এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  দেখেছি পথে যেতে

  • হিমাচলের ইতি উতি  ৪

    লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | দেখেছি পথে যেতে | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬২ বার পঠিত
  • ৫ তারিখের সকাল বেশ মেঘলা। ইন্দরজিত মানে সারথীমশাইকে আগেই বলে রাখা হয়েছিল উনি যেন সকাল ৯টার মধ্যে রেডি থাকেন।  তা মোটামুটি রেডিই ছিলেন। প্রাতরাশও না-বাবুকে বলে কয়ে নটার মধ্যেই করে নেওয়া গেল। আজকে আমিই যাবো ইমনবাবুকে নিয়ে। কল্পা থেকে নাকো ৯৮.৬ কিমি,  প্রায়  তিন ঘন্টার যাত্রা। আমার ইচ্ছে টাবোও ঘুরে আসা। সে আরো ৬২ কিমি। এমনিতে ঘন্টা দেড়েক লাগা উচিৎ। তবে ওখানে রাস্তা খুব খারাপ। 


    নাকো প্রায় তিব্বত সীমান্তের কাছে

    কিছুদিন আগের বৃষ্টি আর ধ্বসে ভেঙেছে রাস্তা, এখনো পুরো সারানো হয় নি, কাজ চলার মত কোনরকমে করে রাখা আছে। গাড়িতে উঠে অবধি সারথীমশাই ঘ্যান ঘ্যান শুরু করলেন ‘টাবোর রাস্তা বন্ধ, গুগলে দেখাচ্ছে, কী করে যাবো? ও যাওয়া যাবে না।’ আমি শেষে বললাম রাস্তা বন্ধ নয় আমি খবর নিয়েছি স্থানীয়দের কাছ থেকে। তবে খুব খারাপ। আমরা  নাকো ঘুরে তারপর ঠিক করব টাবো যাবো কিনা। আপাতত রোঘি ভ্যালি ভিউ পয়েন্ট ঘুরে যাওয়া যায় কিনা দেখুন। 

    রোঘি ভ্যালি ভিউ পয়েন্ট যার নাম ছিল ‘সুইসাইড পয়েন্ট’ এখন হয়েছে রওলা ক্লিফ। তা সে নাকি রেকংপিওর দিকে কাজেই ফেরার সময় দেখা যাবে, এখন তো আমরা উল্টোদিকে যাবো। NH5 আর NH505 ধরে যাওয়া। তা রাস্তা মন্দ নয়। কয়েক জায়গায় একটু রাফ প্যাচ আছে বটে তবে মোটের উপর মসৃণ। রিব্বা,  স্কিব্বা, রিস্পা, মুরাং ছোট ছোট জনপদ। রাস্তায় ছোটগাড়ি,  মাথায় স্যুটকেস ব্যাগ বাঁধা ট্র‍্যাভেলার দু একটা। আর যাচ্ছে দু'একটা মালবোঝাই ট্রাক। 

    মুরাঙের আগে থেকেই বরফে  মোড়া পাহাড়চুড়ারা সঙ্গ নিয়েছে। কখনো ডানে কখনো বাঁয়ে কখনো সামনে হাতছানি দিয়ে চলেছে।  দুইপাশ এখনো সবুজে সবুজ। কিছু পর্ণমোচি বৃক্ষের উপরের দিকের পাতায় রঙ ধরেছে। কোথাও কোথাও পাহাড়ের ঢাল বরাবর ধাপ কেটে জুমচাষ করা। কিছু ফসল পেকে হলুদ রঙ ধরে গোটা ঢালখানা নকশাদার আসন বানিয়ে রেখেছে।  নাকো (১২০১৪ ফিট)  কল্পার (৯৭১১ ফিট) থেকে প্রায় ৩০০০ ফুট উঁচু। 


    কেমন গালচে বিছানো পর্বত

    পুহ থেকে ক্রমশ রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কমতে থাকল। খাবের পর  দুপাশে ন্যাড়া পর্বতশ্রেণী সঙ্গ নিল। নাকো কিন্নরজেলায় হলেও স্পিতি উপত্যকায় অবস্থিত। তাই নাকোর আশেপাশে সবুজের ছোঁয়া বেশ কম। পথে একজায়গায় স্পিতি নদী দেখা দিয়ে যায়। ম্যাপে দেখলাম স্পিতি রিভার ভিউ পয়েন্টও আছে একটা তবে সারথীমশাইকে বলতে বলতেই তিনি কয়েক কিমি এগিয়ে গেছেন, কারণ ফোনে ব্যস্ত থাকায় বুঝতেই পারেন নি। 

    মরুকগে যাক, আমি তো স্পিতি আরেকবার আসবোই, তখন স্থানীয় সারথী নেবো অথবা এইচআরটিসির বাস। ন্যাশনাল হাইওয়ে থেকে ডানদিকে ঘুরে নাকোর রাস্তার শেষের দিকটা ভালই চড়াই আর মাঝারি সাইজের বাঁক। ইন্দরজিৎ ফোন টোন ছেড়ে মন দিয়ে চালাচ্ছেন।  দুই  জায়গায় দুটো আর্থ মুভার চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে, কেন কে জানে! আশেপাশে কোন মানুষজন নেই। আকাশে রোদ্দুর আছে তবে তেজ কম। এবং…  এবং সুক্ষ্ম কুচির বরফ পড়া শুরু হয়ে গেল। 


    নাকো গোম্পা পার্কিং থেকে

    ইমনবাবু সজ্ঞানে বরফ পড়তে দেখলেন এই প্রথমবার। স্বভাবতই খুব উত্তেজিত। কিন্তু গাড়ি একপাক  ঘুরে উঠতেই বরফকুচিরা হাওয়া।  আবার একপাক ঘুরতেই আবার বরফকুচি। যা মনে হল পাহাড়ের একদিকে বৃষ্টির ফোঁটাগুলোই পড়তে পড়তে জমে যাচ্ছে, ফ্লারিজ। এই আছে এই নেই করতে করতে নাকো পৌঁছে দেখা গেল রাস্তার দুপাশে মোটা বরফের স্তর। সরু ঢালু রাস্তা,  দুপাশে ছোট বড় হোমস্টে। পাহাড়ি গ্রামে যেমন হয়। একটা গুদামের সামনে ছোট হাতি দাঁড়িয়ে মাল লোড করছে, কাজেই আমরা দাঁড়িয়ে রইলাম মিনিট ছয় সাত। 


    নাকো গোম্পার পার্কিঙে নামতেই ইনি প্রাঙ্গনের অন্যপ্রান্ত থেকে হইহই করে এসে আমাদের অভ্যর্থনা জানিয়ে আমার লাঠির হাতলের স্ট্র‍্যাপ চিবোতে শুরু করেন। পাক্কা ১ মিনিট ধরে নরমভাবে চিবিয়ে খুব অনিচ্ছায় ছাড়েন।  

    জানা গেল গতকাল রাতে বরফপাত হয়েছে। আজকেও হবে বলেই মনে হচ্ছে, যদিও নাকোতে ঢোকার পর থেকে আর ফ্লারিজের দেখা পাই নি। সেই যে হেমিস উৎসবে গিয়ে গুরু পদ্মসম্ভবের ২২ ফুট থাংকা দেখতে পাই নি;  শুনেছিলাম  বারো বছর বাদে বাদে নারোপা উৎসবের দিন বের করা হয়, সেইটে এই বছর নাকো গোম্পায় ২৭ - ২৯শে আগস্ট  উৎসবের সময় প্রদর্শনের কথা ছিল। আসবো ভেবেওছিলাম। কিন্তু তারপর আগস্টে অতিরিক্ত বৃষ্টি ও তজ্জনিত ধ্বস ও ক্ষয়ক্ষতির কারণে সেই উৎসব মুলতুবি রাখা হয়। 


    গোম্পার মূল প্রাঙ্গণে ঢোকার দরজা 

    নাকো গোম্পা তৈরী হয়েছিল ১০২৫ খ্রীস্টাব্দে। এই গোম্পাও সেই মহাগুরু, অনুবাদক লোচওয়া রিঞ্চেন জাংপোর তৈরী ১০৮ খানা গোম্পার একটা। এখানে মজা হল রিঞ্চেন জাংপোর সময়কাল বলা হয়েছে ৯৫৮ থেকে ১০৫৫ খ্রীস্টাব্দ। খ্রীস্টাব্দ!? হ্যাঁ একাদশ শতকেই তৈরী বলে জানালেন স্যুভেনিয়র শপের যুবক লামা। নেট ঘেঁটেও তাই পাচ্ছি। কিন্তু কল্পা গোম্পার বোর্ডে স্পষ্ট লেখা দেখছি 958 - 1055 B.C. (আগের পোস্ট দ্রষ্টব্য)  সে বোর্ডে আরো হাজার দুয়েক বছর পিছিয়ে দিয়েছে কেন? কে দেবে উত্তর? 


     মূল মন্দিরের যে ঘর সর্বসাধারণের জন্য খোলা

    একাদশ শতকে তৈরী নাকো গোম্পার ৪ খানা হল, তাদের আবার দেওয়ালজোড়া ম্যুরাল। বজ্রযান বৌদ্ধমতের বিভিন্ন দেবদেবী ও কাহিনী নিয়ে অপূর্ব দেওয়ালচিত্র। রিঞ্চেন জাংপো সব গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ শাস্ত্র ও  পুঁথি সংসকৃত থেকে তিব্বতীভাষায় অনুবাদ করেছিলেন এইজন্য তাঁকে ‘লোচেন’ বা অনুবাদক নামেও অভিহিত করা হয়। আমরা অবশ্য চারখানা হল খোলা পাই নি, একটিমাত্র ঘর বাইরে থেকে হাঁসকল টানা ছিল। খুলে ঢুকে দেখে আবার বন্ধ করে বেরিয়ে আসতে হয়। 


    বর্ণাঢ্য দেওয়ালচিত্র

    বাইরে থেকে বেশ বড় দেখালেও যেটিতে ঢুকতে পেরেছি সেটা ছাড়া বাকী তিনটে হল কোথায় বুঝতে পারি নি। মানে পাশে অন্য কোন দরজা দেখি নি। যে হলটিতে ঢুকেছিলাম অন্যান্য প্রাচীন গোম্পার মতই সেটিরও চৌকাঠ উঁচু এবং দরজার মাথা খুবই নীচু। ফলে নিজের মাথার দিকে খেয়াল রেখে মাথা নীচু করে না ঢুকলে গুঁতো খাওয়া অনিবার্য। ভেতরে আলো আছে তবে টিমটিমে। অনেক উঁচুতে একটা জানলা দিয়ে আসা সূর্যরশ্মি সোজা পড়েছে রিঞ্চেন জাংপোর মূর্তির মাথায়। 


    একফালি আলো রিঞ্চেন জাংপোর মাথায়। পাশে হলদে তারা

    সবকটা দেওয়াল জুড়েই বর্ণাঢ্য দেওয়ালচিত্র। হলদে তারার মূর্তি এখানে আছে নেটে দেখে গিয়েছিলাম। চিহ্নিত করতে পেরে ভারী আনন্দ হল। এদিকে জুতো খুলে ঢোকার সময় মোজাও খুলে এসেছি। হাজার বছরের প্রাচীন পাথরের মেঝে থেকে উঠে আসা ঠান্ডা খালি পা বেয়ে গোটা দেহই জমিয়ে দিতে চায়। গোটা ঘরে আর কেউই নেই, বাইরেও ইমনবাবু ছাড়া আর কেউ নেই। দেওয়ালচিত্রগুলো বুঝিয়ে দেবার কেউ থাকলে ভাল হত। হয়ত উৎসবের সময় বাকী হলগুলো দেখা যায়। 


    হলদে তারা স্কাল্পচার


    দেওয়ালচিত্র

    এখানেই কোন একটি দেওয়ালজুড়ে সম্পূর্ণ মন্ডলা আঁকা আছে পড়েছিলাম। সেও তো দেখলাম না। ভেতরে কিছুক্ষণ অমন একলা দাঁড়িয়ে থাকলে কেমন ঘোর লেগে যায়। মনে হয় মূর্তিগুলো হয়ত এক্ষুণি নড়ে উঠবে, ছবিরা ইশারা করবে এ দেওয়াল থেকে ওই দেওয়াল। বেরিয়ে এসে আস্তে করে হাঁসকল টেনে দিই দরজার।  রওনা দিই লেকের দিকে। গুগল ম্যাপ নিয়ে তোলে এক অন্ধগলির শেষপ্রান্তে, যার পরে স্রেফ পায়ে হাঁটার উপযুক্ত চড়াইপথ। 


    এ বেচারির সামনের বাঁ পায়ে চোট লেগেছে। লেকে নামার সিঁড়ির মুখে চুপটি করে বসে আছে।

    সারথীমশাই গেলেন স্থানীয়দের কাছে জিজ্ঞাসা করতে। আশেপাশে কয়েকটা বাসস্থান। গুগল ক্যানক্যান করে বলে চলেছে ইউভ রিচড। ডেস্টিনেশান ইজ অ্যাট ইওর রাইট। তা বটে, ঝুঁকে নীচে তাকালে পাতা ঝরে যাওয়া গাছের শুকনো ডালপালার ফাঁক দিয়ে জল দেখা যাচ্ছে।  সারথীমশাই ফিরে বললেন এটাই লেক। হ্যাঁ তা তো দেখতেই পাচ্ছি কিন্তু ধারে পৌঁছাবো কী করে? না ওওই যে সিঁড়ি, ওই ধরে নেমে যেতে হবে। আর নাকি কোনই রাস্তা নেই। 


    লেকে যাবার সিঁড়ি 

    অগত্যা নামি গাড়ি থেকে।  সোজা খাড়া সিঁড়ি নেমে গেছে দেখে ইমনবাবু গাড়িতেই  রইল। আমি খানিক ইতস্তত করে নামতে লাগলাম। ইতোমধ্যে বেশ কিছু পর্যটকের সাথে দেখা,  যাঁরা উঠে আসছেন। তাঁরাও বললেন সম্ভবত এটাই একমাত্র পথ কারণ আশেপাশে তো আর কোন পথ দেখা যাচ্ছে না। একেবারে খাড়া পাড় আর এবড়ো খেবড়ো বোল্ডারে ভর্তি। নামতে নামতে দেখি সিঁড়িগুলো উপর থেকে যতটা খাড়া লাগছিল আসলে তত খাড়া নয়। তবে ১০৬ খানা সিঁড়ি। 


    শিপকি লা এখানে কোত্থেকে এলো অ্যাঁ?

    সিঁড়ি শেষ হবার পরে অবশ্য অসমান বোল্ডার এবং ভেজা থকথকে কাদামাটি। বোঝাই যাচ্ছে জল এই পর্যন্ত আসে। উপর থেকে সিঁড়ির পাশ বরাবর বেশ তীব্রগতির এক জলধারা নেমে এসে লেকে মিশেছে। এ কি নাকো গ্রামের পয়:প্রণালীর জল নাকি উপরে পাহাড়ের কোন জলের উৎস থেকে আসছে? এদিকে লেকের পাড়ে Welcome to Shipki La বোর্ড লাগিয়ে গেছে কারা। কেন রে বাপু! স্বাধীনতার পরে এই বছরই প্রথমবার শিপকি লা খুলে দেওয়া হয়েছে বটে পর্যটকদের জন্য। কিন্তু সে তো এখানে নয়। 


     নাকো লেক 

    ন্যাশনাল হাইওয়ে থেকে আমরা যেখানে নাকোর জন্য ডাইনে ঘুরলাম সেখানে না ঘুরে সোজা এগিয়ে গেলে শিপকি লা'এর রাস্তা। নাকো লেকের জল পান্নাসবুজ আর  জল স্থির নয়, স্রোত আছে। সেই মুহূর্তে ওখানে আমি একা। পর্যটন ঋতু প্রায় শেষ, শীগগিরই বরফের চাদরে ঢেকে যাবে নাকো টাবো।  সব পাতা ঝরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা রিক্ত গাছগুলোর ফাঁকে পান্নাসবুজ লেকের জলে ঝিরিঝিরি স্রোত আর চারপাশে ঘিরে থাকা বরফে মোড়া পর্বতশ্রেনী অপরূপ। 


    লেকের পিছনে রিও পারগিয়াল পর্বত 

    দশ হাজার ফুটের ওপরে হিমালয়ের বেশ কয়েকটা লেক দেখলাম। প্রত্যেকটা লেক আলাদা আলাদা রকমের সুন্দর। আমার পতনের ইতিহাস বেশ দীর্ঘ, তাই ভেজা কাদামাটি আর অসমান বোল্ডারে বেশী না এগিয়ে ফেরার পথ ধরলাম। এবারে ১০৬খানা সিঁড়ি উঠতে হবে। পৌনে দুটো বাজে, ভালই খিদে পেয়েছে। সারথীমশাই চাইছিলেন হাইওয়ে পৌঁছে কোন ধাবায় যেতে। কিন্তু আসার সময়ে দেখেছি শেষ ঘন্টাখানেকের রাস্তায় প্রায় কিচ্ছু ছিল না। কাজেই জোর দিয়ে বললাম না এখান থেকে খেয়েই বেরোব। 



    লোয়ার নাকোর এক চমৎকার রেস্টুরেন্টের  খোলামেলা দোতলায় গিয়ে বসলাম। বোঝাই যাচ্ছে আজ আর টাবো যাওয়া সম্ভব নয়। গেলে ফিরতে রাত দশটা বেজে যাবে। এখানেই শুনলাম গোম্পার পেছন দিয়ে লেকের ধার  পর্যন্ত সোজা রাস্তা আছে যেটা দিয়ে গেলে কোন সিঁড়ি না ভেঙেই লেকে পৌঁছানো যায়। ওঁরাই বললেন স্থানীয় কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই দেখিয়ে দিত। সারথীমশাই সদ্য আসা কিছু ট্যুরিস্টকে জিগ্যেস করেছেন, যাঁরা সম্ভবত আমাদেরই মত গুগল ম্যাপের শিকার। ফলে বিকল্প পথের সন্ধান পান নি। 


    এবার ফিরতে হবে 

    বেচারা ইমন ছোট্ট মানুষ, প্লেন রাস্তায় হেঁটে যাওয়া যাবে জানলে লেকটা দেখে আসতে পারত। এরা খাবার বানাতে প্রচুর সময় নেয়।  ভেজ মোমো আর চিকেন থুকপা দিয়ে খাওয়াদাওয়া সেরে বেরোতে তিনটে বেজে গেল। ফেরার পথে বেশ রোদ্দুর উঠে গেল। কিন্তু কল্পার কাছাকাছি এসে আবার জমজমাট মেঘ আর সামান্য একটু বড় সাইজের বরফ বৃষ্টি। মেঘ আর এলোমেলো বৃষ্টিতে কৈলাশকে আর দেখা যাচ্ছে না ভাল করে। রওলা ক্লিফ বাদ দিয়ে আমরা হোটেলে ফিরি। 


    গালিচা বিছানো পর্বতমালা 

    ইতোমধ্যে সীমন্তিনী কাজকর্ম সেরে হোটেল থেকে আর একটা গাড়ি ভাড়া করে রেকংপিও গোম্পা, রওলা ক্লিফ আর কল্পা বাজার ঘুরে এসেছে। কল্পা বাজারের মধ্যে যেদিকটায় গাড়ি যায় সেখানে বেশ মজার একটা দোকানও খুঁজে বের করেছে। আর খবর নিয়ে জেনেছে ছিটকুলের রাস্তা বেশ খারাপ। একেবারে অফফ রোড নয়, তবে বিশেষ সুবিধেরও নয়। ৬ তারিখ আমাদের রকছাম ছিটকুল যাবার পরিকল্পনা।  এ হুতোমথুমো তার সিএনজি নিয়ে কতক্ষণে পৌঁছাবে কে জানে! 


    ৫ তারিখ রাতে মেঘে মোড়া কৈলাশ রেঞ্জ

    আমরা ললিতকে বলে স্থানীয় এক ট্যাক্সি ভাড়া করে নিই পরেরদিনের জন্য। কালকে আমাদের দুজনেরই অনেকদিনের ইচ্ছেপূরণের জায়গায় যাওয়া। 

    (চলবে)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:9575:8197:d0a7:***:*** | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:০১736427
  • দ্বিতীয়জনের পায়ে ইনফেকশানও হয়ে থাকতে পারে। ওরা অনেক সময়ে চেটে চেটে পায়ে ঘা করে দেয়। পাহাড়ের ছবিগুলো অসাধারন! 
  • %% | 49.206.***.*** | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৫৭736450
  • হলদে তারার মূর্তিটা খুবই ইন্টারেস্টিং 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন