এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  অর্থনীতি  শনিবারবেলা

  • দিন গোনার দিন - পর্ব চার

    হীরেন সিংহরায়
    ধারাবাহিক | অর্থনীতি | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৫৩ বার পঠিত
  • ছবি: রমিত

     

    নিভিছে দেউটি

    এক গ্রিনসিল ক্যাপিটাল ( নভেম্বর ২০১১-মারচ ২০২১)

    তরমুজ, ফিনটেক ও প্রধানমন্ত্রী

    ব্রিসবেন থেকে প্রায় চারশ কিলো মিটার খাড়া উত্তরে বারনেট নদীর দু পাশে গড়ে উঠেছে সত্তর হাজার মানুষের শহর বাণ্ডাবের্গ; সেখানে উর্বরা জমিতে জন্মায় আখ, তার চিনি থেকে হয় রাম ; লোকমুখে ‘রাম সিটি’। এ ছাড়া আছে বিশাল তরমুজের চাষ, সব মিলিয়ে মিষ্ট জীবন, লা দলচে ভিতা ! এই শহরে এক তরমুজ চাষির পরিবারের সন্তান লেক্স ( আলেকজান্দার) গ্রিনসিল ছাত্রাবস্থায় লক্ষ করলেন অস্ট্রেলিয়ান গ্রীষ্মকালে , ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারিতে যে রাশি রাশি ঠেলা গাড়ি ভরা ফসল যায় স্থানীয় উলওয়ারথ অথবা ব্রিসবেনের কোলস সুপার মার্কেটে তার মূল্যটি বাবার অ্যাকাউনটে জমা হতে শীতকাল পড়ে যায়। ততদিন সংসারে টানাটানি। কলেজে পড়া ব্যয় বাহুল্য , স্কুল পাস করে করেসপনডেনস কোর্সে কুইন্সল্যান্ড ইউনিভারসিটি থেকে ল ডিগ্রি পেতে তাঁর ছ বছর লেগে যায়। ধার দেনা করে বাবা তাঁকে ইংল্যান্ডে ম্যানচেস্টার বিজনেস স্কুলে পাঠান। তারপরে মরগ্যান স্ট্যানলি এবং সিটি ব্যাঙ্কে কাজ করেন।

    ব্যাঙ্কিং শিখে মাঝে মধ্যে বাণ্ডাবের্গে পারিবারিক ব্যবসার কথা ভাবেন - তরমুজে খুঁৎ নেই , কোলস দেশের সবচেয়ে নামি সুপার মার্কেট ; কিন্তু বেচা দাম পেতে কেন ছ মাস কেটে যায় ! এর সুরাহা হয় না ? কোলস সুপার মার্কেটে তরমুজ পৌঁছে দিলেই তার দাম পাওয়া যাবে, ছ মাস অপেক্ষা নয়। নতুন ব্যবসার সন্ধানে সিটি ব্যাঙ্ক ছেড়ে খুললেন গ্রিনসিল ক্যাপিটাল, গড়ে তুলবেন সাপ্লায়ার ফাইনান্স। সাল ২০১১।

    একটু পিছিয়ে যাই।

    লেক্স গ্রিনসিলের প্রকল্প নতুন কিছু নয়। বিগত পর্বে , বারো বছর আগে আমাদের সাক্ষাৎ হয়েছে ইজমির তুর্ক এক্সিম ব্যাঙ্কের রাফায়েলের সঙ্গে যিনি ওপেল গাড়ির হাতল, ওয়াইপার সরবরাহকারীকে আগাম তার প্রাপ্য টাকা চুকিয়ে দিয়ে ছ মাস বাদে ওপেলের কাছে সেটি উদ্ধার করেন। তাঁর সমতুল্য কোন ব্যাঙ্কার বাণ্ডাবের্গে এই ব্যবসাটি করলে গ্রিনসিল সিনিয়র তাঁর তরমুজের দাম ডিসেম্বর মাসেই পেতেন।

    সাপ্লায়ার ফাইনান্স কোন রকেট সায়েন্স নয় , কয়েক হাজার বছর আগেই হাম্মুরাবি তাঁর শিলালিপিতে তার তোর তরিকা বাতলে দিয়ে গেছেন। রাফায়েলের মডেল তার থেকে কোন অংশে স্বতন্ত্র নয়। একজন ঋণ দাতা - একজন গ্রহীতা। মুশকিল হলো এর পরিমাণ , ভলিউম কম। ছোট মাপের ব্যবসা, গণ্ডার মারতে গেলে অনেক বায়ার অনেক সাপ্লায়ার চাই।

    আগের পর্বে এক বন্ডগুরুকে দেখেছি , যিনি সহস্রটি সাপ্লায়ারকে একই সঙ্গে জুড়ে দিয়ে বিরাট পরিমাণের বন্ড বানাতে চান; আমরা সে পথে কিছু খানা খন্দের দিকে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি নিরুত্তরে স্থান ত্যাগ করেছিলেন।

    এই শতাব্দীর গোড়ায় একটি নতুন শব্দের সঙ্গে আমাদের পরিচয় হলো – ফিনটেক ( Fintech) তার মূলে ফিন অর্থাৎ ফাইনান্স, তার সঙ্গে জুড়ল টেক বা টেকনোলজি। ইন্টারনেটের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে টেক কথাটি হয়ে পড়েছে জল বা বায়ুর সমার্থক; যার ভেতরে টেক নেই সে কোন ফাইনান্সই নয়।

    গ্রিনসিল ব্যাংক



    ফাইনান্সের ‘ফিন’ এবং টেকনোলজির ‘টেক’ জুড়ে লেক্স গ্রিনসিল বানালেন এক ফিনটেক কোম্পানি। হামবুর্গে দেখা পাওয়া সেই বন্ডগুরুর প্রদর্শিত পথে বহু সাপ্লায়ার ইনভয়েস জুড়ে এক নোট বা বন্ড বানিয়ে তাকে গ্রিনসিল বেচলেন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিঙ্গের বাজারে। তাঁর বৃহত্তম ক্রেতার নাম ? হ্যাঁ ক্রেদি সুইস! এই হাজার হাজার ক্রেতার কোন বিল কবে ডিউ তার নিখুঁত হিসেব রাখার শ্রমটি টেকনোলজির হাতে তুলে দেওয়া হল কিন্তু এই বিকি কিনির হাটের মানুষদের তো সেভাবে চেনা যায় না। আমাদের গল্পে রাফায়েলের লোকজন সেটি করতেন এখানে তা সম্ভব নয়। অতএব ? পরিত্রাতার ভূমিকায় দেখা দিলেন জাপানের বিশাল বীমা কোম্পানি , দেড়শ বছরের পুরনো টোকিও মেরিন অগ্নিবীমা দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল , তারপর জাহাজ , জাহাজে যা ওঠানো নামানো হয় সেই সব জিনিস এবং আজ জীবন ব্যতীত যে কোনো বস্তুর ইন্সিউরেন্স করে থাকেন। বন্ড ক্রেতার ঋণ শোধ না হবার কোন অমূলক আশংকা দূর করার জন্য গ্রিনসিল তাঁর বন্ডগুলি টোকিও মেরিন ইন্সিউরেন্স কোম্পানির পলিসি দ্বারা সুরক্ষিত করলেন। এবার ক্রেদি সুইস সেই বীমা সহ যে ফান্ড বানালো সেখানে কাতারে কাতারে নিবেশক টাকা জমা করলেন। ইউরোপিয়ান বাজারে যখন ব্যাঙ্কে টাকা জমা রাখলে সুদ দিতে হয় ( নেগেটিভ ইন্টারেস্ট ) এহেন সময়ে এমন ফান্ড পাওয়া গেল যারা সুদ দেবে ভালো , কোন কারণে দেনদার পেমেন্ট না করলে কোন হাই স্ট্রিট শপ নয় একেবারে টোকিওতে জাপানের বৃহত্তম বীমা কোম্পানি টোকিও মেরিনের দুয়োরে কড়া নাড়া যাবে। ফান্ডে অর্থের বন্যা ; আরও আরও, সেই নোট দিয়ে থলি ভরো। দুনিয়ার নামি ইনভেসটররা গ্রিনসিলের শেয়ারে টাকা লাগালেন, এমনকি জাপানের সফট ব্যাঙ্ক দিলেন প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার।

    একদিন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কে আমার প্রাক্তন সহকর্মী শন হানাফিনের ফোন পেয়ে গেলাম চেয়ারিং ক্রসের অদূরে এক নম্বর সাউদামটন স্ট্রিটে তার গ্রিনসিল ক্যাপিটালের অফিসে দেখা করতে। শন পুরনো সিটি ব্যাঙ্কার , সেই সূত্রে লেক্স গ্রিনসিলের সঙ্গে আলাপ ছিল। লেক্স তাকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড থেকে ফুসলে নিয়ে এসেছে ( শনের ভাষায়, সিডিউসড )। তার এলাহি অফিস দেখে সেটা বুঝলাম -, তার ঘরের কার্পেটে আমার পুরো হাঁটু অবধি ডুবে যায় প্রায় , পালিশ করা কাঠের টেবিল চেয়ার , কফি এলো মহার্ঘ্য পোরসিলানের কাপে। সঙ্গে করে আমাদের জার্মান ওয়াইন নিয়ে গিয়েছিলাম, আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে শন জানালে তারা হানোভারে একটি ব্যাঙ্ক কিনছে, নরডফিনানতস বাঙ্ক , একশো বছরের পুরনো। আমার ঐ জার্মান কানেকশানের দরুন কিছু বুদ্ধি পরামর্শ দেওয়া নেওয়া হলো।

    আলেক্সান্ডার (লেক্স) গ্রিনসিল



    গ্রিনসিল ফিনটেক কোম্পানি তুমি আমি ফিন বা ফাইনান্স বুঝি, এখানে টেকের ভূমিকাটা কি?

    সে হেসে বললে ঐ হাজার ইনভয়েসকে জোড়ার কাজ। ওখানেই টেকনোলজি কাজে লাগে।

    মনে পড়ল হামবুর্গে ক্রেদি সুইসের বন্ডগুরুকে বলেছিলাম বিজনেসে কেনা বেচা লেগে থাকে, ইনভয়েস যেমন আসে, পেমেন্ট হলে বেরিয়ে যায়। আপনার বন্ডের সুটকেস ভর্তি রাখতে গেলে নিরন্তর পুরনোকে বর্জন করে নতুন ইনভয়েস ভরতে হবে – সে শ্রম এবং ব্যয়সাধ্য। বুঝলাম গ্রিনসিলের টেকনোলজি সেই কঠিন কর্মকে সহজ এবং সস্তা করে তুলেছে।

    তাই এর নাম ফিন টেক।

    আরেকটা কৌতূহল থেকে গেলো - ব্যাঙ্ক কিনবে কেন? গ্রিনসিল ক্যাপিটাল সাপ্লায়ারকে অগ্রিম টাকা দেয়, তবে সেটা আসে ফাণ্ডকে ইন্সিউরড বন্ড বা নোট বেচে , সোজা কথায় পরের ধনে পোদ্দারি। জনতার অর্থ জমা নেয় না, ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের কর্কশ আলিঙ্গন থেকে বহু দূরে তার বাস। বললাম, এই তো ইনভয়েস জুড়ে তৈরি বন্ড বা নোট বাজারে ছাড়ছ, ক্রেদি সুইস একাই সব কিনে ফেলছে। ফাইনানশিয়াল টাইমসের আন্দাজ দশ বিলিয়ন ডলার! তবে ব্যাঙ্ক কিনে ডজন খানেক রেগুলেশনের ফাঁদে পড়তে চাও কেন? ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড এই অফিস থেকে এক মাইল দূরে কিন্তু তারা তোমাদের ঘাঁটায় না। এবার জার্মান ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঘাড়ের ওপরে নিঃশ্বাস ফেলবে; এটা কি ওটা কেন, হর হফতায় রিটার্ন পাঠাতে হবে। কাজ করেছি সে দেশে, ঝক্কিটা জানি।

    শন বললে, সেটা ঠিক। কিন্তু অন্য দিকটা ভাবো - নরডফিনানতস বাঙ্ক লেটার অফ ক্রেডিট খুলতে পারে, সরাসরি সাপ্লায়ারদের বিল অগ্রিম চুকিয়ে দিতে পারে। আমাদের ব্যাঙ্কের খাতায় সেটা রাখলে ভালো সুদের এই বিজনেসের দই টুকু ( আইসিং অন দি কেক ) ইনভেসটরকে না দিয়ে নিজেরাও খেতে পারি ! নরডফিনান্তস তাদের ডিপোজিটরকে সুদ দেয় যৎসামান্য অথচ ডিপোজিট বেস বিশাল। তাকে কাজে লাগাতে পারলে আমরা কিছু অ্যাসেট নিজের ঘরে রাখতে পারি !

    এ লজিক মানতেই হলো। জার্মান রিটেল সেভিংস ব্যাঙ্ক ( স্পারকাসে ) খদ্দেরকে সুদ দেওয়ার ব্যাপারে অতীব কঞ্জুস, আমি নিজে তার ভুক্তভোগী (টেনেটুনে ১.৫% সুদ দেয়, আনুষঙ্গিক ফি কাটে তিন মাস অন্তর) অন্যদিকে আপনি যদি বেলা বারোটায় টাকা জমা করেন, তার ক্রেডিট পাবেন পরদিন।

    ৯৩ বছরের পুরনো নরডফিনানতস বাঙ্ক নাম হারিয়ে গ্রিনসিল ব্যাঙ্ক নামে খ্যাত হল। জার্মান ব্যাঙ্কিং তদারকি কর্তৃপক্ষ বাফিন ( BaFin- Bundesanstalt für Finanzdienstleistungsaufsicht) ব্যাঙ্ক বিক্রির মঞ্জুরি দিতে বিলম্ব করে নি। চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেলের মূল মন্ত্র ‘ভানডেল দুরখ হানডেল ( বাণিজ্যেই পরিবর্তন ) ‘। সেটা পুতিনের রাশিয়ার প্রতি যেমন, লেক্স গ্রিনসিলের প্রতি সমান প্রযোজ্য। প্রসঙ্গত তাঁর আমলে ওয়্যারকার্ড নামের এক ফিন টেক কোম্পানি যখন শূন্য থেকে দুর্বার গতিতে স্টক মার্কেটের মহাকাশে উঠছে, লন্ডন ফাইনানশিয়াল টাইমসের তদন্তে তার অনেক গলদ ধরা পড়েছিল। জার্মান সরকার তাতে অসম্ভব ক্রুদ্ধ হয়ে একটি অগ্নিগর্ভ স্টেটমেন্ট দিলেন -–গুগল অ্যাপেলের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো চ্যালেঞ্জার এক জার্মান টেক কোম্পানির ওপরে লন্ডন নিউ ইয়র্ক অন্যায় ভাবে কাদা ছুঁড়ছে। বছর দুই বাদে ওয়্যারকার্ড জার্মান অর্থনীতির ইতিহাসে বৃহত্তম দেউলিয়া- প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার ভস্ম হলো; সে কাহিনী পরে কখনো , ওহ কিসসা ফির কভি।

    এদিকে গ্রিনসিল ক্যাপিটালের নাম দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ সরকারের সবচেয়ে শক্তিশালী আমলা (চিফ সেক্রেটারি, ইয়েস প্রাইম মিনিস্টার স্মরণ করুন) জেরেমি হেউড অল্পকালের জন্য মরগ্যান স্ট্যানলিতে যখন ডেপুটেশনে ছিলেন সেখানে কর্মরত লেক্স গ্রিনসিলের সঙ্গে কথা বলে, তাঁর চিন্তা ভাবনার পরিচয় পেয়ে তিনি অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি জানলেন আগুন ও চাকার ব্যবহারের মতোই মানব সভ্যতার আরেক এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের নাম সাপ্লায়ার ফাইনান্স! জেরেমি সরকারে ফিরে গিয়েই দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের দরজা গ্রিনসিলের জন্য হাট করে খুলে দিলেন ; প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনকে বললেন এই লেক্স ব্রিটিশ অর্থনীতিতে বিশাল পরিবর্তন ঘটানোর ক্ষমতা রাখে। লেক্স গ্রিনসিলকে দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে একটি অফিস দিলেন ক্যামেরন, তাঁর কার্ডে লেখা ‘ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ‘। ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রে অকল্পনীয়। ব্রিটেনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল মহলে তোলপাড় পড়ে গেল -কে এই ব্যক্তি যার সকল পরিকল্পনা দাঁড়িয়ে আছে একটি বস্তাপচা ফাইনাশিয়াল প্রোডাক্টের ওপরে ?

    লেক্স গ্রিনসিল প্রধানমন্ত্রীকে বললেন, এই যে জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা (NHS) বিভিন্ন ফারমাসির কাছে ডাক্তার , হাসপাতালের ব্যবহারের জন্য তিন ছয় মাসের কড়ারে ওষুধ কেনে , সেটা আমরা ফাইনান্স করতে পারি। যেদিন ফারমাসি এন এইচ এসকে ওষুধ পাঠাবে সেদিনই আমরা তার দাম দিয়ে দেবো, তাদের হা পিত্যেশ করে ছ মাস বসে থাকতে হবে না। সরকার আমাদের তিন বা ছয় মাস বাদে সেটা মেটাবেন। ডেভিড ক্যামেরন এই বৈপ্লবিক প্রস্তাব হোয়াইট হলের আমলাদের পাঠালেন, এই দেখুন, আপনারা এমনটা কখনো ভাবতে পেরেছেন? ফারমাসিগুলোকে টাকার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না? সরকার তিন ছয় মাসের ক্রেডিট পেয়ে যাবে, মুফতে ?

    সরকারি আমলারা অতোটা ঘাসে মুখ দিয়ে চলেন না। তাঁরা ঐ ভেবে দেখি বলে মাস দুই কাটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নোটের জবাবে লিখলেন, ব্রিটিশ সরকার তাড়াতাড়ি পেমেন্ট চুকিয়ে দিলেই তো হয়, গ্রিনসিল কেন সুদ বা ফি নেবে ? ক্যামেরন নিরাশ হলেন কিন্তু লেক্স গ্রিনসিলের অফিস রইল টেন ডাউনিং স্ট্রিটে। আসেন যান, নতুন প্ল্যান ভাবেন।

    ব্রিটিশ অর্থনৈতিক উদ্যোগে অসামান্য অবদানের পুরস্কারস্বরূপ রাজকুমার চার্লস সি বি ই ( কমান্ডার অফ দি ব্রিটিশ এম্পায়ার ) খেতাব দিলেন গ্রিনসিলকে। ব্রিটেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এলে প্রধানমন্ত্রিত্ব পদত্যাগ করলেন ডেভিড ক্যামেরন। এবার গুরু ঋণ চোকানোর পালা , লেক্স গ্রিনসিল বার্ষিক দশ লক্ষ পাউনড সাম্মানিকের বিনিময়ে ক্যামেরনকে গ্রিনসিল কোম্পানির পরামর্শদাতার পদে প্রতিষ্ঠিত করলেন মাসে দু দিন হাজিরা দিলেই যথেষ্ট , কাজটা আসলে লবিইং , একে ওকে দুটো কথা বলা, সুপারিশ সিফারিশ করা। এত বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সরকারের যে কোন দফতরে চেয়ার টেনে বসতে পারেন। গ্রিনসিল ক্যাপিটালের ভ্যালুয়েশন সত্তর বিলিয়ন ডলার, আসন্ন আই পি ওর সুবাদে ডেভিড ক্যামেরনের সাত কোটি ডলার পকেটে আসার পথ সুপ্রশস্ত।

    ২০১৮ সালে ওয়ারশতে ফরফেটিং কনফারেন্সে আলাপ হল একটি অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত যুবকের সঙ্গে, তার নাম মিশেল মাইলাক ( Meylacq)। ফরাসি মাতা, রাশিয়ান পিতা। চারটের বেশি ভাষায় সে সমান স্বচ্ছন্দ, সাহিত্যে তার দখল চমকপ্রদ। দস্তয়েভস্কি, কামু, টোমাস মান, শেক্সপিয়ার সে মূল ভাষায় পড়েছে , কোটেশন ছাড়ে অবলীলাক্রমে। আমার মতন চালাক বাচালকে মূক করে দিয়েছে ! মিটিঙের ফাঁকে ফাঁকে নানান গল্প হতো। সে তখন কাজ করে আমেরিকান ইন্সিউরেন্স গ্রুপের লন্ডন শাখায়। তারা ইন্সিউর করে সে মুখ্যত ট্রেড ফাইনান্স, আমার চেনা প্রিয় বিষয়। বয়সের ব্যবধান সত্ত্বেও তার সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুবছর বাদে পারিবারিক ভ্রমণে আমার সেন্ট পিটারসবুর্গ যাত্রার পূর্বে মিশেল আমাকে অজস্র তথ্য সরবরাহ করে যেমন কেন এরমিতাজ প্যালেসের শ্বেত ভোজন কক্ষের ঘড়িটি ২৬শে অক্টোবর ভোর ২.১০ এ থেমে আছে ( সেই মুহূর্তে বলশেভিক রেড গারডস প্যালেসে ঢুকে পড়ে) , পুশকিন কাফের কোন চেয়ারে তিনি বসতেন!

    মিশেল মাইলাক, ওয়ারশ, ২০১৬



    কিছুদিন বাদে মিশেল ফোন করে জানালো সে গ্রিনসিল ক্যাপিটালে যোগ দিয়েছে। বললাম, শন হানাফিনকে চিনি। তোমাদের এক বড়ো সায়েব তবে আমার নাম করে তার সঙ্গে গিয়ে দেখা করো।

    কোন রিসেপশনে দেখা হলে গ্রিনসিলের কথা হয়।

    এমন সময়ে কোভিদের আক্রমণ সব ব্যবসার অবস্থা সঙ্গিন। লেক্স গ্রিনসিলের উপদেষ্টা ডেভিড ক্যামেরন তখন নতুন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের দফতরে গিয়ে ধরাধরি করলেন ; দেশের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে যেমন দেওয়া হচ্ছে , গ্রিনসিলকেও সম্যক সরকারি অর্থ সাহায্য দেওয়া হোক। বর্তমান ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মতের মিল হলো না। ক্যামেরনের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে লেক্স গ্রিনসিল তাঁর ডাউনিং স্ট্রিটের অফিসটি খুইয়েছেন , তাতে ক্ষতি তেমন হয় নি – প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং তাঁর জন্য দরবার করে বেড়াচ্ছেন। সৌদি আরবে ক্যামেরনে ও মোহাম্মদ বিন সলমানের সঙ্গে মরু সাফারিতে গেলেন লেক্স গ্রিনসিল।

    কোভিদের কারণে গৃহবন্দি হয়ে আছি। সঞ্জীব গুপ্তা নামের এক ভারতীয় ব্যবসায়ী ও তাঁর লিবার্টি হাউস কোম্পানির নাম খুব বাজারে চাউর। তিনি একধার থেকে বিভিন্ন দেশের পুরনো লজঝর স্টিল কারখানা ( ইংরেজিতে বলে আনলাভড অ্যাসেট ) , এমনকি আরসেলর মিতালের কিছু কোম্পানি কিনে তাদের ভোল ফেরাচ্ছেন, মুনাফা বাড়াচ্ছেন। টাটা স্টিলের গলগ্রহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কিনে নিয়ে তাঁদের উদ্ধার করবেন এই মর্মে আলোচনা চলছে। সঞ্জীব গুপ্তাকে কেউ কেউ ব্রিটিশ ইস্পাত শিল্পের পরিত্রাতা আখ্যা দিয়েছেন।

    কিছু প্রশ্ন উঠলো স্বাভাবিকভাবেই। সঞ্জীব গুপ্তার আমব্রেলা কোম্পানি গুপ্তা ফ্যামিলি গ্রুপের ( GFG) এই দুর্বার উত্থানের মূলে অর্থের রসদ আসছে কোথা থেকে ? ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও লন্ডনের ফাইনানাসিয়াল টাইমসের অঙ্গুলি নির্দেশিত হল গ্রিনসিল ক্যাপিটালের দিকে। জানা গেল তাদের খাতায় গুপ্তা ফ্যামিলি গ্রুপের মোট ধার পাঁচ বিলিয়ন ডলারের মতন – তাদের ব্যবসা ইনভয়েস ডিসকাউনটিং , সরাসরি টাকা ধার দেওয়া তো নয়! লিবার্টি স্টিলের দ্রুত ধাবমান গাড়ি থামিয়ে বনেট খোলা মাত্র দেখা গেল গ্রিনসিল কোন ইনভয়েস ছাড়াই অথবা কাল্পনিক ইনভয়েসের ভিত্তিতে অথবা দূর ভবিষ্যতে কোন এক্সপোর্ট হবে তার আধারে অর্থ সরবরাহ করেছে সঞ্জীব গুপ্তার কোম্পানিকে অনেকটাই আসছে জার্মান গ্রিনসিল ব্যাঙ্ক থেকে।

    শন বা মিশেলের অনেকদিন কোন খবর ছিল না। মার্চ ২০২১ মিশেলের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পেলাম – কথা বলতে পারি ? মিশেল বললে তুমি কতদূর জানো তা জানি না ; গ্রিনসিল ক্যাপিটাল অ্যাডমিনিসট্রেশনে গেছে, এ মাসের ৩১ তারিখ কোম্পানিতে আমার শেষ দিন।

    তোমাদের নানা সঙ্কট চলছিল জানি কিন্তু ইমিডিয়েট কজ কি? হোয়াটস দি ট্রিগার?

    মিশেলের উত্তরের সামারি এই রকম: সাপ্লায়ারদের ফাইনান্স করার পরে যে প্রাপ্য টাকা ( রিসিভেবল ) সেটা ইন্সিউর করতো টোকিও মেরিন, সেই বীমার ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে ক্রেডিট নোট বা বন্ড যা কিনেছে ক্রেদি সুইস ফান্ড, গ্লোবাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (GAM)। তারা কেউ কোন ইনভয়েস দেখে নি, দেখতেও চায় নি কারা কেনে, কারা বেচে, কতদিনের কড়ারে। দেখেছে কেবল ইন্সিউরারের নাম- টোকিও মেরিন! তাদের কে না চেনে? কিন্তু টোকিও মেরিন? তারা এই দিসতে দিসতে ইনভয়েস, চালানের বীমা বানালো কিসের ভিত্তিতে? ডিউ ডিলিজেন্স কথাটা কি কেবল কেতাবে লেখা থাকে? এখন এই গুপ্তা ফ্যামিলি গ্রুপ ও গ্রিনসিলের যোগাযোগের ব্যাপারে ফাইনানশিয়াল টাইমসের খোঁচাখুঁচির ফলে টোকিও মেরিন ইনভয়েস ফাইনান্সিঙ্গের বিষয়ে অপরিসীম শঙ্কিত হয়ে তাদের পলিসি বাতিল করে দিয়েছে ; যেহেতু ক্রেদি সুইসের দশ বিলিয়ন ডলারের ফান্ড টোকিও মেরিনের পলিসির পিলারের ওপরে দাঁড়িয়ে ছিল সেটি এখন বন্ধ। অর্থের রক্ত সরবরাহ বন্ধ হলে কোন অর্থ প্রতিষ্ঠান সচল থাকতে পারে না।

    গ্রিনসিল ব্যাঙ্ক এখন জার্মান বাফিনের দখলে- তাদের টাকার ভাঁড়ারেও কুলুপ।

    মার্ক টোয়েন বলেছিলেন, আকাশে যখন ঠা ঠা রোদ্দুর, ব্যাঙ্কার আপনাকে তার ছাতা বাড়িয়ে দেয়। বৃষ্টির পয়লা ফোঁটাটি পড়া মাত্র সে ছাতাটি গুটিয়ে নেয়। ইন্সিউরেন্স ব্যবসার সঙ্গে পরিচয় থাকলে তিনি ঈদৃশ মন্তব্য করতেন।

    তুলনামূলক ক্রোনোলজি

    *১৯৯৯ সালে তুর্ক এক্সিম ব্যাঙ্কের রাফায়েল আমাদের দেখিয়েছিলেন কীভাবে সাফল্যের সঙ্গে সাপ্লায়ার ফাইনান্স ব্যবসা চলতে পারে। তাঁর মরাল অফ দি স্টোরি -খদ্দেরকে জানো।

    *২০০০ সালে হামবুর্গে ক্রেদি সুইসের এক বন্ডগুরু ইনভয়েসের বান্ডিল বেচে বন্ড বানানোর প্রকল্প করছিলেন। আমাদের মতন কিছু প্রাকটিশনার প্রতিবাদী কণ্ঠে বলেছিলাম , এ ব্যবসা সঠিক কিন্তু বান্ডিল বাঁধার পথে অনেক শ্রম ও কাঁটা আছে। এগারো বছর বাদে লেক্স গ্রিনসিলের ফিনটেক সেই শ্রম কমিয়ে ফেলেছিল কিন্তু কাঁটা উপড়ে দিতে পারে নি। মরাল অফ দি স্টোরি - ডিউ ডিলিজেন্সের বিকল্প নেই।

    *২০০১ সালে আমরা দুবাই/লন্ডনে সোলো ইন্ডাস্ট্রিজের ক্ষেত্রে সেই কাঁটার মুখোমুখি হয়েছিলাম; অজস্র বিল ইনভয়েস দিয়ে সুটকেস ভর্তি করার তাড়ায় অনেক জঞ্জাল ঢুকে যেতে পারে। পুনরায় বল সবে – যাহা করিব দেখিয়া শুনিয়া করিব কেননা নিরীক্ষণের কোন বিকল্প নাই! জার্মানে একটা কথা আছে – বিশ্বাস করা ভালো, খুঁটিয়ে দেখাটা আরও জরুরি ( ফেরত্রাউয়েন ইস্ট গুট আবার কন্ট্রোলে ইস্ট বেসার )।

    হতাহত

    ক্রেদি সুইস

    যে কাণ্ডে ক্রেদি সুইস জড়ায় নি সেটা কোন স্ক্যানডালই নয়। তাদের ফান্ড বন্ধ করার পরে নিবেশকদের কতোটা লোকসান হয়েছিল সঠিক জানা যায় না তবে শেষ হিসেব অনুযায়ী দশ বিলিয়ন ডলারের আশে পাশে। নিজের পায়ে অজস্র বার কুড়ুল মেরেও ক্রেদি সুইস টিকে ছিল বহু বছর রক্তকরবীতে ব্যাঙের টিকে থাকাটা রাজা শেষ করে দিয়েছিলেন, তেমনি ক্রেদি সুইসের ওপরে শেষ আঘাতটা হানলেন লেক্স গ্রিনসিল। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে আরও দুবছর চলার পরে ২০২৩ সালে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ সুইজারল্যান্ডের ( ইউ বি এস ) দ্বারা অধিগৃহীত হয়ে ক্রেদি সুইস তার নাম হারায়, হাজার দশেকের বেশি লোকের চাকরি গেল। ইউ বি এস এখনো সেই গ্রিনসিল ফান্ডের ক্রুদ্ধ নিবেশকদের হ্যাপা সামলাচ্ছে।

    নরডফিনান্তস

    নর্ডফিননাতস ব্যাংক, হ্যানোভার



    জার্মান নিয়ন্ত্রক বাফিন শতবর্ষের প্রাচীন ব্যাঙ্ক নরডফিনান্তস বন্ধ করলেন; হাজারের বেশি লোকের কাজ গেল। হানোভারের সাধারণ কিছু মানুষ, সেই ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার , মেসেঞ্জার, ক্লিনার, সেভিংস কারেন্ট অ্যাকাউনট বুক কিপার কখনো কি জানলেন বাণ্ডাবের্গের তরমুজ চাষির ছেলে গ্রিনসিল ও তাঁর আশ্চর্য আবিষ্কার সাপ্লায়ার ফাইনান্সের বিফলতার কারণে তারা কর্মহীন হলেন? আমানত কারিদের এক লক্ষ ইউরো ( দশ লক্ষ টাকা ) অবধি সরকার দ্বারা সুরক্ষিত এর বেশি যাদের জমা ছিল সেটি মার গেল। স্থানীয় বা আমাদের হিসেবে পাড়ার ব্যাঙ্কে জার্মান সার্বজনিক সংস্থা জমেন পৌরসভা, চার্চ ও চ্যারিটিগুলির টাকা জমা রাখার ট্র্যাডিশন বহু দিনের। সে নিয়ে অনেক গল্প আছে তবে এখানে নয়।

    বাফিন

    সাত বছর যাবত নরডফিনান্তস তাদের যাবতীয় জমা ও ঋণের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব দিয়ে সাপ্তাহিক ও বিস্তারিত মাসিক রিটার্ন পাঠিয়েছে জার্মান ব্যাঙ্ক নিয়ন্ত্রক বাফিনের অফিসে। সেটি বার্লিনের কর্তা ব্যক্তিরা পড়েছেন কিনা যে জানে তবে যথারীতি ফাইল করেছেন। গ্রিনসিল ব্যাঙ্কের আশি শতাংশ লোন যে একটিমাত্র কোম্পানি, গুপ্তা ফ্যামিলি গ্রুপের খাতায় যাচ্ছে ( যাকে আমরা বলি কনসেনট্রেশন রিস্ক) সেটি লক্ষ করার সময় তাঁরা পান নি। সঞ্জীব গুপ্তা, গ্রিনসিল ক্যাপিটাল ও গ্রিনসিল ব্যাঙ্কের অশুভ ট্রিপল আঁতাঁত নিয়ে ফাইনানশিয়াল টাইমস বেয়াড়া প্রশ্নগুলি তুললে বাফিনের টনক নড়ে ; ততদিনে আস্তাবল হতে অশ্ব পলায়িত।

    সফটব্যাঙ্ক

    জাপানের সফট ব্যাঙ্কের ক্ষতি দু বিলিয়নের বেশি। তবে তাদের কাছে এ খুচরো পয়সা মাত্র, স্মল চেঞ্জ। সফট ব্যাঙ্কের ভিশন ফান্ডের লোকসান বিশ বিলিয়ন ডলারের বেশি। সি ই ও মাসাওশি সন এখানে ওখানে এমনি খোলামকুচি ছড়িয়ে থাকেন, কোন বাজিটা কখন লেগে যায় !

    গ্রিনসিল

    আমাদের শন ও মিশেল সহ গ্রিনসিল ক্যাপিটালের পাঁচশ জনের কাজ গেল কিন্তু তারা যাদের ফাইনান্স করেছে এমন অনেক প্রতিষ্ঠানে প্রচুর লোক ছাঁটাই হয়েছে, বিশেষ করে সঞ্জীব গুপ্তার ডজন ডজন কারখানায়।

    (ক্রমশ)

    পরের পর্বে ফার্স্ট ব্র্যান্ড ও ট্রাইকলরের মহাপ্রস্থানের পথে যাত্রা

    পুঃ
    গ্রিনসিল ক্যাপিটাল বন্ধ হবার দু মাসের ভেতরে শন হানাফিন লন্ডনে সিলভার বারচ ফাইনান্স নামের এক ইনভেনটরি, ইনভয়েস ডিসকাউনটিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে, বর্তমানে সি ই ও। আমার চেনা আরও কয়েকজন সেখানে যোগ দিয়েছেন। সেকেন্ড চান্স ?

    মিশেল মাইলাক একটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে এক বছর কাটিয়ে বর্তমানে ফিনভেরিটি নামের একটি সংস্থায় কর্মরত। তাদের ব্যবসা সরবরাহকারীকে অগ্রিম অর্থ জোগান দেওয়া।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দেবাঞ্জন | 2401:4900:314b:2ad1:8034:90a5:ef4e:***:*** | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:১৪736489
  • যথারীতি অসাধারণ হয়েছে হিরেনদা l আপনার প্রতিটা লেখা থেকেই নতুন কিছু শিখছি l আচ্ছা ব্রিসবেনের নামটা দেখে প্রথমেই এসেজ সিরিজের কথা মনে পড়ে গেলো l আপনি কি আপনার দেখা এসেজ সিরিজ নিয়েও একটা লেখা নামাবেন নাকি ?  
  • দেবাঞ্জন | 2409:4060:2d9f:cd78:3e1c:de3f:5122:***:*** | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:১৩736494
  • জার্মান রিটেল সেভিংস ব্যাঙ্ক ( স্পারকাসে ) খদ্দেরকে সুদ দেওয়ার ব্যাপারে অতীব কঞ্জুস, আমি নিজে তার ভুক্তভোগী (টেনেটুনে ১.৫% সুদ দেয়, আনুষঙ্গিক ফি কাটে তিন মাস অন্তর) - হিরেনদা এতো কম সুদ !!! পেনশনার সিনিয়র সিটিজেন আছেন যারা ব্যাঙ্কের এফডি করে তার উপরেই নির্ভর করেন শেষ জীবনের জন্যে তারা তাহলে কি করবেন ? অন্যদিকে ইনফ্লেশন সামলাবেন কিভাবে এতো কম সুদে ? আচ্ছা এসবিআই জার্মানী আর চীনা ব্যাংকগুলো নিশ্চয় অনেক বেশী সুদ দেয় তাইতো দাদা ?  
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন