এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  উৎসব  ইস্পেশাল

  • এবং আরো শিউলিরা

    অনুরাধা কুন্ডা
    ইস্পেশাল | উৎসব | ২৩ অক্টোবর ২০২৫ | ৩৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • অবিস্মরণীয় নজরুল | বাঙালি বিদ্বেষ ও পরিচিতি নির্মাণের রাজনীতি | সোনম ওয়াংচুক: গণতন্ত্র কি শুধুই কাগজে-কলমে? | নবান্ন, গাজা থেকে বাংলার দুর্ভিক্ষ | দুই ঘর | সমসাময়িক | ফ্লোটিলা | ঢাকের দিনে ঢুকুঢুকু | দু-প্যান্ডেলের মাঝখানটায় | সুন্দরী কমলা নাচে রে | কাশী বোস লেনের পুজো : লড়াইয়ের হাতিয়ার | অস্তিত্ত্ব | শালপাহাড়ের গান | পুজোর দিনগুলি | অপেক্ষা-দিন | ভোলুরামের হাঁচি ও মত্তের উৎসব | এ অবধি আঠারো | মিনিবাসে গদার | জালিকাটু | তিনটি কবিতা | সাত সেতুর সাতকাহন | ফ্রান্স - একটি অবতরণিকা | শারদীয়া | বালিকা ও ইস্ত্রিওয়ালা | তিনটি কবিতা | গগন | যে জীবন গেঁড়ির, গুগলির | লা পাতা | দু’টি কবিতা | ধাতব পাখিটি একা | নিষিদ্ধ গন্ধ ছড়িয়েছে হাসনুহানা বলে | তিন ঋতুর কবিতা | গ্যেরনিকা | "এই জল প্রকৃত শ্মশানবন্ধু, এই জল রামপ্রসাদ সেন।" | ছায়া দুপুর | আমাদের ছোট নদী (২) | শারদ অর্পণ ২০২৫ | আমি হিটলারের বাবা | হিমাংশু ও যতীনবাবুদের খবরাখবর | যে চোখে ধুলো দেয় তার কথা | লক্ষ্মীর ঝাঁপি | ত্রিপুরায় পিরামিড রহস্য | এবং আরো শিউলিরা | উৎসব সংখ্যা ১৪৩২

    ছবি: ঈপ্সিতা পাল ভৌমিক


    যদি মরার হয় তবে আর না ভুগে তাড়াতাড়ি মরুক। যতদিন ভর্তি থাকবে, ততদিন জলের মতো টাকা যাবে। এতো জমিদারের সম্পত্তি নয়, বাপের সম্পত্তিও নয়। কষ্টের রোজগারের টাকা। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রঙের মিস্ত্রি পরের ঘর রঙ করে। সেই টাকা বৌয়ের পেছনে যদি জলের মতো বেরিয়ে যায়, তবে কার না গায়ে লাগে? বাচ্চা পড়ে আছে ঠাকুমার কাছে। জন্ম হয়ে দেখেওনি মাকে। মাও দেখেনি ছা'কে। একদিন ভিডিওকল না কী করেছিল ছেলে। ফোনে ঐ লিকপিকে মেয়ে ছাওয়াল দেখে স্যালাইনের নল লাগানো মা কেঁদে আকুল। আর বাচ্চা তো ঘুমিয়েই থাকল। সারাদিন ঘুমাচ্ছে আর সারারাত জাগছে। খিদে পেলে তারস্বরে কাঁদছে। কৌটোর দুধে যেন তার খিদে মেটে না।

    গুণে গুণে ছাপ্পান্ন বছর বয়স হল শিউলির। এখন কি আর সে দুধের শিশু সামলাতে পারে? স্নান করাতেও ডর লাগে। যদি ঘাড়ে লাগে? যদি পড়ে যায় হাত ফস্কে! দুই মেয়ের কাছাকাছি বিয়ে হয়েছে বলে রক্ষা। এসে বাচ্চা সামলাচ্ছে। পালা করে রাত জাগছে। নাহলে শিউলির হয়েছিল আর কী!এই নাতনির জন্য কতগুলো দিন কাজের বাড়িতে কামাই হয়ে গেল। নেহাৎ শিউলি কাজটা যত্ন করে করে , তাই বৌদি ছাড়াচ্ছে না, কিন্তু ফোনে ক্যাটক্যাট করে কথা শোনাতেও তো ছাড়ে না! বড় গায়ে লাগে শিউলির।

    তাই ভাবছে, যাওয়ার হলে যাক বৌটা। আর টানা যাচ্ছে না। তার মানে কিন্তু এই নয় যে ছেলের বৌকে ভালোবাসতো না শিউলি। দুই মেয়ের পর তার সবেধন নীলমণি এক ছেলে। ক্লাস এইটের পরে আর পড়াতে পারেনি শিউলি। ছেলে রঙের কাজে ঢুকে পড়ল। তারপর একদিন হুট করে শ্যামলামত রোগাপানা একটা মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে চলে এল। সে মেয়ের মাথাভর্তি ডগডগে সিঁদুর। শিউলি ভালো করে ঠাহর করে দেখল, মুখখানা মিষ্টি। কিন্তু গায়ে মাংস নেই। তা মনের দুঃখ মনে চেপে সে মেয়েকে কী বরণ করে ঘরে তোলেনি শিউলি? নিজের গলার চেন ট্রাঙ্ক খুলে পরিয়ে দেয়নি? হাতে দুগাছা চুড়ি? তার তো মনের সাধ ছিল দেখেশুনে ছেলের বিয়ে দেবে। অন্তত দু দশজায়গায় মেয়ে দেখতে যাবে। ছেলের মা বলে কথা। মেয়ের বাড়ির লোকজন খাতিরদারি করবে, শিউলি মেয়ের মুখ দেখে চুল নেড়ে বলবে, গড়ন তো মন্দ না, তবে রঙ বড্ড চাপা বাপু..ঠিক যেমন তাকে দেখতে এসে বলতো ছেলের বাড়ির লোকজন। একেবারে গরুর মতো নেড়েচেড়ে দেখতো তারপর রসগোল্লা খেয়ে চলে যেত। আর খবর করতো না। শিউলির মা বাপ অস্থির হয়ে যেত। তারপর একদিন প্রতিবেশীকে জিজ্ঞেস করতো, ওরা খপর দেয় নি গো কিছু? ট্যাক্সি চালানো ছেলের মা বাপ? দেমাকি প্রতিবেশী চুল ঝাড়তে ঝাড়তে উত্তর দিত..ওরা ফস্সা মেয়ে পেয়েছে গো। নগদ দুলাখ। ছেলের ট্যাক্সি আছে না? তোমরা শিউলির জন্য অমুর বাপকে দেখো। বয়স একটু বেশি, কিন্তু নেশা করে না। ওর একটা বৌ দরকার ঘরে। বৌটা সাপের কামড়ে মরে গেল ভর সন্ধেবেলা!

    রাগে পাগল হয়ে যেত শিউলি। রেখা, মালতি, শিখা..সবার তিনচারটে দেখাশোনা করতে করতে বিয়ে হয়ে গেল। আর তার বেলা অমুর বাপ, শমুর বাপ। নিজেকে আয়নায় দেখে মুগ্ধ সে। কালো বটে, কিন্তু মুখখানা দ্যাখো! শরীরের গড়ন দ্যাখো! চাবুক একেবারে। কোন দুঃখে দোজবরের ঘরে যাবে সে? সেই হ্যাঁ না, হ্যাঁ না করতে করতেই মিহিরের বাপের সঙ্গে বিয়েটা লেগে গেছিল। বিয়ের পরের বছর দোলা। তার দুবছর পর মালা। আর একবছরের মাথায় মিহির। বাস। লাইগেশন করিয়ে নিল শিউলি। আর তারপরেই মোটা হয়ে গেল। কোথায় গেল সেই বেতের মতো শরীর, হরিণের মতো চলা। এখন বসে থাকলে উঠতেই পাঁচমিনিট লাগে এখন। অবশ্য মিহিরের বাপ সে নিয়ে কখনো কথা শোনায়নি। নিপাট শান্ত লোক ছিল একটা। ভ্যান টানতে টানতে মরে গেল। তারপর তো শিউলিই বাড়ির কর্তা। সে কী ভাবেনি মিহিরের বিয়েতে অন্তত নগদ দুলাখ, একটা বাইক আর একটা ফ্রিজ চাইবে মেয়ের বাড়ি থেকে? খাট বিছানা টিভি তো না চাইতেই দেবে। শাশুড়ি হিসেবে সে কিছু পছন্দমতো চাইতেই পারে!মিহির সেসবের মুখে ছাই ঢেলে রিংকুকে বিয়ে করে ঘরে তোলাতে শিউলির মন বড় খারাপ হয়ে গেছিল।

    কিন্তু কোন শত্তুরও বলতে পারবে না রিংকুর সঙ্গে খারাপ ব্যাভার করেছে সে। হ্যাঁ। দু চার কথা শোনাবে ভেবেছিল বাপের বাড়ি থেকে খালি হাতে এসেছে বলে, কিন্তু সে আর হল কই?

    পঁচাত্তর কেজি ওজন শিউলির। মাটিতে একবার বসলে উঠতে পারে না। সবজি কেটে ওঠার জন্য হাঁকুপাকু করতেই মিষ্টিমুখের বৌটা এসে তার হাত ধরে তাকে তুলে দিল। শিউলি টের পেল, বৌয়ের হাত নরম। হাতে মায়া আছে।

    পরদিন সকালে তাকে আর সবজি কাটতে দিল না রিংকু। নিজেই ঝুড়ি নিয়ে বসে জিজ্ঞেস করে টরে বাঁধাকপি, আলু, পটল কাটল। শিউলি দেখল, কাজের ছিরি আছে। কাজ জানে মেয়ে। সবজি কেটে বটি ধুয়ে জায়গা মুছে, ন্যাতা কেচে পাটপাট করে টাঙিয়ে রাখাতে শিউলির মন একটু শান্ত হয়েছিল। রাতে তো ঘুমায়নি সে। এখন সকালে খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা আসবে, মেয়ে জামাইরা আসবে, বৌ দেখবে, হাজারটা প্রশ্ন উঠবে কী জবাব দেবে সে?

    বৌটা বাজে বকে না। ঘোমটা টেনে মিটমিট করে শাশুড়িকে মেপে নিল। তারপর বললো, চা খাবে? করে দেবো?

    সাহস দেখে অবাক শিউলি। একেবারে তুমি করে বলছে! বৌ কিন্তু খুঁজে পেতে নিজেই চা করলো। মিহিরকে দিল। শিউলিকে দিল। নিজে নিল এক কাপ। বেশ চা।

    বড় মেয়ে ফোন করেছিল। থমথমে গলা। ভাইয়ের ওপর তার অধিকারবোধ একটু বেশি ছিল।

    ছোটমেয়ে হাসল। সবাই এলো একে একে। রিংকুকে আর চা করতে দিল না ছোট মেয়ে।

    তুমি বসো। নতুন বৌ। দু চারটে দিন বসে থাকো। আমি করে নিচ্ছি।

    ছোট মেয়ে মালার সঙ্গে দিব্যি ভাব হয়ে গেল রিংকুর। তারপর কবে যে নতুন বৌ থেকে বাড়ির বৌ হয়ে গেছিল শিউলি বুঝতেই পারেনি। বৌ নিজেদের মানুষ হয়ে গেল। এখন তাকে নিয়ে পিজি হাসপাতালে যমে মানুষে টানাটানি চলছে। মেয়েমানুষের সব রোগ ধরা পড়ে বিয়ের পরে। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বাচ্চার জন্য প্যাকেটের দুধ গোলে শিউলি। দুটো কিডনিই নষ্ট, পরীক্ষায় ধরা পড়েছে এতদিনে। ও বৌ কি বাঁচবে? ভাবলেই বুকের ভেতরটা হিম হয়ে যাচ্ছে শিউলির। তারপর এই দশদিনের বাচ্চা। মা কাকে বলে জানল না দশদিনে পিসিরা এসে যেটুকু পারে করছে, বুকে করে রাখছে। যতই করুক। পিসি কী আর মা হয়? এতোটুকু বুকের দুধ টানতে পেল না বাচ্চা। পাঁচশ টাকার কৌটোর দুধ আসছে। চা খাবে বলে জল বসালো শিউলি।

    পিছনের পুকুরটা এবার বৃষ্টির জলে ভরে টুপটুপ করছে। বৌ ঘরে থাকতে চা করা ছেড়েই দিয়েছিল শিউলি। হাত থেকে টেনে নিয়ে চা বসাতো। চায়ের সরঞ্জাম যেখানে রাখা সেখান থেকে স্পষ্ট দেখা যায় গোটা পুকুর। বর্ষায় সাপ ওঠে খুব। শিউলি নিজেই সাপের কামড় খেয়েছে একবার। ঘরের কোণে বঁটি রাখা ছিল। আধো অন্ধকারে ঢুকে বঁটি টেনে বার করতে গেছিল শিউলি। আর খপ করে কামড়ে ধরল সেটা। হাত তুলে শিউলি দেখে সাপ। ঢোঁড়া বটে কিন্তু দিনটা ছিল শনিবার। শনিবার মঙ্গলবার সাপে বিষ থাকে বেশি। ইনজেকশন লাগার মতো ব্যথা। হাত ঝাড়া দিতে পালিয়ে গেছিল ঢোঁড়া। কিন্তু বিষ ঢেলে গেছিল। ফুলে ঢোল হয়ে গেল হাত। .বাঁধন দিয়েছিল বর এমন শক্ত করে যে গোটা হাতে কালশিরা। হাসপাতালে ডাক্তার বলেছিল, আঙুলে কামড়েছে, হাতে বাঁধন দিয়েছো, মাথায় কামড়ালে কোথায় বাঁধন দিতা?

    সত্যি কথা বটে। মাথার.ওপর কিছু নাই।

    সেই মাথাই এখন কাজ করছে না ঠিকঠাক। বৌটা বাঁচে কি না বাঁচে। সারারাত কাঁদে ছাওয়াল।

    সাপে তো বৌকেও তড়পিয়েছিল। কাটেনি কিন্তু সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল যমদূতের মতো। একটা নয়, দুটো নয়, তিন তিনখানা সাপ। তেলাপিয়া। ছেলে তেলাপিয়া মাছ আনলো সোহাগ করে। কষে ধনে জিরে লঙ্কাবাটা দিয়ে মাখোমাখো ঝোল রাঁধবে মনে করে কলতলায় বৌকে মাছ ধুতে পাঠালো শিউলি। খানিক বাদে সে কী চিৎকার! টর্চ নিয়ে গিয়ে শিউলি দেখে মাছের গন্ধে তিন খান সাপ এসে হাজির। মাঝে শুধু বঁটি। বৌ আআ করে চিৎকার করে ভয়ে থেমে গেছে। ফণা তুলে বসে আছে বটির ওপারে। শিউলি হুশহাশ করতে আবার হিলহিল করে পুকুরে নেমে গেল নালা দিয়ে।

    এখন শিউলি জানে যে তেলাপিয়া মাছের গন্ধে সাপ আসে। তাই সাঁঝের পরে তেলাপিয়া কাটতে হল সর্বদা বড় লন্ঠন সঙ্গে থাকে।

    পুজোর ঠিক আগে আগে রিংকু মরলো। সারা শরীরে নাকি বিষ ছড়িয়ে গেছিল। ইনফেকশন না কি যেন বললো ছেলে। শিউলি ভালো বুঝতে পারেনি। বডি কলকাতা থেকে নিয়ে আসতে আবার একগুচ্ছের টাকা খরচা হল মরা মানুষের জন্য খরচ করে কী লাভ? বেঁচে ছিল, চিকিৎসা করছিলি তাও ঠিকাছে। ছেলের ওপর মনে মনে গর্জায় শিউলি। কেন, কলকাতাতে পুড়িয়ে এলে হত না? আদিখ্যেতা করে বডি আনল। কী? না সাজিয়ে পোড়াবে। জ্ঞাতি গোষ্ঠী দেখবে।

    দেখার ঠেলায় একহপ্তা কাৎ হয়ে পড়ে থাকল শিউলি। তারপর ঐ একরত্তি মেয়ে ছাওয়াল। যে আসে, সেই দ্যাখে আর হায় হায় করে। দিনে ঘুমানো রাতে জাগা মা মরা মেয়ে ছাওয়াল নিয়ে শিউলি জেরবার। নেহাৎ দুই পিসি এসে পালা করে দেখছে। কিন্তু তাদের তো নিজের সংসার, ছেলেপুলেও আছে। শিউলি এখন চোখেও দেখছে কম। ব্যাটাছেলে ছাওয়াল হলে তাও কথা ছিল, এ বেটি ছাওয়ালকে দেখলেই শিউলির চোখে জল আসে। পাড়া পড়শি ভাবে, বৌয়ের শোক। শিউলি জানে শোক কীসের। মাঝরাতে যখন ডুকরে কেঁদে ওঠে বাচ্চা, শিউলি ভাবে কেন মায়ের সঙ্গে মেয়েও মরলো না। সিরিয়াল দেখে চা খেতে খেতে কিন্তু ভাবে অন্যকথা। ভাবতে ভাবতে বৌদির ফোন আসে।

    কাজে কবে ঢুকবে শিউলি? কতদিন কামাই হল খেয়াল আছে? এদিকে আমার ওপর দিয়ে কী ঝড় যাচ্ছে বুঝতে পারছো?

    অদ্ভুৎ একটা নাকী কান্না কেঁদে উঠল শিউলি।

    তার সঙ্গে ফোঁপানি।

    ছেলের বৌ মরেছে বৌদি! পেটের বাচ্চা একদিনও চোখে দেখতে পেল না..

    ফোনের ওপারে বৌদির মারমুখী গলা থমকে যায়।

    কবে মারা গেল? ফোন করে জানাতেও তো পারতে..

    ফোনে টাকা নাই বৌদি..

    এই সুবিধেজনক উত্তরটা শিখে ফেলার পর থেকে শিউলির খুব সুবিধা হয়েছে।

    এমনিতে কাজের বাড়িতে খুব একটা কামাই করে না সে। কিন্তু এবার তো নাচার..কচি বাচ্চা ঘরে। বড় মেয়েকে বলেছিল, ছাওয়ালটা তুই রাখ। তোর কাছে মানুষ হয়ে যাবে। বড় মেয়ের মুখখানা গোল। লেপটে সিঁদুর পরা। শরীর বেঢপ ফোলা উদাসমুখে বললো, তোমার জামাই বলছিল বেটাছেলে ছাওয়াল হলে নিয়ে নিতাম। মেয়ে ছাওয়াল আর বাড়াবো না। বড় মেয়ের দুই মেয়ে। ছোটমেয়ের একছেলে এক মেয়ে। তাকেই বলবে শিউলি , অন্তত দিনের বেলা বাচ্চাটাকে রাখুক মা বেটি মিলে। নাহলে তার আট হাজারি কাজটা যাবে।

    সকলের মুখে ঐ এককথা। বিটি ছাওয়াল রাখতে পারবো না। দুঃখে চোখে জল এসে যায় শিউলির। হারামজাদি বৌ একটা ছেলে বিইয়ে মরতে পারল না! যাওয়ার সময় গলার কাঁটা রেখে গেল।

    বডি আসুক বৌদি। কাজ কাম মিটুক। আমি কাজে ঢুকে যাবো। তুমি চিন্তা কোরো না। এইকদিন তুমি সেন্টার থেকে একটা টেম্পোরারি লোক নিয়ে নাও।

    মুখে বললে কী হবে, শিউলি জানে কাজটা চাপের। আঠেরো বছরের মেয়ে বিছানায় পড়ে আছে। হাঁটতে পারে না, বসতে পারে না, কথা বলতে পারে না। মুখ দিয়ে লালা পড়ে। তাকে নাওয়ানো, ধোওয়ানা, পায়খানা, পেচ্ছাপ এমনকী মাসিক স্রাবের প্যাড পরানো, খোলা সব করতে হয়। টেম্পোরারি আয়া এসে থোড়ি ও মেয়েকে সামলাতে পারবে। কতদিন গায়ে হড়হড় করে বমি করে দেয়। শিউলি কিছু মনে করে না। অবোলা প্রাণী ভেবে নিজেকে সাফসুতরো করে নেয়, বৌদির বডিলোশন ঘষে নেয় সাবানের খসখসে ভাব কাটাতে। গায়ে পাউডার ঢালে বেশি করে।

    বৌদি অফিস থেকে ফেরার আগে কোনোদিন চিঁড়ের পোলাও, কোনোদিন চাউমিন, কোনোদিন মুড়িমাখার ব্যবস্থা করে রাখে। কোচবিহারে অফিস করে দাদা শনি রবিবার করে আসে। সেদিনগুলো স্পেশ্যাল জলখাবার হয়। দাদা বৌদি, ওদের ছেলে, শিউলি সবাই খায়। ওদের আঠেরো বছরের মেয়ে খায় না। সে ঘাড় কাৎ করে ফ্যালফেলিয়ে তাকিয়ে থাকে শুন্য চোখে। চোখদুটো টানাটানা। বড় বড় চোখের পাতা। কিন্তু চোখের মণির দিকে তাকালে কেমন ভয় করে শিউলির। ও মেয়ের চোখে কোনো কথা নেই। বৌদিরও বোধহয় ভয় করে। মাঝে মাঝে বৌদিকে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুনেছে শিউলি। মরে যায় না কেন ঐ মেয়ে, আর কতদিন জ্বালাবে! আর কত টানবো আমি! পারছি না! মর, মর, মর না মেয়ে, মর..ইচ্ছে করে গলা ঘুঁটে মেরে দি...দে না, গোটা কতক ট্যাবলেট আরো গিলিয়ে দে। মরুক আপদটা।



    যেন পাগল হয়ে যায় সুন্দরী বৌদি ঐসময়গুলো।

    শিউলি চুপ করে রান্নাঘরে সিঁটিয়ে থাকে।

    বৌদি কত লেখাপড়া জানে। মেয়েসন্তানকে লেখাপড়া শেখাতে হয়..এসব কথা বলে। তার মুখে নিজের মেয়ের মরার দোয়া শুনে শিউলি কেমন কেঁপে ওঠে।

    পারছি না, পারছি না শব্দগুলো কাঁপতে কাঁপতে দেওয়ালে মাথা কোটে।

    বৌদি অনেকক্ষণ কেঁদে কেটে শান্ত হয়। দাদা একের পর এক সিগারেট টানে। তারপর বৌদি নিজেই উঠে অনেক যত্ন করে মেয়েটার লালা মোছায়। মুখ মোছায় ভেজা টিস্যু দিয়ে। কপালে চুমু দিয়ে চুল আঁচড়ে দেয় সিঁথি কেটে। চুল আছে বটে মেয়েটার। কোঁকড়া চূল ঝামরে পড়ে মুখের ওপর। মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আধফোটা স্বরে কিছু বলার চেষ্টা করে। একবছরের বাচ্চার মতো। শিউলি চায়ের জল ফোটাতে ফোটাতে ভাবে, ও মেয়ে কি বোঝে যে ওর মা ওর মরণ চেয়েছিল দশমিনিট আগে? বোধহয় বোঝে। নাহলে অমন করে চেয়ে থাকবে কেন মায়ের দিকে। মায়েরও মরণদশা। অফিস, ছেলে, বর , তারপর এই বিছানায় শুয়ে থাকা এতো বড় মেয়ে। কতদিক সামলাবে!এ তো সারবেও না কোনদিন। বাপ মা যতদিন আছে। তারপর কে দেখবে? ভাই কি টানবে একে? তার তো সংসার হবে নিজের।

    একরত্তি নাতনির দিকে তাকিয়ে ভাবে শিউলি। .ছেলের বৌ মরার তিনদিনের মধ্যেই ছেলের সম্বন্ধ আসতে শুরু করেছে। কচি মেয়ে। ষোলো সতেরো বছরের। এমনকি মাধ্যমিক পাশ। আজ না হোক কাল মিহিরকে বিয়ে করতেই হবে। নাহলে সংসার ঠেলবে কে? এবার দেখেশুনে পয়সাকড়িওয়ালা ঘরের মেয়ে আনবে শিউলি। গতবারের মতো ঠকবে না মিহিরের এখন আর কথা বলার উপায় নেই। বাচ্চার বাপ হয়ে গেছে। আর নতুন বউ এসে কি এই বেটিকে পুছবে? তার নিজের ছাওয়াল হলেই তো এটাকে দূর করবে। আর মা মরলে বাপ হয় তাওয়ইমশায়। তখন এ তো শিউলির ঘাড়ে পড়বে। ভাবতেই শিউরে ওঠে শিউলি। মরদছেলে হলে সবার ঘরে ঘরে ঘুরে মানুষ হয়ে যেত। বিটিমানুষকে তো অতো লাগামছাড়া করাও যাবে না। দিনকাল বড় খারাপ। কি করবে তবে? শিউলির বুক ধড়ফড়ানি বেড়ে যায়। ওমা গো মা, শেষ বয়সে একটু সুখ নেই কপালে। এটা তো এর মায়ের সঙ্গেই গেলে পারতো!

    শ্রাদ্ধশান্তি মিটে গেলে মিহিরের কাছে বিয়ের কথা পাড়ে শিউলি। মিহির বিরক্ত হয়ে উঠে যায়। মেয়েটাকে কোলে নেয় একবার। তারপর বেরিয়ে যায়। হাসে শিউলি। যাক ছমাস, বছরখানেক, নিজেই সুড়সুড় করে বিয়ের কথা পাড়বে।

    নাতনিটা বিছানায় শুয়ে। রোগা ডিগডিগে। একটা শস্তা ছিটের জামা পরানো। কাজলের মস্ত এক টিপ কপালে দিয়ে গেছে তার পিসি। কাল থেকে কাজে যাবে শিউলি। এটাকে রেখে যাবে ছোট মেয়ের ঘরে। কদিন তেল না দেওয়া চুল উঠছে খুব। শিউলি দাওয়ায় গিয়ে বসলো। বাচ্চাটা ঘরে পড়ে থাকলো। একা। ট্যা ট্যা করে কাঁদলো খানিক। শিউলি এসে চুষনি ঠুসে দিল মুখে। পাছায় তিনচারটে চাপড় মেরে পাশ ফিরিয়ে দিল। মেয়েটার মুখের ছাদ মন্দ না। আহা, যদি এটা ছেলে হত তো বুকে করে রাখতো শিউলি।

    শিশু , পশু সকলেই আদরের ছোঁয়া বোঝে। অনাদরের ছোঁয়াও বোঝে। কেমন ঝিম মেরে গেল বাচ্চাটা। নাম দেয়নি কেউ এখনো। তার পিসিরা পুচকি বলে ডাকে। বৌদির ফোন এলো তখনি।

    শিউলি ফোনে এতো জোরে কথা বলে যে পাশের বাড়ি থেকে শোনা যায়। ফোন ধরেই চেঁচালো, কাল সকালেই যাবো বৌদি, আর সব কাজ মিটে গেছে, বাচ্চাটাকে ছোট মেয়ের জিম্মা করে চলে যাবো..

    ওপার থেকে একটা অস্বাভাবিক শান্ত গলা ভেসে এলো।

    এসো শিউলি। যখন হয় এসো। তাড়া নেই আর।

    বুকটা ধক্ করে উঠলো শিউলির। কাজটা গেল নাকি তার বৌ মরার চক্করে? নতুন লোক নিয়ে নিয়েছে বৌদি? নাকি টেম্পোরারি লোক বাগিয়ে নিল কাজটা?

    বৌদি আরো শান্ত গলায় বলে

    এসো শিউলি। আমি বাড়িতেই থাকবো কাল। ছুটিতে আছি এখন। দুপুরের দিকে এসো।

    দুপুরে কেন গো বৌদি? আটটাতে ঢুকে যাবো, যেমন যেতাম, ঢোঁক গিলে বলে শিউলি।

    একটু কাশে বৌদি। গলাটা ভেঙে আসে।

    ঝুমরি নেই শিউলি। পরশু সকালে ঝুমরি মারা গেছে।

    ফোন হাতে নিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে শিউলি। কি বলবে বুঝে পায়না। বোঝে, ফোনের অপরপ্রান্তে যে সে ফুলে ফুলে কাঁদছে।

    আমি যাবো বৌদি। বলে ফোন রেখে বসে পড়ে সে। থপ করে। মেয়েটা মরে গেল! কি হয়েছিল জিজ্ঞেস করতেও ভুলে গেল।



    পুকুরের ঠান্ডা হাওয়া ভেসে আসে। বৃষ্টিতে জল বেড়েছে খুব। বাইরে উঠোনে ব্যাঙ দাপাচ্ছে। লতা না আসে ব্যাঙের খোঁজে।

    মেয়েটা নিজে নিজে মরে গেল না ওষুধ টষুধ বেশি দিয়ে..

    ভেবেই জিভ কাটে শিউলি।

    অলক্ষুণে কথা মনে আনতে নেই। নিজের পেটের মেয়েকে মা কি মারতে পারে!

    কিন্তু তার কাজটার কি হবে? মেয়েটার জন্যই তো রাখা তাকে। এখন কি বৌদি ছাড়িয়ে দেবে তাকে? তা কেন? গিয়ে বোঝাতে হবে বৌদিকে। বাড়িঘর দেখে রাখবে শিউলি নিজের মতো করে। রাজা স্কুল থেকে ফিরলে খাবার করে দেবে আগের মতো, বৌদি ফিরলে চা, দাদা এলে কফি, ডিমের পোচ। টাকা যে বড় দরকার তার। ভীষণ দরকার। বাচ্চাটাকে বড় করতে হবে তো!

    শিউলি মুখ তুলে দেখল রোগা তুলতুলে মেয়েটা তার দিকেই তাকিয়ে আছে।

    এই প্রথম যেন বাচ্চাটার মুখ দেখছে শিউলি। ভারি সুন্দর গড়ন তো! মাথা ভরা চুল। মেয়ের চেহারা ভরা শ্রী। হাতে একটা বালা দিতে হবে। শিউলি ভাবে।

    এই প্রথম একটা ছবি ভাসে তার মনে। মিহির বিয়ে করে করুক, না করে না করুক। একটা ছয় সাত বছরের ফুটফুটে মেয়ে শিউলির আশেপাশে ঘুরবে। নারকেলে পাক দেবে শিউলি আর সে মেয়ে হাসিমুখে ঘুরে ঘুরে নাড়ু খাবে।

    ও মাণিক, তোর হাত পা মাথা, বুদ্ধি সব ঠিক আছে তো?

    ঝুমরির বোধহীন মুখটি মনে পড়ে কেঁপে ওঠে শিউলি। এই প্রথম একবুক আদর দিয়ে শিশুটিকে তুলে নেয়। সারা গায়ে ষাঠ করতে থাকে।

    থাক। বেঁচে থাক। সুস্থ সবল হয়ে বেঁচে থাক। একটা তো ছোট জান। শিউলি ঠিক বড় করে নেবে।

    বিড়বিড় করে শিউলি। আর বাচ্চাটার পিঠে থাপড়ায় আলতো করে।

    শিশু স্পর্শ বোঝে। আদর বোঝে।

    সে অকাতরে ঘুমায়।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    অবিস্মরণীয় নজরুল | বাঙালি বিদ্বেষ ও পরিচিতি নির্মাণের রাজনীতি | সোনম ওয়াংচুক: গণতন্ত্র কি শুধুই কাগজে-কলমে? | নবান্ন, গাজা থেকে বাংলার দুর্ভিক্ষ | দুই ঘর | সমসাময়িক | ফ্লোটিলা | ঢাকের দিনে ঢুকুঢুকু | দু-প্যান্ডেলের মাঝখানটায় | সুন্দরী কমলা নাচে রে | কাশী বোস লেনের পুজো : লড়াইয়ের হাতিয়ার | অস্তিত্ত্ব | শালপাহাড়ের গান | পুজোর দিনগুলি | অপেক্ষা-দিন | ভোলুরামের হাঁচি ও মত্তের উৎসব | এ অবধি আঠারো | মিনিবাসে গদার | জালিকাটু | তিনটি কবিতা | সাত সেতুর সাতকাহন | ফ্রান্স - একটি অবতরণিকা | শারদীয়া | বালিকা ও ইস্ত্রিওয়ালা | তিনটি কবিতা | গগন | যে জীবন গেঁড়ির, গুগলির | লা পাতা | দু’টি কবিতা | ধাতব পাখিটি একা | নিষিদ্ধ গন্ধ ছড়িয়েছে হাসনুহানা বলে | তিন ঋতুর কবিতা | গ্যেরনিকা | "এই জল প্রকৃত শ্মশানবন্ধু, এই জল রামপ্রসাদ সেন।" | ছায়া দুপুর | আমাদের ছোট নদী (২) | শারদ অর্পণ ২০২৫ | আমি হিটলারের বাবা | হিমাংশু ও যতীনবাবুদের খবরাখবর | যে চোখে ধুলো দেয় তার কথা | লক্ষ্মীর ঝাঁপি | ত্রিপুরায় পিরামিড রহস্য | এবং আরো শিউলিরা | উৎসব সংখ্যা ১৪৩২
  • ইস্পেশাল | ২৩ অক্টোবর ২০২৫ | ৩৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Aditi Dasgupta | ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ১০:২৬735198
  • বড্ড বড্ড, বড্ড ভালো! বুক কেঁপে ওঠে, গলা ব্যাথা করে, চোখ ফেটে জল আসে, অথচ কেমন নির্বিকার বর্ণনা মাত্র! বাস্তব অথচ মরবিড নয় একদম! শেষ টা কি ভালো! সহজ সাবলীল কোনো চারণ কবির গান, লোককথা যেন!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন