এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ (৩)

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ১১ নভেম্বর ২০২৪ | ১৬৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • 1 | পর্ব ২ | পর্ব ৩
    ছত্তিশগড়ের গেঁয়ো ব্যাংকঃ স্মৃতির কোলাজ (৩)
    শাঁকচুন্নীর রহস্যভেদ
    ফিরে যাচ্ছি সেই আদি উপাখ্যানে, সেই ছত্তিশগড়ের গ্রামীণ ব্যাংকের চাকরি  জয়েন করার প্রথম দিনে। আরে, সেই যে মাঝরাতে এক শাঁকচুন্নী আমার গলা জড়িয়ে ধরেছিল, আর আমার বাকি রাত কেটেছিল ভয়-বিস্ময় মিলিয়ে আধো তন্দ্রায়, আধো জাগরণে।  
    পরের দিন ভোর বেলা। তলপেটে চাপ বাড়ছে। কিন্তু ব্যাংকের চাপরাশির পরামর্শ মেনে বারান্দায় গিয়ে সেখান থেকেই নীচের ধুলাগড়ে ছ্যার-ছ্যার? রুচিতে বাঁধে, তবু একবার বাইরে গিয়ে উঁকি দিলাম।
    দূর! ভোর হয়ে গেছে। গ্রামের ভোর। লোকজন উঠে পড়েছে। শুরু হয়ে গেছে –‘গরু চরাতে পাঁচন হাতে, রাখাল ধেয়ে যায়’।  মুখোমুখি বাড়িটির খাপরার চাল, মাটির দেয়াল, মাটির বারান্দা। সে বাড়ির এক মহিলা বাড়ির  বারান্দা ঝাঁট দিয়ে গোবর লেপছেন। আমাকে দেখে প্রথমে অবাক হলেন, তারপর মাথায় ঘোমটা টেনে ফের নিজের কাজে মন দিলেন।
    লজ্জা পেয়ে ঘরে ঢুকে বিছানায় বসে ভগবানকে ডাকার মত করে চাপরাশি গোরেলালের ধ্যান করতে লাগলাম—এসো হে, এসো হে, এসো হে! আমার লাজ-শরম রক্ষা কর প্রভু! আর যে পারি না।
    অন্যমনস্ক হবার চেষ্টায় পুরনো কোন হাস্যকর ঘটনা মনে করার চেষ্টা করলাম।  
    যা মনে এলঃ বরানগর মিশনের আশ্রমবাসের দিনে আমার রুমমেট সুব্রত গাইতো, তখনকার  একটি বাংলা হিট গানের--  ‘এখানে সবাই ভালো, আলোতে মিলায় কালো, ভালোবাসার চশমা দিয়ে দেখতে যদি চাও’-- ছ্যাবলা প্যারডি। কী যেন সেটা? হ্যাঁ, মনে পড়ছে।
    “ও গিন্নি লম্ফ ধর, আমার যে পড় পড়,
     দু’দিন ধরে ভুগছি আমি পেটেরই জ্বালায়”।
    কিন্তু যেই মনে পড়ে গেল যে তার সঙ্গে সোমেন বিছানার চাদর দিয়ে ঘাগরা বানিয়ে বৈজয়ন্তীমালার অক্ষম অনুকরণে নাচতো—ব্যস, কুলকুলিয়ে হাসি এবং আমার সর্বনাশের জোগাড়।
    শীতের দিনেও কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। এমন সময় দরজায় কেউ শেকল নাড়ল। বেরিয়ে দেখি আমার ত্রাণকর্তা,-- ভগবান আছেন।
    --চলুন সাহেব, গামছা, জামাকাপড়, সাবান নিয়েছেন তো?
    আমরা বারান্দা থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করি আর গোরের কানে করুণ নিবেদন করি—জলত্যাগ না করলেই নয়! গোরে অবাক হয়। রাত্তির থেকে চেপে রেখেছেন? বলেছিলাম না বারান্দা থেকে--?
    --আমি ঠিক বিশ্বাস করিনি।
    --শহরের অভ্যেস ভুলে যান। এই দেখুন, সবগুলো ঘরের সামনে বারান্দার নীচে খানিকটা ধুলো ভেজা। সবাই যা করে, তাই তো করবেন!
     সত্যিই তো, সব বাড়ির সামনে একই ধূলাচিত্র, ইলিপটিক্যাল – কোথাও একাধিক।
    মনে পড়ল বাদল সরকারের ‘এবং ইন্দ্রজিতের’ সেই কবিতাটা—“---সব্বাই করে তাই, সব্বাই সব্বাই”।
    হুঁ, সত্তরের দশকের গোড়ায় শুনতাম—ডি-ক্লাস হতে হবে। কৃষকসমাজের মধ্যে জলের ভেতর মাছের মত থাকতে হবে। মানছি, এটা ১৯৭৭ সাল। দশকটি শেষ হয়নি। কিন্তু আমি তো চাকরি করতে এয়েচি, কৃষিবিপ্লব করতে নয়।  তাহলে?
    আমাকে সকালের ধূলোভরা হাঁটা পথে, একটু আগে রাস্তা দিয়ে চলা গোরুবাছুরের বর্জ্যবস্তুর গন্ধে আমোদিত হাওয়ায় ঘ্রাণ নিতে নিতে যেতে হবে পুকুরপাড়ে। সেখানে বেশরমের ঝোপের আড়ালে বসে প্রাতকৃত্য সেরে পুকুরের ডুব দিয়ে বাসি জামাকাপড় কেচে শুকনোগুলো পরে একই পথে ফিরে আসা অভ্যেস করতে হবে।  
    কিন্তু গোরেভাই, আমার যে এখনতখন অবস্থা। গোরে আশ্বাস দেয়—ব্যস, আর দু’কদম।   
    গাঁয়ের লোকের দু’কদম যে আসলে দু’শ কদম—আমার অবস্থায় অনন্তকাল।
    শেষে একটা বাঁক পেরোতেই চোখে পড়ল বিশাল পুকুর। অনেক নারীপুরুষ পানকৌড়ির মত ডুবছে উঠছে। গোরে ব্যাখ্যা করে--হুই উলটো দিকের ঘাটটা হল জেনানা ঘাট, মানে মেয়েদের।  আমরা এসেছি মরদ মানে ব্যাটাছলেদের ঘাটে। চটপট মগে করে জল ভরে --ওই ডানদিকে বেশরমের ঝাড়ি দেখছেন—তার আড়ালে গিয়ে বসে জলসেবা সেরে আসুন। আপনার  ধোয়া জামাকাপড়, সাবান ব্রাশ-পেস্ট সব এপারে শুকনো মাটিতে কাঁকড়বালির উপরে নামিয়ে রাখুন,  আমি দেখছি।
    কথামত চলে গিয়ে খাল্লাস হলাম। টের পেলাম, এখানে আরও অনেক অশরীরী ঝোপেঝাড়ে বসে আছেন। শুনতে পাচ্ছি তাদের কাশি, থুতু ফেলা এবং জলসেবার শব্দাবলী।  
    আমার কপালে প্রথম গ্রাসে মক্ষিকাপাত। পথ ছেড়ে পাশের ঢালু জমিতে পা রেখেছি। অনভ্যস্ত পদক্ষেপে কাদা এড়িয়ে বেশরমের ঝোপের পেছনে পা ফেলতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছি। ফলে হাতের মগ থেকে খানিকটা জল চলকে মাটিতে পড়ে গেল। কিম কর্ত্যবম্‌?
    ছোটবেলায় সংযুক্ত পরিবারে রুটি আর আলুর ঘ্যাঁট দিয়ে জলখাবার খেতে গিয়ে উপদেশ শুনেছিঃ হিসেব করে তরকারি খরচ কর, এখনও অনেকে বাকি রয়েছেন।
    সেই শিক্ষা সম্বল করে হিসেব করে জলখরচ করে উঠে এলাম পুকুরঘাটে। মনটা একটু খচখচ করছিল। কিন্তু সামনেই তো পুকুর, নেমে পড়লাম। একটু এগিয়ে ডুব দিলাম। গোরে জানতে চাইল সাঁতার জানি কিনা, নইলে আর এগুনো ঠিক হবে না। এই পুকুর দুই বাঁশ গভীর।
    ও শিখিয়ে দিল কেমন করে কোমর জলেই চান সারা, ঘাটের পাথরে কাপড় কাচা সব সারা যায়। আরও বলল—ব্রাশপেস্ট ভাড়ার বাড়িতে যথাসময়ে ব্যবহার করতে। এখানে সবার মত পুকুরপাড়ের নিম বা ববুলের ডাল ভেঙে একটু চিবিয়ে ‘মুখারি’ করুন। তারপর পুকুরেই কুলকুচি করে মুখ ধুয়ে নিন। সবাই যেমন করছে।
    মরেচে! এই জলে স্নান করছি। গায়ে সাবান মেখে ডুব দিচ্ছি। কাপড়ও কেচে নিচ্ছি। আর এই জলে কুলকুচি করব? আবার সেই জল এখানেই পিচ করে ফেলব?
    সব্বাই করে তাই, সব্বাই সব্বাই!  
    বুঝতে পারলাম-- কোলকাতার শহুরে উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেরা বিপ্লব করার নেশায় কলেজ থেকে গাঁয়ে গিয়ে কেন বেশিদিন টিকতে পারেনি।
    এবার ফেরার পালা। সুর্য আকাশে দীপ্তিমান। সবাই ফিরছে। মেয়েরা ভিজে শায়া তুলে ঠিক বুকের একটু উপরে বেঁধে ঘরে ফিরছে। ছেলের দলের পরনে ডোরা কাটা প্রায় হাঁটু অব্দি ঢোলা আন্ডারওয়ার। তাকে ইজেরও বলতে পারেন, তবে জাতে আজকালকার বারমুডার গ্রামীণ এবং গরীব আত্মীয়।
    --কাল রাত্তিরে ভাল ঘুম হয়েছিল?
    --তা হয়েছিল, কিন্তু একটা ঘটনা—
    কিসের ঘটনা? গোরেলালের চোখ ছোট। আমি সসংকোচে কিন্তু কিন্তু করে গতকাল মাঝরাত্তিরে পেত্নী দেখার কাহিনী বলে ফেলি। তারপর সাফাই দেয়ার ভঙ্গিতে বলি—অবশ্য আমার ভুলও হতে পারে। ঘুমের মধ্যে কী না কী দেখেছি!
    গোরে মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে দুলে দুলে হাসে। তারপর বলে- আপনি ভাগ্যবান, প্রথম রাতেই দেবীদর্শন হল। কোই ভূত-প্রেত-চুড়েল নহীঁ—উয়ো তো এক দেবীজি হী থী।  তারপর গলার আওয়াজ নীচু করে বলে-- আর কাউকে বলেননি তো? ঠিক আছে, ঘর কী বাত, পাঁচকান না হলেই ভাল। মেয়েটির ইজ্জতের সওয়াল।
    --দেবীজি? মানে?
    --শুনুন, ও হল এই পাড়ারই এক ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ে। আমাদের ফিল্ড অফিসার অনিল ওকে সিদ্ধ করেছে, হাঁ সাধ লিয়া। বেটি কেলটে অনিলের মুহব্বতে এমন দিওয়ানী যে বাবা-মাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মাঝরাতে চলে আসে।  
    যাহোক, আজ অনিল ফিরে আসছে। ওকে বলে দেব, মেয়েটাকে সমঝে চলতে বলুক। ইতনা পাগলপন ভী ঠিক নহীঁ। পর ‘মিয়াঁ বিবি রাজি, তো ক্যা করেগা কাজি’?
    আপনার জন্য  মঙ্গল সিংয়ের চালে একটা ঘর পেয়েছি, সঙ্গে পায়খানা আছে। সন্ধ্যেয় ব্যাংক বন্ধ হলে আমি আপনার  বোরিয়া-বিস্তর (বিছানাপত্তর) ওখানে পৌঁছে দেব। এখন চটপট তৈরি হয়ে নিন। আমার সঙ্গে ব্যাংকের পাশে মল্লু-ভাঁচার (মল্লু-ভাগনে’র) হোটেলে যাবেন। সেখানে খাতা খুলবে। সকাল সন্ধ্যে চায়-নাস্তা আর দু’বেলা ভাত-রুটি-ডাল-তরকারি। রোজ লিখে রাখবে, আপনি চেক করে লঘু হস্তাক্ষর (ইনিশিয়াল) করে দেবেন।  মাইনে পেলে হিসেব চুকিয়ে দেবেন’খন। কোন অসুবিধে হলে আমি তো আছিই।  
    যাচ্চলে, বাবা যে বলেছিল স্বাবলম্বী হতে, নিজে বাসন ধুয়ে রান্না করে খেতে! তাই জনতা স্টোভ, কুকার, থালাবাটি, হাতাচামচ আর চায়ের সঙ্গে দিয়েছে। নগদ নারায়ণ কম, যা আছে সেটা অসুখ-বিসুখ ইত্যাদি এমার্জেন্সির জন্য। এখন মাসের পয়লা হপ্তা , হোটেলে খেতে হলে তো আদ্দেক মাসেই ট্যাঁকখালি। ভাগ্যিস গোরেলাল ছিল। ওকে যে কী বলে ধন্যবাদ দিই! গোরে অবাক হয়।
    —আরে আমি কিছু করিনি। এখানে সব্বাই তাই করে। স্কুলের গুরুজিরা, ব্যাংকের অনিল আর পাণ্ডেজী। সব্বাই ধারে খায়, খাতায় লিখিয়ে দেয়, মাসকাবারে চোকায়।
    --পাণ্ডেজী?
    --আজ পরিচয় হবে, বিলাসপুরের ব্রাহ্মণ। আপনার মতই নতুন অফিসার ,তবে এই ব্যাংকে পুরনো, সদ্য প্রমোশন পেয়েছেন।

    ব্যাংকের ঝকমারি এবং কুকুরের স্বর্গারোহণ
    ব্যাংকে গিয়ে প্রথম দিন দেখলাম, জীবনলাল পাণ্ডেজিকে, আমারই বয়েসি। আগে এই ব্যাঙ্কেরই ফিল্ড অফিসার ছিল।  এবার আমাদের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে ম্যানেজার হয়েছে, সাতদিন আগে জয়েন করে প্রবেশনে আছে। আমাদের ম্যানেজার আগরওয়াল সাহেব নিপাট ভালো মানুষ, কোন গাঁয়ে ফিল্ড ভিজিটে গেছেন।  ব্র্যাঞ্চের দায়িত্ব পান্ডের উপর।  
    আমাকে বলল—প্রথম দিন, বেশি কিছু করতে হবে না। একটু যোগ-বিয়োগ করুন।
    এই বলে পান্ডেজি আমাকে ধরিয়ে দিলেন লাইনটানা বিশাল লম্বা খেরোর খাতা। তার উপরে খবরের কাগজের মলাট লাগিয়ে বড় করে লেখা –‘ ক্যাশ ক্রেডিট (৩)’।
    আমার মুখের ভাব –মামু, ক্যাশ ক্রেডিট কারে কয়?
    পাণ্ডে হেসে ফেলে।
    -- ভয় পাবেন না । সব আস্তে আস্তে শিখে যাবেন। আপাততঃ এই পেন্সিল আর রবার ধরুন। হ্যাঁ, এবার এই পাতলা খেরোর খাতাটি খুলুন, প্রথম পাতায় কী দেখছেন?
    খুলে দেখি তিনটে কলাম, তাদের মাথায় যথাক্রমে ব্যালান্স, ইন্টারেস্ট আর ব্যালান্স + ইন্টারেস্ট লাল কালি দিয়ে লেখা। আবার সবগুলো কলমের ওপরে  গত মাসের শেষ তারিখ নীল কালি দিয়ে লেখা।
    আর বাঁদিকে ‘রো’ ধরে একের পর এক সিরিয়াল নম্বর, অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং নাম লেখা। এসবের কী মানে?
    পান্ডের ইশারায় গোরেলাল নিয়ে আসে একটা বড় গাবদা বাঁধানো লেজার, তার উপরে বড় করে  স্টিকার প্রিন্ট করা—স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। তার উপরে নীল কালি দিয়ে মোটা হরফে লেখা সেই ‘ ক্যাশ ক্রেডিট (৩)’!
    মনে মনে আওড়াই—খুল যা সিম সিম! চিচিং ফাঁক!
    --দেখুন রায়, ওই খেরোর খাতাকে বলে জটিং বুক। এতে বিভিন্ন লেজারের অ্যাকাউন্টগুলো তাদের নম্বর এবং পেজনম্বর মায় গ্রাহকের নাম একের পর এক লিখে একটি নির্দিষ্ট তারিখে , ধরুন মাসের শেষ তারিখে, ওদের ব্যালান্স জট করা হয়।
    --তিনটে কলাম কেন?
    জবাবে ও সেই ক্যাশ ক্রেডিট লেজারের একটা লীফ খোলে।  তার মাথায়  লেখা সিসি/৩/১১৭
    -এবার দেখুন, এই অ্যাকাউন্ট হল ক্যাশ ক্রেডিটের ৩ নম্বর লেজারের ১১৭ নম্বর। গ্রাহকের নাম বিশেশ্বর যাদব। লেজারে দেখুন ৩০ নভেম্বর তারিখে তিনটে এন্ট্রি।
    এক, সেদিনের ওপেনিং এন্ট্রিঃ ৫৬৭৭ টাকা। দুই,  ইন্টারেস্ট লাগানো হল ৬৮ টাকা। তিন,  দুটো যোগ করে দিনের ক্লোজিং ব্যালান্স ৫৭৪৫ টাকা।
    এবার দেখুন জটিং বুকে সেই তিনটে এন্ট্রি বাঁদিকের গ্রাহকের নামের  এবং নির্দিষ্ট খাতা নম্বরের পাশে তিনটে কলামে লেখা রয়েছে। এইভাবে একের পর এক, সিরিয়ালি,  সব গ্রাহকের নামের পাশে তাদের ওই তিনটে এন্ট্রি লেখা হয়েছে।
    সব ওই লেজার দেখে।
    --আমাকে কী করতে হবে?
    --বিশেষ কিছু না। পেন্সিল্ চেপে ধরুন। তারপর একের পর এক ওই কলামগুলো ভার্টিক্যালি যোগ করুন। করার পর?
    --একটা ক্রসচেক। দেখতে হবে প্রথম দুটো কলামের হরাইজন্টাল যোগ তৃতীয় কলামের যোগের সঙ্গে মিলছে কিনা।
    --যদি না মেলে?
    --বুঝতে হবে কোন গণ্ডগোল হয়েছে।
    আঁতকে উঠি। বাবা পই পই করে সতর্ক করে ছিলেন। চোখ কান খোলা রাখবি। হিসেবপত্রে গণ্ডগোল করে তোকে না ফাঁসিয়ে দেয়!
    --কিসের গণ্ডগোল?
    --দু’ রকমের।  
    প্রথম, জটিং বুকে গণ্ডগোল। সেটাও দু’রকম। হয় লেজার  দেখে সংখ্যাটা জটিং বুকে লিখতে ভুল। অথবা সব ঠিক আছে। আপনারই যোগ করতে ভুল হচ্ছে। এগুলো সোজা, এবং লেজারের সঙ্গে মিলিয়ে নিলে এবং নীচে থেকে ওপর আর ওপর থেকে নীচে যোগ করলে ধরা পড়ে যায়।
    দ্বিতীয়,  খোদ লেজারেই গণ্ডগোল। সেটাও দু’রকম। কারও অ্যাকাউন্টে ইন্টারেস্ট লিখে আগের ব্যালান্সের (প্রিভিয়াস ব্যালান্স) সঙ্গে যোগ করার সময় ভুল করে ভুল ফাইনাল ব্যালান্স লেখা হয়েছে। অথবা ইন্টারেস্ট যা হিসেব করা হয়েছে –সেটা না লিখে কোন অন্য কারও ইন্টারেস্ট এখানে জুড়ে দেয়া হয়েছে।
    উরিত্তারা! এ তো উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে কেস।
    আচ্ছা, এতসব ঝক্কি পোয়ানো কেন? ইহা না করিলে বল হে বন্ধু কিবা হবে কার ক্ষতি!
    --এটা নিশ্চিত করা যে আমাদের সবার গ্রাহকের খাতা সাফসুতরো রয়েছে এবং ব্যাংকের যে আয় –অর্থাৎ গ্রাহকদের থেকে ব্যাজ কামানো – সেটা নিখুঁত। একেবারে ভাল করে দাড়ি কামানো গালের মত।
    --এই কাজটা আমাদের কতবার করতে হবে?
    --প্রতিমাসে একবার। চিন্তা করবেন না। প্রথম দিন, যোগ করার স্কুলের অভ্যেস ঝালিয়ে নিন। নিন , শ্রীগণেশ করুন। অসুবিধে হলে আমি আছি।
    শুরু করি। একটু পরেই পাণ্ডেকে জিগাই—এককের ঘরের টোটাল দুই সংখ্যায় এলে হাসিল বা ‘হাতে যা থাকে’ সেটা কোথায় লিখব?
    --দশকের কলামের মাথায় ছোট্ট করে। তেমনি দশকের টোটালের হাসিল ক্যারি ফরওয়ার্ড হবে সহস্রের কলামের মাথায়। অক্টোবরের পাতা খুলে দেখে নিন, কীভাবে করা হয়েছে।
    শুনুন, কিছু জ্ঞান দিচ্ছি, অন্যভাবে নেবেন না। প্রথম দিন তাই বলছি। আপনি যখন সিনিয়র হবেন আপনিও নতুনদের এইসব জ্ঞান দেবেন। মহাভারতের মত। ব্যাস থেকে বৈশম্পায়ন, সেখান থেকে ঋষি সৌতির মত। পাক্কা ট্র্যাডিশন।
    বিরক্ত হয়ে বলি –বলে ফেলুন।
    আমার বিরক্তি অগ্রাহ্য করে ও বলতে থাকেঃ ব্যাংকের ফিলজফি হল “পিছে দেখো, আগে বাড়ো”। অর্থাৎ শুধু পেছনের পাতা উল্টে আগে কী করা হয়েছে সেটা ফলো করাই নয়, কোন ব্যাংকিং ডিসিশন নিতে হলে দেখবেন এই জাতীয় কেসে আগের ম্যানেজাররা কী করে গেছেন। তাদের লাভ হয়েছে না বিপদ হয়েছে?
    ব্যস, মহাভারতে যুধিষ্ঠির ধর্মরূপী বককে বলেছিলেন—মহাজনো যেন গতঃ স পন্থা। আপনিও মহাজনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে কাজ করবেন। নিজের বুদ্ধি লাগাবেন না। কোন এক্সপেরিমেন্ট করবেন না। নতুন কিছু করেছেন কি মরেছেন!
    গান্ধীজি বলেছিলেন—করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে।
    ব্যাংক বলে—করেঙ্গে তো মরেঙ্গে!
    হায়, বামুনের মুখের ওই ব্রহ্মবাক্য যদি শুনতাম।
    যাকগে, ওর বকবক থেকে বাঁচতে জটিংবুকের কলাম ধরে যোগ করতে শুরু করি। মনে মনে ভাবি –এ তো  আমার বাঁয়ে হাত কা খেল! ক্লাস থ্রি লেভেলের কাজ। আর আমি তো ক্যালকুলাস করেছি, গ্র্যাজুয়েশনে ম্যাথমেটিক্যাল স্ট্যাটিসটিকস নিয়ে লার্জ স্যাম্পলিং, স্মল স্যামপ্লিং , রিগ্রেশন ইকুয়েশন করে এসেছি।
    কিন্তু বলে না—অহংকারেন মূঢ়াত্মা ইত্যাদি।
    তিন ঘন্টা পার হয়ে গেল একপাতার বেশি এগোনো গেল না। প্রত্যেকবার নতুন নতুন যোগফল! একেবারে খরবায়ু বয় বেগে কেস। পাণ্ডে মুচকি হাসিটা গিলে ফেলে। কিন্তু ক্লার্ক রায়জাদা লুকোতে পারে না।
    আমার মাথা ধরে যায়। হালার পোলা হালা! চউক্ষে চশমা লাগব অহন।
    গোরে চা নিয়ে এসেছে। বলি—আমি এখন খাব না। দিনে মাত্র দু’বার খাই।
    পাণ্ডে হাসে। বলে ওসব কলেজের ছাত্রদের মানায়। ব্যাংকে চাকরি করলে সারা দিনে অল্প অল্প করে দিনে দশটা চা হয়েই যায়। নইলে মাথা ধরে। আপনার হাল দেখতে পাচ্ছি। আজকের মত এখানেই ইতি।
    টেবিল ছেড়ে উঠুন। চা খেয়ে আড্ডা দিন, তারপর আপনার ছুটি। কাল আগরওয়াল স্যার থাকবেন আর আমি আপনার পাশে বসে কাজ শেখাব।
    ওই যে কুঁয়র সাহেব এসে গেছেন। জমাটি আড্ডাবাজ, আমাদের সম্মানীয় গ্রাহক। বুড়গহনের রাজকুমার। গতবার পার্লামেন্টারি ইলেকশনে ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রার্থী ছিলেন।
    রাজদূত মোটরবাইকটি বাইরে বারান্দার গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড় করিয়ে এক ভদ্রলোক ভেতরে এলেন। ছ’ফিট মত লম্বা, একহারা চেহারা, চোখে রোদচশমা। সুগন্ধি পান চিবুচ্ছেন।
    চেয়ার টেনে উনি পা লম্বা করে বসে হাতের ফোলিও ব্যাগটি পান্ডের দিকে বাড়িয়ে বললেন—৫৩০০ টাকা। স্লিপ ভরেই এনেছি। ক্যাশিয়ারকে বলুন নোটগুলো ভাল করে দেখে নিতে। খারাপ নোট বদলে দেব।
    পাণ্ডে আমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। উনি উঠে দাঁড়িয়ে একটু ঝুঁকে আমার সঙ্গে হাত মেলালেন। তারপর একগাল হেসে বলেন—অধীনের নাম রাজপাল সিং, লোকে বলে কুঁয়র সাহেব। পান খান নাকি পান করেন?
    আমি হেসে দুদিকেই মাথা নাড়ি।
    --দূর! এমন সাত্ত্বিক মানুষের জায়গা ব্যাংক নয়। এই দেখুন আপনার পাণ্ডেজিকে। কী মনে হয় শুদ্ধাচারী ব্রাহ্মণ?
    পাণ্ডে চটপট কথা ঘোরাতে গিয়ে বলে ওঠে—কুঁয়ার সাহেব, প্লীজ। এই বাবুমশায়ের আজ প্রথম দিন। জোড়-ঘটাও-গুণা-ভাগ (যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ) করতে করতে মাথা গরম এবং কিঞ্চিৎ বিমর্ষ। একটা সলিড কিছু শোনান যা ওর জন্যে টনিকের কাজ করবে।
    রাজপাল জী’র মুখে একটা দুষ্টু হাসি খেলছে। উনি চবর চবর করে পান চিবিয়ে বাইরে গিয়ে পিক ফেলে এলেন। তারপর বললেন—মিঃ রায়। একটা জিনিস খেয়াল করেছেন? একটা পাড়ায় বেপাড়া থেকে কোন নতুন কুকুর এসে পড়লে বাকি কুকুরেরা দল বেঁধে ওকে ঘিরে ধরে!
    --দেখেছি তো, ওরা ভাবে কোন বেপাড়ার মস্তান—
    আমাকে হাত তুলে থামিয়ে দিয়ে উনি বলেন—তাহলে এটাও দেখে থাকবেন যে কুকুরের দল পালা করে আগন্তুকের পোঁদ শুঁকতে থাকে।  বলতে পারেন কেন?
    এসব কী, ব্যাংকে চাকরি করতে এসে এইসব বাজে গল্প শুনতে হবে? আমি চুপ করে থাকি।
    রাজপাল হেসে বলেন—আপনি যা ভাবছেন আদৌ তা নয়। এর পেছনে একটা মহৎ উদ্দেশ্য এবং পুরাণকথা লুক্কায়িত।
    সবাই মিটিমিটি হাসছে। অর্থাৎ গল্পটা ওরা আগেও শুনেছে। আমার মৌনকে সম্মতি লক্ষণং ধরে নিয়ে উনি বলতে থাকেনঃ
    সে অনেক দিন আগের কথা। সমস্ত কুকুরদের এক মহাসম্মেলন হয়েছিল। বিষয় মানুষের অমানবিকতা এবং সুপ্রীম কোর্ট অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার একচোখোমি।  সেখানে সবাই ঝাঁঝালো প্রতিবাদী বক্তব্য রাখল।
    ভাইসব, আমরা মানুষের সবচেয়ে বিশ্বস্ত এবং বফাদার ভৃত্য। লাথি ঝাঁটা খাই, বাচ্চারা ঢিল ছোড়ে, দিওয়ালিতে লেজে ফুলঝুরি বেঁধে দেয়। তবু ওদের গেটের বাইরে পড়ে থাকি। চোর-ডাকাত তাড়াই, গেরস্থকে সতর্ক করি।  
    আর বেড়াল? চুরি করে মাছ দুধ খায়। ঘর নোংরা করে। গণ্ডা গণ্ডা বাচ্চা বিয়োয়। গেরস্তের কোন কাজে আসে না। ভীতুর ডিম ।
    অথচ মানুষ জাতটা নেমকহারাম, অকৃতজ্ঞ। ওরা বেড়ালকে রাখে ঘরের ভেতর। বিছানায় নিয়ে শোয়। খাওয়ায় মাছ আর দুধ। আর আমাদের--? এই বলে বক্তা সারমেয় রুমাল দিয়ে চোখ মোছে।
    শেষে সর্বসম্মতিক্রমে একটি খসড়া পাশ হল। ব্রহ্মাজীর কাছে ন্যায়বিচার চেয়ে একটা পিটিশন পাঠাতে হবে। ওরা খুঁজে একটা মরমর বুড়ো হাবড়া কুকুরকে খুঁজে সেই পিটিশন পুংগলি পাকিয়ে তার গাঁড়ে গুঁজে দিল। ওকে বলা হল—যুধিষ্ঠিরের কুকুরের পর তুমিই সশরীরে স্বর্গে  যাচ্ছ। ওখানে গিয়ে পিটিশনটি সোজা ব্রহ্মাজীর হাতে দেবে, অন্যথা না হয়।
    বুড়ো কুকুরের তিনকুলে কেউ ছিল না। সে জাতির জন্যে আত্মত্যাগে রাজি হল। শুধু একটাই অনুরোধ, ওর স্মৃতিতে একটা  শহীদ বেদি যেন তৈরি হয়।  
    সব হল, বেদি হল। কিন্তু ব্রহ্মাজীর থেকে কোন উত্তর আসে নি। সারমেয়কুল ধৈর্য ধরে আজও প্রতীক্ষায়। তাই নতুন কোন কুকুর দেখলে সবাই গিয়ে ওটার  পেছনে উঁকি মারে। সে কী এল? সে কী এল?
                                                   (চলবে)

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    1 | পর্ব ২ | পর্ব ৩
  • ধারাবাহিক | ১১ নভেম্বর ২০২৪ | ১৬৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Pad Gaon | ১২ নভেম্বর ২০২৪ ০১:৫৫539407
  • হিউম্যান ডকুমেন্ট লিখছ । তার সঙ্গে কেশব নাগের পাটিগণিতের অঙ্ক ! এক নম্বর স্ট্র্যান্ড রোডের দো তলায় আগের দিনের ডে বুক দেখে লেজারচেক করার সময়ে ওই বেদ বাক্য শুনি পিছে দেখ কে আগে বড়ো ! মাও বলেন নি লাফ দেবার আগে দু পা পিছিয়ে যাও ! কি শেখায় নি স্টেট্ ব্যাংক ! বেশরম পাতা গুলো আজকাল হয়তো শরম শিখেছে! একদিন পাঁচ নম্বর ডে বুক দেখে চার নম্বর  লেজারে সই করে ফেলেছি ! শুনে আমাদের গুহরায় পাঁচ নম্বর ডে বুক দেখে চার্ নম্বর লেজারে সই করে দিলে দু জনে ফিরে এসেছি ! কম ফতে ! এই তো ছিল তেরি মেরি কাহানি - ज़िंदगी और कुछ भी नहीं, तेरी मेरी कहानी हे 
  • Ranjan Roy | ১২ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:৩৬539409
  • আসুন,  কোলাকুলি করি।
     
    খালি দুটো কথা।
    আপনি খোদ স্টেট ব্যাংকের, অর্থাৎ নৈকষ্য কুলীন।
    আমি কিন্ত খাঁটি গ্রামীণ ব্যাংকের,  তবে স্টেট ব্যাংক স্পনসর্ড। এই লেখার প্রথম পর্ব  দেখুন।
    মানে ব্রাহ্মণ পিতা এবং শূদ্রাণী মাতার গর্ভজাত।
    তাই স্টেশনারি, accounting system  সব state Bank এর l কিন্ত স্টেট ব্যাঙ্কের ভিলেজ ব্র্যাঞ্চের সাজসজ্জা,  ক্যাশ কাউন্টার ওসব ছিল না। স্টেট ব্যাংকের ওই সিন্দুকের কীহোল মার্কা লোগো ছিল না।
    আমাদের লোগো ছিল গরুর গাড়ির চাকা।
     
    অবশ্য এখন কম্পিউটার,  কোর ব্যাংকিং,  এটিএম কার্ড , সিসিটিভি ক্যামেরা এসে সব বদলে দিয়েছে।
    আর আর বি বা গ্রামীণ ব্যাংক পাবলিকের চোখে জাতে উঠেছে।
     
    এহ বাহ্য।
    আমি লিখছি , আপনি ঠিক ধরেছেন,  হিউম্যান ডকুমেন্ট। 
    ব্যাংকের আবহাওয়া এই লেখার শরীর  মাত্র,  আত্মা হল চারপাশের মানুষ ও তাদের বেঁচে থাকার জন্য  হাত পা নাড়া।
  • হীরেন সিংহরায় | ১২ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৩৪539418
  • রঞ্জন ওই ব্রাহ্মণ পিতা ছাড়ো ,সম্পর্কের হিসেবে তুমি আমার খুড়তুত দাদার নাতি!  কতো কথা কত স্মৃতি ওঠে । অংশু জৈন আর আকারমানের কর্মকাণ্ডে ডয়েচে বাঙ্ক যখন প্রায় অথর্ব হয়ে পড়েছে , কোন অ্যাকাউনট অফিসার উদ্যোগী হয়ে প্রোডাক্ট সেলস থেকে বিরত থাকতেনবাহাদুরি দেখিয়ে লাভ নেই কেউ আঙ্গুল না তুললেই হল - সোজা কথায় ব্যাংক বলে—করেঙ্গে তো মরেঙ্গে! সাক্ষাৎ দেখা ! 
    ক্যাশ মেলানোর ঝক্কি দেখেছি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ফ্রাঙ্কফুর্ট ব্রাঞ্চে । বিকেলে বিয়ারের আসরে ক্যাশিয়ার গাইসলারের দেরি করে আসার একমাত্র কারণ ছিল- কাসে হাট নিখট গেস্টিমট ! ক্যাশ মিলছিল না ! দিনে কুল্লে বিশটা এন্ট্রি - তার সবচেয়ে মুশকিল হতো খুচরো নিয়ে - বিয়ারের পাত্র হাতে নিয়ে শাপ শাপান্ত করতো - কেন বাবা ১,২,৫,১০, ২৫, ৫০ পয়সার কয়েন করেছ ! কোথায় গড়িয়ে পড়ে যায় ! ক্লিন ক্যাশ মেলাতে পারি নি কখনো ( আমার জলপাইগুড়ির পরবে আছে )- দুলাল দা বলেছিলেন ভুল সবাই করে তবে ভুলের একটা প্যাটার্ন থাকে, এই ১৮ লিখতে ৮১ লেখে । আপনের ভুলগুলির কোন লজিক খুইজা পাচ্ছিলাম না । 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন