খিদিরপুর বাজার পোড়ার পেছনের কারণ স্পষ্ট । রাত ১২টা ৫৫তে আগুন লাগলো । দমকলে ফোন করলেন স্থানীয়রা, পুলিশকেও । দমকলের প্রথম গাড়ি পৌঁছালো ২টো চল্লিশে ।
বলছিলেন স্থানীয় একজন ।
মিডিয়ায় দেখলাম হতভাগ্যরা বলছেন ইঞ্জিন লাগিয়ে জলাশয় থেকে জল তুলতে বলায় দমকল বলেছে তেল নেই, তেল আনতে যাচ্ছি ।
কাছেই দুটো ফায়ার ব্রিগেড ১. কালীঘাট ২. হাইড রোড।
দমকল আসতে ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট লাগলো ?
তারপরে আবার ইঞ্জিনে তেল না থাকার কাহিনী !! যদি সত্যি হয় !
অন্য জায়গায় হলে সেই মুহূর্তেই সুজিত বোস মাথায় টুপি, বগলে মিডিয়া নিয়ে ছোটেন । এখানে কি হল ? কখন এলেন ?
সকালে মমতা মনোজ ভার্মাকে পরিস্থিতি মাপতে পাঠালেন । নিজে গেলেন বিকেলের দিকে । তখনো আগুন নেভেনি। মাইক হাতে নিয়ে, ক্যামেরা তাক করে ঘটনা শুরুর ১৬ ঘণ্টার মাথায় বললেন "জল দেওয়ার জন্য পুরসভাকে বলো জলের ট্যাংক দিতে" । ভাগ্যিস বললেন ! না হলে কি যে হত কে জানে !!
পুড়েছে কত দোকান ? হিসেব মত ১৩০০ র অধিকাংশ ।
ক্ষতিপূরণ কত ? ১ লাখ । আপাতত যতদিন শিফটিং না হয় হাতে দশ হাজার । সংসার চালান ।
অধিকাংশ দোকানে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার মাল পুড়ে ছাই হল । কোন ক্ষেত্রে আরো বেশি ।
কাহিনী পরিষ্কার হল ?
ফায়ার অডিট কোনোদিন হয়েছে ?
দমকল দফতর, কলকাতা পুলিশ কোনোদিন দেখতে গেছে ?
পুরসভা ? মেয়র ? মেয়র পারিষদ ? কেউ ? কখনো গেছেন ?
দু বছর হল সব দোকানদারদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া বন্ধ করেছে পুরসভা ।
কেন ? কোন অংকে ? বোঝা না যাওয়ার মত আহাম্মক কি কেউ আছেন ?
পরিষ্কার হচ্ছে ?
বছর কয়েকের মধ্যে পুরসভা এই কয়েক বিঘে জমি হস্তান্তর করবে নির্দিষ্ট ব্যবসায়ীকে । মাল্টিস্টোরিড বিল্ডিং হবে । নীচে দোকান থাকবে ।
আদতে হাত বদলের খেলা । আর্থিক লাভের পাটিগণিত; সরকারের, দলের । কয়েক শো কোটির সওদা। হাওড়ার বাজার পোড়ার কাহিনী মনে আছে ?
খদ্দের ঠিক করেই তবে "১৫ তারিখ রাতটা" এসেছে ।
এটা মনে রাখতে হবে ।
মনে রাখতে হবে পরিবহন দফতরের প্রায় সব সম্পত্তি এভাবেই একে একে বেচছে সরকার । ট্রাম কোম্পানির জমি ? নিঃশব্দে প্রায় বেচা কমপ্লিট।। চিড়িয়াখানার একটা অংশ চলে গেছে । আলিপুর প্রেসের জমি বাড়ি, সেন্ট্রাল জেলের অনেকটা জমি বাড়ি হিডকোকে সামনে রেখে লিজ হোল্ড থেকে ফ্রি হোল্ড করে কারবার শেষ । অপেক্ষায় বিজি প্রেসের পুরো প্রপার্টি । আলিপুর শেষ করে খিদিরপুরে হাত বাড়িয়েছেন মহিলা ।
অপেক্ষায় থাকুন, তালিকা লম্বা ।
সেই তালিকার খসড়ায় কে আগে যাবে, কে পরে যাবে, ক্যাম্যাক স্ট্রিটের শান্তিনিকেতনেই তার ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয় । কোথা থেকে কি অর্থ আসবে সেই হিসেব করে ।
কলকাতা দেখে যাক, ভোট দিয়ে যাক এই মহিলাকে, এই দলকে ।
এটাই তাঁদের উপযুক্ত পাওনা । পাচ্ছেও ।
মিলিয়ে নেবেন এরকম অনেক রাত একে একে আসবে এই শহর কলকাতায়, শহর সংযুক্ত কলকাতায় ।
একটাই অনুরোধ দেখতে থাকুন, দেখে যান.... শুধু দীর্ঘশ্বাস না ফেলে । এক শয়তান মহিলাকে অবিরত বিশ্বাস আর ভরসা করে ।
সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়
(৯৮৩০৪২৬০৭৮)