ্যে আছে চেতনার অভাব।

    আমাদের দেশ তথা বাংলায়ও কিন্তু ওয়েব সিরিজ বা ছায়াছবিতে এইসব শুরু হয়ে গেছে।

    তবে এই বিষয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে Maddock Horror Comedy Universe.

    আপনারা নিশ্চয়ই এতদিনে স্ত্রী সিরিজ, ভেড়িয়া, মুঞ্জা, থাম্মা ইত্যাদি দেখেও ফেলেছেন। এবং জেনে রাখুন এই সংস্থার আগামী সমস্ত সিনেমার উপজীব্য হল এইধরনের অতিলৌকিকতা। ভাবা যায়! রামসে ব্রাদার্সরা যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকে যেন শুরু করলেন এরা।

    যদিও মাঝে আমীর খান, সুজিত সরকার প্রমূখরা অন্য ধারার গল্প হিন্দি সিনেমায় এনে মুম্বাই ফিল্মের গ্যাদগ্যাদে পানাপুকুর অনেকটা সাফ করে ফেলছিলেন। আর তার সেই ঘরানার স্পিরিট ধরেই তৈরি হয়েছিল লাপতা লেডিজ, টুয়েলফথ ফেইল, নীল বাটে সান্নাটার মতো ইত্যাদি সিনেমা। হয়ত আরও হবে, কিন্তু সেসব হারিয়ে যাবে এইসব অতিপ্রাকৃত কুসংস্কার অভিমূখী দানবীয় সিনেমার চোখ ঝলসানো দাপটে।

    যদিও স্ত্রী-১ এবং ভেরিয়া-১ এ কিছু ইতিবাচক বার্তা আছে। তবে আমাদের দেশের দর্শক তো? সেসব বেমালুম হজম করে ফেলবেন যেমন হজম করে এসেছেন এতদিন।

    এবার ধরুন, ডিসেম্বরের এক কুয়াশার রাত। রাতটা কেমন? এলিয়ট থেকেই তার বর্ণনা নেওয়া যাক। যদিও এলিয়টের কবিতায় অক্টোবরের কথা এসেছে, তবে আমাদের বঙ্গে ডিসেম্বর আর জানুয়ারীতেই কেবল এমন শীতের রাত দেখা যায়।

    “The yellow fog that rubs its back upon the window-panes,
    The yellow smoke that rubs its muzzle on the window-panes,
    Licked its tongue into the corners of the evening,
    Lingered upon the pools that stand in drains,
    Let fall upon its back the soot that falls from the chimneys,
    Slipped by the terrace, made a sudden leap, and seeing that it was a soft October night,
    Curled once about the house, and fell asleep”.

     
    আর ঠিক এইরকম একটা কুয়াশাছন্ন রাতে ব্রজদার ছাদের ওপর আড্ডা হচ্ছে। ছাদটা যদিও ঘেরা। জায়গাটা বাঁকুড়ায়। এখানে একটা বাড়ি কিনে ইদানীং হোম স্টে হিসেবে ভাড়া দিচ্ছেন উনি। তা ব্রজদার নিমন্ত্রণে এখানে বেড়াতে এসেছেন টেনিদা, সিনিয়ার আর জুনিয়ার সুপারভাইজার মহাশয়। ছাদে বসে পান ভোজন চলছে আর আলোচনা হচ্ছে কামড় এবং সেখান থেকে টাকা রোজগারের উপায়ের।

    ব্রজদা বলে উঠলেন, “আমার প্রথম সিনেমা, হিপি হিপি লাভ, ওটা তো রিলিজই করতে দিল না। ভাবছি এইবার কামড় নিয়ে একটা সিনেমা বানাবো”।

    “কামড়?”, জুনিয়ার বললেন। “কী রকম?”

    “আমার একটা কবতে, ইয়ে ছড়া জুড়ে দেবেন…”, এবার বললেন সিনিয়ার।

    “কী?”, ব্রজদা তার গ্লাস শেষ করে আবার ভর্তি করে নিলেন।

    “ওরে পামর / যদি দিয়েছিস তুই কামড় / তবে তুলে নেবো তোর পিঠের চামড়”।

    “ধ্যাত। প্ল্যানটা শোনো। গল্পে একজন মহিলা পর্বতারোহী একটা এক্সপিডিশনে গিয়ে ইয়েতির কামড় খাবে…”

    “ইয়েতির!”

    “হ্যাঁ। সে অবশ্য বুঝতে পারবে না। কারণ ইয়েতিকে দেখেই ভদ্রমহিলা, ফ্ল্যাট। তবে সেই ইয়েতি তাকে কামড় যেমন মারবে, তেমনই মহিলা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পর তাকে দিয়ে আসবে বেস ক্যাম্পে”।

    “বলো কী হে? তারপর?”

    “জ্ঞান হওয়ার পর মহিলা তো বুঝতেই পারবেন না যে তাকে ইয়েতি কামড়েছে। ভাব্বেন বুঝি চোট পেয়েছেন বা ভাল্লুকে…। যাই হোক, ক্যাম্পে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে বাড়ি ফিরেও চিকিৎসা করাবেন। কিন্তু সামনের অমাবস্যায়! …হ্যাঁ, উনি ইয়েতিতে পরিণত হবেন…”

    “সেকী!”

    “হ্যাঁ। আর তারপর যাকেই উনি পাছায় কামড় মারবেন, সেইই ইয়েতি হয়ে যাবে…”

    “আরে! দেশটা তো ইয়েতিতে ভরে যাবে…”

    “একদম না। সেখানেও টুইস্ট রেখেছি। যদি কেউ ভয় না পেয়ে কোনও এক অমাবস্যার রাতে তাকে বই উপহার দেয়, তবে তাঁর ইয়েতিত্ব বিলোপ ঘটবে…”

    “কী বই? কোন ভাষায়?”

    “ওসব বই ফই লোকে খাবে না দাদা”, টেনিদা সিপ মারছিলেন আর ফেবু করছিলেন। বললেন, “অন্য কিছু…, হ্যাঁ, তাকে যদি অমাবস্যার রাতে চুপিচুপি ‘Ye’ লেখা টি-শার্ট পরিয়ে দেওয়া যায়, তাহলেই…”

    “তুমি না একটা হাম্বাগোম্বা মোম্বাবোম্বা টোম্বাঝোম্বা!”, বললেন সিনিয়ার। তারপর ব্রজদাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “ব্যাপারটা এইরকম রাখুন। কামড় খেয়ে ইয়েতি বনে যাওয়া মানুষটিকে অমাবস্যার রাতে কানে কানে বলা হবে যে বেশি বেশি ইয়েতিগিরি করলে, ওকে বাড়িতে, রাস্তায় মানে যেখানে সেখানে মানে যত্রতত্র একজনের গান আর কবিতা কানের সামনে ২৪ ঘন্টা আওড়ানো হবে”।

    “কার গান! কার কবিতা!”, টেনিদা থাকতে না পেরে জানতে চাইলেন।

    “সর্বজ্ঞানী বিন্দুপিসি! ঐ গানটা শোনেন নি?”।

    “কোনটা?”

    “শুধু তুমি নয় অবলাকান্ত, অনেকের বলার সময় খেয়াল থাকে না…”  

    “আমি বুঝে গেছি। দারুণ! এটা আমি লিখে নিলাম”, ব্রজদা খানিকটা চাট খেলেন।

    “আমারও না, খুব ইচ্ছে করত, জানেন? যদি কেউ আমাকে কামড়ে দিত! আহা!”, সিনিয়ার সুপারভাইজার মুখ বেঁকিয়ে বললেন। “ধরুন, এইচ জি ওয়েলস এর সেই দ্য ইনভিজিবল ম্যান। আমাকে কামড় মারল, আর আমিও সঙ্গে সঙ্গে ভ্যানিশ…। ব্যাস। তারপর খেল যা দেখাবো না…”

    “বৌদি জানতে পারলে কিন্তু আস্ত রাখবে না”। জুনিয়ার বললেন।

    “ধ্যাত! কোথায় এইচ জি ওয়েলস, আর কোথায় তোমার বৌদি…। মুডটাই একেবারে অফ করে দিলে…। যাও, নীচ থেকে মাছ ভেজে নিয়ে এসো।”

    টেনিদা আরেক বার গ্লাস ভরে নিয়ে একটা দীর্ঘ সিপ মেরে বললেন, “এই আপনাদের না ভিশনটা খুব নিচু। Too cheap. ইয়েতি, ইনভিজিবল ম্যান…। ফেলে দিন। ফেলে দিন। আর একবার একজন হিপির ছবি তুলতে গিয়ে ইয়েতির সঙ্গে যেভাবে ধাক্কা খেয়েছিলুম…উফফ!”

    “আপনারটা বলুন…”

    “দেখুন, আমি কিন্তু ঐ সিনেমা, টিনেমা কমিকস…, মানে শিল্প টিল্পতে নেই। একদম রিয়েল একজনের সন্ধানে বসে রয়েছি…”

    “কে? উর্বসী রওতেলা? নাকি অ্যাল্বা ব্যাপ্টিস্টা? নাকি তামান্না ভাটিয়া?”

    “আরে ধুর মশাই। আমি বসে আছি এলিয়েনের কামড় খাওয়ার জন্য…”

    “এলিয়েন? নতুন কোনও অ্যাক্ট্রেস?”

    “মাথা মোটা নাকি? এলিয়েন হল মহাজাগতিক প্রাণী। যারা রয়েছেন অন্য কোনও সৌরজগতে…”

    “ইয়ে মানে, এলিয়েন কামড়ালে কী হবে ভাই?”, ব্রজদা জানতে চাইলেন।

    “হু হু বাওবা! কামড়ালে এলিয়েন / আপনি পেয়ে যাবেন বিলিয়ন; ট্রিলিয়ন। আমি ওদের মতো হয়ে যাবো। কী মজা!”।

    “তো?”

    “তো? নিমেষের মধ্যে মহাকাশে, অন্য সৌরজগতে চলে যাবো। ভাবুন একবার! স্পেস রিসার্চের সব টেন্ডার তখন আমার হাতে। নিমেষের মধ্যে মালপত্র থেকে শুরু করে অ্যাস্ট্রোনটদের চ্যাংদোলা করে হেইয়ো বলে তুলে নিয়ে গিয়ে রেখে আসব স্পেস ষ্টেশন থেকে শুরু করে মঙ্গল, বৃহস্পতি, নেপচুন, তারপর অ্যান্দ্রোমিডাতে। স্যাক করে যাবো আর চ্যাক করে ফিরে আসব। অঢেল টাকা কামাবো আর তাহলেই পেয়ে যাবো আমার প্রেয়সীকে…। তবে তার আগে অবশ্য এলিয়েনদের কলোনিতে গিয়ে সবার মুখ গাম দিয়ে আটকে দিয়ে আসবো”।

    “কেন? কেন?”

    “তা না হলে ওরা যদি আবার অন্য কাউকে কামড় মারে! তাহলে তো আমার মনোপলি গন ফট!”

    “ওমা! তা কে সেই ভাগ্যবতী?”

    “ইলন মাক্সের বোন; ঝুলন মাক্স। কী দেমাক। না জানি তোর দাদা স্পেস এক্স বলে কোম্পানি খুলেছে। একবার এলিয়েন আমাকে কামড়াক। ঐ কোম্পানি আমি ফটাফট কিনে নেবো…”

    “কিন্তু এই এলিয়েন পাওয়া যাবে কীভাবে? রেশনের দোকানে তো আর এলিয়েন, কালোবাজারেও বিক্রি হচ্ছে না। মানে আমিও ভাবছিলাম যে সুপারভাইজারগিরি আর ভালো লাগছে না…”, সিনিয়ার বললেন।

    “এখান থেকে আমার কাকার বাড়ি ১০ কিলোমিটার দূরে। যাবেন নাকি? সেখানে ছাদে রেডিও টেলিস্কোপটা বসিয়েছি। ওটা দিয়েই ধরবো…। প্রথমে রেডিও সিগন্যাল। আর তারপর এলিয়েন!”

    “রেডিও টেলিস্কোপ! সে তো মেলা খরচ! তারপর পারমিরশন! একটা দক্ষযজ্ঞ ব্যাপার!”

    “কিন্তু এতো রাতে, ঠাণ্ডার মধ্যে সাইকেল চালিয়ে গেলে, এই নেশা ফেটে যাবে যে?”, ব্রজদা গজগজ করতে থাকলেন।

    “চলুন না, ব্রজদা…”, সিনিয়ার বললেন। সঙ্গে সঙ্গত করলেন নীচ থেকে ভাজা মাছ নিয়ে আসা জুনিয়ার। ওরা দারুণ চেগে গেছেন।

    অগত্যা তারা চারটে সাইকেল জোগাড় করে রওনা হলেন টেনির কাকার বাড়ির দিকে। যেতে যেতে টেনিদা বললেন, “আমার কাকা সন্ধ্যেরাতের দিকে আবার আফিম, গাঁজা – টেনে থাকেন। ওর সঙ্গে বেশি কথা বলবেন না”।

    “আপনার কাকার নাম কি?”

    “কমলাকান্ত!”

    যাইহোক সেই রাতে হাঁপাতে হাঁপাতে সাইকেল চালিয়ে ওরা কমলার বাড়িতে এসে উপস্থিত হল। দেখল বাড়ির মনিব, কাজের লোক – সব কেমন যেন ঝিমোচ্ছে। দৃষ্টি ঘোলাটে ঘোলাটে! ব্রজদা ভাবলেন যে এরা আবার জম্বি নয়তো?

    সদর দরজা খুলেই একজন ভৃত্য জড়ানো গলায় বলল, “দাবাবু, একডা এলিন ধরা পড়চে। এই মাত্তর! কাকার ঘরে আটকে রেয়েচি…”

    দুদ্দার করে ওরা সবাই কমলার ঘরে গেলেন। ওদের দেখে কমলা তাঁর আরাম কেদারায় বসে কল্কেতে একটা টান মেরে বললেন, “অহো! আজ বড় আনন্দের দিন। কিয়ৎক্ষন পূর্বে এক এলিন ধরা পড়িয়াছে। ছাদে আসিয়া তিনি নাকি দূরবীন নিরীক্ষণ করিতেছিলেন। তৎকালে পাতা ফাঁদে পড়িয়া… উফফ! সে কী আর্তনাদ! প্রসন্ন পর্যন্ত তাহার বাটি হইতে শুনিয়া আমাকে দূরভাষে বলিল। পরন্তু নীচে আনিয়া মহা ফ্যাসাদ হইয়াছে। শালা আমার চাট খাইয়া শেষ করিয়াছে! পাজি! দুশ্চরিত্র! [এলিয়েনের দিকে তাকিয়ে] তোমাকে কি বাটীতে সহবত শেখায় নাই? ভাবিতেছি উহাকে আগামী কল্য দায়রা সোপর্দ করিব, বদমাশ কাহাকা! পদাঘাত করিয়া মারিয়া ফেলিব!”।

    কিন্তু লোকটাকে ঘেঁটেঘুঁটে জানা গেল যে সে এলিয়েন নয়; সে কাঁদন পরামানিক। টেলিস্কোপ চুরি করতে এসেছিল। কাঁদন অনেক করে অনুনয় কান্নাকাটি করল। শেষে রোজ গাঁজা সাপ্লাইয়ের শর্তে ওর ভিডিও তুলে ওকে ছেড়ে দেওয়া হল। এইসব করতে করতে আরও একঘন্টা গেল বেরিয়ে। ওদিকে ব্রজদা, সিনিয়ার আর জুনিয়ারের তো তর আর সইছিল না। রেডিও টেলিস্কোপটা দেখবার জন্য ওদের প্রাণ হাঁকুপাঁকু করছিল।   

    কমলা ওদেরকে দেখে বললেন, “আহা! তোমাদিগকে অবলোকন করিয়া, কী যে ইয়ে হইতেয়াছে। তা এক ছিলিম হইবে নাকি? আরে! লজ্জা কী?”

    অনিচ্ছা সত্ত্বেও ওরা কয়েক ছিলিম টানলেন। তারপর গুটিগুটি পায়ে উঠে গেলেন ছাদে। ছাদের দরজাটা আস্তে করে রিমোট দিয়ে খুললেন টেনিদা। বললেন, “সাবধানে। ট্র্যাপ আছে…”

    ব্রজ, সিনিয়ার আর জুনিয়ার সাবধানে এগিয়ে গিয়ে টর্চ জ্বেলে দেখলেন যে একটা ২০০০ টাকার মামুলি টেলিস্কোপের গায়ে একটা পুরনো ট্রানসিস্টর ঝোলানো রয়েছে!

    “এ আবার কেমন তরো রেডিও টেলিস্কোপ?”, ব্রজদা বিরক্ত হয়ে জানতে চাইলেন।

    “কেন? রেডিও আছে। টেলিস্কোপও আছে। রেডিও তে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ধরা পড়লেই টেলিস্কোপে চোখ রেখে ওকে ডিরেক্সন দিয়ে দিয়ে…”

    “শালা! নেশাটাই মাটি করে দিল মাইরি!”।

    আর ঠিক তখনই রেডিওতে এক পুরুষ কণ্ঠ প্রমিত বাংলায় বলে উঠলেন, “আমার নাম ট্রাইপিস্কস। আমি অ্যান্দ্রোমিডার এমসি স্কোয়ার গ্রহের খিখলাং শহরের অনুস্বার (ং) চ্যানেল থেকে বলছি। এখন যে হুলা নৃত্য গানটা পরিবেশন করা হবে তার জন্য অনুরোধ করেছেন স্টিপ্লোকিস গ্রহ থেকে গজাদা, ঘুটঘুটানন্দ আর শেঠ ঢুন্ডুরাম এবং পৃথিবীর থেকে কাউন্ট ড্রাকুলা, স্পাইডারম্যান এবং এক গাদা ওয়েরউলফ!

    গান শুরু হল-

    রিগিরিগিরিগিরিগিরিগিরিগিরিম্বি
    রিগিরিগিরিগিরিগিরিগিরিগিরিম্বি
    রিগিরিগিরিগিরিগিরিগিরিগিরিম্বি

    ভাম্বা ভুম্বুরুভুম্বুরুভুম্বুরু
    ভাম্বা ভুম্বুরুভুম্বুরুভুম্বুরু
    ভাম্বা ভুম্বুরুভুম্বুরুভুম্বুরু
    ভুরু ভুরু ভুম; ভুরু ভুরু ভুম।

    ঘচাং ফুঁ; খাবো তোকে
    ঘচাং ফুঁ; খাবো তোকে
    গিলে গিলে গিলে গিলে গিলে গিলে গিলে গিলে গিলে গিলে গিলে
    খাবো তোকে; ঘচাং ফুঁ!
    ছিঁড়ে ছিঁড়ে;
    ঝলসিয়ে রুটি দিয়ে সাপটে সুপ্টে লেপ্টে লুপ্টে সাপটে সুপ্টে লেপ্টে লুপ্টে
    খাবো তোকে; খাবো তোকে; ঘচাং ফুঁ।

    হিহিহিহিং খাঁটি তেলে ভেজে নেবো মচমচে করে
    হিহিহিহিং শিক কাবাব করে খাবো আজ আমি তোকে
    হিহিহিহিং গুল গুল্লা গুল্গুল গুল্লা; গুল গুল্লা গুল্গুল গুল্লা; গুল গুল্লা গুল্গুল গুল্লা; গুল গুল্লা গুল্গুল গুল্লা; গুল্গুল গুল্লা গুল গুল্লা; গুল গুল্লা গুল্গুল গুল্লা;

    কামড়ে কুমড়ে থেবড়ে থুবড়ে
    কামড়ে কুমড়ে থেবড়ে থুবড়ে
    খাবো তোকে; ঘচাং ফুঁ! …  

    এই শুনে ছাদে চারজনের সে কী নাচ!     
     

    (শেষ)

    পুনশ্চঃ অনেকেই আমাকে বলেছেন যে রানা, নতুন চরিত্র তৈরি না করে এইসব জনপ্রিয় চরিত্র নিয়ে মৌলিক লেখা লেখো কেন? নতুন চরিত্র তৈরি করলেই তো পারো। 
     
    হ্যাঁ, পারতাম। আর নতুন চরিত্র তৈরিও করেছি। উপন্যাস পড়লে জানা যাবে। তবে জনপ্রিয় চরিত্র নিয়ে লেখবার একমাত্র উদ্দেশ্য যাতে ১৩/১৪ বছর বয়স থেকে শুরু করে যেসব ছেলেমেয়েরা বই পড়তে ভালোবাসে, যারা নতুন পাঠক পাঠিকা, তারা যাতে এইসব কালজয়ী চরিত্রগুলোর নাম জেনে নিয়ে সেইসব সৃষ্টির স্বাদ গ্রহণ করে মজা উপভোগ করতে পারে। যদিও এই কয়েকটি চরিত্রের একটি মিল হল যে এরা খুব গুল মারে; সব দারুণ গুলবাজ। এছাড়াও কিন্তু বাংলা সাহিত্যে অনেক মণিমাণিক্য, অনেক চরিত্র আছে।

    আমার ফেবুতে ২৮/০৪/২০২৫ এর পোস্টে এমন কিছু চরিত্রের নাম আমি উল্লেখ করেছি যাদের আমি পড়েছিলাম। দারুণ মজা পেয়েছিলাম। আমি চাই নতুন প্রজন্মের পাঠক পাঠিকারাও যেন সেইসব লেখার আস্বাদ গ্রহণ করেন।   
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৮ নভেম্বর ২০২৫ | ৬০ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    বেলুর - %%
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন