এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • মাটি!

    ARIJIT MUKHOPADHYAY লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৮ মে ২০২৫ | ৩৪ বার পঠিত


  • "খোকা ফোন ধরল?", অরুণাদেবী বিছানায় শুয়ে শুয়েই অত্যন্ত ধীরে ধীরে ওনার স্বামী সৈকতবাবু কে জিজ্ঞেস করলেন।

    সৈকতবাবু অরুণাদেবীর মাথার কাছে এসে বসে স্ত্রীর মাথায় কোমলভাবে হাত বোলাতে বোলাতে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,"নাহ্! হয়ত ব্যস্ত আছে। খোকার কাজের অনেক চাপ। তুমি চিন্তা করো না অরুণা, আমি কিছু একটা ব্যবস্থা করছি।"

    আজ বিজয়া দশমী। সৈকত মজুমদার একসময় হাইকোর্টে কেরানির চাকরি করতেন। বছর দশেক হল রিটায়ার করেছেন। এখন উনি আর ওনার স্ত্রী অরুণাদেবী বোলপুরের কাছে ওনাদের দেশের বাড়িতেই থাকেন। ওনাদের বাড়িতে আবার দুর্গাপুজোও হয়। একসময় মজুমদার পরিবারের দুর্গাপুজো খুব ধুমধাম করে হত, এখন অবশ্য জাস্ট নিয়ম রীতি রক্ষার্থেই পুজোটা হয়, তবে পরিবারের সবাই মিলে পুজোর কটা দিন আনন্দের কোন খামতি হয়না। সাগ্নিক মজুমদার সৈকতবাবু ও অরুণাদেবীর একমাত্র সন্তান। বর্তমানে কলকাতায় এক বড় এম এন সি তে কর্মরত। ফ্ল্যাটও কিনেছে পেল্লাই! ওনার স্ত্রী পল্লবী মজুমদার হাউস ওয়াইফ। বিয়ে হয়েছে পাঁচ বছর। বিয়ের পরই ওঁরা কলকাতায় শিফট হয়। সাগ্নিকের কাজের নাকি বড্ড চাপ! তাই কলকাতায় না থাকলে সাগ্নিকের পক্ষে অফিসের কাজ সামলে ওঠা মুসকিল। তাঁদের একমাত্র ছেলে সায়ন মজুমদার কলকাতার এক নামি প্রাইভেট স্কুলে নার্সারিতে পড়ে। বছরে এই চারটে দিনই ওরা দেশেরবাড়িতে আসে, খুব মজা হয় কটা দিন! তবে এবছর সাগ্নিক ওর বাবাকে আগেই বলে দিয়েছিল যে কাজের চাপের জন্য এবারের পুজোটা কলকাতাতেই কাটাতে হবে। সায়ন অবশ্য দাদু ঠাকুমার কাছে আসার জন্য পা বাড়িয়েই আছে।

    "হ্যাঁ গো? খোকা কি এমন কাজ করে যে পুজোর কটা দিনও ছুটি পায়না? দাদুভাইকেও কতদিন হল দেখিনি!", অরুণাদেবী জিজ্ঞেস করলেন।

    "আহা! এত ভেবো না তুমি। খোকার নিশ্চয়ই কোন দরকারি কাজ পড়েছে না হলে ওরা তো আসতোই ", সৈকতবাবু স্ত্রীকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন।

    অরুণাদেবী কিছু না বলে মুখ উল্টোদিকে ঘুরিয়ে কাঁদতে লাগলেন। সৈকতবাবু উঠে সাগ্নিককে আবার ফোন করতে লাগলেন। বার দশেক রিং হবার পর সাগ্নিক ফোন ধরলেন।

    "হ্যালো বাবা? আচ্ছা তোমরা কি বাংলা বোঝো না? কতবার বললাম পুজোতে ব্যস্ত থাকব! ফোন করবে না! শোনোই না তোমরা! আশ্চর্য!", ফোন ধরেই কেমন যেন একটা হুমকির সুরে কথা বলতে লাগল সাগ্নিক।

    "হ্যাঁ.... মানে না...। ....... ইয়ে মানে একটা বিশেষ দরকারে তোকে ফোন করেছিলাম খোকা। অনেকবার রিং হল এর আগে, ধরলি না। তাই আবার করলাম। ইয়ে... মানে... তোর মার শরীরটা ভাল নেই রে। আজ সকালে কলা বউ ভাসান দিতে গিয়ে ঘাটে মাথা ঘুরে পড়ে গেছে, বুঝলি? ডাঃ সরকার এসেছিলেন, দেখে গেছেন, বলেছেন.... ইয়ে... ইমিডিয়েট হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। মাইল্ড এট্যাক হয়েছে, প্রেসার অনেক কম।", সৈকতবাবু কেমন যেন অনুনয়ের সুরে কথাগুলো বলে গেলেন, যদিও উনি জানতেন সাগ্নিক আসতে পারবে না।

    "কী? হাসপাতাল? এখন? এই দশমীর দিনে? বাবা তোমার মাথার ঠিক আছে? ওরকম অ্যাটাক মাঝে মাঝে বুড়ো বয়সে হয়। এতে এত ভাবার কিছু নেই। ডাঃ সরকার ওরকম ভুলভাল বলেন। তুমি এক কাজ করো বাবা, আমাদের পাড়ার সুনীল ডাক্তারকে একবার দেখাও। দেখো উনি কী বলেন? তারপর জানাও আমাকে। এখন রাখি, অনেক কাজ, আর এখন আমায় ফোন করো না কেমন? রাতে জানিও কিন্তু?", সাগ্নিকের কথাগুলো কেমন যেন কাঁটার মত বিঁধলো সৈকতবাবু র কানে। খোকার ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে গেল সৈকতবাবু র। ওর প্রথম কান্না, প্রথম হাসি, প্রথম বাবা বলে ডাকা, ওর প্রথম স্কুলে যাওয়া, ওর স্কুল ব্যাগ, ছেলেবেলার জামাগুলো - এখনো সব স্পষ্ট স্মৃতির তালিকায়, জ্বলজ্বল করছে!

    দরজার বাইরে চোখের জল মুছে কৃত্রিম হাসি হাসতে হাসতে অরুণাদেবীর ঘরে ঢুকে সৈকতবাবু বললেন,"খোকা ফোন করেছিল, জিজ্ঞেস করছিল, 'মা কেমন আছে?' তোমার খোঁজ করছিল।"

    অরুণা দেবী কাঁদতে কাঁদতে জিজ্ঞেস করলেন,"খোকা আসবে বলল? দাদুভাইও আসছে নিশ্চয়ই।"

    "এখন কাজ আছে বলল, তবে রাতে ফোন করতে বলল। তুমি চিন্তা করোনা। খোকা ঠিক কিছু একটা ব্যবস্থা করবে।", সৈকতবাবু আবার সান্ত্বনা দিয়ে বললেন।

    অনির্বাণ বাবু বলে পাড়ার এক ভদ্রলোক ঘরের বাইরে গলা ঝাড়া দিলেন,"হুহু, হুহু!, সৈকত একবার এদিকে আয়?"

    সৈকতবাবু বাইরে এলেন। অনির্বাণ সান্যাল সৈকতবাবু র প্রতিবেশী। ছেলেবেলার বন্ধুও বলা যেতে পারে। বিকেলে চায়ের ঠেকে একসাথে আড্ডাও দেন দুজনে।

    সৈকতবাবু বাইরে আসতেই অনির্বাণ বাবু বললেন,"কী রে? ছেলেকে ফোন করেছিলি? আসছে?"

    "নাহ্ রে, কাজ আছে বলল।"

    "টাকা পয়সার অ্যারেঞ্জমেন্টটা তো করে দেবে নাকি?"

    সৈকতবাবু কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে নিশ্চুপ হয়ে রইলেন। কোন উত্তর দিলেন না।

    "এই দেখ! চুপ করে থাকল সমাধান হবে না। বৌদিকে ইমিডিয়েট হাসপাতালে না নিয়ে গেলে কিছু একটা......"

    অনির্বাণ বাবুর কথা শেষ না হতেই সৈকতবাবু অনির্বাণ বাবুকে জাপটে ধরে কাঁদতে লাগলেন। এ কান্নার শব্দ অবশ্য অরুণা দেবীর কানে পৌঁছল না।

    সৈকতবাবু র পিঠ চাপড়ে অনির্বাণ বাবু বললেন,"বুঝেছি। ছেলের দিক থেকে কোন হেল্প আসবে না তাই তো?"

    "কী করব বল? আমি তো ফোন করেছিলাম, কিন্তু....."

    "বেশ এত ভাবতে হবে না। আরে আমরা আছি কী করতে?"

    "একি? তোরা আবার কেন? বাড়িতে পুজো আর তোরা....না না। ও আমি ঠিক ম্যানেজ করে নেব।"

    "একদম বকবি না। চল, আমি অ্যাম্বুলেন্স বলছি, এক্ষুণি হেল্থওয়ার্ল্ড এ নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে দেব। ফেলে রাখা যাবে না বুঝলি? তুই সব গুছিয়ে টুছিয়ে নে।"

    "সাগ্নিক এলে ব্যবস্থা করলে হত না?"

    "কী? তোর মনে হয় তোর ছেলে আসবে? আমার তো মনে হয় না।"

    সৈকতবাবু কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন মুখ নীচু করে। এই অবস্থায় তাঁর কী করণীয়, কোথা থেকে এত টাকা যোগাড় করবেন? কীভাবেই বা হাসপাতালে ভর্তি করবেন? এইসব চিন্তা তাঁর মাথায় ভিড় করে আসতে লাগল।

    কুড়ি ত্রিশ মিনিট পর অ্যাম্বুলেন্স এল। অনির্বাণ বাবু পাড়ার ছেলে ছোকরাদের নিয়ে স্ট্রেচারে করে অরুণাদেবীকে অ্যাম্বুলেন্সে তুললেন।

    "চল ওঠ, আমিও যাচ্ছি তোর সাথে।", অনির্বাণ বাবু সৈকতবাবু কে বললেন।

    "আমি পারব। পুজোর দিনে তোকে আর ব্যস্ত হতে হবে না।"

    "একদম চুপ থাকবি। যা বলব শুনবি। ওঠ বলছি। এদিকটায় ওঠ।"

    সৈকতবাবু অ্যাম্বুলেন্সে উঠে যাওয়ার পর অনির্বাণ বাবুও উঠে বসলেন সৈকতবাবু র পাশে। অ্যাম্বুলেন্স চলতে শুরু করল দুর্গাপুর হেল্থ ওয়ার্ল্ড এর উদ্দ্যেশ্যে।

    মিনিট চল্লিশেক পর অ্যাম্বুলেন্স এসে থামল হেল্থ ওয়ার্ল্ড হাসপাতালের এমার্জেন্সির সামনে। অনির্বাণ বাবু ও সৈকতবাবু র সহায়তায় হাসপাতালের স্টাফেরা অরুণা দেবীকে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে ভিতরে নিয়ে গেলেন। রিসেপশনে কথা বলতে গিয়ে জানা গেল ডাঃ অমূল্যভূষণ রায় আসবেন, উনি চেক করবেন, উনি বললে তবেই অ্যাডমিট করা হবে।

    এর মাঝে বার কয়েক ফোন করলেও সগ্নিকের কাছ থেকে কোন উত্তর পাননি সৈকতবাবু । সাগ্নিক ফোনই ধরে নি। কয়েকবার কেটেও দিয়েছে ইচ্ছে করেই। আজ বিজয়া দশমী। সাগ্নিক, ওর স্ত্রী আর অফিসের সব কলিগ ও তাদের পরিবার মিলে বিরাট পার্টি করছে আজ সাগ্নিকদের ফ্ল্যাটেই। পুজোর শেষ দিন বলে কথা। তাছাড়া এখন ওরা কলকাতার মানুষ। এটাই এখনকার কালচার।

    "জাস্ট ফাটিয়ে দিয়েছিস সাগ্নিক! ফ্ল্যাট টা কত পড়েছে রে? খুব সুন্দর!", সাগ্নিকের এক কলিগ রোহিত জিজ্ঞেস করল।

    "এই এক কোটির মত। ইন্টেরিয়র কিন্তু আলাদা হ্যাঁ? পার্কিংটাও এক্সট্রা কিন্তু? জায়গাটা কিন্তু পল্লবীর চয়েস ছিল।", সাগ্নিক উত্তর দিল।

    সাগ্নিকের এক কলিগের স্ত্রী সোমলতা জিজ্ঞেস করল,"ই এম আই বেশ ভালই যায় তাহলে?"

    সাগ্নিক বলল,"নেহাত প্রমোশন টা পেয়ে গেলাম। না হলে পারতাম না।" গ্লাস টা টেবিলে রেখে সাগ্নিক আবার বলল,"আরে গ্লাস তো ফাঁকা বস? ঢাল ঢাল? আরে আজ হল গিয়ে দশমী, পুজোর শেষ দিন। কাল থেকে তো আবার সেই অফিস, রিপোর্টস, বসের ঝাঁজানি।"

    রোহিত পেগ বানাতে লাগল। মোহময়ী তিলোত্তমার বুকে আকাশ ছোঁয়া ফ্ল্যাটের ড্রয়িং রুমে তখন মদের ফোয়ারা ছুটছে আর ঠিক সেই মুহূর্তেই সাগ্নিকের মা হাসপাতালের স্ট্রেচারে শুয়ে ছটফট করছেন। সৈকতবাবু কিছুই খুঁজে না পেয়ে হা হুতাশ করছেন, পাশে পরিবারের কেও নেই।

    ডাঃ অমুল্যভূষণ এলেন, অরুণা দেবীকে দেখলেন, বললেন, "ইমিডিয়েট অপারেশন না করলে যে কোন মুহুর্তে কিছু একটা হয়ে যেতে পারে। এক্ষুণি অ্যাডমিট করিয়ে নিন।"

    রিসেপশনে এসে অনির্বাণ বাবু আর সৈকতবাবু জানতে পারলেন অপারেশনের খরচ প্রায় লাখ তিনেক! অন্তত ফিফটি পার্সেন্ট জমা না করলে অপারেশন শুরুই হবে না। কিন্তু এত টাকা একসাথে জোগাড় হবেই বা কীকরে? অনির্বাণ বাবুই বা কীকরে এতোগুলো টাকার ব্যবস্থা করবেন?

    "ছেলেকে একবার ফোন করে জানা।", অনির্বাণ বাবু বললেন।

    সৈকতবাবু কপালের ঘাম মুছতে মুছতে পকেট থেকে ছোট বাটন ফোনটা বের করে ফোন করতে লাগলেন সাগ্নিককে। বার সাতেক রিং হওয়ার পর সাগ্নিক রিসিভ করল।

    "বাবা। আচ্ছা তুমি কী চাও? তোমাকে তো এখন ফোন করতে মানা করলাম।", সাগ্নিক বললেন।

    "তোর মাকে হাসপাতালে নিয়ে এলাম.... বুঝলি খোকা?"

    "কী? হাসপাতাল! কোন হাসপাতাল?"

    "হেল্থ ওয়ার্ল্ড, দুর্গাপুর।"

    "দেখেছো? তোমরা যেটা ভাল বুঝবে সেটাই করবে। আমার কথা কেও শুনবেই না। হাসপাতালে ভর্তি করার কথা কার মাথা থেকে বেরিয়েছে?"

    "আমি আর অনির্বাণ। এখানে বলছে অপারেশন করতে তিন লাখ টাকা খরচ। ফিফটি পার্সেন্ট জমা না করলে ওটি স্টার্ট করবে না।"

    "ও তাহলে টাকার জন্য ফোন করেছো আমাকে? তোমরা শুধুই টাকা চেনো তাই না? বাবা তোমার কোন আইডিয়া আছে এই ফ্ল্যাটের জন্য মাসে কত টাকা ই এম আই দি প্রতিমাসে? তোমার দাদুভাইয়ের স্কুলের ফিস কত জানো? জানো না। জানলে এটা বলতে না।"

    "কিছুই কী করা যাবেনা?"

    "আমি তো মাকে হাসপাতালে অ্যাডমিট করতে মানা করেছিলাম। যাঁরা উদ্যোগ নিয়ে মাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন, ওই অনির্বাণ জ্যেঠু, ওনাকেই বলো টাকাটা দিয়ে দিতে। তাছাড়া তোমাদের তো মেডিক্লেম আছে, টাকা লাগার কথা নয়! তোমার পেনসন আছে তার ওপর! কোন আক্কেলে আমার কাছে টাকা চাইছো বাবা?"

    "তোর মায়ের ওষুধ, বাড়ির কাজের লোক, রান্নার লোক এইসব মিলে মাসে কত টাকা খরচ হয় জানিস? তোর মায়ের নি রিপ্লেসমেন্টে মেডিক্লেমের সব বেনিফিট শেষ হয়ে গেছে। জমানো যেটুকু ছিল, তোর ফ্ল্যাট কেনার সময় তোকে ডাউন পেমেন্ট করতে দিয়ে দিয়েছিলাম।"

    "উদ্ধার করেছিলে! শান্তি? এখন ফোন রাখো তো। বিরক্ত করোনা মাইরি! পুজোর শেষদিনটা একেবারে মাটি করে দিলে। রাখো!"

    সাগ্নিক ফোন কেটে দেওয়ার পরেও সৈকতবাবু কানে ফোনটা ধরে "হ্যালো, হ্যালো খোকা?" বলতে লাগলেন। অনির্বাণ বাবু দূর থেকে দেখতে লাগলেন পায়ের তলায় মাটি হারিয়ে ফেলার প্রত্যক্ষ নিদর্শনটি।

    অনির্বাণ বাবু এগিয়ে এসে একটা কাগজ সৈকতবাবু র হাতে দিয়ে বললেন,"ফিফটি পার্সেন্ট পেমেন্ট করে দিয়েছি, বিলটা রাখ। অ্যাডমিশন নিয়ে নেবে বলল। চল বৌদির কাছে যাই।"

    "এতোগুলো টাকা! তুই কোথায় পেলি?"

    "ও তোকে ভাবতে হবে না। এখন চল।"

    অরুণা দেবীর কাছে আসতেই উনি জিজ্ঞেস করলেন,"দাদুভাইকে নিয়ে খোকা আর বৌমা একবার পুজোর শেষদিনে তো আসতে পারতো? ফোন করেছিলে? কিছু বলল বাবু?"

    "খোকার অফিসে অনেক কাজ বুঝেছো? মনে হয় পারবেনা। তবে তোমাকে ভর্তি করে নেবে। খুব তাড়াতাড়ি তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে।"

    আকাশী রঙের ইউনিফর্ম পরা দুজন স্টাফ অরুণা দেবীকে বেড়ে শুইয়ে লিফটে করে চারতলায় নিয়ে গেল। সৈকতবাবু ও অনির্বাণ বাবু সঙ্গে গেলেন। এরপর অনেকক্ষন কেটে গেছে সময়, অরুণা দেবীকে হালকা বেগুনী রঙের কমন একটা ড্রেস পরিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল থেকেই। ওয়ার্ডে থাকাকালীন অরুণা দেবীর সাথে দেখাও করেন সৈকতবাবু। তখনও তিনি বার বার খোকা, দাদুভাই ও বৌমার কথা জিজ্ঞেস করেন।

    বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নেমেছে তখন। ওপিডির ভিড় তখন বেশ হালকা হয়ে গেছে। একটা বেঞ্চে বসে ধুঁকছে সৈকতবাবু আর অনির্বাণ বাবু। শহরের রাস্তা জুড়ে আজ দুর্গা মায়ের বিসর্জনের বাজনা বাজছে। মা আজ ফিরে যাবেন কৈলাসে।

    ঠিক এমন সময় এক সিকিউরিটি এসে ডাকতে লাগলেন,"অরুণা মজুমদারের বাড়ির লোক কে আছেন?"

    সৈকতবাবু হঠাৎ হন্তদন্ত হয়ে দাঁড়িয়ে হাত তুলে বললেন," আমি।"

    "একবার আসতে হবে?"

    সৈকতবাবু আর অনির্বাণ বাবু ওই সিকিউরিটির পিছন পিছন হাঁটতে লাগলেন। ওনারা লিফটে পাঁচতলায় উঠে ওটির সামনে এসে দাঁড়ালেন।

    সিকিউরিটি বললেন,"এখানে দাঁড়ান। ডাক্তারবাবু এখনই বেরোবেন।"

    সৈকতবাবু র কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম স্পষ্ট। এসি চলার পরেও বেশ গরম করছে ওনাকে, বেশ বোঝা যাচ্ছে। বার বার রুমাল বের করে কপালের ঘাম মুছছেন। কিন্তু কথা বলছেননা একটিও।

    মিনিট পাঁচেক পর ডাঃ অমূল্যভূষণ বেরিয়ে এলেন, বললেন,"ও, ইয়েস মিস্টার মজুমদার। উই আর ভেরি সরি টু সে দ্যাট সি ইস নো মোর। অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। উই ট্রায়েড আওয়ার বেস্ট বাট সি ডিড নট রেসপন্স!"

    এইবলে সৈকতবাবু র কাঁধে দুবার চাপড়ে দিয়ে ডাক্তারবাবু লিফটে করে নিচে নেমে গেলেন। সৈকতবাবু দাঁড়িয়ে রইলেন এক জায়গায়। পাথর হয়ে গেছে তার শরীর। বিশ্বাস করতে পারছেননা ডাক্তারবাবুর কথাগুলো! স্থির হয়ে গিয়েছে তাঁর চোখের দৃষ্টি!

    দুমিনিট পর দুজন নার্স একটা বেডে সাদা চাদর ঢাকা বডি নিয়ে দরজা দিয়ে বেরিয়ে বললেন,"অরুণা মজুমদারের বাড়ির লোক আপনারা?"

    সৈকতবাবু কিছু বলছেন না দেখে অনির্বাণ বাবু এগিয়ে এসে বললেন, "হ্যাঁ।"

    "অরুণা মজুমদার মারা গেছেন। বডি দেখে নিন। ফুল পেমেন্ট হলে বডি ছাড়া হবে।"

    সৈকতবাবু একপা দুপা করে এগিয়ে এসে কাঁপা কাঁপা হাতে চাদরটা তুলতেই অরুণা দেবীর নিথর সুশ্রী মুখমন্ডল দেখতে পেলেন, চোখ বন্ধ তাঁর, যেন তখনও খোকা আর দাদুভাইকে খুঁজে চলেছেন।

    কান্নায় লুটিয়ে পড়লেন সৈকতবাবু । অরুণা দেবীর নিথর, শীতল দেহ জড়িয়ে অঝোরে কাঁদতে লাগলেন চিৎকার করে! সে কান্না চোখে দেখা যায়না! প্রিয় মানুষ চলে যাওয়ার দুঃখ যে কারোর পক্ষেই অসহনীয়! অনির্বাণ বাবু তাঁর বন্ধু সৈকতকে এভাবে কোনোদিন কাঁদতে দেখেননি।

    মিনিট দশেক পর পরিস্থিতি একটু স্থিত হলে সৈকতবাবু কে ধরে পাশের একটা বেঞ্চে বসালেন অনির্বাণ বাবু। নার্স বডি ভিতরে নিয়ে চলে গেলে অনির্বাণ বাবু সাগ্নিককে ফোন ধরার চেষ্টা করলেন। বার দশেক রিং হলেও ফোনে পাওয়া গেলনা সাগ্নিককে।

    সাগ্নিক অনেকগুলো মিসড কল দেখে বিরক্ত হয়ে কলব্যাক করেই চিৎকার করে বলতে শুরু করলেন," জ্যেঠু, কি ভেবেছো কি? আমি ভর্তি করতে বলেছিলাম হাসপাতালে? আমার কাছে টাকা চাইছো? লজ্জা করে না? ইয়ার্কি পেয়েছো? বাবা কে দাও ফোনটা...বার বার বলেছিলাম ফোন না করতে...তবু...."

    সাগ্নিকের কথা শেষ না হতেই এপ্রান্ত থেকে অনির্বাণ বাবু বলে উঠলেন,"ইওর মম ইস নো মোর!"

    দুপ্রান্তেই কিছুক্ষণ নিস্তব্ধতা! তারপর সাগ্নিক জিজ্ঞেস করলেন,"হো.... হো....হোয়াট! নো মোর মানেটা কী? ইয়ার্কি মারছেন?"

    "সাগ্নিক, তোমার মা আর নেই। কয়েকমিনিট আগেই.......", কাঁদতে লাগলেন অনির্বাণ বাবু।

    সাগ্নিক ওপ্রান্ত থেকে চিৎকার করতে লাগলেন,"হ্যালো....জ্যেঠু? হ্যালো.....হ্যালো..... হ্যা.....?"

    এদিকে রিসেপশনে বিল মেটাতে ব্যস্ত সৈকতবাবু । টাকা না মেটালে বডি ছাড়বে না। এটাই নাকি নিয়ম! এখনো ফিফটি পার্সেন্ট বাকি! কিন্তু সৈকতবাবু র ব্যাংকে যা আছে, তাতে করেও বেশ কিছুটা বাকি থেকে যাবে! তাহলে এতোগুলো টাকা কীকরে মেটানো হবে - এই চিন্তা করতে করতে সৈকতবাবু অনির্বাণ বাবুকে একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলল,"একটা উপকার কর ভাই!"

    "কী"

    সৈকতবাবু নিজের ডান হাতের অনামিকা আঙুলের থেকে বিয়ের আংটিটা খুলে অনির্বাণ বাবুকে দিয়ে বললেন,"আমার কাছে এটা আপাতত আছে। এটা দোকানে দিয়ে বাকি টাকাটা এনে দিবি প্লিস? বাইশ ক্যারেটের আছে। আশা করি এতে হয়ে যাবে।"

    "শোন; পাগলামো করিসনা! আমি দেখছি যদি....!"

    "না! অনেক করেছিস তুই! আর না প্লিস!"

    "সৈকত এটা তোর বিয়ের আংটি!"

    "অরুণাই আর রইল না! আংটি নিয়ে কী করব? তাছাড়া ওর দেওয়া আংটি ওরই লাশ বের করতে কাজে লাগছে! একদিকে ভালই হচ্ছে!"

    একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে একরকম না চাইতেও অনির্বাণ বাবু আংটি টা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলেন। কোনের একটা বেঞ্চে গিয়ে বসলেন সৈকতবাবু । কী অসহায় মনে হচ্ছে নিজেকে আজ! সন্তান পালনের কী এটাই পাওনা! নিজের ছেলের তার মাকে একবার দেখার সময় নেই? এতই কাজের চাপ? সন্তান হয়ত ভুলে যায় যে ছোটবেলায় একজন মা সন্তানের জন্য কতটা ত্যাগ স্বীকার করেন? কতটা কষ্ট পান প্রসব যন্ত্রনায়! কতটা পরিশ্রম করে মানুষ করে তাদের? আর তারা বড় হয়ে কী প্রতিদান দেয়? মিথ্যাচার! বৃদ্ধাশ্রম! স্বার্থপরতা!

    কয়েকঘন্টা কেটে গেছে! সৈকতবাবু র চোখটা একটু লেগেছে আর তখনই একটা চেনা গলার চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে গেল ওনার!

    "বাবা? বাবা......বাবা.....বাবা? মা কই? মা কোথায়?"

    এ কি! সাগ্নিক! এখন! এখানে! ওর তো অফিসের কাজ থাকার কথা! ব্যস্ত থাকার কথা নিজের সংসার নিয়ে! বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে!

    এসব কথা মনের মধ্যে চেপে একটিও কথা না বলে চোখের ঈশারায় কেবিন টা দেখিয়ে দিলেন সৈকতবাবু ।

    সাগ্নিক এক ছুটে কেবিনে ঢুকতে গেলে দাঁড়িয়ে থাকা সিকিউরিটি পথ আটকালেন, বললেন,"পেসেন্ট মারা গেছেন, পেমেন্ট ক্লিয়ার না হলে বডি ছাড়া হবে না! যান ওখানে বসুন!"

    আবার এক ছুটে সাগ্নিক ফিরে এল বাবার কাছে, কাঁদতে কাঁদতে বলল,"বাবা, পেমেন্ট ক্লিয়ার হয়নি মানে টা কী? বডি বলছে বাবা ওরা মা'কে! বডি বলছে! বাবা ওরা আমায় ঢুকতে দিচ্ছে না! বাবা কিছু বল বাবা! মায়ের কী হয়েছে?"

    কাঁদতে কাঁদতে সৈকতবাবু র পায়ে লুটিয়ে পড়ল সাগ্নিক। ও কী তাহলে ভুল বুঝতে পেরেছে? মায়ের স্থান যে সবার ওপরে সেটা কী তাহলে ও টের পেয়েছে? মাটির দাম কতখানি- তাহলে ও বুঝতে পেরেছে?

    ঠিক এমন সময় অনির্বাণ বাবু একটা কাগজ নিয়ে এসে হাঁফাতে হাঁফাতে বললেন,"সৈকত পেমেন্ট হয়ে গেছে। চল। এটা দেখালে ছেড়ে দেবে। আর এটা ধর, বাকি টাকাটা আছে।"

    তিনজনে এগিয়ে চলল কেবিনের দিকে। যে ঘরে নিথর হয়ে শুয়ে আছেন অরুণা দেবী। শুয়ে আছেন এক হতভাগিনী মা যিনি শেষ যাত্রায় ও তাঁর ছেলে আর নাতির মুখ দেখতে পেলেন না! শুয়ে আছেন এক ভাগ্যবতী স্ত্রী যাঁর স্বামী তাঁকে বাঁচানোর সবরকম চেষ্টা করে গেছেন!

    কাগজ দেখে সিকিউরিটি দরজা খুলে দিলেন। ছুটে গিয়ে বিছানার ওপর বসে মা এর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া হাতদুটো ধরে কাঁদতে কাঁদতে সাগ্নিক বলল," মা...মা...মা...? বাবা....মা কথা বলছে না কেন? ও মা? দেখ আমি এসেছি...তোমার খোকা এসেছে মা....তোমার নাতি ও আসছে...ওরা রাস্তায় আছে মা....মা....একবার কথা বলো, চোখ খোলো.....?"

    অরুণাদেবীর চোখ বন্ধ! শ্বাস বন্ধ! হৃৎস্পন্দন বন্ধ! শরীর শীতল! দেহ নিথর! সাগ্নিকের ঠেলায় মাঝে মাঝে অরুণাদেবীর পাথরের মত শরীরটা নড়ে উঠছে! সৈকতবাবু কথা বলার শক্তি হারিয়েছেন! অনির্বাণ বাবু দূর থেকে সব দেখছেন! আজ শুধু মা - ছেলের কথা! কিন্তু এ কথা শুধু একপক্ষের; ছেলে বলছে, কাঁদছে....কিন্তু মা শুনতে পাচ্ছেন কী? সাগ্নিক যদি একটু সময় বের করে আসতে পারত, তবে মায়ের মুখটা শেষবারের মত হয়ত দেখতে পেত! অরুণাদেবীরও শেষ ইচ্ছেটুকু পূরণ হলনা! দেখা হলনা নাতির সাথেও!

    নিয়মরীতি সম্পূর্ণ করে মরদেহ উঠল স্বর্গরথে! কাঁচের বাক্সবন্দী সুসজ্জিত শবদেহের পাশে বসে সৈকতবাবু আর সাগ্নিক! কিছু বলার নেই! কিছু ফিরে পাওয়ার নেই! আর সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে না! আর ফিরে পাওয়া যাবে না সেই চেনা আঁচলের গন্ধ! 'খোকা' বলেও আর কেও ডাকবে না! আর কেও ফোন করে বিরক্ত করবে না! আর তো 'মা' বলেও ডাকা হবে না!

    আজ বিজয়া দশমী! মায়ের ভাসান! যে পথে অরুণাদেবী চলেছেন অনন্তযাত্রায়, ঠিক তার উল্টোদিকে মা দুর্গা চলেছেন বাড়ি! চলেছেন কৈলাসে! চলেছেন মর্ত্যলোকের সব ব্যাথা নিজের কাঁধে নিয়ে! অরুণাদেবীরও হয়ত ব্যথা ছিল, যন্ত্রণা ছিল, ছিল কত অভিমান! সাগ্নিকেরও কত রাগ ছিল, ঝগড়া ছিল, জমানো কথা ছিল! সব যেন অধরা থেকে গেল! মা দুর্গা যেন যা কিছু বাকি সবকিছু নিয়ে চলেছেন নিজের সঙ্গে!

    ধীরে ধীরে হাইওয়ে ছেড়ে পিচের রাস্তা ধরল গাড়িটা! ধূপের আর রজনীগন্ধার গন্ধে গাড়ির ভিতরটা কেমন দমবন্ধ হয়ে আসছে! দূরে দশভূজা চলেছেন বিসর্জনের পথে! ধুনোর ধোঁয়ায় কেমন আবছা লাগছে! তীব্র নিয়নের আলোয় মায়ের মুখটা কেমন মায়াবী লাগছে! ঢাকের শব্দ আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাচ্ছে রাস্তার ওপারে! সাগ্নিক বেশ বুঝতে পারছে - তার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে! সরে যাচ্ছে ছেলেবেলা, মায়ের গায়ের গন্ধ, আরও কত কী!!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন