এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা  শনিবারবেলা

  • মধুবাতা ঋতায়তে

    শারদা মণ্ডল
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ৩১ মে ২০২৫ | ১৬৮ বার পঠিত
  • ছবি - Imagen 3


    চুনিয়া নদীর নুড়ির উপর অনেক ময়ুর নাচছে। ছেলেমেয়েরা ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। নদী পেরিয়ে এইবার একটা এবড়ো খেবড়ো বনবিভাগের রাস্তা পাওয়া যায়। রাস্তা ধরে চলেছি চুনিয়াবস্তি ওয়াচ টাওয়ারের দিকে। কাছাকাছি ভুটান বস্তি এলাকায় হিমালয়ের গা সাত রঙে রঙীন। ওখানে আগে পিকনিক হত। কিন্তু হৈ হল্লা, প্লাস্টিক দূষণের কারণে বনদপ্তর সেসব বন্ধ করে দিয়েছে। খুব ভালোই করেছে। চালক ইশারায় কিছু দেখান। দেখি আমরা যে পথ ধরে চলেছি, তার বাঁদিকে চলে গেছে আর একটি পথ। জায়গাটা পেরিয়ে এসে চালক জানান ওটা চুনিয়া চা বাগানের দিকে চলে গেছে। কিন্তু সে জন্য নয়, ইশারার কারণ হল ঐ জায়গাটা লেপার্ডের বিচরণক্ষেত্র। লেপার্ড দেখার তো আমাদের খুবই ইচ্ছে। কিন্তু মুকুলের গল্পটা মনের মধ্যে এখনো টাটকা। ছাত্র ছাত্রী নিয়ে কোনো বালখিল্যের মতো কাজ করার প্রশ্নই ওঠেনা। দলের নিরাপত্তা সবার আগে। সারা ডুয়ার্স জুড়েই চা বাগানে চিতাবাঘের আনাগোনা বাড়ছে। মানুষ আর পশুর বর্ধমান সংঘাত আমাদের কোন সর্বনাশের দিকে নিয়ে চলেছে এ নিয়ে গভীর গবেষণা প্রয়োজন। আসলে চায়ের বাগানগুলো মূলত বনাঞ্চল আর মানুষের বসতির মাঝামাঝি জায়গায় থাকে, আর প্রাকৃতিক ভাবেই এখানে নানান ধরনের ছোট ছোট প্রাণী যেমন - ইঁদুর, খরগোশ প্রভৃতি থাকে, চিতাবাঘের কাছে এরা খাবার হিসেবে লোভনীয়। এছাড়া চা বাগানের ঘন ঝোপে চিতাবাঘের লুকিয়ে থাকতে ভারি সুবিধে হয়, তারপর রাতের বেলা সুযোগ বুঝে গেরস্তর বাড়ি থেকে মুরগি, ছাগল তুলে নিলেই হল, মানুষ তখন দোষ দেয়, পাড়া মাথায় করে - ঐ দেখ, আমার বাড়িতে দুষ্টু বাঘ ঢুকেছে। তখন কোথায় লাঠি সোঁটা, রেডিও, টিভি, খবরের কাগজ, ফেসবুক - ইন্সটা, চারিদিকে হৈ চৈ আর রৈ রৈ, গুলি কৈ গোলা কৈ! বাঘের বাড়ি নষ্ট করে মানুষ যে সেখানে জাঁকিয়ে বসেছে, সেই দোষটার কথা কেউ বলেনা, মনেও রাখেনা। সবই বনের অদৃষ্ট! সংঘাত বাড়ার আর একটা বড় কারণ হল চা বাগানের শ্রমিক আর স্থানীয় মানুষের মধ্যে চিতাবাঘ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব। ফলে, তারা বাঘের সঙ্গে দেখা হলে ভয় পেয়ে যায়, আর সেই শরীরী ভঙ্গি বাঘ খুব ভালো করেই বুঝতে পারে তখন আক্রমণ করে দেয়। শ্রমিকদের চিতাবাঘের হামলা থেকে বাঁচার কৌশল শেখাতে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে দিনভর সচেতনতামূলক শিবির যে হয় না তা নয়, মাঝেমাঝেই হয়, কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। পাশাপাশি চা বাগানের ঘুরে বেড়ানো চিতা বাঘগুলিকে চিহ্নিত করতে ড্রোন ওড়ানো হয়, বিভিন্ন এলাকায় ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হয়। দরকার মত খাঁচা পাতাও হয়। বন্য জন্তুদের উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত বিশেষ গাড়ি "ঐরাবত" ছোটাছুটি করে। কিন্তু বিসমিল্লায় গলদ। কারণ যত দিন যাচ্ছে, জঙ্গলের পাশাপাশি চা বাগানও চিতাবাঘের স্বাভাবিক বাসস্থানে পরিণত হচ্ছে। ফলে সব চিতাবাঘকে ধরে চা বাগান থেকে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে এলেও লাভের লাভ কিছু হবেনা। আগের মত ‘গ্রিন কার্পেট জোন’টাই আর তরাইয়ের জঙ্গলে নেই। অর্থাৎ কৃষি জমিতে বেপরোয়াভাবে চা-বাগান এলাকার সম্প্রসারণই চিতাবাঘের মতো বন্যপ্রাণীদের তরাইয়ের লোকালয়ে যাতায়াত সহজ করেছে। দুদশক আগে সাধারণত জঙ্গল লাগোয়া বড় চা-বাগানে চিতাবাঘের দেখা মিলত। এরপর ফাঁকা চাষের মাঠ থাকায় লোকালয়ে ঢুকে হামলা চালানোর সাহস তাদের হতনা। কিন্তু কৃষিজমিগুলো বেশি লাভের জন্য চা-বাগানে বদলে যেতে পরিস্থিতি জটিল হয়ে গেছে। এখন জঙ্গল থেকে বেরিয়ে চা-বাগানে টুকটাক জলখাবার খেতে খেতে, জগিং করতে করতে যে কোনও বন্যপ্রাণীর শহরে পৌঁছে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। জঙ্গল ছোট হয়ে এসেছে। প্রজননের সময় স্ত্রী চিতাবাঘ পুরুষ চিতাবাঘের থেকে দূরে থাকতেও চা-বাগান এলাকায় ডেরা বাঁধে। জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে ড্রাইভার সাহেবের কাছ থেকে আমরাও একটু আধটু চিতাবাঘ থেকে বাঁচার কৌশল শিখে নিই। তিনি বললেন, কখনও যদি চিতাবাঘের ছানা দেখতে পাও কেউ, সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে দূরে পালাবে। মা কাছাকাছিই থাকে। চিতাবাঘ সাবধানী প্রাণী, তারা একাধিক লোক থাকলে আক্রমণ করেনা। তাই দল বেঁধে থাকতে হয়। যদি কখন কেউ একা পড়ে যায়, তাকে গলা ফাটিয়ে হাঁউমাউখাঁউ করে চেঁচাতে হবে, হাত দুটো মাথার ওপরে পাশে ঘুরিয়ে বাঘের চোখে নিজেকে ভয়ানক আর বড় প্রাণী প্রমাণ করতে হয়। তাহলে চিতাবাঘ সুড় সুড় করে কেটে পড়ে। আর একান্তই যদি লড়াই করতে হয়, তাহলে নিজের ঘাড়টা বাঁচিয়ে চিতাবাঘের চোখে আঙুল ঢুকিয়ে নাকে মুখে নরম জায়গায় ঘুঁসি চালাতে হয়। আমি এসব কথা চোখ বড় বড় করে শুনছিলাম বটে, কিন্তু যদি কোনদিন সত্যি সত্যি আমার দিকে থাবা এগিয়ে আসে, বাঘের চোখে আঙুল ঢোকানোর বদলে আমি নিজের চোখ বুজিয়ে অক্কা পাবো একথা নিশ্চিত।

    বনে এলে গাড়ির ইঞ্জিনের গোঁ গোঁ আওয়াজটা যখন কানে সয়ে যায়, তখন গাড়ির মধ্যে বসেও জঙলি বাতাসের গন্ধ, অদ্ভুত সব ডাক, আলো ছায়ার খেলা আর সবুজে সোনা রোদের জাদু মনটাকে বাস্তব পেরিয়ে অজানা জগতে নিয়ে যায়। আজ যারা নেই, মনে হয় তারা সবাই যেন ঘিরে আছে। আমি কেন কলেজ নিয়ে পড়ে থাকি, গবেষণায় কেন মন নেই, এই নিয়ে এস. আর. বি. আমায় সবসময় বকাবকি করতেন। তিনি পার্ট ওয়ানে আমাদের টোপোগ্রাফিকাল মানচিত্রের ব্যাখ্যা শেখাতেন। আমার প্র্যাকটিকাল খাতা তিনি নিজের আলমারিতে রেখে দিয়েছিলেন। ছাত্রাবস্থায় আমি কার্টোগ্রাফি বেছে নেওয়াতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ২০০০ সালে বালিগঞ্জ বিজ্ঞান কলেজে আন্তর্জাতিক আলোচনাসভা। আমি বক্তব্য রাখছি বৃষ্টির জল ধরে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা বিষয়ে। ওভারহেড প্রোজেক্টরে দেখাবো বলে প্লাস্টিকে লিখে এনেছি। এস. আর. বি. ঘরে ঢুকে শেষ বেঞ্চে বসে পড়লেন। পরে নিজের ঘরে কি যে বকুনি দিলেন তা আর বলার নয়। তখন কম্পিউটারে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন শুরু হয়েছে। আমার কি উচিত ছিলনা সেই ভাবে প্রস্তুত হয়ে আসার। তখন মাইনে কম। কম্পিউটারের দাম অনেক। তাই কেনা হয়নি স্যার। একথা শুনে আরও তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে স্যার বললেন লেখাপড়ার জন্য একটু সময় ব্যয় করলে পাড়ার দোকানেই পাওয়ার পয়েন্ট বানানো যায়, একটা জিনিস না শিখে ফেলে রেখে যুগের সঙ্গে তাল না মিলিয়ে আমি যে পিছিয়ে যাচ্ছি, তার জন্য লজ্জা করেনা আমার? হ্যাঁ স্যার ভীষণ লজ্জা করে। আজ আমি পাওয়ার পয়েন্ট কেন টেমপ্লেট ডাউনলোড করে পোস্টার বানানো, গুগল স্কলার, গুগল ক্লাসরুম সব শিখে নিয়েছি। প্রাক্তন ছাত্রদের কাছে টোপোশিট ডাউনলোড, ডিজিটাল এলিভেশন মডেল বানানো এগুলো জেনে নিয়ে গভীর রাতে বাড়িতে সবাই যখন ঘুমোয়, তখন রপ্ত করার চেষ্টা করি স্যার, আপনি কি দেখছেন? কলেজে স্নাতকোত্তর ক্লাসে যেকোনো মানচিত্র বা ডায়াগ্রাম আমি আঁকার পরে কম্পিউটারে করার জন্য জোরাজুরি করি। ওরা অনুযোগ করে - ম্যাম অন্যরা তো হাতে এঁকেই সাইন করাচ্ছে। ওদের কি করে বলি কর্মক্ষেত্রে শুধু হাতে আঁকার জন্য কিছুই পড়ে নেই। তার চেয়ে অনেক বড় কথা হল এস. আর. বি. সব দেখছেন। তোমাদের যুগের সঙ্গে তাল মেলানোর মতো না তৈরি করতে পারলে উনি আমায় ভীষণ বকবেন।

    আমরা ওয়াচ টাওয়ারে পৌঁছে গেছি। কোথা দিয়ে যে সময় কেটে গেল। মনটা বড্ড অতীতচারী হয়ে পড়ছে আজকাল। অতীত আর বর্তমানের সীমারেখাটা প্রায়শই গুলিয়ে যাচ্ছে। ওয়াচ টাওয়ারের উপর আমরা টিচার স্টুডেন্ট চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকি। জায়গাটা চারটে জঙ্গুলে শুঁড়ি পথের মিলনস্থল। একটা পথের শেষ প্রান্তে কালো কালো বিন্দু দেখা যায়, মনে হয় যেন এদিকেই আসছে। হাতির দল কি? নাঃ কালো বিন্দুর দল দিক পরিবর্তন করে। জঙ্গলের পশুরা মানুষের গন্ধকে বিশ্বাস করেনা। বনবিড়াল চোখের নিমেষে রাস্তা পার হয়। যারা চোখের পলক ফেলেছিল তাদের আর দেখা হয়না। একটু দূরে একদল বাঁদর আপনমনে নিজেদের মধ্যে খেলা করছে। সূর্যদেব পাটে বসেছেন। বন থেকে বেরিয়ে ছটি গাভী চাবাগানের পথ ধরেছে। ওদিকে জনবসতি আছে। সঙ্গে কোনো রাখাল নেই। একেবারে পিছনেরটি কঙ্কালসার, বোধহয় অসুস্থ। বার বার পিছিয়ে পড়ছে। সামনের পাঁচটি গাভী কিছুদূর গিয়ে অপেক্ষা করছে, যাতে শেষেরটি একসঙ্গে যেতে পারে। পশুও জানে জঙ্গলে একা হতে নেই। টাওয়ার থেকে নেমে আসি। চালক মুকুল বলেন ম্যাডাম এই প্রথম একটা স্টুডেন্ট গ্রুপ দেখলাম যারা জঙ্গলে এসে চুপ করে থাকে। অনেক দল দেখেছি মাছের বাজার বসিয়ে দেয়। মুকুলকে আর কী বলি, এরা ভূগোলের ছাত্রছাত্রী। প্রথম ফিল্ড সার্ভে। এতদিন বইয়ের পাতায় যা দেখেছে, আজ পরতে পরতে সত্যি সত্যি সেগুলো চোখের সামনে খুলে যাচ্ছে। সমস্ত ইন্দ্রিয় ওদের মগ্ন হয়ে আছে। তাই ওরা চুপ করে আছে। এদেখা তো এখনই শেষ হবেনা। আজীবন এই স্মৃতি ওরা মনের মণিকোঠায় বয়ে বেড়াবে। মুকুল এত কথা কি বুঝবে? তাই চুপ করে থাকি। এখান থেকে কিছুদূর এগিয়ে দ্বিতীয় ওয়াচ টাওয়ার। সময়টা গোধূলি। কনে দেখা আলোয় অরণ্য আরও মোহময়ী হয়ে উঠেছে। বন্যজন্তু দৃষ্টিপথে ধরা দেওয়ার সর্বোত্তম সময়। টাওয়ারে পৌঁছনোর আগেই পথের ধারে হরিণের দেখা মিলল। এই টাওয়ারটা আগেরটার থেকে অনেক বড়, উঁচু। জায়গাটাও অনেক বেশি সুন্দর। জঙ্গল অনেক ঘন। সামনে পশুপাখিদের জল খাওয়ার জায়গা। একটা হরিণ সেখানে জল খাচ্ছে। আমাদের গাড়িগুলো পৌঁছনোর পরেও সে ধীরেসুস্থে জল খাওয়া শেষ করে। চারপাশে অনেক হর্নবিল উড়ছে, এডালে ওডালে আমাদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে। উচ্চৈঃস্বরে ময়ুর ডাকছে। কি একটা পাখি একটানা ডেকে চলেছে, নাম জানিনা। মনের মধ্যে একটা অদ্ভুত স্থিরতা, একটা অদ্ভুত পূর্ণতা অনুভব করছি, সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যায়না। প্রাচীন আর্যরা সংসার ছেড়ে তপোবনবাসী হতেন। কারণটা বোধহয় আমি এখন বুঝতে পারছি। সুসভ্য ইটকাঠের জঙ্গলে মানুষ অমানুষ হয়। গাছপালা পশুপাখির ছোঁয়া লেগে আবার মনুষ্যত্ব জেগে ওঠে। অন্ধকার নামছে, পাতার ফাঁকে ফালি চাঁদ। মোটরগাড়ি ফিরে চলে রুপালি নুড়ির উপর দিয়ে মোহনচূড়ার দিকে। কে যেন বলে ওঠে আজ পূর্ণিমা হলে বেশ হত। কি হলে কী হত তা নিয়ে ভাবতে ইচ্ছে করেনা। জয়ন্তীর জঙ্গলের এই যে অনুভব, একি কম পাওয়া?

    হোটেলে ফিরে এক নতুন কথা জানতে পারলাম। আজ যেদিকে গিয়েছিলাম তার উল্টোদিকে ছোট মহাকাল আর বড় মহাকালের পথ। জয়ন্তী পর্বত শ্রেণীর দুই শৃঙ্গ। অনেকটা ট্রেকিং, সঙ্গে সিঁড়ি। দুই মহাকাল যাত্রা করতে দুদিনের সময় প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের ফেরার ট্রেন পরদিন। তাই এযাত্রা মহাকাল দর্শন হবেনা তা জানতাম। তরাই-এর জঙ্গলে এই যে শুকনো নদীখাতে আমরা ঘুরে বেড়াচ্ছি, নদী কিন্তু সত্যি সত্যি শুকনো নয়। হিমালয়ের উচ্চ ঢালে নদীর গতি বেশি থাকে। অনেক নুড়ি পাথর সঙ্গে নিয়ে চলতে পারে। কিন্তু যেই সমতলে নামে, গতি হারিয়ে ফেলে। নুড়ি পাথরও ফেলে দেয়। জল ওপরে দেখা যায়না। মনে হয় যেন নদীখাত শুকনো। কিন্তু তলা দিয়ে জল যায়। খবর পেলাম মহাকালের পথে এমন একটি স্থান আছে, যেখানে দেখা যায় জল ভূপৃষ্ঠ থেকে নিচে ঢুকে যাচ্ছে। এছাড়া আয়রন পয়েন্টে দেখা যায়, লোহার গুঁড়ো ধুয়ে রঙীন জল আসছে। আরও ওপরের দিকে আছে সালফার পয়েন্ট। এগুলো না দেখে কি সার্ভে শেষ করা সম্ভব? কিন্তু সময়ে কুলোবে তো। এটা প্ল্যানে ছিল না। গাড়ির খরচ কুলোবে কি করে। অনেক আলোচনা করে শেষমেষ বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভোরবেলা বেরিয়ে পড়া হবে। জয়ন্তী নদীখাত ধরে সোজা হন্টন, যতক্ষণ না লক্ষ্যে পৌঁছনো যায়। আবার সময়ে ফিরেও আসতে হবে। ভয় কি! ভারতীয় শাস্ত্রবেত্তা বলে গেছেন, সত্য কর্মের সংকল্পে পুণ্যফল লাভ হয়। তাছাড়া "আমরা নই একা। তাই বুকের মাঝে রয়, দৃঢ় প্রত্যয়, আমরা করব জয় " নিশ্চয়। সকাল সকাল প্রাতরাশ সম্পন্ন করে বেরিয়ে পড়া গেল। জয়ন্তী নদীই আমাদের পথপ্রদর্শক, তার রজতশুভ্র নুড়ি পাথরের উপর দিয়ে এগিয়ে চললাম, উৎসের দিকে মুখ রেখে। কিছুটা পথ অতিক্রম করে পৌঁছলাম জয়ন্তীর সঙ্গে একটি উপনদীর সংযোগস্থলে। উপনদীর নাম হাওদা খোলা। স্থানটির নামও হাওদা। এটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনেকদিন আগে এখানে একটি ডলোমাইটের খনি এবং খনিজ পরিবহনের জন্য একটি ছোট রেলস্টেশন ছিল। এখন পরিবেশ দূষণের জন্য সরকার সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছেন। এখানে নদী মোটেই পুরো শুকনো নয়। বরঞ্চ বিনুনির মতো বেশ কয়েকটি জলধারা বহমান। জায়গায় জায়গায় বেশ উঁচু বোল্ডার জড়ো হয়ে রয়েছে। কিছু ধারা সরু হলেও গভীর ও খরস্রোতা। এগোতে গেলে এই স্রোত পেরিয়ে যেতে হবে। এক জায়গায় যেখানে নদীর ধারা সবচেয়ে সংকীর্ণ সেখানে একটা সরু গাছের গুঁড়ি ফেলা আছে। ঐ গুঁড়িতে পা রেখে পেরোতে হবে। তবে পদস্খলন হলে অস্থিচূর্ণ ও যাত্রা ভঙ্গ সুনিশ্চিত। স্থানীয় এক ব্যক্তি ওপার থেকে হাত ধরে সকলকে স্রোত পার হতে সাহায্য করছেন। ছেলেমেয়েরা একে একে পার হচ্ছে। এবার আমার পালা। একটু ভয় ভয় করছে। ভারসাম্য রাখতে পারব তো? ওপার থেকে দেখি এম. কে. বি. ইশারায় ডাকছেন, বসনিয়া চলে এসো। আমরা যখন স্নাতকোত্তর পড়তাম, তখন বসনিয়া হার্জিগোবিনার যুদ্ধ চলছিল। আমার মুখটা গোল আর নাকটা বোঁচা, বোধহয় বসনিয়ার মানুষের সঙ্গে মিল আছে। স্যার আমায় বসনিয়া বলে ডাকতেন। আমি হেসে সংকীর্ণ কাঠের ওপর পা রাখি। সম্বিত ফেরে যখন ছেলে ও মেয়ে উভয়ের গলায় নির্দেশ ভেসে আসে, "কাকু ম্যামকে ধরে নিন"। সামনে অতীত আর পিছনে বর্তমানকে রেখে অনায়াসে খরস্রোত পার হয়ে যাই। এবারে যাত্রা একটু উঁচুর দিকে। খানিকটা ওঠার পরে আবার সমতল। বুঝলাম এটি নদীর পাড়ের উঁচু ধাপ বা দ্বিতীয় টেরাস। আগে আমরা প্রথম বা নিচু টেরাসে ছিলাম। নদীবাঁক ধরে এগিয়ে চলি। পাহাড়, নদী সমনামী। জয়ন্তী শ্রেণীর কোলে জয়ন্তীর স্রোত। প্রকৃতি-পুঁথি চোখের সামনে খোলা। কোথাও পায়ের নিচে খাড়াই পাড়, ওপারে প্রশস্ত চর, কোথাও এর বিপরীত। নদীর বাম পারে পর্বত গাত্র রুক্ষ হয়ে উঠছে। দক্ষিণ পারে আমরা মানুষ সমান উঁচু ঘাসের মধ্যে দিয়ে চলেছি। এই রকম ঘাস থাকার অর্থ এই কদিনে আমরা জেনে ফেলেছি। এই অঞ্চলটি নিশ্চিত ভাবে হাতির বিচরণ ক্ষেত্র। তবে সূর্য আকাশে বেশ উঁচুতে উঠে পড়েছে। রোদ চড়া। সবাই শীতবস্ত্র খুলে কোমরে বাঁধছে। নাঃ এসময়ে হস্তীযূথের সঙ্গে মোলাকাত হবার সম্ভাবনা কম। এবাঁকে ওবাঁকে পাহাড়ের গায়ে শুষ্ক ঝোরা আর ধসের চিহ্ন খোদাই করা রয়েছে। এক অদ্ভুত দৃশ্য। ছোট মহাকাল প্রায় এসে গেছে। কিন্তু শরীর জানান দেয়, হাঁটা বেশি হয়ে যাচ্ছে। মনটা কিশোরী থাকলেও বেশ বুঝতে পারি, বয়সটা সব সময়ে সাথ দেয়না। এবার আমাকে ফিরতে হবে, নইলে আমার জন্য দলকে হয়রান হতে হবে। আজই ফেরা, তাই কোনো ঝুঁকি নয়। মহাকালকে নমস্কার জানিয়ে ফেরার পথ ধরি। আমার ছোট ছোট অভিভাবকেরা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়। জঙ্গলে কাউকে একা ছাড়া যায়না। তাই আমার সঙ্গে পাঁচজন ছাত্রছাত্রী ফিরতে শুরু করে। বাকিরা এগিয়ে যায় বড় মহাকালের সানুদেশে আয়রন পয়েন্টের দিকে।

    দল ভাগ হয়ে যায় বলে জয়ন্তী উপত্যকার দুই পৃথক রূপ দুই দলের চোখে ধরা পড়ে। পুনরায় আমরা নিচু টেরাসে নেমে আসি। প্রথমবার এগোনোর তাড়ায় যেগুলো চোখে পড়েনি এখন সেই সব দৃশ্য স্পষ্টভাবে ধরা দেয়। প্রথমেই নজর পড়ে নুড়ির রঙের দিকে। যে কোনো একটা রঙ যদি বেছে নিই, যেমন শুধু সবুজেরই কত বর্ণভেদ, হাল্কা, গাঢ়, অতি গাঢ়, কালচে। নীল, হলুদ, বাদামি, বেগুনি বা গোলাপি রঙের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা চলে। ধবধবে সাদা তো আছেই, যেজন্য জয়ন্তী উপত্যকা রজতাভ দেখায়। আবার কুচকুচে কালো কয়লার টুকরোও পেলাম। এযে রঙের খেলা। রঙের সমুদ্র। আশ্চর্য হয়ে দেখি প্রকৃতির হোলি। মনে পড়ে যায় ছাত্রী জীবনে এস. আর. বি. এর সঙ্গে সিকিমের ইউমথাং ফিল্ডের কথা। মে মাসে হিমবাহ উপত্যকায় রডোডেনড্রন ফুলের বনে ঠিক এমনই রঙের হোলি দেখেছিলাম। সেও এক নুড়ির দেশ। শুধু তফাৎ হল, হিমবাহ বাহিত বলে ওখানে নুড়িগুলি কৌণিক, আর এখানে জলবাহিত বলে নুড়িগুলি গোলাকার। হিমবাহের তৈরি এই কৌণিক নুড়িগুলির নাম হল মোরেন। হিমবাহ আর নদীর ক্ষয়ের এই তফাৎ আমাদের শিখিয়েছিলেন এম. কে. বি. তাঁর অননুকরণীয় ভঙ্গিতে, মানস সরোবর ভ্রমণের দৃশ্যকল্প তৈরি করে। ছেলেমেয়েরা এক এক রঙের নুড়ি এক এক দিকে জড়ো করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ওদের সঙ্গে আমিও যেন কিশোরীবেলাতেই ফিরে যাই। একজনকে কুড়িয়ে দিই সাদা ডলোমাইটের সন্দেশ, আর একজনকে দিই কোয়ার্টজাইটের গাঢ় বাদামি চকোলেট। হঠাৎ নদীর দক্ষিণ পারের পর্বত শ্রেণীর গায়ে নজর আটকে যায়, ওটা কী? এগিয়ে গিয়ে দেখি, এক জায়গায় নদীর জল বদ্ধ হয়ে তৈরি হয়েছে গভীর ঝিল। গভীরতা কতটা, বুঝতে জলে দুটো নুড়ি ফেলতেই বেরিয়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ। পান্নার মতো স্বচ্ছ সবুজ জলে রূপালি মাছের সন্তরণ, চোখ ফেরানো যায়না। মুগ্ধতা ছিন্ন হয় ছাত্রের প্রশ্নে। ম্যাম, এখানে মোরেন? তার হাতে একটি কালচে সবুজ কৌণিক প্রস্তর খণ্ড। পাহাড়ের গায়ে তাকাই। ঐ দেখ, পাহাড়ের গায়ে সবুজ পাথর। এটি হিমবাহ দ্বারা অন্যস্থান থেকে পরিবাহিত নয়, স্থানীয় ক্ষয়। তাছাড়া এটা জলবায়ুগত ভাবে হিমবাহের কাজের স্থান নয়। ভৌগোলিককে পারিপার্শ্বিক বিচার করতে হয়। থর্নবেরির দশ নীতির এক নীতি। এক লহমায় মন চলে যায় অতীতে। ইউমথাং-এ এস. আর. বি. কে কৌণিক প্রস্তরখণ্ড দেখিয়ে জিজ্ঞেস করছি আমি, স্যার এত বড় মোরেন? স্যর তাকিয়ে আছেন সিকিমের ডঙ্কিয়ালা শ্রেণীর দিকে, নির্দেশ করছেন, দেখ পাহাড়ের গায়ে ক্ষত, প্রস্তরখণ্ডটির সঙ্গে সমাকৃতি। হিমবাহের দ্বারা পরিবাহিত নয়, স্থানীয় ক্ষয়। থর্নবেরি যা তাঁর ছাত্রকে শিখিয়েছেন উত্তর আমেরিকার রকি পর্বতমালায়, এম. কে. বি. দেখেছেন ইউরোপের আল্পসে, এস. আর. বি. আমাকে দেখিয়েছেন সিকিমের পাহাড়ে, আমি তা আমার ছাত্রকে দেখাচ্ছি হিমালয়ের জয়ন্তীতে। আমার ছাত্র দেখাবে ভবিষ্যতের গর্ভে থাকা ভৌগোলিককে অন্য কোথাও। জ্ঞানের চর্চা সতত প্রবহমান, তা দেশ ও কাল নিরপেক্ষ।

    বড় মহাকালের দিকে অগ্রসর আমাদের অন্যদলটি ফিরতে শুরু করেছে। দুই দলের দেখা হতেই কোলাহল। সেই কবে বিভূতি ভূষণ লিখে গেছেন তুমি যা প্রথম দেখছ, তা তোমারই আবিষ্কার। দুই দলই নিজ নিজ আবিষ্কার অন্যকে জানাতে ব্যস্ত। বল্লরীদির চলভাষে রক্ষিত আয়রন পয়েন্টের ছবি নিয়ে আমি ব্যস্ত হয়ে পড়ি, প্রশ্ন করে করে খুঁটিনাটি বোঝার চেষ্টা করি, কেমন হলুদ সেডিমেন্ট? একটি ছাত্র এগিয়ে আসে, ম্যাম আপনিতো যেতে পারেননি। এই দেখুন আয়রন পয়েন্টের সেডিমেন্ট, আমি মেখে এসেছি। তাকিয়ে দেখি তার ঘন নীল ডেনিম কোমর থেকে হাঁটু হলুদ আবিরে রাঙানো। আমি হাসি, কি যে বলি, ভাষা খুঁজে পাইনা। আজ হিমালয়ের কোলে, আমি যেমন আমার শিক্ষকদের প্রতিমুহূর্তে অনুভব করছি, একদিন এরাও করবে আমাদের। মোহন চূড়ায় ফিরে আসি। ফেরার গাড়ি মাথায় মালপত্র বেঁধে প্রস্তুত হয়ে রয়েছে। মধ্যাহ্ন ভোজন শেষে ওঠার অপেক্ষা।

    বিদায় জয়ন্তী, যে অভিজ্ঞতা আর অনুভবের ঐশ্বর্য আমাদের ওপরে বর্ষণ করলে, তা ভোলার নয়। সবচেয়ে আশ্চর্য লাগে, প্রকৃতির এতকিছু বৈভব, তা অন্য কোথাও নয়, আমার এই বাংলাতেই আছে। মনে মনে বলি, হে প্রকৃতি মাতা এ পৃথিবীর যেখানেই যাই, আমি আমার আমিকে চিরদিন যেন বাংলায় খুঁজে পাই।



    চলবে...
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ৩১ মে ২০২৫ | ১৬৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • হীরেন সিংহরায় | ৩১ মে ২০২৫ ১৬:৫৪731804
  • একি হঠাৎ যেন শেষ হয়ে গেল। কী আশ্চর্য আবেশ থেকে গেল। অশেষ ধন্যবাদ।
  • Sara Man | ৩১ মে ২০২৫ ১৭:২৩731806
  • শেষ হয়নি হীরেনদা, জয়ন্তী শেষ হল, এরপর আবার অন্য জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যাব। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন