এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  ভ্রমণ  শনিবারবেলা

  • তবিলদারের দুনিয়াদারি ১৪ - রিমিনি পর্ব চার

    হীরেন সিংহরায়
    ধারাবাহিক | ভ্রমণ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৬২ বার পঠিত
  •          

    ইমোলা : পরানের সাথে খেলিব আজিকে


     

    রুগ্নতার কারনে আমার কৈশোরকালে খেলার মাঠে নেমেছি কদাচিৎ, মাঠের পাশে বসেছি বেশি। আমাদের গ্রামে বলে শরীরের নাম মহাশয়, যা সওয়াবে তাই সয়; আমার শরীরে যা সয়নি সেটি অন্যদের অনায়াসে সাধন করতে দেখে খুশি হয়েছি, ঈর্ষা বোধ করিনি। পড়েছি অতীতের ক্রীড়াবিদদের কাহিনী– অনুপাতে স্বল্প সংখ্যক গ্রিক সৈন্য পারস্যের বিশাল ফৌজকে হারালে সেই সংবাদ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দৌড়েছেন চল্লিশ বছর বয়েসি ফিলিপিদেস; ম্যারাথন থেকে আথেন্স পৌঁছে রাজাকে শুধুমাত্র বলতে পেরেছিলেন, নিকোমেন (আমরা বিজয়ী)। তারপরেই শব্দ এবং শ্বাস রুদ্ধ হয় তাঁর। বিয়াল্লিশ কিলোমিটার (ছাব্বিশ মাইল তিনশ পঁচাশি গজ) তিনি কতটা সময়ে দৌড়েছিলেন সেটা কেউ স্টপ ওয়াচে ধরে রাখে নি। তাঁর অসামান্য শারীরিক প্রয়াসকে মানুষ আজও মনে রেখেছে ম্যারাথন দৌড়ের ভেতরে।

    ফিলিপিদেসের পায়ে জুতো ছিল কিনা জানা যায় না, তবে তার আড়াই হাজার বছর বাদে সন্ধ্যার আঁধারে ইতালিয়ান সৈন্যদের হাতে ধরা প্রজ্বলিত মশালের আলোয় রোমের কলসিয়ামের পাশে কন্সতান্তিনের আর্চের নিচে খালি পায়ে দৌড়ের শেষ সীমা অতিক্রম করে ইথিওপিয়ান দৌড়বীর আবেবে বিকিলা দুটি হাত তুলে ক্রীড়া প্রাঙ্গণে আফ্রিকার আবির্ভাব বার্তা জানালেন- অলিম্পিকে সেই প্রথম আফ্রিকান অর্জিত স্বর্ণ পদক। মনে রেখেছি এমনই কতো স্বর্ণময় মুহূর্ত। 

    স্পোর্ট এবং তৎসংলগ্ন অপ্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহে আমার আজন্ম আগ্রহ, তা সে দৌড় ঝাঁপ সাঁতার হোক বা কাঠের গদা হাতে ক্রিকেট, লাঠি হাতে হকি অথবা চামড়ার গোলাকৃতি এক বস্তুর পশ্চাদ্ধাবন করা ফুটবল। মানুষেরই দ্বারা আবিষ্কৃত কোন যন্ত্র ব্যবহারের পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে স্পোর্ট বলে মনে হয়নি, যেমন বাই সাইকেল রেসিং, টুর দ্য ফ্রন্স, ইয়টিং, মোটর বাইক বা মোটর গাড়ির রেসিং। কিছুটা কৌতূহল অবশ্যই ছিল ফর্মুলা ওয়ান নিয়ে। ফ্রান্সের মোটরওয়েতে এফ ১ নামের সস্তার হোটেল দেখা যায়। তা এটা কিসের ফর্মুলা, এর আবার দু নম্বর আছে নাকি? হাজার হাজার লোক ছোটে ইংল্যান্ডের সিলভারস্টোন, জার্মানির নুরবুরগরিং বেলজিয়ামের স্পাতে কিছু অসম্ভব দ্রুতগামী গাড়িকে স্প্লিট সেকেন্ডের জন্যে দেখতে এবং সারাদিন শ-খানেক গাড়ির ইঞ্জিনের গর্জন শুনতে। এদের সবাইকে পাড়ার পাগলা দাশু মনে করার কোন কারণ নেই। কোথাও হয়তো কোন একটা লজিক, আবেগ উন্মাদনা আছে। নিয়মগুলো বোঝা দরকার; ট্রিভিয়ার সঞ্চয় বাড়ানোয় কোনো বাধা নেই। জানবার চেষ্টা করি– তুলনামূলক ভাবে ক্রিকেট ম্যাচ শুরু হয় এগারোটায়, প্রিমিয়ার লিগ বেলা তিনটেয় কিন্তু জানা গেল এফ ওয়ান মোটর রেসিং হয় তিন দিন, শুক্র থেকে রবি, প্রায় টেস্ট ম্যাচের মতন। ফলাফল জানা যায় তৃতীয় দিনের শেষে। তার আইন কানুন বেশ জটিল। মোট দশটা টিম, প্রতি টিমে দুজন ড্রাইভার, শুক্রবার তারা সবাই দু-বার প্র্যাকটিস করবে, শনিবারে একবার, তারপর দুটো কোয়ালিফাইং ড্রাইভ। তারা যে সময় রেকর্ড করবে তার ওপরে নির্ধারিত হবে দু দলের দশ জন ফাইনালিস্ট, তাদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে দ্রতগতিতে একটি ল্যাপ বা চক্কর অতিক্রম করবেন তিনি পাবেন পোল পজিশন বা সবার আগে দৌড় শুরু করার অধিকার। রবিবার আসল খেলা– সেদিন যিনি সবচেয়ে কম সময় চক্কর কাটবেন তিনি হবেন বিজয়ী। তাঁর দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজবে, শ্যাম্পেন বোতল থেকে ফোয়ারা বৃষ্টি হবে সমবেত জনতার মাথায়। পয়েন্টের হিসেবে চ্যাম্পিয়ন পাবেন পঁচিশ, দশম স্থানাধিকারি এক পয়েন্ট। কোনদিন এ দৌড় না দেখলেও অনেকদিন যাবত জিম ক্লার্ক, স্টারলিং মস, নিকি লাউদা, আলান প্রস্ত ইত্যাদির নাম শুনে আসছি। একদিন দেখলে হয়। 

    দিনটা এলো। পয়লা মে, রবিবার, ১৯৯৪। সে কখনো ভোলার নয়।

    লম্বা উইকএন্ড; শ্রম দিবসে বিলেতে ছুটি, তবে সেটা শনি/রবিবারে পড়লে অব্যবহিত পরের সোমবার ছুটি পাওয়া যায়। ইউরোপের অন্য দেশে মে দিবসের ছুটি সে ক্ষত্রে মারা যায়, এ দেশে নয়। আমার ফরাসি জার্মান ইতালিয়ান সহকর্মীরা এটাকে আমাদের নিতান্ত অন্যায় সুবিধে বলে মনে করতেন। 

    বিবাহ বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবত উত্তর পশ্চিম লন্ডনে গোল্ডার্স গ্রিনের বাড়িতে একা থাকি, কখনো দু-সপ্তাহে একবার ছেলে মেয়ে আসে। সন্ধ্যায় কাজের শেষে অন্ধকার বাড়িতে ফিরি। সময় কাটানো শক্ত হয়। সে আমলে মোবাইল এসেছে কিন্তু গুগল আসে নি। আপন মনে ফোনে স্ক্রোল করার সুযোগ নেই। 

    অগত্যা টেলিভিশন! আজকের মতন দেওয়াল জোড়া টেলিভিশন নয়, কস্টকো থেকে কেনা বিশ ইঞ্চির বৃহৎ বপু তোশিবা। স্কাই টিভি ইতিমধ্যে সবার বসবার ঘরের দখল নেওয়া শুরু করেছে, আমার ক্ষেত্রে শোবার ঘরের। নেটফ্লিক্স অনেক দূরে, বিবিসি-র বৃথা গুজব না শুনে একান্ত আলস্য সহকারে স্কাই স্পোর্টে গেলাম– প্রিমিয়ার লিগ সবে শেষ হয়েছে দু-দিন আগে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড চ্যাম্পিয়ন, আর্সেনাল চতুর্থ। ক্রিকেটের মাঠে বল নয়, বৃষ্টি পড়ে তাই ব্যাটও নড়ে না। তাহলে আর কি দেখা যায়? কেন, এফ ওয়ান?

    সান মারিনো গ্রাঁ প্রির আজ ফাইনাল। রেসটি হবে সান মারিনো থেকে একশ কিলোমিটার দূরে ইমোলায়, তাহলে এ নাম কেন? সেটাই না হয় দেখা যাক। এফ ওয়ান লাইভ না দেখলেও খবর কাগজের খেলার পাতার দরুন হালের কিছু তারকার নামের সঙ্গে পরিচিতি ছিল, যেমন জার্মান মিখায়েল শুমাখার, অস্ট্রিয়ান গ্যারহারড ব্যারগার, ব্রাসিলিয়ান আয়ার্টন সেনা। সকলে মহা সমারোহে ব্যান্ড বাদ্য সহ আবির্ভূত হলেন, কিছু রিচুয়াল দেখা গেল, জাতীয় সঙ্গীত, পিট গুলিতে ছোটাছুটি। তার পরে শুরু হল দশটি গাড়ির দৌড়। সে গাড়ির টেকনিকাল গুণ বিচারের কোন ক্ষমতা আমার নেই। কাঁটাকলে পড়ার সময়ে বরানগরের বুকি পেন্সিলার প্রভাসদার খাতায় পেডিগ্রি নয়, শুধু নাম আর নম্বর দেখে ঘোড়ার ওপরে পঞ্চাশ পয়সা চাপিয়েছি। এখানে তো পয়সা লাগানো বা কোনো ড্রাইভারের জন্য গলা ফাটানোর প্রশ্ন নেই, অতএব কোন গাড়ি কত ভালো তা জেনেই বা কি হবে। আমার কোন ফেভারিট ড্রাইভার নেই। 

    ইমোলা রেসিং  ট্র্যাক




    যে পথে গাড়ি গুলি ছুটছে সে গেছে এঁকে বেঁকে, যাতে যাত্রাটি কঠিন প্রতিপন্ন হয়। তার দু পাশে স্টেডিয়ামে জনতার ভিড়; তাঁরা যে কি দেখছেন কে জানে, গোঁ গোঁ রবে অতি গর্জনে গাড়িগুলি ছোটে, সেকেন্ডের মধ্যে আরও দূরে চলে যায়। ধারাভাষ্যকারদের কাছে কিছু জ্ঞান আহরণ করা গেলো– ইমোলা সার্কিট মোট পাঁচ কিলোমিটারের, গাড়িগুলি ইমোলার ট্র্যাক পরিক্রমা করবে ৬৩ বার, সব মিলিয়ে তারা দৌড়ুবে প্রায় ৩০০ কিলো মিটার। জানা গেল রেস আসলে দুই বা তিন জনের মধ্যে, উঠতা সিতারা শুমাখার, ইংরেজ ডেমন হিল এবং তিন বারের চ্যাম্পিয়ন আয়ার্টন সেনা, সে অবধি প্রস্ত এবং সেনা তিন বার করে স্বর্ণ মুকুট মাথায় পড়েছেন। মিনিট কয়েকের মধ্যেই মনে হল এতাবৎ এফ ওয়ান রেস দেখে সময় নষ্ট না করে অন্তত একটা ভালো কাজ করেছি। 

    হঠাৎ থেমে গেল ইঞ্জিনের গর্জন, ঘণ্টায় দুশ কিলোমিটার গতিতে সপ্তম ল্যাপে তাম্বুরেলো কর্নারে বাঁয়ে ঘুরতে গিয়ে কন্ট্রোল হারিয়ে আয়ার্টন সেনার গাড়ি সোজা ধাক্কা মারে ইট পাথরের দেওয়ালে। ধারাভাষ্যকারেরা কোন আপডেট দিচ্ছেন না, দেখছি মেডিকাল ভ্যান এসেছে, সেনাকে নামানো হল গাড়ির ভগ্নস্তূপ থেকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই হেলিকপটার। এবার টি ভি ক্যামেরা দেখাচ্ছে আশে পাশের দৃশ্য, মাটিতে কী ঘটছে সেটা নয়। হাজার হাজার মানুষের মধ্যে নেমে এল এক নিশ্ছিদ্র নীরবতা।

    লন্ডনের সময় দুপুর দেড়টা। 




    বেশ খানিক সময় বাদে ঘোষণা হল– সেনাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিকটবর্তী বোলোনিয়া হাসপাতালে কিন্তু তিনি কেমন আছেন জানা গেল না কিন্তু এবার রেস শুরু হবে। এক ধারাভাষ্যকার কম্পিত কণ্ঠে বললেন মাত্র গতকাল অস্ট্রিয়ান ড্রাইভার রোলান্ড রাতসেনব্যারগার তাঁর জীবনের তৃতীয় রেসে এই ইমোলায় প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁর স্মৃতিতে আয়ার্টন সেনা একটি অস্ট্রিয়ান ফ্ল্যাগ বেঁধেছিলেন তাঁর গাড়িতে, দু-দিন আগে ফ্রি ট্রায়ালে আরেক ব্রাসিলিয়ান রুবেন্স বারিকেলো ভীষণ ভাবে আহত হয়েছিলেন, সেনা তাঁকে দেখতে ছুটে গেছিলেন সব আইন অমান্য করে। রুবেন্স প্রাণে বেঁচেছেন। আর আজ আর এক ঘটনা। আশা করি আয়ার্টন সেনা সুস্থ থাকবেন। 

    রোলান্ড রাতসেনব্যারগার

    ভিলানভ  কর্ণার,  যেখানে রাতসেনব্যারগার আহত হন




    ততক্ষণে আমার সকল আলস্য কেটে গেছে– এর নাম এফ ওয়ান রেসিং? এ যে মৃত্যুপুরী- এ কোন স্পোর্ট? 

    সেনার বিষয়ে কোন খবর নেই, চারিদিকে একটা আসন্ন শোকের ছায়া। হঠাৎ সেই নীরবতা ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেল– রেস আবার শুরু হবে। আমার বিশ্বাস হল না– দুনিয়ার নাম্বার ওয়ান রেসিং ড্রাইভার মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন খানিক দূরে বোলোনিয়ার হাসপাতালে আর সেই দুর্ঘটনাস্থলে শুরু হবে গাড়ির দৌড়? 

    হলো। যেন কিছুই হয়নি, আবার সেই ভয়ঙ্কর গর্জনে ছুটতে থাকল বিশটা গাড়ি, প্রতি চক্করে পার হয়ে গেলো তাম্বুরেলো কর্নার যেখানে চুরমার হয়ে গিয়েছিল আয়ার্টন সেনার গাড়ি, এই এক ঘণ্টা আগে। তেষট্টি চক্কর কেটে প্রথম বারের মত এফ ওয়ান রেস জিতলেন বেনেটনের মিখায়েল শুমাখার, পরে জিতবেন আরও ছ বার। বিজয়ীদের পোডিয়ামে দাঁড়ালেন তাঁর দু পাশে– দ্বিতীয় স্থানে ফেরারির নিকো লারিনি এবং তৃতীয় ম্যাকলারেনের মিকা হাক্কিনেন। জার্মান জাতীয় সঙ্গীত বাজলো, মনে আছে শুমাখারের পাথরের মতো, স্তম্ভিত মুখ, মাথা তুলতেও পারছেন না। কোন আনন্দ উৎসব হল না, শ্যাম্পেনের বোতল ঝাঁকিয়ে সমর্থকদের স্নান করানো হল না। 
     

    ১৯৯৪ সালের ইমোলা রেসের পোডিয়াম



    ইতালিয়ান সময় বিকেল ছটা বেজে পঁয়ত্রিশ মিনিটে বোলোনিয়ার হাসপাতাল জানালেন ব্রাসিলিয়ান ড্রাইভার আয়ার্টন সেনা আর নেই। 

    একটি মাত্র দিনে এক অখণ্ড অবসরে ভেবেছিলাম দেখাই যাক ফর্মুলা ওয়ান রেসিং ব্যাপারটা কী। দেখলাম মানুষের দুঃসাহসী যাত্রা, মৃত্যু এবং সেই শোককে উপেক্ষা করে আবার সেই অভিযান। এ সব কীসের জন্যে? 

    বৃহস্পতিবার, মে মাসের চার তারিখে আয়ার্টন সেনার কফিন যখন সাঁও পাউলো পৌঁছায়, সারা ব্রাসিল স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফুটবল ম্যাচ বন্ধ, খেলার মাঠে প্লেয়াররা হাঁটু গেড়ে নীরবে অশ্রু বর্ষণ করেছেন। পরদিন তাঁর শোক যাত্রায় দু-লক্ষ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন, সাঁও পাউলোর ইতিহাসে বৃহত্তম। আয়ার্টন সেনাকে একুশ গান স্যালুট সহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। তাঁর কফিন বহনে কাঁধ দিয়েছিলেন সে সময়ের সকল চ্যাম্পিয়ন ড্রাইভার। শুমাখার এমনি শোকগ্রস্ত, তিনি আসতে পারেননি। 

    সে ছিল ব্রাসিলের এক দুঃসময়, মাত্র দশ বছর আগে সামরিক শাসনের অবসান হয়েছে, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপন্ন, এমনকি চব্বিশ বছর যাবত ব্রাসিল দল ফুটবলের বিশ্বকাপ জেতা দূরের কথা, একটা সেমি ফাইনালে অবধি পৌঁছুতে পারেনি। দশ বছর ধরে ব্রাসিলের গৌরব, তার একমাত্র আইকনের নাম ছিল আয়ার্টন সেনা। 
     

    আয়ার্টন সেনা



    চোখের সামনে তাঁকে হারিয়ে যেতে দেখলাম। 

    আর কোন দিন এই মরণখেলার ধারে কাছে যাবো না। 

    ইমোলা: একত্রিশ বছর পরের একদিন 

    ৬ জুলাই, ২০২৫ 

    রিমিনি এসেই মায়া বললে একদিন ইমোলা যাওয়া যায়? সেখানে এফ ওয়ান রেস হয়; দিনো এনজো ফেরারি ট্র্যাকটা দেখতে চাই। ট্রেনে এক ঘণ্টাও লাগে না। 

    কনিষ্ঠা কন্যাটি আমাদের পরিবারের সকলের চেয়ে আলাদা। ছেলে ফুটবল, রাগবি খেলেছে, বড়ো মেয়ে নেট বল। মায়া ঘোড়ায় চড়েছে সাত বছরে, দশ বছরে প্রথম পোলো, স্কুল থেকে নিয়মিত স্কিইং ট্রিপে ইতালি ও ফ্রান্সে গেছে, সাঁতারে সে দুর্বার, ক্রোয়েশিয়া, গ্রিস, ইতালিতে তাকে সমুদ্রে ঝাঁপাতে দেখে আতঙ্কিত হয়েছি। আমার এবং রোদিকার চোদ্দ পুরুষে এই ধরনের বিপজ্জনক হবি কারো কখনো ছিল বলে জানা যায় না। গাড়ি সে নিজে চালায় না কিন্তু এফ ওয়ানের বিরাট ফ্যান। সেটা যে কবে, কোন বালকের প্রভাবে ঘটেছে তা জানা হয়ে ওঠেনি। মায়ার অন্য সব অ্যাক্টিভিটিকে আমি নীরবে সমর্থন দিয়ে যাই তবে হালে সে সার্ফিং-এর কথা তুললে রোদিকা তার প্রবল বিরোধিতা করেছে। 

    রিমিনি এসেছি রোমান ইতিহাস,সিজার, দান্তে, ফেলিনির সন্ধানে। ইমোলার অবস্থান যে তার ধারে কাছে সেটা জানা ছিল না। আমাদের সফর প্ল্যানিং পর্যায়ে সান মারিনো, রাভেন্নার নাম এসেছে, ইমোলা নয়। কিন্তু ইমোলা কেমন করে যাই? স্বচক্ষে কেমনে দেখি তাম্বুরেলো কর্নার? সেই দেওয়াল যেখানে আয়ার্টন সেনা তাঁর ১৬১ নম্বর রেসে প্রাণ দিয়েছেন? মাঝে তিনটে দশক কেটে গেছে। আমার টিভিতে দেখা প্রথম ও শেষ এফ ওয়ান রেসের কথা মায়াকে কোনদিন বলিনি। কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে? 

    ইমোলার ট্রাক




    আজ তাকে সেই দিনের গল্পটা বলতে হল। পয়লা মে ১৯৯৪, সেই একা থাকার দিনগুলি। কাজ থেকে অন্ধকার বাড়িতে ফিরি, কেউ দরোজা খোলে না। গোল্ডার্স গ্রিনের বাড়ির ছটা ঘরে আমি একা প্রাণী, দোতলার খাটে শুয়ে জীবনের একমাত্র এফ ওয়ান রেসিং দেখা, ইমোলার মরণ খেলা। এমন তো কথা ছিল না; এ কোন দৈব যোগাযোগে কোন সমাপতনে হাজির হয়েছি ইমোলার কাছে এবং মায়া যেতে চায় সেথা। এ রকম ঘটনা তো ফিল্মে, নাটকে হয়! এসেছিলাম রিমিনি রাভেন্না সান মারিনো দেখতে, যোগ হলো ইমোলা।

    হবো না হয় এক শোকের মুখোমুখি। 

    মায়াকে বললাম, চলো, যাবো তোমার সঙ্গে! কন্যার মাতা জানালেন ইমোলা কী বা কেন তিনি জানতে চান না। আমরা সেখানে স্বচ্ছন্দে একদিন কাটাতে পারি; তিনি শান্তিতে রিমিনির দোকানপাট পর্যবেক্ষণ করবেন। শুভ যাত্রা (রোমানিয়ানে দ্রুম বুন)। 

    রিমিনি থেকে ইমোলার ট্রেন নন স্টপ নয়, পঞ্চাশ মিনিটে আটটা স্টেশনে থামে। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাভিনানো সুল রুবিকোনে, এখানেই কোথাও সিজার সেই নদীটি পার হয়ে রোমান রিপাবলিকে তুলকালাম বাধিয়েছিলেন। ইমোলা স্টেশন দেখে হতাশ হলাম। বোলপুর তার তিনগুন বড়ো। টেলিভিশনে আহরিত তথ্য অনুযায়ী দিনো এ এনজো ফেরারি অটো ড্রোম এ প্রায় এক লক্ষ দর্শক বসতে পারেন তবে স্টেশন এত ছোট কেন? কারণ শহরটি খুবই ছোট, মাত্র সত্তর হাজার লোকের বাস; বছরে তিন দিন লোকে লোকারণ্য হয় মাত্র!

    স্টেশনে ট্যাক্সি বুক করার সময় ভদ্রমহিলা সতর্ক করে দিলেন, ইমোলায় ট্যাক্সির সংখ্যা খুব কম তাই তার আসতে দেরি হতে পারে। আমরা যেন ধৈর্য পূর্বক অপেক্ষা করি। তিনি ভালো ইংরেজি বলেন দেখে জানতে চাইলাম গ্রাঁ প্রি-র সময়ে কী হয়? তিনি মৃদু হেসে বললেন, কে জানে কোথা থেকে হঠাৎ অজস্র ট্যাক্সি এসে হাজির হয়। কেউ খোঁজ করে না তাদের সঠিক লাইসেন্স আছে কিনা, এটা ইতালি! 

    ইমোলা স্টেশন




    মাত্র দু-চারটে রাস্তা ও একটি খাল পেরিয়ে স্টেশন থেকে অটোড্রোম যেতে মিনিট দশেক লাগলো। আজ কোন প্রকারের রেস নেই। তবু কিছু টুরিস্ট হাজির- পোল্যান্ড, জার্মানি, অস্ট্রিয়া এমনকি লিথুয়ানিয়ান নাম্বার প্লেট চোখে পড়ল। মেন রিসেপশানে জানলাম এখানে এমন কোন স্পট নেই যেখান থেকে পাঁচ কিলোমিটারের ডিম্বাকৃতি পুরো ট্র্যাক দেখা যেতে পারে। পদব্রজে পুরোটা ঘোরা বাতুলতা মাত্র। তাছাড়া জুলাই মাস, প্রচণ্ড গরমের দিন। মায়াকে বললাম রেলিঙের পাশ দিয়ে যতোটা পারি ঘুরে ঘুরে ট্র্যাকের অংশ বিশেষ দেখি। তবে প্রথম যাব তাম্বুরেলো কর্নারে, শুনেছি তার পাশেই আছে আয়ার্টন সেনার স্ট্যাচু। 

    তাম্বুরেলো কর্নারে আয়ার্টন সেনার ছবি

    তাম্বুরেলো কর্নারে আয়ার্টন সেনার স্ট্যাচু




    সেখান অবধি যাবার আগেই রেলিঙের ফাঁকে চোখে পড়ল আয়ার্টন সেনার মুখ – তাম্বুরেলো কর্নারে, যেখানে তাঁর গাড়ি দেয়ালে ধাক্কা মেরেছিল ঠিক সেইখানে বাঁধানো বা টাঙ্গানো আছে আয়ার্টন সেনার ছবি। স্তব্ধ হয়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়েছিলাম। এই এক জীবনে অভাবনীয় ঘটনার কোনো শেষ নেই। আয়ার্টন সেনাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাবলাম একত্রিশ বছর আগের এক নিঃসঙ্গ দিনে দেখেছিলাম ক্রীড়াঙ্গনে তাঁর নির্মম মৃত্যু। সেদিন আমার নিজের জীবনে সামনে তাকিয়ে দেখার মতন ছিল না কিছুই। ভাবিনি একদিন আবার ঘর সংসার হবে, জীবন ভরে উঠবে, ছোট্ট মেয়ে ছুটে এসে দরোজা খুলে দিয়ে বলবে আমার জন্যে কী এনেছো। সেই মুহূর্তে ভুলে যাবো বারো ঘণ্টা আকাশ ভ্রমণের ক্লান্তি। আজ, এমিলিও রোমানিয়ার প্রান্তরে ইমোলার একটি কোনায় দাঁড়িয়ে গ্রীষ্মের এই মধ্য দিনে মনে পড়ে গেল আমার ফেলে আসা সেই সব দিনের একাকীত্ব। 

    অসীম উৎসাহে মায়া ঘুরল অনেক। আমি সঙ্গে হেঁটেছি আর ছবি তুলেছি মাত্র। মনের ভেতরে কেবলই দেখেছি আয়ার্টন সেনাকে। 

    ট্রাকের পাশে মেয়ের সাথে লেখক

    এনজে এ দিনো ফেরারি অটো ড্রোম ইমোলা




    এই এক জীবনে ফিরে পেয়েছি আরেক জীবন, ফিরবেন না আয়ার্টন সেনা। আমার হারানো আর পাওয়ার মাঝে আয়ার্টন সেনা দা সিলভা এক অদৃশ্য সেতু বন্ধন। 

    পুনশ্চ: 

    আয়ার্টন সেনার মৃত্যু তদন্তে ইতালিয়ান কর্তৃপক্ষ কর্তব্যে অবহেলার কারণে ছ-জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন– সেনার ব্রান্ড উইলিয়ামসের তিনজন (ফ্র্যাঙ্ক উইলিয়ামস, প্যাট্রিক হেড, আদ্রিয়ান নিউই), দিনো এ এনজো ফেরারি ইপোদ্রোমের ডিরেক্টর ফেদেরিক বেন্দেনেলি, সার্কিট ডিরেক্টর জর্জিও পোগি এবং রেস ডিরেক্টর রোল্যান্ড ব্রুন্সারেদে। তিন বছর মামলা চলার পরে সকলেই বেকসুর সাব্যস্ত হলেন। ইতালিয়ান স্টেট প্রসিকিউটর আপিল করেন এবং উইলিয়ামস টিমের নিউই এবং হেডের বিরুদ্ধে আবার অভিযোগ আনেন- তাঁরা সেনার এবং তাঁর গাড়ির সুযোগ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করেননি। পুনর্বার তদন্তের পরে সেটিও খারিজ হয়ে যায়– দুর্ঘটনার কারণ সাব্যস্ত হল স্টিয়ারিং কলামের ত্রুটি। অতএব দোষ কোন ব্যক্তির নয়, যন্ত্রের।

    ১৯৯৪ সালের ইমোলা রেস এফ ওয়ানের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তিম অধ্যায়। 

    সেনার মৃত্যুর পরে এফ ওয়ান রেসিং-এ প্রভূত পরিবর্তন হয়েছে। ড্রাইভার ও গাড়ির সুরক্ষা বেড়েছে বহু গুণ, ট্র্যাকের, টার্নের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হয়; ইমোলার আগের তিরিশ বছরে মারা গেছেন চল্লিশের বেশি ড্রাইভার, পরের কুড়ি বছর কারো মৃত্যু ঘটেনি। ২০১৪ সালে টোকিও গ্রাঁ প্রি-তে সাংঘাতিক চোট পাওয়ার বছর খানেক বাদে মারা যান জুলস বিয়াঙ্কি। 

    ১৯৯৪ সালে প্রথমবার জেতার পরে মিখায়েল শুমাখার আরও ছ-বার এফ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন হন। ইমোলার উনিশ বছর বাদে, ২০১৩ সালে ক্রিসমাসের চারদিন বাদে ফ্রান্সের মেরিবেলে স্কিইং এর সময়ে পড়ে গিয়ে একটি পাথরে তাঁর মাথায় চোট লাগে। তিনি কোমায় ছিলেন এক বছর। বেঁচে আছেন কিন্তু কেমন বা কী অবস্থায় আছেন সেটি তাঁর পরিবার কাউকে জানাতে চান না। তবে তাঁর সাত বার চ্যাম্পিয়ন হবার রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রয়েছে; লুইস হ্যামিলটনও সাত বার বিজয়ী হয়েছেন, শুমাখারকে ছাড়িয়ে যাননি। 

    আয়ার্টন সেনার মৃত্যুর আড়াই মাস বাদে, ১৭ই জুলাই, ১৯৯৪ ব্রাসিল আবার ফুটবলের বিশ্বকাপ বিজয়ী হয়। 


    সাও পাওলোয় আয়ার্টন সেনার স্মৃতি

     


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Goutam | 171.5.***.*** | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৫733945
  • অপূর্ব 
  • Debanjan | 2409:4060:2ecd:a552:7224:69a7:133f:***:*** | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:০৭733946
  • ভাষা নেই l এক ফেলে আসা সময়কে তুলে ধরেছেন , নিয়ে গেছেন কয়েকদশকে আগেই একটা বেদনাময় দিনে l নতুন করে নতুন ভাবে তুলে ধরেছেন l 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন