এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  উৎসব  ইস্পেশাল

  • ফ্রান্স - একটি অবতরণিকা

    হীরেন সিংহরায়
    ইস্পেশাল | উৎসব | ০৫ অক্টোবর ২০২৫ | ৪৪ বার পঠিত
  • অলংকরণ: রমিত 



    রবিবার দিন উওকিঙ্গের চার্চের বাইরে যে পুরনো বইয়ের স্টল বসে তাকে দোকান নয়, জঞ্জাল রি সাইক্লিং করার আখড়া বলাটা অধিক সমীচীন মনে হয়। শীতের শেষে বাড়ির চিলেকোঠায়, বাগানের শেডে, গ্যারাজের কোণে পড়ে থাকা ফ্রেমে বাঁধানো ছবি , কাঠের বাকসোর সঙ্গে সঙ্গে বাপ পিতেমোর বই পত্তর দূর করার উৎসবের সরকারি নাম স্প্রিং ক্লিনিং ! বসন্তে সাজো নবরূপে। জীর্ণ পুরাতন যাক দূরে যাক। অবশ্য সবটাই যে ছাই তা নয় , সেখানে ফুঁ দিয়ে কেউ কেউ অমূল্য রতনও খুঁজে পেয়েছেন। বি বি সির একটা প্রোগ্রাম চলছে বহু দিন। এটি শহরে শহরে ঘোরে , তার নাম অ্যান্টিক রোড শো। হাই পাওয়ার চশমা পরা কয়েক জন বিজ্ঞ মহিলা ও পুরুষ সেই হাটে বসেন, শহরের মানুষ জন জড়ো হন, তাঁদের সামনের টেবিলে পেশ করেন পারিবারিক সূত্রে পাওয়া কানের দুল , কয়েন, ধূসর ম্যাপ, কিং জেমসের ছেঁড়া খোঁড়া বাইবেল। তারপর অধীর আগ্রহে মতামতের অপেক্ষা ; যদিও বি বি সির এই জ্ঞানীরা কিনবেন না কিছুই কিন্তু অনুমান করবেন এই সব অমূল্য সম্পদের কি দাম হওয়া উচিত। সকলে যে খুশি হয়ে ফেরেন তা নয় কিন্তু এই রোড শোতে কখনো কোটি টাকার ছবিও লোকচক্ষুর সামনে আবির্ভূত হয়েছে। পাউনড বা ইউরোর হিসেবে না হলেও আমার কাছে মূল্যবান কিছু বই ম্যাপ বা ছবি গিরজের চত্বরের স্টলে খুঁজে পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। 

    কার্ড নেবে না তাই নগদ পঞ্চাশ পেন্স দিয়ে সেদিন কিনলাম কার্ড বোর্ডে বাঁধানো একটি পকেট বই – ফরেন অফিস প্রণীত , ব্রিটিশ পলিটিকাল ওয়ারফেয়ার দপ্তরের সৌজন্যে প্রকাশিত। তার নাম

    Instructions for British Servicemen in France 1944 

    ১৯৪৪ সালে নরম্যানডি বিচে মিত্র শক্তির অবতরণের আগে ও পরে এটি ব্রিটিশ সৈন্য ব্যারাকে হাতে হাতে বণ্টন করা হয়েছিল। 

    প্রথমেই বলা হয়েছে ‘আপনারা ফ্রান্সে পৌঁছেছেন নাৎসি কুশাসন থেকে সে দেশ এবং ইউরোপকে মুক্ত করতে । অতএব এই দেশটার সম্বন্ধে আপনাদের কিছু জেনে নেওয়া উচিত যেমন ভাষা , আচার ব্যবহার, প্রশাসন পদ্ধতি ইত্যাদি’। 

    দুনিয়া জুড়ে সাম্রাজ্য বিস্তারের কালে ইংরেজ তাদের প্রশাসকদের হয়তো সে সব দেশের ইতিহাস সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়েছে ; ভি এস নাইপাল লিখেছেন ( অ্যান এরিয়া অফ ডার্কনেস ) ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে যোগ দিতে গেলে একটি স্থানীয় ভাষা এবং ঘোড়ায় চড়তে জানাটা নাকি ব্রিটিশ অফিসারদের আবশ্যিক ছিল। কিন্তু হনন লুণ্ঠনে উন্মত্ত ইংরেজ সেনাদের কোন উপনিবেশের ইতিহাস ভূগোল সংস্কৃতির বিষয়ে কোন সান্ধ্য লেকচার ইটন, অক্সফোরডে দেওয়া হয় নি। তার একটা মৌলিক কারণ এই হতে পারে যে সাধারণ ইংরেজ সেনা ইটন অক্সফোরডের বেঞ্চে বসার যোগ্য ছিল না –সেটা মাত্র উঁচু তলার অধিকার। 



    পুস্তিকার মুখবন্ধে বলা হয়েছে 

    আপনার যাচ্ছেন ফ্রান্সের ,ইউরোপের মুক্তিদাতারূপে। ফরাসিদের সমবেদনার চোখে দেখবেন - মনে রাখবেন তাঁরা বিগত চার বছরের নাৎসি শাসনে হারিয়েছেন আপন স্বাধীনতা, আত্মমর্যাদা এবং জাতীয় গরিমা। ১০৬৬ সালের পর ব্রিটেন কখনো বিদেশি শক্তির আনুগত্য স্বীকার করে নি ; বিগত ৭০ বছরে জার্মান সৈন্য ফ্রান্সের ভূমি দখল করেছে তিন বার ( ১৮৭০, ১৯১৪, ১৯৪০)। যুদ্ধ শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটেনে র‍্যাশনিং চালু হয়েছে, পরিমাণে স্বল্প হলেও সেখানে জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় জিনিস মেলে কিন্তু ফ্রান্সের নাগরিক খাদ্য বস্ত্র এমনকি তামাকের জন্য ভোর সাড়ে চারটে থেকে লাইন দিয়েও সামান্যই বাড়ি নিয়ে যেতে পারে। সাবান , ব্যান্ডেজ , বেবি ফুড অদৃশ্য। মজুত থাকলে প্রাপ্ত বয়স্কদের সপ্তাহে তিনটি সিগারেট দেওয়া হয় , তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। অন্ন বস্ত্র ও সঠিক খাদ্যের অভাবে ফ্রান্সের অন্তত দশ শতাংশ নাগরিক টিউবারকিলোসিস ব্যাধিতে আক্রান্ত। গড়পড়তা ফরাসি ভোজন ও পান বিলাসী আপনারা বরাবর শুনে এসেছেন । কিন্তু আজ কোন পরিবারের পক্ষে ব্রিটিশ সৈন্যকে বাড়িতে আমন্ত্রণ করে খাওয়ানো প্রায় অসম্ভব , এটি মনে রাখবেন। বারংবার সাবধান করা হচ্ছে আপনারা ব্রিটিশ সৈন্যরা যেন ফরাসিদের এই অভাবের সুযোগ নিয়ে কালোবাজারি ব্যবসা শুরু করার প্রলোভন হতে বিরত থাকেন। গত কয়েক বছর ফরাসি আন্ডারগ্রাউনড ( রেজিসতঁস ) নাৎসি শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছে , বি বি সির ফ্রেঞ্চ সার্ভিস তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করে চলেছে। বছরে অন্তত পাঁচ হাজার রেজিসতঁস সংগ্রামী জার্মান ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে প্রাণ দিয়েছেন। 

    ১৮১৫ সালে ওয়াটারলু যুদ্ধের পরে ব্রিটেন ও ফরাসি সৈন্য কখনো কেউ কারো প্রতিপক্ষ রূপে ময়দানে দাঁড়ায় নি, ক্রিমিয়ার যুদ্ধ আমরা কাঁধে কাঁধ দিয়ে লড়েছি। যখন আপনারা ফ্রান্সের মাটিতে পা রাখবেন, আপনারা পাবেন বীরের অভ্যর্থনা। 

    কে কতটা লেখা পড়া শিখে বন্দুক হাতে ধরেছে জানা নেই ; ব্রিটিশ ফরেন অফিস তাই অ আ ক খ শেখানোর ব্যাপারে কোন ত্রুটি করে নি। ফ্রান্সের ভূগোলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে – মনে রাখুন “সাইজে আমাদের দ্বীপের আড়াই গুণ এবং রাশিয়ার পরেই ইউরোপের বৃহত্তম এই দেশ “। এই প্রসঙ্গে ইংরেজ নিজেদের বড়াই করতে ছাড়ে নি ; ফ্রান্সের ভূখণ্ড বিশাল কিন্তু তার দেশের নৌ বহর এবং তাদের ‘কলোনির’ মোট এলাকা ব্রিটেনের তুলনায় অনেক ছোট।

    তারপর ইতিহাস। সেখানেও আবার সেই বাহাদুরি - ব্রিটেন মাত্র একবার বিদেশির পদানত হয়েছে ( ১০৬৬ )- যদিও সে আক্রমণ এসেছিল ফ্রান্স থেকে কিন্তু আক্রমণকারীরা ফরাসি নন , তাঁরা ডেনিশ ভাইকিংদের উত্তর পুরুষ, নরমান! ফরাসিরা কোন কালে ইংল্যান্ড বিজয় করেছে এমনটা মেনে নেওয়া যায় না। এর পরে ফরাসি বিপ্লব- ফরেন অফিসের মতে এ কোন কমিউনিস্ট বিপ্লব বা ধনীর বিরুদ্ধে গরীবের বিদ্রোহ নয় এটি ফরাসি মধ্যবিত্ত বনাম অ্যারিস্টোক্র্যাটদের লড়াই , যেটি প্রতিবেশী দেশগুলির রাজা রাজড়াদের সন্ত্রস্ত করেছিল। ব্রিটেন ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে যার সমাপ্তি ওয়াটারলুতে। নেপোলিয়নের চেয়ে বেশিবার উল্লিখিত হয়েছেন তার ভাইপো , লুই বোনাপার্ট , সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন। 



    ফরাসি চরিত্র 
    লন্ডন হোয়াইটহলের সরকারি আমলারা হাজারের কম শব্দে ফরাসি চরিত্র ও মানসিকতার চমৎকার সারাংশ পেশ করেছেন। এর খানিকটা হুবহু তুলে দেওয়া যায় :

    ফরাসিদের কাছে জাতীয়তাবাদ গৌরবময়, কিন্তু তাঁদের আঞ্চলিক চেহারাটিও একই রকম অহংকারের। বহু শতাব্দী যাবত ফ্রান্স ছোট খাট রাজত্ব ও জমিদারিতে বিভক্ত ছিল , তাঁদের কাছে সেই প্রাদেশিক বৈশিষ্ট্য কিছু কম গর্বের নয়। উত্তর পশ্চিম ফ্রান্সের এবং প্রভাঁসের কথ্য ভাষার পার্থক্য সেটি প্রমাণিত করে। তবু মনে রাখবেন আঞ্চলিক বনাম জাতীয় চরিত্রের মধ্যে যতোই বিবাদ থাকুক, শেষ অবধি তাঁরা কট্টর ভাবে ফরাসি। পূর্ব ফ্রান্সের আলসাস লোরেনের ( জার্মান এলসাস , লোত্রিঙ্গেন) ফরাসিরা জার্মান ফরাসি মেশা একটা ডায়ালেকটে কথা বলেন , শুনে মনে হতে পারে এঁরা তো জার্মান! মুখের ভাষা জার্মান! ( আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি আলসাসের সুপার মার্কেটে রুটির দোকানে আমি জার্মান বলেছি , দোকানি বলেছেন এক ধরনের ফরাসি; কথোপকথনে বিন্দুমাত্র বিঘ্ন ঘটে নি -আমাদের দেশে যেমন এক পক্ষ হিন্দি অপর পক্ষ উর্দু বলেন, কারো কোন অসুবিধে হয় না )। কিন্তু তাঁরা মনে প্রাণে ফরাসি। 

    ফরাসি সবার আগে ভালোবাসে তার দেশের মাটিকে। জমির মালিকানা মাত্র কয়েকটি জমিদারের হাতে সীমিত নয় , অতি দরিদ্রেরও দু কাঠা চাষের জমি আছে, প্রতি গ্রামে হাতের কাজ বা শিল্পের সমাদর হয় ( ব্রিটেনে জমির মালিকানায় কি অপরিসীম বৈষম্য সেটি অবশ্যই উল্লেখ করা হয় নি )- তা থেকে এসেছে প্রখর আত্মসম্মান বোধ। আর্থিক পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন , প্রতিটি ফরাসিকে মঁসিও ( সার ) বলে সম্বোধন করবেন ( ব্রিটেনে সার সম্বোধন সীমিত, সেটি সৈন্যরা জানেন বলেই সেই তুলনাটা এখানে করা হয় নি) !

    গড়পড়তা ফরাসি আয় করেন স্বল্প , তাঁরা মধ্যবিত্ত। ব্রিটেনের হিসেবে তাঁদের অপেক্ষাকৃত গরীব মনে হতে পারে কিন্তু জানবেন তাঁরা সামান্য আয়ে স্বচ্ছন্দ জীবন যাপন করেন, ফরাসি কুইজিন ইউরোপের ঈর্ষা উদ্রেক করে। 

    ফরাসি কোন অথরিটিকে মানতে রাজি নয় , সরকারি ইউনিফর্ম পরলেই কেউ সম্ভ্রম দেখায় না। 

    ধর্ম ও শিল্প 
    সপ্তদশ শতাব্দীতে ইউরোপ ব্যাপী ধর্মযুদ্ধের নৃশংসতা থেকে ফরাসি যে শিক্ষা নিয়েছে তার নাম ধার্মিক সহনশীলতা ( ফরেন অফিস উল্লেখ করলেন না ফ্রান্স ইউরোপের প্রথম দেশ যার সংবিধানে ধর্ম বা ঈশ্বরের উল্লেখ নেই; ব্রিটেনের রাজা রানির টাইটেলের প্রথম লাইন – কিং অফ ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস , ডিফেন্ডার অফ দি ফেথ – ফরাসি সংবিধানে কোন ফেথের কথা নেই )। দেশের আশি শতাংশেরও বেশি মানুষ রোমান ক্যাথলিক , ব্রিটিশ নাগরিকের তুলনায় তাঁরা নিয়মিতভাবে চার্চে যান। চার্চের প্রধান পুরোহিত ব্রিটেনের পাদ্রির চেয়ে কম বেতন পান , কিন্তু সমাজে তার স্থান কোন উঁচু মাচায় বাঁধা নয় , তিনি আরেকজন ফরাসি নাগরিক মাত্র। দেশ সঙ্কটে পড়লে পুরোহিতরা সৈন্য দলে যোগ দিতে পারেন ( ব্রিটেনে তাঁরা সেনা বাহিনীতে যোগ দিতে দায়বদ্ধ নন)। 

    ফ্রান্সের অগুনতি চার্চ এবং ক্যাথেড্রালকে ফরাসি শিল্পকর্মের প্রকাশ্য উদাহরণ বলে চিনিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর জন্য কোন মিউজিয়ামে যাবার প্রয়োজন নেই। অনেক চার্চের দেওয়ালে ওল্ড মাস্টার্সদের আঁকা ছবি ঝোলান থাকে। 

    ফরাসি জীবন 
    যদিও বাড়ির ভেতরে পিতা খানিকটা ডিকটেটর সুলভ আচরণ করে থাকেন , বাড়ির মেয়েদের চোখে চোখে রাখেন; তবে তাকে সবাই খুব একটা মানে না। সবচেয়ে লক্ষণীয় সমাজে নারীর স্থান , শান্তিকালেও তাঁরা কল কারখানায় মাঠে বাজারে কর্মরত , পুরুষের সঙ্গে কোন পার্থক্য চোখে পড়বে না। 

    আপনারা যতোই “গে পারির “ গল্প শুনে থাকুন না কেন , ফরাসি নগর জীবন কোন লাগামছেঁড়া দিনরাতের পার্টি নয়। মমার্ত ফ্রান্সের আয়না নয় , সেখানে কোন ফরাসি মেয়ে আপনার দিকে চেয়ে হাসলেই আপনি তার কোন সুবিধা নিতে পারেন না। তা যদি করেন অ্যাংলো ফ্রেঞ্চ সম্পর্ক বিপন্ন হতে পারে। ফ্রান্সে বেশ্যা বৃত্তি আইনসম্মত, রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে মূত্রস্রাব কোন বেনিয়মি প্রথা নয় ( এখন সেটি বেআইনি )। 

    প্রশাসন 
    প্যারিসে যখন যে রাষ্ট্রপতি ও তাঁর দল শাসন করুন না কেন , গড়পড়তা ফরাসির জীবনে আঞ্চলিক প্রশাসন অনেক বেশি অর্থবহ। গ্রাম বা ছোট শহরে নির্বাচিত হন মেয়র , তার ওপরে কমিউন, কানতঁ ( Canton ) বা আরনদিসমঁ ( Arrondissemont) , সবার ওপরে দেপারতমঁ (Department) তখন ছিল ৯০ এখন ১০৫। 

    আমরা থাকি উবি সাঁ লো গ্রামে, আমাদের কমিউনের নাম এদাঁ , কানতঁ অক্সি লে শাতু , দেপারতমঁ নর পা দে ক্যালে। 

    সৈন্য বাহিনীকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁরা যদি কোন মাঠে ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেন , স্থানীয় মেয়রকে যেন অতি অবশ্য আমন্ত্রণ জানান। 

    আইন 
    ইংরেজের বক্ষ বিদারিত হলেও ফরেন অফিস মানতে বাধ্য হয়েছে নেপোলিয়নের প্রণীত আইন প্রথা, কোড নেপোলিয়ন দুশো বছর, তিনটে রাজবংশ ও অনেক যুদ্ধের পরেও শুধু ফ্রান্স নয় বাকি ইউরোপে আজও সম্যক বলবৎ। 


    আচার সংহিতা 

    খাবার 
    ফ্রান্সের মানুষ এখন প্রচণ্ড টানাটানির মধ্যে আছেন, জার্মানরা তাঁদের না খাইয়ে মারার পরিকল্পনা করেছে। তাই স্থানীয় জনগণের কাছে থেকে বিশেষ কিছু আশা করবেন না। এরপর মোটামোটা অক্ষরে লেখা 

    আপনার নিজস্ব র‍্যাশনের খাবার কোন ফরাসিকে দেবেন না। তাদের খাওয়ানো আপনার দায়িত্ব নয়। সিভিল অ্যাফেয়ারস বিভাগ সেটা করবে। 

    আপনার খাদ্য দ্রব্যের ভাগ একজনকে দিলেই আরও পাঁচ জন এসে হাজির হবে। সে ঝঞ্ঝট মাথায় নিতে আমরা অপারগ। 

    পানীয় 
    কুয়ো ঝরনা বা কলের জল , যাই হোক না কেন, জল সব সময়ে ফুটিয়ে খাবেন। ফরাসিরা তাদের শিশুর জন্যই জোগাড় করতে অক্ষম তাই বাজারে তাজা দুধ পাবেন না। এঁরা চা পান করেন না , সেটা খুঁজতে যাবেন না। বর্তমানে কফির সাপ্লাই অনিশ্চিত। উত্তর ফ্রান্সে ওয়াইন, স্পিরিটস ও আপেল সাইডার পান করা হয়। আবার সতর্কতা বানী মোটা অক্ষরে 

    যদি আপনাকে কেউ ওয়াইন বা স্পিরিট অফার করেন , পরিমিত মাত্রায় পান করুন। মনে রাখবেন এ সবের অ্যালকোহলের পরিমাণ ব্রিটিশ বিয়ারের চেয়ে বহু গুণ বেশি। বর্তমানে ফরাসি বিয়ার অমিল। 

    ফরাসি নারী 
    পথ চলতি ফরাসিনি খুব সহজেই বাক্যালাপ করে থাকেন, কিন্তু সেটাকে কোন আমন্ত্রণ মনে করবেন না। 

    মেয়েদের বাবা ভাই বন্ধুরা এখন ফ্রন্টে লড়ছেন জার্মানদের বিরুদ্ধে , তাই পাহারাদারি করার কেউ নেই। এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে তেমনই ব্যবহার করবেন যেমনটা নিজের দেশে করে থাকেন। অন্যথায় আপনার দুর্ব্যবহার ব্রিটিশ সৈন্যদের নাম ডোবাবে। 

    মনোরঞ্জন 
    ফ্রান্সের সিনেমা হল ব্রিটেনের মতন আধুনিক নয় , অনেক জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ভয়ে ধূমপান নিষিদ্ধ। নতুন ছবি কমই দেখানো হয়ে থাকে , বর্তমানে এইটেই ফরাসিদের মনোরঞ্জনের একমাত্র মাধ্যম , অতএব সিনেমা হলে গিয়ে ভিড় বাড়াবেন না। 

    স্পোর্ট 
    সারা দেশে ফুটবল অসম্ভব জনপ্রিয় , উত্তর এবং পূর্ব ফ্রান্স বাদে নানান শহরে রাগবির চল আছে , টেনিসে কিছু খেলোয়াড় নাম করেছেন। উত্তরে হকি খেলা হয়। 

    এঁরা ক্রিকেট খেলেন না , কুকুরের দৌড় এ দেশে অজানা। হর্স রেসিং তেমন লোকপ্রিয় হয়ে ওঠে নি। সাইকেল রেস ভীষণ পপুলার, আর হাটে মাঠে যে কোন স্কোয়ারে , গলিতে ফরাসিরা ফরাসিরা যেটা খেলেন তার নাম জোয়া দে বুল ; সেটা আমাদের বোলসের মতন। 



    গাড়ি চালানো 
    এ দেশে গাড়ি চলে রাস্তার ডানদিকে , ব্রিটেনের মতো বাঁয়ে নয়। আঠারো কুড়ি বছরের বেশি মানুষেরা গেছেন ফ্রন্টে , শিশু কিশোরের সংখ্যায়ই বেশি। গ্রাম বা শহরের ভেতরে গাড়ি চালাবেন ধীর গতিতে, যাতে পথচারীরা সময়মত রাস্তা ছেড়ে দিতে পারেন। 

    ব্যবহার 
    ব্রিটিশ আর্মি ব্রিটিশ নাগরিকদের প্রতিভূ। আপনাদের যে কোন দুর্ব্যবহার দীর্ঘদিন ফরাসিদের মনে থাকবে। ফরাসিরা অত্যাচারিত হয়েছে বহু দিন , আমাদের সংবেদনশীল হওয়াটা জরুরি। 

    মনে রাখবেন ফরাসিরা আপনাদের মুক্তিদাতার সম্মানটি দেবেন । আপনারা তার যথাযোগ্য মর্যাদা দেবার চেষ্টা করুন। 

    টাকাকড়ি 
    ফরাসি দেশে দশমিক প্রথা চালু হয়েছে বহু দিন আগেই , ১০০ সঁতিমে এক ফ্রাঁ ( ব্রিটেনে দশমিক হিসেব আসবে প্রায় তিরিশ বছর বাদে , ১৯৭১ ) । অল্প দামের (যেমন ৫, ১০, ২৫ সু ) ফরাসি মুদ্রা অ্যালুমিনিয়াম বা কাঁসার তৈরি । গুলি গোলা বানানোর জন্য জার্মানরা সেগুলোকে গলিয়ে ফেলেছে। ফলে কাগজের নোট বেশি দেখতে পাবেন। যে অর্থ টাকা আপনারা প্রতি সপ্তাহে হাতে পাবেন তা ফরাসিদের কাছে অনেক। এরপর মোটা অক্ষরে 

    বুঝে শুনে খরচা করবেন, টাকা ওড়াবেন না। যদি করেন বাজারে যা সামান্য জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছে তার দাম বাড়বে , স্থানীয় জনতা তার জন্য আপনাদের দোষী সাব্যস্ত করবেন। 

    করনীয় 
    ফরাসি আমাদের বন্ধু, জার্মানরা আমাদের শত্রু। জার্মান সৈন্যবাহিনী দখলদারি শক্তি হলেও ব্যক্তিগত ভাবে জার্মানরা ভালো ব্যবহারের জন্য ফ্রান্সে সুখ্যাতি অর্জন করেছে। আমাদের তার চেয়েও ভালো হতে হবে (ভাবতে অবাক লাগে ফরেন অফিস এটি মেনে নিয়েছিলেন ) 

    সামাজিক আচরণে ফরাসি ভদ্রতা আমাদের থেকে অনেক কাঠি উঁচুতে। সব সময় তাদের মঁসিও , মাদাম , মাদমোজেল সম্ভাষণ করতে ভুলবেন না , ব্রিটিশ স্টাইলে কাউকে কক্ষনো “অয় “ বলে ডাকবেন না, সেটা অভদ্রতা। 

    ফরাসি পুলিশকে সর্বদা স্যালিউট করবেন , কারো বাড়িতে ঢোকা বা বেরুনোর সময়েও স্যালিউট করবেন ( এখানে আমার খটকা লেগেছে – পুলিশকে না হয় স্যালিউট করা গেলো কিন্তু কারো বাড়িতে স্যালিউট করার প্রথা তো তিরিশ বছরেও ফ্রান্সে চোখে পড়ে নি আমার। হ্যাঁ, পানপাত্র হাতে তোলার আগে সালিউ বলা হয় তার সঙ্গে কি গুলিয়ে ফেলেছে ফরেন অফিস ?)। 

    কারো বাড়িতে গেলে আড্ডা জমিয়ে বসবেন না। তাঁরা সকলেই দুঃখ কষ্টে আছেন, মনে রাখবেন। 

    বর্জনীয় 
    ১৯৪০ সালে জার্মানির সামনে ফ্রান্সের আত্মসমর্পণের নিন্দা করবেন না । সে বছর মে মাসে ডানকার্ক থেকে আমাদের ব্রিটিশ এক্সপিডিশনারি ফোরস দেশে ফিরে আসে , তাকে আমরা গৌরবময় পশ্চাদপসরণ বলে অভিহিত করে থাকি। ফরাসিরা সেটিকে অন্য চোখে দেখতে পারেন ; আমরা তাদের ফেলে চলে এসেছি। 

    (ফ্রান্সের পতনের পরে ২৬শে মে থেকে ৪ঠা জুন ১৯৪০ ডানকার্ক বন্দর থেকে প্রায় চার লক্ষ ব্রিটিশ ও কমনওয়েলথ এক্সপিডিশনারি ফোরসকে নিরাপদে ইংল্যান্ডে ফেরানো হয়েছিল। ইতিহাসে এর নাম গৌরবময় পশ্চাদপসরণ ( The Glorious Retreat )। সেই সাত দিন ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূল থেকে অজস্র মানুষ শুধু জাহাজ নয়, নৌকো , ডিঙ্গি যে যা পেয়েছিলেন তাই নিয়ে এই কোনঠাসা সৈন্যদের পরিত্রাণের জন্য ইংলিশ চ্যানেলে নামেন। ঠিক চার বছর বাদে পালটা মারের সময়ে নরম্যানডি ল্যান্ডিঙে অংশ নিয়েছিলেন যে ব্রিটিশ সৈন্য দল, তাদের অনেকেই ডানকার্ক ফেরত)।

    ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে কোন বিতর্কে যাবেন না। 

    পরিমাপ মত খাবেন ; মনে রাখবেন অর্ধেক ফ্রান্স বুভুক্ষু। 

    যেখান সেখানে নোংরা বা কাগজপত্র ফেলবেন না। 

    বুঝে শুনে অ্যালকোহল পান করবেন। ব্রিটিশদের মাত্রাজ্ঞানহীন মাতলামোর গল্প ১৯৩৯-৪০ সালে ফ্রান্সে বেশ প্রচলিত ছিল , সেটির পুনরাবৃত্তি করবেন না। 

    আপনার র‍্যাশনে পাওয়া খাবার অথবা আর্মির অস্ত্র শস্ত্র বা কোন সরঞ্জাম বাজারে বিক্রি করবেন না। 

    পথে ঘাটে 
    বিদেশি ভাষায় কথা বলা সহজ নয় , তার চেয়েও কঠিন ফরাসির কথা বোঝা । যদি এমন কাউকে পান যিনি অল্প বিস্তর ইংরেজি বোঝেন , অত্যন্ত ধীরে ও স্পষ্ট ভাবে আপনার বাক্যটি বলুন। যদি তাঁর ভাষা বুঝতে চান, ফরাসি ভদ্রলোককেও ধীরে বলতে বলুন। 

    এই পুস্তিকার শেষ দিকে দৈনন্দিন কাজ চালানোর মতন কিছু শব্দ ও ফ্রেজ, তরল পদার্থ , দূরত্ব এবং ওজনের মাপের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে ( আশ্চর্যের বিষয় সেন্টিগ্রেড থেকে ফারেনহাইট মাপা শেখানো হয়েছে এক থেকে দশ বা একশো অবধি গোনা শেখানো হয় নি !)। 



    সবশেষে কিছু সতর্কতাবানী 

    দেওয়ালের কান আছে ; শত্রু ফ্রান্স ছেড়ে জার্মানি চলে গেলেও রেখে যাবে চর , গোয়েন্দা। 

    সাবধানতার কোন বিকল্প নেই। আপাত দৃষ্টিতে শান্তিপূর্ণ মনে হলেও মুক্ত এলাকাগুলিতেও আক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়। 

    প্রত্যেকের আইডেনটিটি কাগজ ভালো করে পরীক্ষা করবেন , এই সময়ে জাল ডকুমেন্টের অভাব নেই । কিছু বেঠিক দেখলে তৎক্ষণাৎ আপনার ইউনিট সিকিউরিটি অথবা ফিল্ড সিকিউরিটি অফিসারকে জানান। 

    সাবোতাজের সম্ভাবনা প্রতি পদে।

    মিথ্যে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে জার্মানরা মিত্র শক্তির একতা ভাঙবার চেষ্টা করবে মনে রাখবেন ভ্রান্ত খবর ছড়ানোর ব্যাপারে মহিলারা বিশেষ দক্ষতা রাখেন। 

    কমন সেন্সের চেয়ে বড়ো কিছু নেই। তার প্রয়োগ করুন। 

    মনে রাখবেন অনেক ইউরোপিয়ান অন্তত খানিকটা ইংরেজি বোঝেন তাই নিজেদের মধ্যে কথা বলার সময়ে সতর্ক থাকবেন , অজান্তে তাদের মনে আঘাত দেবেন না।



    পরিশেষে 
    বরানগরে আমাদের স্কুলে ইংরেজির ক্লাসে সামারি এবং প্রেসি ( precis ) লিখতে হতো। একটা এসে পড়ে তার সারাংশ লেখাটার নাম সামারি , আর তার সারাংশের নাম প্রেসি। দুশ বছর আগে জার্মানির এসেন শহরে কার্ল বেডেকার সায়েব ভ্রমণকারীদের সুবিধার্থে প্রথম ট্রাভেল গাইড লেখেন , ক্রমে সেটি টুরিস্টের বাইবেলে পরিণত হয়েছিল। নরম্যানডি ল্যান্ডিঙের সময়ে ব্রিটিশ সৈন্যদের ফ্রান্স ও ফরাসিদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য ফরেন অফিসের আমলারা খানিকটা তারই মডেলে যেন একটি প্রেসি লিখলেন। দশ হাজারেরও কম শব্দের এই বইতে আছে ফ্রান্সের ইতিহাস ভূগোল রাজনীতি ভাষা প্রশাসন বিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্য এবং তার সঙ্গে মিশে আছে টাং ইন চিক ব্রিটিশ হিউমর। কত কপি ছাপা হয়েছিল , ক্যান্টিনে খাবারের সঙ্গে এক কপি করে বন্টিত হতো কিনা তা জানা যায় না। কিন্তু এর ঐতিহাসিক মূল্য অনস্বীকার্য। তাই হয়তো এর রিপ্রিন্ট করেছে অক্সফোরডের বোদলেয়ান লাইব্রেরি। 

     


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ইস্পেশাল | ০৫ অক্টোবর ২০২৫ | ৪৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন