এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  ভ্রমণ  শনিবারবেলা

  • তবিলদারের দুনিয়াদারি - শহর থেকে শহরে - পর্ব ৮ - বার্সেলোনা

    হীরেন সিংহরায়
    ধারাবাহিক | ভ্রমণ | ১৪ জুন ২০২৫ | ১৪৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ছবিঃ এশাম্পল, বার্সেলোনা



     

    বার্সেলোনা এক



    এই পথ যেন না শেষ হয়




    কোনোদিন পাহাড় থেকে যেখান দিয়ে জলধারা নেমে এসে মিশে যেত ভূমধ্যসাগরের জলে, সেটি আজ অগণিত মানুষের বিচরণের এক দীর্ঘ সরণি, অ্যাসফল্ট নয়, চমৎকার মোজেইকে ঢাকা। আপামর জনগণের গল্প-গুজবের, আড্ডা দেওয়ার দীর্ঘ, প্রশস্ত রক বা বারান্দা। দু পাশে ছোট বড়ো মাঝারি দোকানের, হকারের ছাউনির অন্তহীন মিছিল –সেখানে পাবেন ফেক বার্সেলোনা ফুটবল টিমের শার্ট থেকে মূল্যবান প্রাদার ব্যাগ, একেবারে রিয়াল ম্যাকয়। পথ থেকে ডাইনে বাঁয়ে দুপা দূরে গেলে বোকারিয়ায় ঢাকা মাছের, শাক-সবজির দোকানের সম্ভার, আমাদের আশুবাবুর বাজারের শোভন সংস্করণ। পথের দু’পাশে কোন হাই রাইজ নয়, চোখ তুললে দেখা যায় কয়েকশ বছরের বিভিন্ন স্থাপত্যের আশ্চর্য সংমিশ্রণ –গথিক আর্চ থেকে মুরিশ ব্যালকনি, বারান্দা -সকলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। আর দেখবেন চলন্ত মানুষ, নানান সুরে বাক্যালাপে রত, গাছের নিচের বেঞ্চে এবং অগুনতি কাফেতে কফির কাপের সামনে বসে। 

    পথের নাম লা রাম্বলা, আক্ষরিক অর্থে শুকনো খাঁড়ি, যেখানে একদিন বয়েছে ঝরনার জল; বহু বচনে লাস রাম্বলাস। এই পথে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাঘুরি করা থেকেই কি ইংরেজিতে র‍্যাম্বলিং শব্দটির উদ্ভব?! 
     

    লা রাম্বলা



    সাগর কিনারে কলম্বাসের মূর্তি থেকে প্লাসা দে কাতালুনিয়া প্রায় এক মাইল এই সিধে রাস্তার নাম লা রাম্বলা, দৈর্ঘ্যে অক্সফোর্ড স্ট্রিট তার অর্ধেকের কম, জুরিখের বানহোফ স্ত্রাসে তার সিকি। পোল্যান্ডে ক্রিস্টিনার সঙ্গে হেঁটেছি উচ শহরের পিয়াত্রকভস্কায়, সেটি আরেক সরল রেখায় টানা দীর্ঘ পথ, প্রায় সম দূরত্বের। বোর্দো শহরের সাঁ ক্যাথরিন নাকি মাইল দশেক লম্বা, ইউরোপের দীর্ঘতম শপিং স্ট্রিটের দাবি রাখে (মাইল খানেক গিয়ে কাফেতে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছি); এটি প্রমাণ করতে চায় যে সাদা, লাল, গোলাপি (রোজে) ওয়াইন ছাড়াও বোর্দোর আরও কিছু প্রাণের পসরা আছে!

    লা রাম্বলা সকলের থেকে আলাদা। এক চির তরুণ কবি অমর করে গেছেন লা রাম্বলাকে। তাঁর নাম ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা।

    একদিন একটা অন্তহীন খুশির মধ্যে লা রাম্বলায় হেঁটে কবি ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা লিখেছিলেন,

    অনেক হেঁটেছি আমি, তবে জানি
    পৃথিবীর সবচেয়ে খুশিতে ভরা এই পথ

    যেখানে একই অঙ্গে বাস করে চারটি ঋতু
    ধ্বনিতে মুখরিত, বাতাসে উত্তাল, বার্সেলোনার রাম্বলা
    দুনিয়ার এই একমাত্র পথ
    এ পথ যেন শেষ না হয়।

    কবি মাত্র তিন মাস বার্সেলোনায় থেকেছেন (১৯৩৩), তখন হেমন্ত কাল, কিন্তু লোরকার লেখায় বসন্তের রঙের তুফান। তাঁর নাটক ‘ব্লাড ওয়েডিং’ এখানে প্রথম মঞ্চায়িত হয় (কামুর ক্রস পারপাসেস মনে করিয়ে দেয়)। জেনেরাল ফ্রাংকোর বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের সমর্থনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। তিন বছর বাদে ফ্যাসিস্ত আততায়ীর গুলিতে তাঁর জীবনের পথ থেমে গেলো ফুয়েন্তে গ্রান্দে, লা রাম্বলা থেকে অনেকদূরে, দক্ষিণে গ্রানাডায়। তাঁর বয়েস তখন মাত্র আটত্রিশ। 

    সুনীলদা একটি দীর্ঘ কবিতা লিখেছিলেন, কবির মৃত্যু: লোরকা স্মরণে। যখনই লা রাম্বলায় হেঁটেছি, একা, সবান্ধবে বা সপরিবারে, সুনীলদার কবিতার লাইন মনে পড়েছে

    ছেলেবেলার বাতাবি লেবু গাছের সঙ্গে মিশে গেল হেমন্ত দিনের শেষ আলো
    তিনি দেখলেন সেতুর নিচে ঘনায়মান অন্ধকারে একগুচ্ছ জোনাকি।

    এল কোর্তে ইংগলেস- একটি নামের রহস্য



    উত্তরে লা রাম্বলা যেখানে শুরু সেই স্কোয়ারে, প্লাসা কাতালুনিয়াতে, বার্সেলোনার সবচেয়ে পেল্লায় ডিপার্টমেনটাল স্টোর – এল কোর্তে ইংগলেস, আক্ষরিক অর্থে ইংরেজি ছাঁট বা ইংরেজি কায়দা। শুনে অবধি খটকা লেগেছিল। এটা তো বেলগেছের বা দত্ত বাগানের বিশুর দোকান নয়, যেখানে লেখা থাকতো সুচিত্রা সেলুন, উত্তম চুল ছাঁটাই হয়! এ স্পেনের বৃহত্তম, দুনিয়ার তিন নম্বরের ডিপার্টমেনটাল দোকান। তাহলে এ নাম এলো কোথা হতে?

    এল কোর্তে ইংগলেস প্লাসা, কাতালুনিয়া




    প্রায় দেড়শ বছর আগে সারা দুনিয়া জুড়ে ইংরেজি স্টাইলের কোট প্যান্ট সুটের বেজায় রেলা (জার্মানিতে আজও কোন পোশাক বা আচরণের সুখ্যাতি করতে গেলে বলা হয়ে থাকে আইনে ফাইনে এংলিশে আর্ট)। জামা কাপড়ের স্টাইলের তামাম কপিরাইট বন্ড স্ট্রিট বা কারনাবি স্ট্রিটের। তখন মেল অর্ডার ছিল না, এমনকি আমাজনের প্রাণ পুরুষ জেফ বেজোসের বাবা টেড ইউরগেনসেন অবধি জন্মান নি। লন্ডনে গিয়ে দু সপ্তাহ বসে থেকে সুট বানাতে গেলে ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রির জোগাড়। সেই সময় মাদ্রিদের এক দর্জি বললেন তিনি সে বিদ্যেটি পরম কৌশলে রপ্ত করেছেন, তিনি পারেন সেরকম সুট বা শার্ট বানাতে - দোকানের নাম দিলেন এল কোর্তে ইংগলেস! তাঁর ব্যবসা কেমন চলেছিল সেটি বিশেষ জানা যায় না। দোকানটি ছোট কিন্তু তার লোকেশন দুর্দান্ত – কাইয়ে প্রেসাদিওস, যেটি গিয়ে মেশে পুয়ের্তা দেল সলে। যারাই মাদ্রিদ গেছেন, তাঁরা জানেন ‘পুয়ের্তা দেল সল’ সে শহরের শুধু ভৌগোলিক নয়, আত্মিক কেন্দ্রবিন্দু। সেখানে বসে পরম শান্তির সঙ্গে আমার মতে দুনিয়ার পয়লা নম্বরের কাফে কন লেচে (দুধ কফি) এবং স্পেনের সেরা চুরো মেলে। শান্তি কাফের চেয়ারে বসেই পাওয়া যায়, চুরোর জন্য মাটির তলায় কয়েক পা নেমে যেতে হয়। 

    আরেসেস রদ্রিগেজ নামক মাদ্রিদের (মাদ্রিলেনো, যেমন কলকাতাইয়া) এক উদ্যোগী যুবক ভাগ্য সন্ধানে কিউবার রাজধানী হাভানায় এক বিভাগীয় বিপণিতে কিছুদিন কর্ম শিক্ষা করেন। কিউবা এ ক্ষেত্রে তখন অনেক এগিয়ে, স্পেনে সে ব্যবসা একেবারে অজানা। দেশে ফিরে আরেসেস তাঁর এক খুড়তুতো ভাই সিজার গন্সালেসের সঙ্গে মিলে প্রথম বিপণির জন্য মাদ্রিদে জায়গা খুঁজছেন। এমন সময়ে তাঁদের চোখে পড়ল কাইয়ে প্রেসাদিওসে টিমটিম করে চলা একটি দর্জির দোকান, তার নামটি জব্বর, এল কোর্তে ইংগলেস। তাঁরা শুধু দোকান বাড়ির মালিকানাই কিনলেন না, কোন অজ্ঞাত কারণে নামটিও রেখে দিলেন। সে দর্জি কোথায় বা কোন ছাঁটের সুট বানাতে গেলো সে বিষয়ে ইতিহাস নীরব। যেখানে কোনদিন চুল বা সুট কোনটাই কাটা বা ছাঁটা হয় নি, হবে না, সে দোকানের নাম হলো ইংলিশ ছাঁট! 
     

    এল কোর্তে ইংগলেস




    লা রাম্বলা শেষ হয় কলম্বাসের (স্প্যানিশে কলন) স্ট্যাচুর তলায়। তিনি ভারতের খোঁজ শুরু করেছিলেন স্পেনের পশ্চিমতম বিন্দু, পালোস থেকে, সেই মহান আবিষ্কারের শেষে ফিরলেন পুব দিকের ব্যস্ত বন্দর বার্সেলোনায়। বিধির এমনই পরিহাস যে এই আবিষ্কারের ফলে নতুন স্প্যানিশ বাণিজ্য বহরের দিক বদল হলো –মুখ ঘুরলো নতুন কলোনির, পশ্চিমের পানে, পুবের বার্সেলোনা বন্দর হারালো তার মর্যাদা ও ব্যবসা। কয়েকশ বছর বাদে ব্রিটেনে আমরা আবার সেই দিক পরিবর্তন দেখলাম- পুবের ফেলিক্সস্টো বন্দর আজ পশ্চিমমুখি লিভারপুলের চেয়ে অনেক বেশি কর্মব্যস্ত! 

    প্রসঙ্গত লা রাম্বলার দু পাশেই অনেক সিন্ধি ও বাংলাদেশি দোকান পাবেন। এই দূর স্পেনে নির্ভেজাল হিন্দি ও বাংলায় গপশপের সঙ্গে কেনা বেচা চলতে থাকে। ছেলের জন্য বার্সেলোনা ফুটবল টিমের জার্সি কিনতে গেছি; পরিচয় হবার পরে অত্যন্ত সহৃদয় বাংলাদেশি বিক্রেতা বললেন, ‘সার ঠিকটা নিবেন, না জালি? দেইখ্যা বুঝবেন না তবে দামে বিস্তর ফারাক’। সিন্ধিদের বিশাল দাপট, শুধু এখানে নয় স্পেনের দক্ষিণ প্রান্তে আরও অনেক বেশি চোখে পড়ে, যেমন মায়রকাতে। সেখানকার একটি যুবক, সঞ্জয় কিশনানি আমাদের ব্যাঙ্কের বন্ড বিভাগে কাজ করত। ব্যাংককে তার বিয়েতে গিয়েছিলাম- সে যে কি এলাহি ব্যাপার! 

    আজকাল সর্বত্র দাম ভীষণ বেড়ে গেছে জানি, তবে যদি পারেন হোটেল নয়, লা রাম্বলার ওপরে বেড অ্যান্ড ব্রেকফাস্ট, এয়ার বি এন বি গোছের কিছুর খোঁজ করবেন। অফিশিয়াল টুরে সেখানে থাকা যায় না, ব্যক্তিগত ভ্রমণে থেকেছি। রাম্বলার মানুষের মিছিলের পাশ কাটিয়ে মুর স্টাইলের দরোজা পেরয়ে ঢুকতেই দেখবেন নিভৃত নিরালা প্রকাণ্ড উঠোন, তার চারপাশে বারো ঘর, ঘরের বিশাল উঁচু সিলিং! উঠোন থেকে আকাশ দেখা যায়, আজকাল যাকে অ্যাট্রিয়াম বলে, সে রকম। চতুর্দিকে গাছের টব, বোটানিক্যাল গার্ডেন মনে হয়!

     

    লা রাম্বলার বেড ব্রেকফাস্ট



    সেখান থেকে বেরিয়ে কাফেতে ব্রেকফাস্ট করুন! এ এক আলাদা অভিজ্ঞতা। জানি প্যারিসের কাফে-র মোহে দুনিয়া আচ্ছন্ন, আহা প্যারিস বলে কথা। কিন্তু একটা বেয়াড়া মন্তব্য না করে পারি না। প্যারিসের ফুটপাথে পাতা চেয়ারে বসলে কফির সঙ্গে ফাউ হিসেবে পাবেন দু হাত দূরে ছুটন্ত গাড়ির ফেলে যাওয়া তেল বা ধোঁয়ার গন্ধ, সে তেল যতোই রিফাইন্ড হোক না কেন। অধিকন্তু শুনবেন ধাবমান ডেলিভারু বা সুইগি-সুলভ খাদ্যপণ্যবাহী মোটর বাইকের বিকট গর্জন। 

    রাম্বলার কাফেতে সে আশংকা নেই। চারিদিকে মৃদু কলরব, এখানে সবচেয়ে দ্রুতগামী যে যানের মুখোমুখি হবার সম্ভাবনা আছে সেটি শিশুদের প্র্যাম বা পুশ চেয়ার। 




    পবিত্র পরিবার: আমার মক্কেলের কোন তাড়া নেই 




    লন্ডনের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের আন্তর্জাতিক লোন সিন্ডিকেশন বিভাগের অধিপতিদের মাসে একবার সমবেত হয়ে গল্প-গুজব মতান্তরে পারস্পরিক এস্পিওনাজ করার জন্য একটি আনঅফিশিয়াল সংস্থান দীর্ঘদিন যাবত ধুনো জ্বালিয়ে রেখেছে, যার নাম সিন্ডিকেট ম্যানেজার’স ফোরাম। আমাদের দেখা সাক্ষাৎ হতো পালা করে এ মাসে এক ব্যাঙ্কের অফিসে পরের মাসে আরেক ব্যাঙ্কের খাবার ঘরে। যে বার যাদের ব্যাঙ্কে মিটিং তারা সেদিন আমাদের বরযাত্রী সুলভ আদর আপ্যায়ন করতো, দেখে শুনে হাম ভি কম নহি বলে একাধিকবার আমাদের বোর্ড ডিরেক্টরদেরও হাজির করেছি! এই এ বাড়ি ও বাড়ি আসা যাওয়ার ব্যাপারটা ক্লান্তিকর হয়ে গেলে একবার স্থির হলো আমাদের একটা আউটিং হোক, দূরে কোথাও চলে যাই। স্যান্ট্যান্ডার ব্যাঙ্কের আউসিন্দে বললে, “চলো বার্সেলোনা!” গৌরি সেনের পয়সায় দু’দিন চুটিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে, সেই সঙ্গে শহর ঘুরে দেখা। ততদিনে আমার বার্সেলোনা বার তিনেক ঘোরা হয়ে গেছে। তাতে কি, এক গুনাহ আউর সহি!
     

    সিন্ডিকেট ম‍্যানেজার গ্রুপ বার্সেলোনা




    আমাদের চেনা পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ অসমাপ্ত স্থাপত্য সাগ্রাদা ফ্যামিলিয়া (পবিত্র পরিবার) গিরজের সামনে দাঁড়িয়ে কমারতস ব্যাঙ্কের রোনাল্ড বললে, “দেখো, ব্যাঙ্কে আমাদের এক বছরের বাজেট এগারো মাসে হাসিল করতে হয়। বোনাসের নাম্বার ডিসেম্বরের পয়লা সপ্তাহে বড়ো সায়েবের কাছে চলে যায়, তাই সে মাসে যাই মুনাফা হোক, সেটা ধর্তব্যের মধ্যেই আসে না। আর এই এত বড়ো একটা আর্কিটেকচারাল প্রোজেক্টের কাজ একশো বছর বেশি চলে আসছে, কাজটা শেষই হয় না তবু তার ফাইনান্সিঙ্গে কমতি পড়ে না; ইঞ্জিনিয়ার, মিস্ত্রি, মজুর, মাইনে, ওভারটাইম, বোনাস নিয়ে চলে যাচ্ছে পুরুষানুক্রমে। অথচ লক্ষ লক্ষ লোক এসে দেখে ধন্য ধন্য করে যাচ্ছে! আই অ্যাম ইন এ রং জব!” 

    রোনাল্ড কমেরতস ব‍্যাংক পল সিটিব‍্যাংক




    বলতেই হলো তিরিশ বছর আগে আমার তৎকালীন ক্ষুদ্র পরিবার নিয়ে যখন এই গিরজেটি প্রথম দেখেছিলাম, এতদিন বাদেও তার বিশেষ অগ্রগতি হয় নি, অন্তত বাইরে থেকে। ভেতরে অবিশ্যি পুজো আচ্চা দান ধ্যান অব্যাহত।

    সন্ত ইওসেফের ভক্ত, বার্সেলোনার পুস্তক বিক্রেতা খোসে মারিয়া বোকাবেলা ভ্যাটিকান থেকে ফিরে এসে স্বপ্নাদেশ পেলেন -এই শহরে বানাতে হবে প্রভুর মন্দির যার নাম হবে পবিত্র পরিবারের ব্যাসিলিকা, সংক্ষেপে লা সাগ্রাদা ফ্যামিলিয়া। প্রথম স্কেচ আঁকলেন ফ্রানসিসকো ভিলার সেটি সম্পূর্ণ ট্র্যাডিশনাল গথিক স্টাইলে, চোখা তীক্ষ্ণ টাওয়ারে সাজানো। বার্সেলোনার এশামপলে ১৮৮২ সালে ভিত পুজোর অব্যবহিত পরেই ব্যক্তিগত কারণে ভিলার পদত্যাগ করলেন। এবার যিনি হাল ধরলেন তাঁর নাম আর্ট নুভো জগতে চিরকাল হীরের অক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি এমন এক স্থপতি, ডিজাইনার, স্রষ্টা, কারিগর যিনি গিরজে, বাড়ি ঘর থেকে উঠোন, বেড়া, ল্যাম্পপোস্ট বানিয়েছেন, কখনো একটা সোজা লাইন টানেন নি, সরলরেখা বা সমকোণকে ব্রাত্য জ্ঞানে শিল্পকর্ম থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন, যিনি কদাচ কাগজে একটা খসড়া এঁকেছেন, তাঁর মডেল ত্রিমাত্রিক। ভিলারের জ্যামিতিক প্রকল্পটিকে নির্বাসনে পাঠিয়ে তিনি এই মন্দিরকে দিলেন স্বতন্ত্র রূপ। বার্সেলোনা যতদিন থাকবে এই মানুষটির হাতের ছাপ রয়ে যাবে শহরের পথে ঘাটে, আনাচে কানাচে।

    লা সাগ্রাদা ফ্যামিলিটা অরিজিনাল স্কেচ ১৮৮২



    তাঁর নাম আন্তনি গাউদি।

    নতুন শিল্প, আর্ট নুভোর (জার্মানে ইউগেনড স্টিল) পুনর্জন্ম হলো। জনসাধারনের দেওয়া চাঁদার টাকায় কাজ চলে, গাউদি অসম্ভব বিখ্যাত আর্কিটেক্ট, সবাই চান গাউদি তাঁর কাজটা ধরুন। ধনী ব্যারন দুয়েল বললেন আপনি আমার জন্য একটা গোটা পাড়া বানিয়ে দিন! সেই ব্যস্ততার মধ্যে অবসর পেলে গাউদি এই সাগ্রাদা ফ্যামিলিয়ার দু দেওয়ালে কিছু পাথর লাগান! এমনই করে তিরিশ বছর কাটল; তারপর প্রায় একই সময়ে তিনি হারালেন তাঁর অতি প্রিয় ভাইঝি রোসা এবং সবচেয়ে প্রিয় শিষ্য বেরেঙ্গারকে। সেদিন তিনি বললেন আমার প্রিয়জনেরা চলে গেছে, আমার কোন স্ত্রী পুত্র পরিবার নেই। বাকি জীবনটা আমি পবিত্র পরিবারকে সমর্পণ করলাম। 

    পরের বারো বছর, মারা যাবার আগের দিন অবধি তিনি সমস্ত শক্তি দিয়ে আপন মর্জি মেজাজ মাফিক সাগ্রাদা ফামিলিয়ার যে চেহারা তিনি দিলেন সেটি পৃথিবীতে একেবারে অনন্য। আমাদের জীবনানন্দ দাশের মতন একদিন আনমনে রাস্তা পার হতে গিয়ে ট্রামের ধাক্কায় আহত হয়ে পথের ধারে পড়েছিলেন, পরনে জীর্ণ বাস, কেউ চিনতে পারে নি। একদিন বাদে তাঁর এক সাগরেদ তাঁকে খুঁজে পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। তাঁর বয়েস তখন চুয়াত্তর।
     

    লা সাগ্রাদা ফ্যামিলিয়া, ২০০১ সালে



    গল্প আছে কাজ কর্মের ধীর গতি দেখে বার্সেলোনার মেয়র একদিন জিজ্ঞেস করেছিলেন, নতুন গিরজের শুভ মহরতের আর কত দেরি?

    গাউদি বলেছিলেন, কেন? আমার মক্কেলের তো কোন তাড়া নেই!

    সেন্ট পিটার তাঁর আকাশি ক্যাথেড্রালের রূপ রেখা আঁকবার জন্য যখন আন্তনি গাউদিকে ডেকে পাঠালেন ততদিনে মাটি পৃথিবীর এই মন্দিরে তাঁর কাজের চারভাগের এক ভাগও সম্পূর্ণ হয় নি! তারপর স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ, কয়েকজন অ্যানারকিসট এই গিরজের গর্ভগৃহে আগুন লাগিয়ে গাউদির কিছু মডেল ভস্মীভূত করে। কাজ থেমে থাকে নি। শুনলে অবাক হতে হয় কাঠের ভারা বেঁধে কাজ চলেছে ১৯৬০ সাল অবধি। পরের আশি বছরে মোট ছটি টাওয়ারের পাঁচটি সম্পূর্ণ হয়েছে, শোনা যাচ্ছে ষষ্ঠ, প্রভু যিশুর টাওয়ার, সামনের বছর মাথা তুলে দাঁড়াবে। প্রথম দর্শনের চল্লিশ বছর বাদে না হয় আবার যাবো, যদিও আমার নিজের জীবৎকালে এই গিরজের কাজ শেষ হবে বলে মনে হয় না। 

    লা সাগ্রাদা ফ্যামিলিয়া, নির্মাণ চলছে




    আমার সময় কম কিন্তু পবিত্র পরিবারের হাতে কাল অন্তহীন। 

    একটি ক্লাবের চেয়ে বেশি / মাস কে ঊন ক্লুব 



    এক জার্মান বালিকার পাল্লায় পড়ে ফ্রাঙ্কফুর্টের সদর পুলিস থানা, হাউপটভাখের, পাশের গলিতে স্প্যানিশ শেখার সান্ধ্য স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। জার্মান ভাষাতেই হাবুডুবু খাচ্ছি এমতাবস্থায় স্প্যানিশ শিখতে যাওয়ার একটা যুক্তি সে দিয়েছিল- যদিও দুটোই ইন্দো ইউরোপীয় গুষ্ঠির সদস্য, সংস্কৃতের পৈতে পরানো জার্মানের পাশাপাশি ল্যাটিন গন্ধের একটা রোমান্স ভাষাকে চিনে নেওয়া যাক স্প্যানিশ শিখলে ইতালিয়ানে কাজ চালানো যায়! আফটার অল আমি মুখেন মারিতং জগত থিওরিতে গভীর বিশ্বাসী। শেখা বেশি দূর হয়নি, সেই বালিকা চলে গেছে অনেক দূরে, হামবুর্গে; কিন্তু ভাষার ভগ্নাবশেষটুকু মাথার ভেতরে রয়ে গেছে। স্প্যানিশ খানিকটা জানি বলে একটু অহংকার নিয়ে চলি, বিশেষ করে ইংল্যান্ডে যেখানে ইংরেজি ছাড়া অন্য কোন ভাষাকে বলে ‘লিংগো’ অর্থাৎ কোন বিদেশি জুবান।

    আলবের্তো, আমাদের শিক্ষক, প্রথমদিনেই একটি চমক দিলেন। স্পেনের ভাষা স্প্যানিশ (জার্মানে স্পানিশ) নয়! খেয়েছে, তবে যে আমরা বিশ্বের চতুর্থ সর্বাধিক প্রচলিত, একুশটি দেশের জাতীয় ভাষা লিখতে পড়তে শেখার জন্য এইখানে হাজির হয়েছি! একি ভুল ঠিকানা?

    আমাদের হতবাক দেখে আলবের্তো মৃদু হেসে বললেন স্পেনে চারটে ভাষা চলে। সবচেয়ে বেশি মানুষ বলেন কাসতেইয়ান, তারপরে কাতালান, কিছু গালিসিয়ান এবং বাস্ক। কাসতেইয়ান জানলে কাতালান মোটামুটি বোঝা যায়, উলটোটাও তেমনই, তবে ফারাক বিস্তর। আমি শেখাব কাসতেইয়ান, সেটাই দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশের সরকারি ভাষা। ভাষাটা স্পেন থেকে এসেছে, তাই এটাকে আপনারা এসপানিওল, স্প্যানিশ বা স্পানিশ বলেন। 

    আমার মতো ভারতীয়ের পক্ষে এর মর্ম উদ্ধার করা সহজ, ইউরোপে এসে থেকে কত দেশে প্রশ্ন শুনেছি, আপনি কি ইন্ডিয়ান (জার্মানে ইনডিশ) বলেন? পকেট থেকে দশ টাকার নোট বের করে দেখিয়েছি, আমাদের চোদ্দটা ভাষা আছে, কিন্তু ইন্ডিয়ান নেই!

    ইংল্যান্ডে আসার পরে বার্সেলোনার কাছে ইওরেত দে মারে ছুটি কাটাতে গেছি। ছোটদের বইয়ের দোকানে সিন্ডারেলার ছবিওলা বই দেখে চার বছরের ঐন্দ্রিলা বললে তুমি তো খানিক স্প্যানিশ জানো, আমাকে পড়ে শোনাও! হোটেলে গিয়ে পাতা উলটে দেখি যেন চিনি কিন্তু সবটা নয়! তখন আলবের্তোর কথা মনে পড়লো, এ বই কাতালানে লেখা, আমার চেনা কাসতেইয়ান নয় তাই অল্প বুঝি। দোকানে ফিরে বই বদল করতে হল, সিন্ডারেলার গল্প দু ভাষাতেই ছাপা হয়।

    স্পেন ছিল দু খণ্ডে বিভক্ত দেশ। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক মারপ্যাঁচে ১৪৬৯ সালে আরাগনের সতেরো বছরের রাজা ফার্দিনান্দ ও কাস্তিলের আঠারো বছরের রানি ইসাবেলা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে দুই যুযুধান শক্তি অস্ত্র সংবরণ করেন। একই পতাকার তলায় জমায়েত হলো যে দেশ তার নাম স্পেন; তাদের মটো – আমরা এক, যেমন ইসাবেলা তেমনই ফার্দিনান্দ।

    আজকের থারাগোথা ছিল আরাগনের রাজধানী, বার্সেলোনা তার এক করদ রাজ্য। কাস্তিলের রানির সঙ্গে আরাগনের রাজার বৈবাহিক সম্পর্ক হল বলে কি বার্সেলোনা, কাতালোনিয়ার প্রজা আরেক ভাষায় প্রভুর নাম জপ করবে? বিবাদের শুরু সেই দিনেই। কাতালুনিয়া চেয়েছে তার স্বাতন্ত্র্য, শুধু ভাষায় নয়, রাজ্যশাসনে, পাঁচশ বছরেও যার সমাধান হয় নি। মাঝেমাঝে কাতালুনিয়ার স্বাধীনতা চাই স্লোগান দিয়ে মিছিল বের হয়। এই সেদিন, ২০১৭ সালে একটি বিতর্কিত গণভোটে বিজয়ী কাতালুনিয়া সরকার স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল। মাদ্রিদ সেটি মানেনি বরং তাদের কঠোর শাস্তি দিয়েছে, নতুন কাতালুনিয়ার প্রেসিডেন্ট পলাতক, পার্লামেন্ট ও স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন শেষ। মাদ্রিদ থেকে সরাসরি রাষ্ট্রপতির শাসন চালু হয়েছে। 
    তবে কি শেষ হয়ে গেলো প্রতিবাদ? 
    না।

    উত্তর কলকাতায় মোহনবাগান ক্লাব প্রতিষ্ঠার দশ বছর বাদে স্থাপিত এফ সি বার্সেলোনা দিয়েছে কাতালুনিয়ার সম্মান, তার অহংকার, মর্যাদা, সার্বভৌমতার আবেগকে সবল কণ্ঠ। এফ সি বার্সেলোনা শুধু ক্লাব নয়, তার চেয়ে বেশি,অনেক বেশি। কাতালুনিয়ার স্বাধীনতার, আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বার্সেলোনা ফুটবল দল।

    যেমন ব্যাভেরিয়ার স্বপ্ন বহন করে বায়ার্ন মিউনিক।



    iPlot: “More Than a Club” or What Brands Can Learn from “Barca”

    একটি ক্লাবের চেয়ে বেশি, মাস কে ঊন ক্লুব




    এফ সি বার্সেলোনার মটো – একটি ক্লাবের চেয়ে বেশি, মাস কে ঊন ক্লুব। এই চারটি শব্দের মধ্যে নিহিত আছে কাতালুনিয়ার প্রার্থনা, কাতালুনিয়ার সঙ্কল্প। 

    রাজকীয় মাদ্রিদ (রেয়াল মাদ্রিদ) ও এফ সি বার্সেলোনা যখন মাদ্রিদের বার্নাবাউ ও বার্সেলোনার ক্যাম্প ন্যু -তে লা লিগায় বছরে দু’বার মুখোমুখি হয় সেটা ফুটবলের চেয়েও অনেক বেশি, কাস্তিলের বিরুদ্ধে কাতালুনিয়ার মুক্তির সংগ্রাম! এ দুটি মাঠে খেলা দেখিনি তবে স্টেডিয়াম ট্যুরের সময় লক্ষ কণ্ঠের নির্ঘোষ যেন শুনতে পেয়েছি। 

    ১৮৯৯ সালের বার্সেলোনা এবং ১৯০২ সালের রেয়াল মাদ্রিদের মাঠে দেখা হয়েছে ২৬১ বার, মোট রেজাল্ট বার্সেলোনা ১০৫- রেয়াল ১০৪।

    ফুটবল আপনার প্রিয় হোক আর নাই হোক বার্সেলোনা এবং কাতালুনিয়াকে জানতে গেলে একবার ক্যাম্প ন্যু -তে আসতেই হবে।

    বার্সেলোনা শহর যখন তার পুরনো সীমানা ছাড়িয়ে ক্রমশ পশ্চিমের শহরতলিকে গ্রাস করতে যাচ্ছে, সেই প্রায় দুশ বছর আগে ইদলেফোন সেরদা নামের এক ইঞ্জিনিয়ার একটি অসাধারণ ছকে টাউন প্ল্যানিং-এর চলতি ধারনাকে বদলে দিলেন। নিউ ইয়র্কের এভিনিউ এবং স্ট্রিটের কাটাকুটি খেলাকে হার মানিয়ে তিনি বানালেন আটকোণাকৃতি ব্লক –সেখানে স্ট্রিট বা এভিনিউর মাপ এক রকম থাকে না, প্রতিটি ক্রসিংয়ে একটু করে বেড়ে যায়। আর এই দাবার বোর্ডের মতন সাজানো ব্লক গুলির মাঝ দিয়ে তিনি বানালেন প্রায় মাইল দশেক লম্বা কোনাকুনি এক প্রশস্ত এভিনিউ। সেটি কোন মহাপুরুষের সম্মানে নামাঙ্কিত নয়, তার নাম শুধুই ডিয়াগোনাল (ডায়াগোনাল)। পাড়ার নাম এশাম্পল, তার একেবারে গোড়ায় বার্সেলোনার স্টেডিয়াম, কাম্প ন্যু বা নতুন মাঠ, অল্প দূরে ফুটবল অ্যাকাদেমির মাঠ, সেখানে অন্তত হাজার দশেক মানুষ কেবল ট্রেনিং দেখতে ভিড় করে।
     

    ডিয়াগোনাল



    ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম দফায় প্যারিসে ৪-০ গোলে প্যারিস সাঁ জাঁ -র কাছে হেরে যায়। ফিরতি লিগের খেলা বার্সেলোনার কাম্প ন্যু-তে, দিনটা ২০১৭ সালের ৮ই মার্চ। নির্ধারিত সময়ে স্কোর ৫-৫ ; বাড়তি সময়ের পঞ্চম মিনিটে সের্জিও রবের্তোর গোলে বার্সেলোনা ম্যাচ জিতলে ক্যাম্প ন্যু-তে যে উল্লাসের, উচ্ছ্বাসের তাণ্ডব বয়ে যায় তার ফলে ৫০০ মিটার দূরের খাইমে আলমেরা ইন্সটিটিউট অফ আর্থ সায়েন্সের রিখটার স্কেলে ১.০ ভূমিকম্প ধরা পড়ে। পৃথিবীর আর কোন খেলার মাঠে এর তুল্য কোন ঘটনা হয়তো বিরল। 

    একেবারে বিরল হয়তো নয়।

    শনিবার, ২৯শে জুলাই, ১৯১১ সাল। খালি পায়ে খেলে মোহনবাগানের অমর একাদশ ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্ট টিমকে ২-১ গোলে হারিয়ে আই এফ এ শিল্ড জেতার পরে কলকাতা উথাল পাথাল করে বিজয় মিছিল চলেছে ময়দানে। এমন সময়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে এক মধ্য বয়স্ক মানুষ এগিয়ে এসে অধিনায়ক শিবদাস ভাদুড়ীর দুটি হাত ধরে ফোর্ট উইলিয়ামের ওপরে উড়ন্ত ইউনিয়ন জ্যাক দেখিয়ে বলেছিলেন, বাবা, ঐ পতাকাটা কবে নামাবে?

    জবাবে সেদিন শিবদাস বলেছিলেন, আমরা যেদিন ফের শিল্ড জিতবো! 

    মোহনবাগান শিল্ড জেতে ১৯৪৭ সালে। বাকিটা ইতিহাস।

    অফিসে এ গল্প করা যায়নি; সেটা নিতান্ত আনডিপ্লোম্যাটিক ব্যাপার হবার সম্ভাবনা ছিল। তবে আর্সেনালের মাঠে বার্সেলোনার কোন ফ্যানকে পাশে পেলে একদিন এ কাহিনী অবশ্যই শোনাবো।

    পুনশ্চ:

    কাসতেইয়ানে ও কাতালানে সি (C) র উচ্চারণ থ অর্থাৎ বারথেলোনা, বেজায় গরম – হাথে মুচো কালর (hace mucho calor)। কিন্তু প্রচলিত ব্যবহারে, সারা ল্যাটিন আমেরিকায় সেটি স তাই, বার্সেলোনা, আসে মুচো কালর।
    জনসুবিধার্থে আমি সর্বত্র স ব্যবহার করেছি।
     


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ১৪ জুন ২০২৫ | ১৪৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • MP | 2401:4900:733a:c6bc:24cc:f366:ba9a:***:*** | ১৪ জুন ২০২৫ ১৬:৩৪732002
  • ফুটবল আর স্থাপত্য এদুটো দিয়েই বার্সেলোনা ঘুরিয়ে দিলেন আমাদের দাদা ! কবি লোরকা স্থপতি গাউদি আর বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাবের সংগে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ দাদা l 
  • হীরেন সিংহরায় | ১৪ জুন ২০২৫ ১৮:১৬732004
  • ধন্যবাদ!গাউদি প্রসঙ্গ আবার আসবে। তিনি বার্সেলোনাকে  মুডে রেখেছেন 
  • প্রতিভা | 223.233.***.*** | ১৪ জুন ২০২৫ ১৮:১৬732005
  • আমি যত আপনার লেখা পড়ি, আমার ধারণা দৃঢ় হয় আপনি রামপ্রসাদের উত্তরসূরী !  তবিলদারিটা আপনি যেচে নিয়েছেন, নাহলে আপনার লেখায় থাকে কাব্যসুধা, ভাস্কর্যের দার্ঢ্য আর ক্রীড়াসুষমা! 
  • কুণাল চট্টোপাধ্যায় | 2409:4060:2ecd:a566::9b88:***:*** | ১৪ জুন ২০২৫ ২২:০২732008
  • আপনার লেখা শুধু captivating ই নয় intoxicating ও।বার্সেলোনার পথে ঘুরে আলী সাহেবের ভাষায় ক্লান্তি এলে কোন পাবে এক পেয়ালা কফি বা বিয়ার নিয়ে আপনার লেখা পড়ে আবার হাঁটতে ইচ্ছে করবেই।
  • অরিন | 2404:4404:4405:700:9cec:717f:8477:***:*** | ১৫ জুন ২০২৫ ০৪:০৬732011
  • "কাতালুনিয়া চেয়েছে তার স্বাতন্ত্র্য, শুধু ভাষায় নয়, রাজ্যশাসনে, পাঁচশ বছরেও যার সমাধান হয় নি। মাঝেমাঝে কাতালুনিয়ার স্বাধীনতা চাই স্লোগান দিয়ে মিছিল বের হয়। এই সেদিন, ২০১৭ সালে একটি বিতর্কিত গণভোটে বিজয়ী কাতালুনিয়া সরকার স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল। মাদ্রিদ সেটি মানেনি বরং তাদের কঠোর শাস্তি দিয়েছে, নতুন কাতালুনিয়ার প্রেসিডেন্ট পলাতক, পার্লামেন্ট ও স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন শেষ। মাদ্রিদ থেকে সরাসরি রাষ্ট্রপতির শাসন চালু হয়েছে। 
    তবে কি শেষ হয়ে গেলো প্রতিবাদ? 
    না।"
     
    বারসিলোনা কি স্পেনের না কাতালুনিয়ার?
    এটাও থাক,
     
     
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন