অলংকরণ: রমিত
১
এসব যুদ্ধে কেউ বেশি জড়ায় না
উড়ালপুলের নিচের ট্রেঞ্চে অপেক্ষমান অনেকে।
তবু, ঝাঁকে ঝাঁকে বৃষ্টির মিসাইলের মধ্যেই
লজঝড়ে সাইকেলে কাজে যাচ্ছে একটা দল।
বৃষ্টির গোলাবারুদ বা রাস্তা ফুরনোর আগে
তাদের বেঁচে থাকতে হবে ওয়াইপার চালানো
সাঁইসাঁই ছুটে যাওয়া গাড়িদের চাকা থেকে।
মোটরবাইকেরাও যুযুধান তৃতীয় পক্ষ হয়ে।
পিছল রাস্তায় গতি মাঝে মাঝে বাড়ে বা কমে
বেঁচে থেকে কাজের জায়গায় পৌঁছলে
এক কাপে গরম চায়ের পতাকা তুলেই—
ওরা ফের আরও এক যুদ্ধে নামে।
২
“বল তো আমি কে? চেষ্টা কর, দেখি, বল?
আচ্ছা, বলতে পারলে কিন্তু প্রাইজ আছে!
আজ তুমি কতটা হাঁটলে, বল?
আমি দেখেছি কিন্তু, কোথায় হেঁটেছ বল তো?”
এক ঝটকায় আমায় মাথার ওপর তুলে ধরত
চমকে গেলেও ভয় নাকি পেতাম না, হাসতাম।
কলকাতার এ মুড়ো থেকে ও মাথা
হেঁটে পার হওয়া জলভাত ছিল ভদ্রলোকের
ছোটবেলায় রাস্তায় শক্ত করে হাত ধরে থাকত
মেজাজ ভালো থাকলে বেলুনও কিনে দিত।
একফালি উঠোনে ওয়াকার নিয়ে
ঘর থেকে এজমালি কলঘর অবধি গিয়ে
ফিরে আসছে বাবা। নার্স আমায় ভিডিও পাঠাল।
ডাক্তারবাবু বলছেন—
“এখন অনেকটাই ভালো দেখলাম
এরপর একটা দুটো কথাও বলবেন।”
আমি শুনি—
এইভাবে একদিন মস্ত বড় হয়ে গিয়ে
সন্তানকে এক ঝটকায় আকাশে তুলে—
আবারও চমকে দেবেন উনি।
৩
একদিন না একদিন
আলো তো ফুটবেই জানি
ভয় হয়, দেখতে পাব তো।
সাহস করে সে কথাটা চট করে
কাউকে বলে উঠতে পারছি না।
কে জানে, হয়ত সকাল হয়েছে অনেকক্ষণ।
সবাই আবার অনেকদিন পর এতক্ষণে
সৈকতে সূর্যাস্ত দেখে পান্থশালায়
আগুন ঘিরে জোরদার আড্ডায় মেতেছে।
একা আমিই হয়ত এসবের বিন্দুবিসর্গ জানি না।
৪
গোলাবারুদ তোমার যত
ইচ্ছেমতো ছুঁড়ছ বলে
পাখির ডাকে ভোরবেলা খুব লজ্জা পেলে?
নিজেই বল— এ সব তোমার পছন্দ নয়
এই হাওয়া বয় এদিক ওদিক
চলতে চলতে থেমে যাচ্ছে হাতঘড়িও
কু ঝিক ঝিক, সু ঝিক ঝিক।
ট্রেনে আমার ভাল্লাগতো।
ফেরিওলাও যায় বেড়াতে অহোরাত্র
একটা রাজার তিনটে রাণী
লুডোর ঘুটি শত অমাত্য।
চিল্কা যাব ইচ্ছে হলে,
নয়ত নামব চিড়িয়ামোড়ে
ভয় দেখানর খেলা দেখলেই
টাপুর-টুপুর দিনদুপুরে।