এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  প্রশ্ন

  • ভোগবাদের প্যারাডক্স

    পাপাঙ্গুল লেখকের গ্রাহক হোন
    প্রশ্ন | ২৩ জুন ২০২৫ | ৪০৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৪ জন)
  • কৃবু খবরের কেন্দ্রে আসতেই আবার সেই চিরাচরিত প্রশ্নটা দেখা দিয়েছে। কতজন লোকে এর ফলে চাকরি হারাতে পারে ? এবিষয়ে নানা মুনির নানা মত। কেউ বলছেন সবার চাকরি চলে যাবে , তো কেউ বলছেন আরো চাকরি তৈরী হবে। কিন্তু মূল প্রশ্নটা এখনো চোখে পড়েনি। সেই প্রশ্ন খুবই সোজা। আপনি যদি কিছু বেচতে চান , সেটা টাকা দিয়ে কেনার জন্য ক্রেতা থাকতে হবে। পাঁচ টাকার জিনিস দশটাকায় বিক্রি করলে ক্রেতা পেতে অসুবিধা হবার কথা নয় , কিন্তু সেই জিনিস একশো টাকায় বিক্রি করলে কতজন ক্রেতা পাওয়া যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাহলে যদি এত চাকরি চলে যায় , টাকা খরচ করে চারদিকের এত জিনিস কিনবে কে?
     
    আসলে আধুনিক সভ্যতার 'প্রগতি' বলে যা দাবি করা হয় , সবই মূলত টাকা দিয়ে কেনা অপ্রয়োজনীয় জিনিস। বহু জিনিসই নিত্য প্রয়োজনীয় না। যন্ত্রসভ্যতা মানুষকে অনেক ফাঁকা সময় দিয়েছে। সেই সময় উদ্ভাবনী জিনিস বা চিন্তা ভাবনা করার বদলে কর্পোরেশন ব্যবহার করছে বিজ্ঞাপনের কাজে। ইন্টারনেট এখন শুধুই একটা খোলা বাজার যেখানে সবাই কোনো না কোনো জিনিস বেচছে বা কিনছে। গত দশবছরে সামাজিক মাধ্যমগুলি হয়েছে যাপন দেখানোর জায়গা। মানুষকে চাই শুধু একটি স্ক্রিনের সামনে বসে থাকার জন্য , যেখানে সেইসব সংস্থার মালিকদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলগোরিদম নিজে থেকেই পনেরো সেকেন্ড বাদে বাদে বিজ্ঞাপন দেখাবে। মানুষটিকে শুধু দরকার এইটুকু বার্তা দেবার জন্য যে তুমি তাড়াতাড়ি স্ক্রোল করে নিজের পছন্দ আমাদের জানিয়ে দাও যাতে আমরা আরো অপ্রয়োজনীয় জিনিস তোমাকে বেচতে থাকি। সে ছমাসের দ্রুতগামী ফ্যাশন হোক বা কনজিউমার ইলেকট্রনিকস বা এফএমসিজি। এতে যে বিক্রেতাদের খুব সুবিধা হয়েছে তা নয় , এখন ইন্টারনেটের মুখ বিজ্ঞাপনে এমনভাবে ঢেকে গেছে যে একশো টাকার পণ্যের জন্য তিনশো টাকা বিপণনে খরচ হয়। 
     
    আসল পুঁজিবাদের ধারণা বর্তমানে মৃত। বাজারে 'লেট ক্যাপিটালিজম' বলে একটি শব্দবন্ধ ঘুরে বেড়াচ্ছে যা আসলে পুঁজিবাদের অতৃপ্ত আত্মা। এই তত্ত্বের মূল কথা টাকার বর্তমানে কোনও মূল্য নেই। কারণ ধনকুবেরদের সম্পত্তির পরিমাণ বাজারের ওঠানামার সঙ্গে নির্ধারিত হয়। সমস্ত দেশের সরকার বাজার থেকে ঋণ নিচ্ছে এবং অকাতরে টাকা ছাপাচ্ছে। নব্বইয়ের দশক থেকেই শুরু হয়েছে যে লেট ক্যাপিটালিজম তার মূল লক্ষ্য আর্থিক ভোগবাদের হাতবদল বাড়ানো। কোনোকিছুর উদ্ভাবন বা প্রগতি না। আশির দশকের শেষ থেকে শুরু হয়ে বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতি এক বিরাট বুদ্বুদ , যেখানে ইতিমধ্যেই ২০০০ সালের ডট কম , ২০০৮ সালে আর্থিক বিপর্যয় এবং ২০২০ সালে কোভিডে ক্রমাগত ফেটেছে অথচ একই সঙ্গে আরও বড় আরেকটি বুদ্বুদ গড়ে উঠছে। বর্তমান বুদ্বুদের নাম কৃবু। 
     
    কৃবুর উত্থানের পর কাজের জায়গায় দুটি মূল পরিবর্তন আসতে পারে বলে ধারণা করা যায়। কলেজ থেকে বেরিয়ে অল্পবয়সীরা যে চাকরি পেত , সেগুলির ৮০ শতাংশ আর থাকবে না বলে আশংকা। আর চাকরি রাখার জন্য লোকে কম বেতনেও কাজ চালাতে বাধ্য হবে। মাঝবয়সীদের চাকরি চলে গেলে তারা আর ই এম আই দিতে পারবে না। কিন্তু নবীনতর প্রজন্ম ‘সাবস্ক্রাইব’ অর্থনীতিতে বিশ্বাসী। তাদের কোনোকিছুরই মালিকানা নেই। গান , সিনেমা থেকে ফ্ল্যাটের আসবাব , গাড়ি থেকে মোবাইল সবই ভাড়ায়। উন্নত দেশগুলিতে এখন এরকম অনেকে আঠেরো বয়সের পরেও বাবা মার সঙ্গে থাকছে, যা ওসব দেশে অকল্পনীয়।
     
    সূত্র : আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ২০২৩ সালের রিপোর্ট , কৃবুর সঙ্গে সঙ্গে উন্নত দেশগুলিতে এই সংখ্যা বাড়বে ?
     
    "ক্যারিয়ার" নামের ধারণাটিও শেষ হয়ে এসেছে। এতদিন ছিল , ধরুন আপনি অংকে স্নাতকোত্তর করলেন তারপর একটি বীমা কোম্পানিতে ছমাস কাজের প্রশিক্ষণ হল , আন্ডাররাইটার হিসেবে যোগ দিলেন , তারপর ধাপে ধাপে প্রমোশন পেয়ে একসময় চল্লিশ বছর বাদে বীমা বিশেষজ্ঞ হিসেবে , সেই বীমা কোম্পানির আন্ডাররাইটার ডিরেক্টর হয়ে অবসর নিলেন। সেই সম্ভাবনা এখন খুবই কম। বীমা বিশেষজ্ঞ হবে কৃবু , তাকে চালানোর জন্য আপনাকে উমা পাশ বা বড়জোর স্নাতক হলেই চলবে। উচ্চতর ডিগ্রী বা গবেষণাপত্র বা বহুদিন কাজের অভিজ্ঞতা আপনার থাকতেই পারে কিন্তু এতদিন তার জোরে যে আপনি ছয় অংকের বেতন দাবি করতে পারতেন তা আর পারবেন না। 
     
     
    কিন্তু মধ্যবিত্তদের প্রতি , বা যারা পড়াশুনো করে গাড়িঘোড়া চড়তে চায় তাদের প্রতি ওপরতলার এমন অসূয়ার কারণ কি ? মেগা প্রযুক্তির কোম্পানিগুলি স্বৈরতান্ত্রিক। এদের প্রতিষ্ঠাতারা মূলত সবাই স্বেচ্ছায় কলেজ ড্রপআউট। ফলে তাদের মূল লক্ষ্য অত্যন্ত স্পেশালাইজড যারা প্রচুর বেতন দাবি করে সেই কাজগুলিকে স্বয়ংক্রিয় করার চেষ্টা। ইগোর প্রশ্ন। 
     
    এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অসাম্য নিয়েও কথা বলা যায়। বিশ্ব অসাম্য ল্যাবের রিপোর্ট অনুযায়ী []  সমাজকে আয় এবং সম্পত্তির ভিত্তিতে যদি তিনভাগে ভাগ করা যায় - ১০/৪০/৫০ এই অনুপাতে , তাহলে নিচের গ্রাফটা দেখতে পারেন -
     
    প্রথমবার দেখে অসম্ভব মনে হলেও আয়কর দেবার ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে স্বাধীনতার পর সরকারী কর্মচারী [বক্সওয়ালা] দের কল্যাণে ৪০% মধ্যবিত্তের আয় উচ্চবিত্ত ১০%র থেকে বেশি ছিল। মধ্যবিত্তের স্বর্ণযুগে এই শ্রেণীর আয় সবথেকে বেশি ছিল জরুরি অবস্থার সময় , সম্ভবত লাইসেন্স রাজ ইত্যাদির কল্যাণে। নব্বইয়ের দশকে খোলাবাজার এবং 'শাইনিং ইন্ডিয়া'র কল্যাণে দেখা যাচ্ছে এই শ্রেণীর আয় কমতে শুরু করে। যদিও মাথায় রাখতে হবে এই সময় সরকারি চাকরি কমে বেসরকারি চাকরি ভারতে ক্রমশ বাড়তে শুরু করে, কিন্তু তথ্যানুযায়ী উচ্চবিত্তের আয় যে পরিমাণ বেড়েছে, সে অনুযায়ী মধ্যবিত্তের আয় বাড়েনি। 
     
    আয়করের হিসেব ছাড়াও সম্পত্তির দিকে তাকানো যেতে পারে। স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়েও দেখা যাচ্ছে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত ১৯৮২ পর্যন্ত সমান সমান থাকলেও ১৯৯১ উদারীকরণের পর উচ্চবিত্তের হাতে সম্পদ বাড়তে বাড়তে এখন ~৬০%
     
    অথচ ভারতে অনেক বেশি মানুষের নিজস্ব বাড়ি আছে। ২০১১ জনগণনা অনুযায়ী নিচের ছবিটা দেখা যেতে পারে -
    সূত্র : ২০১১ জনগণনা [2]
     
    দেখা যাচ্ছে বিহার ইত্যাদি কৃষিভিত্তিক জায়গায় প্রায় প্রত্যেকেরই বাড়ি আছে। তুলনায় মেগাশহরকেন্দ্রিক এবং শিল্পভিত্তিক রাজ্যগুলিতে নিজস্ব বাসস্থানের সংখ্যা কম , কারণ অনেকেই ভাড়ায় থাকেন। একইভাবে , রাজ্যপিছু নারীদের হাতে কতটা জমি আছে সেটাও দেখা যেতে পারে। সেখানে পবর অবস্থান ভাল না, মাত্র ~৩ শতাংশ। 
     
    উন্নত দেশগুলিতে এই নিজস্ব বাড়ি থাকার পরিসংখ্যান ভাল না। তার অন্য এক কারণ আছে। উন্নত দেশগুলিতে আছে অভিবাসী ভিত্তিক এক অর্থনীতি। যেখানে বাকিরা পড়তে , কাজ করতে আসবে। এসে সেই দেশে যারা বাড়ির মালিক তাদের বাড়ি ভাড়া দেবে , খরচ চালাতে পড়ার পাশাপাশি কাজ করবে, অনেকসময় দুটো [হাসল]। অভিবাসীদের আয়ের সবই সাদা বা নীল কলারের কাজের ওপর নির্ভরশীল , চাকরি চলে গেলে ফেরত যেতে হবে দেশে বা বেআইনি অধিবাসী হিসেবে লুকিয়ে বেড়ানো। তাদের বাড়ি কিনতে কিনতে কুড়ি তিরিশ বছর। 
     
    বিশ্বের দেশে দেশে জনসংখ্যার ভাড়া বাড়িতে থাকার শতকরা হিসেব। শুধু অভিবাসীরা নন , এমন অনেক দেশ আছে [জাপান ইত্যাদি] যেখানকার ভূমিসন্তানেরাও সারাজীবন ভাড়াবাড়িতে কাটান, সূত্র - [
     
    যুক্তরাষ্ট্রে যেরকম , বহু বাড়ির মালিক আসলে ব্ল্যাকরক , প্রেটিয়াম পার্টনারদের মত বিনিয়োগ সংস্থাগুলি, বিশদে জানতে গেলে এই অন্তর্তদন্ত রিপোর্ট পড়ে দেখতে পারেন [
     
    এই রিপোর্টে একটি চমকপ্রদ তথ্য আছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়ির বিদেশী ক্রেতার মধ্যে ১০ শতাংশ ভারতীয় নাগরিক। এরা কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন না বা চাকরি করেন না। বাড়ি কিনে রেখেছেন। একই রকম ভাবে যেমন কানাডার ভ্যাঙ্কুভারের বড় সংখ্যক বাড়ির মালিক আসলে চীন বা রাশিয়ার ধনকুবেররা। 
     
    যেহেতু ভোগের টাকার জন্য চাকরি প্রয়োজন , তাই চাকরি সম্পৃক্ততা কমানোর জন্য অনেকেই ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকামের কথা বলেন। কিন্তু উন্নত দেশগুলিতে তাও প্রশ্নের মুখে পড়বে কারণ অধিকাংশ কোষাগার ভরে চাকরিরতদের আয়কর এবং তাদের ভোগের ওপর বসানো কর থেকে। এছাড়াও নারী পিছু শিশু জন্মের হার দুইয়ের নিচে নেমে যাবার ফলে বয়স্কদের সংখ্যা এবং অবসরকালীন আর্থিক সহায়তা ইত্যাদি খাতে ব্যয় বৃদ্ধি ইত্যাদি নানা জটিল কারণ আছে। সেখানেও অভিবাসন বন্ধ হয়ে গেলে সমতা বজায় রাখা যাবে না অথচ অভিবাসনের মূল কারণই হল চাকরি পাবার সুবিধা। চাকরি না থাকলে অভিবাসন হবে না। 
     
    ভারতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার নিচের পঞ্চাশ শতাংশকে সাহায্য করার জন্য বহু প্রকল্প চালায়। দারিদ্ররেখা আসলে এক দৈনিক আয়ের সূচক , মাথাপিছু সম্পত্তির সূচক নয়। যারা দিন আনেন দিন খান, সরকার নানা প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়িয়ে বাজার চালু রাখতে চাইছে। কিন্তু এ রাস্তাও সহজ নয়। শুধু প্রকল্পের মাধ্যমে জীবন ধারণ এবং সম্পদশালী হওয়া সম্ভব না। এখনো শিল্পকে এক টাকায় জমি , বিপুল করছাড় এসব দেবার পিছনে মূল কারণ হিসেবে দেখাতেই হয় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের অঙ্ক। এক টাকায় তৈরী অফিসে শুধুই কৃবু কাজ করলে সেসব শিল্পনীতি প্রশ্নের মুখে পড়বে। তাই মূল লক্ষ্য ১০-৪০-৫০ এই অনুপাত বজায় রাখা নয়। নতুন অনুপাত ২০-৮০। যেখানে ওপরের স্তরের ২০ শতাংশের জন্য নিচের স্তরের ৮০ শতাংশ কাজ করবে। এই কুড়ি শতাংশ মূল ভোক্তা , যারা বাজার সচল রাখবে। এতদিন নিচের পঞ্চাশ শতাংশ যে শিক্ষাব্যবস্থায় ওপরের ৪০ শতাংশে উঠতে পারত , সেই সুযোগ আর থাকবেনা। 
     
    অর্থাৎ নিজের স্বার্থের প্রয়োজনেই নতুন পুঁজির লক্ষ হবে কিছু লোককে চাকরি দেওয়া। তারাই চাহিদা তৈরী করে বাজারে নকল ভারসাম্য বজায় রাখবে। এই নতুন পুঁজিবাদ এক অতিকায় দানবীয় যন্ত্র , যার জ্বালানির জন্যই মানুষকে দরকার। নাহলে দেড় লাখের আইফোন বা কুড়ি হাজারের নাইকি এয়ার জর্ডান কে কিনবে ?  প্যারাডক্সটি এখানেই লুকিয়ে কারণ জঞ্জাল বেচতে না পারলে কোম্পানিগুলি লাভ করবে কি করে? আর লাভ যদি না করতে পারে , লোককে চাকরি বা বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দেবে কি করে ? আর চাকরি না দিতে পারলে জঞ্জাল বেচবে কি করে?
     
    নতুন পুঁজিবাদ আসলে প্রাচীন পৃথিবীর অরোবরোস , সেই সাপ যা অনবরত ল্যাজ থেকে নিজেকেই খেয়ে চলেছে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • প্রশ্ন | ২৩ জুন ২০২৫ | ৪০৭ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    লাল রঙ - Nirmalya Nag
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Aditi Dasgupta | ২৩ জুন ২০২৫ ০৮:৫৫732138
  • পৌনপুনিক সংকটে আমরা নেচে বেড়াবো ,কিনে বেড়াবো,নিজেদের দেখিয়ে বেড়াবো!  বেঁচে আর বোধ হয় থাকবোনা!  বাজারের সবজি জীবন!
  • | ২৩ জুন ২০২৫ ২১:১১732151
  • ভারী ইন্টারেস্টিং ডেটাগুলো।  ভারতে মেয়েদের হাতে দৃশ্যত যেটুকু জমি আছে তার কতটুকু সত্যিই মেয়েদের মালিকানাধিন আর কতটুকু ট্যাক্স বাঁচানোর জন্য মেয়েদের নামটুকু  ব্যবহার করা হয়েছে সে আলাদা করা কঠিন। 
  • কৌতূহলী | 115.187.***.*** | ২৩ জুন ২০২৫ ২১:৫৮732153
  • যা অবস্থা ,চাষবাস হাতের কাজ ছাড়া সব বৌদ্ধিক পেশাই বিপদে। ভয়ানক অবস্থা। 
  • পাপাঙ্গুল | ২৩ জুন ২০২৫ ২৩:৫৭732155
  • @ দ দি , এই সন্দেহ স্বাভাবিক। একই কারণে বাড়ির কাগজ কত শতাংশ মেয়েদের নামে সেটাও খুঁজতে হবে , পরের জনগণনা হোক। 
     
    @কৌতূহলী , হ্যাঁ স্বনির্ভর হতে হবে। 
  • :{ | 51.159.***.*** | ২৪ জুন ২০২৫ ০৬:০৩732159
  • পয়সা যার আছে সে দেখালে আপত্তি কি? সুন্দরী মেয়েই তো খাঁজ দেখাবে। এখানে যে দাদাদিদিরা অফিসের কাজে ফাঁকি মেরে গপ্পপবন্দ নামান, তাঁদের স্বাভাবিকভাবেই প্রমোশন হচ্ছে না। যাদের টেকনিক্যাল স্কিল আছে, যারা বারো-চোদ্দ ঘন্টা খেটে পঞ্চাশ-ষাট লাখ টাকা রোজগার করছে, তারা জীবনের সবটুকু ভোগ করে নেবেই। বীরভোগ্যা বসুন্ধরা।
  • হীরেন সিংহরায় | ২৪ জুন ২০২৫ ১১:০২732163
  • চমৎকার প্রসঙ্গ ও উপস্থাপনা । ধন্যবাদ । দুটো ব্যক্তিগত কথা বলি । ১৯৮৫ সালে জার্মানি থেকে ইংল্যান্ডে এসেছি , তখন নিজের বাড়ি ভারসাস ভাড়া বাড়ির রেশিও ছিল জার্মানিতে ৩৩/৬৭ ইংল্যান্ডে ঠিক উলটো ৬৭/৩৩।  চল্লিশ বছর বাদেও সেটা তেমন বদলায় নি , আপনি দেখাচ্ছেন জার্মানিতে ভাড়া বাড়িতে বাস করেন ৫১%। এর একটা বিচিত্র লজিক আমি শুনেছিলাম ডাচ ও জার্মান কলিগদের কাছ থেকে - কবে কখন চাকরি বদল হয়, বাড়ি কেনা মানে আটকে যাওয়া । হল্যান্ডের  কর্ম বীর জনতা বাস করেন দক্ষিণ প্রান্তে, ট্রেন ব্যবস্থা দারুণ , রটারডামে বাস করে আমস্টারডাম উটরেখটে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করাই যায় কিন্তু সেই অতিরিক্ত আধ ঘণ্টা নাকি মহার্ঘ।   আমেরিকায় লেবার অত্যন্ত মোবাইল অথচ সেখানে হোম ওনারশিপ  অনেক বেশি ।  প্রাণের দায়ে না হলে হামবুর্গের লোক কদাচিৎ ফ্রাঙ্কফুর্ট আসবে ( নিজের অফিসে দেখেছি ই ভীষণ ইমমোবাইল ) তবু কিনবে না বাসা এটার শিকড় আরেক যুগে। 
     
    ১৯৯১/৯২ সাল নাগাদ যখন  ব্রিটেন তাদের  হংকং কলোনি চিনকে ফেরত দেবে বলে মোটামুটি জানিয়েছে  হংকং এর মানুষ দুদ্দাড় কানাডায় বাড়ি কিনতে শুরু করেন, প্রধানত ভ্যাঙ্কুভার , একটু কাছে হয় ! সিটি ব্যাঙ্কে আমার এক কানাডিয়ান সহকর্মীনি বলেছিলেন এখন নাম বদল করার সময় এসেছে - হয় বলি হংকুভার বা ভ্যানকং ! মেনল্যান্ড চাইনিজ নন তাঁরা । 
    আমেরিকায় বাড়ি ঘর অপেক্ষাকৃত সস্তা বলে অনেকে কিনে রেখেছেন , তিরিশ বছর আগে এমনই জ্ঞানচক্ষু উদয় হয়েছিল । কেন্টের ওয়েস্টগেট অন সি তে  ছুটি কাটাতে গিয়ে চোখে পড়ল সি ফেসিং দু কামরার ফ্ল্যাট £১২৫,০০০.০০ সেদিনই টাইমসে বিজ্ঞাপন দেখলাম ফ্লোরিডায় চার ঘর সুইমিং পুল সহ বাড়ি $১২৫,০০০। সিদ্ধান্ত নিতে দু মিনিট লাগে , যদিও কোনদিন সে দেশে বাস করি নি,  এটা আপেক্ষিক দামের  ব্যাপার। অ্যারিজোনাতে বিশ একর জমি কেনা গেছিল বিশ হাজার ডলারে। 
  • অরিন | 2404:4404:4405:700:ec9e:d285:9f45:***:*** | ২৪ জুন ২০২৫ ১২:১৫732165
  • তথ্য গল্প বলে:
     
     
     
    প্রথম চল্লিশ বছর ভারতে  অর্থনৈতিক অসাম্য একরকমের ছিল, ১৯৯৭ এর পর থেকে বেলাগাম। 
    গরীব আরো গরীব হচ্ছে, বড়লোক আরো বড়লোক, মধ্যবিত্ত ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে। 
    এর একটি অবধারিত রাজনৈতিক তাৎপর্য আছে, আজকে যার বহিঃপ্রকাশ | 
  • পাপাঙ্গুল | 150.129.***.*** | ২৫ জুন ২০২৫ ০০:৩৫732170
  • হীরেনদা , সমাজ থেকে সমাজে এইরকম কালচার কাজ তো করেই। ভারতে যেমন মেয়েদের বিয়ের জন্য বা সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্য আলাদা করে টাকা জমানো হয়। হয়ত পুরো বাড়ি টিকিয়ে রাখার খরচ ছোট এপার্টমেন্টের থেকে অনেক বেশি , এইরকম ব্যাপারও আছে। পৃথিবী জুড়ে ভাড়ায় থাকার ব্যাপারটা এই লেখায় এনেছি এটা বোঝানোর জন্য যে কর্পোরেট বাড়ি কিনে কিনে অস্বাভাবিক দাম বাড়িয়ে রেখেছে অনেক জায়গায়। জমি তো পুরোই আলাদা জিনিস , ভারত বা ইউরোপে সব জমিতেই কমকরে হাজার বছর ধরে কোনো পরিবার বাস করে বা চাষ করে। সে তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র কানাডা অস্ট্রেলিয়ার মত নতুন উপনিবেশে জমি পাওয়া সোজা হবার কথা।
     
    অরিনলান , মনে হয় সামাজিক মোবিলিটি এই সময় থেকে প্রচুর বেড়ে যায় বেসরকারি কাজের বিস্ফোরণের জন্য। কর্মসংস্থানে খুব তাড়াতাড়ি বেসরকারি ক্ষেত্র সরকারকে টেক্কা দিয়ে দেয়। ভারতে দশ শতাংশ মানে আসলে ১৫ কোটি মানুষ, যা খুব বড় সংখ্যা। মধ্যবিত্ত বলতে মৃণাল সেনের ছবিতে যাদের দেখানো হত তাদের উত্তরসূরীরা এখন হয় ওই পনেরো কোটির মধ্যে অথবা আরো নেমে গেছেন। রাজনৈতিক তাৎপর্য তো আছেই। আপনার ছবিটা মনে হয় স্পেসের জন্য আসেনি , নিচে দিয়ে দিলাম -
     
     
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন