

“কলকাতা কতবার ধ্বংস হয়েছিল?
কতবার বিদ্রোহীর তীর
বনাঞ্চল থেকে ছুটে এসে নগরীর ভেঙেছে প্রাচীর
মন্বন্তর তুচ্ছ করে মানুষের উপোসি মিছিলও
স্মৃতিস্তম্ভ ফাটিয়ে বিস্ময়ে-
যখন তোমার কাছে আমার হৃদয়।”
"মধ্যযুগ ছিল অন্ধকার, তারপর জল পড়িল, পাতা নড়িল, ফুল ফুটিল এবং সিরাজ বধ করিয়া, সগর্বে য়ুরোপ আসিয়া বাংলাকে গ্লোবাল করিয়া জ্ঞানের আলো দেখাইল, সোমনাথ এইসব ঢপেচ্চ্পেও বিশ্বাস করে না। সে রামপ্রসাদের ভক্ত।" - একথা সোমনাথ রায়ের আগের কবিতার বইয়ের ব্লার্বে লেখা আছে। এই বইতেও সেই ধারাবাহিকতা বজায়। তা সে ক্ষীরভবানীর মন্দিরে অসীম আল্লা আর অনন্ত মায়ের মূর্তিতে কাজল মেঘেতে ছাওয়া বাংলার রূপ হোক বা হায়দারি মঞ্জিলে দবীর খাসের স্বপ্ন। এখানে ঘাসে ঘাসে হাওয়ার দোলনাতে ঝুলন মিলনের অধিষ্ঠান, মাটি দেশে শ্যামল সমারোহে শ্যামের বাঁশি আর সে রাঙা পদ, রূপকথা দিঘিতে ঘাই মারে পিতামহীর দেওয়া মাছের নথ। মেঘনা ভাগীরথী পলিমাটিতে মেশে যেমন আজানেতে মিশছে শাঁখ/ মাঠে ও জলতলে যেমন মিশে আছে লক্ষ কৃষকের হুলের ডাক। বৃষ্টি থেমে গেলে বাগান উপচে পথে উঠে আসে কলরব। নিভে যাচ্ছে কার্তিকের রোদ। দুপুরের ঝিম ছিঁড়ে যায় রেলগাড়িতে। ডিনামাইটের মুখে জেগে ওঠে পাহাড়িয়া ঘাস। বাড়িগুলো মরে যায়, সেই জায়গায় একটা ফাঁকা মাঠ হয় কিছুদিন। একশো বছর ধরে মরে গেছে বাংলার গ্রাম/ মৃত শরীরের ঢিপি ঢেকে রাখা প্রগতির পথে। হেল বপ দূরে সরে যায়। অনন্তকাল আবার দাঁড়ায় বড়ঘড়ির নিচে।
'ঘেন্না পিত্তি' আর 'অরূপ বৃন্দাবন এবং অন্যন্য পদ'র মতোই, 'পূর্বে আসো মেঘ' আসলে নানা ছন্দের কারিকুরি - ছান্দসিকদের জন্য পোয়াবারো। আসবে, ২০২৬ কলকাতা বইমেলায়।
“যত বার ফিরে গেছি ঠিকানাতে এসে
অবশ মাত্রা ভিজে এসেছে আবেশে
আদরে উথলে দিল কবিতার খাতা
বাংলা শব্দ, কোলে দয়িতের মাথা-
স্থাণু পায়ে ডুবে যাই প্রলয়ের জলে
আমাকে অবাক করে রেলগাড়ি চলে;
দেখা না-দেখার মাঝে অরূপ নেহারি
বাংলা শব্দ ছাড়া কী বসাতে পারি?”