এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  পড়াবই  মনে রবে

  • "সো লং, কোহেন" 

    যদুবাবু লেখকের গ্রাহক হোন
    পড়াবই | মনে রবে | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬৯৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • File:Leonard Cohen 2008.jpg
      লিওনার্ড কোহেন (১৯৩৪ – ২০১৬)
     
    থাটা হচ্ছিলো কোহেন-কে নিয়ে। সেই রহস্যময়ী জিগ্যেস করলেন, “হুইচ ওয়ান’স ইয়োর ফেভারিট কোহেন? ফেমাস ব্লু রেনকোট? হ্যালেলুইয়া? সো লং ম্যারিয়ান? ফেয়ারওয়েল ভ্যালেন্টিনা? কোনটা? যদি আজকেই ঠিক একটু পরেই যদি আমরা দুজনেই ঢলে পড়ি মৃত্যুর মুখে, শেষবারের মত শুনতে চাইলে কোনটা শুনবো, আমরা?” আসলে কোহেনের সব-সব গান বড়ো প্রিয়, সব গান-ই আসলে আমার। শ্রীজাত’র একটা প্রিয়তম লাইন একটু পালটে আমার বলতে ইচ্ছে করে, “আজ থেকে সব মিথ্যে কথা তোমার হলো, যেমন আমার সব কান্না-ই লেনার্ড কোহেন”। ভাবতে ভাবতে দেখলাম, বহুদূরের একটা ব্যালকনিতে আলো জ্বলে উঠলো এক মুহূর্তের জন্য, অস্পষ্ট সেই সিলুয়েটের মধ্যে দিয়ে যেন ভেসে এলো কোহেনের সেই গান, ‘আ থাউজ্যান্ড কিসেস ডীপ’। এই অবুঝ, অবাধ্য অন্ধকারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে মনে হয় কেমন হওয়া উচিত আমাদের শোক উদযাপন, এই যে বিস্তীর্ণ রঙ্গমঞ্চে ঠেলে উঠিয়ে দিয়েছে একটি মৃত্যুর দৃশ্যে, একটি দিগন্তব্যাপী শ্মশানের ব্যাকড্রপে, কই সংলাপ বলে দেয়নি তো কেউ? রিহার্সালে ডাক দেয়নি তো বন্ধুরা? এই সব সময়ে ফিরে যাই কোহেনের কাছে। মনে হয় ঘুম আর ক্যাপসুলের রাংতার মাঝের সেই স্পেসে যেন আমার সবটুকু ক্লেদ ধুয়ে যাচ্ছে কোহেনের মন্দ্রস্বরে। অথচ কি সাংঘাতিক পরিহাস ভাগ্যের, কোহেনের পরিচয় হয়ে গেছিলো যেন তিনি শুধুই দুঃখের গান গেয়েছেন। নিজের জীবনীকার সিলভি সাইমন্সকে কোহেন বলেছিলেন, “People were saying I was ‘depressing a generation’ and ‘they should give away razor blades with Leonard Cohen albums because it’s music to slit your wrists by’.

    সেই কোহেন যিনি শিখিয়েছেন থেমে যেতে নেই, শিখিয়েছেন যে সব অন্ধকারের উৎসে একটু হলেও উৎসারিত আলোর সূত্র থাকে। কোহেনের ‘অ্যান্থেম’ তাই হয়ে ওঠে আমাদের-ও অন্ধকারের অ্যান্থেম।

    “Ring the bells that still can ring
    Forget your perfect offering
    There is a crack, a crack in everything
    That’s how the light gets in”


    কবি-ই ছিলেন কোহেন। বস্তুতঃ তার সারাটা জীবন লিখে গেছেন অজস্র কবিতা, যত না গান তার থেকে কিছু বেশীই। শিল্পীজীবনের শুরুয়াত-ও কবি হিসেবেই। কলেজের চৌকাঠ ডিঙোতে না ডিঙোতেই দুটি বইঃ ‘লেট আস কম্পেয়ার মাইথোলজিস’ আর ‘দ্য স্পাইস বুক অফ আর্থ’ – সুমন যে বইয়ের বাংলায় নাম দিয়েছেন “পৃথিবীর মশলার কৌটো”। অল্পদিন পরেই প্রকাশিত হলো উপন্যাস, ‘দ্য ফেভারিট গেম’ আর ‘বিউটিফুল লুজারস’। ফেভারিট গেমের গল্প আত্মজৈবনিক, এক কিশোর নিজেকে খুঁজে পাচ্ছে লেখার মধ্যে দিয়ে যেন, কোহেন যেন হাতড়ে বেড়াচ্ছেন অন্ধকারে একটি আয়না। কিন্তু সাফল্যের মুখ দেখেনি কোনোটিই। কানাডা ছেড়ে চলে এসেছেন আমেরিকায়, ঠিক করেছেন কবিতা নয়, গান-ই লিখবেন তিনি, অ্যান্ডি ওয়ারহলের দলে নাম লিখিয়ে ঘুরতে ঘুরতেই লিখে ফেলেছেন সেই অবিস্মরণীয় গান ‘সুজ্যান’, গান বলবো, না কবিতা, না নেহাত-ই খাপছাড়া গদ্য?

    “And just when you mean to tell her that you have no love to give her
    Then she gets you on her wavelength
    And she lets the river answer that you’ve always been her lover
    And you want to travel with her, and you want to travel blind
    And then you know that she will trust you
    For you’ve touched her perfect body with your mind”


    ভাগ্যের ফেরেই আলাপ হয়ে গেলো জুডি কলিন্সের সাথে, মন্ট্রিয়লের এক বান্ধবী নিয়ে এলেন ‘দুর্বোধ্য সব গান-কবিতা’ লেখে সেই ছেলেটাকে। কোহেন এসেই বললেন ‘আমি গানও গাইতে পারি না, গিটার-ও না, সত্যি বলতে এইটা গান কি না তাই জানি না’, বলে শুনিয়েছিলেন ‘সুজ্যান’, জুডির জহুরির চোখ চিনতে ভুল করেনি কোহেনের জাদু। কলিন্স কভার গেয়েছিলেন গানটির, সেই শুরু ‘সুজ্যানের’ জনপ্রিয়তার। সেই প্রথম একদিন জুডির ডাকে স্টেজে উঠলেন কোহেন, এতো বড়ো দর্শক কোনোদিন দেখেননি আগে লেওনার্ড। সুজ্যান গাইছেন কোহেন, পাগল হয়ে উঠেছে দর্শক, হঠাৎ মাঝপথে গান থামিয়ে নেমে এলেন কোহেন। দর্শকদের চিৎকারের মাঝে জুডি বললেন, ‘আবার ওঠো স্টেজে, আমিও গাইবো তোমার সঙ্গে’। সেইদিন মঞ্চে, মঞ্চের বাইরে মাটিতে, পাগল দর্শকের দল চিৎকার করে নিউ-ইয়র্কের আকাশ-বাতাসের ভরে দিয়েছিলো কোহেনের সেই প্রেমের ও প্রেমহীনতার ইশতেহার, আকাশের গায়ে লেখা হয়ে গেলো, “They are leaning out for love and they will lean that way forever, while Suzanne holds the mirror”। সত্যিই তো সুজ্যান। ভালোবাসার থেকে, প্রেমের থেকে ক্রমাগত দূরে অপচয়ের দিকে, অবিশ্বাসের দিকেই ঝুঁকে রয়েছি আমরা?
     

    কোহেন ও কলিন্স
     
    ‘সুজ্যান’ যে বিপ্লব এনেছিলো সেই ষাটের দশকের শেষে, তা চলেছে তার পরের ষাট বছরের-ও বেশী। অল্প বয়সের কোহেন যেন সেক্সপীয়রের নিঃসঙ্গ, ভাগ্যতাড়িত যুবরাজ, স্বগতোক্তির মতো গান গেয়ে চলেছেন নিজের মনে। স্লোগানধর্মী গণসংগীত নয়, আত্মার ভিতরঘরের-ও ভিতরে ঢুকে পড়ছেন তিনি। উত্তাল সেই সত্তরের দশক – বিপ্লব তখন রাস্তাঘাট ছাড়িয়ে ড্রেসিং রুমে ঢুকে পড়েছে বব ডিলান, জোয়ান বায়েজের হাত ধরে, পালটে দেওয়ার স্বপ্ন শুধু সারিডনের চেয়ে শস্তাই নয়, সে যেন তখন আভাঁ-গার্দ ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। একদিকে ডিলানের ‘ব্লোয়িং ইন দ্য উইন্ড’ তাকে এনে দিয়েছে ‘প্রফেটে’র মুকুট অন্যদিকে সেই ডিলানের বিপুল খ্যাতি, বিলাসবহুল জীবনকে মানুষ প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন বিভ্রান্ত, সুযোগসন্ধানী স্টান্ট বলে। এই প্রকান্ড কলরবের মাঝেও শান্ত কোহেন লিখে যাচ্ছেন তার ব্যালাড। প্রাতিষ্ঠানিকতার মোহে নিজেকে বিকিয়ে না দিয়ে, মিছিলের সামনের সারিতে উজ্জ্বল না হয়েও ঘোষণা করেছেন তার শান্ত অথচ কী তীক্ষ্ণ প্রতিবাদ। নব্বইয়ের শুরুতে মুক্তি পেলো ‘দ্য ফিউচার’, কোহেন যেন এই গানে ভবিষ্যতদ্রষ্টা, ফিউচারের টাইটল ট্র্যাক শুরুই হচ্ছে,

    “Give me back my broken night
    My mirrored room, my secret life
    It’s lonely here”


    এই তিরিশ বছর পরে মনে হয় প্রত্যেকটা কথা পর্দার উপর জ্বলন্ত অক্ষরে লিখে রাখা এক ভয়ঙ্কর সত্যি। না হলে কেউ লেখে, “I’ve seen the future, brother, It is murder”? কোহেনকে চাক্ষুষ দেখা হলো না এ জন্মে, এ এক বড়ো আক্ষেপ। এক বন্ধুনি যে দেখেছে তাঁকে, বলেছিলো, স্টেজে উঠলেন কোহেন। ষাট বছরের বৃদ্ধ প্রেমিক কোহেন, ডার্ক কফির মত, বিগত জন্মের প্রেমের মতো, গভীর রাতলাগা কণ্ঠস্বর, তবু বয়সে ভারে গলা অল্প কাঁপে উঁচু তারে। কোহেন গাইছেন না, শুধু আস্তে আস্তে আবৃত্তি করছেন,

    “My mirrored twin, my next of kin, I’d know you in my sleep
    And who but you would take me in, a thousand kisses deep
    I loved you when you opened like a lily to the heat
    You see I’m just another snowman, standing in the rain and sleet”

    কী জাদু, কী মায়া, কী সম্মোহন সেই কথায় – এক হলভর্তি লোক যেন সেই মুহুর্তে প্রেমে পড়ে গেলো সেই বৃদ্ধ ভালোবাসার জাদুকরের। এইসব শুনতে শুনতে মনে হয় হ্যাঁ সেই ভিড়ে আমিও ছিলাম, ছিলাম না? মনে হয় আমরা যারা কাছে আসবো বলে দূরে পালাতে চেয়েছি, কোহেন তাদের একান্ত ঈশ্বর। মনে হয়, শুধু আমাদের জন্যেই একটা অবুঝ চোরাগলির ঠিকানা রেখে গেছেন তিনি।
     
    শুধুই আমাদের জন্যে? হয়তো না, হয়তো সব অন্ধকার হয়ে যাওয়ার পরে, ওই দূরের একটা বাড়ির কংকালের গায়ে যে টিমটিমে আলো জ্বলে, আর প্রেমহীন নিস্তব্ধ ছাদে একা-একা দোল খায় যে আধপোড়া সিগারেট, তাদের জন্যেও। কোহেনের কবিতা নিয়ে কখনো সাহস হলে লিখবো অনেক কিছু। যদিও শেষ হবে না জানি, যদিও সাহস হবে না জানি। তবে একটু যখন লিখেই ফেলেছি ঝোঁকের মাথায়, একটা চিঠি দিয়ে শেষ করি… এই চিঠিটা লেখা ম্যারিয়ান-কে, আজীবন যাকে ভালোবেসেছেন, যিনি মিউজ ছিলেন (মিউজের বাংলা কি, ফয়েজ?), সেই ম্যারিয়ান, So long marianne-এর ম্যারিয়ান।
     
    “Well Marianne it’s come to this time when we are really so old and our bodies are falling apart and I think I will follow you very soon. Know that I am so close behind you that if you stretch out your hand, I think you can reach mine. And you know that I’ve always loved you for your beauty and your wisdom, but I don’t need to say anything more about that because you know all about that. But now, I just want to wish you a very good journey. Goodbye old friend. Endless love, see you down the road.”
     
    চিঠিটা যবে লেখা, সেই ২০১৬তেই রেনবো ব্রিজ পেরিয়ে দৃশ্যের ওপারে চলে যান কোহেন। মৃত্যুর পদধ্বনি শুনতে শুনতে এইটুকুও যদি ভালো বেসে যেতে পারি আমার ম্যারিয়ান-দের, তার বেশী আর কেই বা কী চায়? তবুও কোহেনের ‘অন্তিম মূল্য’ যেন শুধু ‘আশা আর প্রেমে’ই। যতই অন্ধকার গাঢ় হোক, যতই রাস্তা হোক দীর্ঘ বিচ্ছেদের মত অবুঝ, যতোই দুঃস্বপ্নতাড়িত মানুষ হারিয়ে ফেলুক পথ, কোহেন কবি বলেছেন না, ‘it’s written that we’ll meet’? সেই দিনটার অপেক্ষায় এই রাত্রিনদী পেরিয়ে যাবো কোহেনের হাত ধরে, আসুন।
     

    নিউ ইয়র্ক টাইমসের আর্কাইভাল রিপোর্ট, কোহেন তখন লিখছেন, ‘আ থাউজ্যান্ড কিসেস ডীপ”
     
    সূত্র
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • পড়াবই | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬৯৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 172.58.***.*** | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:০০537858
  • অত্যন্ত ভালো লাগলো। এইসব লাইন -- "মনে হয় ঘুম আর ক্যাপসুলের রাংতার মাঝের সেই স্পেসে যেন আমার সবটুকু ক্লেদ ধুয়ে যাচ্ছে কোহেনের মন্দ্রস্বরে" --  আহা!
  • lcm | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৮537860
  • বাহ্ ! সুন্দর লেখা ... 
     
    যদুবাবুর কলম যা বলার বলে দিয়েছে...  কোহেন হাইপাররিয়্যাল...  অতিবাস্তব  -  more real than reality ... বলে যে মানুষের শ্রবণেন্দ্রিয় মোটামুটি  ২০ থকে ২০০০০ হার্টজ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ... সেইরকম বাস্তবতার অনুভুতির কোনো পরিমাপ থাকলে কোহেনের কিছু গান তার বাইরের রেঞ্জে ....
     
    মিউজিক্যাল ব্যাপারও অনুভূতিশীল... যেমন এই গানটায়... একটা কন্সট্যাট বিটে ব্যাকগ্রাউন্ডে মিউজিক চলছে, এর মধ্যে ওই The poor stay poor the rich get rich - এখানে - পুওর স্টে পুওর - এর মাথায় একটা ছোট্ট গিটারের ছররা আছে ...   যেন লিখতে লিখতে এখানে হসন্ত দিয়ে একটু স্ট্রেস দিলেন ... অনেকে কবিতাকে গান হিসেবে পরিবেশন করেন ... কোহেন গান দিয়ে কবিতার গদ্য লেখেন ... 
    .... 
    Everybody knows the war is over
    Everybody knows the good guys lost
    Everybody knows the fight was fixed
    The poor stay poor, the rich get rich
    That's how it goes
    Everybody knows
    ...
  • aranya | 2601:84:4600:5410:5c60:5aec:56ad:***:*** | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৯537861
  • আহা, বড় ভাল 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:4d31:44ce:b9a5:***:*** | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:১৯537865
  • যদুবাবুর এই লেখাটা পড়ে সকালটা ভালো হয়ে গেল। লিওনার্ড কোহেন আমার প্রিয় সিঙ্গার, বিশেষ করে নিঝুম রাতের জন্য। ওনার লেখাগুলো অসম্ভব লেয়ার্ড, গানগুলো যতোবার শুনি ততোবার একটা লাইন বা এমনকি একটা শব্দের ব্যাবহারেও নতুন কোন মানে খুঁজে পাই :-) 
     
    এই গানটা শুনুন, কোহেনের "অপ্রকাশিত" চিঠি :-)
     
  • b | 14.139.***.*** | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৪১537869
  • যদুবাবু যেটা কোট করলেন সেখান থেকে আমার প্রিয় দুটি লাইন 
    You ditch your life to stay alive/ A thousand kisses deep
     
  • কালনিমে | 103.244.***.*** | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:৫৫537884
  • কোহেন এর কোন গান সবথেকে প্রিয় - এ সত‍্যিই খুব কঠিন প্রশ্ন যদুবাবু । ব‍্যক্তিগত ভাবে খুব প্রিয় কিছু মুহূর্তের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে কিছু গান। অনেক প্রেক্ষিতেই তাই গানগুলো মনে পড়ে যায়- আর কোহেন এর প্রেমের গানও অনেকটাই ডার্ক আর ফানি- কখনোই পুরনো হয়না।
     
    যারা ভালবাসেন, কোহেন এর মৃত‍্‍্যুর কয়েক মাস আগে নিউ ইয়র্কার এ শেষ ইন্টারভিউটা পড়ে দেখতে পারেন - 
  • যদুবাবু | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৮537886
  • kk, লসাগুদা, অরণ্যদা, dc, b, কালনিমে - সবাইকে অজস্র ধন্যবাদ ও ভালোবাসা। 
     
    লসাগুদা যা লিখেছো, "অনেকে কবিতাকে গান হিসেবে পরিবেশন করেন ... কোহেন গান দিয়ে কবিতার গদ্য লেখেন ..." - এইটাই একদম ১০০% আমার মনে হয়েছে। গান বাহন। 
     
    ডিসি আর কালনিমের দেওয়া গানটাও শুনিনি বা ইন্টারভ্যু আগে পড়িনি। দুজনকেই অনেক ধন্যবাদ। 
     
    অনেক শিল্পীর প্রেমে পড়েছি, কয়েকদিন লুপে শুনে গেছি, মনে হয়েছে যেন পারলে সেইসব গান ইঞ্জেকশন দিয়ে রক্তে মিশিয়ে দিই, কিন্তু আবার সেই নেশা কেটে গেছে, সেই গানগুলো ভুলে গেছি, দূরে ফেলে এসেছি, গ্রিউ আউট অফ ইট। কিন্তু এই কোহেন ইজ় ওয়ান অফ দেম, যাদের গান কোনো জবরদস্তি ছাড়াই ভেতরের অনেকটা দখল করে রেখেছে বরাবর। 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:75f2:ae53:be16:***:*** | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৯537891
  • কোহেন এর গান কলেজে পড়তে প্রথম শুনেছিলাম, হ্যালেলুইয়া আর সুজান। তারপর বেশ কিছুদিন আর শুনিনি, যদিও ওনার গলার জন্য ওই গানগুলো মাঝে শুনতাম। বেশীরভাগেরই বোধায় সেভাবেই কোহেন শোনা। কিন্তু আরও অনেক পরে, ওনার আরও দুয়েকটা গান শুনি, আর আস্তে আস্তে সেসব গানের কথাগুলো নিয়ে ভাবতে শুরু করি, বা বলা ভালো আস্তে আস্তে ভেতরে ঢুকতে শুরু করি। তারপর তো ওনার কতো গানই শুনলাম, মন খারাপের সময়ে, ভালোবাসার সময়ে,  কোয়ায়েট ইনট্রোস্পেকশানের সময়ে। কোহেন হলো গিয়ে ফুল কোর্স ডিনার, আস্তে আস্তে শুরু করতে হয়। আর একবার ভালো লাগতে শুরু করলে ডিশের পর ডিশ, কোর্সের পর কোর্স। নিঝুম রাতে বারান্দায় বসে, পাশে একটা হুস্কির গেলাস আর কানে কোহেন আর পিংক ফ্লয়েড, এ জীবনে আর কিছু লাগে না। 
  • Sumantune | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৫৭537892
  • পরিচ্ছদ শেষে 
    অগণিত তারাদের প্রতিবাদ, 
    ঘন, প্রবল কালোর বিপরীতে
    যখন শেষ হয়ে আসে, 
    তাঁহাদের নিজেদের পুড়ে যাওয়া 
    কৃষ্ণগহ্বর থেকে উঠেআসা 
    এক গভীর নিরাকার, আমি এর নাম 
     
    কোহেন 
  • Prativa Sarker | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:১৩537965
  • লেখাটাও কবিতা হয়ে উঠল। কোহেনের ছোঁয়াতেই। এখানে দেওয়া গানদুটোও কী সুন্দর ! 
  • agantuk | 76.77.***.*** | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:১৭537971
  • And then taking from his wallet an old schedule of trains, he'll say, I told you when I came I was a stranger.
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন