এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  সিনেমা

  • সত্যজিৎ রায়ের নায়ক সিনেমাটির বিষয়ে দুটি প্রশ্ন

    জনৈক আগ্রহী ব্যক্তি
    সিনেমা | ২৭ মে ২০২৫ | ৭৮ বার পঠিত
  • ১) সত্যজিৎ রায়ের নায়ক সিনেমায় সিনেমা শুরু হওয়ার ৮/৯ মিনিটের মাথায় যে ফোন এল, হিরোইন ফোন করেছে বলে ওঁকে ওঁর এসিস্টেন্ট যে ফোনটা ধরিয়ে দিল, এটার সিগনিফিকেন্স কী? নায়ক ওখানে এত তাচ্ছিল্যভরে কথা বলছিলই বা কেন?

    ২) নায়কের দ্বিতীয় স্বপ্নটা কি জনৈক নায়িকার সাথে তাঁর অবৈধ সম্পর্কের ইঙ্গিত হিসাবেই? নাকি এই স্বপ্নটার আরও কিছু ইঙ্গিত আছে? প্রথম স্বপ্নটা (টাকার সমুদ্রে ডুবে যাওয়া) যেমন চর্চিত, দ্বিতীয় স্বপ্নটা নিয়ে তেমন আলোচনা চোখে পড়ে নি।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • lcm | ২৭ মে ২০২৫ ২১:১৭744933
  • chatGPT কে জিগ্গেস করাতে প্রথম প্রশ্নের উত্তরে বলল --
    ---
    সত্যজিৎ রায়ের "নায়ক" (১৯৬৬) সিনেমার ওই দৃশ্যটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম এবং অর্থবহ, যা সিনেমার মূল চরিত্র অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের (উত্তম কুমার) মনের অবস্থার প্রতিফলন করে।

    দৃশ্যের পটভূমি:
     
    সিনেমা শুরুর দিকে অরিন্দম তাঁর সহকারীকে (বা সেক্রেটারিকে) বলছেন যে তিনি এখন “কাউকে ধরবেন না” — অর্থাৎ তিনি বিরক্ত হতে চান না। এর পর পরই সহকারী একটি ফোন ধরিয়ে দেয়, বলে যে “হিরোইন” ফোন করেছেন। অরিন্দম ফোনটা নেন, কিন্তু যে ভাষায় ও ভাবে তিনি কথা বলেন, তাতে তাচ্ছিল্য, বিরক্তি ও অবজ্ঞা স্পষ্ট।
     
    এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য:
    1. অরিন্দমের ক্লান্তি ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা:
      অরিন্দম সিনেমার সুপারস্টার হলেও, এই সময়টা তাঁর জীবনে এক প্রকার "inner crisis"-এর সময়। সম্প্রতি একটি মারপিটের ঘটনায় তিনি জড়িয়েছেন, যা পত্রিকায় আসছে, এবং তাঁর ভাবমূর্তির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি মানসিকভাবে অস্থির এবং নিজের চারপাশের সম্পর্ক, খ্যাতি ও সম্মান নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত। এই পরিস্থিতিতে "হিরোইনের ফোন" তাঁর কাছে এক ঘ্যানঘ্যানানি বা অবান্তর কিছু মনে হয়। তাই তাঁর তাচ্ছিল্যপূর্ণ ভঙ্গি।
    2. নির্ভরতা ও অন্তঃসারশূন্য সম্পর্ক:
      ফোন করা "হিরোইন" হয়তো তাঁর বর্তমান বা সাবেক প্রেমিকা, অথবা সহকর্মী যাঁর সঙ্গে সম্পর্কটা এখন নিস্তেজ। তিনি আর এই সম্পর্কগুলোতে আন্তরিকতা অনুভব করেন না। তাই ফোনে কথা বলার সময় তাঁর ব্যবহার অসভ্য বা উদাসীন।
    3. তারকা জীবনের একাকীত্ব:
      এই ছোট্ট দৃশ্যেই রায় দেখিয়ে দেন, যে যাঁকে সকলে দেখে “নায়ক” হিসেবে, তিনি বাস্তবে ভীষণ একা ও বিচ্ছিন্ন। চারপাশে লোক থাকলেও, আন্তরিক সংযোগের অভাব রয়েছে। এ দৃশ্যটা সেই বিষণ্ণতার অঙ্গ।
    4. পাবলিক ইমেজ বনাম প্রাইভেট রিয়ালিটি:
      ক্যামেরার সামনে অরিন্দম এক “চকচকে” ইমেজ বজায় রাখেন, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে তাঁর আচরণ, কথাবার্তা, মানসিকতা — সবটাই অন্যরকম। ফোনে কথোপকথনের তাচ্ছিল্য এখানেই ওই দ্বিচারিতা বা দ্বৈততা বোঝায়।
    সংক্ষেপে:
    এই ফোনকল এবং তাতে অরিন্দমের প্রতিক্রিয়া, তাঁর চরিত্রের গভীর এক স্তর উন্মোচন করে — তিনি কেবল একজন জনপ্রিয় নায়ক নন, বরং একজন ক্লান্ত, বিভ্রান্ত, এবং ভিতরে ভিতরে ভেঙে পড়া মানুষ। রায় এখানে খুব সংযতভাবে, সংলাপ ও আচরণের মধ্য দিয়ে এই চরিত্রের জটিলতা প্রকাশ করেন।
  • lcm | ২৭ মে ২০২৫ ২১:২০744934
  • আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে চ্যাট্জিপিটি বলছে -- -
    ---
    খুব গভীর ও প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করেছেন—সত্যজিৎ রায়ের "নায়ক" (১৯৬৬) সিনেমার দ্বিতীয় স্বপ্নদৃশ্য নিয়ে আলোচনা তুলনামূলকভাবে কম হলেও, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মনস্তাত্ত্বিক স্তর উন্মোচন করে। চলুন একটু বিশ্লেষণ করি।

    স্বপ্নদৃশ্যের প্রেক্ষাপট (দ্বিতীয় স্বপ্ন):

    নায়ক অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় রাতের বেলায় ট্রেনে ঘুমিয়ে পড়েন এবং একটি স্বপ্ন দেখেন, যেখানে তিনি একজন নারী–সম্ভবত এক সময়ের প্রেমিকা অথবা কেবল কামনার অবজেক্ট–এর সঙ্গে একটি অন্তরঙ্গ মুহূর্তে রয়েছেন। এই দৃশ্যটি আকস্মিকভাবে ভেঙে যায়, এবং তার চেহারায় অপরাধবোধের একটি ছায়া ফুটে ওঠে।

    এই স্বপ্নটি কি শুধু অবৈধ সম্পর্কের ইঙ্গিত?
    না, এটি কেবলমাত্র অবৈধ সম্পর্ক বা যৌন কামনার প্রতিচ্ছবি নয়। সত্যজিৎ রায় এখানে অনেক সূক্ষ্ম স্তরে কাজ করছেন। এই স্বপ্নটি বহুমাত্রিক:
    ১. কামনা বনাম আত্ম-সংযম:
    • অরিন্দম একজন সেলিব্রিটি। তার জীবনে "নিয়মবহির্ভূত সম্পর্ক", লোভ, ভোগবিলাস স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এই স্বপ্নে সেই কামনা কেবল শারীরিক নয়—এটি এক ধরনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের প্রকাশ।
    • এই দৃশ্যটা প্রকাশ করে যে, বাইরে যতই আত্মবিশ্বাসী ও সফল দেখাক, ভেতরে সে নিজেই নিজের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে।
    ২. পাপবোধ ও আত্মগ্লানি:
    • স্বপ্নে অরিন্দমের মুখাবয়ব, তার দৃষ্টিভঙ্গি, এবং হঠাৎ ছুটে যাওয়ার চিত্রনাট্যটি স্পষ্টতই তার ভেতরের গ্লানি প্রকাশ করে।
    • স্বপ্নের মাধ্যমে তার অবচেতন একে অপরাধ বলে মনে করে।
    ৩. সেলিব্রিটির মুখোশ ও আসল সত্তা:
    • এই স্বপ্নও প্রথম স্বপ্নের মতো, এক ধরনের “unmasking” বা মুখোশ খোলার প্রক্রিয়া।
    • এই স্বপ্নে আমরা দেখতে পাই তার ভেতরের দুর্বলতা ও সঙ্কোচ—যা জনসম্মুখে সে কখনো প্রকাশ করে না।
    ৪. সিনেমার ভেতরে "mirror" motif:
    • গোটা সিনেমাজুড়েই একটি "আয়নার" থিম চলে—নিজেকে দেখা, নিজের মূল্যায়ন, নিজের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া।
    • দ্বিতীয় স্বপ্নদৃশ্যটি আসলে সেই আয়নায় মুখোমুখি হওয়ার আরও একটি ধাপ।

    তুলনা প্রথম স্বপ্নদৃশ্যের সঙ্গে:
    প্রথম স্বপ্ন (টাকার সমুদ্রে ডুবে যাওয়া) অনেকটা বাহ্যিক লোভ ও আত্ম-অবচেতনের সংঘাত;
    দ্বিতীয় স্বপ্নটি আরও ব্যক্তিগত—এখানে হৃদয়ের, সম্পর্কের, নৈতিকতার প্রশ্ন আসে।
    দুইটি স্বপ্ন মিলে তৈরি করে অরিন্দমের চরিত্রের একটি পূর্ণ ছবি—একদিকে জৌলুস, আরেকদিকে অন্তর্দ্বন্দ্ব।
     
    উপসংহার:
     
    এই স্বপ্নটি কেবল অবৈধ সম্পর্কের ইঙ্গিত নয়, বরং:
    • কামনার বিরুদ্ধে নৈতিকতার লড়াই,
    • গ্লানি ও আত্ম-পর্যালোচনা,
    • সমাজের সামনে যে মুখোশ পরে সে চলে, তার পেছনের এক টুকরো সত্য।
    এটি সত্যজিৎ রায়ের অসামান্য চিত্রনির্মাণ ও মনস্তাত্ত্বিক সূক্ষ্মতার দৃষ্টান্ত—তিনি এই স্বপ্ন দৃশ্য দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন, "নায়ক" কেবল সেলুলয়েডের নয়, বাস্তব জীবনের মানুষ—যার স্বপ্নও বিপন্ন, যেমন তার সাফল্যটা আসলে নড়বড়ে।
  • কৌতূহলী | 115.187.***.*** | ২৭ মে ২০২৫ ২১:২৬744935
  • অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু চ্যাটজিপিটির দ্বিতীয় প্রশ্নটার উত্তরে খুব বেশি স্যাটিসফায়েড হলাম না। দ্বিতীয় স্বপ্নটা নিয়ে যে ব্যাখাটা দিয়েছে, পাপবোধ, আত্মগ্লানি, সেলিব্রিটির মুখোশ ও আসল সত্তার দ্বন্দ্ব, এটা মোটামুটি গোটা সিনেমারই মূল প্রতিপাদ্য। এখানে গোটা স্বপ্নটা রাতের অন্ধকারে অদ্ভুত পরিবেশে দেখানো হচ্ছে কেন? অভিনেত্রী ওঁকে ''অরিন্দম'' বলে ডেকে তাড়াতে তাড়াতে একটা পার্টিতে ডেকে নিয়ে গেল, এটার মানে কী? আর সেই পার্টিতে সবাই সানগ্লাস পরে বসে ছিল কেন? নায়কের সানগ্লাস না হয় স্টারডমের প্রতীক, কিন্তু ওদেরটা? 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট প্রতিক্রিয়া দিন