আসলে, কোহেন-কে নিয়ে কোনো লেখার-ই শেষ, শুরু কিছুই থাকার কথা নয়, এই লেখাটাও সেই অর্থে শুরু বা শেষ কোনোটাই হয় নি। ধরে নিন একটা লম্বা রোড-ট্রিপ, পুরোনো ক্যাসেট-প্লেয়ারে কোহেন ভেসে আসছেন আর বাঁক ঘুরলেই বাড়ি। আপনাকে এবার থামতেই হবে, কিন্তু গানটুকু শেষ না হওয়া অব্দি ইঞ্জিন বন্ধ করতে ইচ্ছে করছে না। এই লেখাটুকু সেই পৌঁছনো আর না-পৌঁছনোর মাঝে চুরি করে নেওয়া একটা মিনিট। আর কিছু নয়। ... ...
আর যেটা আরো প্রাথমিক, বা বলা ভালো, সত্যিকারের দরকার সেটা হ'ল "ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং"। একটু তলিয়ে, গভীরে গিয়ে ভাবা। বেশির ভাগ ভুয়ো খবর-ই কিন্তু অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য অন্ততঃ একেবারে ভয়ানক অবিশ্বাস্য না। সেই জন্য নিজের বায়াসকেও প্রশ্ন করতে হবে প্রতিনিয়ত। এই যেমন আমার সামান্য বাঁদিকে কান্নিক, আমাকে কেউ যদি বলে বিজেপির প্রোটেস্ট মিছিলে চটুল নাচ হচ্ছে স্টেজে, বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হবে। যেমন হয়েছিল গুচ্ছ লোকের। আমার বন্ধুদের-ও কেউ কেউ শেয়ার করেছিলেন। পরে জানা গেলো ঐটা নবদ্বীপের একটা মেলার ভিডিও। এই প্রোটেস্টের সাথে সম্পর্কহীন। কাজেই “এমনটা হতেই তো পারে” ভাবা-ই যথেষ্ট না, আপনার বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে কি না সেটাও হয়তো আসলে ভুল দিকেই নিয়ে যাচ্ছে, নিজের বায়াস সরিয়ে রেখেই যাচাই করতে হবে প্রত্যেকটি খবর। আসলে সব ফেক নিউজ-ও এইরকম-ই। এতো সুচারু ভাবে সেগুলো বানানো যে শুনে মনে হবে কী জানি হতেও তো পারে। আজকালকার সমাজে কী-ই না সম্ভব? কিন্তু ঐরকম-ই একটা ফেক নিউজ়ের ফলে গণরোষের শিকার হতে পারেন নির্দোষ কেউ, বা সাঙ্ঘাতিক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লেগে যেতে পারে কোথাও। জীবন-মরণের প্রশ্ন। ... ...
১৯শে আগস্ট, ১৯৩৬, ভোরের আলো ফুটতে তখনো দেরী খানিকটা। গ্রানাদার ঠিক বাইরে যে মেঠো রাস্তাটা জুড়েছে ভিজনার আর আলফাকার শহর-কে, সেইখানে থামলো একটি গাড়ি – দরজা খুলে একে একে নেমে এলেন চারজন বন্দী আর পাঁচজন বন্দুকধারী সৈন্য। বন্দীদের দুজন নৈরাজ্যবাদী বুলফাইটার, একজন পক্ককেশ স্কুলশিক্ষক যাঁর একটি পা কাঠের, আর চতুর্থ ব্যক্তিটির পরণে একটি ব্লেজার আর শাদা পাজামা, অন্ধকার আন্দালুশিয়ান আকাশের নীচে উদ্যত মাউজার রাইফেল আর অ্যাস্ট্রা-৯০০ পিস্তলের নিশানার তাঁরা হেঁটে যাচ্ছেন আল পেরিয়ে একটি জমিতে, জলপাই গাছের সারি উজ্জ্বল ভাসমান হয়ে আছে ঘাতকদের গাড়ির তীব্র হেডলাইটের আলোয়। ওঁরা জানেন সেই রাত্রিটির শেষ নেই। ... ...
আমাদের দেশের নতুন পেনাল কোডের নাম ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, সংক্ষেপে বিএনএস। সেই ন্যায় সংহিতায় খুব স্পষ্ট করে বলা আছে, কিছু কিছু নির্দিষ্ট অপরাধের শিকার হওয়া ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করা আইনতঃ দণ্ডনীয়। এর সাজা আর্থিক জরিমানা এবং সর্বোচ্চ দুই বছরের জেল। এর দু-একটি ব্যতিক্রম আছে, যদি সেই ভিকটিম বেঁচে না থাকেন, বা যদি সে শিশু হয় বা মানসিকভাবে অসমর্থ (“of unsound mind”), তাহলেও শুধু তার নিকটতম আত্মীয় “রেকগনাইজ়ড অথরাইজ়ড ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজ়েশন”কে অনুমতি দিতে পারেন ভিকটিমের পরিচয় প্রকাশ করার। এই “রেকগনাইজ়ড অথরাইজ়ড ওয়েলফেয়ার অর্গে”র সংজ্ঞাও দেওয়া আছে, সহজে বলতে গেলে তাদের সরকারীভাবে স্বীকৃত হতে হবে। ... ...
ভাস্কর লিখেছিলেন ‘শেষ নেই এমন এক পাহাড়ে অনবরত চড়তে থাকার সঙ্গে কবিতা লেখার তুলনা করা যায় কিছুটা’... সেই বোবাপাহাড়ের ঠিক তলায় দাঁড়িয়ে আমি, সিসিফাসের উত্তরাধিকার বহন করে চলেছি যেন, তবু বিশ্বাস করি এরপরের স্টপেই আলো-ভরা উপত্যকা আসছে একটা, আর অনেক চিঠি হাতে সেখানে আমার জন্য নিশ্চয়ই একটা আস্ত ডাকবাক্স বানিয়ে রেখেছেন একজন রুপোলি চুলের নিঃসঙ্গ মানুষ। ... ...
আপনি ভাববেন, আমজনতার কি এইসব দেখে রাগ হয়? হিংসে হয়? ছিনিয়ে খেয়ে নিতে ইচ্ছে করে? নাঃ। হয় না। কিস্যু হয় না। যারা বলে হয় তারা আঁতেল না হয় হাপ্প্যান্ট। শুনুন, হিংসে হয় সমানে-সমানে, বা সামান্য একটু উপরের লোকের উপর, তাকে একটু টেনে নামালে তৃপ্তির ঢেঁকুর ওঠে। আম্বানি কি আদানি সেই সব সীমার বহু বহু উর্ধ্বে। এদের জন্য হিংসে তো দূরস্থান, মানুষের মনে যা থাকে তার নাম একপ্রকার ভালোবাসা-ই। অ্যাডাম স্মিথ একে বলেছিলেন, “পিকিউলিয়ার সিম্প্যাথি” – অদ্ভুত সমবেদনা। আম্বানি-আদানির উচ্চাশা ও লোভ – কী করে যেন পরিণত হয়ে যায় আবাল জনতার উচ্চাশায়। আমাদের দেশ বিশ্বের ধনীতম হওয়ার ধারেকাছেও নেই তো কি আছে, আরে বাবা ধনীতম ব্যক্তিটি তো আমার-ই দেশের। তাই আমরা গৌরবে বহুবচ্চন। আর আহা, এই এতো বড়ো বড়ো বিষ বিলিওয়নেয়ার বড়োলোক, ওরাই যদি এমন বৎসরব্যাপী মোচ্ছব না করে তো করবেটা কে? ও পাড়ার পিন্টুদা? ... ...
কার্টুন সমস্ত এক জায়গায় ডাঁই করছি। ... ...