(১)
এই স্রোত, এই ক্ষয়, এই আয়ু, এই সীমা
ওই জল, জানলা খুললেই অনন্ত যুদ্ধক্ষেত্র চিতা
এই অক্ষর, মেদ, রক্তমাংসমেদমজ্জাহাড় নিয়ে
জুয়ো খেলতে বসে ঘরদোরউঠোনরান্নাঘর মায়
সকল আত্মীয়পরিজনপাড়াপ্রতিবেশী হারিয়েছি।
এই ক্ষয় ওই স্রোত এই লজ্জা ওই ক্ষোভ এই ভয়
এদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ হ'ত একদা, কিন্তু আজ
বউবাচ্ছাবাপমাভাইবোনকাকাজ্যাঠামামাপিসিমাসী
নিয়ে এরা কোথায় কেমন আছে, কী খায় কী পরে —
বিশ্বাস করুন আমি কিচ্ছু জানি না। মাইরি বলছি।
(২)
খাঁচার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত পায়চারি করছিল বাঘটা
নতুন আমদানি, তার খাঁচার বাইরে লোকের গিজগিজে ভিড়ের
আদেশ আবদার নালিশ বিস্ময় তাচ্ছিল্য উদ্বেগ ঠাট্টা উপেক্ষা করে।
তার প্রতিটি পদক্ষেপ তেজোময়, দৃপ্ত, সাবলীল অথচ উদাসীন,
জঙ্গলের অভাববোধকে সারিয়ে তুলেছে কি সে
সময়মতো বিনামূল্যে পাওয়া সুস্বাদু খাদ্যের বিনিময়ে?
না কি অপেক্ষায় আছে, একদিন খাঁচার দরজার
শিকল খোলা পাবে ভেবে?
খাঁচার বাইরে না ভিতরে বাঘ কীসে বেশিদিন বাঁচে?
গবেষণা অন্তে আমাদেরও সবাইকে ফেলা হবে ওই একই ধাঁচে।
(৩)
কোনও একটা জিন মিউটেশন বা প্রাকৃতিক গোঁজামিলে
একবার যাবতীয় গরীবগুর্বোউদ্বাস্তুনিপীড়িতরা
বারুদে তৈরী হোক।
প্রতিটি অস্থায়ী শ্রমিকের হাড়গোড় জিলাটিন স্টিক হোক
আর শিরা-উপশিরা চামড়া মাংসগুলো ইস্পাতের স্প্লিন্টার।
পৃথিবীর যাবতীয় বইপত্তরচলচ্চিত্র শিল্প প্রদর্শনী
আগুন উগড়ে দিক ইচ্ছেমতো —
একবার সীমান্তবিহীন হোক পৃথিবী।
একবার, অন্তত।